কী যেন বলে অনুভূতিটাকে? নস্টালজিয়া। যতবারই বাঁশির সুরে শুনি ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে...’ ততবারই অব্যর্থ ভাবে আক্রান্ত হই নস্টালজিয়ায়। এইতো গতকালই চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে হঠাৎ চলে গেলাম বিটিভি তে। সেখানে হচ্ছে ‘মাটি ও মানুষ’। আমার ছোটো বোন, এই সেইদিন যার জন্ম হলো, সেও নাকি নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত, এর সূচনা সংগীত শুনে! বিটিভিতেই থিতু হলাম তাই। এবারের পর্ব মধু চাষীদের নিয়ে।
জানা গেল দেশে এখন প্রচুর মধু উৎপাদন হচ্ছে। পরিমাণটাও বলেছিলো। মনে নেই। দেশের বাজার সেই মধুর মাত্র ৩৫% এর মত কনজিউম করতে সক্ষম। বাকিটা নিয়ে মধুচাষীরা পড়েছে বিপদে। ওদিকে এই উৎপাদন আগামীতে আরো বাড়ার সমূহ সম্ভাবনা। তো তারা কী ভাবছে? এ বিষয়ে মধুচাষীদের সংগঠনের একজন সংগঠককে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এই মধু বাইরে রপ্তানি করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু মধুকে রপ্তানী প্রক্রিয়াজাত করতে যে মেশিন দরকার তার দাম প্রায় দুই কোটি টাকা।
এই দুই কোটি টাকার কথা শুনেই কেমন যেন খারাপ লাগলো। মধু এমনিতেই প্রিজার্ভ করতে তেমন কিছু লাগে না। তারপরো ধরলাম না হয় ‘কিছু-মিছু’ করতে হয়। সেই ‘কিছু-মিছু’টা নিশ্চই অলৌকিক কিছু না। বৈজ্ঞানিক ব্যাপার। তাহলে এরকম একটা যন্ত্র তো দেশেই বানিয়ে ফেলা সম্ভব। পুষ্টিবিজ্ঞানী থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর বড়বড় পাশ দিয়ে ফেলা লোকজনের তো দেশে অভাব নেই। অভাব নেই মেশিনারিজ ডিজাইন থেকে একেবারে লোহা কুঁদে নির্মাণ করে ফেলতে পারার মতো এক্সপার্ট ইঞ্জিনিয়ার-টেকনিশিয়ানেরও। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? আমরা কী মেধা সংকটে ভুগছি?
একবার ‘অ্যালগরিদম ডিজাইন ম্যানুয়াল’ নামক একটা বই পড়েছিলাম। বইটিতে একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী তার আবিষ্কৃত বিভিন্ন অ্যালগরিদম আর কোন সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে সেই অ্যালগরিদম আবিষ্কার হলো সেইটা নিয়ে লিখেছিলো। অবাক হয়ে দেখেছিলাম একজন লোটো (লটারি) ব্যবসায়ী তার কাছে সম্ভাব্যতার একটা সমস্যা নিয়ে এসেছিলো, এমন একটা অ্যালগরিদম ডিজাইন করতে হবে যেন লোটোতে তাদের লাভের মার্জিন তারা কন্ট্রোল করতে পারে। অর্থাৎ ওদের দেশে ইন্ডাস্ট্রির লোকদের ‘অ্যাকাডেমিক’দের কাছে বাস্তব জগতের সমস্যা নিয়ে হাজির হওয়ার একটা প্রচলন আছে। আমাদের নেই।
আবার কোনো সমস্যা নিয়ে কোনো ভার্সিটির কোনো ফ্যাকাল্টির কাছে হাজির হলে সত্যই কোনো সাহায্য সে করতে পারবে কি না, বা চাইবে কি না তারও ঠিক নেই। শুধু মধু প্রক্রিয়াজাতকরণই না। এমন হাজারটা ক্ষেত্র আছে যেখানে বিশেষজ্ঞ অ্যাকাডেমিক এবং ইন্ডাস্ট্রির মিথোস্ক্রিয়ার অবকাশ রয়েছে। প্রতিবছর হাজারটা কাজ আটকে যায়, “কোটি টাকার বিদেশি মেশিনারিজ”এর অভাবে। শুনেছি বড়বড় সরকারি প্রজেক্টে দেশের এক্সপার্টদের দাম না দিয়েই বাইরে থেকে সবকিছু আনা হয় দুর্নীতির সুযোগ বাড়াতে। কিন্তু এই মধুচাষীরা তো সত্যিই আটকে আছে। আজ দেশের মধ্যেই মেধাবী কেউ যদি তাদের সমস্যাটা সমাধান করে দিতে পারতো তাহলে তারা নিশ্চই দুকোটি টাকা বা অলৌকিক কোনো বিদেশি মেশিনের জন্য হা-হুতাশ করতো না।
এমন কোনো প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি/দল/ওয়েবসাইট/ফ্রেমওয়ার্ক যদি থাকতো, অনেকটা ডাক্তারের মতো, যাদের কাছে আমার উৎপাদন এবং প্রকৃয়াজাতকরণ বিষয়ক কোনো সমস্যা নিয়ে গেলে তারা ‘রেফার’ করে দিতে পারতো বিভিন্ন এক্সপার্টদের কাছে। বা কোনো একটা মেশিন আমাকে উচ্চমূল্যে কিনতে হচ্ছে বিদেশ থেকে তেমন দেখলেই আমি যে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বলতে পারতাম। আর তারা দেশের মধ্যেই বিভিন্ন বিশেষজ্ঞর সাথে আমাকে মিথোস্ক্রিয়ার সুযোগ করিয়ে দিতো। যারা আমাকে সাহায্য করতে পারতো দেশি প্রযুক্তিতেই সমস্যাগুলো সমাধানে।
কোনো কিছুরই অভাব নেই। অভাব শুধু মিথোস্ক্রিয়ার। আমি জানি, আমরা যদি চিন্তা করি কীভাবে সেটা শুরু করা যায়। তাহলে একটা সমাধান বের করতে পারবোই।
বানান কৃতজ্ঞতা: বুনোহাঁস
মন্তব্য
শুরুটা নিশ্চয়ই হবে। আজ নয়তো কাল
---আশফাক
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
শুরু করলেই শুরু হবে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
Freakonomics নামে একটা বই পড়তে গিয়ে মুখবন্ধে দেখেছিলাম, বইটা পাবলিশড হবার পরবর্তিতে এই ইকোনমিস্টদের কাছে দেশের সরকার থেকে শুরু করে বড় বড় বিজনেস, সবাই গিয়ে হাজির হয়েছিলো তাদের বিভিন্ন ডেটা নিয়ে, ইন্টারপ্রেট করে দেয়ার জন্যে।
যে ভালো কিছু করতে পারে, তার কাছে সাহায্য আশা করা একটা ভালো প্র্যাকটিস। এবং হয়তো এরকম কিছু চিন্তা-ভাবনার অভাবেই আমাদের অন্য অভাবগুলো আমরা পূরণ করতে পারি না।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ফ্রিকোনমিক্স পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে। দেখি নীল ক্ষেতে পাই কি না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ধন্যবাদ
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমাদের মূল সমস্যাটা এখানেই।
পোস্টের জন্য সাধুবাদ।
ধন্যবাদ
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
খুব সত্যি কথা। আর অভাব উদ্যোগের। অ্যাকাডেমিক আর ইন্ডাস্ট্রি যদি একসাথে কাজ করতে পারে দেশে, অনেক দারুণ কিছু বেরিয়ে আসবে তা থেকে।
এই মিথোষ্ক্রিয়ার কালচারটা কোনো ভাবে এনকারেজ করা দরকার।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কর্মজীবনে একবার একটা কাজ করানোর জন্য নিজের ডিপার্টমেন্টে গিয়েছিলাম। বলেওছিলাম যে প্রয়োজনীয় অর্থায়ণ আমরা করবো, তারা শুধু কাজটা করে দেবে, ফাইনাল রিপোর্টটা তোইরি করে দেবে। আমার সাবেক শিক্ষকদের দুর্ব্যবহার, তাদের পেশাদারিত্বের অভাব, বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে অধিকাংশের অবজ্ঞা মেশানো অজ্ঞতার জন্য শেষমেশ আর তাদের দিয়ে কাজ করাতে পারিনি। আমার সাবেক শিক্ষকদের সাথে মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে পজেটিভ কোন কাজ করার আশা একটা "নিকিশাপূর্ণ ভ্রান্তধারমা"।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ্যা, অনেক শিক্ষকই হয়তো এ ধরনের 'ঝামেলায়' জড়াতে চান না। আসল কথা যারা চান না, তাদের সত্যিক্যারের 'মুরোদ' আছে কি না সেটাও একটা প্রশ্ন।
কিন্তু অনেকেই চান। আমি নিজেই এমন অনেককেই চিনি, যারা কেউ এ ধরনের 'মেধাগত' সাহায্য করতে সক্ষম এবং ইচ্ছুক। আবার অনেক উদ্যোক্তা এ ধরনের সাহায্য চাচ্ছেন বলেও দেখছি আশে পাশে। এটা ঠিক উদ্যোক্তাদের মধ্যেও হয়তো সবাই দেশি প্রযুক্তিতে ভরসা রাখতে পারেন না।
কিন্তু উভয় পক্ষেই কিছু মানুষ আছে যারা সাহায্য করতে পারবে এবং চাইবে। আমাদের এমন কোনো ফোরাম দরকার যেখানে এদের এই সংযোগটা করে দেওয়া যায়। যে কাজটার ব্যাপারে আপনার ওই স্যার সাহায্য করেন নি, অন্য কেউ হয়তো করতো ঠিকই।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমি কিন্তু বলিনি যে ঐ শিক্ষক সাহায্য করতে চাননি। আমার অভিযোগ হচ্ছেঃ
আমি গত পনর বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছি। বাংলাদেশের সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী ইনস্টিটিউশন (যেমন, সায়েন্স ল্যাবোরেটরি, বিটাক ইত্যাদি) - এগুলোর সাথে কাজ করার আমার দুঃসহ সব অভিজ্ঞতা আছে। এদের অধিকাংশের সাথে মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে পজেটিভ কোন কাজ করার আশা এক একটা "নিকিশাপূর্ণ ভ্রান্তধারমা"।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
(ডুপ্লি)
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
যে নিস্টিটিউশনগুলোর কথা বললেন, এরা যদি ঠিকঠাক কাজ করতো তাহলে আসলে এই পোস্ট লেখারই দরকার হতো না। এত বড় স্কেলে না ভেবে শুরুতে ছোটো আকারে ভাবতে চাচ্ছিলাম। এমনকি বেশিরভাগ মানুষ অযোগ্য বা নিষ্ক্রিয় হলেও কিছু কাজের মানুষ থাকেই। আমি নিজেই এমন বেশ কয়েকজন 'কাজের মানুষ' এর সাথে পরিচিত। এমন আরো আছে নিশ্চিত।
আইডিয়াটা হলো সেই সদিচ্ছাবান মানুষগুলোর সংযোগের ব্যবস্থা করা। এ ধরনের মিথোস্ক্রিয়াকে উৎসাহিত করা। কিছু উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারলে এমনিতেই সব শুরু হয়ে যাবে। কারণ যে কর্মকান্ডে শেষ মেষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব, সেটা শুরু করলে এমনিতেই টেক অফ করে।
প্রচলিত প্রতিষ্ঠানের মুখপানে চেয়ে বসে থাকার দিন আসলে আর নেই...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
প্রচলিত প্রতিষ্ঠান (তা সে বুয়েটই হোক আর বিটাকই হোক) যে সব আছে সেগুলোর দিকে বা সরকারের দিকে যদি তাকিয়ে থাকতাম তাহলে আজকের আমরা তৈরি হতে পারতাম না। সেক্ষেত্রে হয় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে রাস্তায় নামতে হতো অথবা সম্মানজনক জীবিকার জন্য দেশ ছাড়তে হতো। উজ্জ্বল উদাহরণ বহু আছে। সেগুলো নিয়ে পত্রিকায় প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করার দরকার নেই। যাদের সাহস আছে তারা পথটা ঠিকই বের করে নিতে পারে।
খুব ব্যতিক্রমী কিছু ইভেন্ট ছাড়া বাংলাদেশে এর তার সাথে জোড়া দিয়ে বড় কিছু করতে পারার সম্ভাবনা এখনো খুব কম। কেন কম তার কারণটা অন্য অনেকগুলো বিষয়ের সাথে জড়িত যা এই পোস্টের সাথে সম্পর্কিত নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অধিকাংশ প্রযুক্তি কিন্তু বাস্তব সমস্যা সমাধান করতে গিয়েই আবিষ্কৃত হয়েছে। এই ক্ষেত্রে মধু ব্যবসায়ীদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরকেই যেতে হবে একাডেমিসিয়ানদের কাছে গবেষণার পেছনে প্রয়োজনীয় অর্থ নিয়ে। এই ক্ষেত্রে মধু ব্যবসায়ীরা একটি এসোসিয়েশন করে সকল মধু ব্যবসায়ীর কাছ হতে অর্থ নিয়ে গবেষণার জন্য একটি ফান্ড করতে পারে। সমস্যা হলো আমাদের দেশে সামষ্টিক ভাবে কোন কাজে কেউ এগিয়ে আসে না। সমষ্টিগত ভাবে কিছু প্রয়োজন পড়লে সবাই তখন সরকার/রাষ্ট্র নামক বস্তুকে ঠেলতে থাকে। রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয় সকল প্রযুক্তির দিকে নজর দেওয়া। এই ক্ষেত্রে প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রিকেই এগিয়ে আসতে হবে দেশীয় প্রযুক্তি বা দেশীয় মেধাকে কাজে লাগানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
লেখাটির বক্তব্যের সাথে সহমত।
আপনি বলেছেন,
কিন্তু এখানে একটা 'ক্যাচ' আছে। আমাদের মধুব্যবসায়ী (বা অন্য যেকোনো ধরনের উদ্যোক্তারাই) আসলে এই মিথোষ্ক্রিয়ার ধারনার সাথেই পরিচিত না। আমার মনে হয় একদম শুরুতে আমাদের এমন কিছু উদাহরণ সৃষ্টি বা এমন কিছু প্রচারণা চালানো উচিৎ যেন সবাই বোঝে এ ধরনের মিথোষ্ক্রিয়া সম্ভব।
বাইরের দেশে বড় বড় গবেষণার ফান্ডিং ইন্ডাস্ট্রিই করে। ওখানে যেমন ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিকদের কাছে যায়। অনেকসময় একাডেমিশিয়ান রাও ইন্ডাস্ট্রিতে যায় নিজেদের প্রজেক্ট প্রোপজাল নিয়ে ফান্ডিং এর জন্য।
আর আমরা তো তেমন কোনো মৌলিক গবেষণার কথা বলছি না। বলছি দেশী প্রযুক্তিতে কিছু বিদেশি যন্ত্রপাতির রিপ্লেসেমেন্ট তৈরির কথা। এভাবে একসময় মৌলিক গবেষণারও পরিবেশ সৃষ্টি হবে। আমার মনে হয় আমাদের একটা ফোরাম দরকার, যেখানে উদ্যোক্তারা তাদের এক্সিস্টিং সমস্যাগুলো পোস্ট করবেন, আর এক্সপার্টরা সেটা সমাধানের প্রস্তাব দেবেন। মানে যোগাযোগটা হবে।
এভাবে দারুণ কিছু করা সম্ভব!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কোন গবেষণাই নির্ভেজাল মৌলিক নয়। আগে কেউ কিছু করেছে, তিনি সেটাকে এগিয়ে নিয়ে চলেন। এই ক্ষেত্রেও নুতন যে যন্তটি তৈরী হবে বিদেশী যন্ত্রের আদলে হলেও তাতে নুতনত্ব থাকবেই, এবং সেটিই একটি মৌলিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। তুমি যেমন বলেছো এভাবেই মৌলিক গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
কিন্তু শুধু ফোরাম সৃষ্টি করে হবে না। যিনি গবেষণা করবেন তাকে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এবং তার সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় সম্মানীর বিকল্প নেই। তাই করতে হলে মধু ব্যাবসায়ী বা এরকম উদ্যোক্তাদের কাছেই যেতে হবে, তাদেরকে বুঝাতে হবে কোনটা প্রয়োজনীয়।
এ কথা সত্যি।
ফোরাম করে বিনেপয়সায় কাজ করার কথা কিন্তু বলছি না। বলছি 'কড়ি ফেললে যে তেল মাখা যায়' এই ধারনাটাকে প্রথমে ডেমন্সট্রেট করার একটা ব্যবস্থা করতে। আর অনেকেই আছেন 'অ্যাকাডেমিয়া' বা অন্য অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যারা দেশের জন্য নিজেদের জ্ঞান কিছুটা কমমূল্যেও বিতরণ করতে পিছপা হবেন না। শুরুতে একটা ধাক্কা দিয়ে দিলে, এ ধরনের মিথস্ক্রিয়া থেকে উদ্ভুত প্রজেক্টগুলো নিজেই নিজের ফান্ডিং করে নিতে পারবে।
আপনি বলেছেন,
এই বোঝানোর কাজটা দিয়েই আসলে শুরু করা যায়।
রাষ্ট্রীয় খরচে যেসব বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, এবং অন্য সব রকম এক্সপার্ট তৈরি হয়, তাদেরকে যে সত্যিকার সমস্যা সমাধানে 'ব্যবহার করা' যেতে পারে এ ধারটাই আগে প্রচার করা দরকার। অনেক এক্সপার্টই হয়তো অবদান রাখতে চাইবেন না, কিন্তু অনেকের মধ্যে যে অল্প ক'জন চাইবেন। তাদের দিয়েই শুরু হোক।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
মিথস্ক্রিয়ার অভাবটা ভয়াবহ।
আগে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ একসঙ্গে আড্ডা দিতো, এখন সেটা খুব কম হয়। একই পেশার মানুষরাও এখন আর একসঙ্গে আড্ডা দেয় না আর তো ভিন্ন পেশা।
ফলে একদল আরেকদল সম্পর্কে জানছে না।
এটা দিন দিন আরো ভয়াবহ হবে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হ্যা, এইটা সত্যি কথা। তাও ধরেন ব্লগের মাধ্যমে অনেক ভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের আড্ডা-পরিচয় হচ্ছে। কিন্তু রুট লেভেলে, এমন কিছু করা দরকার। এমন কিছু করলে যে হাতে নাতে উপকার পাওয়া যেতে পারে, সেটাও স্পষ্ট করে তুলে ধরা দরকার।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
রাব্বানী স্যারের মতো প্রত্যেক সেক্টরে একজন দরকার অন্তত। এইসব ধুনফুন যন্ত্রপাতি তুড়ি দিয়ে বানায় দিতো। লাভের আশা করতোনা। নিজেরে বস ভাবতোনা।
তোমরা যারা স্যারের ল্যাবে আছো, তারা নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করলেই দেখবা আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এমনিতে মধু সহজে পচে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে মধু কখনোই পচে না। দেশী মধু যেভাবে সংরক্ষণ করে আমরা খাই সেটা আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি নয়। মধুর প্রাকৃতিক গুণে ভরসা রেখে আমরা দেশে কাজ চালিয়ে নিতে পারি কিন্তু বিদেশে সেভাবে রপ্তানি করা যাবে না।
দেশে সংরক্ষণ করা মধুতে অনেকক্ষেত্রেই পচন ধরে (উপরের অংশে ফেনা তৈরি হয়/পাতলা আস্তরণ পড়ে যায়/উপরের অংশের রং বদলে যায়...)। কিন্তু অতি পুরাতন ধারণা মেনে সেই একটুখানি পরিবর্তন মধুর জন্যে স্বাভাবিক ধরে নেই বলে আমরা মনে করি মধু পচে না।
আমরা দেশী মধুতে বৈচিত্র কম দেখেছি। কিন্তু দেশের বাইরে ব্যবসা করতে গেলে মধুতে বৈচিত্র আনতেই হবে। ক্ষেত্রবিশেষে সেখানেও বেড়ে যাবে মধুর পচনশীলতা।
বিজ্ঞানসম্মতভাবে সংরক্ষণ করতে গেলে তাই মধু জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন। যে ঘনত্বের জন্য মধু সহজে পচে না, সেই ঘনত্বই মধু জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে। একারণেই মধু সংরক্ষণ করার যন্ত্রের দাম বেশী হতে পারে। তবে এটা আমার ধারণা। আমি নিশ্চিত নই।
ব্যাচেলরের একটা মডিউলে একটুখানি এ বিষয়ে পড়েছিলাম। সব ঠিকঠাক মনেও নেই। প্রয়োজন পড়লে বলবেন। পড়াশোনা করে দেখবো। যতটুকু সম্ভব সাহায্য করব।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমাদের মাঝে 'বিদেশ'প্রীতি আছে। কোন কিছু বিদেশ সার্টিফায়েড বা বিদেশ থেকে আমদানী করা হলেই আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নিয়ে কাড়াকাড়ি লাগিয়ে দেই। এই চিন্তাভাবনা বদলানোরও প্রয়োজন আছে
নতুন মন্তব্য করুন