এইরকম মাঝেমাঝেই এসে পড়ি এই নদীর পারে। এইরকম মানে, যখন নিজের সাথে নিজেই পেরে উঠি না।
কান থেকে গান খুলে রাখি পকেটে।
আইপড এর সবচেয়ে ছোট বাচ্চা ভার্সনটা - ন্যানো নয়, ন্যানোরও বাচ্চা শাফল্ ।
হাতে যথেষ্ট টাকা ছিলো না এরকম সময়ে কিনেছিলাম। এখন আর ইচ্ছেটা নেই ন্যানো কিংবা মা আইপডকে কেনার, তাই কেনা হয় না। ক্ষুদে বাচ্চা টাই পকেটে পুরে আর কানে যোগ করে চলি।
পিছনে লিখে নিয়েছিলাম প্রিয় রবীন্দ্র সংগীত এর লাইন - তোমায় নতুন করে পাবো বলে।
আজকাল শুনি হ্যায়লি ওয়েস্টেনরা (») আর জোয়ান বায়েজ।
মাঝেমধ্যে নচিকেতা।
সঞ্চয়ে ছিল সেই ফেলে আসা
ভাবনার জোছনায় ঘোর অমানিশা।
সঞ্চয়ে ছিল সেই ছেলেবেলা, মনে নীল রঙের নেশা কোন ঘন মেঘের ভেলা।
...
সঞ্চয়ে ছিলো কতো অভিমান, হারিয়ে যাওয়া গান, পুরনো সম্মান।
এসময় - অসময়, ফুরালো সঞ্চয়।
কিংবা
...
হাজার মানুষের ভীড়ে মিশে ......
ভোরের কোলাহল ঘুমের শেষে, দুচোখ আজো খুঁজে ফেরে
ফেলে আসা ছেলেবেলা।
মানুষের ভীড়ে থেকেও মানুষ খুঁজে ফেরা। একা একা পথ চলা, সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে - মালয় সাগরে।
আশার নিঃস্বতায় স্মৃতিজাগানিয়া শৈশব এসে নিয়ে যায় মেঘভ্রমণে।
সন্ধ্যা নয়, অলস ও মন খারাপ করা বিকেল - সপ্তাহশেষের ছুটির দিনের। সারাদিনে গরম অনেক, পারদ উঠে গেছে ৩৫ এর উপরে, সেলসিয়াস স্কেলে। আমার এই স্কেল ব্যাপারটা বড়ই গোলমেলে ঠেকে মাঝেমধ্যে, জ্বর হলে একরকম আর গরম মাপায় আরেকরকম। অনেকদিন জ্বর-জারি হয় না অবশ্য।
নদীর ধারের বেসবল খেলার জায়গাটায় গরমের ছুটিতে প্র্যাকটিস সেশন হাইস্কুল কিশোরদের, ছুটিশেষের জাতীয় ইভেন্টের প্রস্তুতি বোধহয়। কতো স্বপ্ন - ঈর্ষা হয়!
চোখ বন্ধ করে হেঁটে চলা জীবনে স্বপ্ন না থাকার ঈর্ষা।
কিশোরী ও বাবা - দুজনে দুটো দ্বিচক্রযানে, গল্প করতে করতে চলে যাওয়া পাশ কাটিয়ে।
আমিও একটা চক্রযানে। হালকা গতি, নিঃশব্দ চলা। দূরে, প্রিয় পোষা প্রাণীদের নিয়ে ফ্রিজবি খেলায় কোন দম্পতি। অথবা, বারবিকিউতে একটা দল - পোড়া গন্ধ ও ধোঁয়া। বিয়ারের ক্যান ছড়ানো এদিক ওদিক।
এইসব বিচ্ছিরি বাস্তবতার মাঝেও পোড়ে মন।
স্মৃতিদের মুছে ফেলা যেত যদি কোনওভাবে - অনেক দিন ভেবেছি।
আজও ভাবি আর কষ্ট পাই।
সেই কষ্টে তাই কিছু লেখা হয় না, লিখতে পারি না এখন আর।
এখন শুধু দৌড়ুই, দৌড়ুতে থাকি এই মরা নদীটার ধার ঘেঁষে, টেনে ধরতে না পারা মনকে কোথাও থিতু হওয়ার সুযোগ দেই না, সুযোগ দিলেই সে পুরনো রং এর ঝাঁপি খুলে বর্তমানের পটে বৃষ্টি আর মেঘ আঁকতে বসবে।
তাই, দৌড়ুতেই থাকি সময়ের কাছে হেরে যাবার আগে।
আগস্ট ১২, ২০০৭
---
ছবি : নিজস্ব, আগস্ট ১২, ০৭ এ তোলা
সময়-অসময় : নচিকেতার গান
মন্তব্য
সৌরভ শুধু মন খারাপ করে দেয়
আজ নয় গুন গুন গুঞ্জন প্রেমের, চাঁদ ফুল জ্যোছনার গান আর নয়
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
"কত যে বিস্মৃত স্মৃতি হৃদয়ের তলে উঠিছে জাগিয়া"
কষ্ট পেলেই লিখতে হয়। যদি কেউ ভাগ নেয়। মনের ভার হালকা হয় যদি।
×××××××××××××××××××××××××××××××××××
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
সাথে ছিলাম সৌরভ-গানে,লেখায় ।
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কাঁদালে তুমি মোর, ভালোবাসারই ঘায়ে,
নিবিড় বেদনাতে পুলক লাগে গায়ে।
সবাই কিন্তু মন খারাপ করে দিতে পারে না। তার জন্যও শব্দের নিখুঁত বুনন দরকার হয়।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
'আঁকাবাঁকা সড়কটা চলে গেছে বহুদূরে গ্রাম থেকে শহরের পথে'। নচিকেতার গানটার চিত্রায়ন দেখেছেন? ঠিক আপনার বিবরণের মতো - 'তখনি নেমে আসে সন্ধ্যা, পৃথিবীতে আর বুকে। সূর্য উঠবে জানি কাল ভোরে পৃথিবীতে, কিন্তু এ বুকে!'
সময়ের কাছে মানুষ হারে নাকি?
আমরাই তো সময়কে নিয়ন্ত্রণ করবো।
আমরা ছিলাম বলেই দিলাম সময় নামটা তার
নচিকেতা থেকেই বলি - একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবীতে আবার শান্ত হবে।
কাম'ন কমরেড!
আমি বড় হয়ে 'আরণ্যক সৌরভ' হব......
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন