খ (আব্‌জাব)

স্পর্শ এর ছবি
লিখেছেন স্পর্শ (তারিখ: সোম, ২১/০৬/২০১০ - ৫:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

না শিরোনাম দেখে যেটা ভাবছেন এই লেখাটা আসলে সেরকম কিছু না। মানে আমি তসলিমা নাসরিনের মত করে আমার কীর্তিকলাপের দ্বিতীয় খন্ড ছাপাতে বসিনি এখানে। তাহলে এই নাম কেন? উমম, ভেবে দেখলাম। ‘খ’ই হলো আমাদের জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিশ। ঐ যে মিশরীয়দের আত্মার ভালো অংশটা যেমন ‘কা’ তেমনি আমাদেরও আছে ‘খ’ তাইতো আমরা যখন ভালো থাকি তখন বলি ‘সু-খ’ আর যখন খারাপ থাকি তখন বলি ‘দু-খ’। অবশ্য ‘কু-খ’ও হতে পারত। আমার মনে হয় ‘কু-খ’ নামেরও কিছু থাকা উচিত। আমরা যখন ‘ইভল’ হয়ে যাবো। কুকর্ম করে বেড়াব তখন আমাদের মনের স্টেট হবে ‘কু-খ’। তো এই ‘কু-খি’ মানুষরা কিন্তু অনেক সময় নিজেদের ‘সু-খি’ ভাবে। তবে বেশিরভাগ সময়েই তাদের ‘খ’ এর অবস্থা ‘দু-খি’ দের চেও খারাপ। তারা আশপাশের মানুষের ‘খ’ কে ‘সু’ থেকে ‘দু’ তে পরিবর্তন করে বিমলানন্দ লাভ করে। আপনি চাইলেই আপনার আশেপাশে এমন কু-খি মানুষ খুঁজে পাবেন।

তো এই ‘খ’ দিয়ে আর ভালো যে জিনিশটা হয় তার নাম ‘খাদ্য’। আমরা যদি বুঝে নিই যে ‘খ’ হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিশ। তাহলে বুঝবো ‘খ’ এর সাথে খাদ্যের একটা ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে। আপনার ‘খ’ সু স্টেটে থাকার জন্য সু-খাদ্য অপরিহার্য । আপনি যদি খান ‘কু-খাদ্য’ তাহলে কিন্তু আপনি ‘দু-খি’ হবেন না। বরং ‘কু-খি’ হয়ে যাবেন। আর দু-খি হবেন যখন খাদ্য আপনার জন্য হয়ে যাবে দুর্লভ।

কিসে ‘খ’ এর ভালো তা বুঝেছিলেন কবিগুরু। তিনি বলেছিলেন, “ওরা সু-খএর লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না”। মিলবে কী করে? প্রেমে বড় জোর ‘প’ মিলতে পারে। তাতে 'পা'য়ের কিছু উপকার হলেও হতে পারে। কিন্তু সু-খ এর জন্য চাই সু-খাদ্য। এমন যে সবচেয়ে সু-খাদ্যটির নাম মনে আসছে সেটা হলো খ-ই। নাম শুনলেই বোঝা যায় যে এর আত্মিক যোগাযোগ একমাত্র ‘খ’ এর সাথে। এ জিনিশ আমাদের গ্রাম-গঞ্জ থেকে অধুনা পপ্পনওয়ালাদের হাতে করে শহরেও সহজলভ্য। কিন্তু এত খই খেয়েও আমাদের খ এর উন্নতি হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী আরেক উজবুক কবি। সেই ব্যাটা বাল্যশিক্ষার বইয়ে লিখে রেখেছে, “খই দিয়ে দই খাই”। তাই আমরা খই এর সাথে সাথে দই ও সেটে চলেছি সপাসপ। কিন্তু ‘দ-ই’ খেলে যে দু-খ লাভ হতে পারে সে দিকে খেয়াল নেই। কী আর করা। সবাইতো কবিগুরু নয়। তাও ভাগ্যিস খই এর সাথে দই মিলে ব্যাপারটা নিউট্রাল আছে। তাই সুখ লাভ না হলেও দুখ লাভও হচ্ছে না। কিন্তু এই মিশ্রনটি হয়ে পড়েছে একটি উপকারহীন খাদ্য। মানে কু-খাদ্য। তাইতো আমাদের দেশে কু-খি মানুষ ভরা।

এই ‘খ’ অমর এবং সার্বজনীন। দেশ জাতি ভেদে মানুষের ‘খাই’ কমে অথবা বাড়ে। খ কে সু স্টেটে রাখা হচ্ছে জীবনের একটা পরম উদ্দেশ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে এই ‘খ’ নিয়ে আমাদের চর্চা হয়নি। মিশরীয়রা তাদের ‘কা’ এর জন্য কত বড় বড় সব পিরামিড বানালো। আমরা তার কিছুই বানাতে পারলাম না। পাহাড়পুর না কোথায় যেন একটা মাটির স্তুপ বানিয়েছি। কিন্তু সেখানে ‘খ’ চর্চা হতো কিনা তা কে জানে।

সরকার বাহাদুরের উচিত এ দিকে নজর দেয়া। এবং জনগনের খ কে সু তে পরিণত করার প্রতি পুরোদমে প্রচেষ্টা চালানো। কারণ একটি ‘সু-খ’ই হতে পারে আমাদের জীবনের পরম প্রাপ্তি।


মন্তব্য

স্পর্শ এর ছবি

একদম হ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

চরমভাবে [Bold]হ[/bold]।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

আমার এক বান্ধবী আছে, আর্কিওলজি পড়তে চায়। যেখানেই খোড়খুড়ি সেখানেই যেতে চায় সে। তারে কমুনে, খই ভাইজা কিঞ্চিত দই লইয়া, যা, কইরা আয় দে-খা। দেঁতো হাসি.
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

স্পর্শ এর ছবি

খুঁড়ে টুড়ে দুয়েকটা পিরামিড বের করতে পারলেই হয় চিন্তিত


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

হাসিব এর ছবি

দেশের সবাইতো সুখেই আছে মনে হয় । সেদিন পত্রিকায় দেখলাম ৮৮% তরুণ তাদের জীবন নিয়ে সুখে আছে । এইটা অন্য দেশের কাছে ঈর্ষনীয় ফিগার হবার কথা ।

স্পর্শ এর ছবি

নাদান লেখক বলেছেন,

তো এই ‘কু-খি’ মানুষরা কিন্তু অনেক সময় নিজেদের ‘সু-খি’ ভাবে

দেঁতো হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

জরিপটা কিন্তু মাত্র হাজার দুয়েক তরুণের ওপর করা। এতো বিশাল জনগোষ্ঠীর একটা দেশে এই পুঁচকে স্যাম্পলের আকার কি সত্যিই প্রতিনিধিত্বমূলক?

এটা দেশের/তরুণদের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে ইত্যাদি সারাংশ কি সত্যিই এই জরিপের ফল থেকে টানা যায়?

তবে, গড়ে আমরা বেশ সুখী, কারণ, চেতনার অনগ্রসরতা, নিয়তিবাদিতা এবং মেনে নেওয়ার আজন্ম প্রবণতা। সামান্য কিছু পেলেই যদি খুশি হয়ে ওঠা যায়, তা খারাপ বোধহয় নয় (আমৃত্যু অশান্তি ভোগ করার চাইতে), কিন্তু, সামান্য কিছু লাভের আশায় বিশাল দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়ার প্রবণতাও কি একই উৎসজাত?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

স্পর্শ এর ছবি

ইয়ে, মজা ভাই! এইটাতো আব্‌জাব লেখা। ইয়ে, মানে...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

খা-লি প্যাচাইলেন মিয়া !!!!

_________________________________________

সেরিওজা

স্পর্শ এর ছবি

জিলাপি?


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

এনকিদু এর ছবি

খতা পছন্দ খরিলাম।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

স্পর্শ এর ছবি

বুখে আয় বায়তুল! >দেঁতো হাসি<


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বর-এর আগে 'খ' বসলে খবর হয়ে যাবে কিন্তু
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্পর্শ এর ছবি

কিন্তু 'সু-খ' বসালে হবে সুখবর!! চোখ টিপি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

শরতশিশির এর ছবি

খতা খুব বুঝলাম। তোমার গলায় এই ''খ, খ'' ব্যারাম হচ্চে বেশি আজকাল, মনে হচ্চে! খেডা (কেডা) জানি তোমারে ''খিস'' (কিস্‌) বিষয়াদি নিয়ে সারমন ঝাড়ার পর, ''খ'' খুব প্রিয় অক্ষর হয়ে গ্যাসে, না? খাইছে

আহেম! চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

স্পর্শ এর ছবি

দেঁতো হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাফি এর ছবি

খিতা খইলান ইতা?

স্পর্শ এর ছবি

সইত্য!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

লেখাটার আ-গা-মা-থা-মু-ন্ডু কিছুই বুঝলাম না। তবে, এই প্রত্যয় জন্মালো যে, পূর্ণ সচল হলে কিছু বাড়তি সুবিধে পাওয়া যায়, তাই লোভ হচ্ছে।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

স্পর্শ এর ছবি

ইয়েপ। ০০৭ লাইসেন্স আরকি!
কিন্তু এইটাতো আব্‌জাব লেখা এর মাথামুন্ডু খুঁজে পাওয়া ভার। ইয়ে, মানে...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সুরঞ্জনা এর ছবি

হুমম, ঠিক যেমন এই বাড়তি সুবিধে গুলো পেতে আগে 'পূর্ণ' সচল হতে হয়। সেখানেই শানে নুযুল। নইলে এই এমন সব মন্তব্য করা ছাড়া আর উপায় কি, তাই না? হেহ। হাসি
........................................................................
জগতে সকলই মিথ্যা, সব মায়াময়,
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয় ।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

রায়হান আবীর এর ছবি

স্পর্শ এর ছবি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব-ই খুশির খবর , খাবারও খাসা ... হাসি

হিমাগ্নি

অতিথি লেখক এর ছবি

এই "খ" এর খবরটা "খা"রাই পড়লে "খু"ব "খা"রাপ লাগার কথা না। হে হে মুই চার বার "খ" রে "খা"ইছি মানে লি"খ"ছি বঝঝেন। না না সাত বার....

আমি কু-খি হয়ি সু-খি হোতি চাই।

শাফি।

পল্লব [অতিথি] এর ছবি

হাহাহা... জটিল থিওরী দেখি...

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরাই জটীল জিনস।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।