রিপনের ঘুম আসতে দেরি লাগে। সারাদিন ধরে রিয়াজুদ্দিন বাজারের ঘড়ির দোকানে ঘড়ি সারাই করতে করতে চোখে আজকাল কেমন জানি বেসামাল লাগে। রাত বাড়ে। চোখে সূচের মত ব্যথা বাড়তে থাকে। ঘুম পালায় অনেক দূরে। ফুলু এদিকে মরার মতো নাক ডেকে যায়। বেটি মানুষের গায়ে গন্ধ থাকলে সাথে নিয়ে শুতে মন চায় না। ছেলে আমিনের বয়স ছয়। মায়ের গায়ের ওপর পা তুলে গভীর ঘুমে। রিপনের নানা কিছু মনে পড়ে। ছোটবেলার কথা। গ্রামের কথা। ছয় বছর বয়েসে কি কি করত মাথায় কি করোটিতে ঠিক করে আসে না। তবে মনে আছে দৌড়ানির কথা। আহারে আম্মা মরে গেলেন চার বছর হল। যুদ্ধের সময়ে আম্মা কিই না করছিল ছেলে মেয়ে দুইটাকে বাঁচানোর জন্য। তখন বোন নদীর বয়েস ছিল দুই। আরো কিছু হইছিল। সব স্মরণে আসে না। আব্বায় যুদ্ধের পর পর আম্মারে তালাক দেন। সেলাই সুলাই করে আম্মা সংসার টেনে নেন। রিপন আর নদীর পড়াশুনা বেশিদূর আগায় না। নানা ধান্ধা শেষে রিয়াজুদ্দিন বাজারের ঘড়ির দোকানের মধ্যে নিজের একটা সারাইয়ের খুপড়ি খোলে। সেটা দিয়েই সংসার টানে। ফুলুর নাক ডাকা আরো বেদম হয়। একটা মশা রাগ ভৈরবীর সুর বুনতে বুনতে ওড়ে। কোথাও কলাপ্সিবল গেট খোলার আওয়াজ হয়। রাস্তার ঘেয়ো কুকুরটা আলতো করে গলা খাঁকারি দেয়। ঘরের বেড়ার ফাঁকে চাঁদ চকিতে আলো ফেলে। পরে নিভে যায়।
শেষরাতে একটু ঘুমে ঢলে পড়ে রিপন। ছোটবেলার তার খেলার সাথী ছিল রুনা। তাকে স্বপ্নে দেখে। কেন যেন ঢালু এক বালিয়ারির ওপর ঝুঁকে আছে সে। এখনি পড়ে যাবে। এখনি। ঘুমের মধ্যে চিল্লায়ে রুনাকে ডাকতে গেলে ফুলুর ঘুম চটে যায়। ঢ্যামনা ঘুমের মইধ্যে ও মাগিরে বোলায়। বউয়ের খিস্তিতে রিপনের ঘুম ছিটকে চৌকাঠে লুকায়। বালিয়ারির সামনে রুনা। রুনার সামনে বালিয়ারি।
মন্তব্য
ভালো লেগেছে পরমানু গল্প!
ধন্যবাদ।
যাক, সচল হয়ে ঘুমায়ে পড়েন নাই।
এটা ঘুমানোর আগের লেখা।
- অবশেষে কী হৈলো, রিপন মিয়া বউয়ের হাতে পিডা খাইলো সাত সকালে?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বুইঝা নেন কি অইতারে?
কোন কারণে অস্থির নাকি? গল্পতো সবে দানা বাঁধছিল। গল্পের যে অংশে রিপন আপনমনে ভাবে সেখানে ভাষায় একটু গুরু-চণ্ডালী দোষ আছে। আর একবার কষ্ট করে গল্পটা শেষ করলে কেমন হয়?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এখন ঘষামাজার সুযোগ আছে। দেখি কিছুটা পাল্টাব।
টুকুন গল্প হিসেবে বেশক লাগলো।
***********************************************
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???
ধন্যবাদ।
'টুকুন গল্প' বেশক লাগলো।
***********************************************
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???
দারুণ। আর ও আয়তনে বাড়লে ভাল লাগতো।
...
ভালো লাগল শুভাশীষ।
শুভেচ্ছা।
মধুবন্তী মেঘ
সাড়াই > সারাই
সাথি > সাথী
... এই গল্পটাও দানা বাঁধার আগেই শেষৈসে। ঘটনা কী ?? মন নাই নাকি ??
_________________________________________
সেরিওজা
সেরিওজা, তোমার নিজের গল্প কই? মেশিন ডিজাইন-থিয়োরী অভ মেশিনের অজুহাত আর কতদিন দেবে? এই অজুহাত যে আমার মত সচলের আরো অনেকের কাছে চলে না তাতো জানো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই যে পান্ডবদা মার্লেন এক প্যাঁচ... পড়ালেখা না হয় করি না, কিন্তু ল্যাব্রিপোর্ট আর এসাইন্মেন্ট তো ঠিকই সাবমিট কর্তে হয়
... ঐটা পথে আছে। শুরু কর্সি।
_________________________________________
সেরিওজা
ধানাই ফানাই বাদ্দেও।
ঠিক্কর্লাম।
টুকুন গল্প টুক করে শেষ!
--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হুম।
পাঠক হিসেবে এই গল্পের খানিকটা বিস্তার প্রত্যাশা করেছিলাম দাদা।
আরো আসুক গল্প
---------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
বইমেলায় কি কি বই বের করছেন?
স্মৃতিরা প্রায়ই বিশ্বাসঘাতকতা করে বলে, আমাদের মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা অনেক স্পর্শকাতর বিষয় প্রকাশ হয়ে পড়ে ঘুমের ভেতর। পাশে কেউ থাকলে তো ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে কি প্রতিটি মানুষকেই একা ঘুমাতে হবে? এটা কোনো সমাধান হয় না। কাজেই বউ যাতে বলতে না পারে "ঢ্যামনা..." আর সে কারণেই অতীতের সু ও কু সব কীর্তিকলাপই বউয়ের কাছে প্রকাশ করে দেয়া যেতে পারে। একই ভাবে বউও পারে এমনভাবে প্রকাশ করতে। ফলে দুজনই দুজনের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
ঠিক্কইছেন বস্। তয় এইডা পড়নের পর আপনার মন্তব্য জাননের হাউস লাগে।
ভালো লাগল। এরকম ছোটই রাখা ঠিক হয়েছে, না হলে মেদ আসতো।
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
কথা সত্য।
ভাল লেগেছে...।
ভাল।
নতুন মন্তব্য করুন