২৭-১২-০৯
অদ্ভুত এক বিষন্নতার মধ্যে দিয়ে দিন কেটে যাচ্ছে। এম্নিতেই আমার প্রতিদিনকার কাজের লিস্ট অনেক ছোট, যেচে কিছু করব সেই আগ্রহ কখনই নেই। দায়ে না পড়লে আর মাথায় সমস্যা না হলে আমি আমার হাতপা নাড়াতে নারাজ। পিসিটা নষ্ট হওয়ায় প্রতিদিনের লিস্ট থেকে তিনটি অত্যাবশ্যকীয় কাজঃ ফেসবুক, সচলায়তন আর বিডিজবস বাদ পড়ে গেছে।
অতি দরকারী কিছু কাজ যেমন খাওয়াদাওয়া, গলির দোকানটা থেকে চা-বিড়ি আর প্রকৃতির সাথে জরুরী মিটিং ছাড়া সারাদিন বিছানাতেই কাটিয়ে দেয়ার চেষ্টায় আছি। হাতে সবেধন নীলমণি “লস্ট সিম্বল”, ইংরেজি বাংলা দুইটাই আছে। এটা শেষ হয়ে গেলে নতুন আর বইও নেই।
ড্যান ব্রাউন লোকটা খুব খারাপ, তার প্রতিটা বই পড়ি আর কিরা কাটি- নেক্সট টাইম যদি তোর বই আর পড়ছি। একটা সোজাসরল কাহিনী লোকটা এত প্যাঁচায়, এতই প্যাঁচায়- শেষ পর্যন্ত বিরক্তি ধরে যায়।
কিন্তু তারপরো বন্ধুদের উন্মাদনার কাছে হার মানি।
২৮-১২-০৯
খুব একটা খারাপ লাগতেছেনা বইটা। নতুন বাসায় ওঠার পর এতদিন মনিটর ছাড়া চোখ সাধারনত অন্য কোথাও যেত না। এখন বিছানার পাশের জানলা দিয়ে মাঝে মাঝে তাকিয়ে থাকি। দুপুরে জানলার মুখোমুখি ফ্ল্যাটের বারান্দায় একজনের গোসল শেষে টাওয়েল পিছনে নিয়ে চুল ঝাড়া, বিকেল হলে কোনার দোকানগুলোর সামনে বাচ্চাদের শর্টপিচ ক্রিকেট আর নিকটবর্তী ছাদগুলোতে কমবয়সীদের হাঁটাহাঁটি- আমার জানলা দিয়ে যে এতকিছু দেখার ছিল, কে জানত। তাই বিছানায় হেলান দিয়ে হারানো চিহ্নের খোঁজ করতে করতে সময়সীমা মেনে জানলার দিকেও সরে আসি মাঝে মাঝে।
২৯-১২-০৯
ইংরেজিটা শেষ হল, সন্ধ্যা থেকে বাংলাটা উল্টাচ্ছি। কিছু কিছু জায়গা রিভাইজ দিচ্ছি। অনুবাদের ক্ষেত্রে অল্টাইম হিট সেবা প্রকাশনী। তারপরো নাজিমউদ্দিনের(বাতিঘর প্রকাশনী) উপর ভরসা ছিল তার অন্যান্য থ্রিলার অনুবাদ পড়া থাকার কারনে।
শুরু করে একটা লাইন পড়েই হাসতে হাসতে পেটে ব্যথা হয়ে গেল। আপনাদের সাথে শেয়ার করিঃ
Chapter 2: page 10
A single bell chimed on Mal’akh’s grandfather clock, and he looked up.
অনুবাদঃ মালাখের পিতামহের ঘড়িতে একটা ঘন্টা বাজলে মুখ তুলে তাকালো সে।
(আন্ডারলাইন করা অনুবাদ লক্ষ্য করুন। )
৩০-১২-০৯
পুরা বাংলা বইটা আক্ষরিক অনুবাদ এবং বানান ভুলে ভরপুর। বাদ দেই এইটার কথা।
বিষন্নতা এখনো কাটেনি। আগামীকাল সব বন্ধুদের সাথে দেখা হবে আবার, গত চার বছরে উঠতে বসতে যে মুখগুলো আমার ছায়া হয়ে ছিল, যে হাতগুলো আমার কাঁধে ছিল বলে সুখেদুখে কখনো নিজেকে একা মনে হয়নি- তাদের সাথে। যে আড্ডাগুলো হয়না বলে কি এক অপূর্ণতা নিয়ে প্রতিভোরে ঘুমাতে যাই, সেই আড্ডা আবার হবে। তাদেরকে একসাথে আবার কবে পাবো জানিনা। বন্ধুরা, নতুন বছরে তোরা সবাই ভাল থাকিস।
নতুন বছর সবার জন্য নতুন নতুন আনন্দময় উপলক্ষ্য, নতুন কাজের নতুন উদ্যম নিয়ে আসুক- এই কামনা করি।
কালকে খুব ব্যস্ত থাকবো, তাই আজকেই জানিয়ে দিলাম- শুভ নববর্ষ।
মন্তব্য
হা হা। বিচ্ছিরী অনুবাদ।
বইটা পড়ব পড়ব করে পড়া হচ্ছে না।
----------------------------------------
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
----------------------------------------
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
"পিতামহের ঘড়ি" (!)
হাঃহাঃ হিঃহিঃ
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো...
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিহ্মা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃহ্মমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দ্বিরুক্তি?
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিহ্মা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃহ্মমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
grandfather clock মানে হল পুরোন দিনের বড় পেন্ডুলামের ঘড়ি
------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
হেহে!!! দাদার ঘড়ি!
আগে সেবার বই পড়তাম , এখন পড়া হয় না .
অনুবাদ পড়লে হ্যারি পটার এর অনুবাদ পড়ে দেখতে পারেন।
(৪র্থ পর্ব বা তার পর এর গুলা বিশেষ করে ) ভয়াবহ অনুবাদ !
বাতিঘর অতটা খারাপ করে না মনে হয় । একটাই অনুবাদ পড়েছি ওদের ।
ভিঞ্চি কোড ।
অনুবাদ এ মজা অনেক টাই কমে যায়।
বোহেমিয়ান
শুভ নববর্ষ....
ভালো থাকুন প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ
-----------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
নাজিমউদ্দীন সাহেবের একটা অনুবাদ (দ্য ডে অফ দ্য জ্যাকেল) ভুল করে পড়ে ফেলছিলাম; মোটামুটি নাকে খত দিছি যে আর না। ইংলিশ পড়ি নাই, আসলে কি ছিল জানি না-কিন্তু অনুবাদে একটা লাইন ছিল এইরকম, আফসোস করে একজন বলতেছেঃ
"হায়রে আমার চৌদ্দপুরুষের পিতৃভূমি!"
কিংবাঃ
"এই পৃথিবীতে তুমি এটা কিভাবে করলে?!"
ড্যান ব্রাউনের ট্রিলজীর এই পার্টটাকেই কেন জানি বেশী ম্যাড়ম্যাড়ে লাগছে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
বানান ভুল হবার কারণ হচ্ছে দ্রুততা- একই প্রকাশনীর অন্যান্য অনুবাদে এমনটা সাধারণতঃ দেখবেন না। এটা আসলে লোকজনের আগ্রহ মেটাতে খুব তাড়াতাড়ি বের করা হয়েছে...
অনুবাদ নিয়ে কিছু বলার নাই। আক্ষরিক অনুবাদ কখনো খুব দরকারী বলে মনে হয়, কখনো বিরক্তিকর লাগে ...
ভালো কথা , এই বইয়ের একটা রিভিউ লেখসিলাম। আপনার পড়া হইলে কীরাম লাগ্লো, সেটা বইলেন। মিলায়া দেখুম...
_________________________________________
সেরিওজা
বাংলাটা পড়তে গিয়ে বারবার হোঁচট খাইছি।
-------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
- অনুবাদের ব্যাপারে আমার কাছে অনুবাদকের স্বতস্ফুর্তঃতা কাম্য। দাঁতভাঙা বাংলা করলে আসল ঘটনাটাই চাপা পড়ে যায় অনুবাদের ঠেলায়। আমি সুযোগ খুঁজছি যে কোনো একটা অনুবাদে হাত দেয়ার, পাচ্ছি না। এই পরিকল্পনা থেকে ঠিক করেছি কুংফু পান্ডা বা এ জাতীয় সিনেমাগুলোর বাংলায় একটা সাবটাইটেল করবো। মানে ইংরেজীটার বাংলায় অনুবাদ আরকি। তবে অবশ্যই দাঁতভাঙা না।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
মাঝে সাঝে সে ভাল অনুবাদ করে । কিন্তু কিছু জিনিস আসলেই অনুবাদ করাটাই পাপ ।
নতুন মন্তব্য করুন