বড্ড খারাপ একটা দিন
ভূমিকম্পের পরে প্রায় ত্রিশ ঘন্টা পার হয়ে গেছে।
সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটা হয়েছে গতকাল ভর দুপুরে। একটা ব্যাংকের আইটি তে কাজ করি। লাঞ্চ থেকে অফিসে ফিরে এসে ডেস্কে বসে আছি। আমার ম্যানেজার গেছে ছুটিতে, নিজের বাড়ি আয়ারল্যান্ডে। নিজের ক্যালেন্ডারে যে কয়টা মিটিং, কনফারেন্স কল ছিল, সকালেই সব চুকে গেছে। কাজেই কত তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে বাংলাদেশের খেলা ধরা যায় তাই চিন্তা করছিলাম।
সেইসময় হঠাৎ শুরু। প্রথমে ভাবছিলাম, অন্য সব নিয়মিত জাপানী ভূমিকম্পের মতোন, ১০-২০ সেকেন্ডেই থেমে যাবে। কিন্তু কাঁপুনির তীব্রতায় আশপাশের অন্য সব কলিগের মতোই ডেস্কের নীচে ঢুকে পড়ি। কাঁপুনি থামে। আবার শুরু হয়। চলে বেশ কয়েক বার।
অফিসের পুরো ফ্লোরে হৈচৈ তখন। সবাই বিভিন্ন সংবাদপত্রের ওয়েবসাইট খুলে বা সেলফোনে টিভি চালু করে সংবাদ সংগ্রহের চেষ্টায় ব্যস্ত। ততক্ষণে সবাই জেনে গেছে - ভূমিকম্পটা অনেক বড়, সুনামি এসে চড়ে বসেছে উত্তরের কয়েকটা শহরে।
বিশতলা থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো, দূরে কোথাও আগুন লেগেছে ততক্ষণে। অনেকে নীচে নেমে যাওয়ার কথা বলছিলো, কিন্তু অফিস বিল্ডিং এর দূর্যোগ ব্যবস্থাপকেরা মাইকে বলছে যে যেখানে আছে সেখানেই থাকার জন্যে। ফেইসবুকে ততক্ষণে আপডেট দিচ্ছিলাম। বউয়ের ফোনে ফোন দিলাম, নেটওয়ার্ক ব্যস্ত। অনেক কষ্টে টেক্সট পাঠানো গেলো একটা। একটু পরে সাড়ে চারটা নাগাদ, নিজের বিভাগের ম্যানেজমেন্ট বললো - বিজনেসের জন্যে জরুরী কেউ না হলে বাসার দিকে রওনা দিতে। আমি আইফোন ও গুগল ম্যাপ ভরসা করে বিশ তলা থেকে নেমে হাঁটা ধরলাম।
তারপরে গল্প ছোট - ট্রেন বন্ধ। তাই তিন ঘন্টা ধরে হাঁটতে থাকি দীর্ঘ পথ। পথে অসহায় মানুষের সমুদ্র, সবার চেষ্টা বাড়িতে ফেরার জন্য। টোকিও আসলেই বেশি বড় একটা শহর, অনেক মানুষ - দশ বছরে এই প্রথম সেই উপলব্ধি হতে থাকে। রাস্তায় গাড়িগুলো স্থবির দাঁড়িয়ে। জ্যামে সামান্য এগুনোর অবস্থা নেই। পথে বউকে ফোনে পাই, সে ততক্ষণে কোনওভাবে বাড়ি ফিরতে পেরেছে।
বাসায় ফিরে রাতে টিভিতে দেখি ভয়াবহ সেইসব দৃশ্য - যা পুরো পৃথিবীর কাছে পৌঁছে গেছে সাথে সাথেই। মৃতের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। সুনামি যেন খেলা করে গেছে কয়েক শ মাইল এলাকা জুড়ে। উত্তরে সাগরের ধারে শ দুই-তিনেক মানুষের মৃতদেহ জমা হয়ে আছে, অথবা সাগরের পাশ দিয়ে চলতে থাকা চারটা ট্রেন কে আস্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এইরকম খবরগুলো দেখতে দেখতে খেয়াল করি, সারাদিনের প্যানিকে চাপা থাকা কান্নাটা বেরিয়ে আসছে। ভেজা চোখ নিয়ে বাংলাদেশের খেলা দেখতে বসি।
উপলব্ধি
আমরা থাকি টোকিওর এক কোণায়। মেট্রোপলিটন টোকিও তে ভূমিকম্পের প্রভাব খুব বেশি নয়। কয়েকজন মারা গেছে ছাদ ভেঙে পড়ে। সমস্যা হলো, এখনো ট্রেন শতভাগ চালু হয় নি - যেখানে টোকিওর মানুষ ট্রেন ছাড়া নড়াচড়াই করতে পারে না। আজকেও সারাদিনই ছোটবড় ভুমিকম্প চলছেই, চেয়ারে বসে থাকলে মনে হচ্ছে, নৌকায় বসে আছি। কাল থেকে টেক্সট মেসেজ, ফেইসবুক, মেইল ইত্যাদির মাধ্যমে বন্ধু-বান্ধব পরিচিত জনের খোঁজ খবর নিচ্ছি। আক্রান্ত শহরগুলোতে বাংলাদেশীরাও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। নিরাপদে আছে চেনা-জানা সবাই, এইটুকুই সান্ত্বনা।
আজ বোঝা যাচ্ছে, কী ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে - মৃত আর নিখোঁজের সংখ্যা ১৪০০ পার, সংখ্যাটা বাড়ছেই, উত্তর-পূর্বে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সুনামির ধ্বংসযজ্ঞ, ভূমিকম্পের পরে বিদ্যুত বিভাগের একটা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টরে দূর্ঘটনা, সুনামির ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে আটকে পড়া মানুষগুলোকে উদ্ধারে প্রশাসনের আপ্রাণ চেষ্টা - এইসব টিভি ইমেজ দেখতে দেখতে একেবারে বোবা হয়ে যাচ্ছি। সুনামির সময় অন্যদের বাঁচানোর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশ আর প্রশাসনের অনেকে হারিয়ে গেছে, নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর ঠান্ডা করার কাজ তদারকি করতে গিয়ে কয়েকজন ভয়াবহভাবে আহত, একজন প্রাণ হারিয়েছে। "আপ্রাণ চেষ্টা" শব্দটা আমরা বাংলায় ব্যবহার করি - তার আসল অর্থ কী এখন বুঝতে পারছি।
জীবনের এক-তৃতীয়াংশের বেশি সময় জাপানে আছি - কেমন শেকড় তৈরি হয়েছে এইখানে, বড্ড কষ্ট হচ্ছে এইসব দেখার পর। সবাই কেমন শোকাচ্ছন্ন, বোঝা যাচ্ছে। খুব সহজে বাইরে কেউ প্রকাশ করছে না। জানি, এটাই জাপানী নিয়ম। এখানে কেউ কাঁদে না।
মন্তব্য
ভয়াবহ অবস্থা। সুস্থা আছেন জেনে ভালো লাগল।
সুস্থ ও ভালো আছেন এটা জেনে নিশ্চিত হলাম। গতকাল অনেকের খোঁজ-খবর করেছি সবাই ভাল আছেন। ঘটনার ভয়াবহতা টিভিতে দেখেই শিহরিত হয়েছি। নিরাপদে থাকুক সবাই এই প্রার্থনাই করি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনারা ভালো আছেন জেনে ভালো লাগলো। আমার বাংলাদেশী বন্ধুদের সবার আপডেট পেয়েছি কিন্তু জাপানী পরিচিত যাঁরা তাদের সাথে ফোন বা মেইলে কোন রকম যোগাযোগ হয়নি এখনো। কালকে সুনামীর ঢেউ যেভাবে লাইভ প্রবেশ করতে দেখেছি টিভিতে কিছু বলার ভাষা নেই আসলে।এখনো স্কাই নিউজে আপডেট দেখছিলাম... লাইনচ্যুত ট্রেন, বাড়ির ছাদে গাড়ি, উঁচু বিল্ডিং-এ আশ্রয় নেয়া মানুষ...
মনে হয় অন্য যেকোন দেশ হলে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি আরো অনেক ভয়াবহ হতো। যাঁরা দুর্যোগ কবলিত সবাই দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় লাভ করুন, আটকে পড়া মানুষের উদ্ধার পান, আর যেন শক্তিশালী আফটারশক বা সুনামি আঘাত না হানে সেই দোয়া করি।
অ.ট. এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুবাদে আপনাকে সচলায়তনে পাওয়া গেল!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ফেসবুকে কে যেনো বলছিলেন, ২০১২ এর এ্যানিমেশনকেও হার মানিয়ে দিয়েছে! এনএইচকে'তে কালকে যখন লাইভ দেখছিলাম আর ভয়ে শিউরে উঠছিলাম...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
প্রকৃতির তাণ্ডব, অসহায়ের মতো দেখা ছাড়া আর কিছু বলার নেই! আপনি সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভয়াবহ কষ্ট পেয়েছি। প্রকাশ করার মতো না।
সুস্থ আছেন, জেনে স্বস্তি পেয়েছি। নিরাপদে থাকুন।
একটা অনুরোধ, এই পোষ্টে নিয়মিত ভাবে আপডেট দিতে থাকেন। যদিও সংবাদ সংস্থার কাছ থেকে নিয়মিত খবর দেখছি তার পরও নিজেদের একজন নিয়মিত ভাবে আপডেট দিলে ভাল লাগে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
জাপান তো ভূমিকম্প মোকাবেলায় পৃথিবীতে সবচাইতে প্রস্তুত দেশ, তারপরও এই ভয়াবহ অবস্থা। অন্য কোথাও হলে কি হতো, চিন্তাও করা যায় না।
জাপানে থাকা বন্ধুবান্ধবদের কথা সবসময়ই ভাবছি, তার মধ্যেও স্বার্থপরের মত একটা দুশ্চিন্তা ঢুকে যায় মাথায় - বাংলাদেশে এমন হলে কী ভয়ানক হবে সেটা! যতটুকু বুঝি, ফল্টগুলোর এই সাম্প্রতিক নড়াচড়া বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে...
আপনারা ভালো থাকুন সবাই।
সুস্থ আছেন, জেনে ভাল লাগলো।
নিরাপদে থাকুন সবাই।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সামান্য হলেও উৎকন্ঠায় ছিলাম তোমার কথা ভেবে। ভালো আছো জেনে স্বস্তিবোধ করেছি।
এই মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশে হলে মারা যাবে নিদেন পক্ষে ১ কোটি লোক, ভূমিকম্প ও ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার প্রকৃয়ার অপর্যাপ্ত প্রস্তুতির কারণে। আশংকার কথা হচ্ছে ভূমিকম্পের রিটার্ন পিরিয়ড হিসাব করলে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ রিক্টর স্কেলে ৮ মাত্রার একটি ভয়াবহ ভূমিকম্পের মুখোমুখি হবার কথা।
২০২০! এইডা কী শুনাইলেন দ্রোহীদা? শুনেতো এখনই ভয় লাগা শুরু করছে।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
গতকাল সকালে উঠে বাংলাদেশ জিতেছে এখবরে মনটা এত ভালো হয়ে গিয়েছিল কিন্তু সাথে সাথে জাপানের ভূমিকম্পের খবর দেখে মনটা খারাপও হয়েছিল। এরকম একটা ভূমিকম্পের কথা আমি কল্পনাও করতে পারিনা। কিছুদিন আগেই আমার এখানে পুরো প্রভিন্স জুড়ে ভূমিকম্পের ড্রিল হয়েছিল। কিন্তু আমার মনে হয় না এ মাত্রার একটা ভূমিকম্প এখানে হলে এদের সেট হ্যান্ডেল করার সামর্থ আছে।
আপনার সবাই ভালো আছেন জেনে ভালো লাগলো।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
নিউজ চ্যানেলগুলোতে খবর দেখে আতংকিত হলাম। ভায়াবহ বললেও ভুল হবে। সুস্থ ও নিরাপদ আছেন জেনে ভালো লাগলো।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
আমাদের দেশেও ভূমিকম্প হয়। তবে এতটা ভয়াবহ আমার বয়সে আমি দেখিনি। আপনারা ওখানে অনেক কষ্ট করছেন। আপনাদের প্রতি রইল আন্তরিক দোয়া।
সবাইকে ধন্যবাদ।
জাপান ভূমিকম্প মোকাবেলায় ভীষণভাবে অভিজ্ঞ। আটকে পড়া মানুষ উদ্ধারে আর ভূমিকম্প পরবর্তী সব ব্যবস্থাপনায় এদের নেয়া পদক্ষেপগুলো খুবই কাজের।
যুধিষ্ঠির, দ্রোহী ভাইজান, বাংলাদেশে এই মাত্রার ভূমিকম্প হবে, কল্পনাও করতে ইচ্ছে করে না। দেশটার অস্তিত্ব থাকবে?
এই মুহূর্তে আপডেট:
- বিশেষজ্ঞরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর ঠান্ডা করার জন্যে। এর মধ্যেই কয়েকজনের দেহে স্বল্প মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়েছে। ২০ কিমি বৃত্তের সব মানুষকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। নিউক্লিয়ার শক্তির উপরে জাপানের নির্ভরতা বিদ্যুতের জন্য আর এই ধরনের দূর্ঘটনার অভিজ্ঞতা কম।
- উত্তর-পূর্বে একটা শহরে ১০০০০ মানুষের কাছে এখনো পৌঁছনো সম্ভব হয় নি। তাঁরা কেমন আছে, বেঁচে আছেন কি না - এখনো জানা যায় নি।
- দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে নতুন জায়গায় ম্যাগনিচ্যুড ৫/৬ এর ভূমিকম্প হচ্ছে।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
খবর শুনেই তুমি আর জ্বিনের বাদশা'র কথা মনে পড়ছিলো।
নিউক্লিয়ার প্লান্টের বিস্ফোরন ঠেকাতে না পারলে ক্ষয়ক্ষতি আরো ভয়ংকর হবে।
মানুষ কি ভীষন রকম অসহায়!
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
জ্বিনের বাদশার কোন খবর জানেন?
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হ্যা, উনি ভালো আছেন। উনি পাঁচ ঘন্টা ম্যারাথন হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ভালো থাকুন। আশা করি মানুষ এই দুর্যোগ সামাল দিতে পারবে।
যারা পরিবার, স্বজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
কাল সারারাত ধরে এই খবরই দেখছি। বাংলাদেশে এরকম কিছু হলে কি ফলাফ্ল হবে তা চিন্তাও করা যায় না।
ভালো থাকবেন এই প্রার্থনাই করি।
অলস সময়
গতকাল সকালে টিভি খুলে দেখতে বসেছিলাম। বেশিক্ষণ দেখতে পারিনি। রিক্টর স্কেলে ৭.৫-এর স্মৃতি আছে আমার। ৮.৯ শুনে আঁতকে উঠেছি। ভীষণ খারাপ লাগছে। ভালো থাকুন। আর কীই বা বলতে পারি?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আপডেট জানাতে থাকবেন দয়া করে।
খবরটা শোনার পর থেকে দারুণ উৎকন্ঠায় ছিলাম। ফুকুশিমা পাওয়ারপ্ল্যান্টে বিস্ফোরণের খবর তো রীতিমত ভয়াবহ। যাই হোক, কামনা করি সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন...
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
খবর পাওয়ার পরপরই আপনার ফেসবুক একাউন্ট ঘুরে এসেছি। নিরাপদে আছেন জেনে ভালো লেগেছে।
কালকের দিনটা ঘোরের মধ্যেই কেটেছে - খেলা দেখার মাঝখানে দেখি সিএনএন বিবিসিতে সুনামির ফুটেজ - অথবা অনলাইন পত্রিকার ছবি- হলিউড সিনেমাও হার মানায়। মাঝে আপনার ফেসবুক স্ট্যাটাস - তিন ঘন্টা হেটে বাড়ি ফেরা - কিংবা জ্বীনের বাদশার টুইটার স্ট্যাটাস বাড়ি ফিরতে পাঁচ ঘণ্টা হাটা - ওদিকে এনআইআইটির প্রাক্তন সহকর্মী আসিফের সবাইকে আশ্বস্ত করা যে তারা নিরাপদ আছে - এগুলো নতুন মাত্রা এনেছে।
এইসব ভয়ঙ্কর চিত্র প্রমান করে সব প্রাকৃতিক দুর্যোগই ভয়াবহ - কোনটা বেশি কোনটা কম। আজকাল নিউ মিডিয়ার কল্যানে তা জ্বলজ্যান্ত ভাবে আমাদের কাছে উঠে আসছে। কিন্তু স্ট্যাটাসে পাওয়া বার্তায় ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলো প্রায়শই অনুপস্থিত থাকে। আপনার এই লেখাটি তাই পরিপূর্ণ করে কালকের সব অভিজ্ঞতাগুলো - আপনার চোখের অশ্রুর মাঝে লুকিয়ে আছে আমাদের সবার অসহায়ত্ব - এই প্রকৃতির কাছে। ধন্যবাদ লেখাটির জন্যে।
সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
আপনি ও ভাবী ভালো আছেন জেনে খুব স্বস্ত্বি পেলাম। ভাবীও কি তখন বাইরে ছিলেন? আপনাদের বাসাটির কি অবস্থা? কোনো ফাটল টাটল ধরনি তো? মানে এই ধাক্কার কারনে ভবিষ্যতে বিপদ হবার সম্ভাবনা নেই তো?
আপনার কাছ থেকে আরো আপডেট আর ছবি পেলে ভালো লাগবে। জানি এ পরিস্থিতিতে এধরণের অনুরোধ অকওয়ার্ড মনে হতে পারে। কিন্তু এই দুর্যোগে সমব্যথী হবার অন্য কোনো উপায় জানা নেই।
বউ বাইরে ছিলো। লাইব্রেরিতে, নিরাপদেই ছিলো।
টোকিওতে বাসা-বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি খুবই সামান্য। আর জাপানে সব উঁচু বিল্ডিং মোটামুটি ৬ স্কেলের ভূমিকম্প সহ্য করার মতো স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তৈরি, কাজেই সে সমস্যা কম।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
নিরাপদে আছেন জেনে ভালো লাগলো। সাবধানে থাকবেন প্লিজ!
২০০৪ সালের ৭.৮ ম্যাগনিচ্যুডের ভুমিকম্পের সাথে সুনামির ধ্বংসলীলা দেখে শিউরে উঠেছিলাম। ৭+ আরো দুটো ভূমিকম্প আমার নিজের উপর দিয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়ায় থাকতে। কিন্তু ভাবতেই পারছিনা ৮.৯ হলে অবস্থা কি হতে পারে।
জাপানের কোবে হচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ গবেষনার অন্যতম তীর্থস্থান। আর জাপানীজদের প্রিপেয়ার্ডনেসও ভালো বলেই শুনেছি। কিন্ত তারপরও ৮.৯, অস্বাভাবিকের থেকেও অনেক বেশি কিছু। কামনা উদ্ধার তৎপরতা যেনো ভালোভাবে চলতে পারে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সবাই সুস্হ আর নিরাপদে থাকুন, এই প্রার্থনা।
-আয়নামতি
আপনি এবং সবাই নিরাপদ থাকুন!
আপডেট জানিয়েন।
আমারও প্রথমেই আপনার আর জ্বীনের বাদশা ভাইয়ের কথা মনে পড়ছিলো। সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো। শুভকামনা থাকলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপডেট - মার্চ ১৩, দুপুর
- ভূমিকম্পের মাত্রা সংশোধন, ৮.৮ থেকে ৯.০। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার পরিমাপক যন্ত্র থেকে পাওয়া গেছে এই নতুন তথ্য।
- দশ হাজার লোক এখনো নিখোঁজ।
- নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা এখনো চলছে। ২০ কিমির মধ্যে সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
- জাপানী প্রতিরক্ষা বাহিনী ও প্রশাসন আটকেপড়া সবাইকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ভালো আছেন দেখে ভালো লাগছে। আশা করি সব সামাল দিয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবো আমরা।
যারা পরিবার, স্বজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা।
জাপানের জন্য সমবেদনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবেই চিনি জাপানকে।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সুস্থ ও ভালো আছেন জেনে ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন।
...........................
Every Picture Tells a Story
এই প্রথম ঘটনার বিস্তারিত শুনলাম কারো কাছ থেকে। আমারও বেশ কজন আত্মীয় বন্ধু আটকে ছিল টোকিওর নানান জায়গায়। এই ঘটনায় ওইদিন বাংলাদেশের বিজয়ের আনন্দটা বাধাগ্রস্থ হয়েছিল প্রবলভাবেই। সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভয়ংকর!
এরকম দুর্যোগ না আসুক আর।
সবাই ভালো থাকুক।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ওদের কাঁধে সমবেদনার হাতখানি রাখি।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র জাপান। তাদের উপর এই প্রাকৃতিক দূর্যোগের আগ্রাসনে কিছুটা আতঙ্কিত ছিলাম, কারণ পরিচিত অনেকেই থাকেন সেখানে। শেষ খবর পর্যন্ত সকলেই ভালো আছেন।থাকুন,
ভালো থাকুন, শুভ কামনা।
আমরা টোকিওবাসীরা নিরাপদে আছি। তবে উত্তর-পূর্ব জাপানের অবস্থা খুবই খারাপ। জাপান-প্রবাসের সবচেয়ে লম্বা সময়টা ওখানেই (সেনদাই শহর) কাটিয়েছি। মনটা ভীষন ভারাক্রান্ত।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
নতুন মন্তব্য করুন