এক যে ছিল ছেলে। এক যে ছিল মেয়ে। দুজনেই লেখাপড়ায়, গুণে ও রূপে সবার চেয়ে সেরা। তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। পরে ভালোবাসাবাসি। এখানে ওখানে মধুর ক্যান্টিনে কিংবা ডাসে সব জায়গায় তাদের একসাথে দেখা যায়। অন্যরা দেখে বলে- এই জোড়া মেড ফর ইচ আদার। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওদের প্রথম দেখি তারা অন্যদের মারফত জানতে পারি- এদের প্রেম শুরু হাইস্কুল থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বছরে ছেলে মেয়েকে বলে- চলো সেক্স করি। মেয়ে চুপ মেরে যায়। ছেলে আবারো ভাষা বদল করে একই আর্জি জানায়। মেয়ে বলে- দেখো, আমি তোমাকে ভালোবাসি। অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা চিন্তাই করতে পারিনা। কিন্তু বিয়ে তোমাকে করতে পারবো না। করবো বয়সে চার পাঁচ কিংবা ছয় বছরের বড়ো কাউকে। চাকরি বা ব্যবসা করে এমন কাউকে যে আমার তোমার মতো ছাত্র না।
ছেলে অবাক হয়। বলে- বছর দুই চার পরে আমি বা তুমি চাকরি বা ব্যবসা করবো। প্রতিষ্ঠিত তো হবোই। মেয়ে জানায়- একই বয়সের কাউকে বিয়ে করার কথা আমি মাথায় আনতে পারি না। ভার্জিনিটি আমার হবু বরের জন্য উপহার।
ছেলে মুখ কালো করে। মেয়ে জানায়- তবে প্রতিজ্ঞা করছি বিয়ে হয়ে গেলে একবার না একবার তোমার সাথে শোব। এর পরে ঐ ছেলে আর ঐ মেয়েকে একসাথে আর দেখা যায় না। আমরা নানাজনের কাছে নানা কথা শুনি।
এই ঘটনার বছর তিনেক পরে মেয়ে এক বড়োলোক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে। ছেলেও বিয়ে করে। ঘটনার সাত বছর পরে। তার চেয়ে বয়সে বছর চারেক ছোটো একজনকে। ছেলে একটা শহরে থাকে। মেয়ে অন্য শহরে।
ঘটনার আট বছর পরে একদিন ছেলের অফিসে মেয়ের ফোন আসে। মেয়ে জানায়- সে ছেলেটার শহরে এসেছে। একটা কাজে। উঠেছে হোটেলে। এটা সেটা এণ্ডাগাণ্ডা বিষয় আশয় নিয়ে তাদের মধ্যে হালকা কিছু কথাও হয়। মেয়ে ছেলেকে স্মরণ করিয়ে দেয় পুরানো সেই প্রতিজ্ঞার কথা। ছেলে হোটেলের নাম আর রুম নাম্বার নেয়। বাসায় ফিরে গোসল করে, শেভ করে বউকে একজন ডেলিগেটের সাথে মিটিং আছে বলে রওনা দেয়।
হোটেলে গিয়ে তারা বিছানায় যায়। না শুয়ে বরং বসে থাকে। আলতো করে দুজন দুজনকে ছুঁয়ে থেকে। সময় কেটে যায়। একসময় ছেলে ওঠে। বিদায় নেয়ার সময় বুঝতে পারে তাদের আর কখনো দেখা হবে না।
ছেলে মেয়েটার হোটেল থেকে বেরিয়ে পুরানো ঢাকার অন্য একটা হোটেলে যায়। হোটেলের কলগার্লদের অ্যালবাম থেকে একটা মেয়েকে পছন্দ করে। মেয়েটা আসলে তার সাথে সেক্স করে। টাকার বিনিময়ে।
ফিরে: হারুকি মুরাকামির ‘আ ফোকলোর ফর মাই জেনারেশন: আ প্রি-হিস্টোরি অব লেট-স্টেজ ক্যাপিটালিজম’ গল্পটা অনুবাদ করা শুরু করেছিলাম। বেশ ঢাউস গল্প। তেইশ পৃষ্ঠার। কিছুটা অনুবাদ করে হাঁফিয়ে পড়ি। পরে ভাবি- ধুর, অতো কষ্ট না করে চোথা মেরে একটা টুকুন গল্প লিখে ফেলি। মূলভাব অথবা বলা যায় ভাসা ভাসা ভাব অনুসরণ করে। সাহিত্য মাহিত্য বাদ দিয়ে।
মন্তব্য
গল্পটা খুব ভালো লেগেছে। পড়ে আমি গড়াগড়ি দিয়ে হেসেছি। আপনি ভালো লেখেন। -রু
হ্যা। ধারণাটা ভাল লেগেছে।
এই ধারণা এদিক ওদিক মিলিয়ে নানারকম লেখা, নাটক, সিনেমা খুঁজলে পাওয়া যাবে।
ধুরি দাদা। অনুবাদটা শেষ করতেন।
এখানে শুধু জানা গেলো, বোঝা গেলো না।
মূল গল্পটা খুব মনের কাছে গিয়ে বোঝাতে পারে, আমার প্রিয় গল্প একটা।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
কষ্ট কর্তে ইচ্ছা করে না।
আমি এইরকম একটা স্ক্রিপ্ট লেখসিলাম। তাই মজা লাগল।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
লিঙ্ক দেন।
ভাই, পুরাটাই মাথার উপ্রে না তল দিয়া যেন গেল, মাগার ভিত্রে ঢুকল না। আমারই দোষ...
কন কি!
শর্টকাটে লিখতে গিয়ে মুল গল্পের কিছুই ফুটে উঠলো না।পুরোটাই লেজেগোবরে করে ফেলেছেন।আপনার "টুকুন গল্প"টুকু পড়ে ছেলেটিকে "কামার্ত" আর মেয়েটিকে "বৈষয়িক" মনে হয়।কিন্তু মুল গল্পে তাদের উপস্থাপনা মোটেই এমন নয়।
মুলগল্পটা অনেকদিন আগে পড়েছি।ভীষন ভালো লেগেছে।একেবারেই অন্যরকম।
আমিও ভাষান্তর করার চিন্তায় আছিলাম।
হুমম, আপনি তো দেখি ভাষান্তরেও অনিচ্ছুক
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
টুকুন তো ঐটাই। শর্টকাট। যৌবনে কাম থাকবেই। এটা খারাপ কিছু না। এণ্ডাগাণ্ডা বিষয় আশয় ও খ্রাপ জিনিস না।
মুরাকামির গল্প অনুবাদ করি নাই। মূলভাব নিজের মতো বোঝার চেষ্টা করে চোথা মেরেছি। সাহিত্য ফাহিত্য বাদ্দিচ্ছি তো জানালামই।
এটা কেউ অনুবাদ কর্লে ভালো হয়। জটিল জিনিস। আপনিও কর্তে পারেন।
ভালো
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
ঘোষণা দিয়ে করা পল্লবগ্রাহীতার এই পদ্ধতিটা সমর্থণ করি। কেন? এক, এতে পাঠক মূল গল্পটার কথা জেনে সেটা পড়তে আগ্রহী হবেন। দুই, মূল গল্পটাকে একজন পাঠক (দ্বিতীয় গল্পের লেখক) কীভাবে ইন্টারপ্রেট করেন সেটা জানা যাবে। তিন, বর্তমান পাঠক দুটো গল্পকেই অন্য আলোয় দেখার কথা ভাববেন।
অনুবাদের ক্ষেত্রে আজকাল একটা কথা মনে হয়। বাংলা গল্প-উপন্যাসগুলো খুব একটা অন্য ভাষায় অনুবাদ হয়না কেন? বাজার নেই বলে? নাকি অনুবাদক নেই বলে? সারা দুনিয়ায় বই বিপণন করে এমন প্রকাশকরা অন্য ভাষায় বই বের করলে মানিকের উপন্যাস, গুরুদেবের ছোটগল্প আর জীবনানন্দের কবিতা লোকে পড়বেনা একথা বিশ্বাস করিনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গুরুদেবের ছোটোগল্পের অনুবাদ তো হয়েছে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছু নির্বাচিত গল্পের অনুবাদ বাজারে আছে। মানিকের উপন্যাস অনুবাদ হয়েছে কিনা জানা নেই। জীবনানন্দের কবিতার একটা দুইটা অনুবাদ গ্রন্থ আছে। অনুবাদের দুর্বলতা কিনা কে জানে, এগুলোর কোনোটাই ভালো বাজার পায়নি।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের এক দুইটা ছোটোগল্প ডেইলিস্টারে অনুবাদ করে ছাপানো হয়েছিল। যাঁরা করছেন তাঁদের কোনো বই করার চিন্তাভাবনা আছে কিনা জানি না। একটা সঙ্কলনে ইলিয়াসের অন্য ঘরে অন্য স্বর ছোটোগল্পটির ইংরেজি অনুবাদ ছাপানো আছে। কনফুসিয়াস ইলিয়াসের গল্পের অনুবাদ শুরু করলে ভালো হয়।
আমি নিজে একটা বই ইংরেজিতে অনুবাদ করার চেষ্টা করেছিলাম। ছফার পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ। পরে জানতে পারি সলিমুল্লাহ খান এই বই অনুবাদ করে বসে আছেন। কিন্তু বই হিসেবে এখনো প্রকাশ করেননি।
এমন টুকটাক অনুবাদের কথা আমি জানি। আমি আসলে তা বোঝাইনি। গুরুদেব যে মানের লেখক সে হিসাবে তাঁর রচনা সমগ্রের অন্য দশটা ভাষায় বাজারে সহজে পাওয়া যাওয়া উচিত ছিল - তা কিন্তু হয়নি। একই ভাবে নজরুল, মানিক জীবনানন্দের ব্যাপক অনুবাদও হয়নি। দুনিয়ার অনেক ভাষা যেগুলোতে খুব কম সংখ্যক মানুষ কথা বলে সেসব ভাষার সাহিত্য আমরা বাংলায় পড়তে পাই। কিন্তু তার উল্টোটা কেন হয়না সেটাই বুঝিনা। বাংলা একাডেমি, নজরুল ইন্সটিটিউট বা বিশ্বভারতীর এই ব্যাপারে উদ্যোগগুলো অনুল্লেখযোগ্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মাইয়াডার এত ফ্যাচাং করা কেন? গল্প পছন্দ হল কিনা জানি না কিন্তু চরিত্র তো পছন্দ হল না। অবশ্য দুনিয়াতে কজনই বা আমার পছন্দমতন।
সব ধনতন্ত্রের দুষ। ধনতন্ত্র নিপাত যাউক।
নতুন মন্তব্য করুন