আমাদের পাড়ায় ঢুকতে গেলেই প্রথমে আক্কাসদের গ্যারেজ। লক্কর-ঝক্কর মার্কা হরেক গাড়ির পার্টসের মধ্যে কখনো সখনো এক দুইটা নতুন গাড়ি সারানোর কাজে আসে-টুকটাক সারিয়ে ভৌ দৌড় দিলে সেখানে আবার রাজত্ব করে আক্কাসের চাচার ভক্সওয়াগন গাড়ি আর পুরানো গাদা গাদা পার্টস। তারপরে অসীমের বাবার সোনার দোকান। টানা একটা টুল। মেঝেতে নীল কার্পেট বিছানো। সামনে রাখা কাচের জারে সোনা মাপার নিক্তি বেশিরভাগ সময় শূন্যতা মাপে। তারপরে মহীনবাবুর ছাপাখানা। মহীনের ঘোড়াগুলির মতো এই ছাপাখানা থেকে হ্রেষাধ্বনি বেরোয় কদাচিৎ। ছাপাখানার পাশ দিয়ে পাড়ার নালা। তার একটু পরে দা এভরিথিং গ্রোসারি। এই দোকানের মালিক পাড়ায় তিনটে বাড়ি করে ফেলেছেন। ব্যবসায় ভালো পসার। কালোবাজারি করে বলে পাড়ার লোকেরা কিছুটা ক্ষেপে থাকলেও দা এভরিথিং গ্রোসারি থেকেই বাজার সওদা করে। এই দোকানের মালিক হিমাংশু হাওলাদার। তারপরে আখন্দের মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। আখন্দ এর মধ্যেই পাড়ায় একটা বাড়ির মালিক। আর শোভার বাবার কাছ থেকে চারতলা বাড়ি কেনার জন্য দেন দরবার করে যাচ্ছে সমানে। রমজান মাসে আখন্দ দিনের বেলা দোকানের সামনে পর্দা টাঙ্গিয়ে দোকান চালায়। ইফতারির ঘন্টাখানেক আগে পর্দা সরে যায়। মাথায় টুপি দিয়ে তখন দোকানের কর্মচারি মুরাদ খালেদরা পিঁয়াজু পুরি ভাজা শুরু করে। তারপরে শোভাদের বাড়ি। তারপর আমিনদের। এরপরে আমাদের। আমরা ভাড়া থাকি। তারপর আরো কয়েকটা বাড়ি সারিবদ্ধ হয়ে পাড়ার আকার বাড়ায়। বাড়িগুলো শেষ হলে অন্যপাশে কালিবাড়ি। জাগ্রত কালির সুদিনের ভাটা পড়াতে এখন সেখানে পশুবলি কম হয়। তবে টুংটাং আওয়াজ হয় সন্ধ্যেবেলায়। কাঁসা-ঘন্টা। কখনোবা শঙ্খের আওয়াজ। কালিপুজোয় মন্দিরের আঙিনায় ছোট্ট মেলা বসে। একানব্বইয়ে কালিবাড়িতে ভাঙচুর হয়েছিল। তখন কালিমূর্তির একটা হাত ভেঙ্গে ফেলা হয়। আর লম্বা জিভ। তারপরে অনিদের হোসিয়ারি দোকান। সেখানে কস্মিনকালে কেউ বেচাকেনা কিছু হতে দেখেনি। কেবল পাড়ার বুড়ো আধ-বুড়ো লোকেরা বিকালে আড্ডা মারতে আসে। আরো একটু পরে কলতলা। পাড়ার প্রায় শেষদিকে গড়ে ওঠা বস্তির মেয়েরা সেটা দখল করে রাখে সকালবিকাল। তারপরে ...
টু কাট আ লং স্টোরি শোট্, তারপরে আরো কিছু কিছু বাড়ি দোকানের পরে অসীমা মাসির ঘর। পাড়ার মেসো কাকা চাচা খালুরা সময়সুযোগ মতো সেখানে মাসিকে আদর করতে যায়।
সাম্প্রতিক পাঠ : নাইপলের ‘গারিলাজ’। সাথে বাসেভিস সিঙ্গারের ‘আ ফ্রেন্ড অব কাফকা’ পুনরায় পাঠ।
মন্তব্য
ও
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
বোঝো!
ইন্টারেস্টিং স্ট্রাকচার।
কিন্তু, মধ্যে কাটছেন ভালো ... শেষেও কাটলেন ক্যান?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অনিন্দ্য ভাই,
শেষে না কাটলে আমাদেরও পাড়ার মেসো কাকা চাচা খালুদের দলে কল্পনায় নাম লেখানোর সুযোগ থাকতো। না, শুভাশীষ দা, বড্ড কৃপণ আপনি!
রোমেল চৌধুরী
বাহ মাসি-
আমি হাসি!
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
ধর্মগুলো বটগাছের মত। মিষ্টান্ন ভান্ডারের পর্দার ঘেরাটোপে আর অসীমা মাসীদের ঘরের অন্ধকারে এরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনা।
দারুণ লাগল লাইনটা, আর শেষ লাইনটা পাংখা লাগল। কাকা চাচা খালুদের পাশাপাশি আর কেউ যায় না , হাতে খড়ি দেবার একটা ব্যাপার আছে কিনা!
পাঁচ তারা, ছুডু লেখায় এরাম মজা পাই নাই অনেকদিন
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ভালু পাইলাম।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
ভালু পাইলাম!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আদর করতে যায়।
ভালো লাগলো বস।
:::::: :::::::: ::::::::::::::: ::::::::::::::: ::::::::: ::::::::: :::::: ::::::: ::::::::::::
অভিলাষী মন চন্দ্রে না-পাক জোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
শেষটা কি আদৌ দরকার ছিল?
এমনিই/ তো ভালো লাগছিল
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
শেষটা না হলে চিত্রটা সম্পূর্ণ হতো কি?
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
উদ্ধৃতি
সামনে রাখা কাচের জারে সোনা মাপার নিক্তি বেশিরভাগ সময় শূন্যতা মাপে।
কি চমত্কার দেখা গেল ।।
ভালৈসে।
ভালই তো আগাচ্ছিল, কিন্তু ঝপ করে ঝাঁপি বন্ধ করে দিলেন যে?
আমি গল্প খুঁজে পেলাম না শুভাশীষ তবে লেখায় আবার-ও বাহ। দারুন ভিশুয়াল ইমেজারি।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
একটা লং শর্ট দিয়াই পুরা শর্ট ফিল্ম দেখাইয়া দিলেন।
মন্তব্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
এই গল্পটার স্ট্রাকচারে সমস্যা আছে। ভাষায় ও।
শেষ প্যারাটায় মুখ্য।
ড্রাফট করার সময় অসীমা মাসির ব্যাপারটা আমি একটু ডিটেইলস্ লিখেছিলাম। মাসির স্বামী মানে মেসো এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা পড়েন। ছেলের লেখাপড়ার খরচ আর সংসার চালাতে লেখাপড়া কম জানা দেখতে সুন্দরী অসীমা মাসির পাড়ার লোলুপ পুরুষদের খপ্পরে নিজেকে ফেলা ছাড়া অন্য পথ পান না।
আপানোর আগে ভাবলাম- এতো বর্ণনা দিয়ে ব্যাখ্যা করার কী আছে। পাঠক হয়তো বুঝে নিবেন ব্যাপারটা। শরীর বেচে খাওয়ার ব্যাপারটা কখন আসে সেটা বোঝা খুব একটা মুশকিল না। ফলে কেটেছেটে সব কথা বাদ দিয়ে দিলাম।
আর গল্পের প্রথম প্যারার গঠন বিদ্যাধর সূর্যপ্রসাদ নাইপলের কাছ থেকে নেয়া।
---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
অন্য রকম হইছে বস। ভালু পাইলাম।
অনন্ত
নতুন মন্তব্য করুন