অন্যান্য বছরগুলোর সাথে বছরটার অনেক পার্থক্য আছে। বলা যায় বছরটা বেশ ঘটনাময়। বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু স্কাইস্ক্রেপার ‘ক্লিওপেট্রা ভবন’ এর উদ্বোধন হয় বছরের প্রথম দিনেই। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে কালো চশমা পরা হিড়িম্বার ছবি বিশ্বের প্রায় প্রতিটা পত্রিকায় ছাপা হয় পরদিন। বিল্ডিং-এর উচ্চতা প্রায় দেড় কিলোমিটার। এদিকে জানুয়ারি মাস শেষ না হতেই এক প্রবল ভূমিকম্পে বঙ্গোপসাগর থেকে এক মৎস্যকন্যা আছড়ে পড়ে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে। কিছু মুহূর্ত থেকে সেই মৎস্যকন্যা আবারো বঙ্গোপসাগরে ডুব দেয়। আজিজুল আর মিতা বাৎসরিক রুটিন সেক্স ট্যুরে এই ঘটনা চাক্ষুষ করে কাউকে বলতে না পেরে মন খারাপ করে। পরের বছরের অলিম্পিক বাংলাদেশে হবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা জানা যায় ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। একটি অলিম্পিক মন্ত্রণালয় তৈরি হয় অল্পসময়ের মধ্যে। আরো একটা শক্তিশালী ভূমিকম্প হয় মার্চের শুরুর দিকে। খুব একটা কিছু হয়না। এপ্রিলের শেষে বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি স্থানে তৈলকূপের সন্ধান পাওয়া যায়। বছরের অন্যান্য মাসগুলোতে আর বিশেষ কিছু ঘটে না। ক্লিওপেট্রা ভবন তৈরিতে হাত দেয় এই সরকার প্রথম মেয়াদে নির্বাচিত হবার পরপর। দ্বিতীয় মেয়াদের প্রায় শেষের দিকে উদ্বোধন করেন মাননীয়া। ভবন শুরুর সময়েই সরকার মিলিটারির অধীনে লাইসেন্সড টু কিল ব্যাটেলিয়ান বাহিনী তৈরি করে। ঢাকা শহরের জনবিস্ফোরণ দেখে উচ্চবিত্তেরা সরকারের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিল। মধ্যবিত্ত আর গরীবগুর্বোদের চাপে শহরে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ায় এদেরকে একটা ভবনের মধ্যে সাঁটিয়ে দেয়ার চিন্তাটা একটা মেগা প্রজেক্টে রূপ নেয়। এর পেছনে দেদার টাকা ঢালে এনআরবি আর শিল্পপতিরা। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক আইএমএফ ও সাহায্য করে। সরকার নানা হিসাব কষে একটা থ্রেশোলড্ বানায়। কোনো পরিবার বিশ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ অর্থ সম্পদ দেখাতে না পারলেই এই ভবনে পাঠানো হবে। তিনশ তলার এই বিল্ডিং-এর মধ্যে শখানেকের ওপরে ফ্যাক্টরি। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় অফিস আদালত বাসা বাড়ি থেকে শুরু করে যাবতীয় কিছু একই ছাদের তলায় আসায় এই ভবনের বাইরে যেতে হয় না বেশিরিভাগ লোকেরই। প্রায় আশিটা তলা বরাদ্দ বস্তিবাসীদের জন্য। এই ভবনের স্থায়ী বাসিন্দাদের বাইরে যেতে চাইলে বিশেষ পাস লাগে। ভবনের চারপাশে পঁচিশ ফুট উঁচু দীর্ঘ প্রাচীর। সদর দরজার কাছাকাছি মিলিটারি চেকপোস্ট। ভবনের বাইরেও সেনাবাহিনীর এক বিশাল প্লাটুন মানুষের ঢোকা আর বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। ঢাকা শহরের আয়েশি উচ্চবিত্তেরা শহরের সৌন্দর্যে ইদানিং ভাবালু হয়। বাসায় কাজের লোকের সাপ্লাই নিশ্চিত করতে ক্লিওপেট্রা ভবন থেকে বাস সার্ভিস চালু আছে। সরকার একটা আইন পাস করে। ঠিকা ছাড়া কোনো কাজের লোক রাখা যাবে না, দারোয়ান হিসেবে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত নির্দিষ্ট কিছু লোককে ছাড়া আর কাউকে নিয়োগ দেয়া যাবে না। গরীবগুর্বো মধ্যবিত্ত লোকজন শহরে চলাফেরা করতে না পেরে কিছু কিছু সময় বিদ্রোহ করে। সরকারকে লাইসেন্সড টু কিল ব্যাটেলিয়ান গ্রুপকে বিশেষ অপারেশনে কাজে লাগাতে হয় বছরের শেষের দিকে। বিদ্রোহ বিপ্লব এসবের মৃত্যু ঘটে অল্পদিনের মধ্যেই। ক্লিওপেট্রা ভবনের বাসিন্দারা শেষে ভাগ্য মেনে নেয়। নগরী ঢাকার থকথকে গিজগিজে মানুষের ভিড় ক্লিওপেট্রা ভবনের উল্লম্বে বাসা বেঁধে শহরকে রক্ষা করে।
ঠিক এই বছর চেক রিপাবলিকের প্রথম প্রেসিডেন্ট ভাকলাক হাভেলকে সাহিত্যে নোবেল দেয়া হয়। এর বছর কয়েক আগে তিনি সাহিত্যে কাফকা পুরস্কার পান।
মন্তব্য
এই 'ক্লিওপেট্রা ভবন'টা কোথায়? ঢাকা শহরের ভেতরে না বাইরে?
কুটুমবাড়ি
আশেপাশে।
-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
ক্যাটেগরী হিসেবে 'আজগুবি' লেখা দেখা যাচ্ছে, ছেঁটে দিতে পারতেন, খুব একটা আজগুবি কিছু লিখেন নাই, ঢাকার অবস্থা এরচে কিছু ভালো হবে বলে মনে হয় না।। তবে আজিজুল-মিতা-হালেল এর ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না।
(আমি এতোকাল জানতাম উচ্চারণটা 'হাভেল' )
_______________________________________________
সিগনেচার কই??? আমি ভাই শিক্ষিৎ নই। চলবে টিপসই???
নামের উচ্চারণ শুনে মনে হয়েছিল হালেল বা হায়েল। ভ'র উচ্চারণটা একটু কম স্ট্রেস দেয়া।
হাভেল পত্রপত্রিকায় বেশি চলে। তাই চ্যাঞ্জাইলাম।
----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
গল্প ভাল লেগেছে।
সত্যি হয়ে যেতে কতক্ষণ।
............................................................................................
স্বপ্ন আমার জোনাকি
দীপ্ত প্রাণের মণিকা,
স্তব্ধ আঁধার নিশীথে
উড়িছে আলোর কণিকা।।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
আইডিয়াটা মন্দ না। যাঞ্জট কম্বো এতে ?? তাইলে তাই সই...
নিউট্রন বোমা আর নোবেল পুরষ্কার চিনি, মানুষ চিনি না...
_________________________________________
সেরিওজা
হ।
-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
ড়্যাঙ্গস ভবনের মতো পরিকল্পিত একসিডেন্টে ভবনটারে খাড়া নামাইয়া দেওন যায় না?
তাইলে এক্কেবারে গরিবমুক্ত ঢাকা
গরিব ও মধ্যবিত্তমুক্ত
-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
হাভেলের ব্যাপারে জানিনা
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
গুগলবাবু আছেন কী কর্তে?
--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
ম্রাত্মক লিখছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
নতুন মন্তব্য করুন