আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ছোটগল্প। পর্ব এক।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: বুধ, ১০/০৩/২০১০ - ১:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তিনি মাত্র তিরিশটা গল্প লিখেছেন। এতেই তাঁর নাম বাংলা সাহিত্যে অক্ষয় হয়ে গেছে। ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’ গল্পটি ছাড়া বাকি সব গল্পে প্লেটোনিক ভাষার আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে পাওয়া যায় না। তিনি সেখানে খুব শক্তভাবে জীবনঘনিষ্ঠ। আর সাথে আছে নিখুঁত ডিটেইলস্। দেহ মনের যোগসূত্রে যে অস্তিত্ব তার ভাবগতিক ইলিয়াসের লেখায় যেভাবে ফুটে উঠেছে, অন্য কারো লেখায় তার যথাযথ আবহ আসে না। ইলিয়াস এইদিকে অনন্য। তাঁর সমমানের ছোটগল্পকার প্রতিতুলনা হিসেবে আনতে চাইলে চেকভ ছাড়া কাউকে চোখে পড়ে না। অন্তত আমার কাছে।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্পে পুরান ঢাকার কথাবার্তা কি গালাগালির যথেচ্ছ ব্যবহার আছে। অনুভূতির তীব্রতা বোঝাতে এই ভাষার বিকল্প তৈরি করা শক্ত। তিনি ন্যারেটিভে যান তাঁর নিজস্ব কুশলে। যাই হোক। তাঁর গল্পগুলোর মধ্যে 'যুগলবন্দি' আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্প। সারমেয় আরগস্‌ আর প্রোট্যাগনিস্ট আসগরের মধ্যের সুতুর ( suture) অবিশ্বাস্যরকম কায়দায় তিনি হাজির করেছেন। এই পর্বে ‘ফেরারী’ গল্প দিয়ে কথা শুরু করব। গল্পের কাহিনী দিয়েই আরম্ভ করি। বাপের অসুস্থতায় মতিন ডাক্তারকে না পেয়ে হানিফ পাঁচভাইঘাট লেনের মাথায় ক্যারম খেলার আসরে যায়। সালাউদ্দিন, আহসানউল্লারা হানিফের আব্বা ইব্রাহিম ওস্তাগরের জিনপরী দেখার ক্ষমতা নিয়ে হাসি তামাশা করে। ফাঁকতালে মতিন ডাক্তারের ব্যবচ্ছেদ হয়।

‘ঈমানে কই ওস্তাদ! ঈমানে কই!’ আহসানউল্লার কথার জবাব দিতে সালাউদ্দিনের চোখে মুখে সাড়া পড়ে যায়, ‘জিন্দাবাহারের মইদ্যে ঢুইকা চাইরটা পাঁচটা ঘর বাদ দিয়া চিপা গল্লি আছে না একটা?- আছে না?- ঐ গল্লির লগেই ডাক্তারের ডিসপিনসারি, ডিসপিনসারির বগলে আমার মামুগো তেহারির দোকান। কতো গেছি না আমি? বড়ো রাস্তাটা পার হইলেই তো তোমার বাদামতলীর মাগীপট্টি, মতিনে হালায় দাওয়াই দিতো খানকি মাগীগো আর খানকিগো ভাউরা থাকে না?- হেইগুলিরে। মাগীপট্টির কেউগার ব্যারাম হইছে তো ডাকো হালায় লম্বুরে, জিন্দাবাহারের মইদ্যে হ্যার নামই আছিলো খানকির ডাক্তার।’

হানিফ এদিকে মাস্তান ডামলালুর সাগরেদ হতে চায়। কয়েকদিন আগে ডামলালুর সাথে ছিনতাই করতে গিয়ে গাড়ির মধ্যে কয়েকজনকে দেখে হানিফ পুলিশ ঠাউরে ভয় পেয়ে যায়। পরে ডামলালুর কাছে বলতে গিয়েই খিস্তি খায়। জানতে পারে, এরা ইসটুডেন। ক্যারম খেলার আসরে ভাইপো কামালকে দেখে হানিফ বাড়ির দিকে রওনা দেয়। কামালের চেহারা হালকা বর্ণনায় সারেন ইলিয়াস। কামালকে জানতে পারি তার অবিশ্রাম কথাবার্তায়।

‘চাচা, দাদায় মনে লয় খুব সোন্দর পরী দেখছে একখান। পরী না খাটের তলায় ঢুইকা পড়ছিলো, পরীগো বডি তো বহুত লাইট, খাটের তলায় ঢুইকা চুপ মাইরা বইয়া রইছে। দাদায় না বুঝবার পাইরা খালি জাম্প মাইরা উইঠ্যা খাটের তলায় বিচরাইয়া বেড়ায়। পরীগো দেইখা দাদায় খুব খুশি, না চাচা?’

কামালের বয়স আন্দাজ করা যায় তার কথার শেষ বাক্যে। অযথা ডিটেইলসে যান না বলেই ইলিয়াসের গদ্য সাবলীল, নির্মেদ। ঘরে ঢুকে দেখে বাসায় আসছে তার বোন ফাতেমা আর তার বর গ্রামের মোল্লা হবিবর আলী মৃধা। এই গেঁয়ো নোংরা দুলাভাইকে হানিফের পছন্দ নয়। নিজের বোনের বর্ণনা হানিফের চিন্তায় পড়ে নিই।

ওর বোন ফাতেমাবিবি, হানিফের শৈশবকালের একমাত্র বন্ধু ফাতেমা, লম্বাটে মুখে তিনটে বসন্তের দাগ, ডানদিকের দাঁত একটা উঁচু; ঠাণ্ডা, নরম, ঘামে ভিজে, রোগা ও কালো ডান হাতে আঁকড়ে-ধরা হানিফের বাঁ হাতের তর্জনী- এইতো এইসব রাস্তা, গলির ভেতর দিয়ে ভোরবেলা সোজা চলে গেছে শাহ সাহেব মসজিদের বারান্দায়, সেখানে আসিরুদ্দিন মৌলবির মক্তব।

হানিফের বড়ভাই হান্নান ব্যবসাপাতি করে রোজগার বাড়াচ্ছে। সে ডাক্তার নিয়ে আসে বাপের জন্য। ডাক্তার ঘরের পরিবেশ দেখে বলেন ড্যাম্প। হান্নান ডাক্তারের কথার সাথে সাথে হয়াল দেয়। ওল্ড ঢাকাকে বলে দেয় ন্যাস্টি। সামলানোর জন্য বলে- মালিবাগে সে বাড়ি করছে। ডাক্তার চলে যাওয়ার পরে ঘরের পরিবেশ বর্ণনার জন্য আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বর্ণনা খেয়াল করেন।

ঘরে বড়ো গুমোট। গুমোট এতো বেশী যে ছাদের পুরনো কড়িবর্গার টকটক মেঘ যে কোনো সময় ঘাম হয়ে ঝরে পড়তে পারে। তার ২ ছেলে, ২ মেয়ে ও ১ জামাই অপরিচিত অনুভূতি নিয়ে চূড়ান্ত কোনো কিছুর প্রতীক্ষা করে। এদের গলায় খরা, সুতরাং জিভ জলশূন্য। এই কষাটে স্বাদের নীরবতায় ঢিল পড়ে যখন হবিবুর আলী মৃধা ভাঙা ভাঙা ও খরাঝলসানো স্বরে বলে ওঠে, ‘আল্লা, আল্লা, তুমি রহমকরনেওয়ালা, আল্লাহু গনি!’ এই ঈশ্বর-সম্বোধন একটি নতুন পাখা গজানো পিঁপড়ে হয়ে সমস্ত ঘরে দীর্ঘ উড়াল দেয় বাইরের রোঁয়া-ওঠা সন্ধ্যাবেলার দিকে লাল ও ধোঁয়াটে প্রদীপশিখায়। সেই ডানা-ওঠা পিপীলিকা দেখে হবিবুর আলী মৃধার রুহ কেঁপে ওঠে, ‘এশার আজান অয় নাই?’

তার এই প্রশ্ন শেষ হতেই ইব্রাহিম ওস্তাগর সমস্ত ঘর কাঁপিয়ে চিৎকার করে, ‘অরে লইয়া তুই কৈ যাস? আব্বে খানকির বাচ্চা, কই লস অরে?’ একই সঙ্গে পাড়ার দুটো মসজিদ থেকে আজান শোনা যায়। আজানের ধ্বনি ও ইব্রাহিমের জিনপরীদের প্রতি নিক্ষিপ্ত সংলাপ ঘরের নোংরা ও স্যাঁতস্যাঁতে মেঘের ফাঁকে ফাঁকে মাথা ঠোকাঠুকি করে ও পড়তে পড়তে বেঁচে যায়। এদের কোনো কোনো টুকরা ছিটকে পড়ে গলিতেও এবং গলির শেষপ্রান্তে ধোলাইখালে ডাইভ দিতে গিয়ে দ্যাখে ঘোলা জলের জায়গায় সেখানে রাস্তা তৈরি হচ্ছে।

পুরানো ঢাকার এই বিবর্তন ইলিয়াসের পছন্দ ছিল না। মানুষের ভিড়ে, কংক্রীটের স্তুপে পুরানো ঢাকার ঐতিহ্য আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। সেখানকার উঠতি বয়সের ছেলেরা এখন আর গাল পেড়ে কথা আগায় না। পুরানো ঢাকার নতুন বাপেরা এখন আর ছেলে পড়ছে দেখে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলে না, ‘আব্বে হালায় খানকির পোলায়, পড়োস।’ পুরো আরবান চরিত্রের লোকেরা তাদের চরিত্র পাল্টে মুখোশ পড়লে ভাল লাগার কথাও নয়।

হবিবুর কোরান তেলোয়াৎ করতে গিয়ে জানতে পারে বাসায় কোরান শরীফ নাই। হানিফ কোরান শরীফ আনার জন্য আমীর চাচার বাসার দিকে যাওয়ার জন্য আবার ঘর থেকে বেরোয়। নিয়ে ফিরে আসার সময় ইব্রাহিম ওস্তাগরের যৌবনকালের কথা ভেবে নিতে থাকে হানিফ।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এই একটি গল্পে 'করোটি' শব্দটি চার জায়গায় ব্যবহার করেছেন। করোটি শব্দের প্রতি তাঁর মুগ্ধতা আছে। তবে সঠিক ব্যবহারের জন্য এসেন্স অনেকাংশে বেড়েছে, বেশি ব্যবহারে জীর্ণ হয়নি।

হানিফের মাথা পরিষ্কার হয়ে আসছে আস্তে আস্তে। স্বচ্ছ করোটিতে নতুন ও কোমল একটি হাওয়া খেলে যায়ঃ বাবায় বহুত দিন বাদে অগো লগে মিলতাছে।

উনিশ বছরের ইব্রাহিমকে মনে পড়ে যাওয়ায় হানিফের চোখ, মুখ, গলা, কান, নাক, কপাল,এমনকি করোটি ও চুলেও ঝিরঝির হাওয়া বইতে শুরু করে।

সুতরাং ঠাসবুনুনী করোটি নিয়ে প্রায় নাচতে নাচতে হানিফ পৌঁছে যায় নবদ্বীপ বসাক লেনে।

এই এক মুহূর্তেই হানিফের সমস্ত শরীরের রক্ত, মাংস এবং করোটির বিন্যাস বড়ো এলেমেলো হয়ে গেল।

শেষ পর্যন্ত ওস্তাগর মারা যায়। ছুটে বেরিয়ে আসে হানিফ বাসা থেকে। ইলিয়াসের লেখনীতে হানিফের সাথে পুরানো ঢাকার বঙ্গলক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, সোনার বাংলা হার্ডওয়্যার সাপ্লাই, দি সানশাইন লণ্ড্রী, ভিক্টোরিয়া পার্কের বালির স্তুপ, ল্যাম্পপোস্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে কুকুর, স্টার সিগ্রেটের সবুজ বিজ্ঞাপন, ঈশ্বরদাস লেন, ‘বাণী ভবনে’র পাশের একটা বয়স্ক কুকুর, রূপচাঁদ লেন, শুকলাল দাস লেন, ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মৃত এবং বয়সে নবীন কুকুর, দেবেন্দ্র দাস লেন পেরিয়ে সূত্রাপুর থানার সামনে পাঠক হাজির হয়।

আমি যদি অহন থানার মদ্যে গিয়া দারোগারে ডাইকা কই, ‘স্যার, আমার নাম আবদুল হানিফ, আমার বাপের নাম ইব্রাহিম, মরহুম মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওস্তাগর, কলতাবাজারের ডামলালু আমার ওস্তাদ লাগে, আমি ডামলালুর পাট্টির মানু,’ তো হালার খানকির পোলায় আমারে ধইরা রাইখা দিবো না? রাখবো তো?


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ইলিয়াসের গল্প নিয়ে লেখা!!!
গভীর মনোযোগ নিয়ে এ সিরিজ পড়ার ইচ্ছা জানিয়ে রাখলাম। সাধ্যে কুলালে ২/৪টা কথাও বলা যাবে।

চলুক...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বস্‌, থ্যাংকস।

হিমু এর ছবি

রিভিউ (বা পাঠপ্রতিক্রিয়া) কেন যেন অতটা ভালো লাগলো না। অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে বেশ কিছু কারণে।

১. চেকভের সাথে ইলিয়াস তুলনীয়, কিন্তু কেন, এর কোনো উত্তর নেই।

২. রিভিউ করতে গিয়ে গল্প থেকে কোট করতে হচ্ছে বারবার। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, এটা রিভিউয়ের দুর্বলতা হিসেবেই চিহ্নিত হওয়া উচিত।

৩. গোটা গল্পের কাহিনীবর্ণনা ছাড়া রিভিউতে মৌলিক উপাদান কম। করোটি শব্দের প্রতি ইলিয়াসের ঝোঁক, পুরনো ঢাকার মানুষদের পাল্টে যাওয়া আর পুরনো ঢাকার খিস্তিভূষিত ভাষা ব্যবহারে দক্ষতা, এই ক'টি জিনিসই কেবল উঠে এসেছে। এর মধ্যে পরিবর্তনের ব্যাপারটা ইলিয়াসের পছন্দ ছিলো না, এই স্টেটমেন্টের ভিত্তি কী, সেটাও স্পষ্ট হয় না।

পাঠক হিসেবে আমার অনুরোধ থাকবে, ইলিয়াসের কয়েকটি ছোটোগল্পকে গুচ্ছবন্দী করে তাঁর ছোটোগল্পের অনন্যতা বা মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করার। অনধিকার চর্চা হয়ে গেলে ক্ষমাপ্রার্থী।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১। এটার ব্যাখ্যা করব। আপাতত চেকভের সব গল্পের লিঙ্ক দিলাম।

২। আমার রিভিউতে মূল লেখকের গদ্যের সাথে পাঠককে পরিচিত করিয়ে দেয়ার একটা উদ্দেশ্য থাকে। বারংবার কোটে প্রবন্ধকারের বলার ফ্লোতে বাধা আসে ঠিকই। তবে সেটা মূল লেখক পুষিয়ে দেন বলে আমার ধারমা।

৩। এটা ঠিক, বেশি দিক নিয়ে আলোচনা আসে নাই। ‘কথা পরম্পরা’য় শাহাদুজ্জামান আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছিলেন। ইলিয়াস উত্তরে বলেছিলেন- পুরাতন ঢাকার পরিবর্তন তাঁর কাছে ভাল ঠেকে না। অন্যান্য আরো গল্পে এর প্রমাণ আছে। পরের পর্বগুলোতে এগুলো নিয়ে বিস্তারিত লিখব।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস অনেকে কঠিন মনে করে পড়ে না। কিছু কিছু তথাকথিত রুচিশীল পাঠক খিস্তির ভয়ে ইলিয়াস পড়া থেকে বিরত আছেন। এক দুইজন নতুন পাঠকও যদি 'ফেরারী' গল্প পড়ার তাগিদ বোধ করেন, তাহলে লেখা সার্থক। কথা হচ্ছে যাঁরা ইলিয়াসের লেখার সাথে পরিচিত বা মোহিত তাঁরা আমার রিভিউ থেকে কি পাবেন? সোজা বাংলায় কিছু হয়তো পাবেন না। আবার হালকা কিছু পেতেও পারেন।

ইলিয়াসের সব গল্প মিলিয়ে একটা সাধারণ আলোচনা করা যায়। ঠিকাছে।তবে ইলিয়াসের প্রত্যেকটা গল্প আলোচনা করার মতো। যদি পাঠক সাহস দেন- এক একটি গল্পের অনন্যতা বা কাঠামো কি ছোটখাট কিছু আঙ্গিক নিয়ে আমি কিছু কথা বলতে শুরু করি। কনফুসিয়াসের মত পাঁড় ইলিয়াস পাঠক সাথে অন্যরা দুই চার পয়সা যোগ করতে থাকেন।

পুনশ্চঃ তাসনীম ভাই তোমার বই আমার কাছে পাঠাচ্ছেন। ভাবছিলাম একটা রিভিউ লিখব। কোট করা ছৈলত ন? চিন্তিত

হিমু এর ছবি

সব গল্প মিলিয়ে সাধারণ আলোচনা ... নাকি যে বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে বলবেন, সেগুলো যেসব গল্পে আছে, তাদের এক করে এনে বলবেন? যেভাবে আপনার সুবিধা।

পুনশ্চস্য উত্তরঃ কোট করা ছৈল্ত, কিন্তু কোটের ঝুল যেন লেখা ঢেকে না ফেলে। আপাতত ইলিয়াসের গ্রন্থচ্ছেদই চলুক, আমার ফালতু বইয়ের রিভিউ পরে করলেও ছৈল্ত।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

না না রিভিউ লিখব। নাইলে আবার তাসনীম ভাই রিভিউ লিখব না দেখে বই পাঠাবেন না। দেঁতো হাসি

হিমু এর ছবি

হই মিয়া বই কিনেন না ক্যান ১ কপি? তাসনীম ভাই খাবাদার এই পাপিষ্ঠ শুভাশীষদাকে বই দিয়েন না! দেখি জবরদস্তি ১ কপি কেনানো যায় কি না।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বই এক কপি বইমেলা থেকে কিনাইছি। আমার এখানে আসতে আসতে মে মাস। এর মধ্যে তাসনীম ভাইয়ের কাছে বই চলে এসেছে। উনার পড়াও শেষ। এখন রিভিউ লিখতেছেন। চোখ টিপি

তাসনীম এর ছবি

আমার রিভিউটা হিমুর ব্লগে আছে। লিংক এইখানে পরে কখন সচলে পাঠাবো, আসমানী মডু আপত্তি না করলে হাসি

আমিও রিভিউতে বইয়ের প্যারাগ্রাফ উঠিয়ে দেওয়ার বিপক্ষে। তোমারে বই শুক্রবারে মেইল করতে চেষ্টা করব।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়লাম।

বস্‌, আমি প্যারা কোট করার তুমুল পক্ষে। যদি সেটা ঠিকমত হ্যাণ্ডল করা যায়। গ্রন্থালোচনায় মূল লেখকের কোন কিছু দিবেন না- একটু হেজিমোনি হয়ে যায় না।

আমি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ছোটগল্প নিয়ে আলোচনা করব, আর সেখানে উনার দুর্বিনীত, ধারালো, গেঁথে ফেলার মত বাক্য বা প্যারা থাকবে না -এত বড় দুঃসাহস আমার নাই।

রিখি এর ছবি

হেজিমোনি মানে কি?
তাসনীম ভাই, আসমানী-মডুর নাম আর নিয়েন না। সাদা-মডু তাইলে মাইন্ড করে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হোনেন রিখি-আপা,

হে যে মনি হেই মনি-তেই থাইকা যাওনরে কয় হে-যে-মনি। দেঁতো হাসি

রিখি এর ছবি

মাথার উপর দিয়া গেলো।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সচলে একটা পুনর্পাঠ সেকশন রাখা যায় ... কোনো এক কোনায়


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বইয়ের বা লেখার আলোচনা মানেই এক অর্থে পুনর্পাঠ। হাসি

হাসিব এর ছবি

অনেকদিন পর আপনার হাত ধৈরা ইলিয়াস পড়া হৈলো ।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইলিয়াসের ছোটগল্প নিয়ে আলোচনা দেখেই ব্যস্ততার মধ্যেও পড়লাম। আমারও হিমুর কথাই। রিভিউ হিসেবে পাঠক কিছু পাবে না এটা পড়ে। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা কেবল আলোচনার সূত্রপাত।
এখন একটা ক্ষ্যাপ নিয়ে দৌড়ের উপর আছি। আশা করছি আজকে রাতে এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারবো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মুনতাসীর ভাই,

নিহত নক্ষত্র পড়নের পর না আপ্নের মেইলানোর কথা।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চলুক চলুক

সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে বলছি, ইলিয়াসের গল্পপাঠ আমার কাছে অত্যন্ত কঠিন বলে মনে হয়েছিলো। ... ভাষার এমন কঠোর বাস্তব প্রয়োগ আমার কাছে একটু স্যাডিস্ট স্যডিস্ট বলে ঠেকে। পাঠককে কষ্ট পেতে হয়।- এটা কিন্তু আবার সমালোচনা না, এটা আমার নিজের মত। ...

রিভিউতে গল্পের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করলে মনে হয় অধিকতর উত্তম হবে।

_________________________________________

সেরিওজা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমাগো শব্দশিল্পী কিতা কয়? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গদ্যছন্দের অনন্যতা সবাই স্বীকার করেছেন। দ্বিতীয়রহিত এই লেখকের ছোটগল্পের ধারাবাহিক আলোচনায় উৎসাহী পাঠক হিসেবে সাথে আছি।

-সহজীয়া(প্রাক্তন [যাচাই করা হয়নি] 'আনন')

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপ্নে আনন। ডিটেইলস্‌ দ্যান।

অতিথি লেখক এর ছবি

ডিটেইলস তেমন কিছু বলার নেই। আমি আপনার ছফাদর্শনের বিশেষ ভক্ত। দু-একটা কমেন্ট করেছিলাম আনন নামে। এই আর কি!

-সহজীয়া

বাউলিয়ানা এর ছবি

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্প নিয়ে লেখা ! দারুন বিষয়।

গল্পের একটা চরিত্রকে বর্ণনা করতে গিয়ে, সেই চরিত্রের নিজস্ব কথ্য ভাষা আর লেখকের নিজের ভাষার মধ্যে বারবার পরিবর্তন করার ক্ষমতা অসাধারনভাবে প্রয়োগ করেছেন ইলিয়াস।

পড়েছি এবং পড়ব। সিরিজ চলুক।

হিমু এর ছবি
বাউলিয়ানা এর ছবি

হিমু ভাই,

আমি করেছি, আমার মেইল এ একটা জবাবও এসেছে।

কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে নামটা হয়ে গেছে "বাউলিআনা" মন খারাপ

পরিবর্তনের কোন উপায় আছে কি?

শাফক্বাত এর ছবি

আপনার অনুরোধের সাথে আমিও একখানা প্রস্তাব দিতে চাই। আমার নাম আসলে শাফ্‌ক্বাত। তখন হ-সন্ত দিতে জানতাম না বলে শাফক্বাত লিখে রেজিস্টার করেছিলাম।
প্লীজ বাউলিয়ানা সাহেবের সাথে সাথে আমার টাও চেঞ্জ করে দেন!!
অন-টপিকঃ ইলিয়াসের লেখা আমার কঠীন লাগে। পড়ার স্পীড পাইনা, চোখ আটকে আটকে যায়। তাই আর পড়ার চেষ্টাও করিনা।
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

কনফুসিয়াস এর ছবি

ইউজার নেইমে হসন্ত ব্যবহার করে নিক নেয়া যায় কিনা নিশ্চিত নই, সম্ভবত যায় না। আপনি এমনিতেই নতুন আরেকটা নিক হসন্ত-সহ এমনি এমনিই খুলে দেখার চেষ্টা করতে পারেন।

অন-টপিকঃ ইলিয়াস 'কঠীন' লাগে? আমার কাছেও অবশ্য কঠঠিনই লাগে। হাসি
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

শাফ্‌ক্বাত - ইলিয়াস পড়া শুরু করে দেন।

শাফক্বাত এর ছবি

কী বলেন? কঠিন (tough) লাগে যে!! তার চাইতে আপনার সিরিজগুলা পড়ি?
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

হিমু এর ছবি
শাফক্বাত এর ছবি

আমার মন খারাপটা কাটুক আগে, তারপর মন খারাপ
আপনাদের একজন মডারেটর (মডু না, মডারেটর) আমাকে হুদাই বকা দিয়েছে।
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

@বাউলিয়ানা,

ধন্যবাদ।

ফারুক হাসান এর ছবি

সিরিজের নিয়মিত পাঠক হিসেবে নিবন্ধন করলাম। চলুক।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

নিবন্ধনের জন্য ধন্যবাদ। দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও আমিও! দেঁতো হাসি

ফারাবী

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

তাই

মামুন হক এর ছবি

পড়তেছি। সিরিজ চলুক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

কনফুসিয়াস এর ছবি

আপনার ছফা সিরিজ পড়েছি মনোযোগ দিয়ে, এবারে এই সিরিজটা তার চেয়েও বেশি মনোযোগ পাবে, শুরুতেই জানিয়ে রাখলাম।

ইলিয়াসের গল্পের সংখ্যা নিয়ে কিছু কথা আছে। জীবদ্দশায় বই হিসেবে ইলিয়াসের প্রকাশিত গল্প আসলে ২৩ টি। একসময় আমিও আটাশটিই জানতাম, অনেক পরে কোন একদিন সেই ভুল ভেঙেছে। ( বিস্তারিত পুনরাবৃত্তি না করে লিংক রাখলাম কেবল)।

এবারে ইলিয়াসের অগ্রন্থিত লেখাগুলো নিয়ে প্রকাশিত বইটিও হাতে এসেছে। সেখানে গল্প আছে আরও ৭ টি। সব মিলিয়ে গল্প দাঁড়ায় তিরিশে, তাই কেমন করে যে আটাশ সংখ্যাটা এত বেশি জনপ্রিয়তা পেয়ে গেল কে জানে!

-----------------
প্লেটোনিক ভাষা বলতে কী বুঝিয়েছেন একটু অপরিষ্কার রয়ে গেছে আমার কাছে। এটা কি তবে জীবনঘনিষ্ঠ ভাষার উল্টোটা? আচ্ছা, এই কনফিউশান বাদ দিয়ে যদি বলি, তবে নিরুদ্দেশ যাত্রার ভাষাভঙ্গি ইলিয়াসের গল্পে একেবারে অনন্য নয়। এর সাথে অনেক মিল রয়েছে আরেকটা গল্পের, নাম হলো - অন্য ঘরে অন্য স্বর।
একদম চেনাজানা ইলিয়াসের তুলনায় একেবারে ব্যাতিক্রমী ভাষাভঙ্গীর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে, আমার মতে, প্রেমের গপ্পো

আপনার আরেকটা কথার সাথে একমত হতে পারিনি।

অযথা ডিটেইলসে যান না বলেই ইলিয়াসের গদ্য সাবলীল, নির্মেদ।

এটা অবশ্য পাঠকভেদে আলাদা হতেই পারে, কিন্তু আমার কাছে ইলিয়াসের গদ্যকে কখনোই সাবলীল বা নির্মেদ মনে হয় না। প্রতিটা গল্পেই এত এত বেশি ডিটেইলিং যে নির্মেদ থাকার কোন সম্ভাবনাই তিনি তাঁর গল্পে বাঁচিয়ে রাখেন না, বরং গল্পকে ভারী করে তুলবার জন্যে সেগুলো বেশ কার্যকরী। আমার ব্যাক্তিগত মতে ইলিয়াসের গল্পের ডিটেইল বর্ণনাগুলোই তার সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য, তাই তিনি 'ডিটেইলসে যান না' জাতীয় শব্দবন্ধ দেখলে খানিকটা আঁতকে উঠি।

আপনার পরবর্তী আলোচনা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বস্, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আটাশ; এটার খানিক দায় খালিকুজ্জামান ইলিয়াসের। ভূমিকাতেই লিখে দিয়েছেন ৫টি ছোটগল্প গ্রন্থে প্রকাশিত ২৮টি গল্প। তখন আর সূচিপত্রের গল্পসংখ্যা কে গোণে? ঠিক্করে দিচ্ছি।

‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’ কে আমি তাও অনন্য বলব। এই গল্পের কিছু কিছু শব্দ বা বাক্যাংশ দেখুন। মনোরম মনোটোনাস শহর। রোদন-রূপসী বৃষ্টির মাতাল মিউজিক। লোনলী-লগ্ন। বৃষ্টি একজন অচিন দীর্ঘশ্বাস। এবসার্ড প্রতিবিম্ব। মৃত্যুমন্থর এই রাত্রি।শাড়ির ঘুম ঘুম গন্ধ। মেমোরি-মর্মরিত রঞ্জু। গল্প বিষয়বস্তু সব ছাপিয়ে এইসব শব্দ বা বাক্যাংশ ব্যবহারের জন্য প্লেটোনিক ছাড়া অন্য শব্দ আমার মাথায় আসছে না। এই গল্পের ভাষার অনন্যতার একটা যুৎসই শব্দ দরকার।

‘প্রেমের গপ্পো’র ভাষা ভিন্ন। ঠিক বলেছেন। তবে হাসান মাসুদ সাহেবের অভিনয় দেখার পর এই গল্প আর পড়ি নাই।

বস্। অযথা ডিটেইলস্ বলেছি। যেখানে দরকার সেখানে ইলিয়াস ডিটেইলস্ করেন।আর প্রথম প্যারার তৃতীয় লাইনেই লিখেছি। আর সাথে আছে নিখুঁত ডিটেইলস্।

আপনার লেখাগুলো পড়েছি। অনেক অনেক ভালো লেখা।

খোমাখাতায় আবার রিকোয়েস্ট পাঠালাম। চোখ টিপি

সুমন সুপান্থ এর ছবি

যেহেতু পর্ব দেয়া আছে,ধরেই নিচ্ছি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ছোটগল্প,কী তাঁর সমগ্র সাহিত্যকর্ম নিয়েই একটা আলোচনা পেয়ে যাবো আমরা । `ছফাগিরী` আমাদের সেই লোভ দেখাচ্ছে । যদি তাই হয়, তবে সেটা যে সুচনা মাত্র, বুঝতে পারছি ।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে নিয়ে আলোচনার একটা বড় বিপদ আছে । ইলিয়াস নিজে এই বিপদ তৈরী করে গেছেন । তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাস, সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, শ্রেণী চেতনা ইত্যাদি তাঁর রচনায় এমন প্রভাব ফেলেছে যে, মাঝে মাঝে মনে হয়, তাঁর রচনা ব্যাখার আগে এইসবের হদিস লাগানোও জরুরী । না হয় ইলিয়াসের গল্পের ( বা সমগ্র রচনারই) কষ (রস নয়)আস্বাদন প্রায় অসম্ভব । পোড়া এই দেশে ইলিয়াসই সেই লেখক, যিনি জগদীস গুপ্ত আর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর কথিত মানবিকতাকেই আক্রমণ করে বসেছিলেন ! তাই তাঁর রচনার ভাষাও আক্রমণ করতে দ্বিধা করেনি প্রচলিত ভাষা ও ফর্মকে ।
খোয়াবনামা উজ্জ্বল দষ্টান্ত ।

‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’ গল্পটি ছাড়া ...
সবদিক দিয়ে বিবেচনা করলেও, ইলিয়াসের `একলা হয়ে পড়া` গল্প এটি । আপনার সঙ্গে একমত । কিন্তু আমিও ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না, প্লেটোনিক ভাষা বলতে কি বুঝালেন শুভাশীষ!

আরো বাতচিতের আশা রাখি ... সিরিজ চলুক ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বস্। অনেক ধন্যবাদ। প্লেটোনিক নিয়া হালকা কথাবার্তা উপ্রে আছে।

বালক এর ছবি

চলুক...
*************************************************************************
ভবিষ্যতে কি হবে তা ভেবে বর্তমানকে উপেক্ষা করবো কেনো?

____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

রণদীপম বসু এর ছবি

ওরেব্বাশ ! সব রথি-মহারথিদের আলোচনা-পর্যালোচনা!
আমি কোন মন্তব্যে নাই। নিরব পাঠক।
সিরিজ চলুক। শেষপর্যন্ত কী বুঝলাম তা আরো না আগালে বুঝবো কেমনে !
তাই অপেক্ষা...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

নীরব না থেকে সরব হোন। হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দ্বিতীয় প্যারা হালকা চ্যাঞ্জাইলাম।

স্নিগ্ধা এর ছবি

বহু, বহুদিন আগে ইলিয়াস পড়া - ছোটগল্পগুলো তাই আলাদা করে মনে নেই। কিন্তু, মন্তব্যকারীদের কিছু কথার সাথে একমত। যেমন, 'অযথা' ডিটেইলস - এখানে 'অযথা' নির্ণায়কটি আপেক্ষিক ধরে নিয়েই বলছি, ইলিয়াসের লেখায় ডিটেইলসের ছড়াছড়ি, এবং সেটার উপস্থিতি সবসময় এমন নয় যে লেখার 'প্রয়োজনে'ই। বরং কনফুসিয়াসের মত আমারও, এটাই তাঁর বিশেষত্ব! অথবা ধরুন, প্লেটোনিক - ওপরে বর্ণিত দুটো গল্পের কথা ধরে নিয়েও (যেহেতু খুঁটিনাটি মনে নেই, খুব বেশি কিছু বলতে পারছি না) সামগ্রিকভাবে ইলিয়াসের ভাষা আমার প্লেটোনিকের উলটো কিছু থাকলে বরং সেটাই মনে হয় হাসি

তবে আমার এই মন্তব্য এক হিসেবে বাহুল্য কারণ আপনি ঐসব প্রসঙ্গে আপনার ব্যাখ্যা তো দিয়েই দিয়েছেন। আপাতত তাই পরের পর্বের অপেক্ষায় ......

আর, সুমন সুপান্থের -

তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাস, সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, শ্রেণী চেতনা ইত্যাদি তাঁর রচনায় এমন প্রভাব ফেলেছে যে, মাঝে মাঝে মনে হয়, তাঁর রচনা ব্যাখার আগে এইসবের হদিস লাগানোও জরুরী । না হয় ইলিয়াসের গল্পের ( বা সমগ্র রচনারই) কষ (রস নয়)আস্বাদন প্রায় অসম্ভব ।

এই কথাটা অত্যন্ত জরুরী। রাজনৈতিক বিশ্বাস বা দৃষ্টিভঙ্গির হদিস না জেনে ইলিয়াসকে পড়লেও ক্ষতি নেই, কিন্তু তাঁর লেখায় ঐ ব্যাপারগুলো এতোটাই embedded (ঠিক বাংলা কী হবে?) যে পাঠপ্রতিক্রিয়া কিংবা আলোচনার ক্ষেত্রে তা এড়ানো অসম্ভব।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দিদিভাই,

ধন্যবাদ।

প্রায় অরাজনৈতিক একটা গল্প নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি এইজন্যেই। হাসি

তাসরিভা সিকান্দার  এর ছবি

ভাল লাগলো।পরের পর্বের জন্যে অপেক্ষা।...... হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

আসাদ [অতিথি] এর ছবি

সিরিজের নিয়মিত পাঠক হিসাবে নিবন্ধন করলাম।

নতুন পাঠককে ইলিয়াসের দিকে আকৃষ্ট করার ব্যাপারে লেখাটা বেশ কার্যকর হতে পারে বলে মনে হল। ইলিয়াসের ভাষারীতির সাথে নতুন পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেয়াকে যদি এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য ধরি, তবে একে সার্থক বলতে হবে।

রিভিউ এর অন্যান্য দিকগুলো মন্তব্যে আসছে - পরের পর্বগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন ছোটগল্প নিয়ে আলোচনায় ইলিয়াসের দৃষ্টিভঙ্গির বিভিন্ন দিকগুলো একে একে আরও আসবে আশাকরি। আপনি যেমনটা লিখছেন, একেকটা গল্পকে ভর করে একেকটা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা হলেই ভাল মনে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আসাদ ভাই,

থ্যাংকস। নতুন পাঠককে আকৃষ্ট করার ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন দেখে খুশি হলাম।

ছফাগিরি লেখার সময় দেখলাম অনেক সচল হাচল টুকুনচল কি পাঠক সযত্নে এটা পড়া থেকে বিরত থাকেন। অনেক আবার বলেন এক সাথে পড়বেন। কিন্তু আমি ব-e করে দেবার পর ও দেখলাম সাড়া নেই। আহমদ ছফাকে নতুন পাঠকদের কাছে পরিচিত করতে আমি এক হিসেবে ব্যর্থ বললে ভুল হবে না। অবশ্য যাঁরা ছফা পড়েছেন তাঁদের আগ্রহ হয়ত কিছুটা মেটাতে পেরেছি। তাঁরাই হয়ত ছফাগিরি পড়েন।

আমি বহিরঙ্গ বা এই ধরণের লেখায় দমাদম কোট করি। আমার প্রবন্ধের আলোচ্য মূল লেখকরা এতোটাই শক্তিশালী তাঁদের কোট করা ছাড়া কথা বোঝানো মুশকিল। কিছুটা এডোয়ার্ড সায়ীদের রোগে পেয়েছে ধরতে পারেন।

পুতুল এর ছবি

দুধভাতে উৎপাত নামে একটা সংকলন পড়েছিলাম। তাও বেশ ক'বছর। চিলেকোঠার সেপাই খুব ছোটবেলায় পড়েছি বলে কিছুই মনে নেই।

ছোট গল্পের নাম মনে আছে দু'টো, দুধভাতে উৎপাত আর মিলির হাতেও ষ্টেনগান। খুব ভাল লেগেছিল।

বিশেষ করে দুধভাতে উৎপাত গল্প পড়ে মনে হয়েছিল বাংলাভাষায় ও গল্প লেখা হইছে!
এমন দুর্দান্ত ছোট গল্প খুব বেশী পড়েছি বলে মনে পড়ে না। আর একটা গল্পের গল্পটা মনে আছে কিন্তু নাম মনে নেই।

আপনার আলোচনায় সে গল্পগুলো পরের কিস্তিতে আসলে কিছু বলা যাবে।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উদ্ধৃতি

আর একটা গল্পের গল্পটা মনে আছে কিন্তু নাম মনে নেই।

সেই গল্পের গল্পটা কি?

পুতুল এর ছবি

রক্ষনশীল পরিবারের ছেলে বিপ্লবী হয়ে মারা যাওয়ার আগে বাপ হয়। বাড়ীর সাথে কোন যোগাযোগ থাকে না। বিপ্লবীর মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে দাদার বাড়ি যায়। জলা-বিল ধরে হাটতে থাকে। বাবার স্মৃতি জোখে। আর এই ফাকে ইলিয়াস বিপ্লবীর গল্পটা তাঁর পাঠকদের বলে।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দখল

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

ভাগ্যিস, এইটার নাম টুকুন আলোচনা দেন নাই। ছফা যেমন পড়ি নাই বইল্যা মনে হইতাসে, তেম্নি ইলিয়াসও হয়তো বেশি পড়ি নাই। সেই কারণেই আপনের টুকুন আলুচনায় মন ভরে না।

তবে শুরু যে করসেন তার লাইগ্যাই আখেরে অনেক সোয়াব পাইবেন। ধন্যবাদ।

.
___________________________________________
ভাগ্যিস, আমার মনের ব্যাপারগুলো কেউ দেখতে পায় না!

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সোয়াব জমা রাখলাম।

রিখি এর ছবি

আপনি এত পড়েন কিভাবে শুভাশীষদা? এত এত বই পড়ে সেটা নিয়ে ভাবা আবার আলোচনা আবার লেখা। কেন এত কষ্ট করেন?

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আহারে এই হালার কষ্ট দেখলে আমারো আফসুস হয়। দেঁতো হাসি

রিখি এর ছবি

এই হালারে বিয়া করায়ে দেওনের কাম। বহুত আজাইরা প্যাঁচাল পাড়ে। একদুইবার হানিমুনে গেলে সবঠিক। চোখ টিপি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

যান হালারে বিয়া দিয়া হানিমুনে নেপালে পাডায় দিলাম। চোখ টিপি

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

প্রশ্নঃ কতোতম বিয়ে? দেঁতো হাসি
প্রশ্নঃ নেপাল ক্যান? ভুটান না ক্যান?
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ভুটান হে গ্যাছে, নেপাল যায় নাই। দেঁতো হাসি

রিখি এর ছবি

কততম বিয়ে, সেটাও তো প্রশ্নে ছিল...উত্তর দেন্নাই।

আদনান [অতিথি] এর ছবি

আহমদ ছফাকে নতুন পাঠকদের কাছে পরিচিত করতে আমি এক হিসেবে ব্যর্থ বললে ভুল হবে না।

মনে হয়না । আপনার লেখা ছফাগিরি পড়েই আমি ছফার যদ্যপি আমার গুরু, নির্বাচিত প্রবন্ধ পড়া শুরু করেছি । আমি নিশ্চিত এরকম আরো আছেন । আশা করছি ছফাগিরি বন্ধ করবেন না ।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনি আগে কখনো কি আমার লেখায় মন্তব্য করছেন? পারলে আপনার ই-মেইল দিয়েন।

আদনান [অতিথি] এর ছবি

না আগে মন্তব্য করিনি । আসলে মন্তব্য করার আগে তো পড়া থাকা লাগবে । এখনতো ইলিয়াস পড়ার আগ্রহ তৈরি করে দিলেন । দেশে গিয়েই সব কিনব ।

মণিকা রশিদ এর ছবি

ইলিয়াসের গল্পগুলো সবেমাত্র পড়া শেষ হলো। এই সিরিজের প্রবল উৎসাহী পাঠক হিসেবে নাম লেখালাম আমিও।
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

সাফি এর ছবি

চিলেকোঠার সেপাই আর খোয়াবনামা পড়েছিলাম, কিন্তু ছোটগল্প পড়া হয়নি। রিভিউতে দুছত্র তুলে দিলে তাই আমার মতন না পড়া পাঠকদের সুবিধেই হয়

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ধারণাঃ

১. যিনি মাত্র ত্রিশটি গল্প লিখেছেন (আমি তেইশটি পড়েছি) এবং প্রয়াত বলে সেই সংখ্যাটা আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই তাঁর ক্ষেত্রে উচিত হচ্ছে প্রতিটি গল্প ধরে ধরে আলাদা রিভিউ করা।

২. গল্প ধরে আলাদা রিভিউর বাইরে তাঁর গল্পের ভাষা, গল্পের কাঠামো, গল্পের সাধারণ বৈশিষ্ট্য, ব্যতিক্রমী গল্প, গল্পে জীবন-দর্শন এগুলো নিয়েও পর্যায়ক্রমিক আলোচনা হতে পারে; এবং সেগুলো এক নাম্বার পয়েন্টের ধারাবাহিকতায়।

৩. আলোচনায় মূল গল্পের উধৃতি আসতেই পারে, এমনকি প্রাসঙ্গিক হলে অন্য লেখকের লেখারও। তবে এর সুবিধা যেমন আছে, অসুবিধাও। সুবিধা হচ্ছে এই যে, তাতে আলোচ্য লেখকের ভাষার-গল্পের শক্তিটা আলোচনা-পাঠকরা বুঝতে পারেন। এতে আলোচক আর তার পাঠকের ভাবনা কাছাকাছি মাত্রায় অনুরণিত হয় (আমার কাছে এটা অবশ্য বিপদ্‌জনক)। অসুবিধা হচ্ছে এই যে, কোন গল্পের বহুল আলোচিত বিষয় বা অংশ হয়তো আলোচক তুলে আনলেন কিন্তু আগে আলো পড়েনি এমন অংশ হয়তো আড়ালেই থেকে গেল। সেক্ষেত্রে পূর্বে পড়েননি এমন পাঠক যখন মূল গল্প পড়তে যাবেন তার চোখেও ঐ অংশের মূলরূপ অনাবিষ্কৃত থেকে যেতে পারে। বস্তুতঃ সেক্ষেত্রে পাঠক আলোচকের এক্সটেনশনে পরিণত হন।

৪. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আহমদ ছফা বা শহীদুল জহিরের চেয়ে অনেক ভয়ঙ্কর ঘাতক। তাই সাবধান না হলে লেখক আলোচককেই গ্রাস করে ফেলতে পারেন।

এর বাইরেঃ

উদ্যোগ শুভ। কষ্ট করে চালিয়ে গেলে সচলের পাঠকদের আখেরে উপকার হবে। তবে তার জন্য পাঠকদের বিস্তারিত আলোচনায় অংশগ্রহন আবশ্যক।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।


১,২। একমত।

৩। অসম্ভব ভাল একটা পয়েন্ট। যাঁরা রিভিউকে সিরিয়াসলি নিবেন তাঁদের জন্য 'আই ক্যাচার' প্যারাগুলো খোঁচাবে। পাঠক ভাল হলে এগুলো পেরিয়ে অন্যান্য খনি আবিষ্কারে সমস্যা হবে না। একজন আলোচনাকারী সব দিক নিয়ে আলোচনা করতে পারেন না। মাস্টারপিসগুলোর দেখবেন হাজার হাজার পর্যালোচনা আছে। যেমনঃ জেমস জয়েসের 'ইউলিসিস'। আমি নিজে এই বই পড়তে চেষ্টা করেছি অনেকবার। পারি নি। পরে এই বইয়ের ওপর রিভিউ পড়া ধরলাম। মূল বই দূরে সরিয়ে রেখে।

৪। একটু ডরাইলাম।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনি সেদিন যখন জিজ্ঞেস করলেন, তখন আমি আসলে একটা কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কাজের চিপা দিয়া আপনার সাথে কথা চালাইতেছিলাম। তাই ঠিকঠাক ঠাহর করতে পারি নাই, ভুল উত্তর দিছিলাম। আপনার লেখা পড়ে মনে পড়লো যে এটা আমার অবশ্যই পড়া। তবে আগে পড়েছিলাম।
ইলিয়াস আমি নতুন করে পড়ছি। খোয়াবনামা দিয়ে শুরু করছি। অনেক বছর আগের পড়া আর এখনকার পড়ার মধ্যে বিস্তর তফাত। এখন কেবলই মনে হচ্ছে আগে পড়তেই জানতাম না।

সচলে এর আগে ফারুক ওয়াসিফের কিছু লেখা ছিলো ইলিয়াস বিষয়ে। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ইলিয়াস নিয়ে একটা সিরিজ করবো। হয়ে উঠছিলো না। ফেব্রুয়ারিতে সিদ্ধান্তটা আবার পোক্ত করলাম। কিন্তু এর আগেই আপনি শুরু করে দিলেন বলে মন খ্রাপ। তবে ইলিয়াস নিয়ে আমি নিজের মতো করে একটা সিরিজ লেখতে এখনো আগ্রহী। দেখি সময় কী বলে।

আর তাই হয়তো আপনার এই সিরিজে আমি বিস্তারিত আলাপে যাবো না। তবে পড়বো। আমার ভাবনাগুলো আমি আমার লেখাতেই প্রকাশ করতে আগ্রহী। তবে আমার সিরিজ আইতে দেরী আছে, এর আগে অনেক লেখা জমে আছে।

আপনার ছফা সিরিজ পড়া হয় নাই। সময়ের অভাবেই। তবে এখনো আমি জানি, এটা আমার অবশ্য পাঠ্যই। একদিন না একদিন পড়বো। তখন আপনার ছফা বিষয়ক লেখাগুলো নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া জানাবো একটা পোস্টে। কী করবো রে ভাই, কামলা খাটতেই সময় যায়গা সব।

আপনি লেখায় অনেক উদ্বৃতি দিচ্ছেন। যারা ইলিয়াস যারা পড়েছেন, তাদের জন্য ঝামেলার হলেও হয়তো যারা ইলিয়াস এখনো পড়ে নাই, তাদের জন্য ঠিকাছে। আপনার লেখার একটা উদ্দেশ্য হয়তো পূরণ হবে এতে।

সিরিজ চলুক। পাঠক হিসেবে সাথে আছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনাকে কেন মুনতাসীর ভাই বলি সেটা আপনি নিজের মন্তব্য পড়লে বুঝতে পারবেন।

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে নিয়ে আলোচনা বাড়লে আমাদের সবার নগদে লাভ। আপনি ইলিয়াসের উপন্যাস নিয়ে পোস্টানো শুরু করে দিন। খোয়াবনামা উপন্যাস নিয়ে ছফার একটা ছোটখাট রিভিউ আছে। রচনাবলির খণ্ড চার। পৃষ্ঠা ১৯২-১৯৭;

ছফাগিরিতে আপনার মত পাঁড় ছফা পাঠক অংশ না নিলে বিপদ।

কোট করা ছাড়া যাবে না। তবে বিশ্লেষণ বিস্তারিত করব।

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমাকে মুনতাসীর বলার তেব্র নিন্দাইতেছি। চোখ টিপি

আমি আসলে ইলিয়াস নিয়ে সামগ্রিক একটা সিরিজ করতে চাই। সাধারণত সারাদিন লেখার অবসরে ব্লগে আর লেখার আগ্রহ থাকে না। তাই ফাজলামি টাইপ লেখাই বেশি হয়। কিন্তু ইলিয়াস নিয়ে আমি সিরিয়াসলি লেখতে চাই। অনেক কথা বলার আছে। আবার যখন নতুন করে পড়া শুরু করেছি, তখন মনে হইতেছে আগে ইলিয়াস ভুল পড়ছিলাম, অথবা না বুঝে পড়ছিলাম। আমার ইলিয়াস লেখার ইচ্ছাটা অবশ্যই জারি আছে, তবে তার আগে তারে নতুন করে পুরাটা পড়ে নেই আবার।
খোয়াবনামা নিয়ে ছফার লেখাটা আমি আগেই পড়েছি। ছফার এই যে নতুন পাঠ... এগুলো আমাকে অনেক কিছুই নতুন করে ভাবতে শেখায়, বিশেষ করে পদ্মা নদীর মাঝির হোসেন মিয়াকে নিয়ে লেখা ছফার প্রবন্ধটা আমাকে নতুন করে পদ্মা নদীর মাঝি পড়াইছিলো।

আমি ছফার পাঁড় পাঠক না। আমি মূলত ছফার প্রবন্ধই বেশি পড়ছি। প্রবন্ধ নিয়া আলাপে আসেন, কথা বলতে পারবো। কিন্তু ছফার সাহিত্য আমার কম পড়া। সেগুলো নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা নাই।

আমি একটা ভুল ভাবনায় ছিলাম। একটা কিছু নিয়ে আলোচনার দুই ধরনের পাঠক থাকে, যারা এটা আগে পড়েছে, আর যারা পড়েনি। আমি যেহেতু পড়াদের দলে, তাই আমি কোট করাকে বিরক্তিকর ধার্য করেছিলাম। কিন্তু নাপড়াদের জন্য হয়তো এটা কাজে দিবে। সেক্ষেত্রে ঠিকাছে। ইলিয়াসের পাঠক বাড়ুক।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুস্তাফিজ এর ছবি

ইলিয়াস কে নিয়ে কথা বলতে সাহস লাগে, অততুকু সাহস যে দেখিয়েছেন সেটুকুর জন্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। খেয়াল করে থাকবেন এসব লেখায় আমি কখনও মন্তব্য করিনা। শুধু ধন্যবাদ জানানোর জন্যই মন্তব্য করলাম।

...........................
Every Picture Tells a Story

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনাকে ও ধন্যবাদ।

স্বাধীন এর ছবি

দু'পয়সা যোগ করার ক্ষেমতা নাই, তাই পড়েই যাবো।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

সবজান্তা এর ছবি
শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

এই মানুষটার আমি বিশাললললললললল ভক্ত। আমি তাঁর লেখা আমার সংক্ষিপ্ত পড়ার গণ্ডিতে বার বার পড়েছি, হোচট খেয়েছি, থমকে গেছি, আবার পড়েছি। বিশাল দৌড়ের উপ্রে আছি। হয়তো কমেন্ট ও করতে পারবো না। তবে এ সিরিজটায় চোখ থাকবে নিশ্চিত।

চলুক
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উদ্ধৃতি

আমি তাঁর লেখা আমার সংক্ষিপ্ত পড়ার গণ্ডিতে বার বার পড়েছি, হোচট খেয়েছি, থমকে গেছি, আবার পড়েছি।

কিছু কিছু গল্পে আমার এইরকম হয়েছে। উপন্যাসে সেটা হয়নি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই শুভাশীষ, লেখতে থাকো দু'হাত খুলে। ছফা, ইলিয়াস, জহির, মাতুব্বর - এদের বুঝতে হলে অনুসন্ধিৎসু হতে হয়, পাশাপাশি তৈরী হয়ে পড়তে হয়, নইলে অনেক উপমা, ছত্রে ছত্রে দর্শন আর রাজনৈতিক ইতিহাস বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকে শুধু এই বাড়তি উপযোগের কথা চিন্তা করে পড়তে চায় না, বা পড়লেও লেখকের বক্তব্য ধরতে পারে না। অনেকটা ভাল রান্না বা ছবি আঁকার মতো, করার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ আর কষ্টদায়ক কিন্তু তাতে ফলাফল ভাল হতে বাধ্য।

আমি নিজেও সব পড়িনি। তবে পড়ার চেষ্টা আছে। ইলিয়াসের 'চিলেকোঠার সেপাই' আর 'খোয়াবনামা' পড়েছিলাম, খুব ভাল লেগেছিল। ছোট গল্পগুলো পড়েছি বলে মনে হচ্ছে না। কিন্তু তুমি যে চিন্তা করাচ্ছো পড়া উচিত বলে, এখানেই তোমার স্বার্থকতা। অনেক নীরব পাঠক আছেন, যারা এখন একটু নড়েচড়ে বসে ছফা, ইলিয়াস - এঁদের লেখা সংগ্রহ করে পড়বেন। আমি নিজেই দেশে গিয়ে আবার পড়ব। তাই নিজেকে ব্যর্থ ভেব না। বরং সাহস আর আগ্রহ নিয়ে সিরিজ লেখছো, বিরাট ব্যাপার।

আর, গল্প থেকে কোট করে দিও। পারলে লিঙ্ক লাগিয়ে দিও, তাতেও অনেক রেফারেন্স বোঝা যাবে। পরে এনিয়ে আরও আলাপ হবে। ধন্যবাদ দিয়ে তোমাকে না হয় ছোট নাই বা করি!

ভাল থেকো।

- শরতশিশির -

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

তোমাকেও ধন্যবাদ দিয়া আর ছুডু করিলাম না।

দুর্দান্ত এর ছবি

করোটি নিয়ে কি সৈয়দ শামসুল হকও মেতেছিল? করোটিতে জোছনা বা ঝড় এইধরনের কিছু একটা মনে হয় সৈয়ল হকের লেখায়ও পড়েছিলাম।
---
আ-জা-ই গল্পবলার সময় সময় ও পারিপার্শিকের যে লতায়পাতায়একটারসাথেআরেকটাকেজড়িয়ে ছবি আকতে থাকেন, তাতে গল্পের ভিতরে ঢুকে যাওয়া যায়। এটা বিশেষ উপাদেয়।
---
ছফাগিরির পরে কিন্তু লাই পেয়ে গেছি, পরেরগুলো যেন তাড়াতাড়ি আসে। হিমু, স্নিগ্ধা আর পান্ডবদার কথা খিয়াল কইরা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সৈ শা হ কম পড়ছি। তাই জানি না।
---
আপনারবিশ্লেষণজানলাম
---
খিয়াল রাখিব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সৈয়দ শামসুল হক পড়া একটা বাধ্যতামূলক ব্যাপার। তাঁর কবিতা, তাঁর উপন্যাস, তাঁর গীতিনাট্য। তিনি এখনো একটা "গড় শ্রীখণ্ড" বা "খোয়াবনামা" লিখে শেষ করতে পারেননি ঠিকই তবে তিনি সেই প্রক্রিয়াতে আছেন। তাঁর অন্য কীর্তিও আছে - খেলারাম খেলে যা'র মত। আর গীতিনাট্যে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পাণ্ডবদা,

'খেলারাম খেলে যা' পড়ছি। অনেক আগে। সেখানে কি করোটি নিয়ে কিছু আছে?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমি করোটি নিয়ে কিছু বলিনি। আমি শুধু সৈয়দ হকের পাঠের গুরুত্বটা বোঝাতে চেয়েছি।

অনেক আগে পড়া বই (গুরুত্বপূর্ণগুলো) আবার পড়া জরুরী। যেমন এই মুহূর্তে "পুতুলনাচের ইতিকথা" আবার পড়ছি। এখন মনে হচ্ছে আগে এর কিছুই বুঝি নাই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্পর্শ এর ছবি

আসলেই, কিছু বই আছে প্রতি পাঁচ বছর পর পর একবার করে পড়া উচিৎ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

জানি না সৈয়দ শামসুল হক নিয়ে আমার আগ্রহ কম কেন? 'পুতুলনাচের ইতিকথা', 'দিবারাত্রির কাব্য', 'চতুষ্কোণ' অনেকবার পড়লেও ক্লান্তি আসে না। 'দিবারাত্রি কাব্য' আমি অনেকবার পড়েছি।

স্পর্শ সাহেব,

৫ বছর পর কেন? ১ ২ ৩ ৪ বা ৭ ৮ ৯ বছর বা মাস না কেন? দেঁতো হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গল্পবলার সময় সময় ও পারিপার্শিকের যে লতায়পাতায় একটার সাথে আরেকটাকে জড়িয়ে ছবি আকতে থাকেন, তাতে গল্পের ভিতরে ঢুকে যাওয়া যায়। এটা বিশেষ উপাদেয়

আগে পড়া না থাকলে ইসাবেল আইয়েন্দে পড়া শুরু করে দেন। দেখবেন পারিপার্শ্বিকের বর্ণনা, সেখান থেকে ছবি, ছবি থেকে গল্প - সেকি মজা!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বস্‌ , ইসাবেল আইয়েন্দের কোন বইয়ের উপ্রে একটা রিভিয়্যু লেইখা আপান।

--------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

আশফাক আহমেদ এর ছবি

প্রিয় গল্পকারকে নিয়ে সচলের প্রিয় লেখকের ব্যবচ্ছেদ।
পড়া ধরলাম

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।