ঠা-ঠা রোদে পিয়ারীমোহন রোডটা কেমন যেন দুলতে থাকে। আমরা যারা টেপির বাড়ির দেয়ালে বসে থাকি তারা ভাবি, ব্যাপার কী, রাস্তা নাচে কেন! কেউ একজন একটু নিরিখ করে বলে, মনে হয় রোদে পাশের ড্রেন দিয়ে ভাপ উঠছে। আরেকজন বলে, ড্রেন দিয়ে ভাপ উঠলে রাস্তা নাচবে কেন? তারপর চুপচাপ আমরা সেই দিকে তাকিয়ে থাকি। ভাপ আসলে রাস্তা দিয়ে উঠছে, নাকি পাশের ড্রেন দিয়ে উঠছে, আমরা সেইটা বোঝার চেষ্টা করি। তবে ভাপ উঠলে কেন রাস্তা নাচবে সেটা নিয়ে মাথা ঘামাইনা। এসময় সড়-সড় করে পাশের শুপারি গাছের একটা ডেগো পড়ে যায়। একটু কাক-ওড়ানি বাতাস হয় যেন। মাথার উপরের নারকেল গাছটাও আড়মোড়া ভাঙে বুঝি। আমাদের গায়ে অল্পকিছু নারকেলের শুকনো ফুল পড়ে। আমরা লাফ দিয়ে দেয়াল থেকে নেমে গেঞ্জি আর হাফ প্যান্ট ঝাড়াঝাড়ি করি। বলি, দেখতো গায়ে মাজালি পড়লো নাকি? কারো গায়ে মাজালি পিঁপড়া পড়লে টোকা দিয়ে ফেলে দিই। আর তখনই আমাদের মাজালির দোকানের কথা মনে পড়ে।
পিয়ারীমোহন রোডের শেষ মাথায় যেখানে ড্রেনটা মিশেছে আরো তিনটা ড্রেনের সাথে, আর রাস্তাটা ডানে বাক নিয়ে চলে গেছে চিত্তরঞ্জন রোডে, সেখানে আমরা কালো রঙের মুদিদোকানটা দুলতে দেখি। রোদে, নাকি রোদের ভাপে, সে প্রশ্ন অবশ্য মাথা থেকে চলে যায় সেই নারকেল ফুল ঝাড়ার সময়ই। আমাদের মনে পড়ে দোকানের নাম মাজালির দোকান হলো কী করে সেই গল্প-
প্রথমে একদিন সুমন তার মায়ের জন্য দুটাকার নীল কিনতে গেলে তার বুকপকেটের কাছে মাজালি কামড়ায়। বিকালে খেলার সময় সে তার বুকের সেই লাল রঙের ফোলা চাকতি দেখিয়ে যখন টিপে টিপে বিষ বের করতে থাকে, তখন আমরা বলি, ওই তোর আরেকটা দুদু হইসে! সুমন এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। শার্টের বোতাম লাগিয়ে চলে যায় ড্রেন থেকে বল তুলতে। তারপরে একদিন মনা তার মায়ের জন্য বল-সাবান কিনতে গেলে হঠাৎ করে তার হাফ প্যান্টের মধ্যে কী যেন হয়ে যায়! মনে হয় আবারো কেউ তাকে মোসলমানী দিয়েছে। বিকালে খেলার সময় যখন সে তার হাফ প্যান্টের পায়া গুটিয়ে সেই মাজালির কামড় দেখায়, আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে তার আরেকটা বিচি হয়েছে। মনাও সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। সে তার প্যান্ট ঠিকঠাক করে চলে যায় ড্রেন থেকে বল তুলতে। এভাবে, একে একে আমাদের সবাইকে মাজালি কামড়ালে সেই দোকানের নাম ‘মাজালির দোকান’ না দিয়ে আমাদের আর কোনো উপায় থাকে না।
তবে খারাপ লাগে দোকানের সেই অদ্ভুত দোকানিটার জন্য। সেই চার ড্রেনের মোহনায়, বাঁশের মাচার উপর, আলকাতরা দেওয়া কাঠের চৌকো দোকানে বসে, যে শুধু পড়ে আর পড়ে। দোকানের সাথে সাথে তার নামও হয়ে যায় মাজালি। মাজালি লোকটার আসল নাম আমরা কেউ জানতে চাই না। কিন্তু এত পড়েও সে গাড়ি-ঘোড়া কেন চড়েনা সেটা জানতে চাই মাঝে মাঝে। তার ভারী চশমা আর হাতের ভারী বই দেখে সে প্রশ্ন করার সাহস হয়না। বই পড়ার সময় তাকে কেমন যেন মাস্টার মাস্টার লাগে।
প্রশ্ন না করলেও তার গাড়ি-ঘোড়া না চড়ার কারণ একসময় আমরা বের করে ফেলি। লোকটা বই ছেঁড়ে! কেউ তার কাছে দুটাকার জিরা কিনলেই, সে হাতের বই খানা থেকে খ্যাচ করে একটানে একটা পাতা ছিঁড়ে, তাতে মুড়ে দেয় সেই জিরা। যদি বলি, ‘বই ছিঁড়েন ক্যান?’ সে বলে, ‘নিয়ে যাও একটা পাতা, এসব বই আমার অনেক আছে’। আমাদের মনে পড়ে যায়, বই ছিঁড়লে আমাদের বাবা-মা’রা আমাদের কীভাবে মারে। আর বলে, ‘কতো বড়ো সাহস! বই ছিঁড়িস! মানুষ হতে পারবি না, মুদির দোকানদার হবি’। আমরা অবাক হয়ে এই বই ছেঁড়া দোকানিটা মানুষ কিনা সেইটা ভাবি। আমাদের মনে পড়ে তার নাম ‘মাজালি’। সে কি আসলেই একটা মাজালি পিঁপড়া? এত-শত না বুঝলেও তাকে আমাদের ঈর্ষা হয়। মনে মনে আমরাও বই ছেঁড়ার স্বাধীনতা চাই।
মাঝে মাঝে তার দেওয়া সেসব পাতা আমরা একটু পড়ে দেখি। ‘শ’-যুক্ত শব্দ থাকে তাতে অনেক। শ্রেণী, শত্রু, আর শ্রমিক। আজব কিছু শব্দও থাকে প্রোলেতারিয়েত, বলশেভিক, আর সেনাপতি ফ্রুঞ্জে! ‘ফ্রুঞ্জে’ শব্দটা আমাদের ভালো লাগে। আমরা একে ওকে বলি, ‘ঐ, তুই একটা ফ্রুঞ্জে’। তারপরে আমরা ফ্রুঞ্জে... ফ্রুঞ্জে করতে করতে হাততালি দেই।
মাঝে মাঝে সেসব কাগজে আজব কিছু ছড়াও থাকে। যেমন একটু আগে পিয়ারীমোহন রোডের কাঁপন, শুপারি পাতার সড়সড় আর গায়ে নারকেল ফুল পড়ার আগে সুমনের কিনে আনা দুটাকার চানাচুর যে কাগজে মুড়িয়ে দেয় মাজালি তাতে আমরা আজব এক ছড়া পাই।
ছড়াটার মাথামুন্ডু কিছু না থাকলেও পড়ে খুব মজা লাগে। আমরা হাত তালি দিতে দিতে ছড়া কাটি। একজন বলে, ‘চল নৌকা বাইচ খেলি’। আমরা ছড়া কাটতে কাটতে সেই কাগজ ছিড়ে দুইটা বাইচের নৌকা বানাই। তারপর পিয়ারীমোহন রোডের পাশের সেই ভাপ ওঠা ড্রেনে ‘রেডি...স্টিডি...গো!’ বলে ছেড়ে দেই। ড্রেনের স্রোত, আবর্জনা আর আগাছা কেটে আমাদের নৌকারা তুমুল প্রতিযোগিতা করতে থাকে। আমরা হাত তালি দিতে দিতে সেই মাথামুন্ডুহীন ছড়াটা পড়তে থাকি, ‘উর্দিতো বিলাতী...ফরাসী কাঁধপট্টি...জাপানী তামাক, হেই- শাসক কল্চাক’। আর দৌড়াতে থাকি ড্রেনের ধার দিয়ে। একসময় নৌকাদ্বয় ড্রেন ধরে এগিয়ে চলে যায় মাজালির দোকানের নিচে। আমরা দোকানের সামনে এসে থেমে যাই। খেয়াল করি মাজালি তার ভারী চশমা দিয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের নৌকাবাইচের দিকে। মাজালির মেয়েটা খালি গায়ে একটা ঘটি প্যান্ট পরে মাজায় কালো সুতায় বাঁধা টুনটুনি বাজাতে বাজাতে, একটা ছোট্ট তেলের শিশি হাতে হাজির হয়। ‘বাজান মায় দুগা তেল চায়’। আমাদের সামনে মেয়ের ‘বস্তি’ ভাষায় মাজালি মনে হয় একটু লজ্জাই পায়। আর বিরক্ত হয় তেলের শিশি দেখে। বলে, ‘তেল যদি সব তোর মা’ই খাবে, তাহলে বিক্রি করব কী?’
তারপর শিশিতে তেল ঢেলে দিয়ে আমাদের দিকে তাকালে আমরা তার বইয়ের পাতা ড্রেনে ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য অপরাধবোধে ভুগি। আর সেজন্যই তার কাছ থেকে আরো দুটাকার কদমা কিনি। আবারো সে খ্যাচ করে তার হাতের বইয়ের একটা পাতা ছেঁড়ে, তারপর বৈয়াম থেকে কদমা বের করে তাতে মুড়ে দেয়। কদমা ভাগযোগ করে মুখে দিয়ে আমরা ফিরতে থাকি টেপির বাড়ির দেয়ালের দিকে। আর সেই কাগজে কী লেখা তাই পড়তে চেষ্টা করি। এবারের পাতাটা মনে হয় বইয়ের প্রথমের একটা সাদা পাতা। যে পাতায় গোটা অক্ষরে কে যেন লিখে দিয়েছে একটা কবিতা,
কবিতার শেষে শব্দার্থ নেই দেখে আমরা হতাশ হই। কেউ জানতে চায় ‘ফাশিস্ত’ মানে কী। আবার, কেউ খেয়াল করে কী অদ্ভুত নাম এই লিখিয়ের, ‘কমরেড কাজল’! আমরা ভাবি, ‘কমরেড’ কি কারো নাম হতে পারে?
একটু পরে বিরক্ত হয়ে কেউ একজন বলে, ‘চল আবার বাইচ দেই’। কিন্তু মাজালির বইয়ের পাতা ড্রেনে ভাসানোর অপরাধবোধ থেকেই তাতে রাজি হইনা আমরা। তখন আমরা কবিতাওয়ালা কাগজটা দিয়ে উড়োজাহাজ বানাই। কাগজে উড়োজাহাজ। তারপর মন্ত্র পড়ার মতো করে ফুঁ দিয়ে যখন সেটা ছুড়ে দিই উপরে, কেমন যেনো গোত্তা খেয়ে সেটা বাঁক নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে সেই ড্রেনেই।
পিয়ারীমোহন রোডটা রোদে কাঁপতে থাকে। আবারো একঝলক কাক-ওড়ানি বাতাস হয়। সেই ডেগোঝরা শুপারি গাছ থেকে একটা চড়ুই উড়ে এসে বসে আমাদের মাথার উপর নারকেল গাছে। দূরে ফেরীওয়ালার হাক শোনা যায়। টেপির দেওয়াল ধরে কিছু কালো পিঁপড়া সারবদ্ধ হয়ে খাবার নিয়ে ছুটে চলে অজানায়। আর সেই কবিতা লেখা উড়োজাহাজ পিয়ারীমোহন রোডের ড্রেন ধরে ভাসতে ভাসতে চলে যেতে থাকে রোদের তাপে অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া মাজালির দোকানের দিকে। আমাদের কারো কারো মনে হয়, তাহলে কি মাজালির নামই কমরেড কাজল?
মন্তব্য
ভীরু, পড়ে অনেক ভালো লাগলো!! পুরানো পুরানো গন্ধ ও পেলাম কিছু!!
বর্ণনাগুলো অসাধারণ
চরম ভাই, চরম...!!!
আমি সচলে নতুন হলেও আপনার লেখার প্রতি অন্যদের মুগ্ধতা যে মাত্রাতিরিক্ত নয়- তা বেশ বুঝতে শিখে গেছি...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগছে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
দুর্দান্ত গল্প।
'স্পর্শের গল্প সংকলন'-এর কতদূর কী করলা?
কী বলে না বলে!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অসাধারন হয়েছে গল্পটা । আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারছি ভোঁতা ভাবটা দূর হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ । চালিয়ে যান ।
স্পর্শের গল্প সঙ্কলনের নাম হবে "স্পর্শক গল্প" । স্পর্শ অনুমতি দিলে আমি স্ক্রিপ্টিং করে একটা প্রচ্ছদ জেনারেট করে দিব । কি স্পর্শ, রাজি ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
নাম হোক 'স্পর্শকাতর গল্প'
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
জাস্ট অসাধারণ। আপনার প্রতিটা গল্প পড়ার পরই আমার মনে হয়, এইটাই আপনার সেরা লেখা। এইটা পড়েও মনে হলো।
জীবনের অনেকটা সময় পর্যন্ত আমি এবং আমার আশেপাশের সব বন্ধুরা জানতাম এটা আসলে রেডি, সেডি গো!!!
আমিও । একবার আবার কয়েকজন দুষ্টু ছেলে মিলে এটাকে বিকৃত করে "লেডি বেডি গো" বানিয়েছিলাম ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আর আমরা 'রেডি' বলতে না বলতেই স্টার্ট করে দিতাম।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অসাধারণ লাগলো!! আরো লিখুন, এমন লেখা পড়লে গা ছমছম করে। কী ক'রে লেখেন এমন? ছোটোবেলার কথা ভাবলে নানা ঘটনার কথা মনে পড়ে, এমন বন্ধ্যা দুপুরের কথা স্মৃতিতে আসে না সহজে। আপনি ফিরিয়ে আনলেন তেমন অনেক দুপুর।
ভালো থাকুন।
লিখে ফেলেন না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আরে আমরা তো লিখতেই পারি, কিন্তু সে লেখা তো আর এইরকম হবে না, কাজেই আপনি লিখতে থাকুন।
এরকম অসাধারণ একটা লেখা বারবার পড়া যায়
এরকম অসাধারণ একটা লেখায় বারবার মন্তব্য করা যায়
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু!
লেখার সাহস পাই আর লেখার উৎসাহ পাই আপনার কমেন্টে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ভালো লেগেছে স্পর্শ, আপনার গল্প।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
তোমার কবিতাগুলো বেশি ভালো লাগে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
স্পর্শ, যতই দিন যাচ্ছে ততই বেকুব বনে যাচ্ছি!
প্রথম দিককার 'আবজাব' পড়ে যে স্পর্শের লেখার সাথে পরিচিত হওয়া... ধীরে ধীরে তার খোলস থেকে বের হয়ে আসাটা অন্তত আমার কাছে বিস্ময়কর।
গুরুগম্ভীর কোন কমেন্ট করতেসিনা... এটুকু বলি- আপনার লেখা পড়ে মুগ্ধ হই।
ধন্যবাদ আকতার ভাই।
নিশ্চই আপনার মুগ্ধতা, আপনার ছন্দ-ছড়া পড়ার পরে আমার মুগ্ধতাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
রকম অসাধারণ একটা লেখা বারবার পড়া যায়
এরকম অসাধারণ একটা লেখায় বারবার মন্তব্য করা যায়।
রানার সাথে একমত।।
আপনার গল্প স্পর্শ করে যায়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
ইয়ে, আপনি কি নুপুর ভাবি?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এই গল্প পড়ে কয়েকটি চিন্তা মাথায় এলোঃ
(১) এর সাথে আগের লেখার মিল খুবই কম। একজন লেখকের এমন উত্তরণ আমি কদাচিৎ দেখেছি।
(২) কয়েকটি মন্তব্যের পর এটাও কি সচলায়তনের আর্কাইভে হারিয়ে যাবে? এত যত্নে লেখা এমন উৎকৃষ্ট রচনার স্থায়ী লোকগোচর ঠিকানা দরকার।
(৩) আগে কোয়ান্টাম মেকানিক্স পর্বে আমার এক মন্তব্যের উত্তরে বলেছিলেন ঃ 'আমি রাজনীতি বুঝি না'। রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দও এড়াতে পারেন নি পুরোপুরি।
রাজনীতি আসলেই বুঝিনা আমি, চেষ্টা হয়তো করি কখনো কখনো। পারি না।
আর লেখা নিয়ে আমার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি প্রচুর। আমার আগের কিছু পোস্টে এধরণের নীরিক্ষার রয়েছে।
উৎসাহবাঞ্জক কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সচলে আমরা সদাই প্রশংসামূখী থাকি, তাই প্রসংসাও সাধাসিধে লাগে। এই লেখা সেই সাধাসিধে প্রশংসার চেয়ে বেশি কিছু দাবি করে। একটা আস্ত সক্ষম গল্প।
এবার সামান্য বক্তব্য।গল্পটা একটা আবহ তৈরি করেছিল বড় ফ্লাইটের জন্য, কিন্তু শেষে সেটা এসেও যেন এল না পুরোপুরি।
ছোঁড়াপাতার মানুষটা মারাত্মক রকম গল্প-সম্ভাবনা রাখে।
স্টাইলের যে শহীদুল জহিরীয় ধাঁচ সেটা এহবাহ্য। আমার মনে হয়, আপনার মনে গল্প আছে আর আপনি গল্প বলতে জানেন।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ব্যাপারটা আসলেই সত্যি। আসলে নিজের দুর্বলতার কারণেই একটা ছোট্ট প্রলোভনে জড়িয়ে গিয়েছি আজকাল। শুধুই ব্লগে লেখা লেখি করার কারণেই হয়তো। ব্লগে বড়ো লেখা লিখতে ভরসা পাইনা। কেউ পড়বেনা আশংকা করে। 'বেশি মানুষ পড়ছে' এধরণের একটা প্রাপ্তিবোধ কাজকরে।
ব্লগের পাঠকও আসলে কাজের ফাকে ঢু মারে। যেমন এই আমিই বড়ো কিছু পড়ার আগে হাতে সময় করে নিই। যেটা আমারই ব্যার্থতা।
সত্যিকথা বলতে এসব কারণেই অল্পকথায় গল্প বলার তাগিদ থাকে।
আপনার এই সুন্দর আর গোছানো কমেন্টটা আমাকে পরিশুদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে আরো একধাপ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আগেও বলেছিলাম, আবারও বলে গেলাম, আমার জীবনের সেরা গল্পগুলোর একটা, অনায়াসে।
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ
আরেফীন ভাই, এভাবে বললে অনেক চাপ এসে যায় নার্ভে।
উৎসাহ দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কোন কথা না বলে আপনার পিঠ চাপরে দিতে পারলে ভাল লাগত।
অনেক ভাল লাগছে গল্পটা পড়ে।
লেখাটা যেন কোথায় নিয়ে যায়~পড়তে পড়তে নিজেকেই যেন খুজে পাই, খুজে পাই সেই হারানো স্বপ্ন 'কমোরেড' হওয়ার সেই অনন্ত চেষ্টা... ... ...
বা:!
----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
দুর্দান্ত !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অসাধারন!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
চমত্কার!
আপনাকে "আবজাব" গ্রুপ থেকে খারিজ করা হলো চিরতরে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আপনি মিয়া বর্বর, আমার আব্জাবত্ব নিয়া হরণ করতে চান।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সংসারে এক সন্ন্যাসী বলেছেন-
আপনাকে "আবজাব" গ্রুপ থেকে খারিজ করা হলো চিরতরে
স্পর্শ, আগেও ব'লে গিয়েছিলাম অনেক অসাধারণ লেগেছে গল্পটা। সার্ভার হেঁচকিতে হারানোর পর রিপোস্ট করলেন ব'লে থ্যাংকস। আবারও প্রমাণ-ছাপ রেখে গেলাম ভালোলাগার। আপনার কাছ থেকে এরকম লেখা আরো চাই।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
আপনিও সন্ন্যাসীর সাথে হাত মেলালেন!!
আবারো জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হ্যাঁ, আমিও সংসারে আরেক সন্ন্যাসী!
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
পড়া এবং মন্তব্য করার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাদের ভালোলাগা ভালোলাগে বলেই লিখতে ভালো লাগে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
লেখা অতি চমতকার হইছে। বই বের করার চিন্তা ভাবনা করতাছ কিছু?
- সেইরকম। অনুভূতির প্রকাশভঙ্গিগুলো একদম জীবন্ত। পড়ার সময় ভাবছিলাম একটা কথা, সেইটা আর বলবো না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কৌতুহলে মরে যাবো কিন্তু!!!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কখন কখনও মন্তব্য করার মনে হয় কিছু থাকে না। একধরনের আচ্ছন্যতা পেয়ে বসে মনকে... ভালো লেখা...
তোমার বর্ণনাগুলো মারাত্মক, গল্প নিয়েতো কথা চলছেই, তাই এখানে কিছু বলছিনা, প্রিয়তে রাখলাম...
আফসোস হয় মাঝে মাঝে যে আবজাব ছাড়া আমি কিছুই লিখতে পারিনা... ভাল লাগে যখন কেউ কেউ পারে... ...লেখা ছেড়োনা কখনই...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
'সাধু সাধু সাধু' রবে কাঁপে চারিধার-
সবে বলে, 'পরিষ্কার, অতি পরিষ্কার!'
দুর্বোধ যা কিছু হয়ে গেল জল,
শূন্য আকাশের মতো অত্যন্ত নির্মল।
আপনার দেখি পিপড়া প্রীতি আছে... আগে একটা লেখা পড়েছিলাম... একজন দয়ালু ঈশ্বর মনে হয় নাম ছিল লেখাটার... সেখানেও একসময় পিপড়ার পথের দিকে ঝুঁকেছিলেন... সুন্দর হয়েছে এটা... আরো পরিপূর্ণতা চাই...
আরেকবার পড়লাম। আগেরচেয়ে আরো অনেক 'কম্প্যাক্ট' মনে হলো গল্পটা।
স্পর্শ ভাইয়ের কাছ থেকে আরো নিয়মিত লেখা না পাওয়ার আফসোস পোড়ায়।
এত সুন্দর লেখা স্পর্শ... তোমার মোটামুটি সব লেখাই কম-বেশি ভালো লাগে, কিন্তু এইটা যেন অনেক বেশি যত্ন নিয়ে লেখা। একদম দেখলাম চোখের সামনে অলস ছুটির দুপুরের দস্যিপানা, একটু একটু করে জীবনের জটিল দিকগুলোর জট ছাড়াতে শেখার চিন্তাভাবনাগুলো খুব জেনুইন লাগলো, আর বর্ণনার ভঙ্গিটা অসাধারণ। এমন আরো অনেক যেন লিখতে পারো তুমি, আরো বেশি ভালো।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কারো কারো বই বের করা অন্যায়। কারো কারো বই না বের করা অন্যায়। আপনি বই না বের করে অন্যায় করতেছেন। কিছু অসম্ভব সুন্দর জিনিস কেবল আপনি একা একা দেখে উপভোগ করে ফেলে রাখতে পারেন না।
তানভীর ভাই, প্লিজ...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ!!!
নারিকেল ফুল ঝরে পড়ার ব্যাপারটা খুব ভাল লাগল, ভীষণ প্রিয় একটা ব্যাপার ছিল ছোটবেলায়,
প্রায় ভুলতেই বসেছিলাম।
নতুন মন্তব্য করুন