যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী।।১।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: রবি, ০১/০৮/২০১০ - ৪:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আসিফ নজরুলকে বুদ্ধিজীবীর তকমা দেয়া যায় না। প্রথম আলো আর চ্যানেলগুলোর সৌজন্যবোধে বুদ্ধিজীবী লেবেল তার গায়ে সেঁটে গেছে-কী করা! ফলে তাঁর কথা কিছুটা আসবে। প্রথম আলো জনপ্রিয় পত্রিকা। জনমত গঠনে তাদের ব্যাপক ভূমিকা। সৈয়দ আবুল মকসুদ সেখানে নিয়মিত কলাম লেখেন। ‘সহজিয়া কড়চা’ নামে (একটু উল্লেখ করি- মীজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামের নাম ছিল সম্প ...

আসিফ নজরুলকে বুদ্ধিজীবীর তকমা দেয়া যায় না। প্রথম আলো আর চ্যানেলগুলোর সৌজন্যবোধে বুদ্ধিজীবী লেবেল তার গায়ে সেঁটে গেছে-কী করা! ফলে তাঁর কথা কিছুটা আসবে। প্রথম আলো জনপ্রিয় পত্রিকা। জনমত গঠনে তাদের ব্যাপক ভূমিকা। সৈয়দ আবুল মকসুদ সেখানে নিয়মিত কলাম লেখেন। ‘সহজিয়া কড়চা’ নামে (একটু উল্লেখ করি- মীজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামের নাম ছিল সম্পাদকীয় কড়চা)। আরো একটা চিকন লম্বা একটা কলাম মাঝে মধ্যে দেখা যায় আনিসুল হকের ঢাউস কলামের ঝুলে থাকতে। ‘বাঘা তেঁতুল’ শিরোনাম নিয়ে।

উনত্রিশে জুন ২০১০ এ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারী মোহাম্মাদ মুজাহিদ আর নায়েবে আমির দেলাওয়ার সাঈদী গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের কারণ দেখানো হয় ধর্মের অবমাননা। যাই হোক যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তারের পরে জামায়াত লেবাস ঢেকে থাকা বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ জুলাই মাসেই তিনটি সহজিয়া কড়চা ছাড়েন। মুখোশ খুলে মুখ তখন বেরিয়ে পড়ে। প্রথমটি প্রথম আলোতে আসে ছয় জুলাইতে। শিরোনাম ‘ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞা কথন’। বাঙালি চরিত্রকথন, শেখ মুজিবুর রহমান, ভাসানী, প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষক সমাজ, বঙ্গবন্ধুকে তুমি সম্বোধনকারী সিকনদার আবু জাফর, পনেরই আগস্ট, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার, আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক নির্বাচনী সাফল্য, এডোয়ার্ড সায়ীদ ও তাঁর ‘ওরিয়েন্টালিজম’ (সেখান থেকে কোট করা, কিন্তু কোন পৃষ্ঠা থেকে সেটা উল্লেখের দরকার তাঁর পড়ে না), একাত্তরের ঘাতক দালাল বিচার, শাহরিয়ার কবির, আহমদ শরীফ, মহাজোটে বামদলের যোগদান এতোসব কথা ডিঙিয়ে এসে জানতে পারি জামায়াতে ইসালামীর যুদ্ধপরাধীদের জন্য তাঁর মহব্বতের কথা।

জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায়। তাঁদের গ্রেপ্তারে কেউ খুশিতে বগল বাজাচ্ছে, কেউ মিষ্টি বিতরণ করছে, কেউ আনন্দ মিছিল করেছে। আমাদের সাংবাদিকেরাও যে খুব খুশি হয়েছে, তা বোঝা যায় গ্রেপ্তারের খবরটি পরিবেশন দেখে। প্রকাণ্ড শিরোনাম- সাত-আট কলামব্যাপী। কিন্তু অনেকেই বোঝার চেষ্টা করছেন না যে এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হলো। ভবিষ্যতে এ-জাতীয় ধর্মীয় অনুভূতি মামলায় যাবেন বহু সাংবাদিক, রাজনীতিক, সম্পাদক, কলাম লেখক, নাট্যকার, অভিনেতা, শিক্ষক ও পেশাদার প্রগতিশীল ব্যক্তি।...১

এই প্যারা পড়লে বোঝা যায় মকসুদ সাহেবের কোথায় লেগেছে। যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় অন্যদের খুশিতে তিনি সামিল হতে পারছেন না। তাঁর কষ্ট হচ্ছে। ভীষণ কষ্ট। লেখায় সেই ক্ষতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। সংবাদপত্রের শিরোনামের বিশালতায় তিনি কাবু হচ্ছেন। অবশ্য কূটচালে দক্ষ কলামলেখক হিসেবে জুজুবড়ির ভয় তিনি বুদ্ধিজীবী শ্রেণীকে দেখিয়েছেন। দেখেন এঁদের ধর্ম অবমাননা করার জন্য হাজতে পুরা হয়েছে, তারপর আপনাদের ও হাজতে নেয়া হবে। মকসুদ সাহেব যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেপ্তারে একদম খুশি হতে পারেন নি। সমব্যথী সংগ্রহ করতে নেমে তিনি কন্সপিরেসি থিয়োরি খাড়া করতে চাইছেন।

মনে হয়, জামায়াতি নেতাদের মুসলিম বিশ্বের সু চি বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। এক তুচ্ছ মামলায় আজ তারা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। আমরা কি পেতে চাইছি একজন ‘ইসলাম বন্ধু’ মতিউর রহমান নিজামী। মুজাহিদ হবেন মুসলিম বাংলার আয়াতুল্লাহ্। সাঈদী ও হয়ে উঠবেন একুশ শতকের জালালুদ্দিন আফগানি।... ২

ঘৃণ্য খুনী নিজামীর সাথে সু চির তুলনা করতে তাঁর বাধে নি। তাঁর ছাগুবান্ধব যুক্তি হচ্ছে, এরা সু চি হয়ে যাবে মুসলিম বিশ্বে, এইজন্য এদের গ্রেপ্তার করা যাবে না। দেশের পতাকাবাহী দামী গাড়িতে যুদ্ধাপরাধীরা যখন ঘুরতো সৈয়দ মকসুদের তখন কোনো সমস্যা হতো না। কুযুক্তির পাহাড় গড়ে উঠলে আবেগে হাত কাঁপে। মকসুদ সাহেবের লেখার ভাষায় সেটা প্রাঞ্জল ফুটে উঠেছে। ভয় দেখানোর নানা জুজুবুড়ি থলে থেকে একে একে বের করতে থাকেন।

একাত্তরের অপরাধের জন্য ঘাতক দালালদের বিচার করা এক ব্যাপার, আর ইসলামী মৌলবাদী রাজনীতিকে শেষ করা আরেক জিনিস। ধর্মান্ধ রাজনীতিকে মোকাবিলা করার পথ একটাই: প্রগতিশীল রাজনীতির প্রসার। ... ৩

বাংলাদেশকে তিনি শান্তির ভূখণ্ড বলেছেন। ইসলামী রাজনীতিকে একবার মৌলবাদী বলছেন আবার সেই সাথে সাবধান করেছেন যেন হুট করে ইসলামী রাজনীতি ওপর যেন বেমক্কা আঘাত না আসে। তাতে হিতে বিপরীত হবে। ইসলামিক জঙ্গী মনোভাবাপন্নরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আরো বলেছেন, এসব ঘটলে ভারত চ্যাতে যাবে। শেখ হাসিনার গদি নড়ে যেতে পারে। ইত্যাদি ইত্যাদি। আমাদের দেশের মানুষের রাজনৈতিক জ্ঞানে ট্যুইস্ট আনতে মকসুদ সাহেবেরা চেষ্টা করেই চলছেন। ভারত আমাদের রাজনীতি চালাচ্ছে, তাইলে এতো গণতন্ত্র নিয়ে প্যানপ্যান আর কলাম লেখার চর্চা রেখে লাভ কী। একটা সরকারের মেয়াদ শেষ হবে, তারপর ভারত সরকার বলে দেবে কে দেশ চালাবে, ল্যাঠা চুকে যায়। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে ঠিক আছে, তারাই আমাদের রাজনীতির নীতি নির্ধারক এই কথা বলার আগে প্রমাণ হাজির করতে হবে।

বর্তমান জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ৯০ শতাংশেরই বয়স ৫০-এর নিচে। তাদের এখন একটি ইসলামী বিরোধী দল হিসেবেই গণ্য করতে হবে। ... ৪

একটা মৌলবাদী বিরোধী দল রাখার যুক্তি উপস্থাপন করছেন এখানে মাননীয় কলামলেখক। ৯০% এর বয়েস ৫০ এর নিচে-এই উপাত্ত জামায়াতের কোন গোপন সভায় হাজির থেকে তিনি সংগ্রহ করেছেন তা জানা যায়নি। গাফফার চৌধুরি তাও বলতেন, ঢাকা থেকে তাঁর কাছে ফোন এসেছিল। সৈয়দ মকসুদ নানা বেসামাল উপপাদ্য খাড়া করে মুক্তিযুদ্ধের দেশদ্রোহী রাজাকার, আলবদরের রাজনৈতিক দল জামায়াতকে যেকোনো উপায়ে পলিটিক্যাল রেসে টিকিয়ে রাখতে চাইছেন। এই উদ্দেশ্য অসাধু।

কলামটি শেষ করেছেন বিনয় দিয়ে। উপদেশ দেয়ার স্পর্ধা তাঁর নাকী নেই। তাহলে এই বিশাল কলামে তিনি কী করেছেন। আফসোস করেছেন শেষে। সরকারের কাছে দূরদর্শী হৃদয়বান কেউ নাই। আসলেই সৈয়দ সাহেবের মতো দূরদর্শী হৃদয়বান কেউ সরকারের পরামর্শদাতা থাকার দরকার ছিল। তাহলে কোনো পাষণ্ড কী পারতো হারামি শুয়োর যুদ্ধাপরাধীগুলোকে হাজতে ঢোকাতে কিংবা গুয়ার মধ্যে ডিম সান্ধাতে!

অন্য ছাগুবান্ধব কলাম লেখক আসিফ নজরুলকে নিয়ে এই লেখার পরের কিস্তি। যুদ্ধাপরাধী মতিউর নিজামীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে চ্যানেল আইতে আসিফ সাহেবের জ্ঞান কপচানিতে তাঁর লেজ বেরিয়ে এসেছে।

আসিফ নজরুলের নিজামীপ্রীতি

সূত্র
১,২,৩,৪


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আসিফ নজরুলকে নিয়ে আপনি লিখবেন?
আমার হাতে ভালো তথ্য এসেছে। আপনার পর্বের অপেক্ষায়। ওটায় যোগ করে দেবো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আসিফণজ্রুলের ব্যাপারে আমার তথ্য সীমিত। আপনি পোস্ট দিতে চাইলে দিয়ে দেন। সেখানে আমি কিছু যোগ করি না হয়।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

সচল জাহিদ এর ছবি

ফেইসবুকে আগেই পড়েছি। চমৎকার শুরু করেছিস।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দ্রোহী এর ছবি
নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌সৈয়দ আবুল মকসুদ সম্ভবতঃ ক্রিটিক্যাল মানবতাবাদী। ব্লগার রাসেল সিনড্রোম...... একই কথা খাটে আসিফ নজরুলের ব্যাপারেও। ভদ্রলোক আমাকে দারুণ হতাশ করেছেন।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

বাংলাদেশে এখন ক্রিটিক্যাল মানবতাবাদী ভরে গেছে। সবাই এখন মানবতাবাদী ফ্যাশন করে। জামাতকে নিয়ে সফট কথা বলা একটা নজর কাড়া ফ্যাশন। সবার ফেইসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে দেখি আজকাল এরকম দু একজন থাকে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উনি যুক্তিহীন কথার ক্যাঁচাল দীর্ঘদিন ধরে লিখে আসছেন। সাম্প্রতিক লেখায় ছাগুপ্রীতি আর ইসলামপন্থী দলগুলোর প্রতি উনার দরদের উদার পরিচয় পাওয়া গেছে।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

ওডিন এর ছবি

বাংলাদেশে এখন ক্রিটিক্যাল মানবতাবাদী ভরে গেছে। সবাই এখন মানবতাবাদী ফ্যাশন করে। জামাতকে নিয়ে সফট কথা বলা একটা নজর কাড়া ফ্যাশন।

মর্মান্তিক সত্যি একটা কথা! মন খারাপ

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

মুস্তাফিজ এর ছবি

১৯৭১ এর এপ্রিলে প্রকাশিত আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সমালোচনায় সৈয়দ আবুল মকসুদ এক জায়গায় বলেছিলেন "রাষ্ট্রের জন্মের শুরুতেই রাষ্ট্রের একনায়কত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়"
এমন মানুষ থেকে জামায়াতের পক্ষে কথা বলায় আশ্চর্য হবার কিছু নেই।

আর আঃনঃ? ৮০র দশকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক গডফাদারদের অনেকেরই খুব কাছের লোক শুনেছি।

...........................
Every Picture Tells a Story

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সৈয়দ আবুল মকসুদ ছফা পড়েন। তবে ভুল উপাত্ত নিয়ে বেরিয়ে আসেন। ফলে ভূষিমাল চটকদারি কথা বেরোয়।

আসিফণজ্রুলের ইতিহাস বেরিয়ে আসা উচিত। উনার সম্পর্কে অনেক কথা শুনি।

----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অতিথি লেখক এর ছবি

সৈয়দ আবুলরেও অন্য রাজাকারগো মতন শ্রীঘরে পাঠায় দিলে একখান কামের কাম হইত!!! :@

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভালো লিখছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের উদ্যোক্তা দশ শব্দ-সৈনিকের প্রয়াসকে সৈয়দ আবুল মকসুদ “যুক্তির প্রয়োজনে” বলেছিলেন “দ্বায়িত্বজ্ঞানহীনতার বহিঃপ্রকাশ”, “অধিকারের বাইরের কাজ”(দেখুন, “স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র অরণ্য-বেতার”, সৈয়দ আবুল মকসুদ, প্রথম আলো, ঈদসংখ্যা, অক্টোবর ২০০৬, পৃষ্ঠাঃ ১২৪-১২৫)। এই লোক এখন জামায়াতকে বাঁচাতে নতুন নতুন যুক্তির প্রয়োজন, মানবতার খাতির, উচিত-অনুচিত, সাপ-ব্যাঙ-লাউ-কদু কত কিছু পাবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

বস, আপনার হাতের কাছে থাকলে একটু স্ক্যান করে দেবেন?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হিমু, এই ফেসবুক নোটটা দেখুন এখানে আমার ব্যাখ্যাসহ পাবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রানা মেহের এর ছবি

আসিফ নজরুল সৈয়দ আবুল মকসুদ দের জায়গা কখনো খালি থাকবেনা।
রাসেলদের মতো যোগ্য উত্তরসূরি তৈরী আছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

রাসেল সাহেব একটা ব্লগ আবাল।

--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

রাসেল [অতিথি] এর ছবি

ভাই এখানে কোন রাসেল সাহেবকে নিয়ে কথা হচ্ছে? আমি অতিথি হয়ে মাঝে মাঝে দু একটা কমেন্ট লেখি - মাসে একটি হয়ত। এখানে একজন রেগুলার ব্লগারও কি আছেন রাসেল নামে? ব্লগার রাসেল কে এবং কি কারনে তিনি আবাল, দু'এক লাইনে আমাকে কি কেউ বলতে পারবেন?

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এনার কথা হচ্ছে। উনার ব্লগ পড়লেই আপনার যা জানার জানা হয়ে যাবে।

আর আপনি তো এই রাসেল। নাকী?

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

রাসেল [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ। হ্যা আপনি ঠিক মনে রেখেছেন, ঐ কমেন্ট আমার। আপনার মেমোরি খুবই প্রখর।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এইসব আবুল মকসুদ-আসিফ নজরুলরা এখন বের হবেই। মুক্তিযুদ্ধের সময়েও বের হয়েছিলো "এতো প্রশিক্ষিত ও সুসংগঠিত বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালীরা যুদ্ধ করে পারবে না" ফতোয়া নিয়ে।

আশার কথা, এদেরকে সেদিনও বাংলাদেশের মানুষ পুছে নি, আজকেও পুছে না। ছাগলের মতো কিঞ্চিৎ ম্যাৎকার করে আপনা আপনি থেমে যাবে তারা। এদের ম্যাৎকারে মাথা ঘামানোর কিছু নাই। বাংলাদেশের মানুষ তাদের মতো পয়সা খাওয়া বুদ্ধিজীবী না।

জামাতের মতো দলের নব্বুই শতাংশ কেনো, পুরো শতভাগ অনুসারীই ৫০ বছরের নিচে হলেও জামাত বাংলাদেশের মাটিতে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা জামাত অনুসারী তারা জেনে শুনেই জামাত-অনুসারী। জামাতের মতো উগ্রমৌলবাদী, জঙ্গীবাদ সমর্থনকারী দলকে বয়স রেঞ্জের ধোঁয়া তুলে সাপোর্ট দেয়ার কোনো/কারো পদক্ষেপই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। যারা জামাতকে নিষিদ্ধকরণে শীবের গীত শোনাচ্ছেন, তারা জেনে বুঝেই জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন।

আবুল মকসুদ-আসিফ নজরুল সেটাই করছে এখন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমাদের দেশের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী ফালতু মাল। কথাকে ফেনিয়ে তোলার কিছুটা আর্ট জানলে আর ভড়ং ধরলে তাদের গায়ে বুদ্ধিজীবী তকমা সেঁটে যায়। ভেতরে ভেতরে লবিং তৈলবাজি করে তারা লাইমলাইটে চলে আসেন।

এঁদের পড়াশোনার দৌড় ও সীমিত। সায়ীদ, ফাঁনো, একবাল আহমেদ, চমস্কির কথাবার্তা নিজেদের কলামে এক দুই লাইন কোট করা অবস্থায় ঢুকিয়ে বাকি কথা নিজের কথা বলে চালান। ধরা পড়ে যান যখন নিজের ভাষায় কোনো কথা বসাতে যান। পারসেপসানে তখন টান পড়ে। লেজ বেরিয়ে পড়ে।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

বোহেমিয়ান এর ছবি

বুদ্ধিজীবী নামটার প্রতি ঘৃণা ধরে যাচ্ছে!

লেখায় চলুক
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমার যেইটা মনে হয়, এই লোকগুলা টের পাইছে যে তাগো আর বেইল নাই।



অজ্ঞাতবাস

দ্রোহী এর ছবি
শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আগেই দেখছি। দেঁতো হাসি

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অতিথি লেখক এর ছবি

আবুল মকসুদ সাহেবের এই লেখাটি নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। এখন পড়ে দেখলাম, এবং বুঝতে ব্যর্থ হলাম কেন যুদ্ধপরাধীদের বিচার ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগ সরকারের অদূরদর্শিতা এবং তা দেশে ভারতবিরোধিতার সৃষ্ট করবে। এই গান্ধীপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীর পরিধেয় দেশী তাঁতে বোনা শুভ্র কাপড়ের থলে থেকে জামায়াতপেয়ারু বেড়ালের ম্যাঁও ধ্বনি স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। লেখককে ধন্যবাদ বিষটি নজরে আনার জন্যে।
------------------------------------------------------------------------------------------------
চতুর্বর্গ

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উনার ম্যাঁওবাদ মনে হয় সরকার কানে নিচ্ছে। চিন্তিত

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

নৈষাদ এর ছবি

সমস্যা হল সৈয়দ আবুল মকসুদ সাহেবের মত লোক কিন্তু আমাদের মত আম-জনতার কাছে বেশ ভালই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। হয়ত ব্লগ এভাবে না পড়লে এমনভাবে চিন্তা করতে পারতাম না। এখন খুব সাবধানে, বিশ্বাসযোগ্য ভাবে কনফিউসনের বীজ/বিষ প্রবেশ করাচ্ছে...।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এঁদের চেনানো দরকার।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অতিথি লেখক এর ছবি

আবুল মকসুদ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে ও প্রথম আলোতে একটা কলাম লিখেছিল। সারাংশ হচ্ছে, দেশ দ্রব্যমূল্য-বিদ্যূৎ-পানি-গ্যাস ইত্যাদি সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে, সুতরাং, এখন এত পুরান ঘটনার বিচার করাটা নির্বোধের কাজ হচ্ছে। আমি এরপর থেকে ওইলোকের লেখা আর পড়িনা, মানুষ যত তাড়াতাড়ি নিজেকে স্পষ্ট করে, তত আমাদের সময়ের অপচয় কমে আসে।

সজল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

কোন তারিখের? পারলে রেফারেন্স দিয়েন।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

হিমু এর ছবি

আবুল মকসুদের কলামগুলো লেখার একটা কার্যকরী ফরম্যাট আছে।

[একটা চটকদার শিরোনাম]

[অতীতের রসালো ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ, যার রেফারেন্স দেওয়া সম্ভব বা চাওয়া সম্ভব না]

[সেই স্মৃতিচারণের রেশ ধরে চল্লিশ থেকে আশি বছরের পুরনো কোনো ঘটনা নিয়ে বিশদ আলাপ]

[এক পর্যায়ে নিজের কথা বলা, যেমন ষাটের দশকে মুজিব ভাই আমাদের ডেকে বললেন, কী করা যায় বলতো দেখি? বা এই টাইপ কিছু, যাতে বোঝা যায় উনি বহু পুরানা জমানার কেষ্টুবিষ্টু]

[অতীতের কোনো রাজনৈতিক মহত কীর্তির উল্লেখ, যা রসিয়ে রসিয়ে বলে "আজ আমরা কত নিচে নেমে গেলুম" বলা যায়। অথবা অতীতের কোনো রাজনৈতিক ব্লাণ্ডার, যা রসিয়ে রসিয়ে বলে "আজও আমরা এ থেকে মুক্ত হতে পাল্লেম্না" বলা যায়]

[বিছের বিষ থেকে লেজের কাছটায়, অতএব যখন কলাম প্রায় শেষ তখন ধুতির নিচ থেকে ম্যাঁওটাকে বার করা]

[অশেষ বিনয়, যেমন "আমি এক কীটস্য কীট" গোছের কথা বলে কলাম শেষ করা]



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গুড অবজারভেশন! তবে হিমু, এই ফর্মুলা শুধু মকসুদ সাহেবই না আরো অনেকে অনেকদিন ধরেই ব্যবহার করেন।

আরেকটা ফর্মুলার কথা বলি, এটা ছাগুদের প্রকাশনাগুলোতে তাদের রথী-মহারথীদের লেখায় দেখবেন। সেখানে ঐতিহাসিক কোন ব্যাপারে ব্যাখ্যা শুরু হয় সাধারণতঃ পলাশীর যুদ্ধ থেকে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১৪০০ বছর আগে থেকে। সব কিছু বিস্তারিতভাবে তাদের মত করে বর্ণনা আর ব্যাখ্যা করা হয়। তবে মাঝখানে ১৯৭১ সাল বলে কোন বছর যে ইতিহাসে ছিল এই ব্যাপারটা তারা লিখতে বেমালুম ভুলে যান। ঐ সময় তিনি কী কী মহৎ কর্মে লিপ্ত ছিলেন, বা তার দোস্তরা কী করেছিল সেগুলো তাদের স্মৃতিতে আর থাকেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হিমু,

ভালো সামারি।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

শুভাশীষ দারুণ লেখা। প্রতীক খুঁজতে খুঁজতে সত্য উদঘাটন। অভিনন্দন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

"এই প্যারা পড়লে বোঝা যায় মকসুদ সাহেবের কোথায় লেগেছে।"

স্যরি। একদম একমত হতে পারলাম না !! অন্ততঃ এইটুকুতে কিচ্ছু বুঝা যায় না। যদি কিছু যায়, তাহলে আমি বলবো তার প্রজ্ঞাই বুঝা যায়। বুঝা যায়, নৈতিক দৃঢ়তা আর বালখিল্য হঠকারিতার মধ্যে পার্থক্যটুকু তিমি চেনেন। তা আপনি যতই ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ঠেস মারুন না কেন।

আবুল মকসুদের আসল রঙ বা মুখ কোনটি সেটা আমি অতো নিশ্চিত ভাবে জানিন না। সামগ্রিক বিচারে হয়তো তার গোপন কোন চেহারা থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু এই ইস্যুতে সেটা মোটেই প্রকাশ পায় না। তবে এসব নেহাৎই অপ্রাসঙ্গিক।

ওই 'ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত'-এর অভিযোগে নিজামীদের গ্রেপ্তারের বালখিল্যতা সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আমি সম্পূর্ন একমত। আমার মতে এমন একটা এক্কেবারে ১০০% ফালতু অভিযোগে নিজামীদের মতো দানব ও পিশাচদের গ্রেপ্তার করে তাদের দানবীয় অপরাধগুলির পৈশাচিকত্ব আর তাদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগগুলির ভয়াবহতা ও গুরুত্ব ভীষণভাবে খেলো করে ফেলা হয়েছে! এটা ৭১-এর লক্ষ শহীদের প্রতি চরম এক অপমানও বটে। শুধু তাই নয়, মূল বিচারকার্যে হাজারো রকম টালবাহানা করতে করতে এখন সেখান থেকে মানুষের দৃষ্টিও খানিকটা হলেও ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে।

প্রথমতঃ নিজামীদের বিরুদ্ধে শুধু এক পৈশাচিক গনহত্যা ও তাতে সহযোগিতার অভিযোগই নয়, তার চেয়েও মৌলিক ও সুদুরপ্রসারী ভবিষ্যৎমুখী ইস্যু রয়েছে। আর সেটা হলো তাদের ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতির মূলোৎপাটন। রাষ্ট্র-পরিচালনায় প্রগতিশীল, সেক্যুলার (রাষ্ট্রযন্ত্র ও ধর্মের মধ্যে পৃথকীকরন), ইহজাগতিক মূল্যবোধ, আইনকানুন, বিধিবিধান ও সংস্কৃতি চর্চার পূণঃপ্রতিষ্ঠা।

অথচ সরকার কি করল ?

জামাতি ঘৃন্য ধর্ম-ব্যবসায়িক রাজনীতির একদম মূল খুঁটি যেটি, সেই তথাকথিত ধর্মীয় "অনুভুতি"কেই, ঠিক একই জামাতি/বিএনপি কায়দায়, আশ্রয় করে - অপব্যবহার করে - ধর্মীয়-অনভুতিতে-সুড়সুড়ি দিয়ে চরম মৌলবাদী কায়দায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করল।

ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারীরাও যদি নিজেদের যখন যেমন সুবিধা তখন তেমন মৌলবাদিদের মত ধর্মীয়-অনভুতিতে-সুড়সুড়ি দেয়ার রাজনীতি করা শুরু করে, তাহলে জনগন কোন যুক্তিতে অকৃত্রিম ধর্মব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এইরকম সুযোগমত ধর্মব্যবসার সব ফায়দা নিতে চাওয়া, দু নৌকায় পা-রেখে চলা, সুবিধাবাদী, কপট ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হবে ? কি পার্থক্য থাকল তাহলে এই দুইয়ের মধ্যে? তাদের মনে কি এই প্রশ্ন উঠাই কি বরং আরো সম্ভব না যে, "ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল" নিষিদ্ধ করার নামে আসলে এবারে একটা "ধর্মীয়-বাকশাল" গঠনের চেষ্টা চলছে যেখানে আওয়ামী লীগ এবার 'মুক্তিযুদ্ধ' আর 'সেক্যুলারিজমের' পাশাপাশি 'ধর্মব্যবসার রাজনীতির' একচ্ছত্র ইজারাটাও (জামাতিদের কাছ থেকে হাইজ্যাক করে) পাকাপোক্তভাবে নিজের করে নিয়ে নিতে চায়? তাহলে গনতন্ত্র আর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কোথায় থাকলো ? কি লাভ এইসব বিচার-ফিচার করে যদি আওয়ামী লীগ (এবং তার এই কাজের সমর্থকরা) নিজেরাই শত্রুপক্ষের চরিত্র আত্মসাৎ করে নেয় ? জনগন লাউয়ের বদলে কদু বা ছাইয়ের বদলে ভস্ম পাবে, এই জন্য ??!

মোদ্দা কথা হলো, এই কাজটা মূল লড়াইয়ের জন্য অত্যন্ত অনিষ্টকর ও সেলফ-ডিফিটিং একটা পদক্ষেপ হয়েছে। হঠকারী, বালখিল্য আগ্রাসী আচরন (যা কারো-কারো কাছে এক বিরাট 'বীরত্ব' মনে হতে পারে), কখনই, কোনভাবেই, কস্মিনকালেও - প্রকৃত ও স্থিতপ্রজ্ঞ নৈতিক সাহস ও মনোবলের বিকল্প বা তুলনীয় হতে পারে না। আর আমাদের এইসব হঠকারী বীরত্ব বা বালখিল্যতার কোন প্রয়োজন নেই -- প্রয়োজন একাগ্র অধ্যাবসায়ী ও স্থির-লক্ষ্যাভিমুখী অবিচল নৈতিক সততা, সাহস ও মনোবল - ৭১-এর গনহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, আর ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতির বিরুদ্ধে। লক্ষ্যচ্যুত হঠকারীতা আর বালখিল্যতা দিয়ে এই যুদ্ধে যেতা যাবে না।

দ্বিতীয়তঃ আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যেটা বুঝি সেটা হলো, প্রতিহিংসার রাজনীতি পৃথিবীতে কস্মিনকালেও কোন স্থায়ী কল্যান বয়ে আনেনি। বরং সবসময়ই শেষমেশ সেলফ-ডিফিটিং হয়েছে। অন্যায়কে দমন করতে হলে তেলেছাড়া বেগুনের মতো হঠাৎ হঠকারি আক্রোশে জ্বলে ওঠা নয়, বরং তাকে ন্যায় দিয়েই পরাজিত করতে হয় -- নৈতিকতার শক্তি ও যুক্তিকে অসীম ধৈর্য্য, দৃঢ়তা ও মনোবলের সাথে তার উপর প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে। নয়তো ঐ অনৈতিকতার বীজ ড্রাকুলার 'আনডেড' রক্তবীজের মতো সমাজদেহে থেকেই যায় - অনতিদুর ভবিষ্যতে আবারো জেগে উঠার জন্য। বাংলাদেশের ইতিহাসই তার জ্বলন্ত উদাহরন ! এই ইতিহাসে উপরের সব উপাদানই আছে, গভীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের দীর্ঘ ধৈর্য্যশীল লড়াই -- আবার উপযুক্ত সময়ে ন্যায়ের যুক্তি ও শক্তিকে নৈতিক-প্রজ্ঞা ও সাহসের সাথে দৃশ্যমানভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারার ব্যর্থতা এবং সে কারনে ড্রাকুলার পুনর্জন্ম। যতবার আমরা লক্ষ্যচ্যত হয়ে আসল কাজে ব্যার্থ হবো ততবারই এই পুনর্জন্ম ঘটতে থাকবে। লেকচারের মতো শোনাল হয়তো এবং সবারই হয়তো কমবেশী জানা-- কিন্তু কি করবো এটাই আমার বিশ্বাস আর তাই নিরুপায় চর্বিত-চর্বন।

তৃতীয়তঃ উপরের সমস্ত 'ভাবালু' কথার এক জ্বাজ্বল্যমান বাস্তব নিদর্শন কিন্তু আমাদের সবার চোখের সামনেই প্রকটভাবে বিরাজ করছে বর্তমানে। কারো চোখে কি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইবুনাল্টা পড়ছে না? এখানেই তো নিজামীদের সবচেয়ে ভয়াবহ দৃশ্যমান অপরাধগুলির যদ্দুর-সম্ভব আসল বিচার হবে, এখানেই তো বালখিল্য-হঠকারী প্রতিহিংসার (আসলে রসিকতা!) বদলে নৈতিকতা ও মানবতার অমোঘ শক্তি ও যুক্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার কথা, এবং সেই সূত্রে ঐ দানবিক রক্তপিপাসু আইডিওলজির জনমনে নৈতিক পরাজয়ের সূচনা হওয়ার কথা। যে বহু-প্রতীক্ষিত, সর্বজনদৃশ্যমান ও প্রকাশ্য নৈতিক-পরাজয়ের মাধ্যমে আশা করা যায়, শুধু তাদের বাস্তব দৈহিক শাস্তিই নয় বরং জনচেতনা থেকে তাদের ধর্ম-ব্যবসায়ভিত্তিক অশুভ রাহুগ্রাস সরতে শুরু করবে, ড্রাকুলার রক্তবীজগুলির মতাদর্শিকভাবে অঙ্কুরিত হওয়া কঠিন হয়ে উঠবে। এর থেকে বড় পাওনা আর কি হতে পারে এদেশের সব শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের জন্য ?

আর এসব ফেলে কিনা এমন একটা মশকরা-মার্কা অভিযোগ আনা হলো, যার মনে হয় তেমন কোন শাস্তিও নেই, গুরুত্বও নেই, নৈতিক মুল্যও নেই (বরং নৈতিকভাবে জামাতি আদর্শকেই উলটো শক্তিশালী ও যথার্থ প্রতিপন্ন করে), যা সম্ভবত প্রমান করাও সম্ভব নয় এতই অস্পষ্ট ও সাবজেকক্টিভ , এবং সর্বোপরি নিজামীদের আসল অপরাধ ও বিচারের পথে অনর্থক বাধা, লক্ষ্যচ্যুতি, গুরত্ব-লঘুকরন ও ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে।

আমি কি বরং উলটো এই সন্দেহ প্রকাশ করলে খুব অন্যায় হবে যে, যারা এই ধর্ম-বেনিয়া-মার্কা ধর্মীয়-অনুভুতিতে-সুড়সুড়ি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ফালতু একটা অভিযোগের পক্ষে নাচানাচি করছেন, তারা আসলে মূল যুদ্ধাপরাধের বিচার- প্রক্রিয়াটাকেই স্যাবোটাজ করতে চাচ্ছেন ?

মকসুদ নন, আসলে হয়তো তারাই জামাতিদের রোপন করা আপাত-জামাতবিরোধী ট্রোজান-হর্স ? কি বলেন ? দেঁতো হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনার দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সরকার একটা অভিযোগ এনে এদের গ্রেপ্তার করেছে। আমার কাছে অভিযোগের কারণের চেয়ে গ্রেপ্তারের ঘটনা মূখ্য। সাথে এদের শাস্তি। স্বাধীনতা অর্জনের এত বছর পরে এদেরকে শাস্তি দেয়ার একটা ব্যবস্থা সরকারের চিন্তাভাবনায় আছে- এটাও অনেক। কারণ কিছুদিন আগে এই যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানো হয়েছিল বিএনপি সরকারের আমলে।

আপনার সব কথার সার কথা হচ্ছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইবুনাল দিয়ে এদের বিচার করা, আপাত প্রতিহিংসার রাজনীতি বাদ দেয়া। প্রাথমিকভাবে এদের ধরার জন্য তড়িঘড়ি করে একটা ইস্যুতে হাজতে ঢোকানো হয়। সেখানে কিছু ভুল থাকতে পারে। কিন্তু আপাত ভুলকে ইস্যু বানিয়ে প্রকারান্তরে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে সমর্থন করে যাওয়ার মকসুদীয় প্রণোদনা ভালো ঠেকে না।

যেকোন একটা ঘটনার দূরদর্শী প্রভাব কী হবে বুদ্ধিজীবীরা সেটার নির্দেশনা দিবেন। সৈয়দ মকসুদ সেই কাজ করছেন না, সেটা তার বক্তব্য পড়লেই বোঝা যায়।

ট্রোজান-হর্সরা বেশিক্ষণ লেজ ঢাকতে পারেন না। কাজেই ডর কম। দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

নতুন সুখবরটা নিশ্চয়ই জানেন ? গত ২ তারিখে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইবুনাল নিজামীদের আটকাদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং জামিন না-মঞ্জুর হয়েছে ? এদের বিরুদ্ধে সব যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলিও ট্রাইবুনালে স্থানান্তরিত হচ্ছে।

মূল গ্রেপ্তারটাও, মূল ইস্যুতেই, এই ট্রাইবুনালের অধীনেই হতে পারতো -- মাত্রই কয়েকটা দিনের ব্যবধান ! ওই 'তড়িঘড়ির' কোন প্রয়োজন ছিল না আসলে।

যাই হোক, প্রায় সুদীর্ঘ চল্লিশ পরে হলেও ড্রাকুলাদের যে আদালতে অন্ততঃ হাজির করা গেছে -- এটাও অনেক কিছূ। তবে আমাদের কি কোন 'জোনাথন হারকার' আছে? প্রসিকিউশন টীমের চেহারা দেখলে হতাশ হয়ে পড়তে হয়। যেখানে দেশের সেরা আইনজীবীদের থাকা উচিত ছিল - সম্ভব হলে আন্তর্জাতিক মানের, সেখানে এরা কারা ?! ড্রাকুলারা কিন্তু টাকার মায়া করবে না, তারা দুনিয়া ঘেটে তাদের সাধ্যানুযায়ী সেরা এবং সম্ভবত আন্তর্জাতিক মানের আইনজীবীই নিয়ে আসবে। তখন কি হবে ? এই ট্রাইবুনাল আর তার প্রসিকিউশন টীম নিয়ে যত নাটক হয়ে গেছে ইতিমধ্যে, তাতে করে মাঝেমধ্যে সন্দেহ হয় কেউ কি ভিতর থেকে কলকাঠি নাড়ছে যাতে এটা শুরু থেকেই দুর্বল থাকে এবং শেষমেশ সবকিছু লেজেগোবরে করে ফেলে ? জানেনতো, কিছু কিছু বাংলাদেশি ট্রোজান হর্স আছে যাদের লেজ চেনা গেলেও কিছু করা যায় না।

তবু, সাময়িকভাবে হলেও, কি যে আনন্দ -- উদ্ধত দানবগুলার অধোবদন বন্দীদশা দেখে !!

মনে আছে আশির দশকের কোন এক সময় চট্টগ্রামের একটা স্কুলে পড়তাম। আমাদের স্কুল বিল্ডিংয়ের একটা দুরবর্তী বিচ্ছিন্ন রুম সবসময়ে তালাবদ্ধ থাকতো -- ছাত্রদের মধ্যে গুজব প্রচলিত ছিল যে রাতের বেলা ঐ ঘর থেকে ভুতুড়ে ধুপধাপ শব্দ, নারীকন্ঠের কান্না ইত্যাদি শোনা যায়। ভয়ে কেউ এর কাছে ঘেষত না, পাশ কাটিয়ে যেতে হলে দোয়া পড়তে পড়তে দৌড় দিয়ে পার হয়ে যেত। একবার কোন খালি ক্লাশঘর না পেয়ে আমাদের মানবিক বিভাগের ৪/৫ জন ছাত্রের জন্য কর্তৃপক্ষ ঐ ঘরটা খুলে দিতে বাধ্য হয়। তখন আবিষ্কার করি ঘরটার সারা দেয়াল জুড়ে প্রায় ছাদ পর্যন্ত খয়েরি ছোপ ছোপ দাগ। পুরনো কিছু কর্মচারীকে প্রশ্ন করে জানতে পারলাম - ঐ দাগ পুরনো রক্তের। ঐ ঘর স্বাধীনতার পরে (তখনো পর্যন্ত) আর চুনকাম করা হয়নি ইচ্ছে করেই। দাগগুলি বোধহয় সংরক্ষন করে রাখা হয়েছিল। ৭১ এ পাকিস্তানি আর্মি এই স্কুলে ঘাটি গেঁড়েছিল। তারা আর তাদের সহযোগীরা আশপাশ থেকে বাঙালি তরুণীদের ধরে এনে ধর্ষন ও হত্যা করে এই ঘরে স্তুপ করে রেখে দিয়েছিল। স্বাধীনতার পরে পালিয়ে যাওয়া বাঙালি কর্মচারিরা ফিরে এসে এই ঘরে অজস্র ধর্ষিত, রক্তাক্ত, বিকৃত, নগ্ন নারীদেহ স্তুপীকৃত অবস্থায় আবিস্কার করে। এদের আনেককেই আবার গোপনাঙ্গ দিয়ে বেয়নেট প্রবিষ্ট করে হত্যা করা হয়েছিল। মোট কয়টা দেহ সেখানে পাওয়া গিয়েছিল সেসময় আর আমার জিজ্ঞেস করা হয়নি, তবে ঐ দাগ যেহেতু প্রায় ছাদের কাছাকাছি পৌঁছেছিল - সেহেতু সেটা অনুমান করা যেতেই পারে।

এই বিবরন শোনার পর, আর ঐ রক্তের দাগ দেখার পর, ঐ বয়সে বহুদিন রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারিনি। এখনো মনে পড়ে। ঐ দাগ, ঐ কান্না - দেয়াল থেকে মুছে গেলেও, আমাদের বিবেক থেকে মুছে যায়নি। যতদিন এই পৈশাচিকতার যথার্থ বিচার না হবে - ততদিন ঐ রক্ত আর কান্না নানা চেহারা ধরে আমাদের তাড়া করে বেড়াবেই। ততদিন বাংলাদেশ একটা অভিশপ্ত দেশ হয়েই পড়ে থাকবে। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

আমি ধর্মে বা কোন সংস্কার/কুসংস্কারে আদপেই বিশ্বাস করি না। কিন্তু এই ব্যাপারটায় কেন জানি ঠিক পুরোপুরি বস্তুবাদি হতে পারি না। সত্যি তো, এসব মনে করে বা রেখে কি হবে - ভুলে গেলেই বা কি হবে? এই কঠিন দুনিয়ায় এইসব ছেঁদো সেন্টিমেন্টালিজমের জায়গা কোথায় ? দেশের শনৈ শনৈ উন্নতি চল্লিশ বছর আগে মরা কিছু ভুতের সাধ্য কি রুখে ?! তাছাড়া, রক্তের দাগ পানিতেই দিব্যি ধুয়ে যায়, কান্নার শব্দ অট্টহাসিতে। নো প্রোবলেমো।

তবে হ্যাঁ, পাকিস্তানের দিকের তাকালে প্রোবলেমোটা কোথায় বোঝা যায়। টালিবান প্রসঙ্গটা যদি বাদই দেন, অন্ততঃ ঐ মসজিদের (মন্দির বোধহয় আর তেমন বাকি নেই ওখানে?) ভেতর উপাসনারত ৫০-৮০-১০০-১৫০ নির্দোষ মানুষ যখন কিছুদিন পরপরই ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে দেয়ালে ছাদে ছিটকে পড়ে, আমাদের দেশে যখন তাদের হত্যাকারিদের দোসররাও একই পরিকল্পনা করে, তখন বোঝা যায় রক্তের দাগ সত্যি সত্যি পানিতে বা কান্নার শব্দ অট্টহাসিতে ধোয় না। অন্যায়ভাবে ক্ষরিত রক্তের বোধহয় একটা অন্যরকম প্রতিশোধ আছে।
বাংলাদেশ ওই প্রতিশোধের এক ভয়ঙ্কর রূপ দেখার অপেক্ষায় আছে।

এইজন্যই বলছিলাম, ঐ জায়গায় যেতে না হলে - ওই রক্ত আর কান্নার অভিশাপ ও দুঃস্বপ্ন থেকে, বাস্তব ও প্রতীকি উভয় অর্থেই মুক্তি পেতে হলে - আমাদের এখনই সবরকম 'মশকরা' বাদ দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সেজন্যে 'ওস্তাদের' মার চাই, তার বালখিল্য শিষ্যদের ঠাট্টা-ইয়ার্কি-ছেলেখেলা চাই না। 'ওস্তাদের মার' - যাতে এক মারেই অনেক কাজ হয়। সে জন্যে যদি একটু দেরি হয়ই, তা-ও সই। আর 'ওস্তাদের মার' না দেয়া পর্যন্ত রাতও (দুঃস্বপ্নের) তো শেষ হবে না, জানেন না প্রবাদে কি আছে ?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আসলে এত আইন-কানুনের প্যাচে না গিয়া সোজা ক্রসফায়ারে দিলেই হয়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সেটা করলেই ভালো।

--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মনমাঝি,

আমি চট্টগ্রামের লোক। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ক্লাস সিক্সে পড়তাম। আশির দশকেই। আপনি?

ছফাগিরিতে আপনার সুদীর্ঘ দুটি মন্তব্যের উত্তর এখনো দেই নি। ভেবেছি ছফাগিরির পরের কিস্তিতে আপনার করা প্রশ্নগুলোর মোকাবেলা করা যায় কীনা দেখি।

আর আপনি আপনার রাষ্ট্রচিন্তা নিয়ে আলাদা পোস্ট করতে পারেন। হাসি

-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

ক্যান্ট পাবলিক, শুভাশীষ। লোকালয় থেকে দূরে -- ত্রিগিরিসঙ্গমে। চেনেন আশা করি ? স্মৃতিপটে, নস্টালজিয়ায়, আমার খুব প্রিয় জায়গা।

আর হ্যাঁ, স্যরি ! চোখ টিপি
আমার 'মন্তব্য'গুলি বোধহয় একটু রেওয়াজ-বিরুদ্ধ হয়ে গেছে। মূল প্রবন্ধের (তাও আবার পুরোটা নয়) ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে মূল লেখা থেকেও বড় একটা লেখা ফেঁদে বসা মোটেই শোভন নয়, দস্তুরও নয়। অনেকটা বারো হাত কাঁকুড়ের তের হাত বিচির মতো (?)। তাও একবার নয়, বারবার। আপনাকে বিব্রত বা বিরক্ত করে থাকলে সত্যি দুঃখিত! দেঁতো হাসি

না, আমার তেমন কোন "রাষ্ট্রচিন্তা" নেই। অত বিরাট বিরাট 'চিন্তা' রাখার মতো জায়গা আমার মাথায় নেইও। এরজন্যে মকসুদ-নজরুল-মাজহার ইত্যাদিরাই তো বেশ আছেন। আমার শুধু ৫২-র ভাষা আন্দোলন সংক্রান্ত অতি সামান্য পারিবারিক ইতিহাস থাকার কারনে ভাষা, ধর্ম, এথনিসিটি আর এগুলোর সাথে জাতীয় পরিচয়নির্মান-প্রক্রিয়ার সম্পর্ক নিয়ে খানিকটা ব্যক্তিগত আবেগ, উৎসাহ আর কৌতুহল রয়ে গেছে। এই যা। ঐজন্যেই, বিশেষ করে ছফাগিরির ১১শ কিস্তিতে মন্তব্য করতে গিয়ে অতকিছু বলে ফেলেছি। আশা করি আমার বাক্যবাগীশতাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে নেবেন। বাক্যবাগীশতার বদভ্যাস ছাড়া সত্যি কঠিন -- এই পোস্টটাও দুই লাইনে শেষ করবো ভেবেছিলাম.... কিন্তু কি যে হলো.... দেঁতো হাসি

সত্যান্বেষী এর ছবি

সৈয়দ আবুল মকসুদ সম্পর্কে ব্লগার হিমু ভাইয়ের ১৮ নম্বর কমেনট করা সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণটা জটিল হয়েছে এক সময় পত্রিকার কলামাগুলি খুতিয়ে খুঁতিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়তাম কিন্তু নেট বাংলা ব্লগ কালচারের সাথে পরিচিত হওয়ার পড়ে এই সব পেশাদার কলমবাজদের লেখা আর ভালো লাগে না নেট এর যুগে এই সব বুড়ো ট্যাঁনা পেঁচানি গোষ্ঠীর কথায় কান দেওয়ার দরকার নেই।

নাসির উদ্দীন এর ছবি

এই ধর্মীয় অনুভূতির জন্য তসলিমা নাসরীনকে দেশছাড়া হতে হয়, হুমায়ুন আজাদের বই নিষিদ্ধ হয়ে থাকে, মকবুল ফিদা হুসেনকে কাতারে যেতে হয়। এতদিন পর নিজামী এন্ড হারামী গংদের কিনা গ্রেফতার করতে হয় সেই ধর্মীয় অনুভূতির আঘাত হানার অভিযোগে! আম্বা লীগের প্রতি আমার কোন পিরিত কাজ করে না। অন্য দলের নাম তো মুখে আনি না। এর জন্য কলেজে থাকতে আমার বিম্পি ও আম্বা লীগ করা বন্ধুরা সুবিধাবাদী বলে ডাকতো! যাই হোক আম্বালীগ এবার বিচার আসলেই করবে কিনা এ সন্দেহ মনে তো কমবেশি ছিলই তার সাথে এইরকম একটা ফালতু ইস্যু নিয়ে ওদের গ্রেফতার করায় সেই সন্দেহটা তখন আরো বেড়ে গিয়েছিল। ওতে কি ওদের একটাও ...ও ছেঁড়া যাবে? এছাড়া ইউটিউব, ইস্নিপ, ফেসবুক, আমার দেশ বন্ধ করায় বিরক্তিতো চরমে ছিলই।
ওই তিনজন কে গ্রেফতারের পর আমার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম এইরকম --

"ধর্ম রক্ষার নামে বিভৎস লালা ঝরা জিভ বের করে, ধারালো দাঁত আর নখ নিয়ে আমাদের লক্ষ লক্ষ ঘরণী কন্যা আর মায়ের শরীর খুবলে খুবলে খেলেও ধর্মীয় অনুভূতিতে কোন আঘাত আসে নাই। কিন্তু একটু হিসেব না করে মুহাম্মদের নাম মুখে আনলেই ধর্মের অনুভূতি আঘাতে আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। অনেকের ভালো লাগলেও নিজামী এন্ড হারামী গংদের গ্রেফতারের কারণটা আমার ভালো লাগে নাই। আমার কাছে বিষয়টা পুরানো ফাইজলামি ছাড়া আর কিছু না। ধর্মীয় অনুভূতির খ্যাতা পুড়ি।"

তখন আমার কয়েক বন্ধুর কথা ছিল আরে গ্রেফতার তো হয়েছে। এটাই বিরাট ব্যাপার। গ্রেফতারের কারণ দেখে ওই পুলক আমার জেগে উঠতে পারে নি। তাই বলেছিলাম

"নিজামীকে গ্রেফতার করাটা আমার কাছে একই সাথে ফাইজলামি ও হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার গ্রেফতারের কারণটা জানার পর। কারণ আমি এই ফেসবুকেই বিভিন্ন সময় ধর্ম নিয়ে যে ধরণের মন্তব্য বা মতামত রাখি তাতে ব্লাসফেমির দায়ে আমাকেও গ্রেফতার করাটা সরকারের জন্য ফরজ হয়ে যায়। একটা সেকুলার দৃষ্টিভঙ্গীর ধ্বজ্জাধারী রাজনৈতিক দলই যখন এইধরণের তালেবানি কর্মকান্ড পালন করে (তা সে যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, ফেসবুক ইউটিউবের কথা ভুলে গেলে চলবে না ) তখন ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতেও আমার ভয় হয়। এরপরে বিএনপির মত ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এলে তখন কি হবে? যেটুকু চক্ষুলজ্জা ছিল সেটাও তো আর থাকল না"

মকসুদ সাহেবের সাথে মিলে যায় আর কি। এখন লেখাটা পড়ে তো মহাচিন্তায় পড়ে গেলাম আমাকেও জামায়াতী বলে ডাক শুনতে হবে কিনা এই নিয়ে...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনি যেটা করছেন সেটা কান্সপিরাসি থিয়োরি।

যুদ্ধাপরাধীদের জেলে সান্ধানো হয়েছে- কারণ যেটাই হোক। পরে আরো নানা মামলা তাদের বিরুদ্ধে হচ্ছে। জনতা খুশী হয়েছে। লাফাচ্ছে। লাফাক। এতে ভয়ের কিছু নাই। কারণ এটা প্রাথমিক অর্জন।


বিচার না করে এদের ক্রসফায়ারে দিলে সবচে ভালো। জাতির দুশমনদের আবার বিচার কী।

এদের ফাঁসিতে, গুলিতে বা যেকোনো উপায়ে মারা হলে পাব্লিক আরো খুশি হবে। আরো লাফাবে। আপনি তখন ফেসবুকে কী লিখবেন?

আর সরকার যদি এটা না করে, তাহলে ব্লগ সরকারের সব কয়টা ... ছিঁড়বে। সেদিকে কোনো সন্দেহ নাই।

----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

নাসির উদ্দীন এর ছবি

@শুভাশীষ দাশ,

বিচার না করে এদের ক্রসফায়ারে দিলে সবচে ভালো। জাতির দুশমনদের আবার বিচার কী।

আমিও খুশি হতাম। কিন্তু সেক্ষেত্রে মরে যেয়ে ওরা বেঁচে যাবে। বেঁচে যাবে ওদের রেখে যাওয়া ধ্যান ধারণা (পড়বেন জীবাণু)।
সেই সময় পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা বা পাকিস্তান ভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তাদের জাতির শত্রু বললে ওদের সাথে কিছু বাম দলসহ অনেকেই পড়বে। আসলে একটা দেশ ভাগ হওয়ার সময় নানান আদর্শগত দিক থেকে এর পক্ষ বিপক্ষ মত তৈরী হওয়াটা স্বাভাবিক। শুধু সেটার জন্য কাউকে জাতির দুশমন ভাবতে আমার আপত্তি আছে। তখনো তো জাতি নিয়েই টানাটানি। কিন্তু কথা হল যে আদর্শই থাকুক না কেন পঁচিশে মার্চের পরও যে মানু্ষ পাক হানাদারদের পক্ষে একটি শব্দও উচ্চারন করে তাকে আমি কোন সমগ্র মানবজাতির চরমতম দুশমন বলে মনে করি। আর সেখানে তো ওরা ...।
তাই ওদের বিচারের প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন আছে চুড়ান্তভাবে সমগ্র বিশ্বের কাছে, ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে ও ইতিহাসের পাতায় ওদের পাশবিক কর্মকান্ড, সত্যিকার কুৎসিত চেহারা ও ধ্যান ধারণার অভিযোগগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করার।

আর আমার পূর্বের মন্তব্যে কন্সপিরেসির গন্ধ আপনি পাইতে পারেন। সে আশংকাই আমি শেষ লাইনে ব্যক্ত করেছিলাম। আশংকাই সত্যি হল।

শুনুন অত থিয়োরি টিয়োরি আমি বুঝি না। আমার কথা পরিস্কার। লক্ষ লক্ষ মা বোনের সাথে ওরা যা করেছে সেই দুঃস্বপ্ন ব্যক্ত করার মত কোন শব্দ কি কোন ভাষায় আছে? লক্ষ লক্ষ নিরীহ নিরপরাধ মানুষ হত্যাযজ্ঞের পরও; হাজার হাজার গ্রাম পুড়িয়ে ছারখার করার পরও যাদের জেলে সান্ধানোর জন্য মুসলমানদের ধর্মানুভূতি নামক আর এক বিষফোঁড়ার আশ্রয় নিতে হয় তখন আমার ভাল লাগে না। কষ্ট হয় ত্রিশ লক্ষ মানুষের দেয়া চরম মূল্যও যথেষ্ট হয় না দেখে।
সেই কারণে মূল লেখা প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মনমাঝি-র করা ওই মন্তব্যটির সাথে আমি একমত।

"এই প্যারা পড়লে বোঝা যায় মকসুদ সাহেবের কোথায় লেগেছে।"

স্যরি। একদম একমত হতে পারলাম না !! অন্ততঃ এইটুকুতে কিচ্ছু বুঝা যায় না। যদি কিছু যায়, তাহলে আমি বলবো তার প্রজ্ঞাই বুঝা যায়। বুঝা যায়, নৈতিক দৃঢ়তা আর বালখিল্য হঠকারিতার মধ্যে পার্থক্যটুকু তিনি চেনেন। তা আপনি যতই ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ঠেস মারুন না কেন।
আবুল মকসুদের আসল রঙ বা মুখ কোনটি সেটা আমি অতো নিশ্চিত ভাবে জানিন না। সামগ্রিক বিচারে হয়তো তার গোপন কোন চেহারা থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু এই ইস্যুতে সেটা মোটেই প্রকাশ পায় না। তবে এসব নেহাৎই অপ্রাসঙ্গিক।

আর একট কথা, হয়ত আমাদের প্রতিক্রিয়া বা মত ভিন্ন হতে পারে। তবে আমরা একই পথের যাত্রী। যুদ্ধাপরাধীর বিচার আর আওয়ামী লীগ এক নয়। তাদের কর্ম পদ্ধতি পছন্দ না হলে আমি সরকারের সমালোচনা করব একশোবার। এর সাথে কন্সপিরেসি থিয়োরি চর্চার সম্পর্ক দেখবেন না দয়া করে।
স্পেশালি জামায়াতে ইসলামী ও যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে কারও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মন্তব্য করার আগে আমরা যেন যত্নবান হই। ডাইরেক্ট মাথায় কারেন্ট শক দিল কিনা! হাসি

সাদাচোখ [অতিথি] এর ছবি

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য এই জানোয়ারগুলোকে ধরার প্রক্রিয়াকে আমার চরম হাস্যকর মনে হয়েছে। যেই ধর্মের যত্রতত্র ব্যবহার রোধ করার জন্য সারাদেশের মানুষ মুখিয়ে আছে, সেই ধর্মকেই ব্যবহার করে তাদের ধরতে হল?

এটা যদি দ্বিধা হীন চিত্তে মেনে নেওয়া হয়, তাহলে আমরা সামনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কারনে কোন কার্টুনিষ্টের জেল জরিমানা, ভিন্ন মতের কোন লেখকের দেশ ছাড়া হওয়া, জাহানারা ইমামের মত কারও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার মুখোমুখি হওয়া দেখতে হবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর আওয়ামিলীগ কে একসাথে মিলিয়ে ফেলার কোন অবকাশ নেই। সাধরন জনগন বাধ্য করেছে দেখেই আর আওয়ামিলীগ এই বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের ঠিকমত চাপ না দিলে এইকাজ তারা শেষ করবে না।

==============
সাদাচোখ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য এই জানোয়ারগুলোকে ধরার প্রক্রিয়াকে আমার চরম হাস্যকর মনে হয়েছে। যেই ধর্মের যত্রতত্র ব্যবহার রোধ করার জন্য সারাদেশের মানুষ মুখিয়ে আছে, সেই ধর্মকেই ব্যবহার করে তাদের ধরতে হল?

সহমত। এটি কোন উৎকৃষ্ট উদাহরন হয়নি। কিন্তু এখন তো মামলা চলে গেছে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে যেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পিছলা মাছ ধরার জন্য যে ছাই লাগে- আওয়ামী লীগ এদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগকে ঐ ছাই হিসেবে ব্যবহার করেছে। এটা মোটা দাগের রাজনীতি। আমার নিজেরও পছন্দ হয়নি।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর আওয়ামিলীগ কে একসাথে মিলিয়ে ফেলার কোন অবকাশ নেই। সাধরন জনগন বাধ্য করেছে দেখেই আর আওয়ামিলীগ এই বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে।

সাধারন জনগনের বাধ্য করাটাকে যে আওয়ামী লীগ আমলে নিয়েছে এবং বিচারের বিষয়টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে এখন পর্যন্ত এগিয়ে চলছে- আমি এটাকে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবেই দেখছি।
সাধারন মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে কোনদিনই মাঠ ছাড়েনি। '৯১-'৯৪ সময়ে এই দাবী সাংগঠনিকভাবে আরো প্রবল ছিলো। আওয়ামী লীগের সমান শক্তি এবং জনসমর্থন নিয়েও বিএনপি কিন্তু জনগনের এই বাধ্য করাকে পাত্তা দেয়নি( এখনো দিচ্ছেনা)।

তাদের ঠিকমত চাপ না দিলে এইকাজ তারা শেষ করবে না।

চাপ অব্যাহত থাকুক। কাজ শেষ হোক।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সাদাচোখ [অতিথি] এর ছবি

হাসান মোর্শেদ,

জ্বী, সাধারন জনগন হিসেবে যে বিষয়টি আমার কাছে দূর্বোধ্য, সেটা হয়তো রাজনীতিবীদদের কোন চাল। কিন্তু কথা হল বিএনপি-জামাত জোট পরে এসে যে এই পদ্ধতিকে নিজেদের কাজে লাগাবে না, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সেজন্য এমন খটকা লাগা বিষয়গুলোর প্রতিবাদ করতেই হবে।

শুভাশীষ দা আবুল মকসুদের এই বিষয় কোট করে তার দোষ ধরেছেন, তাই সে বিষয়ে আমার মতামত জানালাম।

ব্রেন ওয়াশড জাশির এই জানোয়ারগুলোকে সু চি, নেলসন ম্যান্ডেলা, এমনকি নবীর সাথে তুলনা করে মনে রাখবে। তাতে দেশবাসীর খুব বেশি কিছু যাবে আসবে না। মকসুদের ঐ যুক্তি সে জন্য আমার পছন্দ হয়নি।

আপনাকে ধন্যবাদ।

আদনান [অতিথি] এর ছবি

শুভাশীষ দাশ
দঃখিত। আপনার সাথে কোনোভাবেই একমত হতে পারলাম না আমি। সৈয়দ আব্দুল মকসুদ এর লেখা আমার কাছে খুবই ভাল লাগে। অনাকেই কখনই জামাতী ধাচের মনে হয় নি আমার, বরং অনেক দেশপ্রেমিক মানুশ বলে মনে হয় আমার। এই লেখাটি ছাড়া আপনার অন্যান্য বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে লেখাগুলো আমার পছন্দ হয়েছে। এমন লেখা আর লিখবেন আশা করি। ধন্যবাদ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জনাব আদনান, একটু কষ্ট করে অধমের এই পোস্টটা যদি একবার পড়তেন। শুভাশীষ দাশের সাথে সকল বিষয়ে আপনার একমত হবার দরকার নেই। শুধু মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে বাংলাদেশের পক্ষে থাকুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

অবশেষে কলামিষ্টোশ্রেষ্ঠ আবুল মকসুদ ধরা খেলেন।

মহাস্থানগড় বিষয়ে স্বেচ্ছায় বক্তব্য দিতে গিয়ে আদালতের তীব্র তিরস্কারের সম্মুখীন হয়েছেন বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।মহাস্থানগড়ের মাজারসংলগ্ন মসজিদ রক্ষার জন্য অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য দেওয়ায় সৈয়দ আবুল মকসুদকে তিরস্কার করেন আদালত। সৈয়দ আবুল মকসুদ নিজের লেখার ভুল স্বীকার করে আদালতের কাছে ক্ষমা চান। আদালত আজ বৃহস্পতিবার হলফনামা আকারে তাঁকে ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাইতে বলেছেন।
আদালত সৈয়দ আবুল মকসুদকে বলেন, 'লেখার আগে আপনার উচিত ছিল আদালতের আদেশ পর্যালোচনা করা। আপনি যা লিখেছেন তা আদালত অবমাননার সামিল। আপনি এ ধরনের লেখা লিখে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন। সমাজের অনেক ক্ষতি করেছেন। আমরা মসজিদ রক্ষার কথা বলেছি। আর আপনি লিখলেন মসজিদ ভাঙার কথা। আপনি কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এটা করেছেন। লোকে বলল, চিল কান নিয়ে গেছে, আর চিলের পিছে ছুটলেন। এমনই করেছেন আপনি।' আদালত আরো বলেন, 'আপনারা সাংবাদিক। টক শোতে বড় বড় কথা বলেন। দেশ-জাতিকে জ্ঞান দেন। অথচ আদালত সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। টক শোতে বসে টিআইবিকে সমর্থন করেন। টাউট, বাটপার, দালালরা ঘুষ নিয়েছে, অথচ তাদের বিচার বিভাগের অংশ হিসেবে ধরে নিয়ে টিআইবি বিচার বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলল। আর আপনারা তা সমর্থন করছেন।'

আদালত একপর্যায়ে বলেন, একজন নিজেকে বুদ্ধিজীবী মনে করেন, এটা একটা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য। এ সময় একজন আইনজীবী বলেন, তিনি (সৈয়দ আবুল মকসুদ) একজন বুদ্ধিজীবী। তখন আদালত বলেন, কিসের বুদ্ধিজীবী, তিনি একজন নির্বোধ। অপর এক আইনজীবী বলেন, তিনি জ্ঞানপাপী। তখন আদালত বলেন, কিসের জ্ঞানপাপী, তিনি নির্বোধ।

সূত্রঃ কালেরকন্ঠ

রব

একজন পাঠক এর ছবি

লোকটা বড়সড় গ্যাড়াকলেই পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।আপডেট তো আরো ভয়াবহ।

হাইকোর্টে অপ্রাসঙ্গিক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয় কি না তা খতিয়ে দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।(কালু)

ছবি না দেখে দ্দীণূর মুভি রিভিউ এর পরে আমরা দেখলাম আদালতের আদেশ ভালোমতো না পড়ে মক্সুদীয় তাফালিংপ্রসূত মফিজকট।কালে কালে আরো কত কী যে দেখবো!

রব

অতিথি লেখক এর ছবি

জব্বর খপর ! আদালত অত্যন্ত উচিৎ কথাই বলেছেন। আমি বরং বলবো, অনেক অল্পতেই ছেড়ে দিয়েছেন। ইরান টাইপের আদালত হলে চাবকে পাছার ছাল তুলে ফেলত। আমাদের উচিৎ হবে এর পর বলদটা কোন লাইভ ঠক শো-তে হাজির হলে বারবার ফোন করে আদালতের মন্তব্যগুলি অন-এয়ারে পুনরাবৃত্তি করে এব্যাপারে ওর মতামত জানতে চাওয়া। চোখ টিপি

মনমাঝি

সজল এর ছবি

ছয় দফাপন্থী আওয়ামী লীগ মনে করত, পাকিস্তান রাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সুতরাং পূর্ব পাকিস্তানে ভবিষ্যৎ তৈরি করতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারকে সব ব্যাপারে প্রবল বিরোধিতা করতে হবে। যত বিরোধিতা করবে, পূর্ব পাকিস্তানে তত জনপ্রিয়তাও বাড়বে। এবং বাঙালিদের উন্নতির জন্য দিতে হবে বড় বড় প্রতিশ্রুতি। সেই সব প্রতিশ্রুতিই স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লীগের জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়ায়।

রেফাঃ

যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য শোনা যায়নি। এই নীরবতা অর্থহীন নয়। অন্যদিকে আমাদের ৪০তম স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন আমেরিকার কংগ্রেস এক বিশেষ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। কংগ্রেসের বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ারম্যান জোসেফ ক্রাউলি প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। ৩৮০-৭ ভোটে তা পাস হয়। প্রস্তাবে ‘তিক্ততা ভুলে রাজনৈতিক নেতাদের একত্রে কাজ চালিয়ে যেতে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক গভীর করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’ এই প্রস্তাব আমাদের সরকারের জন্য একটি বার্তা।

রেফারেন্স

আবুল মকসুদের ফেসবুক পেজ
সোনার বাংলাদেশ ডট কমে আবুল মকসুদের আর্কাইভ

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।