১. ঘরকন্না
বাড়িতে খুব হইচই। কিছুক্ষণ পরে পরেই হাড়ি-পাতিল-চামচের ঠুনঠান আর আর ছোটো বোনদের চেচামেচি কানে আসছে। আজকে বিশেষ দিন। আজকে ওরা রান্না করবে। সেই সকালে উঠে মাকে রান্নাঘর থেকে বিতাড়িত করেছে। অবশ্য কাজের মেয়েটাকে বিতাড়িত করার মতো সাধ্য হয়ে ওঠেনি এখনো কারো। আজ দুপুরে সব খাবারের দায়িত্ব ওদের। আমার ঘরের বন্ধ দরজা ভেদ করে তাদের রন্ধনযজ্ঞের রব কানে আসছে। সে রবের তন্ত্র-মন্ত্র অবশ্য সব কানে আসছে না। ভাসা ভাসা যা শুনছি তাতে বোঝা যাচ্ছে যে মহোচ্ছবটি রাঁধা হতে যাচ্ছে তা হলো শাহী-ফালুদা। শাহী-জিলাপী, শাহী-হালিম খেয়েছি। শাহী-ফালুদা বস্তুটা কী সেটা বুঝতে পারছিনা। ক্লিয়ার হওয়ার জন্য দেখতে গেলাম ঘটনা কী। দেখি এলাহি কারবার। খাবার টেবিল থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত ঘটি-বাটি-হাড়িতে ছয়লাব। এমনকি সেদিন কিনে আনা মাংস কাটার চাপাতিটাও আছে। ফালুদা রাঁধতে চাপাতি কেন লাগবে বুঝতে পারছিনা। একজন রান্নাঘরের এক ভয়ঙ্কর তেলাপোকা তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজের মেয়েটাকে কঠোর হুকুম দিচ্ছে। আরেকজন এক ডিস বরফ-পানিতে লেবু কচলে কচলে মেশাচ্ছে। একটু পরে নাকি ফালুদার দুধ এর মধ্যে দেওয়া হবে। সাথে কর্নফ্লাওয়ার নামক আটা। দুধ একটা কলয়ডাল সাসপেন্স, লেবু-পানির খপ্পরে পড়ে এর পিএইচ নেমে গেলে যে এর সব প্রোটিন স্ট্রাকচার জড়িয়ে পেচিয়ে যাবে। মানে দুধ ফেটে যাবে। সেটা ব্যাখ্যা করে বুঝাতে গেছি, অমনি ওরা তাড়িয়ে দিলো। বলে, “ভাইয়া যাও তো! খবরদার এখন জ্ঞান ফলাতে আসবা না। তুমি কি সিদ্দিকা কবীরের চেয়ে বেশি জানো?” আমি অবাক হই! ইলিমেন্টারি কেমিস্ট্রি না জেনে একজন রান্না করে কেমনে, সেইটা বুঝিনা! আফটার অল রান্নাতো আসলে কিছু কেমিক্যাল রিয়্যাকশন নাকি?
কাজের যে অগ্রগতি, তাতে মনে হচ্ছে আজ বিকালে শুধু শাহী-ফালুদা দিয়েই দুপুরের খাওয়াটা সারতে হবে। গজ-গজ করতে করতে আমি কীভাবে ঢাকায় একা একা দুই বছর ছিলাম, কীভাবে সকাল-বিকাল-রাত তিনবেলা রান্না করে খেয়েছি। ফালুদা-মালুদা বাদ দিয়ে কেন তাদের বসা-ভাত আর মাড়গালা-ভাতের রন্ধনশৈলির পার্থক্য ভালো করে শেখা উচিৎ, সেসব বলতে বলতে নিজের ঘরে ফিরে আসি।
এরপর আরো অনেকটা সময় পার হয়ে গেলে ক্ষিদে যখন পেটের নাড়িভুড়ি পার হয়ে ঘাড় বেয়ে মাথার চাঁদিতে উঠে যায়, তখন ফালুদা রান্না শেষ হয়। আমিও তড়িঘড়ি খাবার টেবিলে গিয়ে বসি। “কই, শাহী-তাজমহল না কী যেন রান্না করলি দেখা শিগ্গীরি!” তারা জুলুজুলু চোখে সামনে রাখা এক ডীস আজব বস্তুর দিকে নির্দেশ করে। অবাক কান্ড! লেবু-পানিতে ফালুদার দুধ ফেঁটে যায়নি। এটা ক্যামনে হলো? কর্নফ্লাওয়ারের বাড়তি স্টার্চ অন্য কিছু ঘটালো কিনা ভাবতে ভাবতে যেই বড়ো চামচটার দিকে হাত বাড়াই। অমনি ওরা ছো-মেরে কেড়ে নেয়। শাহী-ফালুদা নাকি এখনই খাওয়া যাবে না। প্রথমে এটা ফ্যানের বাতাসে রুম টেম্পারেচারে আসবে। তারপর তাকে শাহী-মর্যাদায় ফ্রীজে রেখে তার মাথা আরো ঠান্ডা করা হবে। তবেই নাকি প্রকৃত স্বাদ!
মা ততক্ষণে এসে পাংশু মুখে তার গুনধর কন্যাদ্বয়ের শিল্পকর্ম দেখছে। তখন আমি বলে উঠি, “শোন তোদের দুটোকে বিয়ে দেব গ্রামের স্কুলমাস্টারের সাথে। সকালে মাস্টারমশাই দু-চারটে খেয়ে ইস্কুলে পড়াতে যাবে। আর তোরা শাড়ির আঁচল মাজায় গুজে গোবর-জল দিয়ে ঘর লেপবি। উঠান লেপবি। তখন খুব শিক্ষা হবে।…”
২. ম্যাজিক
টিভিতে ‘মাইন্ড ফ্রীক’ নামের একটা ম্যাজিক শো হচ্ছে। এক রকস্টার মার্কা ডাকাতে লোক রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ম্যাজিক দেখাচ্ছে। আমার দুই ছোটোবোন এই শো-এর মনযোগী দর্শক। রোমানা নামের আমাদের কাজের মেয়েটা বারবার উসখুশ করছে। কোনো একোটা দেশি চ্যানেলে সোপ-অপেরা হওয়ার কথা তখন। ওই যে, যেখানে সাজুগুজু করা মহিলারা একেকজন একেক দিকে তাকিয়ে পরষ্পরের সাথে কথা বলে, আর মাঝে মাঝে বর্জ্রপাতের শব্দ হয়, তখন ক্যামেরা বারবার দুলে দুলে ওঠে। একেবারে সেই জিনিশ। ভারতের মতো বাংলাদেশেও নাকি এইসব তৈরি হচ্ছে আজকাল। রোমানা হয়েছে সেই অপেরার বড় সমঝদার, মানে যাকে বলে কনুইশ্যওর।
আমি গিয়ে ওদের সাথে যোগ দেই। টিভিতে ম্যাজিশিয়ান তার একটা আঙ্গুলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরে সেটা যখন গোলাপফুল হয়ে যায়, আর তার পাশে দাঁড়ানো সুন্দরী মেয়েটার সাথে সাথে আমার বোনরাও অবাক হয়ে যায়, তখন আমি বলি, “শোন জাদু-ফাদু বলে আসলে কিছু নেই। এই লোক তার হাতের কাছের জিনিশপত্র দিয়েই খেলাটা দেখিয়েছে। আমাদের অগোচরে ছোটো ছোটো সম্ভব ধাপে আপাত অসম্ভব একটা...”। ওরা বলে, “ধুরো ভাইয়া, থামো তো, ঈশপের গল্প শুরু কোরো না”। আমি অবশ্য থামিনা, তবে বক্তব্য সংক্ষেপ করি। বলি, “তোরাও পারবি অসম্ভব যেকোনো লক্ষ্য ছুতে, হাতের কাছে যা কিছু আছে সেসব দিয়েই। শুধু অল্প কিছু সম্ভব লক্ষ্যে বড়ো লক্ষ্যটাকে ভাগ করে নিতে হবে...”। এবার আর ওরা টিকতে না পেরে রিমোট রোমানার হাতে দিয়ে দেয়। ওমনি টিভিতে ঠাটা পড়ার শব্দ হয়। আর ক্যামেরাটা বো বো করে ঘুরতে থাকে। আমিও দৌড়ে পালাই!
৩. চোর
মানুষ একটি সামাজিক প্রাণী হলে কি হবে? আমি বোধ হয় সামাজিক না। হয়তো ঠিক মতো মানুষই না! বাড়িতে কেউ এলে নিজের ঘরে দরজা দিয়ে বসে থাকি। নতুন লোক ভালো লাগে না মোটেই।
একদিন বাড়িতে কিছু নতুন লোক আসে। এরা নাকি বাবার বন্ধু, আর তার পরিবার। আমি ঘরে দরজা দিয়ে বসে আছি। ল্যাপটপের দাবা প্রোগ্রামটার সাথে তুমুল যুদ্ধ চলছে তখন। আমার কিং-পন ওপেনিংএ সে সিসিলিয়ান ডিফেন্স দিয়েছে। এর মধ্যে কোন ফাকে বোনটা এসে বসে খাটের উপর। তারপর কোনো কথা না বলে শক্ত হয়ে বসেই থাকে। সেসব আমার খেয়াল হয় না। একটু পরে মা আসে হাতে একটা চিরুনি নিয়ে। “ইশ্, মাথাটার কী অবস্থা করেছিস। এরকম থাকলে পাগলী বলবে লোকে”। ল্যাপটপ তখন হেড়ে গলায় নিজের মুভ ডিক্লিয়ার করে, “বিশপ সি ফাইভ”। মায়ের চিরুনি পট পট করে চুল ছিড়তে থাকে। কিন্তু অন্যদিনের মতো বোনটা তেড়ে ওঠেনা। শুধু শক্ত হয়ে বসেই থাকে। একসময় ড্রইং রুম থেকে বাবার ডাক শোনা যায়। “আম্মু একটু এদিকে আসো তো, আঙ্কেল-আন্টিদের সাথে দেখা করে যাও।” মা-মেয়ে কখন বেরিয়ে যায় কে জানে। ল্যাপটপে তখন এন্ডগেম ফেজ চলছে।
এক সময় খেলা শেষ হয়। আমি দরজা দিয়ে উঁকি দেই। আর তখন একদল নিষ্ঠুর ঈশ্বরের সামনে একদল অসহায় মানুষকে দেখি। ছোট্টো বেলার রঙিন ছবিওয়ালা বর্ণমালার বইতে পড়া লাইনটার কথা মনে পড়ে- “ব-তে বোকা চোর মার খায়”। ছোটোকাকুর কন্ঠও মাথায় আসে বুঝি, “এই যে পিছমোড়া করে বাঁধা চোরটা, এটা হলি তুই”। আমি চোরের মতো দরজা আটকাই।
তারও অনেক পরে বোনটা আবার যখন আমার ঘরে এসে বসে, কেন যেন ওর হাতটা চেপে ধরি। আমার সেইসব ঈশপের মতো জ্ঞানী জ্ঞানী কথা, সেইসব অসম্ভবের স্বপ্ন, লক্ষ্য, সবকিছু জল হয়ে আমাদের চোখের মাঝে টলটল করতে থাকে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করি ওরা যেন গড়িয়ে না পড়ে যায়। বলি, “আসলে বাবা বুড়ো হচ্ছে তো, তাই এইসব পোকা ঢুকেছে তার মাথায়। আজই তার সব পোকা তাড়াবো। আরে, আমি আছি না! আর কক্খনো এরকম হতে দেবো না। আগেতো তুই পড়াশুনা শেষ করবি। নিজের মতো বড়ো হবি। আর এর মাঝে একসময় নিজেই একটা গ্রামের স্কুলের মাস্টার খুঁজে নিবি। পারবি না?”
৪. ছুটির ঘন্টা
একসময় আমার এবেলার সূর্যটা অস্ত যেতে থাকে। আরো অনেকের মতো আমারও ছুটির ঘন্টা বাজে। “আমি আছি না!” বলার পরেও কথা রাখতে পারিনা আমি। খবরের কাগজে একটা বোকা-শোকা গোবেচারা টাইপের দানবের পাশে টুকটুকে একটা মেয়ের ছবি ছাপা হয়। এদের নাকি বিয়ে হয়েছিলো। তারপর একদিন দানবটা নাকি খুব চেনা মনে হওয়া এই মেয়েটাকে মেরে ফেলেছে। আমি আমার ছোটো বোনদের এইসব দানবের দেশে রেখে, যত্ন করে সাজানো একটা ভিনদেশে যাবার প্রস্তুতি নেই। সে দেশে উচুদালানে দাঁড়িয়ে নাকি আকাশ ছোঁয়া যায়! তারপরও আমার কেমন জানি লাগে। ভয় করে...
মন্তব্য
এক আর দুইয়ে ব্যাপক মজা পাচ্ছিলাম, তিনে এসে গম্ভীর হইলাম, চারে এসে বলার মত কিছু পাইলাম না ...
কোন দেশে যাচ্ছেন?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ওই দানবের খবরটা পড়ার পর, আমিও চুপ করে বসেছিলাম ভয়ানক ক্রোধ আর অসম্ভব দু:খ নিয়ে। কেনো মানুষ এমন হয়?
লেখা ভালো লাগছে ( তোর লেখা পড়ার পর ইদানিং এই কথাটা বলা বাতুলতা মনে হয়, তাই ঠিক করছি, খারাপ লাগলে কমেন্টামু নাহলে না )।
তার মানে কি এই লেখাটা ...
আরে ভালো খারাপ লাগা দিয়ে কিছু না। বলার মতো কিছু মাথায় আসলেই কমেন্টাবি। না আসলে আসানোর চেষ্টা করবি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বোনদুটো অনেক ভালো থাকবে। ভাববেন না
আপনিও ভালো থাকুন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এক প্রিয় লেখকের লেখা। আবারো মুগ্ধ হলাম। তোমার ভালো নামটা ভুলে গেছি। ইশতি বলেছিলো। পারলে তুমি আমার সাথে যোগাযোগ কোরো ইমেইল এ। তোমারটা এখানে দেয়া আছে না কি জানিনা!!
আমরা বোনেরা এতো অসহায় না!!!!
********************************************************
এক মৎস্যকন্যার কথিকা
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
"প্রিয় লেখক"! এই কথাটা শুনলে ভয় পাই। আর লজ্জা।
আপনার ইন বক্সে চিঠি পৌছে যাবে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
যত্ন করে সাজানো দেশগুলাতে কি ওগুলি হয় না ?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
খুব হয়। তবে অন্য প্রেক্ষাপটে।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
হুমম...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অসম্ভব ভালো লাগলো! আবারও দারুণ সুন্দর একটা লেখা!
ধন্যবাদ মৃত্তিকা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এমন পরিণত লেখা, এবং এমন মন-ছোঁয়া, সচলে কবে পড়েছি মনে পড়ে না। আপনি কম লিখুন, কিন্তু এই রকম লিখুন, এই অনুরোধ রইলো।
মনটা খারাপ করে দিলেন, এ কথাটা বলে যাই। তাদের ছোটো বোন আছে সবার মন খারাপ হবে এই সব পড়লে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। বোনদের ছেড়ে যেতে হবে ভেবে মন খারাপ হয়।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হুমম। আজকে সকালে পেপারে ছবিটা দেখে বড্ড অসহায় লাগছিলো নিজেকে। আমারো দুটো বোন আছে।
এইরকম বিয়েই যে-দেশে মেয়েদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার অপর নাম, সে-দেশে এর থেকে ভালো কি আশা করতে পারি আমরা।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ঠিক
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
প্রথম দিকে খুব মজা পেয়েছিলাম পড়ে , কিন্তু শেষ দিকে এসে মজাটা দীর্ঘঃশ্বাসে পরিণত হলো । যেখানেই থাকেন বোনদের সাহস ও মানসিক শক্তি যোগাতে ভূলবেন না ......
অবশ্যই।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বলার মত কিচ্ছু খুঁজে পাচ্ছি না। লেখাটি কেমন কেমন করে কোথায় কোথায় গিয়ে যেন আঘাত করলো।
কোন দেশে যাচ্ছেন?
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
খুব সুন্দর করে গুছিয়ে শুরু থেকে শেষটা পর্যন্ত লেখা। খুব ভালো লাগলো স্পর্শ।
গতকাল ওই খবরটা পড়ে থম ধরে বসেছিলাম, এখনও এই রকম হয়, এই সব আপাত শিক্ষিত(?), ভদ্র(?) মানুষের মধ্যেও? সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, রীমা-মুনীর-খুকু থেকে আজ এত বছর পরে আবার...শেষ নেই এর?
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
আসলে প্রত্যেকেই চায় অন্যজন যেন হয় তার স্বপ্নের মত, কিন্তু নিজেকে অন্যজনের স্বপ্নের মত করে সাজানোর চেষ্টা কেউ করেনা, হয়তো এই করনেই পারিবারিক বিপত্তি বাঁধে। আর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে অক্ষম কিন্তু আপেক্ষিক ভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিদের দ্বারা হয়ে যেতে পারে আরো বড় ক্ষতি!
আর শিক্ষিতের কথা বললেন? আমার মতে বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ মানুষই শিক্ষিত না! গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে যে লোক ড্রাইবার হয়, তাকে যেমন আমরা শিক্ষিত বলিনা, তেমনি বাংলা-ইংরেজি-অংক পড়ার প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সার্টিফিকেট ধারি ব্যক্তিদেরও শিক্ষিত বলা চলেনা। শিক্ষিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন - মুক্ত ভাবে সুস্থ চিন্তা করার শক্তি, প্রয়োজন - নিজেকে চেনার এবং অন্যকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা, যেটা এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে পাওয়া যায় না।
সম্পূর্ণ একমত সেপাই।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এতসব শিক্ষার চাপে পড়ে কখনযে হৃদয়টা খুইয়ে বসি। এভাবেই আমরা অমানুষ হই।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
চলে যাওয়ার পর ফিরে আসাও তো আছে, তাই না?
আমরা অপেক্ষায় থাকব।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আশা করিনি, এরকম একদম আশা করিনি- একদম ভিতরে স্পর্শ করে গ্যালেন...
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
নিজের অনুভুতিটা কিছুটা হলেও লেখায় ধরতে পেরেছি জেনে ভালো লাগছে। ধন্যবাদ সুহান।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
লাজবাব
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হুঁম..., স্পর্শ সত্যিই মুরব্বি হয়ে গেলো...! লেখায় তো বেশ মুরব্বিয়ানা দেখছি, গুণে ও মানে ।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
মুরুব্বি!!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সবাই দেখি চলে যাচ্ছেন!
লেখা আবারও স্পর্শ করে গেলো
------------
আমার ফ্লিকার
---------------------
আমার ফ্লিকার
হ্যা যাচ্ছি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
"একদল দুষ্ট ঈশ্বরের সামনে একদল অসহায় মানুষ"-না লিখে একদল দুষ্ট দেবতা লিখলে হয়তবা ভাল হত দাবা আমিও অনেক খেলতাম একসময় ।তাই কিছু্টা nostalgicহয়ে পড়লাম।
আসলে যুক্তবর্ণওয়ালা দুইটা শব্দ পাশা পাশি ব্যবহার করতে চাচ্ছিলাম। 'নিষ্ঠুর ঈশ্বর' ব্যবহার করতে চেয়েছি আসলে। পরে ঠিক করা হয়নি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
খবরটা পড়ে আমি আমার মা সবাই কষ্ট পেয়েছি,কিন্তু তারচেয়েও বেশি ধিক্কার দিয়েছি এই সমাজকে ।
মনে হচ্ছিলো আমার সাথেই ঘটেছে বুঝি এসব।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ছোট বোনের বিয়ের সময় এ গানটা শুনতাম। কষ্টের গান, তবু ভাল্লাগবে।
তোর বুঝি ভেঙে গেছে মাথা নাড়া বোল
ভেঙে গেছে পুতুল খেলার সংসার
সময়ে দেখবি ঠিক জোড়া লেগে যাবে
চুপ করে বোকা মেয়ে কাদিসনে আর।
- কবীর সুমন
বিদেশ জীবন ঘটনাবহুল হোক, এ কামনা করি।
কথাগুলো কেমন বুকের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এই গানটি শোনা হয়নি আগে। 'সে আমার ছোটো বোন...' গানটা আমার ভালো লাগে। এটাও শুনে দেখবো।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইস্নিপসে পেয়ে গেলাম:
গানটার শিরোনাম 'বোকা মেয়ে'।
লিঙ্কটার জন্য অনেক ধন্যবাদ আলমগীর ভাই।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
লেখাটা দারুণ...
এবার আমার কমবুদ্ধিতে কিছু সমালোচনা করি। লেখাটার মধ্যে আমার মতে কালজয়ী হওয়ার এলিমেন্টস আছে। আমি বলব তুই লেখাটা আবার লিখ। মানে আবার ঘষামাজা কর। লেখাটা ৪ এ গিয়ে দুম করে শেষ হয়ে গেল। বুদ্ধিমান পাঠক হয়তো চট করে বুঝে নিবে ব্যাপারটা কিন্তু আমার মতো বোকাদের কথাও তো ভাবতে হবে। ৪ এ তাই আরো বেশি বেশি করে তোর ভালোবাসার কথাগুলো বল। আর ৩ এ যে কি ঘটনা ঘটছে সেটা আরেকটু পরিস্কার করা দরকার বলে আমার মনে হয়েছে। তোর মধ্যে গল্পকার হওয়ার দারুণ বীজ রয়েছে। তবে সেজন্যে দরকার এইরকম গল্পগুলোকে আরো নিবিড় যত্নে বেড়ে উঠতে দেওয়া।
যাত্রা শুভ হোক!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
হুম শেষের দুটি অংশ অশ্রু দিয়ে লেখা। কষ্ট হয়। সেজন্যই আসলে বড় করে লেখা হয়নি। বলছিস যখন তাহলে দেখবো আবার।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
- খবরটা সেদিন টিভিতে দেখেছিলাম। এরকম খবরগুলো দেখলে, শুনলে গুটিয়ে যাই লজ্জায়, ঘৃণায়। নিজেকে এই সম্প্রদায়ের ভাবতে কষ্ট লাগে। হাই প্রোফাইল, টাকাঅলা আর অতিবিদ্বান মানুষ সযতনে এড়িয়ে চলি সবসময়ই। ডিরেক্ট ছোট বোন নেই বলে আপনার উচাটনটা সরাসরি উপলব্ধি করতে পারলাম না বোধহয়। কিন্তু আশংকাটা দাগ কেটে গেলো!
লেখা নিয়ে বাকিরা বলেছেন। অসাধারণ লেখা ম্যান।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ছোটো বোন না থাকলে অবশ্য অনেককিছু মিস।
লেখা ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগছে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অদ্ভুত ভাল একটা লেখা৷
একটা কথা বলি? বোনেদের যেমন ভরসা দেন "আমি তো আছি' বলে, সে তো ঠিকই৷ তবে ওঁদের এটাও বলবেন যে তাঁরা নিজেরাও যেন নিজেদের দায়িত্ব নিতে পারেন৷ আপনি তো আছেনই, থাকবেন পাশে, কিন্তু তাঁরা নিজেরা যেন কোন সিদ্ধান্ত নিতে কখনও দ্বিধা না করেন৷ আসলে প্রত্যেকটা লোককে তো তার নিজের লড়াইটা নিজে নিজেই লড়তে হয়, তাই প্রতিকূল পরিবেশে আপনার বোনেরা যেন নিজেরাই সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়াতে পারেন৷ মেয়েরা আত্মবিশ্বাসের অভাবেও অনেক অন্যায়ের শিকার হয়৷ তাই ওঁদের শেখান "আত্মদীপো ভব, আত্মশরণো ভব'
আসলে এইরকম খবর দেখলেই আমার এগুলো বড় বেশী করে মনে হয়, তাই বলে ফেললাম৷ কিছু মনে করলেন নাকি?
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ঠিক!
তোমার এই মন্তব্য আর স্পর্শ-র লেখা, দুটাতেই পাঁচ তারা।
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
এত সুন্দর মন্তব্যটার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সবসময়ই চাই ওরা যেন নিজের মতো করে বড় হয়ে ওঠে। নিজের দায়িত্ব নিতে শেখে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
চমৎকার লেখা।
আপনার লেখায়, মন্তব্যে, অডিও পোস্টে গান শুনে এই ছোট বোনদুটো আমাদের সবারই অনেক আপন হয়ে গেছে। এইরকম সাজানো গোছানো স্বপ্নের মত বাড়ি আর পরিজন ছেড়ে "জীবনের প্রয়োজনে" দূরে চলে যাওয়া কি যে কষ্টকর। মনে হয় এই প্রয়োজনটা কোনদিন না আসলেই ভালো হত। তারপরও প্রয়োজন আসে। তারপরও মানুষকে দূরে সরে যেতে হয়। আপনার জন্য এই দূরে যাওয়াটা সাময়িক হোক। শুভকামনা।
আসলেই দূরে যাওয়া অনেক কষ্টের! দ্বিতীয়বারের মত আমাকে এখন দূরে যেতে হচ্ছে সবাইকে ছেড়ে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
স্পর্শ, নামের সার্থকতা রাখলে আরও একটিবার। এমন করে কীভাবে লেখ?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
তোমার নিজের জীবনের টুকরো আনন্দ-বেদনা আমাকেও স্পর্শ করলো।
৪ এর ব্যাপারে কি আর বলবো! চারপাশে রয়েছে অনেক নষ্টের দল।।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
ধন্যবাদ সিমন ভাই।
মানুষ কেমনে যে নষ্ট হয়। বুঝিনা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
মজা পাচ্ছিলাম, যথারীতি মুগ্ধও হচ্ছিলাম, শেষ-ত্বক এসে আর লেখার প্রশংসা করার মতো মন বেঁচে থাকলো না।
স্যরি।
ভয়ানক বিস্বাদ এইসব পিশাচের একই পৃথিবীতে বসবাস! খালিই মেজাজের কান দিয়ে ধোঁয়া বেরোয়, আর মনের পেট গুলায় মুহূর্মুহূ!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ঐ খবরটা পড়ে কেমন যে অনুভুতি হচ্ছিলো। পিছমোড়া করে বাঁধা একজন মানুষ মনে হচ্ছিলো নিজেকে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হুম।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
"স্পর্শীয়" নামে আলাদা একটা ক্যাটেগরি করার সময় এসেছে।
সহমত।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
"স্পর্শকাতর" ক্যাটেগরী হলে ক্যামন হয়?
ইশতি কী যে বলো! আমার একটাই ক্যাটাগরী 'আব্জাব'।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কী বলি বলো?
---------------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
কিচ্ছু বলার নেই।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
দু" দিকে যায়- দু' দিকে যায়,
এক দিকে কেউ যায় না!
দু'টি জীবন চাখতে গেলে
একটি কেও হারায় না !
সমস্ত দিন , সমস্ত রাত-
এই খেয়ালটির কাছে
( তোমার) হৃদয় ভাগ হয়ে
দুই শুন্যে বসে আছে !!!!!
( রবীন্দ্রনাথ )
১ পড়ে মজা লাগল। ভাবছিলাম আমার ভাইটাও কি আমি রান্না করার সময় এমন করে?!
২ ও ঠিক ছিল। ৩ ৪ এ গিয়ে শক্ত হয়ে গেলাম।
আমাদের ও কেমন জানি লাগে। রীতিমতো ভয় লাগতে থাকে...
ধন্যবাদ স্পর্শ,অসহ্য রকমের এই সুন্দর লেখাটার জন্য।
মন ছুয়ে গেল লেখাটি
...............................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
প্রথম দুইটা লেখা পড়ে খুব মজা পাচ্ছিলাম,পরের দু'টায় স্বাদবদল টা একটু বেশি ই হয়ে গেলো।প্রথম দুইটা পরে আরো হাসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম,মনটাই কেমন যেনো হয়ে গেলো।
আপনার লেখার হাত খুব ভালো,ছোটগল্প লিখেছেন কী কোনো?
ভালো থাকুন।
[বিষণ্ণ বাউন্ডুলে]
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ছোটো গল্প লিখেছি কিছু। যেমন এইটা
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
নতুন মন্তব্য করুন