ড্যান্স কার্ড
১. মা কিলপে, ককেনেস্ ও লস এঞ্জেলস্ শহরে আমাদেরকে নেরুদা পড়ে পড়ে শোনাতেন।
২. একটা বই: টোয়েন্টি লাভ পয়েমস্ অ্যান্ড আ সং অব ডিস্পেয়ার; সম্পাদকীয়- ইসোদা; বুয়েনস্ আয়ারস্, ১৯৬১। প্রচ্ছদে নেরুদার একটা ড্রয়িং আর নোট আকারে লেখা- এই সংস্করণে বইটির মিলিয়ন কপি ছাপা হচ্ছে। ১৯৬১ সালে নেরুদার বইয়ের কাটতি মিলিয়নের কোটায় ছিল কি? নাকি ঐ সময় পর্যন্ত নেরুদার লেখা সব বই মিলিয়ে মিলিয়নতম কপি? আমি একটু ভয় পেয়ে ভাবি দুটো সম্ভাবনাই বিরক্তিকর।
৩. বইয়ের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় মার নাম লেখা: মারিয়া ভিক্টোরিয়া আভালোস্ ফ্লোরেস। একটা অদ্ভুত ধরণের দুর্বোধ্য হাতের লেখায় নামটা লেখা। দেখে মনে হয় অন্য কেউ সেখানে মার নাম লিখেছে। এটা বাবার হাতের লেখা নয়, আমার পরিচিত কারো হাতের লেখাও নয়। দীর্ঘদিন ধরে মার লেখা আর মার স্বাক্ষর খুঁটিয়ে দেখে শেষ পর্যন্ত আবিষ্কার করি- লেখাটা মার হাতেরই।
৪. ১৯৬১-৬২ সালে মা আমার বয়েসি ছিলেন না। তখনো তার বয়স পঁয়ত্রিশ হয়নি। হাসপাতালে কাজ করতেন। তরুণী আর অনেক প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা।
৫. আমার কাছে থাকা টোয়েন্টি লাভ পয়েমস্-এর কপিটা অনেক পথ ঘুরে আমার কাছে থেকে গেছে। দক্ষিণ চিলির শহর থেকে শহরে, তারপর মেক্সিকোর এক ঘর থেকে অন্য ঘরে, আর স্পেনের তিনটি শহর ঘুরেও বইটা আমার কাছে এখনো আছে।
৬. বইটির মালিক আমি নই। এটা মার। মা আমার বোনকে বইটা দেন, বোন জিরোনা ছেড়ে মেক্সিকো চলে যাওয়ার সময় বইটা আমাকে দেয়। বোন আরো অনেক বই দিয়ে যায়, এর মধ্যে পছন্দের ছিল কল্পবিজ্ঞানের বইগুলো আর ম্যানুয়েল পুইগের সম্পূর্ণ রচনাবলি। আমিই ওকে পুইগের বইগুলো দিয়েছিলাম। ও চলে যাবার পরে সেগুলো আবারো পড়া শুরু করি।
৭. ঐ সময় নেরুদা খুব একটা পছন্দ করতাম না। বিশেষ করে টোয়েন্টি লাভ পয়েমস্ তো না-ই।
৮. ১৯৬৮ সালে আমার পরিবার মেক্সিকোতে চলে যায়। দুই বছর পরে আমি আলেহান্দ্রো খলোরস্কির সাক্ষাৎ পাই। তিনি আমার কাছে ছিলেন আদর্শ শিল্পীর প্রতিমূর্তি। তাঁর জন্য একটা থিয়েটারের বাইরে অপেক্ষা করছি(তিনি তখন ইসেলা ভার্গাসের সাথে জরাথ্রুস্ট পরিচালনা করছেন), তাকে দেখতে পেয়ে জানালাম তাঁর কাছে আমি ছবি বানানো শিখতে চাই। পরে তাঁর বাসায় নিয়মিত যাওয়াআসা শুরু হয়। নিজে খুব একটা ভালো ছাত্র ছিলাম না। খলোরস্কি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, সিগারেটের পেছনে আমি কি পরিমাণ সময় ও টাকা ঢালি। বেশ অনেক- উত্তর দেই। তিনি আমাকে ধূমপান ছেড়ে এজো তাকাতার কাছে জেন মেডিটেশনে ভর্তি হতে বলেন। আমি রাজি হই। কিছুদিন সেখানে যাই। কিন্তু তৃতীয় সেশনে এসে বুঝতে পারি- এই বস্তু আমার পোষাবে না।
৯. জেন সেশনের মাঝামাঝি একটা সময় তাকাতার কাছ থেকে আমি কেটে পড়তে চাই। যখন আমি পালাতে যাব তখন দেখি সে একটা কাঠের লাঠি নিয়ে সামনে হাজির। ছাত্রদের ওপর প্রয়োজন হলে সে লাঠিটা ব্যবহার করে। সে লাঠি নিয়ে ছাত্রদের সামনে হাজির হয়, ছাত্রকে জানাতে হয় হ্যাঁ কিংবা না। ছাত্র হ্যাঁ বললে তাকে দুটো লাঠির বাড়ি হজম করতে হয়। শব্দ দুটো ঘরের মধ্যে ইকো ইকো খেলা করে।
১০. সে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করে না। আক্রমণটা বেশ হঠাৎ ও উচ্চকিত। দরজার কাছাকাছি একটা মেয়ের পাশে আমি বসেছি। তাকাতা ছিল ঘরের একেবারে মধ্যে। ভেবেছি- সে চোখ বন্ধ করে আছে, পালালে হয়তো খেয়াল করবে না। কিন্তু শুয়োরটা টের পেয়ে গেছে কিভাবে জানি।
১১. বাবা ছিলেন হেভিওয়েট অ্যামেচার বক্সিং চ্যাম্পিয়ন। দক্ষিণ চিলিতে তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ ছিল না। বক্সিং আমার ভালো লাগে না, কিন্তু বাবার কাছ থেকে শিখতে হয়েছে। চিলি বা মেক্সিকোতে আমার সাথে একজোড়া বক্সিং গ্লাভস থাকত।
১২. যখন মাস্টার এজো তাকাতা আমার সামনে হাজির হয়, সে হয়ত আমার কোনো ক্ষতি করতে চায়নি। সে ভাবেওনি আমি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিরোধ করব। ছাতদের বেত বা লাঠির বাড়ি দিয়ে সে তাদের স্নায়বিক চাপ কমাতে চায়। কিন্তু আমার কোনো স্নায়বিক চাপ ছিল না, আমি কেবল সেখান থেকে চিরতরে পালাতে চেয়েছি।
১৩. তোমাকে আক্রমণ করা হলে তুমি প্রতিরোধ করবে। এটা স্বাভাবিক, বিশেষ করে যখন তোমার বয়স সতের আর তুমি মেক্সিকোতে থাক। ভালো কথা, তাকাতা একজন নেরুদাপন্থী।
১৪. খলোরস্কি একবার বলেছিলেন, মেক্সিকোতে তাকাতার উপস্থিতির জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। ওসাকার জংগলে কিছু উত্তর আমেরিকার পর্যটক আটকা পড়ে দেশে ফিরতে পারছিল না। তাকাতা সেখান থেকে নেশাকারীদের নেশা ছুটাতে পেরেছিলেন।
১৫. এদিকে তাকাতা আমাকে সিগারেট থেকে দূরে সরাতে পারেনি।
১৬. খলোরস্কি একটা ব্যাপার আমার খুব ভালো লাগে। কথা প্রসঙ্গে চিলির বুদ্ধিজীবীদের কথা বলতে গেলে তিনি আমাকেও বুদ্ধিজীবীদের দলে রাখতেন। আমি নিজেই জানিনা বুদ্ধিজীবীদের সাথে নিজের কি কি জিনিস মিলে, তবে এটা আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দেয়।
১৭. এক দুপুরে, জানিনা কিভাবে শুরু হয়েছিল, চিলির কবিতা নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়। খলোরস্কি বললেন, চিলির শ্রেষ্ঠ কবি নিকানোর পারা। তিনি পারার কবিতা একের পর এক আবৃত্তি করে গেলেন। খলোরস্কি আবৃত্তির গলা ভালো। তবে কবিতাগুলোতে মুগ্ধ হই না। তখন খুব সংবেদনশীল যুবক ছিলাম, আর নিজের কথাকেই সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ ভাবতাম। আমি ঘোষণা করি, চিলিতে সেরা কবি বলে কেউ যদি থাকে সেটা নেরুদা। বাকিরা সব বামন কবি। আরো আধাঘন্টা ঘরে তর্ক চলতে থাকে। তিনি গুর্জেফ, কৃষ্ণমূর্তি, মাদাম ব্লাভট্স্কি থেকে বয়ান দেন। তারপর আসে কিয়েরকেগর, ভিটগেনশটাইন থেকে শুরু করে তোপর, আরাবেল এমনকি নিজের প্রসঙ্গ। এক পর্যায়ে বললেন, পারা তাঁর বাসায় পর্যন্ত ছিলেন। খলোরস্কির এই কথায় আমি বাচ্চাসুলভ বাচ্চামানুষি খেয়াল করে মজা পাই। এই ধরণের কথা আমাদের লেখকদের অনেকেই বলেন।
১৮. বাতাই-র একটা বইতে পড়েছি, কান্না যোগাযোগের চরম মাধ্যম। আমি সজোরে কান্না শুরু করি। অনেকটা অ্যালিস ইন দা ওয়ান্ডারল্যান্ডের গ্যালন গ্যালন কান্না ঝরার মতো করে।
১৯. খলোরস্কির বাসা থেকে বেরিয়েই আমি বুঝতে পারি আমি আর কখনো তার কাছে ফিরে যাবো না। রাস্তায় আমি কাঁদতেই থাকি। এরকম গুরুর সাক্ষাৎ আমি আর কখনো পাবো কিনা জানিনা।
২০. খুব খারাপ লেগেছিল কারণ নেরুদার পক্ষে বলার মতো আমার কাছে যুক্তি বেশি ছিল না, আর আমি নেরুদার বেশি বইপড়িই নি। পড়া ছিল টোয়েন্টি লাভ পয়েমস্ বইটা আর টোয়াইলাইট। ফেয়ারওয়েল কবিতাটাও পড়া ছিল, তবে সেটাকে চরম পীড়াদায়ক কবিতা বলে মনে হয়।
২১. ১৯৭১ সালে আমি ভায়েহো, হুইদোব্রো, মার্টিন আদান, বোর্হেস, পল আমাত, পাবলো দে রোকা, গিবার্তো ওয়েন, লোপেজ ভ্যালের, অলিভারিও গিরন্দো পড়তে থাকি। নিকোবার পারাও পড়ি। এমনকি নেরুদা।
২২. মেক্সিকান কবিরা হয় নেরুদা নাহয় ভ্যালেজিয়ানের বই বগলধাবা করে চলে। এদের এই দুইটাই শিবির। একাকী থাকলে আমি পারার ভক্ত হয়ে পড়ি।
২৩. পিতাদের মৃত্যু না হলে কবিরা অনাথ হবে কিভাবে?
২৪. ১৯৭৩ সালে আমি চিলিতে ফিরি। স্থল ও জলপথের সে এক দীর্ঘ যাত্রা। নানা জাতের বিপ্লবীদের সাথে আমার পরিচয় হয়। মধ্য আমেরিকায় আগুনের ঘূর্ণিবায়ু চারিদিকে। আমার বন্ধুবান্ধব এমনভাবে মৃত্যুর কথা বলে যেন তারা কোনো সিনেমার গল্প বলছে।
২৫. ১৯৭৩ সালের আগস্ট মাসে আমি চিলি পৌঁছাই। সমাজতন্ত্রের পক্ষে আমার সমর্থন। পারার দুটো বই আমি সাথে এনেছি। কন্সট্রাকশন ওয়ার্কস্ আর আর্টিফ্যাক্টস্।
২৬. সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে গিয়ে আমি একমাস সময়ও পাইনি। সে সময়ে আমি জানতাম না আমি ভেতর থেকে পারার পক্ষের লোক।
২৭. এক কনফারেন্সে আমি চিলির কবিদের দেখা পাই। ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতা।
২৮. সেপ্টেম্বরের এগারো তারিখে শহরতলীর এক পার্টি অফিসে আমি অন্যান্যদের সাথে থাকতাম। অফিস চালাতেন ফ্যাক্টরির একজন কম্যুনিস্ট কর্মী। নাদুসনুদুস, বোকাসোকা দেখতে কিন্তু সে ঝগড়া করার জন্য মুখিয়ে থাকে। তার বউ তার চেয়ে অনেক বেশি সাহসী। কাঠের মেঝের একটা ডাইনিং হলে আমরা সবাই থাকি। ঐ লোক কথা বলার সময় আমি সাইডবোর্ডের বই নাড়াচাড়া করতে থাকি। বেশিরভাগ কাউবয় উপন্যাস। আমার বাবা এই ধরণের বই পড়তে পছন্দ করেন।
২৯. সেপ্টেম্বরের এগারো তারিখ আমার কাছে এক ধরণের কৌতুকের দিন। আবার সেইদিন অনেক রক্তাক্ত জিনিস আমার দেখতে হয়েছে।
৩০. আমি খালি রাস্তায় নজর রাখছিলাম, আমার পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি। আমার কমরেডরা সকলেই পনের বছর ধরে কাজের বাইরে।
৩১. নেরুদা যখন মারা যান আমি তখন মুলচেনে। আমার চাচা চাচী চাচাতো ভাইবোনদের সাথে। নভেম্বরে আমি যখন লস এঞ্জেলস্ থেকে কনসেপ্সিয়নের দিকে যাচ্ছি, এক চেকপোস্টে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ বাস থেকে তারা কেবল আমাকেই বেছে নেয়। আমি ভেবেছি সেখানেই তারা আমাকে মেরে ফেলবে। কারাগারের অফিসার (ময়দামাখানো পায়ুছিদ্রের মতো চেহারা) তখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আমার প্রসঙ্গে কথা বলছে। একজন মেক্সিকান পর্যটককে গ্রেফতার করেছে বলে সে দাবি করে। পরে জানায় বিদেশি পর্যটক। আমার উচ্চারণভঙ্গি, আমার কাছে থাকা ডলার, আমার পোশাক আশাক নিয়ে সে কথা বলে।
৩২. আমার প্রপিতামহরা, ফ্লোরেস আর গ্রানাস পরিবার, আরাউকানিয়ার জঙ্গল সাফ করেছিলেন বলে তাঁদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের নেরুদাপন্থী বলা যায়। আমার পিতামহ, রবার্তো আলভয়েস্ মারতি, কর্ণেল ছিলেন। হঠাৎ করে অবসর নেয়ার আগে চিলির দক্ষিণের নানা স্টেশনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এটা থেকেও আমাকে সন্দেহ করা যায় আমি নেরুদাপন্থী। আমার দাদা দিদারা গ্যালিসিয়া আর ক্যাটালোনিয়া থেকে এসেছেন। বায়ো বায়ো নামের এক প্রদেশে তাঁরা জীবন কাটান।
৩৩. কিছুদিন কনসেপ্সিয়নে আটকে রাখার পর আমার মুক্তি মেলে। আমার ওপর কোনো অত্যাচার তারা করেনি। আমি এই ভয় পেয়েছিলাম। আবার তারা আমাকে কোনোপ্রকার খাবার দেয়নি। রাতে শোয়ার জন্য কোনো চাদর টাদরও না। অন্য বন্দীরা দয়া করে কিছু খাবার দিলে আমি সেটা খাই। আমার স্বল্পকালীন অবস্থানে অন্যান্য বন্দীদের ওপর নির্যাতন করার শব্দ কানে আসে। রাতে ঘুমাতে পারি না। একটা ইংরেজি ম্যাগাজিন (কেউ হয়ত ফেলে গেছে) ছাড়া পড়ার আর কিছু নেই। ম্যাগাজিন উলটে দেখি সেখানে ডিলান থমাসের বাড়ির ওপর একটা বিশেষ কলাম ছাড়া আর কিছুই পড়ার নেই।
৩৪. লস এঞ্জেলসের স্কুলজীবনের কিছু বন্ধু কারাগারে গোয়ান্দার কাজ করে। আমার বন্ধু ফার্নান্দো ফার্নান্দেজ ও তাদের সহায়তায় আমি মুক্তি পাই। ফার্নান্দোর বয়স একুশ। আমার চেয়ে এক বছরের বড়। সে ইংরেজ বাবুদের মতো পোশাক পরে চলে। চিলির ফ্যাশনদুরস্তরা ইংরেজদের মতো জামাকাপড় পরতে চায়।
৩৫. ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে আমি চিলি থেকে পালাই। আর কখনো ফিরিনি।
৩৬. আমার প্রজন্মের চিলির লোকেরা কি সাহসী? উত্তর- হ্যাঁ।
৩৭. মেক্সিকোতে একটা গল্প শুনেছি। মিরের (MIR)একজন তরুণী সদস্যকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। তার যৌনাঙ্গের জায়গায় ইঁদুর আটকে রেখে অত্যাচার করে। তরুণী কোনোমতে ছাড়া পেয়ে মেক্সিকো পালিয়ে আসে। তার বিমর্ষতা বাড়তে থাকে। একসময় মারা যায়। এই গল্প আমি শুনেছি। তরুণীর সাক্ষাৎ আমি পাইনি।
৩৮. গল্পটা ব্যাতিক্রমী কিছু না। গুয়েতেমালার কৃষক মহিলাদের ওপর অনেক অত্যাচার হতো। মেক্সিকোর মহিলার গল্পের একতা অদ্ভুত দিক গল্পটার সর্বজনীনতা। চিলি থেকে প্যারিসে পালানো অন্য একজন তরুণীর সাথে একই রকম অত্যাচার হয়। সেও মিরের সদস্য। একইভাবে বিমর্ষতা রোগে ভুগতে ভুগতে সে মারা যায়।
৩৯. আরো কিছুদিন পরে স্টকহোমের এক চিলির তরুণীর কথা জানতে পারি। মিরের প্রাক্তন সদস্য। ১৯৭৩ সালের নভেম্বরে তার ওপর অত্যাচার নেমে আসে। ইঁদুর ও যোনীর একই পদ্ধতি। পালিয়ে যাবার কিছুদিন পরে মারা যায়। ডাক্তারেরা আবিস্কার করেন- তার মৃত্যুর কারণ একই। বিমর্ষতা।
৪০. আচ্ছা, দুঃখ কষ্ট বিমর্ষতায় কি মারা যাওয়া সম্ভব?
৪১. এই অপরিচিত চিলির তরুণীরা ক্রমাগত অত্যাচারে বিমর্ষ হয়ে একসময় মারা যায়। আদৌ একজন তরুণী নাকি তারা সংখ্যায় তিন? এক বন্ধুর মতে মৃত্যু ঘটেছে একজনের। ভ্যালেরোর কবিতার মাসার মতো। মৃত্যু সেখানে গুণিতক আকারে বাড়ে।
৪২. কোনো এককালে বেলজিয়ামে এক কবি ছিলেন। সোফি পদোলস্কি। জন্ম ১৯৪৩ সালে, আত্মহত্যা ১৯৭৪ সালে। বই প্রকাশ মাত্র একটি। নাম- দা কান্ট্রি হোয়ার এভ্রিথিং ইজ অ্যালাউড্। ১৯৭০; ২৮০ পৃষ্ঠা।
৪৩. জার্মা নভূ (১৮৫২-১৯২০) আঁবুর বন্ধু। জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাতে হয় ফকির ও ভিক্ষুক বেশে। তাকে ডাকা হতো হিউমিলিস। ১৯১০ সালে তার একটা কবিতার বই বের হয়। লা পোয়েমস্ ডি হিউমিলিস। তিনি শুতেন চার্চের পোর্চে।
৪৪. সবকিছুকেই সম্ভব করা যায়। কবি, তুমি জেনে নাও।
৪৫. একবার জিজ্ঞাসার মুখে পড়ি। চিলিতে তোমার প্রিয় কবি কে? সমসাময়িক নাকি তরুণ এটা ঠিক করে জিজ্ঞাসা করা হয় না। বলি- রদ্রোগো লরা। আমাদের চেয়ে তরুণ অথচ সমসাময়িক নয়। কারণ সে মারা গেছে।
৪৬. চিলির কবিতার জন্য নাচের সংগী: নেরুদার গাণিতিক অঙ্কুর, হুইদেব্রোর নৃশংস অপত্য, মিস্ত্রালের মজারু সব অনুসারী, দি রোকার বিশ্বস্থ চেলারা, পারার হাড়ের উত্তরসূরীরা আর লিনের চোখ।
৪৭. একটা স্বীকারোক্তি: মারাত্মক অসুস্থ হয়ে না পড়লে আমি নেরুদার আত্মজীবনী পড়তে পারি না। কি অদ্ভুত মতদ্বৈততা। একটা বিকৃত মুখ নিয়ে সবকিছু্কে লুকানো বা সুন্দর লাগানোর চেষ্টা। এতো কম উদারতা, আর হিউমার করার সেন্স এতো কম।
৪৮. আমার জীবনের একটা সময়ের কথা বলছি, ভাগ্যিস সময়টা পেরিয়ে গেছে। আমার বাড়ির করিডোরে আমি প্রতিদিন হিটলারকে দেখতে পাই। সে শুধু করিডোর বরাবর হেঁটে বেড়ায়, হাট করে খোলা আমার শোয়ার ঘরে উঁকি মেরে দেখার গরজ দেখায় না। প্রথমে আমি ভাবি- এটা সাক্ষাৎ শয়তান আর নিজেকে বদ্ধ উন্মাদ বলে মনে হয়।
৪৯. দুই সপ্তাহ পরে হিটলার গায়েব। এবার আশা করি হয়তো স্টালিন আসবেন। না স্টালিন আর আসেননি।
৫০. এরপর আ্সেন নেরুদা। সেই করিডোরেই। হিটলারের মতো দুই সপ্তাহ না থেকে থাকলেন মাত্র তিনদিন। সময়কাল কমে যাওয়ায় আমার বিষাদগ্রস্থতা আস্তে আস্তে সহজ হয়ে আসছে বলে মনে হতে থাকে।
৫১. তবে নেরুদা বেশ শব্দটব্দ করেন (হিটলার ছিলেন বরফের চাকতির মতো শান্ত); অভিযোগ করা, দুর্বোধ্য ভাষায় বকবক করা, দুহাত তুলে বুক ভরে শ্বাস নেয়ার ভঙ্গি করা্র মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানান দিতেন। প্রথম রাতের কষ্টের ভাবভঙ্গি আর ভিক্ষুকের মতো আচরণ পরে থিমিয়ে আসে। পরে মনে হয় তিনি রূপান্তরিত হন রাশভারি সম্মানিত কবি মহোদয়ে।
৫২. তৃতীয় এবং শেষ রাতে তিনি আমার দরজার কাছে এসে থামেন, আমার দিকে তাকান (হিটলার কখনো এই কাজ করেনি) আর অবাক কাণ্ড আমাকে কিছু বলতে গিয়ে কিছু বলতে পারেন না। তাঁর এই অপারগতা তাঁর আচরণে ফুটে ওঠে, তারপর ভোরের আলোর ফোটার সময় অদৃশ্য হবার আগে আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন (যেন যোগাযোগ করা তো গেলই না, চেষ্টা করতে দোষ কি?)
৫৩. কিছুদিন আগে তিনজন আর্জেন্টিনার ভাইয়ের সাথে আমার দেখা হয়। যারা পরে লাতিন আমেরিকার নানা বিপ্লবী কাজে মারা গেছে। বড় দুই ভাইয়ের পারস্পরিক বিশ্বাসঘাতকতার প্রভাব পড়েছিল ছোট ভাইয়ের ওপর। সে কাউকে প্রতারণা করেনি। পরে সে মারা যায়। প্রায় নিঃশব্দে।
৫৪. রুবেন দারিও বলে- স্প্যানিশ সিংহের বাচ্চারা জন্ম থেকেই আশাবাদী। অন্যদিকে ওয়াল্ট হুইটম্যান, হোসে মার্তি, ভায়োলেতা প্যারার সন্তানেরা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গণকবরে মিশে গেছে। সমুদ্রে তলিয়ে গেছে। তাদের এতো এতো বিবর্ণ হাড় জীবিতদের সন্ত্রস্ত করে।
৫৫. আমি তাদের কথা এই সপ্তাহে স্মরণ করি কারণ আন্তর্জাতিক ব্রিগেডের সাবেক সেনারা স্পেন ঘুরতে এসেছে। বৃদ্ধরা বাস থেকে নেমে আরোহন করতে থাকে, হাতের মুষ্টি পাকায়। তারা ছিল সংখ্যায় চল্লিশ হাজার। আর তিনশ পঞ্চাশের মতো স্পেন ঘুরতে এসেছে।
৫৬. আমি স্মরণ করি বেলত্রান মোরালেসকে। স্মরণ করি রবার্তো লিরাকে। মারিও স্যান্তিয়াগোকে। স্মরণ করি রেনালদো আরেনকে। নির্যাতনে কিংবা এইডসে মারা যাওয়া কবিদের স্মরণ করি। যারা লাতিন আমেরিকাকে স্বর্গ বলে বিশ্বাস করে কিন্তু মারা পড়ে লাতিন আমেরিকা নামের দোজখে। আমি তাদের কাজ স্মরণ করি। এই কাজ বামপন্থীদের কিছুটা হলেও লজ্জা ও নিস্ফলতার মুখ দেখায়।
৫৭. আইজাক বাবেলের ঘৃণ্য মৃত্যু ও আমাদের গোবরভরা মগজদের কথা আমি ভাবি।
৫৮. আমি বড় হতে হতে নেরুদাপন্থী হতে চেয়েছি।
৫৯. শোয়ার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করতাম: নেরুদা কেন কাফকার মতো না? কেন রিল্কের মতো না? কেনই বা না দি রোকার মতো?
৬০. তিনি কি বারবুসেকে পছন্দ করতেন? অনেকে বলেন- হ্যাঁ। শলোকভকে। আলেরতিকে। কিংবা অক্টাভিও পাজকে। শুদ্ধ হতে গেলে এসব সাথীকে না রাখলে কি চলে।
৬১. তিনি নিশ্চিত ইউলার্ডকে পছন্দ করেন। ইউলার্ড প্রেমের কবিতা লিখতেন।
৬২. নেরুদা যদি হেরোইন বা কোকেইনে আসক্ত হতেন। কিংবা ১৯৩৬ সালে মাদ্রিদ দখলের সময় ইটের টুকরার আঘাতে নিহত হতেন। অথবা যদি হতেন লোরকার প্রেমিক। লোরকা মারা যাবার পর যদি তিনি আত্মহত্যা করতেন তবে গল্প অন্যরকম হত। নেরুদাকে নিয়ে যদি এতো রহস্যময়তা থাকত।
৬৩. কোনো প্রাসাদের বেসমেন্টে ওত পেতে থাকে ‘পাবলো নেরুদার রচনাসমগ্র’। বাচ্চারা একসময় লেখাগুলো গোগ্রাসে গিলে।
৬৪. সামান্য অনুশোচনা না রেখে সরল মনে তিনি মরতে চাইবেন না। কারণ তাঁর পেটে ক্ষুধা।
৬৫. তাঁর ছেলেমেয়ে নেই। অথচ লোকে তাঁকে ভালবাসে।
৬৬. বুকের ক্রসচিহ্ন, ছড়ে যাওয়া হাঁটু, ক্লান্ত ফুসসুস কিংবা চোখভরা কান্নার কাছে আমরা যেমন ফিরে ফিরে যাই, নেরুদার কাছে কি এভাবে ফিরে ফিরে যেতে হবে?
৬৭. যখন আমাদের নাম কোথাও থাকবে না, তখনো তিনি দীপ্তি ছড়াবেন। চিলির সাহিত্য নামের কাল্পনিক রাজ্যে তিনি বিরাজ করবেন।
৬৮. তখন অন্যান্য কবিরা বাস করবেন একটা শৈল্পিক সমাবেশ। নিরাপত্তা হেফাজতে কিংবা জেলে।
৬৯. আমাদের কল্পিত কোনো বাসস্থান। এখানে আমরা সবাই একসাথে থাকি।
(প্রথম খসড়া)
---
লেখক পরিচিতি:
যাযাবর জীবনকে পিছে রাখলে রবার্তো বোলানো একজন বিপ্লবী লেখক। ফিকশনকে নিজের মতো করে গন্তব্যহীন করে একটা স্বকীয় ধারা তিনি তৈরি করেছেন। এই গন্তব্যহীন অপরিচিত জায়গার নাম বাস্তবতা। তাঁর কাজের ধরণ এতো নানামুখী দিক সমালোচকের ফ্রেমে আটকে রাখা যায় না। বোলানোর তাত্ত্বিক নাটক আলোচনা করতে গেলে সেখানের যৌনতা নিয়ে আলোচনা হয়ে ওঠে না। তাঁর উচ্চাশা, নানারকম তথ্যসূত্র, উচ্চমাত্রার আধুনিক অস্পষ্টতা দেখে মনে হতে পারে সাহিত্যকে তিনি কোনো বন্ধ্যা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন। তাঁর জীবন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়। দীর্ঘদিন ধরে বাস করছিলেন স্পেনে। সেখানেই ২০০৩ সালে লিভার গোলযোগে মারা যান। জন্ম চিলির দক্ষিণে। ১৯৫৩ সালে। বাবা ছিলেন চ্যাম্পিয়ন অ্যামেচার বক্সার। মা স্কুলের শিক্ষক। নিজের ডিস্লেক্সিক ছেলেকে কবিতার প্রতি আকৃষ্ট করান তিনি। ১৯৬৮ সালে পরিবারটি মেক্সিকোতে চলে যায়। রবার্তোর নানামুখী পড়াশোনা ভালোই চলছিল দোকান থেকে চুরি করে আনা বইপত্র দিয়ে। ১৯৭৩ সালে সালভাদর আয়েন্দেকে সমর্থন করার জন্য চিলিতে ফিরে আসেন। নিজের উপন্যাসগুলোর মতোই সব পরিকল্পনা খাপছাড়া হয়ে যায় সেখানে। পিনোচেটের ক্যু জারি হলে রবার্তো ধরা পড়েন, কিন্তু কিছু বন্ধুদের সহায়তায় (যারা পিনোচেটের অধীনে কাজ করছিল) পালিয়ে যেতে পারেন। তারপর আবার মেক্সিকো। সুররিয়্যালিজম ধারার একটা কবিতার স্কুল খুলেন। তারপর সব বাদ দিয়ে ইউরোপ পাড়ি, সেখানে নানারকমের কম বেতনের অবুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করা। হোরেইনে আসক্ত হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যে অবনতি ঘটে। এসব আসক্তি থেকে পরে মুক্তি পান। উপন্যাস লেখায় মনোযোগ দেন। নাজি লিটারেচার ইন দা আমেরিকা (১৯৯৬) উপন্যাসটি লেখা হয় কয়েকজন কাল্পনিক লেখকের উদ্ভট কাজ নিয়ে। আমুলেট (১৯৯৯) উপন্যাসের বিষয়বস্তু- ১৯৬৮ সালে মেক্সিকোর UNAM বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্মি রেইডের সময় এক মহিলার বাথরুমে আটকে থাকার গল্প। ডিস্টেন্ট স্টার (১৯৯৬) উপন্যাসে পিনোচেটের শাসন আমলের এক লোকের কথা নিয়েই গল্প। লোকটা আকাশে নানারকম বদখত কবিতা আকিবুঁকি করতো আর অবসর সময়ে মহিলাদের খুন করা ছিল তার নেশা। বাই নাইট ইন চিলি(২০০০) উপন্যাসে চিলির এক অসৎ সাহিত্য সমালোচক ও পুরোহিতের মৃত্যুশয্যায় অপরাধ কবুল করার কাহিনী। রবার্তো ছিলেন জাতীয়তাবাদী ধারণার প্রতি সংশয়বাদী।
(লেখক পরিচিতির সূত্র: নিউ ইয়র্ক রিভিউ অব বুকসে প্রকাশিত [১৮ ডিসেম্বর ২০০৮] সারাহ খেরের কলাম The Triumph of Roberto Bolaño)
বহি
Last Evenings on Earth
Roberto Bolaño
New Directions;
First Edition edition
May 31, 2006
--
মন্তব্য
ফেইসবুক কানেক্ট টেস্ট করি।
খুব খুব ভাল লেগেছে গল্প।
কোথায় খুঁজে পান আপনি এমন সব ছোট গল্প তাই ভাবি।
আমি প্রতিবার একটাকরে অনুবাদ পড়তে শুরু করি নতুনত্বের আশায়।
এবং ভাল-মন্দ মিলিয়ে যাই পড়া যাক, স্বাদ বদল ঘটে।
অনুবাদ চলতে থাকুক।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
খসড়াতে ১. ২. ৩. এমন নাম্বার দেয়াটা কি দরকার? খসড়াকে ফাইনাল করার সময় নাম্বারগুলো তুলে দিলে ধারাবাহিকতাটা কি অক্ষুণ্ন থাকবে?
৮. "আলেহান্দ্রো" "খলোরস্কি" - এটা কেমন নাম হল? একটু অস্বাভাবিক না? "তিনি তখন ইসেলা ভার্গাসের সাথে জরাথ্রুস্ট পরিচালনা করছেন" - এই কথাটার মানে কী?
৯. "উত্তর হাঁবোধক হলে সে ছাত্রের গায়ে সজোরে লাঠি দিয়ে দুটো বাড়ি দেয়" - বাক্যটা কি ঠিক আছে?
১৭. "চিলির শ্রেষ্ঠ কবি নিকোবার পারা" - উনাকে চিনতে পারলাম না। উনার নামের ইংরেজী/স্পেনিশ বানানটা কী?
১৮. বাতাই কে?
২৪~৩৩. এই পর্বের সেরা বর্ণনাটা পাওয়া যাবে House of Spirits-এ; ছাপার অক্ষরে মোট ৭৬ পৃষ্ঠা মনে হয় - তাই কখনো অনুবাদ করার সাহস করিনি।
৩৪. "সে ইংরেজ বাবুদের মতো পোশাক পরে চলে। চিলির ফ্যাশনদুরস্তরা ইংরেজদের মতো জামাকাপড় পরতে চায়।" - এটা চিলির পুরনো রোগ। Daughter of Fortune-এ এর বিস্তারিত দেখা যায়।
৩৭~৩৯. ইঁদুর ছেড়ে দেবার ব্যাপারটা মোটেও গল্প নয়। এই ভয়ঙ্কর-বীভৎস-কুৎসিত ব্যাপারটা বন্দিনীকে নির্যাতন করার জন্য লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর নিরাপত্তা বাহিনীদের এক সময়ের খুব প্রিয় পদ্ধতি ছিল। এখনো আছে কিনা কে জানে!
......... পয়েন্ট আর বাড়ালাম না।
আমার কাছে কেন যেন বোলানোকে জাপান (শিল্প-সাহিত্য অর্থে) প্রভাবিত বলে মনে হচ্ছে। অবশ্য লাতিন আমেরিকার কিছু দেশে জাপানের প্রভাব বেশ ব্যাপক।
অনুবাদে কাঠখোট্টা ভাবটা রয়ে গেছে। অবশ্য দুই হাত ফেরত জিনিষে রসের পরিমাণ কমই থাকে। ফরমাটে বোলানোকে সরাসরি অনুসরণ না করে কিছুটা স্বাধীনতা নেয়া শ্রেয় হবে। নয়তো ঠিক সুতোয় বোনা হচ্ছেনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
.....
একটা কমেন্ট লিখছিলাম। কই জানি চলে গেল।
--
১,২,৩ আমি করি নাই। বোলানোর গল্পেই এমন।
৮. উচ্চারণটা এখন মনে হচ্ছে খহোরস্কি।
৯. হালকা চ্যাঞ্জালাম।
১৭. নিকানোর পারা। টাইপো হয়ে গেছে।
১৮. বাতাই(ল) ?
নেরুদা ছাড়া চিলির অন্য কোন লেখকের সাথে পরিচয় নেই। বিষয়টা খুব দুঃখজনক। ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্যের স্বাদ কিছুটা পেয়েছি মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদের মধ্য দিয়ে। আপনি সময় পেলে আরো কিছু অনুবাদ করুন না। বেশ তারিয়ে তারিয়ে পড়া যাবে।
এই অনুবাদটা মাঝে একটু আটকে আটকে গেল। বোধহয় রেফারেন্সগুলো জানা নেই বলে।
অফটপিক: আপনার টুকুনগল্পে ইদানিং একটু বারুদের গন্ধ থাকে। ভাল লাগে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
কিছুদিনের মধ্যে অনুবাদটার দ্বিতীয় খসড়া করবো। এক বসায় করে ফেলায় কিছুটা আড়ষ্ট রয়ে গেছে।
নতুন মন্তব্য করুন