আমার দুঃস্বপ্নে গায়ে শুঁয়োপোকা ওঠে শুনে
আহা,অত দূর থেকেও আপনি কত কষ্ট পেলেন -
খুব সুন্দর,ভীষণ ভালো একটা সাজেশন
ঘুমনোর আগে সবাইকে ক্ষমা করে দাও-
নিজেকেও,
সারাদিন যাদের সাথে ঝগড়া করেছো
ভ্রু কুঁচকেছো,চিৎ কার করেছো
নিজেকে যতবার বকেছো,ততবারই আদর করো
মাথা একদম ফাঁকা করো,ঘুমুতে যাও
অপার প্রশান্তিতে।
সবাইকে প্রতিদিন,নিয়ম করে ক্ষমা করো-
মাথায় দুর্ভার যা কিছু সব মুছে ফেলো, স----ব ।।
মানো,আমি তোমাকে ক্ষমা করলাম দীর্ঘ ছ'বছরের বিশ্বাস ছ'দিনে তছনছ করার জন্য
মিতুল তোকে ক্ষমা,জলজ্যান্ত অগ্নিশিখা তুই,
ছাইচাপা আগুন থেকে কেবলই কুচুটে রংচংয়ে মেকআপ এর মধ্যবয়সী রমণীতে পরিণত হলি
লোকা,তোমাকে ক্ষমা করছি
পিঠের ব্যথায় বেঁকেচুরে যাওয়া শরীরটাতে হাত না বুলিয়ে
ইন্টারভিউ দিতে পালিয়ে যাবার জন্য
বাবা,ক্ষমা তোমায় এগারো বছরের কাজের মেয়েটার শরীরে তোমার পৌরুষ ঠেসে ধরার জন্য
ট্রামযাত্রী অভব্য বৃদ্ধা আপনাকে ক্ষমা করা হলো আমাকে
"ব্ল্যাক বিচ" বলায়
(ট্রামে যদিও অনেক জায়গা ছিলো আপনার নিঃশ্বাস নেবার,আমার কালো নিঃশ্বাস আপনার শ্বাসকষ্ট বাড়ায়নি মোটেও)
শম্পা,তোকে ক্ষমা করলাম ছোট্টবেলায় রান্নাবাটি খেলায় আমায় নিতিস না তুই;
ক্ষমা আমার গান গাওয়া ডলপুতুলটার গলা টেনে ছিঁড়ে ফেলার জন্যও।
নাসিম তোমার শিশ্নের অক্ষমতাকে ক্ষমা করলাম,
অভব্যতাটাকে পারলাম না,অনেক চেষ্টা করেও- - -
মার্কশীটে নয়ছয়,আমার "সবচে'ভালো ছাত্রী" এর আত্মশ্লাঘা মাটিতে আছড়ে ফেলে-
ইশতিয়াক স্যার ভুলে যাচ্ছি,যদিও ভোলেননি আপনি
ভীষণ সহিংসতায় টেনে আমাকে নামিয়েছিলেন নীচে-
তবুও পেলেন ক্ষমা আপনি ------------
আজ আমার ক্ষমা করবার রাত।।
নিবিড়- নীরব:আমার একুশে পা দেবার রাতে
তোদের একুশটা রক্তগোলাপের জন্য কেঁদেছিলাম প্রথম প্রহরে,
বাণী বসু আর অচেনা এক অ্যাডমায়ারার দুঃখ ভুলিয়ে দিলো তার- যাহ্ তোরা মানিকজোড়ও পেলি ক্ষমা।
ফেডেরার,ক্ষমা পেলে তুমিও
শুধুমাত্র তোমায় ভালোবাসি বলে, নইলে
রালফ নাডালের সঙ্গে ওই বিচ্ছিরি হার আমাকে
স্তব্ধ করে দিচ্ছিলো!
নিপু তুইও- যে তুই নিজ হাতে হত্যা করেছিস দু'মাস
বয়সী ভ্রুণকে
তারপর আবার দুমড়ে গেছিস হাতব্যাগে ওরই দু'টো চোখ নিয়ে
হ্যাঁ,মাফি,মাফি - তোকেও পাগল বন্ধু !!
মা তোমার ক্ষমা পাওনা রইলো আমার সবচাইতে প্রিয় ক্যাসেটগুলো টুকরো টুকরো করায়
আর প্রিয় পুষি বেড়ালটাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসায়।
অর্ক ভাইয়া,আপুনি তোমায় মাপ করে দিলো
যদিও খাটের স্ট্যান্ড দিয়ে মাথায় এত জোরে বাড়ি-
রক্তের টুপটাপ,অন্ধ চোখে বেঁহুশ কাটলো দু'টো মাস।
নীল চোখের যুবককে ক্ষমা করলাম
আমার তীব্র প্রেমময় চাউনি ফেরত না দেবার জন্য
ক্লাসের সবচাইতে সুন্দরী নিশাত তোমাকে ক্ষমা করলাম
আমাকে "বুদ্ধিমতী গাভী" বলবার পরেও।
কাজল,তোমাকে চেষ্টা করেছিলাম ক্ষমা করতে
আমাকে আদর করতে এসেও ভীষণ ব্যথা দেবার জন্য
রানা, তোমাকেও - আমার জীবনের প্রথম চুমুতে
ঠোঁট কামড়ে রক্তাক্ত করার জন্য।।
সুমন,তোমার গান শুনে হাল না ছেড়ে কণ্ঠই ছেড়েছি জোরে-
তারপরও অন্য গানের ভোর না পাওয়ার কষ্টে
অভিমানী ফোলা ঠোঁটে যাও- দিলাম ক্ষমা।
ডেনভার:আমার জন্মের আগেই মরে যাবার জন্য,
কি ভীষণ রাগ আমি তোমার ওপর,আজ দ্যাখো পটার'স হুইলে ক্ষমা পেলে তুমিও!!!!
ড্রু,আমাকে প্রতি রাত্তিরে অযথা আটকে রেখে
অফিসের সমস্ত কাজে মাঝরাত বিলিয়ে দিলেও
কি যাচ্ছেতাই পিডিআরই না তুমি দিলে আমায়?
নতুন চাকরিতে অনেক ভালো আছি তাই
তোমার মতো নপুংসকও ক্ষমা পাচ্ছে আজ।
সাত বছরের আমার স্কার্টের ভেতর হাত ঢুকিয়ে ছোটখালু,তুমি যখন কাঁদাতে আমাকে,
কখনো কি বুঝেছিলে অকস্মাৎ একদিন ট্রেন চাপা পড়ে মরে যাবে তুমি
তোমার তূর্ণার ঠিক সাত বছর বয়সেই?
প্রকৃতিই নিয়েছে প্রতিশোধ,আমি অতএব করলাম ক্ষমা।।
সিগারেটের উৎকট দুর্গন্ধে আমার নিঃশ্বাস আটকে ফেলার জন্য বার এর ওই টগবগে তরুণকে
ফ্যাশন স্টেটমেন্ট না বোঝায় তাচ্ছিল্যের দৃষ্টি নিয়ে তাকানো সোনালি চুলের অপ্সরাকে-
ক্ষমা করলাম কুৎসিত গালিগালাজ করা স্লোভেনিয়ান পড়শীকে
"আপনি গরু খাচ্ছেন না কেন,আপনি তো হিন্দু নন"
বলা অর্বাচীনকে
জামার মাপ না মেলায় ঈদের আগে দর্জিকে
শতাব্দীর বৃহত্তম পূর্ণিমায় খবরের কাগজ
চোখের সামনে ধরেও পড়তে না পারায়
এই গুজবের জন্মদাত্রীকে।।
সকলকে ক্ষমা করা হলো, সব প্রশান্ত চোখের তারায়
সারা দিনের ক্লান্ত অবসন্নতায় তবুও-
কিছুতেই কেন ক্ষমা করতে পারিনা নিজের ক্ষুদ্রতাকে,
কেন অপারগ নিজের মিথ্যে বলাকে ঢাকতে
ঈর্ষা কেন গভীর রাতেও ভীষণ টলায়
অন্য কারো জিভের ওপর টাকিলা সানরাইজের তরল স্পর্শকে?
কেন ক্ষমা করছিনা জুগুপ্সা, খিস্তিখেউড়
মাথা ঠান্ডা করে পেটানো ছোট্ট কাজের মেয়েটাকে
মেরে ফাটিয়ে ফেলা ছোট্ট মাথাটা
কিম্বা থেঁতলে যাওয়া টিকটিকিটা?
সবাইকে সবকিছুর জন্য ক্ষমা করলাম,
যীশুর পবিত্র জল পান করাতে উৎসুক হলাম
নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিনা, কিছুতেই।
সকল অক্ষমতা সব বিষাক্ততা নিয়ে
আমিই নেমেসিস আমার
আমার নির্লজ্জ ক্ষমাহীন চোখে ঘুম আসবার
আজ রাতে আর কোনো অবকাশ নেই।।
ss ১৬ই ডিসেম্বর,২০০৭ রাত ১টা ৪২ মি:
মন্তব্য
প্রিয় ss,
আপনি কি সচলায়তনে নিবন্ধন করেছেন? নিবন্ধন করে থাকলে আপনার নিবন্ধিত নিক এবং ইমেইল ঠিকানাটি জানাবেন।
ধন্যবাদ।
হাঁটুপানির জলদস্যু
প্রিয় জলদস্যু:
পাবলিক ডোমেইন এ ইমেইল না দিতে চাইলে, আপনাকে কিভাবে ব্যক্তিগতভাবে ইমেইল পাঠাতে পারি, অনুগ্রহ করে যদি একটু সাহায্য করতেন তাহলে বড় কৃতজ্ঞ হতাম। হ্যাঁ,আমি নিবন্ধন করেছিলাম এবং একটা ইমেইল ও পেয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে আমার ইংরেজী লগইন নাম ss ও আছে, আবার একটি বাংলা লগইন নামও আছে। যদিও আমি ss ই ব্যবহার করতে ইচ্ছুক হই এবং আপনাকে আমার নিবন্ধনের বিস্তারিত ইমেইল করতে চাই,সেটি কিভাবে সম্ভব?
সবিনয়ে,
ss
প্রিয় ss,
আপনি যদি কখনো অতিথি লেখক হিসেবে লগ ইন করেন, তাহলে আমাকে মেসেজ করতে পারেন সচলায়তনেই, দেখবেন নিকের পাশে একটি খামের ছবি থাকে। অথবা আমার কোন পোস্টে গেলেও দেখবেন "লেখককে মেসেজ" পাঠানোর সুযোগ আছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
অসাধারণ!
দুর্দান্ত!
তাড়াতাড়ি সচল হয়ে লেখার ঝাঁপি খুলে বসুন প্লিজ!
ভাল আছি, ভাল থেকো।
ভাল আছি, ভাল থেকো।
মনোহর(অথবা মনোহরিণী, নাম দেখে ঠাহর হচ্ছেনা, apologies) মাশীদ, ধন্যবাদ। লেখার ঝাঁপি, কথাটা বেশ মনে ধরলো, :-)। ম্যালাকাইটের ঝাঁপি নামে একটা মজার রাশান বই পড়েছিলেন ছোটবেলায়?ওইরকম কতকটা।
উষ্ঞ সম্ভাষণের জন্য ধন্যবাদ।
ss
ss আমার কবিতার প্রতি আগ্রহ খুব ই সাম্প্রতিক, আপনার কবিতা পড়ে মনে হচ্ছে এতদিন কত কিই না miss করেছি......... অপূর্ব !
স্নিগ্ধা: সাম্প্রতিক হওয়াটা বেশ ভালো এক দিক দিয়ে, আপনাকে কেউ প্রভাবিত করার আগেই পড়ে ফেলুন ডব্লিউএইচ অডেন, বিক্রম শেঠ, ক্রিস্টিনা জর্জিনা রসেটি বা ফ্রস্ট। আরাম লাগবে , এটুকু নিশ্চিত। সৈয়দ হক, রাহমান,নাসরীন, আবুল হাসান ,জয় গোস্বামী,সুনীল শক্তি,নীরেন্দ্রনাথ বাংলায় কাকে রেখে কার কথা বলি কিযে মুশকিল! সবার ওপর রবীন্দ্রনাথ তো রইলেনই। এরপর আমার লেখা(কবিতা বলার দুঃসাহস না করি) পড়বেনই না , নিশ্চিত। ধন্যবাদ, আন্তরিকভাবেই। ভালো থাকুন, সর্বদা।
কৃতজ্ঞতায়- ss.
সত্যি অসাধারণ বললে কমই বলা হবে। তাই বলছি ছোট্ট করে আমার ইচ্ছে হলো আরো কবিতা পড়ার। ঝাঁপি খোলার আশায় রইলাম।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
অনেক সাহসী উচ্চারণের এই লেখাটি চমৎকার লাগলো। খটকা লাগলো শুধু একটি কথায়: "প্রকৃতিই নিয়েছে প্রতিশোধ"। প্রতিশোধ নেবার ক্ষমতা প্রকৃতির থাকলে পৃথিবীটা অনেক বেশি সুন্দর হতো।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আবারো পড়লাম। নতুন কবিতার প্রতীক্ষায় আছি।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
প্রিয় সুহৃদ:
ঝরাপাতার কাব্য পড়েছেন ধরে নিয়েই, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তবে লেখা(কবিতা বলাটা একটু ধৃষ্টতা হয়ে যায়, কিম্বা উচ্চাভিলাষী :-) ) ভীষণ অনুভবের ব্যাপার --------কখনো মনে হলে-- ভেতর থেকে অনুরণন--- আবার লিখবো।।উৎসাহ পেলে অতি অবশ্যই অনুপ্রেরণা যোগায় তা, ভালো থাকবেন এবং বেশী করে জীবনানন্দ---
শুভাশীষ।
ss
নতুন মন্তব্য করুন