পোকা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/১১/২০০৯ - ১:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মা কেন জানি বাসায় নতুন এক স্যার নিয়ে এসেছে। সব কিছুতে মার বেশি বেশি। মার একদম নতুন বাতিক। স্যারের সাথে বেশি হেসে কথা বলা যাবে না। এই ওই। এতো মেপে সব করা যায় নাকি? আর সব তো চ্যাংড়া চ্যাংড়া স্যার। বিশ্বজ্ঞানী ভাবে নিজেদের এক এক জন। আমার সবার সব কথায় হু হা করতে ভালো লাগে না। আগের স্যারটাকে খুব ভালো লাগতো। এমনিতে চুপচাপ থাকতেন, কিছু একটা নিয়ে বলতে গেলে তখন আর কথা থামাতেন না। প্রথম প্রথ...মা কেন জানি বাসায় নতুন এক স্যার নিয়ে এসেছে। সব কিছুতে মার বেশি বেশি। মার একদম নতুন বাতিক। স্যারের সাথে বেশি হেসে কথা বলা যাবে না। এই ওই। এতো মেপে সব করা যায় নাকি? আর সব তো চ্যাংড়া চ্যাংড়া স্যার। বিশ্বজ্ঞানী ভাবে নিজেদের এক এক জন। আমার সবার সব কথায় হু হা করতে ভালো লাগে না। আগের স্যারটাকে খুব ভালো লাগতো। এমনিতে চুপচাপ থাকতেন, কিছু একটা নিয়ে বলতে গেলে তখন আর কথা থামাতেন না। প্রথম প্রথম আমার দিকে সরাসরি তাকাতেন না। আমি একদিন বললাম- আপনি চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ভয় পান? তারপর থেকে উনার ভয় একটু কেটেছিল। আমার সাথে আস্তে
আস্তে সহজ হয়ে আসছিলেন। উনার বাড়ির গল্প করতেন। কিন্তু মা কিছু একটা গন্ধ পেলেন।বলা নেই কওয়া নেই একদিন বেতন দিয়ে বলে দিলো – আপাততঃ ও কিছুদিন বাসায় পড়বে। আমার খুব কান্না পেয়েছিল সেদিন। আরো কয়েকটা বাসার স্যার মা বদলেছে। তখন কিন্তু এতো খারাপ লাগে নি।

মার আমি একটাই মেয়ে। আমার বাবার সাথে মার ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমি তখন খুব ছোট। বাবা কখনো আমাকে দেখতে ও আসেন নি পরে । বাবার চেহারা আমি মাঝে মাঝে আঁকি। মাঝে মাঝে গোঁফ দিই, মাঝে মধ্যে দিই না। মা একদিন আলমারিতে চাবি রেখে বাইরে কোথায় জানি গিয়েছিল। আলমারির অনেক জিনিষপত্র আমি ঘেঁটেছিলাম সেদিন । বাবার কোন ছবি পাই নি। হয়তো বাবার কোন স্মৃতি মা রাখে নি । কেন জানি মাকে কখনো ওভাবে জিজ্ঞেস ও করি নি বাবার কথা। আমি মাকে খুব ভয় পাই।কখনো একদম পাই না।

আমার নতুন বাবা আমাকে অনেক আদর করেন। প্রথম প্রথম বাবাকে ভালো লাগতো না। অনেকদিন বাবা বলে ডাকি ও নি। বাবা কিছু মনে করতেন না। মা একটু কড়াভাবে তাকাতো যখন আমি বলতাম উনাকে- বাইরে গেলে কলম নিয়ে এসেন বা এই জাতীয় কোন কিছু।আমার নতুন বাবার কিছু রিলেটিভ আমাদের বাসায় আসার পর মা আমার রুমে ঢুকে দরোজা লাগিয়ে আমার বিছানায় বসলো । বললো- বাবু, আগে কখনো তোমায় বলিনি। এঁদের সামনে অন্ততঃ বাবাকে বাবা বলো। মা এমনভাবে বললো, তারপর থেকে আমি উনাকে বাবা বলি।

আমার স্কুলে কারো সাথে ভাল বন্ধুত্ব হলে কেন জানি সে স্কুল ছেড়ে চলে যায়। আমার সেজন্য ভালো করে কারো বন্ধুত্ব হয়ে ওঠে নি। আমি নিজে নিজে অনেক কাজে ব্যস্ত থাকি। আর্টের ক্লাসে যাই।টিভিতে অনেক সিরিয়াল দেখি।ইদানীং সুডুকু খেলি। আমার নিজের সাথে নিজের সময় কাটাতে খারাপ লাগে না। স্কুলে গরমের ছুটির সময় মা যখন আমাকে একা রেখে চলে যেত, বাইরে যাবার সময় বলতো – একদম মন খারাপ করবে না। আমার কিন্তু মন কিছুতেই খারাপ হতো না। সময় কেটে যেত।

আমি খুব বেশি গল্পের বই পড়ি নি। হ্যারি পটার সবগুলো পড়া হয়েছে , আমার জন্মদিনের উপহার হিসেবে একবার পেয়েছিলাম , চারটার সেট। বাসায় একটা পুরানো ঠাকুরমার ঝুলি আছে , আর কোন গল্পের বই নেই। বইটা আমি অনেক কয়বার পড়েছি। হ্যারি পটারের সাথে ঠাকুরমার ঝুলির অনেক মিল। আমি মাঝে মাঝে ভাবি এটা নিয়ে আমি বড় হলে একটা বই লিখবো।মাকে বলেছি – মা হাসে।

আমাদের বাসায় কোন ফোন নেই। মোবাইল আছে। বাবা মার দুজনের দুটা। আমি নিজের জন্য একবার চেয়েছিলাম। বাবার , আমার নতুন বাবার আপত্তি ছিল না। মা একদম না করলো। আমার একটু খারাপ লেগেছিল। পরে ঠিক হয়ে গেছে। চাচার বাসায় গেলে আমি নেট ব্যবহার করি। স্কুলে আমার সব বন্ধুদের ই-মেইল আছে। আমার নেই শুনলে হাসে। চাচাকে বলেছি। বলেছেন- এই সপ্তাহে করে দেবেন। স্কুলের কাউকে ফোন করতে চাইলে মার মোবাইল থেকে করি । মা বলে - সামনে কথা বলো। রাগ লাগে, তাও সামনে দাঁড়িয়েই কথা বলি। মার সাথে কথা কাটাকাটি করতে আমার ভালো লাগে না।মাকে আমি কিছু বোঝাতে পারি না। উল্টো মা আমাকে যা বোঝায় আমি ঠিকঠাক বুঝে যাই।

আমার রুমের পাশে একটা বারান্দা আছে। রাতে মাঝে মাঝে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমি বিছানা ছেড়ে উঠে চুপ করে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকি। আমি অনেক ভয়ের ভয়ের স্বপ্ন দেখি। ঘুম ভাঙ্গলে স্বপ্নের কিছুই মনে পড়ে না। তবে কেমন খালি খালি লাগে। মাকে একবার বলেছিলাম আমার ভয়ের স্বপ্ন দেখার কথা । মা বলেছে ঠিক মতো হাত মুখ ধুয়ে রাতে বিছানায় শুতে যেতে।

বাসায় এক নতুন বাচ্চা মেয়ে এসেছে কাজ করতে। আগের মেয়েটা চলে গেছে। আগের মেয়েটা খুব গেছো ছিল। কাজের চে অকাজ করতো বেশি। আমি ওর সাথে খেলতাম কখনো কখনো । খুব মজার একটা বাংলায় কথা বলতো। বারান্দায় গিয়ে মাঝে মাঝে কাঁদতো। আমার তখন কষ্ট হতো। আমি কাঁদতে পারি না। মার মতো একদম। আমার নানার মৃত্যুর সময় দেখেছি। মা একদম শক্ত হয়ে ছিল ।কিন্তু কাঁদে নি। আচ্ছা, আমার মা মারা গেলে কি আমি ও মার মতো শক্ত হয়ে থাকবো?


মন্তব্য

অকুতোভয় বিপ্লবী [অতিথি] এর ছবি

"শেষ হইয়াও হইল না শেষ" টাইপের একটা আকুলি-বিকুলি টের পেলাম শেষ করার পর। কিন্তু "আমার মা মারা গেলে কি আমি ও মার মতো শক্ত হয়ে থাকবো?" এইটুকু পড়ার পর মনটা কেমন জানি বিষাদে ঢেকে গেল!

সিরাজুল এর ছবি

খুব ভালো ছোটগল্প। লিখতে থাকেন আরো।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

মাহবুব আলম এর ছবি

আপনার আগের লেখাগুলো মাথার উপর দিয়ে গেসে। গল্পটা অনেক সহজ, সরল এবং নির্লিপ্তভাবে লেখা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

কাছাকাছি দিয়ে গেসে না অনেক উপর দিয়ে ?

তানিয়া [অতিথি] এর ছবি

আপনার লেখার স্টাইল খুব ভালো।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

তাই !!!!!!

মামুন হক এর ছবি

বুঝলাম আপনি মা কা ব্যাটা হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

চোখ টিপি

ফারুক হাসান এর ছবি

অসাধারণ গদ্য!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
মজনুভাই [অতিথি] এর ছবি

আচ্ছা, আমার মা মারা গেলে কি আমি ও মার মতো শক্ত হয়ে থাকবো?

আমার প্রশ্ন হচ্ছে গিয়ে, ছেলে মারা গেলে আপনার মা শক্ত হয়ে থাকতে পারবেন কি না?
যেভাবে থেকেছিলেন উনার বাবার মত্যুর সময়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমার এক বন্ধুর নানি বোবা ছিলেন। পরে জেনেছিলাম উনি আগে কথা বলতে পারতেন, উনার এক ছেলে পানিতে ডুবে মারা যাবার পর উনি কাঁদতে পারেন নি। বোবা হয়ে গেছিলেন।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

দাদা শুভাষীশ দাশ, চান্সে দিলেন একখান বাঁশ।

শোক প্রকাশ পায় সাধারণত কান্নায়,
অবশ্য ঘনিষ্টজনের বেলায় যে পাথর হয়ে যায় মানুষ, তা জানি।

আসলে আমি মাঝেমধ্যে একটু অন্যরকম বুঝিতো(এটা আমার (কু)খাছলত বলতে পারেন)তাই বুঝাতে চেয়েছিলাম যে, সন্তান চায় তার আগে যাতে তার মা মারা না যান।যদিও সাধারণত উল্টোটাই ঘটে। মাগো তুমি আমার আগে যেওনাগো মরে

একসাথে অনেক কিছু বুঝাতে গেলে আমাদের যা হয় আরকি!
ধন্যবাদ

মজনুভাই

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মজনুভাই,

আপনাকে বাঁশ দেয়ার কোন চেষ্টা কিন্তু করি নি। আমি বোধহয় আপনার প্রশ্ন ঠিক করে মানে ধরতে পারি না। গল্প পড়ে আপনি মন্তব্য করবেন আপনি যেভাবে ধরতে পেরেছেন সেই ভাবে। (কু)খাছলত হবে কেন ?

ভাল থাকেন। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

দুর্দান্ত...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দাদা অমুক,

অনেক ধন্যবাদ।

Shanto Sheikh এর ছবি

শান্ত শেখ, কুয়াকাটা।

আপনার লেখাটা খুব চমতকার হয়েছে। আমি আপনার লেখাটা পড়ে যা বুঝতে পারলাম। আসলে মেয়েদের এই বন্ধ, সঙ্কীর্ণ জায়গায় আবদ্ধ করে রাখলে তাদের মন ছোট হয়। তাই আমি বলব বড়দের পাশা পাশি ছোটদের তথাকথিত মেয়েদের সকল ধরনের কাজে অংশ গ্রহন করার সুযোগ করে দিতে হবে। চালিয়ে যান।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

প্রিয় শান্ত শেখ,

আমাদের দেশে অনেক মেয়ে এই সমস্যার মধ্যে আছে। আর উত্তরণের পথ আমার জানা নেই।

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গল্পের নামকরণের সার্থকতা বুঝতে পারলাম না। একটু বুঝিয়ে দিন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দাদা পান্ডব,

আমার এই বিশ মিনিটে নামানো গল্পে আপনার পদধূলি পেলাম। আমি কৃতার্থ। অথচ বাদবাকি সচলে যা ছাপিয়েছি (একটা কবিতা বাদ দিলে ) তার জন্য আমার বহুত মেহনত করা লাগছে।

গল্প লেখার পর ভাবলাম নাম কি দেই - মা , আমার মা, মাকে... আসলে মাকে নিয়েই তো মেয়েটার ভাবাগোনা।

পরে ভাবলাম মেয়েটা যেভাবে ভেবেছে তাতে মনে হয় চারপাশের আবদ্ধ পরিবেশে থেকে থেকে সে নিজেকে অনেক গুটিয়ে নিয়েছে। পোকার মতো !

তাই নাম দিয়ে দিলাম - পোকা।

জুঁই এর ছবি

প্রচন্ড ভালো লাগলো। সচলে দেখলাম আপনার বেশির ভাগ লেখা সাহিত্য নিয়ে না হলে সিনেমা নিয়ে। গল্প বোধ করি এটাই প্রথম। আপনার নিজের লেখা গল্প কি আর কোথাও প্রকাশ পেয়েছে ? পারলে লিংক দিয়েন। এককথায় এমন নির্মেদ গল্প পড়ে আমি মুগ্ধ।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

না , গল্প প্রচেষ্টা এটাই প্রথম। সিনেমা নিয়ে লিখতে আমি আনন্দ পাই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

গল্পের নামকরণ আর ঘটনাপ্রবাহের সাথে নামকরণের সাদৃশ্য খুঁজে পেতে কষ্ট হয়েছে। ... গল্পের পরিণতি একটু দ্বিধায় রেখেছে।

যাকগে, আপনার গল্প পড়ে ভালো লাগলো।

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

থ্যাংকস।

সবুজ বাঘ এর ছবি

এত হাহাকার তো ভালো লাগে না...মন পুড়ায়..

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হ্যাঁ

ফারাবী [অতিথি] এর ছবি

লেখার স্টাইলটা ভাল লাগল। চালিয়ে যান।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ফারাবী - আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আলতাফ হোসেন এর ছবি

একে একে জ্বলিছে দেউটি ('দেউটি' তো? অভিধান দেখতে ইচ্ছা করছে না।)। সবই দেখি মানায়, মানে, সবই পারো। আলোচনা, কবিতা, গল্প। আমার অবশ্য তোমার গদ্য দেখেই মনে হয়েছে, তুমি লিখতেও এসেছ (একটা ছবি করা তোমার ও প্রমার স্বপ্ন---বলেছিলে), শুধু ছবি করতে নয়। কবিতা, গল্প সে মনে-হওয়া জোরালো করল।
অনেক শুভেচ্ছা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

শুভেচ্ছা আপনাকে ও......

যুধিষ্ঠির এর ছবি

বাহ, চলচ্চিত্রের কঠিন কঠিন জঁর থেকে একেবারে মাটির কাছাকাছি অনুগল্প! গল্প লেখার ধরনটা ভালো লাগলো।

সত্যি কথা বলতে কি, আপনার আগের লেখাগুলোর ভাষার সাথে ঠিক কানেক্ট করতে পারছিলাম না। এখানে সে সমস্যা হয়নি একেবারেই। চলচ্চিত্র নিয়ে এমন ভাষায় লিখলেই পারেন।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধর্মপুত্র,

আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। চলচ্চিত্রের উপর লেখাগুলো অনেকটা
স্ট্রিম অব কনশাসনেস ধারায় লেখা। প্রচলিত ফিল্ম আলোচনার ধারার চে একটু ভিন্ন। যাই হোক আপনার পরামর্শ মাথায় রাখবো।

আপনি একটু বেশি বেশি লিখুন।

বইখাতা এর ছবি

চমৎকার গদ্য।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আমি গল্প বুঝিনা, গল্প করতেও জানিনা, খালি পড়তে জানি।

তয় ভালু পাইলাম। পারলে আরো নামান এইরকম।

---------------------------------------------------
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ছবিওয়ালা,

ভালু পায়ছেন দেইখা ভালু লাগলো।

অনিকেত এর ছবি

গল্পটা হঠাৎ হঠাৎ সত্যজিতের 'পিকুর ডায়েরী'র পিকুর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। অন্তর্মুখী শিশুর অন্তর্লীন অন্তহীন সংলাপ--নিজের সাথে।

একাকী শিশু মনের দিকটা খুব সুন্দর উঠে এসেছে।

খুব ভাল লাগল, সব মিলিয়ে।

আরো এমন লেখা আসুক।

শুভেচ্ছা রইল।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ।

( বাই দা ওয়ে , আগে আপনার মন্তব্যের জবাব দিছিলাম। আসলো না কেন কে জানে ? এবার অনেক একটু বাড়ায়ে দিলাম চোখ টিপি )

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দারুণ! আম্মার (গল্পের) উপর রাগ লাগতেছে...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এদ্দিন বাদে আপনার চোখ পড়লো পোকা শিরোনামে !!! রাগ লাগাই স্বাভাবিক। চোখ টিপি

মুস্তাফিজ এর ছবি

জীবনের গল্প, অনেকের জীবনেই সাথেই মিল পাওয়া যাবে। ভালোলাগাটাও জানিয়ে গেলাম।
আরেকটা কথা

... পেয়েছিল সেদিন। আরো কয়েকটা বাসার স্যার মা বদলেছে। তখন ...
এইটা বুঝলামনা।

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই,

মনোযোগ দিয়ে আপনি গল্প পড়েছেন বোঝা যাচ্ছে। ব্লগের লেখার পাঠক সাধারণতঃ হালকা চালে পড়ে যায়। মন দিয়ে পড়ে না। আপনি ব্যতিক্রম।

গল্পের কিছু কিছু জায়গায় মেয়েটার সলিলাকুই আমাদের পুরা কথা বলতে চায় নি, কি করা চোখ টিপি

অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। ভাল থাকবেন।

রানা মেহের এর ছবি

খুব বিষন্ন গল্প
অনেক ভালো লাগলো পড়ে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

তুলিরেখা এর ছবি

পড়লাম। ভালো লেখা। চেনা প্লট, তবে লেখার গুণে টান থাকে।
কোথাও কোথাও প্রশ্ন রয়ে গেল। কিন্তু হয়তো প্রশ্ন রেখে যাওয়াই লেখকের উদ্দেশ্য।
আরো লিখবেন। সংলাপ গুলোর জায়গায় আরেকটু দেখবেন।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। আপনার পরামর্শ একদম যথার্থ। মাথায় রাখবো।

ভালো কথা , দিদি স্নিগ্ধাকে এই গল্প কেমন করে পড়ানো যায়? কোন পথ জানা আছে ?

স্নিগ্ধা এর ছবি

পড়লাম হাসি

আপনার গদ্যের হাত খুবই ভালো। সাবলীল এবং নির্মেদ (অতিথি লিখিয়ে জুঁইও বলেছেন এটা)। তুলিরেখার মতোই বলি - চেনা প্লটের গল্প, কিন্তু লেখার গুণে পাঠককে শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য করে। এটা কিন্তু ঈর্ষণীয় ক্ষমতা!

তবে ...... কিছু 'তবে' আছে।

নামকরণের ব্যাখা আপনি দিয়েছেন, সেটা পড়েই বলছি - 'পোকা' কথাটা শুনলে কেন যেন (আমার অন্ততঃ) একটা নেগেটিভ এসোসিয়েশন হয়, যেটা ধরুন 'রেশমপোকা' বা 'গুঁটিপোকা' শুনলে হয় না। তখন কিছু একটা অপ্রকাশ্য, কিছু একটা বলা হয় নি, কেউ নিজের ভেতর গুটিয়ে আছে - এধরনের কিছু অনুভূতি আসে।

মন্তব্যে মেয়েটাকে যে 'আবদ্ধ পরিবেশ'এ বলা হচ্ছে, এ ব্যাপারটা আমি ঠিক বুঝি নি। আবদ্ধ মানে তো আটকানো। স্যারের সঙ্গে সম্ভাব্য ঘনিষ্ঠতা সন্দেহে স্যার বদলানো, মোবাইল নিতে না দেয়া - এগুলো কি ঠিক সেই ক্যাটাগরিতে পড়ে?

আমার কাছে বরং মেয়েটিকে একটু একাকী এবং চাপা মনে হয়েছে। যার স্কুলে নতুন কোন বন্ধু হলেও সে বন্ধু চলে যায়, মা'র সাথেও সম্পর্ক ভীষণ যে বন্ধুর মতো সেটাও বলা যাবে না। সব মিলিয়ে, নতুন বাবার সাথে বাস করা এবং বড় হয়ে ওঠার এই ট্র্যানজিশনটা সে একাকী পাড়ি দিচ্ছে।

সবচাইতে ভালো লেগেছে শেষের লাইনটা। চমৎকার!

কী, এখন হাত কামড়াচ্ছেন, কোন দুঃখে আমাকে পড়াতে চেয়েছিলেন ভেবে? হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দিদিভাই,

হাত একদম কামড়াচ্ছি না চোখ টিপি

আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো। আবদ্ধ ইন দা সেন্স চিন্তার আবদ্ধতা ও হতে পারে।

সচলে বদল নামে একটা লেখা ছাপা হয়েছিল। সচলে সেটাই আমার প্রথম লেখা। সচলায়তনে স্বাগতম আপনিই প্রথম জানিয়েছিলেন। তারপর আরো বহু কিছু লিখে গেছি। আপনি নিশ্চুপ। তাই একটু খোঁজ লাগালাম আর কি।

ভালো থাকেন। বড় করে মন্তব্য করেছেন দেখে আবারো থ্যাংকস।

তানবীরা এর ছবি

মনটা কাঁদিয়ে দিলো

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

...............

সাফি এর ছবি

দারুন লাগলো

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

রাজপুত্তুর

থ্যাংকু।

মেরিনা এর ছবি

আপনার গল্প লেখার হাত অসম্ভব ভালো। এটা আমার সবচে ভালো লাগল।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।