হার

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: বুধ, ০৭/০৪/২০১০ - ৭:০৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘুম থেকে উঠলে পাশের শূন্যতা কিছু অস্বস্তি দেয়। বউ কাল রাতে রেগে বাপের বাড়ি চলে গেছে। অরুকে সহ। অরু প্রতিদিন নিয়ম করে সাতটায় ঘুম থেকে উঠে যায়। তার একটা খেলনার ব্যাগে রাখা রাজ্যের জিনিসপত্র মেলে বিছায় আসবাবে ভরা ছোট্ট এপার্টমেন্টের চিলতে কোন ফাঁকে। রান্নাবাটি খেলার উৎসাহে অরুর করা মৃদুমন্দ কিছু আওয়াজে সকালকে আর ঘুমের রাজ্যে ঠেলে রাখা যায় না। অফিস থেকে লে-অফ দেয়া হয়ে গেছে আজ দুই মাস। ঘুমকে দীর্ঘস্থায়ী করার ফুরসৎ না মেলার কথা কাল ঝগড়ার মাঝেও এসে পড়েছিল। অথচ আজ সকালে এসব প্রয়োজনীয় শব্দের অভাবে ও ঘুম বেশি মেয়াদে হয়নি। রোদ জানালার পর্দা ঠেলে উবু বুকে বিছানায় এসে পড়ে। ওম থেকে বাঁচতে আর একটু দূরে শুয়ে থাকি। দেয়ালে ঝোলানো গ্রাণ্ডফাদার ক্লকের পেণ্ডুলাম মাকড়সার জাল ঠেলে সময় গড়িয়ে দেয়। খুব খুব ধীরে।

নীরা কখনো মুখ খারাপ করে না। ভদ্র ভাষায় গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার মত শব্দপুঞ্জ খুব বিশ্বস্ততার সাথে উচ্চারণ করলে অবিরাম খিস্তি করে সেটাকে পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। অন্য পুরুষের সাথে তার মৌখিক বলাৎকার ঘটাই। অরু এখন এই অল্প বয়েসে আমাদের বচসা কিছুটা বোঝে। আমরা ঝগড়া তুমুল হলে ওর হঠাৎ করে জরুরি হয়ে পড়া রান্নাবাটি খেলার আওয়াজ কিছুটা চড়া হয়। শব্দ তখন ভোরের মত অত নিষ্প্রাণ মৃদুমন্দ থাকে না। কাল আমার খিস্তি অশ্রাব্যতর ছিল। রাতে ব্যাগ গুছিয়ে নীরার চলে যাওয়ার সময় অরু আমাকে টা-টা দিতে গিয়ে মায়ের হাতে চড় খেয়ে ফেলে। আমার তখন নিঃশব্দে গাল পেড়ে সজোরে দরজা লাগানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। এসব ভাবতে ভাবতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে একাকীত্বকে পাশ কাটিয়ে চায়ের তেষ্টা বোধ করি।

দাম্পত্য ঝগড়ার ইতিবৃত্ত, ঝগড়ায় ব্যবহৃত আমাদের স্ব স্ব আঙ্গিকের বাক্য চুলার ওপর রাখা গরম পানির কেটলির ধোঁয়ার সাথে উড়ে উড়ে রান্নাঘরের খুব কাছাকাছি সমান্তরাল দেয়ালে ঠোকর খায়। পানি গরম হয়ে যাওয়া আর চা পাতা ঢালার অবকাশে আমি হাই তুলি। একটু লেবু চিপে কাপে ঢেলে ড্রইংরুমে গিয়ে বসি। পেপারের কথা মাথায় আসলে দরজার নিচের ফাঁকে ঢুকে পড়া ঈষৎ আলোর দিকে তাকাতেই মনে পড়ে খরচ কমানোর উসিলায় নীরা পেপার রাখা বাদ দিয়েছে গত মাস থেকে। ডিশের কানেকশন ও কাটা হয়েছে। ছোটখাট এসব খরচ কমিয়ে কতোটা টাকা বাঁচবে টাইপের কথায় পেরে না উঠে অগত্যা এসবে রাজি হওয়া লাগে। বুয়া রাখা বাদ দেয়া, লন্ড্রি নিজেরা করা। আরো অনেক কীসব কীসব। ইদানীং নীরা নিজে বিভিন্ন জায়গায় দরখাস্ত ঠুকছিল। বাংলায় অনার্সদের প্রতি নগরী ঢাকার চাকুরির বাজার বেজায় উন্নাসিক। ইংরেজিতে অনার্স আর পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি নিজেও নতুন কিছুতে ঢুকে যেতে পারছি না। নীরা এতে আমার অলসতা খোঁজে। আমার উদ্যমহীনতা, তার সাথে মানিয়ে নেয়ার অযোগ্যতার কথা গতরাতে নীরা তার মসৃণ আওয়াজে বিশ্বস্ত করে তুললে আমি অবিশ্বাস্য খিস্তিতে আবৃত হই। অশ্লীল করে তুলি নিজেকে। নিজেদের।

চা তেতো ঠেকে। গলায় ঢেলে যাওয়ার বিরতিতে সামনের বইয়ের আলমারিতে চোখ পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে সমাজতান্ত্রিক দল করতাম। বই পড়তাম গোগ্রাসে। ছাপার অক্ষরকে নির্ভুল মনে হত তখন। পরে, তার আরো অনেক পরে নানান কিছু পড়ে বুঝে নিয়ে যখন একদিন আবিষ্কার করলাম পৃথিবীতে ছাপার অক্ষরে থাকা বেশিরভাগ শব্দ আর বাক্য মানুষ অবিশ্বাস ভরে লিখে গেছে; ঠিক তখন থেকে বইয়ের প্রতি এক তীব্র বিবমিষায় আক্রান্ত হই। বহু কষ্টে সংগ্রহ করে রাখা বইয়ের স্তূপের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। মার কাছে বইগুলো ছিল। এত বই মার পক্ষে যত্ন করে রাখা সম্ভব ছিল না। মাস ছয়েক আগে নীরাকে নিয়ে অরুকে নিয়ে অসুস্থ মাকে দেখতে গেলে জানতে পারি অনেক বই পোকায় কাটা শুরু করেছে। প্রগতি আর মীরের বইগুলো ছাড়া অন্য অনেক বইয়ের বেহাল দশা। এসব দেখে কোন কষ্ট লাগে না। তার বদলে নীলক্ষেতের এক বইবিক্রেতার কথা মনে পড়ে যায়। মামা, ফোকা কি ফোকার বাপেঅ রাশিয়ান বই খাইত ফাইরত ন। খাইতো গেলে হালাগো দাঁত ফইড়া যাইব। নীরা আমার নিষ্ক্রিয়তায় বিরক্ত হয়ে বেশ কিছু বই সেখান থেকে সুস্থ শরীরে উদ্ধার করে আমাদের বাসায় এনে তোলে। শরীরে লাবণ্য নিয়ে আসন্ন বিপদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া প্রগতির, মীরের বইয়েরা আমায় আহ্বান করে। প্রত্যাখ্যান করে মুখ ফিরিয়ে বেডরুমে চলে যাই।

সেখানে গিয়ে দেখি রোদ এতটুকু শূন্যতা না রেখে বিছানা দখল করে আছে। অগত্যা ড্রইংরুমে ফিরি। কিছুটা ক্ষুধায় ফ্রিজ হাতড়াই। এই চরম ঝগড়ার মধ্যে ও নীরা ঠিকই খাবার ফ্রিজে তুলে রেখে গেছে। বইয়ের প্রতি আস্থা হারানোর পরে ও আমার রোমকূপে ঢুকে থাকা উত্তরাধুনিক সব বুকিশ চিন্তা এক গ্লাস পানিতে গুলিয়ে বাসি ভাত-তরকারি ওভেনে দেই। খেতে গিয়ে আরাম পাই। সমস্ত জিনিস ছাপিয়ে নিজের খুঁত চোখে পড়ে। একটা বাসযোগ্য জীবনে ফেরার জন্য মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতার প্রতি আকৃষ্ট হই। আমার এক বন্ধু গার্মেন্টেসের মালিক। একজন হবু এম পি। তার আত্মজীবনী আমার বাসার ঠিকানায় পাঠিয়েছিল অনেক দিন আগে। কেন যেন বইটা পড়েছিলাম। অগ্রহণযোগ্য মিথ্যায় ঠাসা, অকথ্য বাংলায় লেখা স্মৃতিচারণমূলক সেই আত্মবয়ান ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেয়ার কথা তুললো আমার চাকুরিহীন অবস্থার কথা জেনে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অটোবায়োগ্রাফির নাকি খুব কদর। ফোন করেছিল কাল; না না পরশু। তখন কিছুটা শ্লেষে না করেছিলাম। হাত ধুয়ে মোবাইলের কল লিস্ট ঘাঁটতে গেলে নাম্বারটা পেয়ে যাই। বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রাণভরে শ্বাস নিয়ে পরিচ্ছন্ন মেঘের দিকে অপলকে তাকিয়ে ফোন করি। বন্ধু সমীপেষু।


মন্তব্য

নাশতারান এর ছবি

কঃ
অদ্ভুত সুন্দর। চলুক

টুকুন গল্প থেকে ছোটগল্পের দিকে পা বাড়াতে দেখে আশ্বস্ত হলাম।

খঃ

গতরাতে নীরা তার মসৃণ আওয়াজে বিশ্ব্স্ত করে তুললে আমি অবিশ্বাস্য খিস্তিতে আবৃত হই।

আবৃত শব্দটা দারুণ লাগলো। আর কোন শব্দই এভাবে মানাত না এখানে।

তারপর

রোদ জানালার পর্দা ঠেলে উবু বুকে বিছানায় এসে পড়ে। ওম থেকে বাঁচতে আর একটু দূরে শুয়ে থাকি।

ফোকা কি ফোকার বাপেঅ রাশিয়ান বই খাইত ফাইরত ন। খাইতো গেলে হালাগো দাঁত ফইড়া যাইব।

সবশেষে

রোদ এতটুকু শূন্যতা না রেখে বিছানা দখল করে আছে।

অদ্ভুত !

গঃ
নীরার মতো আমিও কখনো মুখ খারাপ করি না। ভদ্র ভাষায় গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার মত শব্দপুঞ্জ খুব বিশ্বস্ততার সাথে উচ্চারণ করি।

ঘঃ
এতো তাড়াহুড়ো করে দিয়ে দেন কেন লেখা?

এই যে দেখুনঃ

অস্বস্থি > অস্বস্তি, অভাবে ও > অভাবেও, পানি গরম হয়ে যাওয়ার > পানি গরম হয়ে যাওয়া আর,
কিসব > কীসব, বিশ্বস্থ > বিশ্বস্ত

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বানানাপা,

ঠিক্কর্লাম। আমার প্রুফরিডার বাসায় না থাকার অবকাশে আপালাম বলে ত্রুটি মার্জনীয়।


আর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অসাধারণ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সাইফ ভাই,

ধন্যবাদ।

মৃত্তিকা এর ছবি

ভালু লাগলো।

বর্ষা এর ছবি

ভালো লাগলো।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

মনামী এর ছবি

প্রাত্যহিকতার আড়াল থেকে উঁকি মারা এমন গল্প খুবই ভালো লাগে। প্রতিদিনের এই যুদ্ধ - নিজের সঙ্গে, জগতের সঙ্গে, অর্থ খোঁজার প্রয়াস, পরিশেষে সেই অনাঙ্খাকিত সিদ্ধান্তের ভার। ভাষার অসাধারণত্ব আর নাই বর্ণনা করলাম। গুরু প্রণাম লহ মোর!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

শুভদা, গল্পটা মনে ধরলো খুব। উপমাগুলোর জন্য... কয়েকটা বাক্য খুব পছন্দ হইসে...বুনোপা বলে দিলো দেখে আর বললাম না... অনীক আন্দালিব বলে একটা ভাইয়া ছিলেন এখানে উনার উপমাগুলো মনে গেঁথে যেত ... আপনার লেখা পড়ে ভাইয়াকে মনে পড়লো... আপনার প্লট গুলো সহজ স্বাভাবিক দেখেই শেষের উপলব্ধিটা বাস্তব লাগে এতো বেশী...

আরও গল্প আসুক... হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মৃত্তিকা
বর্ষা
মনামী
দুষ্ট বালিকা

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

অছলিল!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দৈন্যবাদ। দেঁতো হাসি

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

আরে - না বুইঝাই তো গালি দিলেন - আমি আপনার কম রেটিং পাওয়াকে খারাপ বলছি হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপ্নে খালি আমার উপ্রে চ্যাতেন। আমিও একটু বানান টুইস্ট করসি। চোখ টিপি আর রেটিং দিয়া বস্‌ কি হইবো।

অতিথি লেখক এর ছবি

শুভাশীষ দাশ,

খুউব ভালো লেগেছে গল্পটা; বিশেষ করে উপমাগুলো হাসি

অরু-র জন্য কেন জানি খুব মন খারাপ লাগছে!!

মুক্ত বিহঙ্গ

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

মর্ম এর ছবি

শুভাশীষদা,

আফসোস জাগায়া দিলেন তো!
প্রগতির ননী ভৌমিতের অনুবাদ করা চমত্‍কার বাঁধাইয়ের বইগুলা কতদিন হাতে নেই নাই। মন খারাপ

খুব চেনা গল্প। সেজন্যেই বেশ ভালো লাগলো।
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি


ননী ভৌমিক ছাড়া অন্য আরো বাংলা-অনুবাদক ছিলেন। অরুণ সোম। দ্বিজেন শর্মা। হায়াৎ মামুদ। সমর সেন। এই মুহূর্তে এই কয়েকজনের নাম মনে করতে পারছি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

মর্ম এর ছবি

আমরা একদম ছোটদের বইগুলো বেশী পড়েছি। কোন আজব কারণে ননী ভৌমিক আর দ্বিজেন শর্মার নাম ছাড়া কারো নামই মনে নাই। সে সময় লেখকের চেয়ে লেখাটা গেলাই বেশী জরুরী মনে হয়েছে হয়তো, জানিনা ঠিক।

আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মূলত পাঠক এর ছবি

দুর্দান্ত লাগলো। আপনার টুকুন গল্প তেমন সুবিধা পাই না, কিন্তু এই গল্পটা নিয়ে বলতে গেলে অনেক প্রশংসা করা যায়। তবে তার অনেকটাই অন্যেরা বলেছেন দেখছি তাই আবার শুরু করলাম না (ফাঁকি দেয়ার সনাতন কায়দা হাসি )।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনি আছেন! আমি ভাবছি দারা-পুত্র-পরিবার নিয়া ব্যস্ত।

মূলত পাঠক এর ছবি

আছি আছি, যামু আর কই!

তাসনীম এর ছবি

ভালো লেগেছে...বর্ণনাটা খুব সুন্দর হয়েছে। এখন থেকে ছোট গল্প শুরু কর ভায়া। আরেকটা জিনিস ডায়ালগ দিয়েও ঘটনা বর্ণনা করা যায়, গল্পে এটাও ট্রাই করতে পার।

প্রগতি প্রকাশনীর বই, ওগুলো এখনকি কোথাও পাওয়া যায়? ইশকুল, বৃষ্টি আর নক্ষত্র, শহরের মেয়ে, রুশ দেশের উপকথা...কোথায় গেল বইগুলো?

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মর্ম এর ছবি

তাসনীম ভাই,

লাল মলাটের রুশ দেশের উপকথা অনেক খুঁজেও পাইনি রাশান বাঁধাইয়ে। পাইনি বাবা যখন ছোট কিংবা পেন্সিল আর সর্বকর্মার এডভেঞ্চারের মতো দুর্দান্ত বইগুলো। তবে হ্যাঁ, প্রথম দুটো বই বাংলাদেশী দুয়েকটি প্রকাশনী থেকে অতি বাজে বাঁধাইয়ে পূণঃপ্রকাশিত হয়েছে।

নীলক্ষেতের ফুটপাথে মাঝে মাঝে মালাকাইটের ঝাঁপি বা সাগরতলে বা উভচর মানুষের মতো বই হঠাত্‍ করেই মিলে যায়।

আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

তাসনীম ভাই,

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

প্রগতি/মীর/রাদুগার বাংলায় অনুবাদ করা বইগুলো ভাল কোন প্রকাশনী থেকে ভাল বাঁধাইয়ে পুনঃপ্রকাশ করতে পারে।

নীলক্ষেত বা পুরানা পল্টনে কিছু কিছু বই এখনো পাওয়া যায়। নীলক্ষেতের তেহারির দোকানগুলোর কিছুটা সামনে ফুটপাতে পেয়েছিলাম লেরমেন্তভের 'আমাদের সময়কার নায়ক'। কতোদিন খুঁজছিলাম। বিশ টাকা চাওয়াতে খুশির চোটে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে কিনে এনেছিলাম। হাসি

ব্রাদার্স কারমাজভ-এর অনুবাদ পাওয়ার আশায় আশায় ঘুরতাম। কিন্তু পাই নাই। মন খারাপ

তানভীর এর ছবি

পড়েছিলাম কালকেই। ভালু।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ধন্যবাদ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চমৎকার !!!!
এই গল্পটা চোখে পড়ে নাই কেনো বুঝলাম না, দিব্যি লেগেছে...

টুকুন গল্প সিরিজের অন্যতম সেরা।

_________________________________________

সেরিওজা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

থ্যাংকস।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দারুণ একটা গল্প। অদ্ভুত সুন্দর। গ্রেট

আর বইয়ের কথায় পুরান ব্যথাটা চাগাড় দিয়া উঠলো। আপনে কি আমার ঘটনা মাইরা গল্প লেখছেন চোখ টিপি
মিললো কেম্নে!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

নজু ভাই,

থ্যাংকস।

আপনে কি আমার ঘটনা মাইরা গল্প লেখছেন। মিললো কেম্নে!

গল্প লেখার সময় আপ্নে অচেতনে হয়ত ছিলেন। আর নিধির মা খালি বাপের বাড়ি যায় - এটা চেতনে মাথায় ছিল। দেঁতো হাসি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

নিধির মা বাপের বাড়ি যায় আমার বান্ধবীদের একটু সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। এইটা নিয়া আপনে তাই বলে গল্প লিখে ফেলবেন চোখ টিপি ?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

নিধির মা কি ভালামানুষ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দারুণ লাগলো! চমৎকার ভাষা। ছিমছাম গল্প। আপনার খুব বেশি গল্প পড়া হয়নি আগে। এরপর থেকে আর মিস হবে না নিশ্চিত হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হাসি

তিথীডোর এর ছবি

খাসা গল্প!
চলুক

[বাপে বাড়ি> বাপের বাড়ি
>ঠোকর হবে নাকি ঠোক্কর?
ঠোকর= ঠোকরানো আর ঠোক্কর= হোঁচট/ ধাক্কা খাওয়া.. এটুকু জানি আর কি! ইয়ে, মানে...
> ডিসের নয়, ডিশের]

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বাপে-র পরে র দিলাম। ডিশ ঠিক্কর্লাম। ঠোকরকে ঠোক্কর মারার দরকার দেখলাম না।

খাসা শুনে খুশিত হলুম।

মামুন হক এর ছবি

কমরেড, এই গল্প লেখার পেছনের গল্পটাও আমাদের শুনান।
আপনার এই লেখাটি চুপ করিয়ে দেয়ার মতো ভালো হয়েছে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পেছনের গল্প পেছনেই থাকুক। দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আসেন আমরা মিলেমিশে থাকি, কাইজ্যা না করি, বউকে না ক্ষ্যাপাই, বাপের বাড়ি না পাঠাই! বহুত ফায়দা হবে ভাই...
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হ। বিয়া করেন নাই, হের লাইগা বউরে না ক্ষ্যাপানোর কথা বেশি ভাবেন। দেঁতো হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই গল্পটা পড়েছি চারবার বা পাঁচবার। গল্পটা পড়ে "ভালো লেগেছে" বা "দারুণ" জাতীয় মন্তব্য করতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু বিস্তারিত বলার মতও কিছু পাইনি। গল্প পড়ার পরের ভালো লাগাটুকু অহেতুক ছিদ্রান্বেষণে নষ্ট করতে ইচ্ছে হয়নি। তবে প্রগতি-রাদুগার বইয়ের টেকসইগুণ প্রসঙ্গ গল্পের একমাত্র দুর্বলতা বা অপ্রয়োজনীয় প্রসঙ্গ বলে মনে হয়েছে।

ক্রমাগত চর্চা কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষকে পারফেকশনের কাছাকাছি নিয়ে যায়, অবশ্য তার জন্য নিজের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা থাকতে হবে। টুকুনগল্পের এই প্রচেষ্টা এই গল্পটাকে সেই উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আমি মনে করি এই গল্পটা আর কোন ধরনের পরিবর্তন, পরিবর্ধণ বা পরিমার্জন করা ঠিক হবেনা। পাঠক এখানে অনায়াসেই কথক আর নীরার পূর্বরাগের কথা অথবা কথকের পরিণতির কথা কল্পনা করে নিতে পারেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

রাদুগার টেকসইগুণ মন্তাজ হিসেবে আনছিলাম। ঠিকমত আসে নাই। মন খারাপ

স্নিগ্ধা এর ছবি

শুভাশীষ - আগেও বলসিলাম একবার, একটু বড় করলে আপনার গল্পগুলা আরেকটু নিঃশ্বাস টিঃশ্বাস নিয়ে, নাড়াচাড়া করে, হাত পা মেলতে পারে - আর আমরাও আরেকটু মুগ্ধ হতে পারি!

এই গল্পটাই যেমন, ট্যাগেই দেখলাম 'টুকুন' না বলে 'ছোট' বলসেন। আমিও বলি - নাহয় ছোটই হলো, তাও একটু বড়ই নাহয় লিখলেন? হাসি

[সম্পাদিত অংশঃ গল্পটা যে খুবই ভাল্লাগসে সেটা বলতে ভুলে গেসিলাম দেঁতো হাসি ]

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সম্পাদিত অংশ পড়ে হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

সবাই সবকথা বলে ফেলেছে............ আমার বলার মত কিছু বাকী নাই। শুধু বলব, চালিয়ে যাও।

আরও একটি পাঁচ তারা। হাসি

শাহরিয়ার সজীব

shahriarsajib@gmail.com

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।