টম হেইনম্যান নির্মিত ‘ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদে’(কট ইন মাইক্রো ডেট) তথ্যচিত্রে দেখানো হয় ক্ষুদ্রঋণ নিতে গিয়ে কিভাবে ফাঁদে পড়েছে অজস্র দরিদ্র ঋণগ্রহীতা। তথ্যচিত্রটি গতানুগতিক তথ্যচিত্রের বাইরে যায়নি। ডকুমেন্টারি বানানোর একটা না একটা কোনো উদ্দেশ্য থাকে। এই তথ্যচিত্রের উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুদ্রঋণকে সমালোচকের ভূমিকায় দেখানোর সাথে সাথে ইউনূস সম্পর্কে জোচ্চুরির তথ্য ধীরে সুস্থে জানিয়ে দেয়া। ফলে ক্ষুদ্রঋণ শোধ করতে না পেরে দরিদ্র মানুষের ক্ষোভ-অভিযোগ, দেশীয় কিছু এক্সপার্টের গ্রামীণের বিপক্ষে গিবত, আন্তর্জাতিক কয়েকজন এক্সপার্টের ক্ষুদ্রঋণের বিপক্ষে যুক্তি, কোটি কোটি ডলার সরানোর প্রমাণ হিসেবে কাগজপত্র দেখানো - এর সবই তথ্যচিত্রে ছিল। উদ্দেশ্যকে ঠিকঠাক উপস্থাপনের ব্যাপারে তথ্যচিত্রটি সফল। বাংলাদেশ থেকে তিনজন ক্ষুদ্রঋণের অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন- পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ, নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবির, ‘এসো নিজেরা করি’ এনজিও-র সমন্বয়কারী খুশী কবির ।
চট্টগ্রামের অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামের দরিদ্র মহিলাদের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা গ্রামীণ ব্যাংক প্রজেক্ট চালু করেন। ১৯৮৩ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকের মর্যাদা পায়। গ্রামের দরিদ্র মহিলাদের কাগজে কলমে ব্যাংকের ৯৫ শতাংশের মালিক বানানো হয়। সরকারের কাছে থাকে ৫ শতাংশ মালিকানা। গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনুসারে ঋণগ্রাহীতার সংখ্যা ৮৩.৩ লক্ষ আর তাদের ৯৭ ভাগ মহিলা। ব্রাঞ্চ ২,৫৬৫; ৮১,৩৭৩ টি গ্রামে কার্যরত; কর্মী ২২,২৪৯; ঋণ দেয়া হয়েছে ৫৭৬৮.৩ কোটি টাকা; আদায় হয়েছে ৫১২৫.৭ কোটি টাকা; ঋণ আদায়ের হার ৯৭.২৪ শতাংশ। ১৯৮৩, ১৯৯১, ১৯৯২ সাল বাদ দিলে বাকি বছরগুলোতে গ্রামীণ মুনাফা অর্জন করেছে। ২০০৯ সালে মুনাফার পরিমাণ ৩৭.১৫ কোটি টাকা। গ্রামীণ নেটওয়ার্কের অঙ্গ সংগঠনের সংখ্যা সাতাশ; গ্রামীণ ব্যাংকের কাজে তৈরি করা হয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠান- গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ কল্যাণ। দাতাদের অর্থ এইসব প্রতিষ্ঠানে ভাগ বাটোয়ারা হয়। ... ১
১৯৯৭ সালে ছাব্বিশে মার্চ গ্রামীণ ফোন যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ নরওয়ে যৌথ উদ্যোগে। গ্রামীণ টেলিকমের উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের ঋণগ্রহীতা মহিলাদের ঋণের মাধ্যমে ফোন বিতরণ করা। ভিপিপি (Village Phone Project) তৈরি করার এই প্রাথমিক উদ্যোগের সাথে টেলিনর একাত্ম হয়। ভিপিপি-র কাজের সাফল্যের সাথে সাথে দেশব্যাপী গ্রামীণ ফোন জনপ্রিয়তা অর্জন করে। প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রামীণ ফোনে আরো দুটি কোম্পানির শেয়ার থাকলেও পরে কেবল গ্রামীণ টেলিকম আর টেলিনর অন্যদের মালিকানা কিনে নেয়।
বর্তমানে গ্রামীণ ফোনের ৬২ শতাংশ শেয়ার টেলিনরের, বাকি ৩৮ শতাংশের মালিকানা গ্রামীণ টেলিকমের। ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান প্রফেসর ইউনূস। ১০ ডিসেম্বর ২০০৬ সালে নোবেল বক্তৃতায় তিনি গ্রামীণ ফোনকে সামাজিক ব্যবসার মধ্যে ঢোকানোর কথা উল্লেখ করেন।
Grameen Phone is a joint-venture company owned by Telenor of Norway and Grameen Telecom of Bangladesh. Telenor owns 62 per cent share of the company, Grameen Telecom owns 38 per cent. Our vision was to ultimately convert this company into a social business by giving majority ownership to the poor women of Grameen Bank. We are working towards that goal Someday Grameen Phone will become another example of a big enterprise owned by the poor. ... ২
নোবেল পুরস্কার নিতে গিয়েই ইউনূস শেয়ার সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে টেলিনরের কর্তাব্যক্তিদের সাথে কথা বলেন। টেলিনর তাদের লাভজনক ব্যবসার শেয়ার ছাড়তে রাজি হয়নি। টেলিনরের সাথে গ্রামীণ টেলিকমের মালিকানা সংক্রান্ত ঝামেলা চলার সময় টেলিনর গ্রামীণ ফোনের লোগো পালটে ফেলে ২০০৬ সালের ১৬ নভেম্বর । প্রাথমিকভাবে যে চুক্তি হয়েছিল সেটার আক্ষরিক অর্থ মানে নি টেলিনর। মুহাম্মদ ইউনূস মিডিয়াতে জানিয়েছিলেন, টেলিনরকে বিশ্বাস করে তিনি ঠকেছেন।
এই বিষয়ে একটা গবেষণা প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেছেন-
However, as is often the case in partnerships, cooperation can uncover conflicts between the partners over time. Grameen’s idea was to convert Grameen Phone into a complete
social business by giving the poor the majority of shares in the company, letting them benefit from the soaring profits. But Telenor refused to sell its shares in this profitable business. Thus, conflicting goals between partners may appear over the course of the project. It is important that the objectives of the cooperation need to be fully stated at the beginning. ... ৩
টেলিনর বাংলাদেশে ব্যবসা চালাতে গিয়ে আরো কিছু সমস্যায় পড়ে। শিশুশ্রম নিয়ে অভিযোগ। আর অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা। বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি বোর্ড জরিমানা করে বসে। টেলিনর তাদের অংশের ২৬০ কোটি টাকা সরকারের তহবিলে জমা দেয়। গ্রামীণ টেলিকম তার অংশের জরিমানা (১৫৮.৮৪ কোটি টাকা) দিতে গড়িমসি করে। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার দায় কেবলমাত্র টেলিনরের ওপর চাপাতে চেষ্টা করে। গ্রামীণ টেলিকম টেলিনরের বিপক্ষে তথ্য গোপনের অভিযোগও করে। টেলিনর পৃথক বার্তায় এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
টেলিনর মুনাফালোভী প্রতিষ্ঠান। তাদের কথা কাজে সেটা স্পষ্ট। ইউনূস সাহেবের গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান দারিদ্র্যমুক্তি, সামাজিক উন্নয়ন এইসব গালভরা কথার আড়ালে মুনাফার কথা লুকিয়ে রেখে পরে সেটার পেছনে ছোটে। গ্রামীণ ফোনের প্রকৃত মালিক হবে গ্রামের দরিদ্র মহিলারা- এই কথার পেছনে অনেক অদৃশ্য ‘শর্ত প্রযোজ্য’ লুকিয়ে থাকে। দরিদ্র মহিলারা এতো বড়ো কর্পোরেট চালাবে কেমন করে সেটা কখনো উল্লেখ করা হয় না। অর্থাৎ কর্পোরেট চালাবে গ্রামীণ টেলিকমের হর্তাকর্তারা। আর দরিদ্র মহিলারা মালিক হওয়া সত্ত্বেও মুদির দোকান থেকে বাকিতে দশ টাকা ফ্লেক্সিলোড করবে।
ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে গ্রামীণ যথেষ্ট সাফল্য পায়। গ্রামীণ নামটির জোরে এবং মহিলাদের ঋণ দেয়ার বিশেষ সুবিধা দেয়ায় সাফল্য দ্রুত ঊধ্বর্মুখী হয়। গরু বা মহিষের পাশে দাঁড়ানো হাস্যোজ্জ্বল মহিলা ক্ষুদ্রঋণের মন্তাজ হয়ে দাঁড়ায়। সাফল্যের কাহিনি শুনিয়ে বিশ্বজয় করেছেন ইউনূস। শান্তিতে নোবেল থেকে শুরু করে অজস্র পুরস্কার পেতে পেতে মূর্তিমান পুরস্কারমানবে পরিণত হয়ে যাওয়া প্রফেসর ইউনূস অসাফল্যের কাহিনী কখনো শোনান নি। গ্রামীণ ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘ দশ বিশ কিংবা ত্রিশ বছর ধরে ঋণের চক্র থেকে যারা বেরোতে পারেনি তাদের নিয়ে কোনো উদ্যোগ কিংবা কথাবার্তা তিনি বলেন না। অসাফল্য তাঁর কাপ অব টি নয়। অথচ দরিদ্র জনগোষ্ঠী যতদিন দরিদ্র থাকবে ততদিন গ্রামীণের ব্যবসা জোরগতিতে চলবে। দারিদ্র্যকে জাদুঘরে যেদিন পাঠানো যাবে সেদিন গ্রামীণ ব্যাংককেও জাদুঘরে পাঠানোর বন্দোবস্ত করতে হবে। কারণ দারিদ্র্যমুক্তি ঘটলে তো কেউ আর গ্রামীণ থেকে টাকা ধার করতে যাবে না। ঋণ সুবিধাকে নাগরিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন ইউনূস। টম হাইনম্যান নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রে ক্যাটো ইন্সটিউটের থমাস ডিকটার ঋণ এবং ধার নিয়ে সহজ ব্যাখ্যা দিয়েছেন-
Muhammad Yunus said that credit is a human right, but he never said that debt is a human right. But the other side of credit is debt. Every time you take a credit, you're in debt. Poor people do not like debt anymore than you and I do.
টেলিনরের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। টেলিনরের সাথে প্রফেসর ইউনূসের মতবিরোধ কিছুদিন মিডিয়াতে প্রাধান্য পায়। পরে সেটা সময়ের ধারাবাহিকতায় ঢাকা পড়ে। সম্প্রতি প্রচার পাওয়া ক্ষুদ্রঋণের বিপক্ষের তথ্যচিত্রের সাথে নরওয়ের নাম যুক্ত থাকায় এই প্রচারণার মধ্যে ষড়যন্ত্রের আভাস মিলে। টাকা পাচার সংক্রান্ত অভিযোগটি প্রায় একযুগ পুরানো। এই দীর্ঘ সময় পরে কেন এই চেপে থাকা ব্যাপারটা সবার সামনে চলে আসলো তা বোঝার জন্য রিপোর্টে ছাপানো গ্রামীণ ব্যাংক –নোরাড টাইমলাইনটা সংক্ষেপে তুলে দিচ্ছি।
৫ নভেম্বর ১৯৯৭
১৯৮৬ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত নরওয়ে গ্রামীণ ব্যাংককে মোট ৪০০ মিলিয়ন নরওয়ে ক্রোনার অর্থ সাহায্য দেয়। শেষ কিস্তি আসে এই তারিখে (৩২.২ মিলিয়ন ক্রোনার)। গ্রামীণ ব্যাংক তার ১৯৯৬ সালের বাৎসরিক রিপোর্টে ফুটনোটে গ্রামীণ কল্যাণ নামের একটা সংস্থাতে অর্থ স্থানান্তরের কথা উল্লেখ করে।
৩ ডিসেম্বর ১৯৯৭
নরওয়ে অ্যাম্বেসি এই অর্থ স্থানান্তরের ব্যাখ্যা তলব করে। ইউনূস জানান- ট্যাক্স কমানো আর গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যেদের ফান্ড নিশ্চিত করার কথা।
১৫ ডিসেম্বর ১৯৯৭
নরওয়ে এম্বেসি এই ব্যাখ্যার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
৮ জানুয়ারি ১৯৯৮
ইউনূস নরওয়ের তৎকালীন রাষ্ট্রদূতকে একটি চিঠি পাঠান। … চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রামীণের আর্থিক সম্পদ দক্ষতা ও পেশাদারির মাধ্যমে পরিচালনা করা, গ্রাহকের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা। এ অর্থ ঘূর্ণমান তহবিলের (রিভলবিং ফান্ড) হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় থেকে গেলে ক্রমেই বাড়তে থাকা কর হারের জন্য ভবিষ্যতে অনেক কর পরিশোধ করতে হবে।
গ্রামীণ কল্যাণের সাথে গ্রামীণ ব্যাংকের চুক্তি সাক্ষর হয় ১৯৯৭ সালে ৭ মে।
১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮
গ্রামীণ কল্যাণ থেকে অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকে স্থানান্তরের জন্য চাপ দেয়া হয়। নরওয়ে আবিষ্কার করে গ্রামীণ ব্যাংকে তাদের অর্থ সাহায্যের তিনশ মিলিয়ন ক্রোনার ঐ ব্যাংক থেকে লাপাত্তা। সেটা গেছে গ্রামীণ কল্যাণে। আরো জানা যায় গ্রামীণ কল্যাণ কেবল গ্রামীণ পরিবারের মধ্যে ঋণ ও ব্যবসা সীমাবদ্ধ রাখে না। উদাহরণ: গ্রামীণ কল্যাণ গ্রামীণ ফোনের প্রতিষ্ঠা কালীন সময়ে ৫০ মিলিয়ন ক্রোনার দেয়।
--
পহেলা এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এইসব চলতে থাকে। নোরাড (Norwegian Agency for Development Cooperation) চাপ দিতে থাকে। ইউনূস পিছলাতে থাকেন। এটাসেটা বোঝান। চিঠি চালাচালি মিটিং এসব করে পরিস্থিতি কিছুটা সামলে আসার পরে নোরাড গ্রামীণকে অর্থ সাহায্য দেয়া অন্যান্য সংগঠনকে গ্রামীণকে চাপ দেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়। সিডা (Swedish International Development Cooperation Agency) -র দেয়া অর্থের বেশির ভাগ রিভলবিং ফান্ড হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সুনামের দিকে তাকিয়ে তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না।
--
১ এপ্রিল ১৯৯৮
মুহাম্মদ ইউনূস নোরাডের পরিচালককে ব্যক্তিগত পত্র দেন। "Dear ... Greetings from Grameen. I need your help."
আরো লিখেন-
এই অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের ভেতরে ব্যাপক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করবে। সরকারের ভেতরে বা বাইরে, যারা গ্রামীণকে সমর্থন করে না, তারা যদি এ চিঠিটি হাতে পায়, তবে বাংলাদেশে আমাদের খুব সমস্যায় পড়তে হবে। দুই পক্ষের বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে আমাদের এ সমস্যার সমাধানে পৌঁছাতে হবে।
এতোদিন এই ব্যাপারগুলো বেশ ভেতরের খবর ছিল। ইউনূসের এই চিঠি পাবার পরে এই সংক্রান্ত চিঠিপত্রের গায়ে নোরাড ‘made public’ সিল মেরে দেয়।
--
১৯৯৮ সালের ছাব্বিশে মের আগে পর্যন্ত এসব চলে। ইউনূস অসলো যান। মোটামুটি একটা সমাধানে পৌঁছানো যায়।
--
২০১০ সালের মাঝামাঝি থেকে গ্রামীণ কল্যাণের অর্থ গ্রামীণ ব্যাংকে স্থানান্তরের জন্য নোরাড আবার চাপ দেয়। ৬০৮ মিলিয়ন ক্রোনার (এর মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন দেয় নোরাড, বাকিটা অন্যরা) গ্রামীণ ব্যাংক থেকে চলে গেছে গ্রামীণ কল্যাণে। অথচ ফেরত এসেছে মাত্র ১৭০ মিলিয়ন। বাকিটা এখনো গ্রামীণ কল্যাণে থেকে গেছে।
২২ আগস্ট ২০১০
গ্রামীণ ব্যাংক একটা ইমেইল দুটি ব্যাখ্যা জানায়-
গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কর্মী আর সদস্যদের উন্নয়নের জন্য এই অর্থ স্থানান্তর।
গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণে কর ফাঁকি দেয়ার জন্য অর্থ স্থানান্তর করেনি। কারণ ১৯৮৩ সাল থেকে গ্রামীণ ব্যাংককে কোনো কর দিতে হয় না।
... ৪
এই টাইমলাইন দেখলে বোঝা যায় মুহাম্মদ ইউনূস তার ব্যাখ্যা দিয়ে নোরাডকে প্রায় বছরখানেক বোঝাতে পারেন নি। টাকাটা অন্য প্রতিষ্ঠানে চালানের ব্যাপারটা না বোঝার ব্যাপারে নোরাড বেশ স্থির থাকে। পরে অসলো গিয়ে একটা সমাধানে পৌঁছানো যায়।
রিপোর্টে অভিযোগ করে বলা হয় নোরাড গ্রামীণ কল্যাণের নাম পর্যন্ত শুনে নাই। কিন্তু নথি ঘেঁটে দেখা যায় গ্রামীণ কল্যাণের কথা নোরাড বা বাংলাদেশে নর ওয়ে অ্যাম্বেসি জানতো। তবে গ্রামীণ কল্যাণ গঠন করে টাকা স্থানান্তর করে পরে নরওয়েকে জানানো হয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা অর্থের পরিমাণ ইউনূস সেন্টার তাদের বক্তব্যে নাকচ করে দেয়:
If we convert the aforesaid amount at the prevailing exchange rate of 1996, then the ‘transfer' stands at about US $ 96 million and the ‘transfer back' stands at approximately US $ 85 million. Thus all the donors money was transferred back and only US $ 11 million remained with Grameen Kalyan as it was created out of interest earned. So the report where it mentions that Grameen Bank transferred US $ 100 million and transferred back only US $ 30 million is completely false.
গ্রামীণ কল্যাণে টাকা স্থানান্তরের কারণ হিসেবে কর এড়ানোর একটা যুক্তি ছিল প্রফেসর ইউনূসের ১৯৯৮ সালে জানুয়ারি ৮ তারিখের চিঠিতে।
সূত্র: muhammadyunus.org
তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর গ্রামীণ ব্যাংক প্রেস রিলিজ বের করে। সেখানে কর অব্যাহতি সম্পর্কে বলা হয়।
সূত্র: muhammadyunus.org
এখানে বলা হচ্ছে expire হবার কথা। Withdraw শব্দটি ব্যবহার করে প্রফেসর ইউনূস তাঁর পক্ষের যুক্তি সেই সময় পোক্ত করতে চেয়েছিলেন। আর বোঝা যাচ্ছে ‘দরিদ্রদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে সৎ উদ্দেশ্য ও বিশ্বাস’ জাতীয় আলংকারিক ভাষা বাদ দিয়ে পড়লে বোঝা যায় কর ফাঁকির ষোলোকলা ইচ্ছা ইউনূসের ছিল। ক্ষূদ্রঋণ কোম্পানিগুলো তো এভাবেই ফুলে ফেঁপে বাড়ছে। বিশাল সুদ আদায় করছে গরিববগুর্বোদের কাছ থেকে। সরকারকে এক পয়সা দিচ্ছে না দরিদ্রদের সেবার মুলো ঝুলিয়ে।
গ্রামীণ ব্যাংক প্রেস রিলিজে পহেলা এপ্রিল ১৯৯৮ সালে নোরাডের পরিচালকের কাছে লেখা চিঠিতে ইউনূসের ‘I need your help’ বাক্য ব্যবহারের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।
সূত্র: av.bdnews24.com
তথ্যচিত্রে ২০১০ সালে আগস্টে নোরাডকে লেখা ই-মেইলের অংশ বিশেষ দেখানো হয়। যে করের কথা বলা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে, এখানে এসে সরাসরি তার বিপরীত কথা বলা হচ্ছে। উল্লেখ করা প্রয়োজন- ১৯৮৩ সালের পর থেকে গ্রামীণকে কখনোই কর দিতে হয়নি।
সূত্র: nrk.no
বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলো ২০ থেকে শুরু করে ১০০% বা তারও বেশি সুদ নেয় গরিব মানুষের কাছ থেকে। ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্যকে হালকার ওপর ঝাপসা প্রশমিত করে দীর্ঘমেয়াদি করে। উচ্চসুদের কারণে গরিব গরিবিমুক্ত হওয়ার সুযোগ পায় না। কিছু কামেল লোক হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে। ঋণের যাঁতাকলে দীর্ঘমেয়াদে আটকে গেছে এমন লোকের পরিসংখ্যান জানা জরুরি। ক্ষুদ্রঋণ কেবল ভালো ভালো জিনিসগুলো পাবলিককে দেখায়, পেছনের বাজে দিকগুলো লুকিয়ে রাখে। এসব সমালোচকের দৃষ্টিতে দেখা প্রয়োজন। গ্রামের মানুষের টাকা নাই, তাদেরকে ঋণ দেয়া একটা ভালো ব্যবস্থা; কিন্তু ঋণের চক্রে ঢুকিয়ে দেয়া অমানবিক। লোকজন বেঁচেবর্তে থাকে এইটুকুই- ভালো অবস্থায় যেতে পারে না। সরকারকে কর দিতে হয় না বলে দেশে প্রায় চার হাজারের মতো ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসা। ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো ঋণ বিতরণ হচ্ছে প্রতি বছর। সহজে মুনাফা অর্জনের জন্য এর চেয়ে ভালো ব্যবসা আর নেই। সরকারের উচিত এদের উপরসর্বস্ব ভালো কথাগুলো খতিয়ে দেখা। আর নরওয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই আচরণ করলে সেটারও বিহিত হওয়া দরকার।
-------
কৃতজ্ঞতা:
তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ, স্পর্শ, ধ্রুব বর্ণন এবং স্বাধীন ভাই
বানান কৃতজ্ঞতা:
আনন্দী কল্যাণ এবং বুনোহাঁস
মন্তব্য
সাধুবাদ। প্রথমে কর এড়ানোর কথা বলে পরে কখনই কর দেয়া হয়নি বলাটা গ্রামীনের পক্ষে অবিবেচকের মত কাজ হয়েছে। কোথাও কোন এক আইনজীবির চাকুরী যাওয়া উচিত।
৬০৮ মিলিয়ন ক্রোনার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে চলে গেছে গ্রামীণ কল্যাণে। অথচ ফেরত এসেছে মাত্র ১৭০ মিলিয়ন। বাকিটা এখনো গ্রামীণ কল্যাণে থেকে গেছে।
এটা যদি সত্য হয়, তাহলে বিষয়টা আরো ঘোলাটে হয়ে ওঠে। কারন ইউনুস তার প্রথম চিঠিতে বলেছে যে গ্রামীন কল্যানে সরিয়ে রাখা টাকা ১০০% আবার গ্রামীন ব্যাঙ্কে বিনা সুদে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঋন দেয়া হয়েছে। তাই যদি হয়, তাহলে তো টাকার সরন বিপরীত দিকে, মানে পাওনাদার গ্রা কল্যানকে গ্রা ব্যাঙ্কের টাকা পরিশোধ করার কথা। কে কাকে কতটাকা দিয়েছে আর কতটাকা রয়ে গেছে, এই অঙ্কগুলো কোথা থেকে আসছে?
গ্রামীন সংস্থাগুলো থেকে এর পরিচালকদের পকেটে ঠিক কি উপায়ে টাকা চলে যাচ্ছে, তার প্রমানও দেখার অপেক্ষায় আছি। গ্রামীন ব্যাঙ্কের পরিচালকদের ব্যাক্তিগত সম্পদের বিবরন থেকে কি এরকম লুটপাটের কোন আলামত পাওয়া যায়?
এখানে দেখুন।
এ প্রশ্নের উত্তর জানা নাই।
ধন্যবাদ। গ্রামীন কল্যানে নোরাড/নরওয়ে সরকারের ঠিক কত টাকা রয়ে গেছে, এব্যাপারে আপনার লিঙ্ক এ কিছু খুঁজে পাইনি। বরং আবারো ১৫ ডিসেম্বর ইউনুসকে লেখা দূতাবাসের চিঠির দ্বিতীয় প্যারাটিতে এসে থেমে রইলাম যেখানে লিখছেঃ
"Grameen Kalyan has, at the same date as the funds were received, transferred the same amount back to Grammen Bank as loan.....The agreement concerning these transactions has not made provisions for any interest rate to be charged for this part of the loan nor any terms of repayment. "
মানে দূতাবাস জানে যে গ্রামীন কল্যানে তাদের দেয়া অনুদানের কোন টাকা অবশিষ্ট নেই, এবং তা এখন গ্রামীন ব্যাঙ্কেই আছে। তাই যদি হয়, তাহলে যে টাকা গ্রামীন ব্যাঙ্কেই আছে, সেটাকে তারা আবার গ্রামীনে ফেরত চাইছে কেন?
নোরাডের এই নথিটি বেশ কাজের। এটি গ্রামীন ব্যাঙ্ক এর ফেস ৩ এর প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারকির মিশনের প্রতিবেদনের ওপর নোরাডের প্রতিক্রিয়া। প্রতিবেদনের আলোচনায় কেন ও কিভাবে ফেস ৪ এ দেয়া আবাসন অনুদানে আরো কড়াকড়ি তদারকি ও খেলাপি-বিরোধী করা যায় সে বিষয়গুলোও এসেছে। সুপারিশে মিশন বলছেঃ
GB is better conceptualized as two separate financial enterprises operating under a single entity:
a) a member's saving club or credit union which pools member savings for group sanctioned credit advances, and
b) a revolving loan fund which utilises extrenally genrated monies to fund its general, seasonal and housing loans.
যদি সুপারিশের দ্বিতীয় অংশটির বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গ্রামীন কল্যানের জন্ম হয়ে থাকে তাহলে আমি অবাক হব না। তবে আমি কিছুটা হতাশ যে গ্রামীন ব্যাঙ্ক নিজেই গ্রামীন কল্যান স্থাপনের পক্ষের যুক্তি হিসাবে নোরাড/মিশনের এই সুপারিশকে এখনো ব্যাবহার করেনি।
ধন্যবাদ, এই জায়গাটাতে ভালোমতো ফোকাস করানোর জন্য।
১৫ ডিসেম্বর ইউনুসকে লেখা দূতাবাসের চিঠির দ্বিতীয় প্যারাটির Grameen Kalyan has জায়গাটা থেকে পড়ি:
Grameen Kalyan has, at the same date as the funds were received, transferred the same amount back to Grammen Bank as loan. The part of this loan, which is related to the revolving fund for housing loans, is BDT 1,927 mill, the equivalent of NOK 300 mill. The agreement concerning these transactions has not made provisions for any interest rate to be charged for this part of the loan nor any terms of repayment.
এর পরের প্যারাতে গ্রামীণ ব্যাংক ফেজ-৪ প্রজেক্টের কন্ট্রাক্ট থেকে উল্লেখ করা হয়( এনেক্স ১, ক্লজ ৪):
The amount of grant used for housing loan will be used as a revolving fund.
এটা উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয় গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে গ্রামীণ কল্যাণের চুক্তি অনুসারে এই ক্লজ মানা হয় নি। তারা ১৯৯৬ সালের শেষ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকে গৃহায়ন ঋণ বাবদ কোনো রিভলবিং ফাণদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। টাকা সরানোর চেয়ে এটাই প্রাথমিক অভিযোগ ছিল।আর গ্রামীণ কল্যাণ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে সেই একই টাকা আবার ঋণ হিসেবে দেয় গ্রামীণ ব্যাংককে। আবার ২% সুদ সহ। এই জায়গাটা আমার কাছে পরিষ্কার না।
তথ্যচিত্রটার রিপোর্টিং নিয়ে গ্রামীণ থেকে বের হওয়া প্রেস রিলিজে পাই:
Empowered by a board decision and executing an agreement between Grameen Bank and Grameen Kalyan under which, an endowment to the extent of Taka 3917 million 014 thousand was created by simultaneous notional "transfer" of money. Grameen Kalyan was never given the control and possession of the fund. This simultaneous transfer and Grameen Bank receiving it back in the form of a loan, created an opportunity to charge interest on this loan. That interest income was ear-marked to finance borrowers Social Advancement Fund (SAF) as agreed by the donors earlier within the Bank. It was a financial innovation to benefit the poor. Grameen Kalyan received 2% per cent interest on the money. This money was to be used to provide education and other services to the borrowers and employees of Grameen Bank.
…
The actions taken by the Board, which is comprised of 9 elected representatives of Grameen Bank borrowers and three senior representative of the government, were viewed as the best use of the funds, a way to ensure Grameen Bank would remain financially accountable for the money while still ensuring that the borrowers received the most possible benefit from donors' grants. Afterwards not only Norad's money, but 100% of all donor's money to the extent of Taka 3,474 million 501 thousand was "transferred back", from Grameen Kalyan to Grameen Bank, even though the money was always in the Grameen Bank's account. Only SAF fund money amounting to Taka 442 million 512 thousand remained with Grameen Kalyan as it was created out of the interest earned.
…
If we convert the aforesaid amount at the prevailing exchange rate of 1996, then the ‘transfer' stands at about US $ 96 million and the ‘transfer back' stands at approximately US $ 85 million. Thus all the donors money was transferred back and only US $ 11 million remained with Grameen Kalyan as it was created out of interest earned. So the report where it mentions that Grameen Bank transferred US $ 100 million and transferred back only US $ 30 million is completely false.
…
গ্রামীণ কল্যাণে কত টাকা রয়ে গেছে সেটা এখানে কিছুটা বোঝা যায়। কিন্তু এই টাকা কিভাবে সুদের টাকা হয় সেটা গ্রামীণের ব্যাখ্যা থেকে বোঝা মুশকিল।
আপনার লিঙ্কের নথিটা খুব কাজের। ২০১০ সালের জানুয়ারি ৮ তারিখে লেখা চিঠিতে প্রফেসর ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণের প্রতিষ্ঠার পেছনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করেন। সেখানে রিভলবিং ফান্ডের কথা আছে।তবে তার পুরোটা যে গৃহায়ণ খাতে যাবে কিনা সেটার সরাসরি উল্লেখ নাই। ফলে চুক্তি মানা হচ্ছে এই চিঠিতে সেই যুক্তি ঠিকমতো আসেনি। নোরাডের চুক্তিতে উল্লেখ করা দ্বিতীয় অংশটি কৌশলে উল্লেখ না করার সম্ভাবনা তাই থেকে যায়।
এই লিংকের ৯ম পৃষ্ঠার ৮ নং ক্লজে দেখা যাচ্ছে যে দাতাদের শর্তানুসারে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে পাওয়া সূদের ২% গ্রামীন ব্যাংককে রিভলভিং ফান্ড হিসেবে আবার ঋণগ্রহীতাদের জন্য ব্যবহার করতে হতো, যাকে এখানে Social Advancement Fund (SAF) বলা হয়েছে।
আমার বুঝমতে, এই ২% টাকা যাতে সরকারী ট্যাক্সের আওতায় না পড়ে সেজন্য সেটাকে গ্রামীন কল্যাণের দেয়া লোনের বিপরীতে গ্রামীন ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণকে সূদ হিসেবে পরিশোধ করতো।
রিভলভিং ফান্ডের পুরোটা গৃহায়ন খাতের হতে হবে এমন কোন শর্ত কি ছিলো?
[url=http://av.bdnews24.com/file/all/Yunus.pdf]উপরের লিংকটিতেই/url] ৭ম পৃষ্ঠায় ৪ নং ক্লজে কিন্তু গ্রামীণ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে গ্রামীণ কল্যাণ গ্রামীণ ব্যাংককে দেয়া ঋণের মধ্যে হাউজিং লোনের পরিমাণের উপর কোন সূদ গ্রহন করা থেকে বিরত থেকেছে, যাতে এই অর্থের ব্যাপারে দাতাদের শর্ত মানতে গ্রামীন ব্যাংকের উপর বাড়তি কোন চাপ না পড়ে।
আমার মতে, এই দাবী হাউজিং লোন বিষয়ক অভিযোগকে পরিস্কারভাবেই নাকচ করে দিচ্ছে।
মূলকথা, সরকারী ট্যাক্স এড়াতে সব কোম্পানীই নানান রিস্ট্রাকচারিং করে সরকারের সাথে ইঁদুর-বিড়াল খেলে। গ্রামীণের সেই ৯৮ সালের আনাড়ী আইনজীবি বোঝেননি যে নোরাডের কাছে কাগজে কলমে সরাসরি সরকারী ট্যাক্স এড়ানোর কথা উল্লেখ করা ভুল হবে। এসব কথা সাধারণত ডিনার পার্টিতে অফ দ্য রেকর্ড চুপেচাপে বলে কনভিন্স করার বাড়তি চেষ্টা করে লোকে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ব্যাপক রিসার্চ দেইখা ডরাইছি, তাই হুদাই প্যাচাল না পাইড়া ৫ ভোট দাগায় ফুটলাম
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এই পোস্টটি গোটা পরিস্থিতিকে একটা পাখির চোখে দেখতে সহায়তা করবে। শুভাশীষদা এবং বাকি চার সচলকে অশেষ ধন্যবাদ এমন একটি শ্রমসাধ্য লেখা আমাদের উপহার দেয়ার জন্যে।
লেখার জন্য লেখক এবং পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ।
এখানে জার্মান ভাষার স্কুলে গ্রামীন নিয়ে একটা টপিক পেলাম। এর পর কয়েকজন গ্রামীন সমর্থকের সাথে পরিচয় হলো। বেশ মনোযোগ দিয়ে সভা-সমিতি শুরু করলাম। যাতে দারিদ্রতা জাদুঘরে যায়।
কিছুদিন পর দেশে গেলাম। শুনলাম আমার বাল্যবন্ধু জমির আলী আর গরীব হোসেনের বউ বিধবা। দুজনেই ব্রিকফিল্ডের শ্রমিক ছিল। একজন ট্রাক্টারের নীচে অন্যজন্য ইপ পোড়ানোর চুল্লীতে গত হয়েছে।
তাদের বিধবারা গ্রামীন ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ভাল আছে। কী ভাবে! গ্রামীন ব্যাংকের টাকা তারা আরো চওড়া সূদে কর্জ দিয়েছে। কর্জ থেকে আসা সূদের টাকায় গ্রামীন ব্যাংকের কিস্তি শোধ করছে।
ভালই চলছিল কিন্তু মুস্কিল হলো যখন কর্জ থেকে সূদ আসা বন্ধ হলো। এদিকে গ্রামীনের মাঠকর্মীরা হুমকি-ধমকী দিচ্ছে। অপর দিকে দেবর-ভাশুরকে তো আর টাকার জন্য মাথায় বাড়ি দেয়া যায় না!
শুরু হলো সেবার থেকে ঋণ নেয়ার চেষ্টা। এভাবেই গ্রামীনের ঋণ শোধ করতে আবার গ্রামীন বা অন্যকোন সংস্হা থেকে ঋণ নিতে হয় গ্রামীনের ঋণগ্রহীতাদের।
ধনীদেশের মানুষের জন্য (দোয়া) ইউনুস একটা মানবিক শক্তিবর্ধক বটিকা। যাহা সেবন করলে পাপ মোচন হয়। সব ধনইতো ঝাড়-ফুক দিয়ে জড়ো করা হয়েছে এক জায়গায়। এর ফলে অন্য দিকে ভোগের খড়া। এই খড়ায় জদি ইউনুস সাহেব বন্যা নামিয়ে আনেন দান খয়রাতের হাতের ময়লায়, তাহলে এর চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে। কাজেই ইউনুস ভাইকা সাথ দে।
এখন দেখা যাচ্ছে; ইউনুস সাহেব একদম নিঃস্ব সর্বহারা মানুষকেও শোষণের পথ দেখিয়েছেন। সে পথে অনেকেই উইনুস সাহেবের সাথে রীতিমতো পাল্লা দিচ্ছে। বিষয়টা আর রোমান্টিক নেই।
কাজেই এখন নীতির প্রশ্নে অবিচল ধনিদের সততা প্রমান করতে হবে।
পৃথিবীতে সব মানুষের ভরণ-পোষণের মতো সম্পদ সব সময়ই ছিল। এখনও আছে। এমন কী বাংলাদেশেও। যা নেই তা হলো সত ইচ্ছা। সম বন্টনের বিকল্প অন্তত গরীব দেশের নেই। কিন্তু ব্যাপারটা বেসকারকারী না, সরকারী। সেটাই শান্তিবাদী প্রফেসর ইউনুস এখনও বুঝতে পারেন নি! ছয়শ কোটি মুখের গ্রাস যারা কেড়ে খায় তারা কখনো বুঝবে না।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
এভাবে অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে অনেক কিছু জানা যাবে।
---------------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
দুর্ধর্ষ!!!
কাকস্য পরিবেদনা
বিশাল গবেষণাধর্মী লেখা।
অনেককিছুই পরিষ্কার হলো আবার অনেক কিছু আরো ঘোলাটে হল।
ধন্যবাদ এরকম শ্রমসাধ্য এবং তথ্যবহুল একটি লেখার জন্য।
পাগল মন
সময়াভবে দ্রুত পড়লাম। পরে আবার সময় নিয়ে পড়ব।
এই তথ্যবহুল গবেষণাধর্মী লেখাটার জন্য শুভাশীষ, মুর্শেদ, স্বাধীন, স্পর্শ ও ধ্রুব বর্ণনকে অনেক ধন্যবাদ।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আমরা তেমন কিছু করিনি। আমরা কেবল কিছু মন্তব্য করেছি যার যার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গীর আলোকে। সেগুলো হয়তো শুভাশীষকে লেখাটি গুছিয়ে আনতে কিছুটা সাহায্য করেছে। তাই আমি লেখাটির পুরো কৃতিত্ব দিবো শুভাশীষকেই।
একমত।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
বিশেষ ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সময়োপযোগী ও তথ্যসমৃদ্ধ একটা লেখা। এই লেখাটার জন্য শুভাশীষ, মুর্শেদ, স্বাধীন, স্পর্শ ও ধ্রুব বর্ণনকে অনেক ধন্যবাদ।
গ্রামের মানুষকে আধুনিক সময়ের সুদখোর মহাজনদের হাত থেকে বাঁচাতে এবং ঋণের গ্যাড়াকল থেকে বাঁচাতে দেশের মিডিয়ার চুপ করে থাকাটাই ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্টানগুলোর ব্যবসা বাড়িয়েছে ।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
সুন্দরভাবে বিশ্লেষন করার জন্য ধন্যবাদ। আমি আমার কিছু পয়েন্ট তুলে ধরতে চাই যা এই লেখার সমালোচনা না, আমার অবসার্ভেশন।
১) প্রথম দিন অনেক খবরের কাগজ পড়ে ও অধিকাংশ হেডলাইন পড়ে মনে হয়েছিল ইউনুস ব্যক্তিগত কাজে টাকা মেরে দিয়েছে। ১০০ মিলিয়ন ডলার - বর্তমান টাকায় যেটা হয় ৭০০ কোটি টাকা। অনেকে এই বিষয়টাকে নেগেটিভ টোন দেয়ার জন্য (বা অবচেতন ভাবে) পরিমানটাকে ৭০০ কোটি 'ডলার' ও লিখেছে।
২) ভালভাবে খবর পরিবেশনে এখন জানতে পারছি এটা গ্রামীনেরই প্রতিষ্ঠান গ্রামীন কল্যানে ট্রান্সফার করা হয়েছে - প্রতিষ্ঠানের ভেতরেই টাকার ব্যবহারের জন্য একই রকম প্রজেক্টে, অর্থাত এখানে 'দাতা' এজেন্সির সাথে টাকার ব্যবহার নিয়ে টেকনিকাল ইস্যু থাকতে পারে, কিন্তু কেউ তো টাকা মারেনি। রিভলভিং ফান্ড ইত্যাদি এগুলো কি বড় প্রতিষ্ঠানে টাকা ম্যানেজের জন্য করা হয় না?
৩) আর এ ব্যাপারটা নাকি তখনই দাতাদের সাথে আলোচনা হয়ে গেছে। এখন উঠছে কেন ১৪ বছর পরে? নরওয়েই কিন্ত 'শান্তি'তে নোবেল দেয় (সুইডেন নয়), নরওয়েরই 'নোরাড' ইউনুসকে গ্রামীনের জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ফান্ড দেয়, আবার নরওয়েরই 'টেলিনর' গ্রামীন ফোনের মালিক (সিংহভাগ) - আমাদের দেশ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার নিয়ে নিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে এখানে অনেক স্বার্থের ব্যাপার আছে। ইউনুস কিছুদিন আগে 'গ্রামীন ফোন'কে গ্রামীন ফোনের সিংহভাগ মালিকানা দিয়ে দেয়ার জন্য টেলিনরকে বলেছিল। টেলিনরতো তাদের লিখিত এগ্রিমেন্ট (গ্রামীন ফোন কোম্পানি করার শুরুতে করা) এখানে মানছেনা। অর্থাত তারা আমাদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাবেই - এটা তারা ছাড়বে না। এটা নিয়ে কিন্তু আন্তর্জাতিক মামলা করা যায় যে তারা তাদের 'লিখিত এগ্রিমেন্ট' ব্রেক করছে (অবশ্য তাতে কোম্পানি টিকে থাকবে না)। এটা একটা অপরাধ যার জন্য কোটি কোটি ডলার ফাইন হতে পারে। এটা কি ঐ ডকুমেন্টারিতে কোথাও বলেছে? ইউনুসের রিভলভিং ফান্ড করে টাকার যথার্থ ব্যবহার করাকে তো আমার কাছে দাতার সাথে ব্রিচ করার বাইরে কোনো ক্রাইম মনে হয়না, যেটা 'টেলিনর' করছে।
৪) অধিকাংশ বুদ্ধিমান ম্যানেজারই ইউনুসের মতই করবে। এখানে ইলিগ্যালি কোনো ট্যাক্স ফাকি দেওয়া হয়নি, টেকনিকালি ট্যাক্স এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বটে, ১০০ মিলিয়ন ডলার সেভিংসের উপর। না হলে এই ট্যাক্স তো গরিব লোকদের ইন্টারেস্ট চাপিয়েই আদায় করা হতো, নাকি? 'গ্রামীন' কোনো ট্যাক্স ফাকি দিয়েছে বলে আজো তো কোথাও পড়িনি।
৫) আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, যে ইউনুসকে এতদিন যারা (বিদেশি মিডিয়া) উপরে উঠিয়েছে, তারাই আজ এসব বলছে, কারন তাদের কারো স্বার্থে ভীষন রকম টান লেগেছে, টেলিনরের ব্যবসাতে গ্রামীনের বেশি রকম শেয়ার দাবি করায় হয়তো।
৬) ইউনুস ব্যক্তিগতভাবে যথেষ্ট সাদাসিধে ও 'সত' (খন্ড ত কিভাবে লিখতে হয়?) বলেই তো জানি। এটাকে ব্যাক্তিগত অসততার সাথে মিলিয়ে ফেললে ভুল হবে। অনেক পেপারেই শুরুতে সেভাবে খবরটাকে প্রকাশ করা হয়েছিল।
৭) এ ডকুমেন্টারিতে মাইক্রোক্রেডিট নিয়ে এমন কিছুতো বলা হয়নি যেটা আনু মুহম্মদ, বদরুদ্দিন ওমর রা গত দশ বছর ধরে বলে আসেন নি। তা হলে একজন কোন দেশের কোন সাংবাদিক একটা ডকুমেন্টারি বানিয়েছে, তিনি কি বিদেশি বলেই আমরা তার কথাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছি, যেটা এ দেশেরই অনেকেই অনেক আগ থেকে বলে এসেছে?
৮) আমি নিজে যেহেতু 'মাইক্রোক্রেডিট' এর লোন নেই নি (বা এখানের কেউই নেয়নি), তাই এটা নিয়ে আমার কোনো গভীর কোনো পর্যালোচনা করতে পারছিনা - এটা অধিকাংশের উপকার না অপকার করে। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের বিশাল লোন মাথার উপর থেকে কমছেনা। তাদের ইন্টারেস্টও কিন্তু কম না। সর্বোচ্চ ৩০% - তারপরও বিভিন্ন ফি থাকে। আমার মত যাদের রেকর্ড খারাপ তারা ২০-২৫% এর মত দেয়। আমার যদি উপায় থাকতো আমি নিশ্চয়ই এগুলো নিতাম না। যখন নিয়েছি তখন উপকারই হয়েছে - কিন্তু এজন্য টেনশনও তো কম যাচ্ছে না এখন। কথা হল - এর বিশ্লেষন কিভাবে করা হবে?
আর গরিবরা যদি উতপাদনশীল কাজের জন্য টাকা ধার করতে চায়, তাদেরকে কেনো সেটা দেয়া হবে না? ব্যাংক দিচ্ছে না, সরকার দিচ্ছে না, গ্রামীন দিচ্ছে। এটা করে কি তারা সব বিশাল পুজিপতি হয়ে যাচ্ছেন? এনজিও তে কাজ করা লোকের মধ্যে এই ভাব টা আমি দেখিনি। বা তারা কি গরিবদের শোষন করছেন, সিস্টেমটাই কি সে রকম? নাকি একটা 'গুড ইনটেনশনে'ই এটা চালু হয়েছিল - সমাজের সবাই কে 'ক্রেডিট ওয়ার্দি' করার জন্যে? বিশ্লেষন ও জানা প্রয়োজন।
৯) 'মাইক্রোক্রেডিট' একটা মডেল। এটা সফল কি সফল না, তার জন্য বিভিন্ন উপাত্ত দিয়ে প্রমান করতে হবে। শুধু কিছু ঘটনা দিয়ে সম্ভব না। এটা একটা ভুল মডেল হলে এক সময় আর টিকে থাকবে না, সেটা নিশ্চিত।
১০) এ ব্যাপারে ইউনুস কে ফোকাস না করে 'মাইক্রোক্রেডিট'এর ভাল, খারাপ দিকগুলো বিভিন্ন দিক দিয়ে বিশ্লেষন করলেই আমরা অনেক বেশি সচেতন হতে পারব।
আবারো ধন্যবাদ বিশ্লেষনমুলক লেখার জন্য।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রাসেল (ৎ লিখতে অভ্র ফনেটিকে t`` [1 এর বামের বোতাম]) চাপুন।
এরকম আরো আলোচনা আসুক।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
প্রিয় রাসেল,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি একটা কমেন্টে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আসার জন্য।
১। টাকার পরিমাণ নানা পত্রিকা মনের মাধুরি মিশিয়ে দিচ্ছে। অনেকেই ক্রোনার, ডলার, টাকা গুলিয়ে ফেলছেন।
২। নোরাডকে এই ব্যাপারটা বোঝানো যাচ্ছিল না। আর ইউনূস টাকা স্থানান্তর করে পরে তাদের জানিয়েছেন। করের ব্যাপারটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। গ্রামীণ কল্যাণ টাকা নিয়ে গ্রামীণের বাইরেও কাজে লাগিয়েছে। নানা জায়গায় বিনিয়োগ করেছে। এগুলো নোরাড-গ্রামীণ ব্যাংকের চুক্তির সাথে যায় না।
৩। আমি বলেছি এখানে ষড়যন্ত্রের আভাস আছে। নরওয়ের সাথে ইউনূস সাহেবের নানা রকমের দুষ্টমিষ্ট সম্পর্ক আছে দেখে দুষ্টজনে ইউনূসের নোবেল-বাণিজ্য টাইপের কটুকথা বলে। টেলিনর চুক্তির বরখেলাপ করেছে। প্রফেসর ইউনূস বুজর্গ মানুষ। তিনি এই ব্যাপার মেনে নিলেন কেন বুঝতে পারলাম না। গ্রামীণ টেলিকমের সাথে টেলিনরের সেই সময়ের চুক্তির কাগজপত্র জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। তখন ব্যাপারটা বোঝা যাবে। নরওয়ের টেলিভিশনের সম্প্রচারিত তথ্যচিত্রে টেলিনরের বিপক্ষে কথা আসবে না। এই তথ্যচিত্র আমাদেরই বানাতে হবে।
৪। ইউনূসকে বুদ্ধিমান কিংবা চরম বুদ্ধিমান ম্যানেজার বলতে কোনো দ্বিধা নেই। সরকারকে কর দিলে সরকার সেটা জলে ফেলে দিবে আর গ্রামীণ সেটা দিয়ে গরীবদের উদ্ধার করবে- এই চিন্তা চরম ক্লিশে। ঐ টাকা সরকারের হাতে গেলে গ্রামীণ গরীবগুর্বোদের কাছ থেকেই সেটা আদায় করতো- কথা ঠিক। দীর্ঘমেয়াদী দারিদ্র্য সুদীর্ঘমেয়াদী হতো- এই যা।
৫। ধারণা অমূলক নয়।
৬। হ্যাঁ। সবাই নিজের পছন্দ অনুযায়ী ইউনূস সাহেবকে চিন্তা করেন। ইউনূস সাহেব নিজেরটা অনেক ভালো বোঝেন। তাঁর ব্যক্তিগত ইমেজের সাথে পুরো বাংলাদেশের সুনাম জুড়ে থাকে- এটা তিনি নিজেই সবসময় মনে রাখেন না।
৭। ডকুতে যা দেখানো হয়েছে তার প্রায় সব কিছু আমরা জানি। গ্রামীণের ঋণ দিয়ে কিছু গরীব লোকের ছেলেপিলে উচ্চশিক্ষিত হয়েছে- একথা সত্য। আবার গ্রামীণের অজস্র ঋণগ্রহীতা উচ্চহারের সুদ পরিশোধ করতে করতে এই চক্র থেকে বেরোতে পারে নি। গ্রামীণ নিজেই দাবি করে তার আদায়ের হার ৯৭ শতাংশ। ফলে এইসব খেলাপীদের সাথে দুর্ব্যবহার কিংবা বাড়ির টিনের চালা খুলে নেয়ার কথা বুঝতে বেশিক্ষণ লাগে না। আনু মোহাম্মদরা অনেক বছর ধরে এগুলো বলে আসছেন। যেহেতু বাইরের একটা দেশে সরাসরি জোচ্চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে (তাও একটা ডকু বানিয়ে) সেটা গুরুত্বের সাথে নেয়াই যায়।
৮। দেশে কয়েক হাজার ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা। মুনাফা সহজে না আসলে কি লোকে এই ব্যবসা ধরে। গ্রামীণ ব্যাংককে আপনি পুঁজিপাতি বলবেন না! গ্রামীণ একটা বিশাল কর্পোরেট। সাতাশটা খালি কোম্পানীই। গ্রামীণ ব্যাংক কাগজে কলমে বলছে এই সাতাশটি কোম্পানী পৃথক- সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো শেয়ার নেই। আবার বিদেশ থেকে আসা অনুদান ভাগ বাটোয়ারা করা কোম্পানী গ্রামীণ কল্যাণ গ্রামীণ ফোনের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অর্থসাহায্য করে। তাহলে! এগুলো বিশাল গেম থিয়োরিতে চলছে। গ্রামীণ নেটওয়ার্ক মুনাফালোভী কিনা বোঝার জন্য একটা উদাহরণ দেই। গ্রামীণ NIIT এর মতো প্রতিষ্ঠান (গ্রামীণ স্টার এডুকেশন) করে গরীব মানুষের কাছ থেকে অজস্র টাকা খেয়েছে ছাতামাথা কম্প্যুটার শিক্ষা দিয়ে।
গ্রামীণকে এই যাত্রায় তার সততার প্রমাণ দেখাতে চাইলে প্রকাশ্যে অনেক নথি ছাড়তে হবে। গ্রামীণ নেটওয়ার্ক নিজের ইচ্ছায় এটা করবে না। এই জোরটা করা গেলে সার্বিকভাবে বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার আসলে চেহারা বেরিয়ে আসবে। একটা কোনো নির্দেশনা পাওয়া যাবে। তখন হয়তো গরীব মানুষ সুফল পাবে।
৯। আমি এই বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে বেশ পড়াশোনা করেছি। সামাজিক ব্যবসা আর ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে অচিরেই একটা লেখা লেখার আশা রাখছি।
১০। পয়েন্ট নোটেড।
---
গ্রামীণ ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ঋণের চক্র থেকে বেরোতে পারেনি এমন লোকজনের পরিসংখ্যান দরকার। কেউ সাহায্য করতে পারলে ভালো হয়।
৪ এর ব্যাপারে একটু দ্বিমত আছে। সরকারকে ট্যাক্স দিলে, প্রান্তিক ঋণগ্রহীতাদের কে বেশি হারে সুদ দিতে হত, ব্যাপারটা তো এমন না। কারণ এমনিতে সুদের হারতো কোনমাত্রায় কম না। আর সরকারের ট্যাক্স পাওয়ার ব্যাপারে,
লিংক টা দেখতে পারেন এই উদ্ধৃতির রেফারেন্স হিসেবে।
বাকি পয়েন্ট গুলোর সাথে মোটামুটি একমত।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নরওয়ের সাংবাদিকের রিপোর্ট এর ব্যাপারে আমি কিছু তথ্য দিতে পারি। এটি করা হয়েছে, brennpunkt (ennlish- burning point), http://nrk.no/brennpunkt/, সিরিজের আওতায়। যা নরওয়ে সরকারে বিভিন্ন নীতির উপরেও সমালোচনা করে, বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট তৈরি করে।
কী দিলেন এইটা? সচলায়তনে জার্মান, ফরাসী এমনকি স্প্যানিশ জানা দুয়েকজনও হয়তো পাওয়া যাবে কিন্তু নরওয়েজিয়ান মনে হয় না কেউ জানে। এই সাইটটার ইংরেজী অনুবাদ দিলে আপনার লিঙ্কটা যথার্থ হতে পারতো।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে
সহমত।
"এ ব্যাপারে ইউনুস কে ফোকাস না করে 'মাইক্রোক্রেডিট'এর ভাল, খারাপ দিকগুলো বিভিন্ন দিক দিয়ে বিশ্লেষন করলেই আমরা অনেক বেশি সচেতন হতে পারব। "
জমিরা আর রহিমার একটি গরু বা ছাগল এর মালিক হওয়াকে ফোকাস করে ইউনুস সাহেব যেভাবে সফল, বিলকিস আর মরিয়ম এর ঋনের দায়ে ঘরের টিন খোলাকে ফোকাস করে ব্যর্থ প্রমান করার চেষ্টা সমার্থক। সবই গল্প, বাস্তব পরিসংখ্যান পাওয়া যায়না। ইউনুস কে গালি দিয়ে গরিবের হয়ে কথা বলার একটা কল্পনাপ্রসূত মানবিক সুখ পাওয়া যায় হয়ত, কাজের কাজ কিছু হয়না, এভাবে হবেওনা। সাদা চামড়ার দেশের পুজনীয় সাংবাদিক এর রিপোর্ট নিয়ে নিজেদের গালাগালি কে জাস্টিফাইড ভাবার আনন্দ আর আস্ফালন কাপুরুষতা। গ্রামীনের মাইক্রোক্রেডিট যদি অকার্যকর হয় তবে ইউনুস কে গালাগালি না করে মাইক্রোক্রেডিট এর কুফল নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষনা করা উচিত। অবশ্য সাদা চামড়ার কেউ সার্টিফাই না করলে সেটে বিশ্বাসযোগ্য হবে কিনা সন্দেহ।
ধন্যবাদ।
--বোধকম্প
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রফেসর ইউনুস এবং তাঁর মাইক্রোক্রেডিট ও নরওয়ে নিয়ে একটি গল্প লিখেছিলাম।
শুয়াচান পাখি
http://www.facebook.com/note.php?note_id=10150235957485338
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
একটা তথ্য দেই, ১৯৮৬ সালের পর নোরাড বাংলাদেশ রেলওয়েতে ফাইবার অপটিক কেবল্ বসানো শুরু করে। স্টেশনগুলোর মধ্যকার যোগাযোগ, নিজেদের অফিসগুলোর মধ্যে যোগাযোগ, ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম, ব্লক কন্ট্রোল সিস্টেম এগুলো চালানোর জন্য এই লাইন বসানো হয়। আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটিতে ভুল কিছু নেই। কিন্তু যারা বাংলাদেশ রেলওয়ে ও তার উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জানেন তারা জানেন যে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে এমন একটি বিষয়ের পরিকল্পনা করা, নরওয়ে থেকে তার জন্য ফান্ড যোগাড় করা একটা অসম্ভব ব্যাপার।
তো সেই আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাংলাদেশ রেলওয়েতে কোন বৈপ্লবিক পরিবর্তন দূরে থাক এর মাধ্যমে যে ধরণের সেবা রেলওয়ের গ্রাহকদের দেয়া সম্ভব সেগুলোতেও পৌঁছাতে পারেনি। নোরাড নিজ উদ্যোগে এই কাজটা কেন করেছে সেটা স্পষ্ট হয় যখন ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০ বছরের জন্য গ্রামীনফোনকে ঐ ফাইবার অপটিক লাইন নূন্যতম মূল্যে লিজ দেয়। এই এক ফাইবার অপটিক লাইনের বদৌলতে গ্রামীনফোন তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এমন এক দূরত্বে চলে যায় যেটা তাদের পক্ষে অতিক্রম করা দুরূহ হয়ে পড়ে। সিটিসেল তার আগে পাঁচ বছর ধরে মনোপলি ব্যবসা করলেও এই লাইন লিজ নিতে পারেনি। বস্তুতঃ বাংলাদেশ রেলওয়ে যে তার ফাইবার অপটিক লাইন কাউকে লিজ দেবে এমনটাও আলোচনায় ছিলনা। আলোচনায় থাকলে টিএন্ডটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এটা পাবার কথা।
এটা যদি আবিষ্কৃত হয় যে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ফাইবার অপটিক লাইন বসানোর জন্য নোরাডের ঐ ফান্ড আসলে টেলিনরের ফান্ড ছিল তাহলে আমরা কেউ অবাক হবনা। এমন সূক্ষ্ম ব্যবসায়িক মারপ্যাঁচ সব ব্যবসায়ীই করে থাকে। এখানে গ্রামীন কল্যানও তাই করেছে। গ্রামীন ব্যাঙ্ক - গ্রামীন কল্যান সংক্রান্ত এখনকার সমস্যাটি নোরাড-নরওয়ে সরকারকে ম্যানেজ করতে না পারার সমস্যা। নৈতিকতার প্রশ্নগুলো এখানে তোলার কোনো দরকার নেই। উভয় পক্ষই দরিদ্র মানুষদের দুরবস্থা নিয়ে ব্যবসা করে - দারিদ্রকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে জিইয়ে রেখে।
ব্যবসায়ী ব্যবসা করবে, মুনাফা করবে, মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করবে, নিজের পাওনা নৃশংসভাবে আদায় করবে, নিজেরটা বুঝে নেবার সময় নৈতিকতার ধার ধারবে কম এমনটা আমরা দেখে অভ্যস্থ তাই কিছু মনে করিনা। গা-টা তখনই জ্বলে যখন কেউ এই ব্যবসাটিতে মহত্ত্ব আরোপের চেষ্টা করে। ব্যবসায়ীর পিঠে ডানা লাগানো থাকলেও সে দেবদূত নয়, তার মানবিক সীমাবদ্ধতা স্বাভাবিক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
"গ্রামীনফোনে" গ্রামীন ব্যাংকের লাভ, টেলিনরের তুলনায় খুবই সামান্য। ইউনুস যখন টেলিনরকে চুক্তির কথা মনে করিয়ে দিলো, টেলিনরের শেয়ার নিতে চাইল তখন থেকেই বিপত্তির শুরু। অথচ "গ্রামীণফোন" এ গ্রামীণ শব্দটি না থাকলে কী হতে পারত আমরা অনুমান করতে পারি।
আসলেই।
'মন্দের ভালো'টা 'আদর্শ' অবস্থা বা ব্যবস্থা না হতে পারে, কিন্তু আদর্শ বা বাঞ্ছনীয় অবস্থা বা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে ঐ মন্দের-ভালোটাই কি বিদ্যমান অবস্থার প্রেক্ষিতে 'একমাত্র' ভালো বা শ্রেয়তর বিকল্প নয় ? যারা ঐ নিরুপায় মানুষগুলাকে কথার ফুলঝুরির পরিবর্তে সত্যি সত্যি কোন শ্রেয়তর বিকল্প প্রকৃত বাস্তবে প্রোভাইড না করে, বাস্তবায়িত না করেই, ইউনুসকে একবিংশ-শতাব্দীর মহা-শাইলক ও মহা-ভিলেন এবং ক্ষুদ্রঋন ব্যবস্থাকে মহা-শাইলকতন্ত্র হিসাবে ঘোষনা দিয়ে অবিলম্বে ক্রুশিফাই করে ধ্বংস করার মাধ্যম ঐ নিরুপায় মানুষগুলার হাত থেকে তাদের 'মন্দের ভালোর' একমাত্র প্রাপ্তিযোগ্য-বিকল্প বা ক্রাচটুকুও কেড়ে নিয়ে তাদেরকে বিকল্পহীণ অসহায়ত্বের নিরালম্ব চুড়ান্ত গহ্বরে ঠেলে দিতে চান, তারা কি আরো সহস্রগুনে বেশি অমানবিক নন ?
অনুদান নয় ঋণ, বার্ষিক ২% হারে। চুক্তিটি হয় বাংলাদেশ ও সংশ্লিষ্ট দেশের মধ্যে।
১০ ফেব্রু, ৯৮: নোরাড আবিষ্কার করে না, আর্থিক প্রতিবেদনে ফুটনোটে টাকা সরানোর বিষয়টি উল্লেখ ছিল। তবে সরানোর আগে নোরাডকে ও অন্যান্য ঋণদাতাকে জানানো হয় নি। সিডা কোন চাপ দেয়নি, বরং নোরাডা সিডাকে বলেছিলো গ্রামীণকে চাপ দেয়ার জন্য। তিনশ মিলিয়ন মানে তিনশ কোটি না
গ্রামীণ কল্যাণ নট-ফর-প্রফিট। কাজেই লাভ যা হবে তা গ্রামীণের চাকুরেরাই পাবে।
কেবল নোরাড চাপ দিয়েছে। ৬০৮মিলিয়নের মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন এসছিল নোরাড থেকে, বাকিটা অন্যদের থেকে। নোরাড তার থেকে ১৭০ মিল সরানো সাপেক্ষে সমঝোতা করে।
গ্রামীণ কল্যাণে টাকা সরানোর উদ্দেশ্য অবশ্যই ট্যাক্স কমানো। ট্যাক্স ফাঁকি (evasion) আর কমানো (minimisation/avoidance) এক কথা না। ডেলি স্টার যে ইমেলের কথা উল্লেখ করেছে, তা অন্য কোথাও জানা যাচ্ছে না। গতকাল ইউনুস ফাউন্ডেশন থেকে যে বক্তব্য রিলিজ করেছে তাতেও ট্যাক্সের কথা ছিল।
বিপরীত নয়। গ্রামীণকে কখনই কর দিতে হয়নি ঠিক, কিন্তু এক্সেমপশনটা দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। যখন গ্রামীণ কল্যান গঠন করা হয়, তখন এক্সেমপশনটা প্রায় এক্সপায়ার হয়ে গিয়েছিলো।
পরিসংখ্যান জানা জরুরি,
এ ধরনের উপসংহারের আগেই
তথ্যবিভ্রাটগুলো ঠিক্কর্লাম। অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
চমৎকার পর্যালোচনা। দেখি, সামনে আর কী আসে।
কামরুল হাসান রাঙা
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
অত্যন্ত বিশ্লেষনধর্মী লেখাটার জন্যে শুভাশীষ ভাইকে ধন্যবাদ। আমি এনজিও সেক্টরে চাকরি করি ১০ বছর হয়ে গেলো। বিভিন্ন সঙ্গত কারনে ক্ষুদ্রঋণ বিষয়টাকে কখোনোই ভালো লাগাতে পারিনি। আমি একটু আমার অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে শেয়ার করতে চাই।
১. এনজিওগুলো ক্ষুদ্রঋণ যতোটা না দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষে পরিচালিত করে তার থেকে বেশি করে থাকে সংস্থার সাইসটেইনেবিলিটির জন্যে। বিদেশী দাতাদের কাছ থেকে ফান্ড পাওয়া অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক, সংস্থার ক্যাপাসিটি থাকতে হয়। তাই সহজে সংস্থা চালিয়ে নেয়ার উপায় হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। দারিদ্র বিমোচন ইস্যু হচ্ছে নাথিং বাট বোগাস।
২. ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালানোর পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্যবসা। অধিকাংশ স্থানীয় সংস্থার পরিচালকমন্ডলী/নীতিনির্ধাকরা বেনামে চড়া সুদে সংস্থায় অর্থলগ্নী করে থাকে।
৩. দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের কর্মীরা অপেক্ষাকৃত কম বেতনে কাজ করেন। আমি জানতে চাইলে তারা বলেন যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের পজিশনগুলো অনেকটা স্থায়ী। দাতা সহায়তায় পরিচালিত প্রজেক্টগুলো একটা সময়ের পরে বন্ধ হয়ে যায় একং কর্মীরা রিট্রেঞ্চড হয়ে যায়। তাই কর্মীরা খুশীমনেই কম বেতনে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে কাজ করেন।
এটা অত্যন্ত সত্যি যে ক্ষুদ্রঋণ কর্মকান্ডের মাধ্যমে যদি বেনিফিশিয়ারি দারিদ্র্যের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে যান, তবে ব্যবসা চলবে কিভাবে। তাই ঋণের পরে ঋণ দিয়ে গরীবকে আরও গরীব বানানোই এই ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য। খুব কমই উদাহরণ দেখা যায় যে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জিত হয়েছে।
সহজলভ্যতার কারণে ক্ষুদ্রঋণ নেওয়া অনেকের নেশায় পরিনত হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বেনিফিশিয়ারিরা এক সংস্থার ঋণ দিয়ে অন্য সংস্থার কিস্তি পরিশোধ করে থাকেন। এমনও উদাহরণ দেখেছি যে নতুন বেয়াই সাহেব বেড়াতে আসবে, তাকে আপ্যায়নের জন্যেও মানুষ এনজিও থেকে টাকা নিয়ে খাশি জবাই দিচ্ছেন।
ক্ষুদ্রঋণের তো দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না কেনো? এর পিছনের কাহিনী হচ্ছে সংস্থাগুলো মানুষকে টাকা দিচ্ছে কিন্তু ওই টাকা ব্যবহার করার মতো সক্ষমতার উন্নয়ণ করা হচ্ছেনা। ঋণের টাকা ব্যবহারের সঠিক ভাবে বা সততার সাথে কোনও প্রগ্রেস মনিটরিং করা হচ্ছেনা। তাহলে কেনো হচ্ছেনা? কারণ অধিকাংশ সংস্থাগুলো চায়না গরীব মানুষ স্বনির্ভর হোক। মোটকথা, বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির ইকনোমিক এমপাওয়ারমেন্টের জন্যে যে শর্তগুলো প্রয়োজন ক্ষুদ্রঋণ তার মধ্যে শুধু টাকা দিয়েই থেমে যাচ্ছে। বাকিগুলোর নামও তারা মুখে আনছেনা। যেমন, স্কিলস বেইসড ট্রেনিং, মার্কেট একসেস এবং মার্কেট লিংকেজ, ঋণগ্রহীতাদের নিজস্ব গ্রুপ সেভিংস এন্ড লোন, ক্যাপিটাল জেনারেশন, ইত্যাদি।
শেষ করবো আমার একটা অভিজ্ঞতা থেকে। ২০০৯ সালে আমি যখন ইউএনডিপির একটা প্রজেক্টের ফিল্ড টিম লিডার, আমার বস জানালেন একটা তদন্তে যেতে হবে। পিরোজপু জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার একটা গ্রামে আমাদের একটা পার্টনার সংস্থা একজন বেনিফিশিয়ারির বাড়ি ভেঙে নিয়ে এসেছে, এইমর্মে পেপারে খবর ছাপা হয়েছে। আমাকে বলা হলো ঘটনা তদন্ত করতে। আমি সংস্থার কর্মীদের সাথে কথা বললে তারা ঘর ভাঙার বিষয়টা অস্বীকার করলো। আমি মঠবাড়িয়ায় আমার পাজেরো রেখে ভাড়ার হোন্ডা নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলাম। একদিন পর তখনও সেখানে কিছু লোকজন আর দুএকজন পুলিশ উপস্থিত, ঘরটা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি তবে ভেঙেচুরে দেওয়া হয়েছে। একজন কৌতুহলী সেজে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে গেলাম। জানলাম এই বাড়ির মালিক একটা হতদরিদ্র হিন্দু পরিবার। তারা মোট ২৫ টা সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে এখন খেলাপি হয়ে ইনডিয়া চলে গেছে। এনজিওগুলোর লোকজন এসেছিলো ঘর খুলে নিয়ে যেতে কিন্তু কিছু স্থানীয় লোকের হস্তক্ষেপে পুলিশ এসে যাওয়ায় ঘর আর নিতে পারেনি কিন্তু ভেঙেচুরে রেখে গেছে।
এই হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ। আমি অন্ততঃ বলবো আমার চোখে এর কোনও ভালো উদাহরণ পড়েনি দুএকটা বিচ্ছিন্ন উদাহরণ ছাড়া। একজন গরীব মানুষ কাঁদতে কাঁদতে তার দুটো ছাগলের দড়ি এনজিওকর্মীর হাতে তুলে দিচ্ছে, এটা দেখে ভালো লাগার কথা না।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
তারা মোট ২৫ টা সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে এখন খেলাপি হয়ে ইনডিয়া চলে গেছে।
এই উদাহরনে ক্ষুদ্রঋনের অপকারিতার কতটুকু দেখা গেল জানিনা, তবে ২৫ টা সমিতি একই সময়ে একজনকে ঋন দেয়ার উপায় থাকলে বাংলাদেশী ক্ষুদ্রঋনকাঠামোর একটি অনেক বড় দুর্বতা রয়ে গেছে। যে 'ব্যাঙ্কেবিলিটি' সমস্যা এড়িয়ে যাবে বলে ক্ষুদ্রঋনের সুত্রপাত, এই উদাহরনে দেখা যাচ্ছে ক্ষুদ্রঋন সমিতির আধিক্যে তার বিপরীতে অতি-তারল্যের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
পলিসি অনুযায়ী একজনকে ২৫ সমিতি থেকে ঋণদান একবারেই অসম্ভব ব্যাপার। সাধারণভাবে পরিবারের বিভিন্ন সদস্যেরা ঋণ নিয়ে থাকেন। তবে একজন ঋণগ্রহীতা তার ঋণের আবেদনপত্রে কখোনেই ডিক্লেয়ার করেন না যে তার আরেকটা ঋণ আছে। এটা সংশ্লিষ্ট এনজিওকর্মীমাত্রেই জানেন। এবং জেনেশুনে তারা ওই লোকটাকে আরেকটা ঋণের চক্রে আবদ্ধ করেন।
আরেকটা বিষয় খুব খেয়াল করতে হবে-
এইসব ব্যাক্তিগত কোল্যাটারালবিহীন ঋনের যে কোনও ধরণের খেলাপের জন্যে কালেকটিভলি তাদের গ্রুপ দায়ী। একজন সদস্যের খেলাপের দায় বর্তায় পুরো দলের উপরে। ছাগল নিয়ে নেওয়া বা টিন খুলে নেওয়া, এটা এনজিও করলেও দায় পড়ে গ্রুপের অন্যান্য সদস্যদের উপরে কারণ খেলাপীঋণের রিকভারির দায়িত্ব গোটা দলের। তাই এনজিওর বিরুদ্ধে কোনও লিগ্যাল এ্যাকশনেও যাওয়া যায় না। গ্রুপ মেম্বারদের উপস্থিতিতেই এনজিওগুলো ছাগল বা টিন নিয়ে নেয়। বলা হয় যে গ্রুপ মেম্বাররা খেলাপির দায় শোধ করেছেন।
ফ্রেমওয়াকে আসলে ক্ষুদ্রঋণের ভালো দিকগুলোই লেখা আছে কিন্তু বাস্তবায়ন পর্যায়ে গিয়ে বিষয়গুলো আসলেই খুব নোংরামিতে ভরা। আমি গ্রামে গ্রামে গিয়ে, ঘুরে ক্ষুদ্রঋণগ্রহীতাদের যে দুরাবস্থা দেখেছি, তাতে ভাই আমি খুবই মর্মাহত। এমন কোনও সুখকর অভিজ্ঞতা আমার হয়নি যাতে আমি বলতে পারি "মাইক্রোফাইন্যান্স হ্যাজ ইটস ওউন বিউটি"।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আচ্ছা, এই মন্তব্যটা পড়তে পড়তে একটা প্রশ্ন এলো মনে। (যদিও প্রশ্নটা এই মন্তব্যের স্কোপে না মনে হচ্ছে)
ক্ষুদ্রঋণ-এর কারবার করে গ্রামীণব্যাংক বেশ ফুলে ফেঁপে উঠেছে দেখেছি আমরা। আমরা জানি এই ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা অলরেডি 'ইন আ ডেস্টিটিউট'। এখন এই পুরো গ্রাহকের সেটটা কল্পনা করি। এই সেট থেকেই তো গ্রামীণের 'কাড়ি কাড়ি অর্থ জেনারেট' হচ্ছে। এটা কেমনে হচ্ছে যদি ঋণ নিয়ে এই জনগোষ্ঠি 'উৎপাদনমুখী' হতে না পারে? কালেকটিভলি চিন্তা করলে উত্তরটা কী? টাকা তো হাওয়া থেকে আসবে না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইয়ে একটা বোকার প্রশ্ন করি। ২৫ টা সমিতি থেকে ঋণ কি কোনো 'ঋণের দুষ্ট চক্রে' পড়ে নিয়েছে। নাকি নানান সোর্স থেকে ঋণ নিয়ে চলে গেছে তারা? আপনি যেহেতু তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। এই ব্যাপারটা খতিয়ে দেখেছিলেন কি? এই ২৫ টা ঋণ নেওয়ার 'সময় ব্যবধান' কত? কারণ এক ঋণের দায়ে পড়ে আরেকটা নিতে গেলেও তো প্রতিটাতে বছর খানেক (নাকি মাস তিনেক?) সময় লাগার কথা। সেই হিসাবে অনেক সময়ের ব্যাপার।
সেক্ষেত্রে অন্য রকম উপসংহার টানার অবকাশ রয়েছে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আপনি মোটেও বোকার মতো প্রশ্ন করেননি, ঘটনার পিছনে যে কোনও ধরণের সম্ভাবনাই থাকতে পারে। তবে মোটামুটি ঋণগুলো ওই পরিবার প্রায় দুই বছর সময়কালের মধ্যে নিয়েছিলেন। আর লোকাল এনজিওগুলো কোনও নিয়মকানুনের ধার ধারে না। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য থাকে ঋণ ডিসবার্স করা। যদিও ক্ষুদ্রঋণের কিছু নিয়মকানুন আছে যে আবেদনকারীর অন্য কোথাও কোনও ঋণ আছে কি না। তবে ফরম পুরণের সময় কেউই তার অন্য ঋণের কথা ডিক্লেয়ার করে না। করলে তার এলিজিবিলিটি থাকে না বা কমে যায়। এটা সংশ্লিষ্ট এলাকার এবং সংস্থার কর্মীরা জানে।
ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচীর আওতায় সাধারণতঃ ব্যাক্তিগত কোল্যাটারালবিহীন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তবে একেবারেই যে কোল্যাটারাল নেই তা না, গ্রুপের যে কোনও একজনের ঋণখেলাপের জন্যে দায় সব সদস্য কালেকটিভলি বহন করে থাকে। এই পরিবারের খেলাপি ঋণ সর্বসাকুল্যে দেড়লাখের বেশি হবেনা এবং এই দায় পুঞ্জীভূত হয়েছে দুইবছর ধরে। তাই উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঋণ নিয়ে ভেগে যায়নি পরিবারটা, এটা আমার ধারণা। আর আমার তদন্তের স্কোপ ছিলো যে আমাদের পার্টনার সংস্থা ঘর ভাঙার সাথে জড়িত ছিলো কি না সেটাই। তবে বাস্তবতা হচ্ছে যে এই ঘর ভাঙার পিছনে ক্ষুব্ধ অপর গ্রুপ মেম্বারদের উস্কানী ছিলো। কারণ এই দায় এখন তাদের বহন করতে হবে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সাধারণ মানুষের সাধারণ ক্ষোভকে বাড়ানোর জন্য অনেক দিন ধরেই কিছু পক্ষ কাজ করে যাচ্ছিলো। তাদের অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দেয় এই ডকুমেন্টারি। তথ্য এবং তত্ত্ব অনুসন্ধান করে বিস্তারিত লেখায় অনেকের ভুল ভাঙবে আশা করা যায়।
আসলে নোবেল পাওয়াতে যতো বাঙালি খুশি হয়েছে তার চাইতেও মনে হয় এই ডকুমেন্টারিতে ড. ইউনুসকে জোচ্চোর প্রমাণ করার চেষ্টায় খুশি হয়েছে বেশি। নিন্দা আর কুৎসা বড়ই উপভোগ্য আমাদের কাছে।
বাঙালি-দোজখে নাকি প্রহরী লাগে না ! কথাটা তাহলে সত্যি !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আগাগোড়া পুরাটুক পড়লাম। কয়েকজনকে ফোন করেও কিছু অংশ পড়ে শোনালাম। গত কয়েকদিন ধরে বেশ আলোচনার ঝড় চলছে আমদের মধ্যে, মানে আমাদের আড্ডার বন্ধুদের মধ্যে। লেখাটা অনেক ধোঁয়াশা ব্যাপার পরিস্কার করলো, অনেক 'মেনে নিতে বুক ফেটে যায়' এমন বিষয় সহজে মেনে নিতে সাহায্য করলো। লেখককে ও তার সহযোগীদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ব্যাপারটি সম্পুর্নভাবে একটা প্রশাসনিক টানাপোড়ন ছিলো, যেটা সমস্ত প্রতিষ্ঠানেই কখনো কখনো ঘটে। হঠাৎ এই সময়ে এমন পুরানো ঘটনা নিয়ে নতুন করে পানি ঘোলা করার মধ্যে রাজনীতি দেখলেন আমার একজন প্রিয় মানুষ।
খালেদা জিয়া যেমন বাড়িছাড়া হয়ে অনিবার্য সংঘাতের দিকে গিয়েছে ... ... এখন পরের নির্বাচনে আ.লীগ বা বিএনপি কেউই অপরের কাছে হেরে অস্তিত্ব বা অত্যাচারের স্টিম রোলারের নিচে পড়তে চায় না। ড. ইউনুস যেন সেই সময়ে ৩য় পক্ষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে না পারে সেই জন্য একটু অ্যাডভান্স গ্রাউন্ডওয়র্ক করে রাখা হল। তখন সার্ভাইব করার জন্য দূর্বলপক্ষ/উভয়পক্ষই আবার তত্বাবধায়ক সরকার চাইবে।
আরেকটি সমান্তরাল ঘটনা হল: এই ডামাডোলের সময়ের ৩দিন (১-৩ ডিসেম্বর) বাসায় বাসায় ফ্রী আমাদের সময় দিয়েছে (বলেছে সৌজন্য সংখ্যা)! দুইয়ে দুইয়ে চাইর মিলালে কি খুব ভুল হবে?!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আমাদের সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বেশ বিতর্কিত লোক। সুযোগসন্ধানী। ফ্রি-তে দিছে উদ্দেশ্য নিয়েই।
লেখাটার জন্যে অনেক ধন্যবাদ!
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আমার একটা ছোট প্রশ্ন আছে। এ ঘটনায় কিছু কিছু বাঙ্গালি'র বা বাংলাদেশি'র এত আনন্দ কেন? প্রকাশের দিন এবং এর পরের কিছুদিনও টুইটার, ফেসবুকে, ব্লগ, ফোরামে এ নিয়ে মানুষের মাতামাতি দেখে একটু অবাকই হয়েছি। আমার মনে হয় না, ইউনুস নোবেল পাওয়ার পর এতটা দেখেছিলাম!
অথচ এটা যদি সত্যি হয় (দুঃখ উপরের লাফালাফিগুলো মূল ঘটনা সত্য হওয়ার আগেই করা), তাহলে জাতি হিসেবে আমাদের দূর্ভাগ্য। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমাদের বছরের ৩ নম্বর ঈদ এটা :( :(।
ব্যস্ততার মধ্যেও তোর লেখাটা পড়লাম। চমৎকার বিশ্লেষন, অনেক কিছু পরিষ্কার হলো। একটি জিজ্ঞাস্য ছিল টাইমলাইন নিয়েঃ
১ এপ্রিল ১৯৯৮ এর পর থেকে ২২ আগষ্ট ২০১০ এর মাঝের কোন তথ্য নেই কেন? এই দীর্ঘ সময়ে কি বিষয়টা আলোচনাধীন ছিল? হঠাৎ করে ১২ বছর পরে এটি নিয়ে এতো হইচই শুরু হলো কেন?
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
মন্তব্যের জন্য থ্যাংকস, দোস্ত।
লেখাটা পড়ে মনে পরে গেল 'অল্প বিদ্যা ভয়ংকারী'!
এটা ঠিক। আমার বিদ্যা বেশ অল্প।
বেশি বিদ্যার কথাও দেখতে ও শুনতে মঞ্চায়। আফটার অল আমার নিজের জ্ঞানো খুব অল্প কিনা।
আশা করি একটু আলোকিত করবেন।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম । লেখককে ধন্যবাদ । আমাদের প্রাপ্তির জায়গায় কলঙ্ক লেপনের দায়ভার বহন করা সহজ কাজ নয় । ড. ইউনুস নিজেই জানেন তিনি কি করবেন । সরকারের উচিত এ ব্যাপারে দৃষ্টিপাত করা ।
@hungrycoder, বেশির ভাগ লোকের আত্নীয় স্বজন এগুলোর সাথে সম্পৃক্ত। হয় ঋণ গ্রহীতা না হয় ঋণ দাতাদের কেউ হয়ে। আর এ বিষয়টাই কেউই খুশিনা। তাই সবাই এরকম আচরন করছে। নোবেল-ও যতটা না খুশি, এটাই খুশি। আমি আমার দেশের এলাকার লোকজনকে দেখেছি। আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, আমি এই ব্যবসার সাথে জড়িত হওয়ার আশা পোষন করছি 2008 থেকে। আমার নিজের একটা এনজিও খোলার ইচ্ছা আছে। আর কখনোই অন্য এলাকায় খুলব না। তাতেই যত গন্ডগোলটা লাগে। আসলে, যারা ফিল্ডে থাকে বা গেছে, তারাই এটা ভাল বুঝবে বা বলতে পারবে। দূর থেকে হাহাকার গুলো দেখা যায়না।
গ্রামীণ ব্যাংকের যেটা খারাপ লেগেছে, তারা যদি বুঝতে পারে আপনি ঋণ শোধ করতে পারবেন, তবে টাকা নিয়ে কি করলেন তা আর দেখে না, তখনই ভজঘট পাকায়।টবহপি ঢহটডপড
পোস্টটার পিছনে বিষম খেটেছেন, ধন্যবাদ সে-জন্যে। একটা কথা বলতেই হচ্ছে, মনে হচ্ছে আপনি ক্ষুদ্রঋণকে বা ইউনূস সাহেবকে খুব একটা পছন্দ করেন না। এই বিষয়টা পোস্টটাকে খাটো করেছে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে থিওরি হিসেবেও মাইক্রোক্রেডিট খুব নবীন, এখনো তার মধ্যে ফাঁকফোকড় থাকতে পারে। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই সেটা মেনে নেওয়ার মতো মানসিকতা, এবং সেসব ফাঁকফোকড় বন্ধ করার তাড়না, দুই-ই থাকতে হবে।
স্বপ্নসতী
ক্যানাডা, রিচ্মন্ড থেকে
অপ্রাসঙ্গিক তাও জানাচ্ছি। ইউনূস সাহেব আমার একই স্কুল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। আন্তর্জাতিক ক্রমাগত স্বীকৃতির কারণে তাঁর প্রতি এক ধরণের মোহ আছে।
ক্ষুদ্র ঋণ প্রসঙ্গে আমি আমার জীবনের এক বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এর কথা। নতুন চাকরী নিয়ে মাগুরা জেলার শ্রীপুরে ছিলাম তখন। আজাহার উদ্দিন নামে এক ভদ্রলোকের হোটেলে ৩ বেলা খেয়ে দিনাতিপাত করতাম।
হোটেল যখন বললাম, তখন এর বর্ণনাটাও দিচ্ছি। দশ ফুট বাই দশ ফুট মাপের একটা কাঁচা ঘর। ঘর বলতে চালা। চারদিকের কোনদিকেই কোন পার্টিশন বা বেড়া ছিল না। ফার্নিচার বলতে স্কুলের ফেলে দেয়া পুরনো বেঞ্চ যা জোড়া তালি মারা। উঁচু বেঞ্চ দু'টি, খাবার দেয়ার জন্য। আর নীচু দু'টি বসার জন্য। পাশে আজাহার চাচা'র বাবুর্চিখানা। মাটির চুলায় চাচি ঘরোয়া রান্না করতেন। খুবই অল্প তেল মশলায়। বৃষ্টি এলে তা না থামা পর্যন্ত রান্না/ খাওয়া বন্ধ হয়ে যেতো।
অন্যদের ক্ষেত্রে খাওয়ার সাথে সাথে বিল নিয়ে নিলেও তিনি আমার বিল নিতেন সপ্তাহে। কারণ এ টাকায় তিনি ক্ষুদ্র ঋণ (আমরা ক্ষুদ্র ঋণ বললে কি হবে, এ ঋণ চাচার কাছে ছিল অনেক বড়ো বোঝা) এর কিস্তি শোধ করতেন।
নিজের ষ্টোভ হাঁড়ি পাতিল-সব থাকা সত্বেও ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি শোধ করার জন্য চাচা'র ঘোলা চোখের আকুতি দেখে কখনও নিজে রান্না করে খাইনি। পাক্কা পাঁচটা বছর।
যে তিমিরে চাচাকে প্রথম দেখেছিলাম সে তিমিরে রেখেই একদিন আমি বদলী হয়ে চলে এসেছি।
অবশেষে একদিন এ দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন চাচা। খোঁজ নিয়ে দেখেছি ঋণ শোধ হয়নি তখনও।
সে ঋণ শোধ করে যাচ্ছেন চাচি।
(apology ami abar Bangla bihin)
I personally 'think' Dr. Yunus and his aides are intentionally using 'Telenor' as a smokescreen/emotionally divert our attention. Telenor is a kind of vampire in Bangladesh and there is no doubt about this. But Dr. Yunus’s deeds were widely questioned /criticised almost 10 years ago; please find the links below:
1. http://online.wsj.com/public/resources/documents/pearl112701.htm
2
http://blogs.cgdev.org/open_book/2010/03/a-little-more-history-on-pearl-and-grameen.php
3.
http://blogs.cgdev.org/open_book/2010/02/grameen-bank-which-pioneered-loans-for-the-poor-has-hit-a-repayment-snag.php
http://webcache.googleusercontent.com/search?q=cache:-DZmFNw6B-0J:www.networkers.org/userfiles/A%2520Nobel%2520loan%2520shark%2520Patrick%2520Bond.doc+Daniel+pearl+Dr.+Yunus+WSJ&cd=6&hl=en&ct=clnk&gl=uk
5.
আমি টম হেইনম্যানের ডকুমেন্টারীটা না দেখলেও বিভিন্ন রিপোর্ট এবং এই লেখা পড়ে আন্দাজ করছি ডকুমেন্টারীটায় দুটো অভিযোগ তোলা হয়েছে:
১। গ্রামীণ ব্যাংক মূলতঃ একটা ভাঁওতা (Ponzi scheme?)
২। গ্রামীণ ব্যাংক সাথে জড়িত অর্থ আত্মাসাতের অভিযোগ।
শুভাশীষদা অর্থ আত্মাসাতের ব্যাপারটা অনেকটা ক্ষতিয়ে দেখেছেন। আমি প্রথম ব্যাপারটা ক্ষতিয়ে দেখতে আগ্রহী।
এই লেখাটা নিয়ে আরো কিছু আলাপ করতে আগ্রহী। সময় নিয়ে বসব।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আরেকটি রিপোর্ট। এবারের বিষয় পল্লীফোন।
অফিসে বসে খুব দ্রুত লিংকটা পড়ে গেলাম শুভাশীষদা। ২০০৩ সালে বাগেরহাট জেলার চিতলমারি উপজেলায় পার্টনার এনজিও ভিজিটে গিয়ে এক গ্রাম্য হাটে ফোন করতে যাই। ওখানে ফোন নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল ছিলো বিধায় এ্যান্টেনা লাগানো এক পল্লীফোনের দোকানে যাই। কথাপ্রসঙ্গে দোকানদারের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে তার বিধবা মা এই ফোনের মালিক। তবে পুরো ব্যবসাটাই সে নিয়ন্ত্রণ করছে। তার বক্তব্যমতে, মায়ের সবকিছুই তো আমাদের। মরলে তো আমরাই ওয়ারিশ। বুঝতে আর বাকি থাকলো না যে ওই হতভাগিনী বিধবার কতটুকু 'এমপাওয়ারমেন্ট' হয়েছে বা 'এ্যাকসেস টু রিসোর্সেস' হয়েছে এই পল্লীফোন থেকে। ছেলের বক্তব্যমতে সে মাকে খাওয়ায়-পরায়, এইতো অনেক।
আমাদের শহরে একসময় ফোনের ব্যবসায়ীরা গ্রাম থেকে পল্লীফোনের কানেকশন বেনিফিশিয়ারিদের কাছ থেকে ভাড়ায় নিয়ে আসতো, বা ক্ষেত্রবিশেষ কিনে আনতো (এটা মৌখিক কেনাবেচা)। লাখ টাকার কানেকশন! এবং এই বিক্রির টাকা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিধবার ছেলেরা/জামাইরা নিয়ে নিতো।
এই দুটো উদাহরণ নিজের দেখা থেকে দিলাম। এর বাইরে আরও অনেক কিছু থাকতে পারে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
পল্লীফোন নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউনূস সেন্টার কি বক্তব্য দেয় দেখি।
--
হাতে গোনা দু'একটা ভালো উদাহরণ থেকে একটা বলি। এটা দেখেছি বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুণা, পিরোজপুর এবং বাগেরহাটে। গত কয়েকবছর ধরে এনজিও থেকে ক্ষুদ্রঋণের টাকা নিয়ে একটা বিশাল সংখ্যক জনগন ভাড়ায় চালানোর জন্যে হোন্ডা কিনেছেন। এদের অধিকাংশই যুবক। খুবই সামান্য কয়েকজন নারী দেখেছি যারা হোন্ডা কিনেছেন কিন্তু ভাড়ায় দিয়ে দিয়েছেন। এই হোন্ডাচালক দলের আয় মোটামুটি ভালো এবং এরা খেলাপি হচ্ছে এমনটা সচরাচর দেখা যায়না। বিশেষতঃ সিডরের পর যখন যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে তখন অধিকাংশ এলাকায় একমাত্র হোন্ডায় চড়েই সর্বত্র যাতায়ত সম্ভব ছিলো। আমি নিজেও দারুনভাবে নির্ভরশীল ছিলাম ভাড়ার হোন্ডার উপর প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়তের জন্যে। (অট. তবে আমি কখোনেই চালকসহ হোন্ডা নিতাম না, নিজেই চালাতাম। ওদের চালানোর ধরণ আমার জন্য ভীতিকর।)
অবশ্য এতে একটা অসুবিধাও দেখেছি। তা হলো, ভাড়ার হোন্ডায় এলাকা ছয়লাব হয়ে গেছে। ফলে অনেক্ষণ সিরিয়ালে অপেক্ষা করে ভাড়া ধরতে হয়। আগের থেকে তুলনামূলকভাবে আয় কমে গেছে। আর একটা মহাজনীচক্র গড়ে উঠেছে যারা নিজেরাই কিছু এনজিওর আর কিছু নিজের টাকা মিলিয়ে একটার পর একটা হোন্ডা কিনে ভাড়ায় লাগাচ্ছে।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দূর্দান্ত!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অসাধারণ। অনেক প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেছি।
ধন্যবাদ।
এই রকম একটা রিভিউ দরকার ছিল। আরো একটা রিপোর্ট দেখে মনে হচ্ছে এটা একটা সিন্ডিকেটেড সিরিয়াল অ্যাটাক। গ্রামীন ব্যাংক এর জন্য কতটুকু প্রস্তুত তাই দেখার বিষয়। দুই পার্টনার রশি টানাটানি করছে। এটা সমস্যা না। সমস্যা হল আমাদের দেশের ইমেজেও এর টান পড়ছে।
অনন্ত
কোথাও একটা সম্পর্কের দেয়ালে সুক্ষ্ণ চিড় ধরেছিল ২০০৬ সালের অক্টোবরের পরে, ২০১০ সালে সেটা বিশাল ফাটল।
আসলে সব ভালোবাসাই আপেক্ষিক, এবং কোন সম্পর্কই চিরস্থায়ী নয়।
ভালোবাসার কালে যা কিছু ছাইচাপা থাকে, বিচ্ছেদের পর সেগুলো অগ্নিকুন্ড হয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তথ্যসমৃদ্ধ এবং নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ, এই ধরণের কোন পোষ্টের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
অনেক ধন্যবাদ শুভাশীষদা।
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা
love the life you live. live the life you love.
আপনার লেখাটা পড়া হয়েছে অনেক আগেই, মন্তব্য করলাম অনেক পরে।
অনেক পরিশ্রম করে পরিষ্কারভাবে এবং পক্ষপাতহীনভাবে লেখাটা লিখেছেন – অনেক ধন্যবাদ সেজন্য (প্রামান্যচিত্রটা দেখিনি)।
আমি জানিনা আপনার এই চমৎকার লেখাটা আরও এগিয়ে গিয়ে ক্ষুদ্রঋণ কিংবা সোস্যাল বিজনেস মডেল পর্যন্ত যাবে কিনা (অথবা মাহবুব মুর্শেদ এ ব্যাপারে লিখবে কিনা)। সাধারনত এই বিষয়গুলি নিয়ে লেখালেখিগুলি একপেশে মনে হয়েছে – সচলায়তনে এরকম লেখা পক্ষপাতহীন হবে বলে মনে হয়। এর সাথে হয়ত অনেক ব্যাপারেই পাঠকের ইনপুট পাওয়া যাবে। তবে এই ‘কোটি কোটি ডলার সরানোর অভিযোগ’টা আমার কাছে তেমন শক্তিশালী মনে হয়নি।
কয়েকটা তথ্য কিছুটা পরিবর্তন হবে বলে মনে হয়। গ্রামীণ ফোন ১০% শেয়ার মার্কেটে অফলোড করার পর এখন টেলিনোরের শেয়ার ৫৫.৮% এবং গ্রামীণ টেলিকমের ৩৪.২%। আপনি বলেছেন টেলিনরের সাথে গ্রামীণ টেলিকমের মালিকানা সংক্রান্ত ঝামেলা চলার সময় টেলিনর গ্রামীণ ফোনের লোগো পালটে ফেলে ২০০৬ সালের ১৬ নভেম্বর। সাপ্তাহিক ২০০০ এর ২২ মে ২০০৯ এর সংখ্যায় আনু মোহাম্মদের ‘ক্ষুদ্রঋণের বৃহৎ বাণিজ্য’ লেখায়ও এই ব্যাপারটা এসেছে। আমি যতদূর জানি মূল জেভি অ্যাগ্রিমেন্টে ১০ মিলিওন সাবস্ক্রাইবার হলে টেলিনোরের লোগো ব্যবহার করার কথা বলা ছিল। এবং নভেম্বরেই গ্রামীণ ১০ মিলিওনে পৌছায়। এটার সাথে হয়ত ‘মালিকানা সংক্রান্ত ঝামেলা’ সরাসরি সম্পর্ক নাও থাকতে পারে।
‘কথা দিয়ে কথা রাখি নি’ জাতীয় কথাবার্তা জয়েন্ট ভেঞ্চারে খুব এফেক্টিভ না। জেভি অ্যাগ্রিমেন্টই মূল গাইড বলে মনে হয়।
সরকারের কোষাগারে জমা দেয়ার ব্যাপারে গ্রামীণ ব্যাংক এবং গ্রামীণ ফোনের রাতদিন পার্থক্য আছে। গ্রামীণ ব্যাংক কিন্তু ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ ট্যাক্সমুক্ত ছিল। আবার জুলাই ০৮ থেকে ডিসেম্বর ২০১০ পর্যন্ত ট্যাক্সমুক্ত। মধ্যের গ্যাপে কি হয়েছিল জানিনা। অন্যদিকে গ্রামীণ ফোন ট্যাক্স/ভ্যাট ছাড়াও প্রতিটা সিমকার্ড বিক্রীর জন্য সরকারকে ৮০০ টাকা কর দেয়। গ্রামীণ ফোন পুরাপুরি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং এটা খুব পরিষ্কারভাবে।
ক্ষুদ্রঋণ ব্যাপারটা কীভাবে কাজ করে, কিংবা এর সাফল্য ব্যার্থতা নিয়ে কিছুটা ধারণা থাকলেও ‘প্রকৃত মালিক গ্রামের দরিদ্র মহিলারা’ কন্সেপ্টা কীভাবে কাজ করে জানার খুব ইচ্ছা হয়। কীভাবে মালিকানা নিশ্চিত হয়, তাদের কাছে জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত করা হয়, অথবা ডিভিডেন্ট কীভাবে পায় এসব ব্যাপারগুলি। সোসাল বিজনেসের উপর বইটাও পড়তে হবে – জানতে ইচ্ছে হয় কন্সেপ্টা কীভাবে কাজ করে। গ্রামীণ ব্যাংকের ১৩ সদস্যের বোর্ডে ৩ জন সরকারী কর্মকর্তা, ১ জন এমডি এবং ৯ জন ‘দরিদ্র মহিলাদের রিপ্রেসেন্টেটিভ’। এই অবস্থায় দরিদ্র মহিলাদের রিপ্রেসেন্টেটিভরা কতটুকু ভোকাল, কিংবা...। যাক। অনেক প্রশ্ন আছে...।
বিষয়টা নিয়ে সংক্ষেপে কথা বলছিলাম আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু অলোকের সাথে। অলোক একজন সাবেক ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ এনজিওর সাবেক কোম্পানী সেক্রেটারি এবং এক্সিকিউটিভ এ্যাসিস্ট্যান্ট টু দ্য কর্ণধার। বর্তমানে অলোক পিকেএসএফ-এর একজন পলিসি কনসালট্যান্ট।
অলোক যে উক্তিগুলো প্রফেসর ইউনূস সম্পর্কে এবং তার এক্স বস সম্পর্কে করেছে তা এখানে উল্লেখ করবোনা। তবে অলোকের প্রশ্ন হচ্ছে, যে টাকা প্রফেসর ইউনূস গ্রামীন ব্যাংক থেকে সরিয়েছেন সে টাকা কোথায়? যদিও তিনি এই টাকার কিছু অংশ গ্রামীনফোনে বিনিয়োগ করেছেন, বাকী টাকা কোথায়?
যদি বাকী টাকা গ্রামীনকল্যাণে থেকে থাকে তবে প্রফেসর ইউনূসের কিছুটা হলেও ডিফেন্স থাকবে। কিন্তু যদি ওই টাকা ইউনূস সেন্টার বা অন্য কোথাও চলে যেয়ে থাকে তবে কিন্তু গোটা বিষয়টা একটা এবসোল্যুট ফ্রড এবং প্রফেসর ইউনূসের আর কোনও ডিফেন্স থাকছেনা। তবে অপেক্ষা করতে হবে তিনি কিভাবে বিষয়টার ব্যাখ্যা দেন।
ইতোমধ্যে একটা ব্যাংকও কিন্তু ঋণখেলাপের মামলা দায়ের করে বসে আছে যাতে জামিনদার হিসেবে প্রফেরস ইউনূস, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরি, প্রমূখ অভিযুক্ত।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
PKSF এর চেয়ারম্যানই হবেন (পাঞ্জাবি পরা) তো ইউনুসকে চোরই বলে দিলেন চ্যানেল আইতে। কাজেই আলোক কী বলবে তা অনুমেয়।
ইউনুসের অপরাধটা কী ছোট্ট করে বলবেন? ডিফেন্স তো পরের কথা।
প্রতিমন্তব্যে ধন্যবাদ আলমগীর ভাই। প্রথমতঃ অলোক পিকেএসএফ-এর কর্মী নয়; সে একজন স্বল্পমেয়াদি কনসালট্যান্ট। সুতরাং সে পিকেএসএফ-এর ধ্বজাধারী, সরাসরি এরকম কনক্লুশনে আসাটা বোধহয় ঠিক না।
অলোকের বক্তব্য অত্যন্ত পরিষ্কার। যেহেতু প্রফেসর ইউনূস গ্রামীন ব্যাংক থেকে দাতার বিনা অনুমতিতে টাকা গ্রামীণ কল্যানে স্থানান্তর করেছেন এবং পরবর্তীতে বিষয়টা দাতাগোষ্টির আমলে এনেছেন; সেই যুক্তিতে টাকাটা গ্রামীণ কল্যানেই থাকার কথা, অন্য কোথাও নয়। যদিও দাতা পরবর্তীতে বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আর দাতা যখন প্রফেসর ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে চাপ দেয় তখনই তার উচিত ছিলো সমুদয় টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে ফিরিয়ে দেয়া।
উপরের উদ্ধৃতি থেকে যা বোঝা যায় তা হলো প্রফেসর ইউনূস টাকা ফেরত না দিলেও টাকাটা গ্রামীণ কল্যানেই থাকার কথা, অন্য কোথাও না। যদি আমরা ধরি যে এই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টা একটা লং ষ্ট্যান্ডিং এবং পেনডিং ইস্যু হয়ে আছে; সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রফেসর ইউনূস 'পেনডিং' ইস্যুর গ্রাউন্ডে দাতার সাথে কথা বলার এবং তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সূযোগ পাবেন। কিন্তু ওই বিতর্কিত টাকা যদি গ্রামীণ কল্যান থেকে আবার অন্যত্র চলে গিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে প্রফেসর ইউনুসের ডিফেন্স দুর্বল। এটাই ছিলো বক্তব্য।
আর যদি ইন্সটিটিউশনাল আঙ্গিক থেকে বিষয়টা দেখা হয় তবে গোটা বিষয়টায় পক্ষগুলো হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ কল্যান এবং দাতা। যদি এই টাকা স্থানান্তরের বিষয়টা গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তক্রমেও হয়ে থাকে, প্রধান নির্বাহী হিসেবে প্রফেসর ইউনূসের ব্যাখ্যা প্রদানের কোনও দায়মুক্তি ঘটেনা।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
উদ্ধৃত অংশে তথ্যগত প্রমাদ আছে যা আমি প্রথম মন্তব্যে উল্লেখ করেছি। সিডা কোন ধরনের চাপ দেয়নি, এমনকি নোরাড তাদের বলা সত্বেও। তারা মনে করেছে, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে টাকা সরানো চুক্তির শর্তের ব্যতয় হলেও, তাদের মত ছিলো, যেহেতু তারা একটা কজের জন্য টাকা দিয়েছে সেটা ঠিক মতো হলেই হয়। এ দু্ই সংস্থা ছাড়া বাকি যারা আছে তারা কোন মাথাই ঘামায়নি।
গ্রামীণ কল্যাণে টাকা কী বসে থাকবে না বিনিয়োগ হবে? যে ৩০০ মিলিয়ন নোরাড দিয়েছিলো, তার থেকে ১৭০ মিলিয়ন আবার গ্রামীনে আসার শর্তে নোরাড গ্রামীনের সাথে সমঝোতা করেছে, এবং তাদের আপত্তি তুলে নিয়েছে। তারপর আর কী কথা থাকে?
গ্রামীণকে মনে হচ্ছে আর NGO রা দেখতে পারে না
খুবই পরিশ্রমসাধ্য লেখা। বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। আজই বিডি নিউজে পড়লাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের সার-সংক্ষেপ এবং টিভি চ্যানেলেও এর কিছুটা দেখলাম। সাথে সাথে মনের মধ্যে এলোমেলো কিছু প্রশ্ন তৈরি হলো।
১) প্রফেসর ইউনূসকে শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হঠাৎ এই বক্তব্য নিশ্চয়ই সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া তিনি তা বলতে পারেন না। একজন নাগরিক হিসেবে বিস্তারিত জানার অধিকার আমাদের রয়েছে। এটা কি সত্যিই একজন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিলো !
২) তিনি বলছেন গরীব মানুষের রক্ত চুষে কেউ বেশিদিন থাকতে পারে না, তাকে ধরা পড়তে হয়। কিভাবে কোথায় ধরা পড়লেন তা তিনি বলেন নি। তবে ইঙ্গিতটা মনে হয় ওই ডকুমেন্টরি।
৩) এযাবৎ কোথাও কখনো ডক্টর ইউনূসের ব্যক্তি জীবনে কোন অসততার কথা আমরা শুনি নি। ওই ডকুমেন্টরির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কোথায় কিভাবে ব্যক্তি ইউনূসকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে আবিষ্কার করলেন তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা আমাদের জানা দরকার।
৪) গরীবের রক্ত চুষে প্রফেসর ইউনূস যদি অঢেল ধন-সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কী দায়িত্ব পালন করেছেন তারও জবাবদিহিতা থাকা দরকার। তিনি এতকাল বসে বসে গরীব মানুষের রক্তচোষা দেখেছেন ?
৫) গ্রামীণ ব্যাংকে প্রফেসর ইউনূসের অবস্থান কী ? তিনি কি মালিক ? শেয়ার হোল্ডার ? না কি কেবলই সরকার কর্তৃক নিয়োজিত প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ?
৬) গ্রামীন ব্যাংকে প্রত্যেক গরীব ঋণী সদস্য ১০০ টাকা মূল্যের একজন শেয়ারহোল্ডার। এভাবে মোট শেয়ারের ৭৫ কিংবা ৮৫ শতাংশের মালিক সদস্যরা, বাকি শেয়ার সরকারের। তাহলে রক্তচোষা আয়ের কিছু রক্ত সেই গরীব সদস্যরাই নিয়েছে। আর বাকি কী পরিমাণ রক্ত সরকার নিজে পান করেছে, তার হিসাব আমরা কিভাবে পাবো ?
৭) গ্রামীণ ব্যাংকের এমপ্লয়িরা সরকারি কর্মচারিদের থেকে অনেক বেশি শ্রম ঘাম ব্যয় করলেও প্রচলিত সরকারি বেতন স্কেলে বেতন ভাতা পেয়ে থাকেন। বেশতি কোন সুবিধা তারা পান না। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের আয় বেশির সাথে তাদের বেশি আয়ের সুযোগ নেই। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কথিত রক্তচোষা এতো আয় কার পেটে গেলো ? নিশ্চয়ই মালিকানা শেয়ার যাদের অধিকারে তাদের পেটে !
৮) গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পরিষদে ভূমিহীন সদস্যদের নির্বাচিত নয়জন ভূমিহীন প্রতিনিধি (যারা শিক্ষাদীক্ষায় স্বভাবতই দুর্বল), বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ তিন জন সরকারের নিয়োগকৃত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রফেসর ইউনূস) ক্ষমতাবলে বোর্ড সদস্য থাকেন। যা কিছু কর্মকাণ্ড এই বোর্ডে অনুমোদন নিয়েই করতে হয়। এতো বছরে এতো কিছু ঘটে গেলো অথচ সরকার এর কিছুই জানতেন না !! উল্লেখ্য ড আকবর আলী খান, প্রফেসর রেহমান সোহবান সহ দেশের বহু স্বনামখ্যাত লোকই বিভিন্ন সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ডের সরকার পক্ষীয় বোর্ড সদস্য ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এরকম আরো বহু প্রশ্ন রয়েছে যা পর্যায়ক্রমে বলবো। যেমন
৯) আমাদের মিডিয়াগুলো হঠাৎ করে ড ইউনূসকে একেবারে চোর ছ্যাচ্ছর বানিয়ে খবরের শিরোনাম করার চেষ্টায় অতি উৎসাহী হয়ে ওঠা। অথচ খবরের ভেতরে এ ধরনের কোন কিছু নেই ! মনে হয় আগামীতে রাজনৈতিক মিডিয়া দল নামে কিছু একটা তৈরি হতে যাচ্ছে ! নইলে প্রফেসর ইউনূস যেখানে গোটা বিশ্বে বাংলাদেশকে পারফর্ম করেন, সেখানে কোন ধরনে সত্যাসত্য যাচাই বাছাই না করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আরোপের মতো ড ইউনূসের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দুনিয়ায় যেভাবে প্রজেক্ট করলো, তাতে কি তাদের খুব কাণ্ডজ্ঞানবোধ, না কি দেশ প্রেমের পরিচয় দিলো ?
আশা করি আমার প্রশ্নে কেউ আক্রান্ত বোধ না করে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবেন। এ থেকেও হয়তো আরো অনেক কৌতুহলি বিষয় বেরিয়ে আসতে পারে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
রণদা,
প্রশ্নগুলোর জন্য ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, আমার মনে হয় না, তথ্য প্রমাণ নিয়ে কথা বলেছেন। মুখে যা এসেছে বলে দিয়েছেন। এসবের জন্য তাঁর কোনো জবাবদিহিতা করতে হবে না- ফলে তাঁর কোনো দায় নেই। তাঁর চেলাচামুণ্ডারা তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করে আরো আজেবাজে কথা বলবে। এগুলো বাংলাদেশের রাজনীতির নোংরামির ধারাবাহিকতার বেশি কিছু নয়।
আপনার প্রশ্নের ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আর তাঁর তোষণকারি পরিষদ ভালো উত্তর দিতে পারবে।
এই লিঙ্কটা (আসল লিঙ্ক খুঁজে পাচ্ছি না) দেখতে পারেন। মালিক বা শেয়ারহোল্ডার না- এই ব্যাপারটা তাঁর অনেক সাক্ষাৎকারে আছে।
৮)
এই প্রশ্নের উত্তর আমি নিজেও জানতে চাই। উপরে নৈষাদদা দরিদ্র মহিলাদের রিপ্রেসেন্টেটিভরা কতটুকু ভোকাল- এটা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন।
৯)
এই আবেগী কথাগুলো প্রফেসর ইউনূসকে অন্ধভাবে সমর্থনকারী প্রায় সবাই বলছেন। কথা হচ্ছে অভিযোগ সত্য হলে সেটা সামনে আসুক। আর মিথ্যা হলে সেটাও প্রমাণিত হোক। আর যাঁরা না জেনে না বুঝে চোর তকমা লাগাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য খারাপ।
--
প্রফেসর ইউনূসের পক্ষে বিপক্ষে দুই ধরণের লোকজন বেশি দেখা যায়। একদল সুযোগ পেলেই মহাজন ডাকে। অন্যপক্ষ তাঁকে অবতার ধরে নেয়। ফলে যুক্তিগুলো কুযুক্তিতে ভরে যায়। এই ব্যাপারটা দেখতে দেখতে আর ভালো লাগে না।
আমারও ধারণা এর আগে এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য রাজনীতিতে আসার/আনার চেষ্টার কারণেই অন্যরা তাকে কোনঠাসা করার চেষ্টায় মত্ত।
কে কিভাবে টাকা কামিয়েছে (পাব্লিক ভাংগা সুটকেসও দেখে, আবার সুটকেস ভর্তি টাকা টানাটানির কাহিনীও শোনে)। চালুনি সুইরে কী কয় তা তো দেখলাম।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আরেকটি প্রশ্ন না করে থাকতে পারছি না।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও জানলাম গ্রামীণ ব্যাংকের বিশাল সুদ ! কতো ? গ্রামীণ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ক্রমহ্রাসমান পদ্ধতিতে ২০ শতাংশ। এর সত্যতা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়দিন সময় লাগার কথা ?
অন্যদিকে সরকার এনজিওগুলোর সুদের হার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকারি সংস্থা পিকেএসএফের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশে নির্ধারণ করার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানি। মজার বিষয় হচ্ছে পিকেএসএফের পরিচালক অর্থনীতিবিদ জনাব খলীকুজ্জামান (নামের বানানে ভুল থাকলে তা অনিচ্ছাকৃত) এর নেতৃত্বে তা নাকি নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ শতাংশ ! হা হা হা ! সরকারের অনুমোদনক্রমেই গ্রামীণ ব্যাংকের তো তাহলে আরো ৭ শতাংশ সুদ বাড়ানোর অপশন সুবিধা রয়েছে দেখা যায় ! এর কোন ব্যাখ্যা কেউ জানেন কি ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
দুপয়সা দিয়ে যাই।
আমার অভিজ্ঞতাটুকু এখানে লিখেছিলাম একদিন।
শাহপরীর দ্বীপে কয়েকটা শকুন
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
চমৎকার পরিশ্রমী পোষ্ট।সেই সাথে অনেক মুল্যবান মন্তব্য।আমি কিছু যোগ করে যাই।
টেলিনর, নোরাড, নরওয়ে(রাষ্ট্র) সব একসুত্রে গাঁথা।টেলিনর রাষ্ট্রীয় কোম্পানী।৫৫ ভাগ শেয়ার নরওয়ে সরকারের বাকি ৪৫ ভাগ শেয়ার জনগনের।শেয়ারের পরিমান বিপরীতক্রমে হতেও পারে।সঠিক পরিসংখ্যানটা এই মুহুর্তে মনে নাই।
টেলিনর নরওয়ের সর্ববৃহৎ কোম্পানী।শুধু টেলিনর নয়, এইখানকার বাস কোম্পানী, মেট্রে সিস্টেম, ট্রাম, এমনকি অনেক মদের দোকান সবকিছুই সরকারী মালিকানাধীন।অথচ এই দেশগুলোই আমাদের ছবক দেয় সরকারের কাজ ব্যবসা করা নয়, ব্যবসায় নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করা।আর সেটা শুনে আমরা, আমাদের উন্নয়ন- পরামর্শক অর্থনীতিবিদরা সবাই ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো লাফাই।
ডঃ ইউনুসের সাথে বাংলাদেশের পরিচিতি, ইমেজ অনেক কিছুই জড়িত। তবে শুধু এইজন্য তাকে "পয়গম্বর" জ্ঞান করে চলতে হবে, গ্রামীণ ব্যাংক ও তার কার্যক্রম নিয়ে যে কোন ক্রিটিক্যাল দৃষ্টিভংগীকেই ডঃ ইউনুসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মেনে নিতে হবে- দুঃখিত আমি এতোটা দেশপ্রেমিক কিংবা জাতীয়তাবাদী নয়।
এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, চরিত্র হনন কিংবা মিথ্যা অপবাদ এই সবকিছুর মধ্যে যে ক্ষুদ্রঋন, তার কার্যকারিতা, গরীব-গুর্বোদের উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়াদি যে সামনে চলে এসেছে, সেটাতেই আমার মুল আগ্রহ।মুর্শেদ ভাই এসব নিয়ে ডিটেইলস লিখবেন, পোষ্টে পড়লাম।আপাতত সেটার আশায় রইলাম।
তবে অন্য গরীবদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুদ্র ঋনের সাফল্য কতটুকু সেটা
http://english.aljazeera.net/video/asia/2010/12/2010124174519584950.html
এই লিংকে কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে।
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে গত দুইমাসে ঋন পরিশোধ করতে না পেরে ৭২ জন আত্মহত্যা করেছে।এই আত্মহত্যার দ্বায় কার?
৭২ জনই কি বেকুব, কাপুরুষ! টিকে থাকার সংগ্রামে ব্যার্থ হয়ে সবচে সহজ উপায়টাই বেছে নিয়েছে!
আমার কাজিন ব্রাকে কাজ করতো, মাঠ পর্যায়ের কর্মী ছিলো সে। মাস ছয়েক হলো সে ছেড়ে দিয়েছে।অন্য চাকুরি পাওয়া ছাড়ার একটা কারন অবশ্যই, তবে এইটাও শতভাগ সত্যি জোরজবরদস্তী করে, অমানবিক উপায়ে ঋন-আদায় কাজটা সে আর সহ্য করতে পারছিলো না।তার কাছে শোনার অমানবিক কাহিনীর বয়ান অন্যদিন বলা যাবে; মন্ত্যটাকে আর দীর্ঘ না করি।
ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ,
আমি এই বিষয়ে আপনাদের সবিনয় আবগতির জন্য একটি লেখা লিখেছিঃ
http://iradsiddiky.wordpress.com/2008/08/14/why-are-western-imperial-humanitarianisms-ngo-foot-soldiers-evading-taxation-in-bangladesh/
আমাকে আপনাদের ঢাকা মহানগরীর মেয়র নির্বাচিত করলে, আমি NGO Trade License নামক একটি বিশেষ Trade License চালু করবো, যা দিয়ে, আমার বিশ্বাস, NGO দের এই ধরনের দূর্নীতি মোকাবেলা করা যাবে। ধন্যবাদ।
লেখাটা পড়ব।
আপনি সব জায়গায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান কেন? ব্লগ তো আপনার নির্বাচনের মাঠ নয়, ভাইডি।
উনি কি বলদিয়ার বলদ যে মাঠে নামবে? জমিদার পরিবারের সন্তানেরা সবসময় ডেস্কে বসেই যা করার করেন। মাঠে যায় সোডোলোকে।
আপনি সব জায়গায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান কেন?
জবাব:
"দেশের কাজে মানুষের কল্পনাবৃত্তির একটি জায়গা আছে" এই কথাটি আমি মানি। তবে সব জায়গাই তার, তা মানি নে। দেশ-জিনিসকে আমি খুব সত্যরূপে নিজের মনে জানতে চাই এবং সকল লোককে জানাতে চাই-- এতবড়ো জিনিসের সম্বন্ধে কোনো মন-ভোলাবার জাদুমন্ত্র ব্যবহার করতে আমি ভয়ও পাই লজ্জাও বোধ করি। আমি দেশকে সত্যই দেবতা/ খোদা বলে মানি। আমি নরনারায়ণের উপাসক। এতদিন বিশ্বাস ছিল ঘুরে ঘুরে সমস্ত দেশকে মাতিয়ে বেড়ানোই আমার কাজ। কিন্তু নিজেকে ভুল বুঝেছিলুম। ভুল বোঝবার একটা কারণ ছিল এই যে, আমার অন্তরকে সব সময়ে পূর্ণ রাখতে পারে এমন শক্তির উৎস আমি কোনো এক-জায়গায় পাই নি। তাই কেবল দেশে দেশে নতুন নতুন লোকের মনকে উত্তেজিত করে সেই উত্তেজনা থেকেই আমাকে জীবনের তেজ সংগ্রহ করতে হত।
আপনে তো এক্কেবারে টাউট। দেশকে খোদা মানেন অথচ দেশের মানুষকে চাকর! তাদের ভাষায় কথা বলেন না, করেন ইংরেজিতে হুকুম। আগে ঠিক করেন, আপনে কোন পাশে, জনগনের নাকি বলিয়াদির গোয়ালঘরে। সেটা মনস্থির করার পর এসে মতামত জানায় যাইয়েন
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এই ভদ্রলোকের ব্লগে এগুলো কিসের ছবি? !!
রাম নাম সাত্য হো- আই মিন রামায়নের ছবি। মি. এন্ড মিসেস. রাম সাথে ছোট ভাই মাস্টার লক্ষ্মন।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ কেবল ব্যানার দেখেই কেটে পড়া সমিচীন, অন্যকোথাও ক্লিক মেরে জমিদার সাহেবের ফটোশপ জ্ঞিয়ান আবিষ্কার করে ফেললে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকিবে না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এই ব্লগ যদি আসলেই এই লোকের হয়ে থাকে তবে এই ভদ্দরলোকের মানসিক সুস্থতা নিয়ে আমাকে চিন্তিত হতে হয়।
চৌধুরী সাহেব, দিনদুনিয়া তো বদলে যাচ্ছে, এই খবরটা পড়ে দেখেন। ডিসিসি তো কয়েক টুকরা হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগরীর মেয়র হবার দিন তো শ্যাষ ভাইডি। আপনি মেয়র হলে বড়জোর ঢাকা উত্তর বা ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হতে পারবেন। অর্ধেক ঢাকায় এঞ্জিও ট্রেড লাইসেন্স চালু করলে বাকি অর্ধেকের কী হবে? সব এনজিও তো তখন আপনি যেই আদ্ধেকের মেয়র নন সেই আদ্ধেকের সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিবে।
সৌরজগতের সবচেয়ে বিখ্যাত জমিদারি বলদিয়া এস্টেটে আগে এনজিও ট্রেড লাইসেন্স চালু করে জাতির সামনে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন গো। এরপর ক্যানভাসিং করতে আইসেন।
এতো কুৎসিত ছবি কোন আপনার ব্লগে!
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
জনাব, আপনার দেয়া লিন্ক বেয়ে কিছু ফটোশপ কোলাজ দেখার সুযোগ হল। এগুলো কি আপনার নিজের হাতে করা?
ধর্মমতে ব্যবসা করা হালাল।
কিন্তু গ্রামীন এমন একটা ইমেজ তৈরী করেছে যে, তাঁরা সমাজ সেবা করছে।
প্রফেসর ইউনূস বলেছেন; দারিদ্রতা জাদুঘরে পাঠাবেন। এই সব কারণে নামমাত্র সূদে বিনিয়োগকারী পেয়েছেন। অর্থনীতির সব চেয়ে অবহেলিত খাতে বিনিয়োগ করেও মুনাফা করা সম্ভব; এইটা যদি প্রফেসর ইউনূসের শ্লোগান হতো তা হলে এতো বির্তক উঠতো না।
ব্যবসায়ীক দিক থেকে তিনি সাংঘাতিক রকমের সফল। এতো মনে হয় সবাই একমত।
কথা হলো দারিদ্র বিমোচনের অঙ্গীকার নিয়ে। আয়ের ব্যবধান কমলে সমাজে শান্তি শৃংখলা রক্ষা সহজ হয়। বিশ্ববাসীকে তিনি সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঋণ বিতরণ অর্থনীতির এমন কোন কঠিন বিষয় না। সে জন্য অর্থনীতিতে তিনি নোবেল পাননি। পেয়েছেন শান্তি-তে।
এমন একজন মানুষ এবং প্রতিষ্ঠানের নাড়ী-নক্ষত্রের খবর মানুষ জানতে চায়। এতে দোষের কিছু নেই।
বাংলাদেশের মানুষ এখন জানে যে, দারিদ্র বিমোচন ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে সম্ভব না।
এতে নিশ্চই কিছু কর্মসংস্থান হয়। কিন্তু দারিদ্র বিমোচন সম্ভব না।
সম্ভবতঃ
প্রফেসর ইউনূস ক্ষুদ্র ঋণের ঈশ্বর এবং আজ্রাইল।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
সংযুক্তি:
সেই হিলারিপাড়ায় শুধুই হায় হায়
নির্বাচনী প্রচারণা সম্বলিত মন্তব্য কিভাবে মডারেশন পার হলো???
ব্যক্তিগত মত: ব্যাপারটার দরকার আছে। এরকম ভারী একটা লেখায় একটুখানি বিনোদন বলতে পারেন।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
) ...মেনে নিলাম, কেউ একটু ভাঁড়ামি না করলে কেমনে হয়...
বিডিনিউজ২৪-এর তৌফিক ইমরোজ খালিদী আজ (৭ই ডিসেম্বর, ঢাকা) সন্ধ্যায় আরটিভি-র "রোড টু ডেমোক্রেসি"তে এসেছিলেন ইউনুস সংক্রান্ত তাদের ব্রেকিং নিউজটা নিয়ে কথা বলতে। অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন অধ্যাপক এম এম আকাশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি। পুরো অনুষ্ঠানটাই এই বিষয় নিয়েই ছিল। আমি অনুষ্ঠানের একদম শেষের দিকে টিউন করেছিলাম বলে আলোচনা বিশেষ কিছুই শুনতে পাইনি - তবে মনে হয়েছে বেশ ইন্টারেস্টিং হয়েছে। খালিদী একজন সুবক্তা এবং আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গীসম্পন্ন ব্যক্তি। শেষের দিকে অল্প সামান্য যেটুকু শুনেছি, সেটুকুতে মনে হলো উনি খুব ট্যাক্টফুলি নিজেদের কীর্তি ডিফেন্ড করে গেছেন, আর আকাশ সাহেব সেই সাথে সঙ্গত করে গেছেন। আনফর্চুনেটলি, এই ইস্যুটার যে আরো অনেকগুলি মাত্রা আছে (যা এই পোস্টটা পড়লেও বোঝা যায়) - সেগুলি মনে হচ্ছে উঠে আসেনি। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধিকে একেবারেই আনইম্প্রেসিভ মনে হয়েছে।
নোরাডের মতে তাদের টাকা চুরি যায়নি। এখানে, আরে এখানে বিস্তারিত দেখুন।
এন ও কে তে ক্ষুদ্রঋনে বিষয়ক প্রামান্যচিত্রটি প্রচার করা হলে, নরওয়ের বিদেশ মন্ত্রী এরিক সোলহাইম ১ ডিসেম্বর ২০১০ এ টেলিফোনে ও চিঠি মারফত নোরাডের কাছে এর জবাবদিহিতা তলব করে, যার উত্তরে নোরাড ৬ ডিসেম্বর ২০১০ এ একটি চিঠি পাঠায়। সেখানে বলা হচ্ছেঃ
"The assistance given to Grameen Bank formed part of the state-to-state cooperation between Bangladesh and Norway. Accordingly, the Embassy discussed the matter with the Bangladeshi authorities, represented by the Economic Relations Division of the Ministry of Finance. Meeting minutes dated 16 March 1998 record that the authorities agreed with the Norwegian view that ownership of the funds should be transferred back to Grameen Bank. They took up the matter with Grameen Bank themselves, but then informed the Embassy that it was fine for Grameen Bank and Norway to deal with the matter directly."
অর্থাত ১৯৯৮ সালের বাংলাদেশ সরকার অর্থমন্ত্রনালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এই বিষয়টিতে বিস্তারিত ওয়াকিবহাল ছিল, এবং বুঝেসুঝেই নিজেকে দুরে রেখেছিল। আবুল মাল মুহিত মুখ খোলবার আগে, মানে সমঝোতার মাধমে বিষয়টির মিটমাট হয়ে গেলে তিনি অসুবিধা দেখেননা, এরকম মন্তব্য করার আগে তার নিজের লোকেদের সাথে কথা বলেছিল বলেই মনে হয়। বেচারা প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যি সত্যিই তদন্তে নামতো, তাহলে সেটা একটা দেখার মত রগড়নাটক হত।
নোরাড আরো বলছে,
According to the Embassy, the said matter of the transfers between Grameen Bank and Grameen Kalyan was concluded in a satisfactory manner, as expressed by the Embassy in a letter to Grameen Bank dated 26 May 1998:
“The Embassy highly appreciates your cooperation in solving this issue, and is pleased to have arrived at a solution which is satisfactory for Grameen Bank as well as the Embassy. The Embassy looks forward to continued good cooperation in future.
মানে নরওয়ের দূতাবাসও পাকা করে বলছে যে তাদের সাথে গ্রামীনের এ বিষয়টা নিয়ে মিটমাট হয়ে গেছে।
তাহলে বিষয়টা খাড়াইলো এমন। গৃহস্থের হারিয়ে যাওয়া গরু ফিরে এসেছে ঠিকই। কিন্তু চৌকিদার আর মাতবর এখনো হাতে হারিকেন নিয়ে গরু খুঁজেই চলেছে।
http://www.facebook.com/photo.php?pid=1771461&l=aed6e22931&id=1019208663
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এই সংবাদ আমাদের সময় কোন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছে কে জানে? ইন্টারনেটে খোঁজ দা সার্চ দিয়েও এই ধরণের কিছু পাওয়া যায়নি। ডেইল স্টার এ নিয়ে রিপোর্টও করেছে।
আমাদের সময় একটা মিশন নিয়ে নেমেছে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী যে সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর ইউনূসের বিপক্ষে তদন্ত হওয়ার দরকার আছে বলেছিলেন সেখানে আমাদের সময় পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের উপস্থিতি ছিল।
অঃটঃ ইদানিং কালের নাইমুল ইসলাম খানকে আমার শফিক রেহমান আর ফরহাদ মাজহারের একটা অপেক্ষাকৃত তরুনতর ক্রস/পাঞ্চ বলে মনে হয়। তবে এখনকার 'মিশন'টা বোধহয় নিতান্তই যেনতেনপ্রকারেন 'আখের গোছানো'। নাইমুলের এক বন্ধুকে একবার তার নব্বুইয়ের প্রগতিওয়ালা ভাবভঙ্গি এবং এখনকার টাউটামি-মার্কা জন্ডিসে ধরা 'আমাদের সময়' নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম। তার জবাব ছিল, ঐসব করে তার কিছু হয় নাই তখন, এ্যান্ড হি ওয়াজ নোবডি দেন - কিন্তু এখন অনেক স্ট্রাগল হি ইজ সামবডি। বন্ধুটা অবশ্য খুবই সহানুভূতি-সহকারে কথাটা বলেছিলেন - আনফর্চুনেটলি আমি তার অনুভূতিটা শেয়ার করতে পারি নাই !
সংযুক্তি: রণদার দেওয়া ছবিটির অফিসিয়াল অনলাইন লিঙ্ক
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
দাদা, মিডিয়া নিয়ে তো বেশ বিপত্তিতে পরছি। কোনটা বিশ্বাস করব বুঝতারিনা। কেউ দালাল, কেউ মিশন নিয়া নামছে ইত্যাদি। আগে তো জনকন্ঠ আর ইনকিলাব পড়ে মনে মনে এভারেজ করে নিতাম। এহন তো সেই দিন নাই। হিসাব নিকাশ পালটায় গেছে। মতাদর্শে দুষ নাই, সেটা বরং পাঠকরে তার অবস্থান ও সংবাদ পরিবেশনার প্রেক্ষাপট কে পরিষ্কার করে। কিন্তু গোপন মিশন ব্যপারটা নতুন আর বিপদজনক। উপরের কয়েকটি মন্তব্যে সংবাদপত্র ও সম্পাদকদের নিয়ে কথা হওয়ায় নিজের একটু খানি অনুভুতি শেয়ার করলাম।
অপ্রাসংগিক লাগলে দু:খিত।
আজ (১২ই ডিসেম্বর) ঢাকাতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রফেসর ইউনুস নরওয়েজিয়ান অনুদান স্থানান্তর বিষয়ক বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে অফিসিয়াল বক্তব্য দিবেন। আগ্রহীরা লক্ষ্য রাখতে পারেন।
বিবিসির এই রিপোর্টটাও ইনটারেষ্টিং।
======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বিডি নিঊজ ২৪' এর কল্যাণে ডঃ ইউনুসের তহবিল সরানোর খবর প্রথম পাই। ডঃ ইউনুসের সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে বিস্তারিত তাদের কাছ থেকেই পাওয়া যাবে আশা করেছিলাম। বিডি নিউজ২৪ ডঃ ইউনুসের সংবাদ সম্মেলন বিষয়ক খবর যেভাবে প্রকাশ করেছিল, তাতে মনে হয়েছিল, এটি একটি দায়সারা গোছের সংবাদ সম্মেলন ছিল। এবং সংবাদটি ডঃ ইউনুসের বক্তব্যের বিস্তারিত প্রকাশ থেকে বিরত কেন থাকল বুঝলাম না। অথচ অন্যান্য সংবাদপত্র থেকে জানলাম, লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি ডঃ ইউনুস ৪২ টি বিভিন্ন প্সশ্ন এবং সম্পূরক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
যে বিডি নিউজ কোন ধরনের নিজস্ব তদন্তে না গিয়ে বিদেশী টিভির প্রতিবেদন ব্যবহার করে খুব নেগেটিভলি সংবাদ সোৎসাহে বিশাল আকারে প্রকাশ করল, বিদেশী মাধ্যম থেকে পাওয়া লিখিত বক্তব্য পাতায় পাতায় বিডীনিউজের সীল মেরে পিডিএফ বানিয়ে পরিবেশন করল, তারা ডঃ ইউনুসের সংবাদ সম্মেলন বিষয়ক খবর এত ঋজু আকারা গুরুত্ত্বহীনভাবে ছাপাল কেন ?
প্রধানমন্ত্রীর রোষানলে পড়ার ভয়ে? সরকারী মন্ত্রী এম পিদের প্যাদানি খাওয়ার ভয়ে ?
আমরা সবাই কি তাহলে বিক্রি হয়ে যাছি ? অনলাইন ভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যম যদি স্বাধীনচেতা না হতে পারে, বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব দিয়ে আমার বাল হবে।
আমারও ঠিক একই কথাই যেন মনে হচ্ছে। তাছাড়া ক্ষুদ্রঋনের কথা বলতে গেলে আমার কথাই বলি, আমি বিগত ১৯৯৯ সাল থেকে এই ক্ষুদ্রঋনের বা গ্রামিন ব্যাংকের সদস্য। কোই এর মধ্যে এমন কিছু তো দেখতে পাইনি ক্ষুদ্রঋনের ফাদে নামক দানব যেটা বলা হচ্ছে। বরং গ্রামিন ব্যাংকের জড়িত হওয়ার পরই বুঝতে পেরেছি আমাদের মত নিম্নবিত্ত মানুষের জিবনে কিছুটা হলেও উন্নতি করা সম্ভব।
মিথ্যা কোথায় লিখেছেন জানতে চেয়েছেন, তাই নির্দেশ করে দিচ্ছি:
মিথ্যা কথা। কেবল নোরাড বলেছে টাকা গ্রামীণ ব্যাংকে ফেরত নিতে। সিডা কিছু বলেনি। জাপনী সংস্থা বরং কিছু বলতেই অস্বীকৃতি জানায়।
জোচ্চুরির মানে হচ্ছে Fraud. ডকুর নির্মাতা কখনোই ফ্রডের অভিযোগ করেনি। বরং স্পষ্টত বলেছে, এই অর্থ স্থানান্তরের ফলে ড. ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হননি।
মিথ্যা কথা। গ্রামীণের অর্ডিন্যান্স পড়ার মতো বুদ্ধি থাকলে এটা বলা সম্ভব না। শেয়ার অনুপাত ছিলো ৭৫% আর ২৫%। একটা কোম্পানি কীভাবে গঠিত হয় সেসম্পর্কে কিছু জানার দরকার আছে।
মিথ্যা কথা। শর্ত প্রযোজ্যের কিছু নাই। গ্রামীণ ফোনের শেয়ার হোল্ড করে গ্রামীণ টেলিকম। গ্রামীণ ফোন মুনাফা করলে তার ভাগ পাবে গ্রামীণ টেলিকম যেটা পরে গ্রামীণ ব্যাংকে আসবে। শেয়ার হোল্ড করার জন্য দরিদ্র-ধনীর কোন ব্যাপার নেই। যদু-মধু যে কেউ শেয়ার হোল্ড করতে পারে, কর্পোরেট কোম্পানি চালানের ক্ষমতাও তাদের দরকার নেই।
কর ফাঁকি (tax evasion) আর কর কমানোর (tax minimisation) পার্থক্য আপনি বোঝতে অপারগ। ইউনূস কখনো কর ফাঁকির কথা বলেননি।
এর সাথে ৩২নং মন্তব্যে যা বলেছিলাম সেগুলোকে আবার হাইলাইট করলাম।
১। আপনি ঐ লেখায় কিছু তথ্য শুদ্ধি করে দিয়েছিলেন। তাড়াহুড়া করে লেখাটা লিখেছিলাম। তথ্য পরে যাচাই করে মূল লেখায় ঠিক করে দিয়েছিলাম। এই বাক্যটা তাও থেকে গেছে। খুঁচিয়ে এই বাক্য বের করে মিথ্যা বলে প্রমাণ করাটা ভাল্লাগলো না।
২। নিজের প্রতিষ্ঠানে টাকা সরিয়ে নেয়ার অভিযোগকে একটা সুশীল নাম দিতে হবে।
৩। না, অর্ডিন্যান্স পড়ার মতো বুদ্ধি তো নাই। মিথ্যাটা টুকলিফাই করেছি গ্রামীণের ওয়েবসাইট থেকে।
৪। মিছা কথা না। গ্রামীণ ফোনের প্রকৃত মালিকানার যে গালগল্প করা হয়েছিল সেটার পরিপ্রেক্ষিতে এই বাক্য।
প্রফেসর ইউনূস তাঁর নোবেল বক্তৃতায় বলেছেন-
তিন লাখ ভিলেজ ফোন লেডি ফোন কিনে স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে ইউনূস বক্তৃতা দিয়ে এসেছেন। অথচ পল্লীফোন নিয়ে নানা রকম খবর বেরিয়েছে। নরওয়ে থেকে অন্য একটা প্রতিবেদন বেরিয়েছিল পল্লীফোন নিয়ে। দুটো লিঙ্ক দেই।
আর দুই একজন সফল ভিলেজ-ফোন-লেডি অন্ট্রাপ্রনারের ঠিকঠাক উদাহরণ দিয়ে যান, বস্।
৫। ছয় শব্দে গল্প। অর্ধেক গ্লাস পানি অর্ধেক গ্লাস খালি।
নতুন মন্তব্য করুন