বই পাঠক মাত্রই জানেন নতুন বই নেড়েচেড়ে দেখা, নাকে নিয়ে বুক ভরে গন্ধ নেয়া কত বড় একটা নেশা। এই নেশায় পড়ে আমি প্রায়ই নীলক্ষেত যাই, পকেটে টাকা থাকুক আর নাই থাকুক। না পড়া বই উলটেপালটে দেখি, খামাখাই দামাদামি করি আর দামে যখন বনে না তখন এমন একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি, বইওয়ালাকে(বইয়ের ক্ষেত্রে দোকানদার বলতে কেমন কেমন লাগে) বুঝিয়ে দেই, কত বড় পাঠককে সে নিরাশ করেছে।
তাই পকেটে টাকা নেই বলে ঢাকা বইমেলা ছেড়ে দেব, তাতো হয়না। টাকা লাগে, দেবে গৌরী সেন। তা সেই গৌরী সেনকেই বিকালে নীলক্ষেত থেকে ফোন দিলাম বন্ধুর মোবাইল দিয়ে(মোবাইলেও টাকা নাই)।
“হ্যালো বাবু ভাই”
“হ, কি হইছে, কই তুই?”
“ভাই, সোরাওয়ার্দী, আসতে পারবেন, একটা জরুরী কাজ ছিল”
“এই ভর সন্ধ্যায় সোরাওয়ার্দী কি করস? তোরার কি লাজশরম নাই?”
“আরে ভাই আসেন না।”
এক্ষনে বলে নেই, বইমেলায় যাওয়ার পথে নীলক্ষেতে আমি কি করছিলাম। ব্যাগে করে তিনটা ভার্সিটির মোটা মোটা বই বাছাই করে নিয়ে এসেছি পুরান সেমিস্টারের, বেচে দিতে। হাতে কিছু টাকাতো আসবে বই কেনার!
তো টিএসসিতে দাঁড়ায়ে দুইটা চা আর তিনটা বিড়ি শেষ করতে করতে বাবু ভাই চলে আসল। বাবু ভাইয়ের সাথে পরিচয় করায় দিলাম ফ্রেন্ডের। এরপর বললাম, “ভাই, বইমেলায় চলেন।” বাবু ভাইয়ের প্রথম প্রশ্নই ছিল, এখন কি বইমেলার টাইম? আমি অনেক ফ্রেন্ডকেই দেখেছি এখন যে ঢাকায় একটা আন্তর্জাতিক বইমেলা চলছে তার কোন খবরই রাখেনা।
যাইহোক বাবু ভাইরে দিয়ে টিকিট কাটিয়ে ঢুকলাম বইমেলায়। ঢাকা বইমেলা সাধারনত একুশে বইমেলার মত এত জমজমাট হয় না। কিন্তু তারপরো এইটা আমার ভাল লাগে এ কারনেই- স্টলগুলোর সামনে কোন ভীড় নেই, সামনে যাওয়ার জন্য ঠেলাঠেলি করতে হয়না। চাইলে একটা বই হাতে দাঁড়িয়ে সকাল থেকে পড়া শুরু করুন, বিকেলে শেষ করে ফেরত দিন, এরমধ্যে একটা ধাক্কা পর্যন্ত খাবেন না নিশ্চিত।
একেকটা স্টলের সামনে যাই আর মনে হয় আল্লায় ক্যান আমারে এখনো চাকরি জুটায় দিতেছে না। বইগুলো হাতে নেই, মলাটের সৌন্দর্য দেখি, পৃষ্ঠার গন্ধ নেই, র্যান্ডম্লি কয়েকটা লাইন পড়ি আর হতাশ চোখে বইয়ের দাম দেখি। ইরানের একটা স্টলে গিয়ে দেখলাম তারা চটি বই বিক্রি করতেছে, নাম “শিয়ারা কি মুসলিম?”
বাবু ভাই কোন কিছুতেই উৎসাহ পাননা। তার চোখ খালি দেখে কোন স্টলে ললনাদের ভীড়। তাদের পিছনে দাঁড়িয়ে উঁচু হয়ে বই দেখতে তার খুব আগ্রহ। কিন্তু এই বইমেলায় তার ভাত নাই, সেইজন্য অনেক্ষন ধরেই উসখুস করছেন। হঠাৎ করেই বাবু ভাই চেঁচিয়ে ওঠেন, পাইছি। আমরাও তাকালাম, দেখি উনি কোরান শরীফ তোলার মত শ্রদ্ধা আর সম্মান দিয়ে দুই হাতে যে বইটি তুলে নিলেন তা হল খুশবন্ত সিং এর “কোম্পানি অফ উওম্যান”!(যারা বইটি পড়েন নি- পড়ে নিতে পারেন)
বই বেচা টাকা দিয়ে মূলত যে বই আমি কিনতে চেয়েছিলাম তা হল আহমদ সফা’র “যদ্যপি আমার গুরু”, আর সৈয়দ মুজতবা আলীর “গুরুদেব ও শান্তিনিকেতন”। কিন্তু দুটির একটিও আলাদা পেলাম না, কিনতে চাইলে পুরা কালেকশন কিনতে হবে। তবে গ্রীক মিথলজির একটা বই আর “দান্তে ক্লাব” টা কিনলাম।
আর বাবু ভাই কোম্পানি অফ উওম্যান তো কিনলেনই, সাথে আরো দুইটা কিনলেন, এ ওয়ার্ল্ড অফ ম্যারিড উওম্যান আর এ ওয়ার্ল্ড অফ ডিভোর্সড উওম্যান!
মন্তব্য
তাদের পিছনে দাঁড়িয়ে উঁচু হয়ে বই দেখতে তার খুব আগ্রহ।
আপনার বাবু ভাইকে নিয়ে ডিটেল লেখা দেন।
একটা আছে, পড়ে দ্যাখেন। সামনে আরো আসতে পারে।
---------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
আর বাবু ভাই কোম্পানি অফ উওম্যান তো কিনলেনই, সাথে আরো দুইটা কিনলেন, এ ওয়ার্ল্ড অফ ম্যারিড উওম্যান আর এ ওয়ার্ল্ড অফ ডিভোর্সড উওম্যান!
বাবু ভাইর চক্কের জ্যোতি আরো বাড়োক
বাড়ুক, আমাদেরও লাভ হয়
---------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
আপনি ছাত্র নাকি? তাইলে একটা ধরা খাইছেন, ছাত্রদের মেলায় ঢুকতে টিকেট লাগে না শুধু পরিচয়পত্র থাকলেই চলে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
না ভাই, ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট।
------------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
সেম সেম..
তবে চাঁটগাঁয়ের বইমেলা,
এহেম!!
লেখা ভাল হয়েছে!
--------------------------------------------------
"সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বইমেলা নিয়ে এমন লেখা বেরোলে লোকের বইয়ে আগ্রহ বেড়ে যাবে। লিখতে থাকুন।
হা হা হা হা
বানানটা হবে আহমদ ছফা ........
খুশবন্ত সিংয়ের 'দা কম্পানি অভ উইমিন', মার্কেজের ' মেমোরিস অভ মাই মেলাঙকলি হোরস্' আর হুমায়ুন আজাদের 'সব কিছু ভেঙে পড়ে '- সব এক গোত্রের লেখা। ভাল লেখকদের কিছু এই ধরণের লেখা থাকে। নাইপলের 'হাফ এ লাইফ' এই গোত্রের সবচেয়ে ভাল লেখা। আমার নিজস্ব মতামত।
নামগুলো নোট নিলাম, কিনতে হবে
-------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
কাল তো ভাই আমিও গিয়েছিলাম, ওসিরিসের সাথে। দুই কালাতো ভাই মিলে দুটো আতঁলামী পূর্ণ বই কিনলুম...। আরো দুইটা পছন্দ হয়েছে, পরে যাবো আরেকবার।
দান্তে ক্লাব পড়ে আরাম পাইনি, মিথলজির কোনটা কিনলেন ?? এডিথ হ্যামিল্টন ??...
... আর বইমেলা নিয়ে এতো ছোট্ট লেখা দেয়ায় দিক্কার।
_________________________________________
সেরিওজা
হ্যামিল্টনের বইটা পড়েছি, ঐটা তথ্য দেয়ার মত করে লেখা। আমি যেটা কিনেছি,"চিরায়ত পুরাণ", খন্দকার আশ্রাফ হোসেনের, পেপারব্যাক বই, গল্পের মত করে বলা।
দান্তে ক্লাব পড়ছি, দেখি ক্যামন হয়।
ধিক্কার নিলাম
------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
বাপরে! মানুষজন কী কঠিন কঠিন বই কেনে! ইয়ে, 'তোমার জন্য বুক ধুকপুক ধুকপুক করে' কিংবা 'যে গোলাপ তোমার চুলের তরে'-জাতীয় বই মেলায় পাওয়া যায় না?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ঐ ধরনের স্টলতো পাইলাম না, আমিও খুঁজছিলাম
--------------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
ধূর, এটা তাহলে বইমেলাই না!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
নতুন বইয়ের গন্ধ রিপ্লেস করার মতো পদার্থ এখনো পৃথিবীতেই আসেনি। তোমার জন্য শুভ কামান, যাতে চাকরী হয়ে যায় আর তুমি মন ভরে বই কিনতে পারো।
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হুম । আসলেই ঢাকা বইমেলাতে যাওয়া হয় না ।
দান্তে ক্লাব কি ইংলিশ কিনসিলেন নাকি ? বইটা কেমন ?
"গুরুদেব ও শান্তিনিকেতন" টা দেখছি কিনতেই হবে
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
নতুন মন্তব্য করুন