আমি ভাবতাম মেয়েরা বড় হলে এমনিতেই তাদের বাচ্চা হয়। কিন্তু আমাদের এলাকায় দুই অপু ছিল। তাদের বড় বোনের বিয়ে হয়নি। ছোট বোনের হয়েছে। যদিও বড় বোন বেশি বড় তার পরেও তার বাচ্চা হয়নি। ছোট বোনের হয়েছে। বাচ্চা বড় করতে তো বাবার সাহায্যও লাগবে। তাই বোধ হয় বিয়ে না হলে বাচ্চা হয় না। টিভিতে হিন্দু আর মুসলিম বিয়ে দেখেছি তত দিনে। হিন্দু বিয়ের সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট অংশ হলো মালাবদল, আর মুসলিম বিয়ের 'কবুল কবুল কবুল' বলা। এইটাই জানতাম। এই ঘটনা ঘটলেই মেয়েটার শরীরে এমন পরিবর্তন এসে যাবে ভেবে দারুণ ভয় হতো। কারণ ততদিনে 'জামাই-বউ' খেলতে গিয়ে কয়েকবার এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছি। আমার দোষ না। অন্যদের দোষ। এই খেলায় জামাই হলে চুপ করে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। শশুর-শাশুড়ি শালা-শালী হওয়া বেশি মজা। মাঝখান থেকে আমার পাওনা হলো বাবা হয়ে যাবার বাড়তি টেনশন! যদিও বাবা হইনি শেষ-মেশ। কিন্তু তাতে টেনশনে নতুন মাত্র যোগ হয়েছে। কারণ আটকুরে রাজার গল্পও শুনে ফেলেছি ততো দিনে।
যাক গিয়ে, এরপর টেনশন মুক্ত হই সত্যিকার বিয়ে কাছে থেকে দেখে। ওসব মালাবদল আর কবুল কবুল কিছু নয়। আসল কথা হলো কিছু কলমা পড়া আর হিন্দু বিয়েতে কিছু মন্ত্র। ঐটা তো খেলার বিয়েতে হয় না। তাই শেষ রক্ষা। কিন্তু নতুন চিন্তা আসে মাথায়। কলমা আর মন্ত্রের ক্ষমতায় শ্রদ্ধা জাগে। এইগুলো ধর্মীয় বাপার। বিয়ের কলমা পড়লে আল্লাহ সেইটা শুনে নিশ্চই মেয়টার মধ্যে কোনো সিস্টেম করে দেয়। ফলে সে গর্ভধারণ করে পরে। (ততো দিনে জানি যে বাচ্চা হয় মায়ের পেটের ভিতর! আগে জানতাম মূলত হাসপাতাল থেকে কিনে আনে। আর আমাকে পেয়েছিল একটা ফুলের মধ্যে)। কিন্তু হিন্দু বিয়েতে তাহলে কাজ হয় কেন? আল্লাহ কি মন্ত্র ও শোনে? খাওয়ার টেবিলে আব্বু-আম্মুকে প্রশ্ন করেছিলাম এটা। আব্বু বলল, আল্লাহ সবার কথাই শোনেন। এই যে মন্ত্র/কলেমা পড়ার ফলে আল্লাহ নতুন একটা প্রাণ-কে তার রিজার্র্ভ থেকে একটা মেয়ের পেটে পাঠিয়ে দেন- এই অলৌকিক কিন্তু বাস্তব ব্যাপারটা আমাকে ধর্ম-কর্মের প্রতি আস্থাশীল করে তোলে। কিন্তু পরে ‘হিন্দুরা সব দোজখে যাবে’ আরবি শিক্ষকের কাছ থেকে এটা জেনে মর্মাহত হয়ে পড়ি। দোজখেই যদি দেবে তাহলে রিজার্ভে থাকা আত্মা-কে হিন্দু মেয়ের গর্ভে পাঠানোর কী দরকার? মানব, স্বপন, দীনবন্ধু ওরাও সব দোজখে যাবে!... যৌন শিক্ষার কথা বলতে গিয়ে ধর্মকর্মের লাইনে চলে যাইতেসি দেখি! বুড়ো হয়ে যাচ্ছি বোধ হয়।
যাই হোক, মেয়েরা কিভাবে গর্ভেধারণ করে সেটা ভালমত জেনেছি অনেক পরে! বায়োলজি বই পড়ে। সঠিকটা জানার আগে নানান রকম মধ্যবর্তী ভার্সন জেনেছি। একটা ছিল 'এদিক দিয়ে করলে হয় মেয়ে, ওদিক দিয়ে করলে ছেলে'! বাকিগুলোও এই টাইপের। শিশুমনে সে সবের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল ভাবুন? যারা প্রজনন বিষয়ে কিছুই পড়ে না(সেল্ফ স্টাডি বা ক্লাসে) তারা মনে হয় এমন কোনো মধ্যবর্তী তত্ত্বেই আটকে থাকে সারা জীবন।
এবার অন্য গল্প। কনডম সংক্রান্ত-
আশেপাশের পুলাপাইন এইগুলা ফুলায়। খুবই উৎকৃষ্ট মানের বেলুন। একবার ভালো মত বায়না ধরলাম, আমাকেও ওই বেলুন কিনে দিতে হবে। নানান রকম বেলুন কিনে দেওয়া হলো কিন্তু উৎকৃষ্ট মানেরটা দেওয়া হলো না। আমিও গো ধরে বসেছি। পরে আম্মু বলল ওই বেলুন ভালো না। ওতে হাসপাতালের রোগীরা পেশাব করে। আমি বললাম ওতে কেন করবে, চিলুমচির মধ্যে করলেই পারে! বেলুনে তো একটু এদিক ওদিক হলেই চারিদিকে ছুটে যাবে সব! বললো, ওর মধ্যে ওষুধ দেওয়া থাকে। বললাম ওষুধ আমি ধুয়ে নেব! বললো যা তোর বাপকে বল। গেলাম আব্বুর দরবারে। এমন পেদানি খেলাম। জীবনে আর ওইবিষয় নিয়ে কোনো কৌতুহল দেখাইনি। ফলে বেশ বড় হয়েও অনেক হেনস্তা হতে হয়েছে। একটা ঘটনা বলি।
পড়ি ক্লাস এইটে। বাড়ির সামনে মুদি দোকান। দোকানির নাম শামিম। দুপুরে গেছি দুটাকার নীল কিনতে। গিয়ে দেখি দোকানে নতুন পণ্য উঠেছে। কনডম। দেখে রাগত স্বরে জিজ্ঞেস করলাম এগুলো কি? বলে, ওষুধ। ততক্ষণে দোকানে বসে আলাপরত রিক্সাচালকরা আলোচনা থামিয়ে দিয়েছে। বললাম, ওষুধ সে তো জানি। কিন্তু আপনি মুদির দোকানে ওষুধ বেচা শুরু করেছেন! এটা কি ফার্মেসি? তারপর অন্যদের দিকে ফিরে বললাম, এই জন্যই দেশটার কিছু হচ্ছে না! সবাই হাসিমুখে সমর্থন জানালো...
তবে এখনকার অনেক বাবা-মা-ই আমাদের সময়ের মত নন। সন্তানের সাথে অনেক বেশি বন্ধুর মত। তেমন আরেকটা ঘটনা দিয়ে শেষ করি। আমার এখানে পিএইচডি করছেন এক বড় ভাই। তার স্ত্রী-কন্যারা এখানে ছিল কয়েক বছর। এখন দেশে থাকে। সেবার বেড়াতে গেছেন দেশে। মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। মেয়ে নির্দিষ্ট ব্রান্ডের একটা বিজ্ঞাপন দেখিয়ে বললো- বাবা, নেক্সট টাইম আসার সময় তুমি মার জন্য ওটা নিয়ে আসবে। আমি টিভিতে দেখেছি এতে লাভ খুব স্ট্রং হয়। বাবা একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলেও সামলে নিলেন। মেয়ের কাছে প্রমিস করলেন যে মার জন্য ঐটা নিয়ে আসবেন। আমাকে এই ঘটনা বলার সময় তাদের মেয়ে এসব নিয়ে প্রশ্ন করলে তারা বাবা-মা মিলে কিভাবে সেগুলোর উত্তর দেন তাই নিয়ে কথা হলো। কী আধুনিক তাদের আপ্রোচ! মিথ্যা, ভুল বা আজগুবি কিছুই তারা বলেন না। যেটুকু শিশুমনের উপযোগী নয় বলে মনে করেন, সে অংশে এসে স্পষ্ট করে বলেন, যে তুমি আরেকটু বড় হলে তোমাকে বুঝিয়ে বলব। অবশ্যই আমাদের জিজ্ঞেস করে নিও..
এই অতিগুরুতপূর্ণ মানবীয় ব্যাপারটা নিয়ে স্কুলে বয়স উপযোগী ভাবে কিছু শেখানো উচিত সেটা আমরা সবাই বুঝি। কেন সেটা শীঘ্রই চালু করা সম্ভব নয়, সেটাও বুঝি আমরা সবাই। তবে একটা জিনিস কিন্তু সম্ভব। বাবা-মাদের যৌন শিক্ষা। যেখানে আরো অনেক কিছুর সাথে, তাদের কোন বয়সী সন্তান এসব নিয়ে কি ধরনের প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়ার সময় কি কি মাথায় রাখতে হবে। বা কীভাবে উত্তর দিতে হবে তা শেখানো হবে। চাইল্ড মলেস্টেশন সম্পর্কে কীভাবে সতর্ক করবে সেটাও বলা হবে। এসব নিয়ে কথা বলায় লজ্জার কিছু নেই সেটাও বোঝানো হবে। কারণ সদিচ্ছা থাকা সত্তেও অনেকেই এ বাপারগুলো নিজে থেকে গুছিয়ে বলতে পারেন না বোধ করি। আবার অনেকে এই শিক্ষার ভার অযোগ্য কোনো স্কুল শিক্ষকের(এই সংখ্যা কম নয় দেশে) হাতেও ছেড়ে দিতে রাজি হবেন না। তাই, কোনো প্রতিষ্টান বা অনলাইন ফোরাম, ব্লগ, পত্রিকার বিশেষ পাতা, বই ... ইত্যাদি ইত্যাদির মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা চালানো যায়। একটা ক্লাসের একটা ছেলে/মেয়ে সঠিক বাপারটা জানলে বাকিরাও তাদের থেকেই জেনে যাবে। তাই তুলনামূলকভাবে অল্প সংখ্যক সচেতন বাবা-মা এ ব্যাপারে সচেষ্ট হলেই একটা গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
মন্তব্য
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। আমার কিছু পর্যবেক্ষণ শেয়ার করি -
১। স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা সাধারণ জীববিজ্ঞানের মানবদেহ অধ্যায় পড়াতেই বিব্রত বোধ করেন (বিশেষ করে কো-এড স্কুলে)। আলাদাভাবে ট্রেইনড শিক্ষক দরকার যৌনশিক্ষা ক্লাস নেওয়ার জন্য।
২। সব বাবা-মা নিজেও যে এই ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান রাখেন তাও না, কিছু প্যারেন্টিং গাইডে/পত্রিকার কলামে এগুলো নিয়ে লেখা দরকার।
৩। ভিডিও অ্যানিমেশান, ছবিতে উদ্ভিদ বা প্রাণিজগতের যৌন প্রজনন বিষয়টা আকর্ষণীয়ভাবে (!) তুলে ধরা যায়। তাতে কিশোর-কিশোরীদের রেস্পন্স ভাল আসে, সেক্স নিয়ে ট্যাবুটা কিছুটা হলেও কমে। আমার সবুজ পর্নো লেখার ওটাই প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল।
এই বিষয়ে লেখার জন্য অনেক
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
১. কলেজে মানব দেহ ক্লাস নেওয়া হবে যেদিন, (আগে থেকে বলা ছিলো) সে দিন ক্লাসে অর্ধেক ছেলে-মেয়ে আসেই নি!!
২. আমরা অনেক সময় 'কিছুমিছু' বলে পার করে দেই। এসব নিয়ে সহজ করে কিছু তো বলিই না, উলটো নানান রকম 'ট্যাবো' ঢুকিয়ে দেই তাদের মাথায়। এর ফলে তারা 'যৌন হয়রানির' শিকার হলেও লজ্জায় কিছু বলতেই পারে না। এবং ঐ দুর্ভাগ্য না হলেও, বড় হয় একটা ভুল ধারণা নিয়ে। পরে শুধরে নিতে পারলেও, এতদিনে মনোজগৎ-এ যে অপুরণীয় ক্ষতি হয়ে যায় তা। তা আর পুরণ হয় না...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ভালো লিখেছো!
আমার এই বিষয়ক জ্ঞান হয়েছিলো লংম্যান ডিকশনারি পড়ে। কী আফসোস!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আমি ক্রিকেট খেলার খুটিনাটি শিখেছি ডিকশোনারি দেখে!!
সম্ভবত এ টি দেব এর ইংরেজী টু বাংলা ডিকশোনারীর শেষে ক্রিকেট মাঠের একটা ছবি দিয়ে, কোন পজিশনের ফিল্ডারকে কী বলে... সহ আর সব খুঠিনাটি ছিলো!!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
১. যৌনশিক্ষা বিষয়ক ইউনিসেফ এবং এটা ওটা এনজিওদের কিছু চটি বই আছে বলে জানি। একটা নিজে পড়ে দেখেছি, সেটা খুবই মানসম্পন্ন। প্রশ্ন হচ্ছে সেটা কতজন শিশুর হাতে পৌঁছায়!
২. সামাজ ব্যবস্থা এবং সংস্কৃতির কারণে আমাদের যৌনশিক্ষা বা শরীরের স্পর্শকাতর অংশ বিষয়ক যে কোনো শিক্ষায় সমস্যা হয় বলে আমার মনে হয়। আমি নার্সিং কলেজে পড়িয়েছি, শিক্ষার্থী শুধু মেয়েরাই। আমার যে সমস্যা হত সেটা হচ্ছে, আমি চিন্তা করতাম আমি কতটুকু কথা বললে তারা বিব্রত হবে না! আমি নিজেও যে জড়তামুক্ত ছিলাম তা নয়। অন্য বিষয় যেমন আমি মন খুলে আনন্দের সঙ্গে পড়িয়েছি, স্পর্শকাতর বিষয়ে সেভাবে পারিনি!
৩. ব্লগটা পড়ে আপনি নিজে শিক্ষিত বলেই বুঝলাম। প্রশ্ন হচ্ছে শিক্ষার প্রয়োগের ব্যপারটা কী করলেন শেষ পর্যন্ত? আর কতদিন শিক্ষিত বেকার থাকবেন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
১ক.
শিশুর মা বাবাদের টার্গেট করা দরকার বেশি করে। সন্তান নেওয়ার আগে, বা গর্ভকালীন সময়ে দেশের বেশিরভাগ মা-বাবাই ক্লিনিক, বা নানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সএ যান। এবং বাধ্য হয়েই (সংস্কৃতিকভাবে জড়তা থাকা সত্ত্বেও) এসব ব্যাপারে ডাক্টারদের সাথে কথা বলেন। সে সময় ডাক্তারদের এই ভবিষ্যত ব্যাপারগুলোতেও বাবা-মা কে পরামর্শ এবং সে সম্পর্কিত বই-পত্র-সিডি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
১খ.
চাইল্ড মলেস্টেশন এর ব্যাপার গুলো 'সিসিম-পুর' এর মত বাচ্চাদের কাছে জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে কৌশলে তুলে ধরতে হবে।
২.
সামাজিক জড়তা কাটাতে মিডিয়াকে সচেষ্ট হতে হবে। ভারতীয় একটা বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম। যেখানে 'কন্ডম কন্ডম কন্ডম, বলে চেচাতে থাকে একটা তোতাপাকি...' এই সিরিজে আরও কিছু ছিলো। এভাবেই হাতুড়িপেটা করে দূর করতে হবে জড়তা। আরও ভালো পদ্ধতিও কেউ বের করতে পারবেন হয়তো।
৩.
শিক্ষিত বেকার পার্ট টাইম চাকরি খুঁজছি! আছেন কোনো সহৃদয় চাকরি দাত্রী?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সিলেটে একটা কথা আছে, ''এক আগরিয়ে আরক আগরিরে কইন ইটার দলা কতদুর...''
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ইটা কিতা 'হিজলে বরুনরে বাছইন'?
****************************************
শিক্ষিত বেকার --- হাহাহাহাহা -
হুম! অনার্য'দা বইগুলা ভাল ছিল, আমি কিছু ইলাস্ট্রেট করছিলাম, বেশ কিছু এ্যানিমেটেড ক্লিপস ও করছিলাম ওদের জন্য, কিন্তু পরে আর কোনদিন চোখে পড়ে নাই!!! আসলেই যায় কৈ এগুলা!!!!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
সবাই বলেন এই শিক্ষাটা দরকার। আমিও তাই বলি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন বিশেষজ্ঞকে দেখিনা বাংলায় এটা বলতে বা লিখতে - "আমি আমার বাচ্চাকে বা শিক্ষার্থীকে এগুলো কীভাবে বলবো"। এগুলো নিয়ে বাংলায় কোন অ্যানিমেশন বা ভিডিও নেই, বুকলেটও নেই। শিশুরা যৌন নির্যাতনের হাত থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাতে পারে, নির্যাতিত হলে কী করবে সেসব শিক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। নিজের শারিরীক পরিবর্তন, শারিরীক সমস্যা এসব কীভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে সেসব শিক্ষারও কোন ব্যবস্থা নেই।
আমরা শুধু ধমক দিতে জানি, সমস্যা ধামাচাপা দিয়ে জিইয়ে রাখতে জানি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ্যা, একারণেই (অনার্যসঙ্গীতের ভাষায়) শিক্ষিত বেকার হয়েও হাতে কীবোর্ড তুলে নিলাম। কারণ সদিচ্ছা থাকা সত্তেও এই ব্যাপারগুলো সন্তানদের সাথে আলোচনা করা বেশ ট্রিকি। সবাই হয়তো গুছিয়ে পারবেন না। কিন্তু কেউ কেউ ঠিকই পারবেন বা পেরেছেন। এই লেখার সূত্রে তারা যদি আরেকটু সরব হয়ে শেয়ার করতেন নিজেদের অভিজ্ঞতা। তাহলে অন্যদেরও উপকার হতো।
চাইলে আমি নিজেও ভেবে ভেবে কিছু লিখতে পারি। কিন্তু সেটা কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ হবে তাও দেখার দরকার। (তবু ব্লগে চেষ্টা করা যায়) বাইরের দেশের বই-পুস্তক-লেখা সরাসরি অনুবাদ করেও হবে না। কারণ তাদের আর আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা এক নয়। আমাদের মত করে আমাদেরই লিখে নিতে হবে।
কী দরকার তা মোটামুটি আমরা সবাই জানি। কীভাবে সেই দরকার পুরণ করবো সেটা ভেবে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে আমাদেরই।
ইন ফ্যাক্ট শুধু যৌন শিক্ষা না। শিশুদের অনেক ধরনের শিক্ষার ব্যাপারেই বাবা-মা বা বড়োরা ভুল করেন। ভুল ভাবে চাপ দেন। মন ভেঙ্গে দেন অজান্তেই... সেগুলো নিয়েও আলোচনা হওয়া দরকার। ইয়ং প্যারেন্টস দের জন্য আলাদা ফেসবুক গ্রুপ বা ব্লগ তৈরি করা যেতে পারে। সচেতন বাবা-মা কে এগিয়ে আসতে হবে সে কাজে...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
নিরদেশিকার কি আর অভাব ছিল কোনদিন?
আছে তো!
বাবা মায়ের জন্য় এই বইটা আর এই বইটা দেখতে পারেন।
জাতীয় পরযায়ে ইউনেসকোর খুব সহজ ও বিসতারিত একটি কারিকুলাম ও উপদেশমালা আছে এখানে।
দুর্ধর্ষ লেখা!
পুরা আগুনের গোলা! মিয়া আপনেরা বাপ ব্যাটায় পারেনও!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
love the life you live. live the life you love.
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমাদের কালের কিলাস এইটের গার্হস্থ বিজ্ঞান পুস্তকে কিচুমিচু লিখা ছিলো সম্ভবত।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
গার্হস্থ বিজ্ঞানের বইতে নানান বিষয় নিয়ে প্রাক্টীক্যাল অনেক কিছুই ছিলো। এই সাবজেক্টটা মনে হয় বাধ্যতামূলক করা উচিত অন্তত ক্লাস সেভেন বা এইটে এক বছর।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ঐ চ্যাপ্টার সিলেবাসে রাখা হইত না। ক্লাসেও পড়ায় নাই। খুবই মর্মাহত হইছিলাম, কারন আমাদের স্কুলের মিসদেরকে অনেক অ্যাডভান্সড মনে করতাম।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
_________________
[খোমাখাতা]
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
এইসব অনুধাবন করে সেবা প্রকাশনী একটা বই ছেড়েছিল বাজারে (সত্তর দশকের শেষে), প্রথমে ওটার নাম ছিল "যৌনসঙ্গম" পরে নাম পালটে রাখা হয় "যৌন বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান"। ক্লাস সেভেনে আমাদের স্কুলের এক বন্ধু সবার কাছ থেকে চাঁদা তুলে বইটা কিনে। ওটা ছিল সেই বন্ধুর জীবনের প্রথম দুর্নীতি (বইয়ের দামের চারগুন চাঁদা উঠেছিল), আর আমাদের সবার পড়া প্রথম বৈজ্ঞানিক সেক্সুয়াল এডুকেশন। কাজীদার লেখা বইটা সুপাঠ্য ও মান সম্পন্ন।
আবুল হাসনাত নামে আরেক ভদ্রলোক ত্রিশের দশকেই "যৌনবিজ্ঞান" নামে দু'খন্ডের বই লিখেছিলেন। বইটা কলকাতা থেকে বেরিয়েছিল। পরে মনে হয় ঢাকা থেকে বের হয়। বাংলায় লেখা যৌন বিষয়ে একটা বিশ্বকোষ। নব্বই দশকের শেষ পর্যন্ত নিউমার্কেটে বইটা দেখেছি। এখনো পাওয়া যাওয়া উচিত।
বাংলা ভাষায় এই নিয়ে লেখালিখি হয়েছে, কিন্তু আমাদের অস্বস্তির কারণে এই শিক্ষা আর সন্তানদের দিয়ে ওঠা হয় না। আর অন্য সব বিষয়ে বৈজ্ঞানিক শিক্ষার কথা বললেও এই বিষয়ে আমরা নীরবতা অবলম্বন করি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এখনো পাওয়া যায়, নীল ক্ষেতে।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
কাজীদা বিদ্যুৎ মিত্র নামে যৌনসঙ্গম লিখেছিলেন। জটিল একটা বই। ক্লাস ফাইভ বা সিক্সে থাকতে ওটা হেফজ করেছিলাম। অত্যন্ত কাজের একটা বই ছিলো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
লজ্জায় বইটা কিনতে পারিনি। বাবাকে কিনে আনতে বলা তো আরো দূরের কথা।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
খুব খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
আমরা কৈশোরে যে যা সমস্যা ফেস করেছি...চলেন সেটার একটা লিস্ট করি সবাই মিলে...তারপর সেটার উপর ভিত্তি করে...সাইকোলজিস্টদের সাথে কথা বলে...বাচ্চারা কোন বয়সে কতোটুকু জ্ঞান নিতে পারবে...এসব ভেবেভুবে নিজেরা ই একটা কিছু করে ফেলি... জানি আমরা পারবো-ই...।
দ্যাটস দ্য স্পিরিট!
আপনার নিজের ছোটোবেলার কোনো প্রশ্ন। বা ছোটো কেউ আপনাকে জিজ্ঞেশ করেছে এমন প্রশ্নগুলোর লিস্ট করে ফেলুন... এটা দেখে অন্যরাও অংশ নেবে নিশ্চয়ই। একটা কিছু করে ফেলা সম্ভব তাতে!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমার ছোটবেলায় আমি যে জ্ঞান প্রথম অর্জন করেছিলাম (৫ম শ্রেণী, শিক্ষকঃ ক্লাশের ফেল্টু ও মারধরে ওস্তাদ ২ বছরের বড় একটি বালক) তা হল বড় হলে গায়ে বীর্য হবে। চল্লিশ ফোঁটা রক্ত জমে এক ফোটা বীর্য তৈরি হয়, সুতরাং ওইটা যখন হবে তখন খুব সাবধানে খরচ করতে হবে। কোথায়, কেন খরচ করতে হবে তা বলেনি।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
লেখাটা এতো ছোট কেন? এই বিষয়ে ভিরু এতো ছোট লেখা দিলা আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না!!!
লেখা ভালাইচে!
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
এক সহস্র এক আরব্য রজনী হবে ভাবসিলা?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এইটা পড়ে হাসতে হাসতে আমি শেষ!
ছোটবেলায় আমার সবসময়ের কোশ্চেন ছিলো 'আমি আইলাম কুনহানতে?' যেহেতু আমাদের বাসা ছিলো শিশু হাসপাতালের পাশেই, আর প্রায়ই আমাকে নানারকম টিকা, শ্বাসকষ্ট, হাতপাভাঙ্গা ওইসবকাজে শিশু বা পাশের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়া পড়তো, আমার বাপ-মার ব্যাখ্যাটা ছিলো খুবই স্বাভাবিক- তোমাকে শিশু হাসপাতালের করিডোর থেকে কুড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি তাদের কোন কথাবার্তা (যেমন ছেলেধরা বা চিলেকোঠার রাক্ষসের গল্প) বিশ্বাস না করলেও এইটা অবশ্য খুব ভালোভাবেই বিশ্বাস করতাম, কারন আমাদের ফ্যামিলিতে সবাই ফর্সা-হ্যান্ডসাম-আর বোকা, আর আমিই খালি মোটা-কালো আর বুদ্ধিমান
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
তবে সেই দিন দূরে নয়, যেদিন সত্যি সত্যিই হাসপাতাল থেকে বাচ্চা কিনে আনবে লোকে...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আপনার ভাই ফর্সা কিনা জানিনা কিন্তু তার বুদ্ধি আছে বইলাই তো জানতাম এককালীন সহ ফোরামার হিসেবে এই কথার তেব্র পেতিবাদ জানায় গেলাম।
love the life you live. live the life you love.
আমাদের দেশের মেয়েরা তাও মোটামুটি মায়েদের কাছ থেকে কিছুটা জ্ঞান পায়। কিন্তু ছেলেরা? কোনো উপায়ই নাই একমাত্র গুপ্তবাবু ছাড়া। এমনকি উচ্চ মাধ্যমিক জীব বিজ্ঞানের বিখ্যাত শিক্ষক গাজী আজমল পর্যন্ত ক্লাসে প্রজনন অধ্যায় পড়ানোর সময়ে বলেন, 'আজকের ক্লাসে আমি কোনো প্রশ্নের জবাব দিবো না। সুতরাং কোনো রকম প্রশ্ন করবা না'!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ছেলে মেয়েদের আমরা যত ছোটো ভাবি আসলে তারা তত ছোটো না। সুন্দর করে বুঝিয়ে বললে এবং বলার সময় তাদেরকে 'ছোটো' হিসাবে দেখছি না- এই অ্যাটিচিউড দেখাতে পারলে। ছোটোরাও যেকোনো বিষয় বুঝতে সক্ষম। এভাবে বলা গেলে, ইভ-টিজিং থেকে শুরু করে অনেক সমস্যারই সমাধান হতে পারতো মনে হয়।
একটা আইডিয়া মাথায় আসছে। বাবা-মা বা বড়রা হয়তো ছোটোদের সব বুঝিয়ে বলতে পারেন না। কিন্তু একটা সমঝদার ছেলে তার এক ব্যাচ জুনিয়র কিছু ছেলেকে ওসব জড়তা কাটিয়ে ঠিকই বুঝিয়ে বলতে পারবে! এ ধরনের কোনো চেইন গড়ে তোলা যায় না? স্কুলেই বছরে কয়েকটা 'ক্লাস' এর মত আয়োজন করা যেতে পারে। বা ক্লাব। যেখানে বড় ভাইরা ছোটো ভাই দের বুঝিয়ে বলবে এসব বিষয়। সহায়িকা হিসাবে পর্যায় ভিত্তিক কিছু বুকলেট ও থাকলো! মেয়েদের বেলাতেও তেমন।
বয়েজ স্কাউট রোভার স্কাউট, এরাও তো অনেক স্পেশালাইজড বিষয়ে ক্লাস নেয় বাচ্চাদের। তারাও তাদের স্কাউটদের শিখিয়ে দিতে পারে। ক্লাসের অন্য ছেলে-মেয়েদের এসব ব্যাপারে (চাইল্ড মলেস্টেশন আর অন্যান্য জিজ্ঞাসা) সচেতন করতে!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
'ধূসর গোধূলি'র কথার সাথে একমত হতে পারলাম না । আমি আজমল স্যার এর ক্লাস করেছি। ২০০৭ সালের সেই ক্লাস এ উনি আমাদের অনেক প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
Fb এর লিংক থেকে আসলাম।
ঈশ্বর আর ভগবান যে একই আগে জানতাম না।
ভাল লেগেছে।
আলুতে রোকেয়ার নারীপ্রুশ সিরিজ একটা বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে।
অফটপিকঃ এইবারে ব্লগ যে পর্নোগ্রাফি সেই সন্দেহের ষোলকলা পূর্ন হলো।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
লেখার নীচে "(চলবে)" আশা করছিলাম, ভাবছিলাম আপ্নেই ইস্কুল খুইলা বসছেন। কিন্তু শুধু গুতা দিয়া চইলা গেলেন এটা কি ঠিক হইল? আর ভাই আপনারা চালায়ে যান, আমি অর্ধশিক্ষিত বেকার, সো একেবারে পেছনের বেঞ্চিতে বস্লাম ভিডুক্যাম নিয়া, দেখি সব ভিডু কইরা রাইখা দিমু।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনার শিশু মনে যে প্রশ্নের উদয় হয়েছিল, তার উত্তর এমনকি আজও আমাদের সমাজের অনেক বড় বড় ব্যক্তিবর্গের কাছে নেই। ধর্মের বিভাজন এদের মস্তিষ্ককে এতটাই ভোঁতা বানিয়ে ফেলে যে, শেষতক শিশুদের বিবেক-বুদ্ধির কাছেও এদের পরাভব মানতে হয়!
অভিভাবকেরা বিব্রতকর প্রশ্ন এড়াতে অনেক সময়ই মিথ্যার আশ্রয় নেন; কিন্তু এর ফলে সন্তানের কল্পনার দ্বন্দ্ব আরো প্রকট হয়ে উঠে, যা তার সুস্থ মানসিক বিকাশকে প্রায়ই বাঁধাগ্রস্ত করে!
স্পর্শ তোমাকে কুর্নিশ।
সঠিক সময়ে সঠিক যৌনজ্ঞানের অভাব থেকেই পরবর্তীতে ঈভটিজিং আর ধর্ষণের মতন ঘটনা ঘটে। বাল্যকাল থেকেই যৌনশিক্ষা পেলে মন থেকে ট্যাবু দূর হয়ে যাবে, মেয়েদেরকে আর তখন "হাতায়া দেখনের জিনিস" মনে হবে না। আর অনেক রকম শারীরিক সমস্যাও হ্যান্ডেল করা সহজ হবে কিশোরকিশোরীদের জন্য। বিষয়টা নিয়ে রব তোলায় তোমাকে ধন্যবাদ।
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
আপনার বলা প্রায় প্রতিটি ব্যাপারই আমার সাথে ঘটেছিল। এখনো যে খুব একটা উন্নতি হয়েছে তা কিন্তু নয়।
কিন্তু সত্যি একটা উদ্যোগ নেওয়া যায়। ভালো ভাবেই নেওয়া যায়। একটা কমিক্স করার কথা ভাবা যায়। সম্পূর্ণ বাংলায়, সহজ পদ্ধতিতে, সুন্দর উপস্থাপনায়, যাতে শিশুদের জন্য মননশীল হয়। সচলে অনেক ভালো আঁকিয়েরা আছেন, ওরা যদি সংযোগ দেন, তাহলে আমরা মিলে হ য ব র ল কিছু লিখে চলেন একবার পোষ্টাতে আরম্ভ করি। পরেরটা পরে দেখা যাবে।
ডাকঘর | ছবিঘর
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের (ঢাকা) সহকারি অধ্যাপক চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী মোঃ জহির উদ্দিন, বাংলায় পুরুষের, বিশেষকরে, টিনেজদের যৌন কুসংস্কার নিয়ে একটা চ্যাপ্টার লিখেছেন। ভুল তথ্যের সাথে রয়েছে সঠিক তথ্য। আগ্রহীরা এই লিংকে পুরো লেখাটা পড়তে পারবেন। সেক্স নিয়ে এভাবে আলোচনা করা যায় কি না, জানাবেন।
লিঙ্কে গিয়া কিছুই তো পাইলাম না , হুদা সাদা পাতা দেখি আসতেছে।
ডাকঘর | ছবিঘর
আমি চেক করে দেখলাম, ঠিক আছে। IDM থাকলে ডাউনলোড হয়। PDF ফাইল।
আবার দিলাম
এর পরেও না পেলে http://bcps.org.bd/publication.php এই সাইটে গিয়ে পাবেন। লেখার শিরোনাম Sexual Myths of Males- Md. Jahir Uddin.
ধন্যবাদ, তাপশ দা।
তাপশ দা, আমি লিঙ্ক চেক করলাম, ঠিক আছে। IDM থাকলে সরাসরি ডাউনলোড হবে, Pdf ফাইল। যাইহোক, এই সাইটে পাবেন লেখাটা http://bcps.org.bd/publication.php
শিরোনাম, Sexual Myths of Male-Md. Jahir Uddin
কী কাহিনী মনে করিয়ে দিলেন! সপ্তম শ্রেনীতে পড়ার সময় এক বান্ধবী কানে কানে মানুষের জন্ম-রহস্য বলে দিয়েছিল আমাকে। আমি গলার রগ, নাক টাক ফুলিয়ে চীৎকার করে বললাম, "তুই দূরে গিয়া বস! আমার বাপ-মা এত্ত খারাপ না!"...ওর সাথে পরে দুই মাস কথা বলিনি।
পোস্টে পাঁচ তারা
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
হোয়াট এন আইডিয়া ম্যাডামজী। জিও জিও
ডাকঘর | ছবিঘর
খুবই ভাল লাগলো হে ভ্রাতঃ, খুবই! এতোকিছু মনে পড়ে গেল ,যে বলতে গেলে আরেকটা পোস্ট হয়ে যাবে
পোস্টে
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আচ্ছা খৎনা নিয়ে একটা পোস্ট লেখা যায় না ?? আমার কাছে এটাকে কেন জানি এক ধরনের নির্যাতন মনে হয়। যদি খৎনা সত্যি ভালো হয় , কেন ভালো তা জানিয়ে একটা পোস্ট লিখা যায় না ? আর যদি খৎনা ছাড়া থাকাই যদি ভালো হয় তবে তা ও লিখা উচিত।
শিশুদের যৌন শিক্ষার বিষয়টা আসলেই খুব জরুরী। 'আমি কোথা থেকে এলাম, কিভাবে এলাম' এটা মনেহয় সব শিশুরই প্রশ্ন। আমার এক ছাত্রের মা এ বিষয়ক একটি ছবিযুক্ত বই নিয়ে এসেছিলেন কিছুদিন আগে। সেখানে পুরো বিষয়টিও দেখলাম শিশুদের উপযুক্ত তথ্য এবং ভাষায় লেখা। আমার মেয়ে তিন বছর বয়স থেকেই জানে সে তার মায়ের পেটের মধ্যিখানে ছিল অনেকগুলো মাস, এবং মায়ের পেট কেটে তাকে বের করা হয়েছে। তার দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, সেখানে সে গেল কেম্নে... আমরা তাকে চেষ্টা করেছি বোঝাতে যে পাখির ডিমের মতন কিন্তু আরো অনেক ছোট্ট ডিম থাকে সেখানে...আল্ট্রাসাউন্ডের ছবিগুলো সাহায্য করেছে এ ব্যপারে। এই বলাটা মনে হয় কঠিন কিছু নয়। আমার কন্যার আগে ধারণা ছিল ছেলেরা ছেলে কারণ তাদের চুল ছোট, আর মেয়েরা মেয়ে কারণ তাদের চুল লম্বা। কিন্তু স্কুলে উঠেই সেই মত পরিবর্তন করেছে সে- ঘটনা খুব সুখের নয় যদিও; তার এক ছেলে ক্লাসমেইল দুই তিনজন মেয়েকে নিজের প্রাইভেট পার্টটি দেখিয়ে দিয়েছে!এখন মাঝে মধ্যেই বলে' বাবা হচ্ছে ছেলে, কারণ তার...আছে, আর মা হচ্ছে মা, কারণ...। খুব প্রয়োজনীয় লেখা। আরো দুই এক পর্ব হলে মন্দ হয় না!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
এতো দিন বুঝি নি, এখন মেয়ে স্কুলে যাওয়ার পরে বুঝতে পারি যে ছেলেরা আসলে বদের হাড্ডি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শিশুরা কোথা থেকে এল?
পুরানো সেই দিনের কথা মনে পরে গেল ----- ছোট বেলায় কনডম দিয়ে এত বেলুন ফুলিয়েছি যে সারাজীবনে সেই পরিমান ব্যাবহার সম্ভব নয়! কনডমকে বলা হত ফুটকা, ভাবতাম এটা বাচ্চাদের খেলার জন্যই তৈরী! সবচেয়ে আশ্চর্য হচ্ছে, বড়রা দেখেও না দেখার ভান করত।
facebook
সপ্তম শ্রেনীতে পড়ার সময় এক বান্ধবী কানে কানে মানুষের জন্ম-রহস্য বলে দিয়েছিল আমাকে। আমি গলার রগ, নাক টাক ফুলিয়ে চীৎকার করে বললাম, "তুই দূরে গিয়া বস! আমার বাপ-মা এত্ত খারাপ না!"
উচ্ছলা আপু চরম বললেন...
নাওয়ারিদ নূর সাবা
লেখার শেষ প্যারার সাথে সহমত
জিনিসগুলো আসলে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা দরকার। আমার ছেলেবেলার অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর নয়।
বাচ্চা হয় কিভাবে এটা আমি ক্লাস টেন ঊঠে জেনেছি। টিভিতে গর্ভবতীর পাঁচ বিপদ চিহ্ন বিজ্ঞাপন দেখে আমার ভাগ্নে কৌতুহলবশত তার মাকে প্রশ্ন করল মা বাচ্চা হাত বের করছে কেন? জবাবে আমার বোন খুব সুন্দর ভাবে বলল সে তোমাকে ডাকছে ...
বয়সন্ধিকালে মেয়েদের শরীরে যে কিছু পরিবর্তন স্বাভাবিক ভাবেই হয় তাই জানতাম না, কাজের মেয়ের যখন প্রথম পিরিয়ড হল ওকে দেখি মা আলাদা করে কিসব বোঝায়, মা অফিসে গেলে কাজের মেয়েকে যখন জিজ্ঞেস করি ঘটনা কি তখন সে এমন ভয়ঙ্কর ভাবে সব কিছু বলে যে আমি চিন্তায় অস্থির হয়ে যাই এই ভেবে যে আমাকেও এই পরিস্থিতিতে পরতে হবে! পরবর্তি পাঁচ বছর আমি এই দুঃসহ অবস্থায় ছিলাম। আর পোষাক আসাক নিয়ে যে কি বিব্রতকর অবস্থায় কাটিয়েছি!!! মা'র সাথে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না, অথচ তিনিই পারতেন আমার এসব সমস্যা সমাধান করতে।
তবে আমি এখন বুঝতে পারছি না, আমার মেয়েকে কিভাবে এসব বুঝিয়ে বলতে পারি? আর ছেলেকে কি বলব তাই জানি না - করন ওর কি কি সমস্যা হতে পারে আমি তাই জানি না!
কেউ এব্যাপারে সাহায্য করলে কৃতার্থ হব।
গুরুত্বপূর্ন পোস্ট।
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
যৌনশিক্ষার বিষয়বস্তু নিয়ে বিভ্রান্তি আছে বলেই মনে হয় এ বিষয়ে মানুষের এত সংকোচ। আমেরিকার ডানপন্থীদের মত অনেকেরই ধারণা যৌনশিক্ষা মানে ক্লাসরুমে পর্ন প্রদর্শন করা। যৌনশিক্ষার বিষয়বস্তু সবার সামনে তুলে ধরে এই বিভ্রান্তিগুলো দূর করা দরকার। কেউ কেউ আরও বলে বাংলাদেশে যেহেতু টিনএজ প্রেগন্যান্সি নাই, তাই যৌনশিক্ষারও দরকার নাই। বাংলাদেশে টিনএজ প্রেগন্যান্সি না থাকলেও ইভ টিজিংয়ের ফলে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া, আগে আগে বিয়ে হওয়া, আত্মহত্যার ঘটনা আছে। ইভ টিজিংয়ের ফলে আত্মহত্যা বড় সমস্যা নাকি টিএনএজ প্রেগন্যান্সি বড় সমস্যা, সেই কূটতর্কে না গিয়েও বলা যায় যে বাংলাদেশে যৌনশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে। মানুষ যতদিন পর্যন্ত্য না ডিম পাড়া শুরু করছে, ততদিন সংস্কৃতি নির্বিশেষে সব দেশেই যৌনশিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা থাকবে।
নারী-পুরুষের সম্পর্ক কিরকম হওয়া উচিত, এই শিক্ষাটা আমাদের সমাজের একটু বেশিই দরকার। ফেসবুকে তীব্রভাবে যৌন অবদমনের শিকার বাঙ্গালী পুরুষের কীর্তিকলাপ দেখলে গা গুলায়। দাম্পত্য বা যুগল সম্পর্কে একজন আরেকজনের কাছ থেকে কতটুকু আশা করতে পারে এই শিক্ষাটা খুবই দরকার, অবাস্তব উচ্চাকাঙ্খা থাকলে সেই সম্পর্কে কখনওই সুখ থাকবে না।
এইচএসসি জীববিজ্ঞান বইয়ে মানুষের প্রজননব্যবস্থা থাকলেও আমার জানামতে সেটা পড়ানো হয় না, কারণ এগুলা বোর্ড পরীক্ষায় বেশি আসে না। তাছাড়া ওই জ্ঞান বাস্তব জীবনে কাজেও আসে না। স্বপ্নদোষ, হস্তমৈথুন, যৌন অপরাধ, সেইফ সেক্স, contraceptive এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা তো আর যৌনাঙ্গের গঠণ সম্পর্কে পড়ে শেখা সম্ভব না।
ডাকঘর | ছবিঘর
ছোটবেলায় আর সব দশটা বাচ্চার মতো আমারও প্রশ্ন ছিলাম আমি কিভাবে এলাম। আর আমার উত্তর ছিলো আমার বড় বোনের লেজ ধরে আমি চলে এসেছি । আমি তাই বিশ্বাস করতাম আর আমার বোন বেচারা কান্নাকাটি করতো তার লেজ নাই এটা প্রমাণ করার জন্য।
এই বিষয়ে জ্ঞান হয়েছিলো ক্লাস টেনে পড়তে আমাদের এক বান্ধবীর বড় বোনের বাচ্চা হবার সময়। আমার বান্ধবী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরে একদিন ক্লাসে এসে বললো ওর কল্পনার বাইরে ছিলো ওর বাবা মা ওর বোনরা এতো খারাপ। জিজ্ঞেস করতে সে এই জন্ম রহস্য আমাদেরকে বলে বিশাল আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলো। মনে আছে অনেকদিন আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলতে পারতাম না। ভাবলেই রাগ উঠে যেতো।
এই খুব জরুরী বিষয়টা নিয়ে বাচ্চাদের সাথে একটু একটু করে কথা বলা বাবা মায়ের উচিৎ। তাহলে বাইরে থেকে এই সব বিভ্রান্তি মূলক ধারণা নিয়ে বড় হবে না। পোষ্ট ভালো হয়েছে।
আমার ব্যক্তিগত অবজারভেশন হল এসব বিষয়ে দাদা-দাদী, নানা-নানী টাইপ বুড়া-বুড়ীগুলা অম্লান বদনে নিজেদের জ্ঞান বিতরনে খুব আগ্রহী । শুধু সময়মত টোকা দিলে আর জ্ঞানদানের মাত্রা ছাড়িয়ে আবার যাতে ফাত্রামীর পর্যায়ে না যায় সেদিকে খেয়ালের ঠেকনা দিয়ে রাখলেই অনেক সহজে অনেক বিষয়ে জানানো যাবে । আর বাচ্চালোকদের সাথে বুইড়াগুলার এরকম আলোচনার সময় অবশ্যই আশেপাশে থাকবেন, কিন্তু একইসাথে আবার চরম উদাস ভাব নিয়া থাকাটাও জরুরী; আপনাদের মনযোগে বাচ্চালোক ব্যাপক লইজ্জা পাইতে পারে । অনেক সময় বাড়ীতে দাদা-দাদী, নানা-নানীরে দিয়া বাইচ্চা-কাইচ্চাগুলারে এসব বড়লোকি ব্যাপারস্যাপারের জ্ঞান বিতরনের সেশন আয়োজন করতে পারেন । তয় বিষয়টা একটু ইয়ে তো; কাজেই খুব খেয়াল কইরা ।
শিশুদেরকে যৌন নির্যাতন থেকে বাঁচার উপায় বা নির্যাতিত হলে কী করতে হবে সেটা বলেও মনে হয়না কোন লাভ আছে। বাংলাদেশের এই সমাজ ব্যবস্থায় নির্যাতিতই সবসময় অপরাধী হয়। হোক না সেটা শিশু বা কিশোরী। আমার এক দুলাভাই আমাকে যৌন হয়রানি করার পর আমার নিজেকে অপবিত্র মনে হতো; বাবা - মা কে জানানোর পরও তারা কোনোই ব্যবস্থা নেয়নি, দীর্ঘদিন আমাকেই মনঃচিকিৎসকের অধীনে থাকতে হয়েছে, অথচ আমার দুলাভাইয়ের কিছুই হয়নি। তিনি মহা সুখে আমার অন্য কাজিনদের নির্যাতন করেছেন, এখনও করেন বলেই জানি। বোনের/ মেয়ের সংসার নষ্ট হবে বলে কেউই কিছু বলতে পারেনি (যদিও পরিবারের অনেকেই জানে)। পনের বছরের সেই কিশোরীটাকে তারা সবাই মিলে মেরে ফেলেছিলো। দশ বছর পার হয়ে গেছে, এখনো যখনি ওই পারভার্ট টাকে বাসায় আসতে দেখি, আম্মুর জামাই আদর অসহ্য লাগে। আব্বু- আম্মুকে আমি অনেক ভালোবাসি, কিন্তু এই কারণে যে কি পরিমাণ ঘৃণা আমার মধ্যে আছে, তা বোধহয় আমি নিজেও জানিনা।
কি ভয়ানক !! বা-মা'র সহায়তা ছাড়া একটা বাচ্চা কোথায় যাবে, কার কাছে সাহায্য পাবে।
চিন্তা করে দেখলাম, সবার বাড়িতেই 'বেহেশতি জেওর', 'মরণের আগে ও পরে', 'মুকছুদুল মোমেনিন', 'স্বামী-স্ত্রীর মধুর মিলন'- প্রভৃতি বই সংগ্রহ করে রাখা উচিৎ। ছেলেপেলে বড় হলে মুখ ফুটে কিছু বলার দরকার নেই, খালি সবার হাতে একটা করে এইসব বই ধরায়ে দিলেই হবে। বাকিটা আল্লা ভরসা!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বই হাতে ধরায় দিলে পড়বেনা। বলতে হবে "এইগুলা বড়দের বই, এগুলা এখন পড়া যাবেনা, বড় হলে পড়বে।" আমিতো সেইভাবেই শিখলাম
খুবই সুন্দর পোস্ট।
ছোটবেলায় আমিও এই বেলুন ফুলিয়েছি। কিন্তু এগুলো যে কী তা তো অখন জানা ছিল না।
আমি ছোটবেলা থেকেই বড় ভাইয়ের বইগুলো পড়ে ফেলতাম। ফলে স্কুলে থাকতেই আমার পড়া হয়ে গিয়েছিল ইন্টারের বায়োলজি বই পুরোটা। এটা পড়তে গিয়েই আমার সেক্স এডুকেশন মোটামোটি হয়ে গিয়েছিল। আমার বাঙ্ঘবীরা অনেক কিছুই জানত না, বা ভুল জানত। আমিই ওদেরকে তথ্যগুলো দেবার চেষ্টা করতাম। যেটুকু নিজে পড়ে বুঝতাম সেখান থেকেই। কিন্তু মায়ের কাছ থেকে তেমন শিক্ষা পাই নি। দুখঃজনক।
স্কুলে কোষ বিভাজন চ্যাপ্টারে, মেয়ে সন্তানের জন্য কে দায়ী এটা পড়ানোর সময় সবাই খুবই লজ্জা পাচ্ছিলাম। এখন ভেবে পাই না, এটা নিয়ে এত লজ্জা পাবার কী ছিল? সে বয়সটা পার হয়ে এসেছি।
কলেজে থাকতে, জুয়োলজির মিস এমি আমাদের প্রজনন তন্ত্র বেশ ভালভাবেই পড়িয়েছিলেন। এমন কি আমরা আমাদের সমস্যার কথাও তাঁকে বলতে পারতাম। তিনিই ব্যাক্যা করে দিতেন কেন এমন হচ্ছে! এরপরে অনেক দিন পরে হাতে পেলাম আনোয়ারা সৈয়দ হকের লেখা ''মেয়ে তুমি বড় হচ্ছ''। বইটা পড়ে এত আফসোস হল! কেন আরো আগে পেলাম না এই বইটা?
আমি নিজে শিক্ষকতা পেশায় আসার পরে প্রথম দিকে পারিনি, শিক্ষার্থীদের ঐ চাপ্টারগুলো পড়াতের। আমার ইচ্ছে ছিল ওদেরকে এ বিষয়ে সচেতন করে তোলার। কিন্তু সত্যিই পারি নি। এর পেছনে কারণ হলো, এসব বিশয় কিভাবে শিক্ষারীথীদের সামনে উপস্থাপন করতে হবে, তা নিয়ে শিক্ষকদের কোন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। আমি নিজেও এ ধরনের প্রশিক্ষণ পাই নি। শুধু আমি কেন, কোন শিক্ষকই পান নি। এছাড়াও নতুন ছিলাম বলে সংকোচ বোধ ছিল। ধীরে ধীরে নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো থেকে রেবিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমি এখন শিক্ষার্থীদের অনেক কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করি। আমি ওদেরকে আমার কাছে চিঠি লিখতে বলেছিলাম, নিজের নাম রোল না লিখে। ওদের বেনামী চিঠিতে কত কথাই না লিখেছে ওরা! এর মধ্যে বেশ কয়েকজন এবিউসড হবার কথাও লিখেছে। চেষ্টা করেছি ক্লাসে এসব নিয়ে কাউন্সেলিং দেবার। সত্যি কথা বলতে কি, নিজের ইচ্ছা থাকলেও প্রশাসনিক জটিলতায় অনেক ্কিছুই করা যায়। কাউন্সেলিং দিতে গেলে সিলেবাস শেষ হয় না (ফলে খাও শো-কজ), আবার সিলেবাস শেষ করতে চাইলে কাউন্সেলিং করার জন্য, দুটা বাড়তি কথা বলার জন্য সময় থাকে না।
নারী-পুরুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল, সহযোগিতাপূর্ণ, মানবিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাক্রমে জেন্ডার ও যৌন শিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করা আজ সময়ের চাহিদা। সে জন্য শিক্ষকদেরকেও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া অবশ্যই দরকার। গণমাধ্যমগুলোও এ ব্যাপারে সাধারণ জনগণকে সচেতন করে তোলার পদক্ষেপ নিতে পারে।
অফটপিক একটা প্রশ্ন, আপনি কোন লেভেলের(প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক...) শিক্ষকতা করেন?
@সাফি ভাই, আপনার পরের প্রশ্নটা করুন, যেটা এই পোস্টের সাথে যায়। ধন্যবাদ।
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। কিন্তু যে যাই বলুক, প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে তো আর বাপ-মা কে কনভিন্স করা যাবে না। কেউ সংকচ করবে, কেউ ইতস্তত বোধ করবে। সুতরাং, স্কুলের মাধ্যমেই শিক্ষা দিতে হবে।
''প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে তো আর বাপ-মা কে কনভিন্স করা যাবে না। ''
হুম, স্কুল কলেজের পেরেন্টস মিটিং-এ এ সম্পর্কে তাঁদের সচেতন করে তোলা যায়। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নিতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।
পোষ্ট ভাল লাগলো। চলুক।
খানিকটা অফ টপিকঃ চাইল্ড মলেস্টেশন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, এই খবর দেখলে বোঝা যায়
দারুণ উপকারী একটা পোস্ট।
নতুন মন্তব্য করুন