ডিসকোর্স

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: মঙ্গল, ০১/০২/২০১১ - ৮:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ডিসকোর্স

রাবেয়া খাতুন একাত্তরে ধর্ষিত হয়েছিলেন। পাকিস্তানিরা একের পর তাঁর ওপর পাশবিক অত্যাচার করেছিলো। পরে বাঁচিয়ে রাখে সুইপার বলে। রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়িকে ধর্ষণকেন্দ্রে পরিণত করে ফেলায় তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিভৎসতার অনেক কিছু দেখেন। স্বাধীনতার দলিলপত্রে সেগুলোর উল্লেখ আছে। রাবেয়া খাতুনের ঘটনা পরিসংখ্যানে সাহায্য করেনা। কিন্তু ২০১১ সালে এসে তাঁকে একটা নগণ্য সংখ্যায় পরিণত করা হয়। রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়িতে স্তন কাটা, যোনীপথে রড ঢোকানো, এক রাতেই আশিবার ধর্ষিত আমার মা-বোনদের মানবেতর উপস্থিতি তৎক্ষণাৎ অমানবিক অদৃশ্যতায় বায়বীয় হয়ে পড়ে।

কাউন্টার-ডিসকোর্স

একাত্তরে পাকিস্তানি সৈন্যদের সরবরাহ করা হতো পর্ণোগ্রাফির ছবি। বাংলাদেশের সাত থেকে শুরু করে নব্বই বছরের সকল মহিলাকে ধর্ষণ করে পরিশোধনের একটা পরিকল্পিত ব্যবস্থা করা হয়। যুদ্ধকালীন ধর্ষণের বিভৎসতায় পাকিস্তানিদের সাথে আর কারো তুলনা করা যায় না। এগুলো ইতিহাসে আছে। তবে আমাদের কালের এক গবেষক গলা চড়িয়ে বলে- আরে মাত্র এগারোজন স্বীকার গেছে। পাকিস্তানি ম্যাসকুলিনিটির ওপর বাংলাদেশের ম্যাসকুলিনদের বড্ডো হিংসা। প্রেম ভালোবাসা আদরকে ওরা ধর্ষণ বলতে চায়। এই কাউন্টার-ডিসকোর্সে কাজ হয়। পাকিস্তানিরা একাত্তরে প্রেম করতে এসেছিল এটা অনেকেই তখন মেনে নেয়।

ন্যারেটিভ অথবা উল্লম্ব-বনাম-অনুভূমিক

একটা ছোট্ট গ্রাম। সময় একাত্তর। মাস জুন। হঠাৎ হানাদার বাহিনী এসে পড়ে। বাড়ির পর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। পুরুষদের সারিবদ্ধ করে গুলি চালায়। একজন প্রায়-বৃদ্ধ রাজাকার বসে বসে মুক্তিযোদ্ধা কি মানুষ জবাই করতে থাকে। বলে- বাবারা মাথাটা একটু নিচু কর। তাইলে তোদের সুবিধা, আমারও সুবিধা। তোরা ব্যথা কম পাবি, আমার এই বুড়া বয়সে কষ্টটা কম করা লাগে। অনেক মহিলাকে ধরে নিয়ে এসে গ্রামের হাইস্কুলে এনে রাখা হয়। ক্রমাগত ধর্ষণ চলতে থাকে। রাজাকার আলবদরদেরও ধর্ষণের সুযোগ করে দেয়া হয়। মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। গ্রামের নদীর রঙ পাল্টে যায়। এই অনুভূমিক কাহিনী উল্লম্ব হতে হতে একদিন রূপকথায় পরিণত হয়।

গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ

বাংলাদেশের ত্রিশ লক্ষ লোককে মেরে ফেলার মতো পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা। দুই থেকে চার লক্ষ মহিলার ওপর নেমে ইতিহাসের জঘন্যতম পাশবিক নির্যাতন। বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ড। পুরো দেশের আনাচে কানাচে গিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়া। এগুলো বিস্তৃত ক্যানভাস। অনেক বিশাল বলে আমাদের দেশের হ্রস্বদৃষ্টি-আক্রান্ত আমজনতা এগুলো দেখতে পায় না। অঙ্কে দুর্বল বলে আমরা কম কম গুণতে ভালোবাসি। ১১, ৪০০ এর মতো অন্তরঙ্গ সংখ্যাতে গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ পুনর্বার ধর্ষিত হয়।

কাউন্টার-ন্যারেটিভ

একাত্তরে দেশে বনভোজনের মৌসুম শুরু হয়। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অজস্র সৈন্য বাংলাদেশ পর্যটনে আসে। বাংলাদেশের মেয়েরা পাকিস্তানিদের ম্যাসকুলিন মাসল দেখে প্রেমে কাতর হয়ে গোলাপি জামা পড়ে দৌড়াতে থাকে। এসব স্বাভাবিক ঘটনা কিছু কিছু বাংলাদেশের পুরুষের ইগোতে লাগে। তারা পাকিস্তানি নিষ্পাপ সৈন্যদের ওপর বর্বরতা শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার বিভাগের একজন শিক্ষক ক্লাসে এই সব কথা বলার শেষে বলেন- আমি এখানে যা যা বলসি সেটা আবার পরীক্ষার খাতায় কাউন্টার-ন্যারেটিভের উদাহরণে দিয়া বইসো না। এগুলো আসবো গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ নিয়া উদাহরণে।

ডিকন্‌স্ট্রাকশন

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণ অবকাঠামোর মধ্যে ত্রুটি থাকায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ধ্বসে পড়েছে। আমদের প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, জনৈক চলচ্চিত্র নির্মাতা রুবা রহমান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে একটি সেমিনারে গণহত্যা, সত্য ও ন্যায়ের কথা বলতে গিয়ে গণহত্যাকে ব্যঙ্গ করেন, সত্যকে মিথ্যাচার বলে চালান আর পাকিস্তানিদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে জোর গলায় বলেন। উপস্থিত দর্শক এই অন্যায় ও মিথ্যাচারে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। রুবা রহমানের পক্ষে থাকা ভাড়া খাটা লেখকেরা সাধারণ জনতাকে প্রতিহত করতে গিয়ে জটিল দুর্বোধ্য কিছু ইংরেজি শব্দ প্রয়োগ করতে থাকে। জনতা এতে কিছুটা ভয় পায়। পরে আবার সামনে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করে। ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ অবকাঠামোর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এত চাপ সহ্য করতে না পেরে ধ্বসে পড়ে। রুবা রহমানের কি অবস্থা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি সেখানে আছেন। সংবাদ পাওয়ামাত্র আমরা আপনাদেরকে আবারো নিয়ে যাবো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিনির্মাণের জন্য একটা বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে।

রিকন্সিলিয়েশন

পুনর্মিত্রতা। গল্পটা শুরুর এই শব্দে এসেই স্বেচ্ছামৃত্যুকে বেছে নেয়।

ইনোসেন্স অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স

জ্বি, হ্যাঁ এটা উইলিয়াম ব্লেকের কবিতা। সংস্‌ অব- শব্দ দুইটা ভুলে শিরোনামে আসে নাই। জানেন, এটা উনি লিখছিলেন বাংলাদেশে বসে এবং লিখছেন সম্প্রতি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া একটা মানবিক সিনেমায় গোলাপি জামা পড়া একটা মেয়ের দেশ কাল ভুলে পবিত্র এক প্রেমে পড়ার কাহিনী দেখে তিনি কবিতা না লিখে আর থাকতে পারেন না। ... গল্পের এটুকু জাদুবাস্তবতার কথা শুনেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে পাড়ার চায়ের কাপ ও গ্লাসেরা।

মেটামরফোসিস

একজন বামপন্থী বিপ্লবী কিছু খুচরো পয়সার বিনিময়ে ... না গল্পটা সবাই জানেন। কাফকা যেন কি লিখেছিলেন। লোকটার নাম যেন কি। গ্রেগর সামসা কিংবা লিভার সমুসা! উপন্যাসের প্রথম লাইনেই ভদ্রলোক পোকা, শুয়োপোকা বা তেলাপোকায় পরিণত হন। আমাদের কালের বিপ্লবী পোকা হতে চান না। ঈশ্বরকে অনুরোধ করেন বরং তাকে বরাহতে মেটামরফোসিস করা হোক। বেশি কষ্ট হলে ছাগল মেটামরফোসিসেও আপত্তি নেই।


মন্তব্য

ফাহিম হাসান এর ছবি

চশমাপরা ছদ্মবেশি ছাগু
রাজপথে যেই করতে গেলেন হাগু,
জাত তুলে লোক দিল তারে গালি।
বলল ছাগু," বকছ খালি খালি।
স্বাধীন দেশে স্বাধীন আমার কর্ম
যায় না এতে লজ্জা কিবা ধর্ম।
গন্ধ যদি লাগে তোমার নাকে
রুমাল দিয়ে চেপে ধর তাকে।
পেটে হাগু চিপ দিয়েছে জোরসে
যুক্তি আছে ফুকোর ডিসকোর্সে।
পইড়া দ্যাখো বিনির্মাণের কিচ্ছা -
হাগব আমি - আমার যেমন ইচ্ছা।"

হিমু এর ছবি

আপনি তো মিয়া আপন শক্তিতে জ্বইলা উঠতেসেন দিনকেদিন! চলুক!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ভাই, আপনে তো কাঁপালাইতাসেন !!! বিশ্বকাপে আশুর বদলে ডাক পায়া যাবেন তো শিজ্ঞির !!!

নাশতারান এর ছবি

উত্তম জাঝা!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

কৌস্তুভ এর ছবি

গুরু গুরু

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ফাডালায়াছেন্ম্যান।

ফাহিম হাসান এর ছবি

সবাইকে অনেক অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
দোয়া করেন যেন পোতিভার পুরোটাই ঢেলে দিতে পারি ছাগুদের সেবায়

সায়ন (অন্ধ তীরন্দাজ) এর ছবি

গুল্লি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কাউন্টার ন্যারেটিভ আর ডিকন্সট্রাকটশন জটিল হয়েছে।

তবে মেটামরফোসিস অংশটা আরেকটু খোলতাই করতে পারতেন হো হো হো

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কৌস্তুভ এর ছবি

একেকটা কীওয়ার্ডকে নিয়ে একেকটা অণুগল্পের আইডিয়াটা ভালো। আর সবচেয়ে ভালো লেগেছে কাউন্টার-ন্যারেটিভ।

হিমু এর ছবি

এই টুকুন গল্পগুচ্ছ খুব জোরালো হয়েছে। চলুক।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পুরো টুকুনমালা যতটা জোরালো, সেই অনুপাতে মেটামরফোসিসে মশলা একটু কম।

ভিন্ন ভিন্ন কিছু বাক্য ভালো লাগলো। যেমনঃ

অঙ্কে দুর্বল বলে আমরা কম কম গুণতে ভালোবাসি। ১১, ৪০০ এর মতো অন্তরঙ্গ সংখ্যাতে গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ পুনর্বার ধর্ষিত হয়।

অথবা,

ভাড়া খাটা লেখকেরা সাধারণ জনতাকে প্রতিহত করতে গিয়ে জটিল দুর্বোধ্য কিছু ইংরেজি শব্দ প্রয়োগ করতে থাকে। জনতা এতে কিছুটা ভয় পায়। পরে আবার সামনে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করে। ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ অবকাঠামোর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এত চাপ সহ্য করতে না পেরে ধ্বসে পড়ে।

কিংবা

গল্পের এটুকু জাদুবাস্তবতার কথা শুনেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে পাড়ার চায়ের কাপ ও গ্লাসেরা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বাংলার চে-গুয়েবাড়ার কাজকারবার দেখে গপ্‌পো নিজেই পালিয়েছে। মন খারাপ

নীল রোদ্দুর এর ছবি

ভাইয়া, আপনি কীবোর্ড-অন্তর্জালে পাকিপ্রেমের বিরুদ্ধে ধারালো ভাষায় যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন, তার জন্য শ্রদ্ধা।

অব্যাহত থাকুক প্রতিবাদ। রাজাকার-পাকিপ্রেমী-যুদ্ধপরাধী-বর্তমান প্রজন্মের জাত-পরিচয়হীন শিশু পাকি কীট নিপাত যাক।

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কাউন্টার-ন্যারেটিভ, ডিকন্‌স্ট্রাকশন আর মেটামরফোসিসকে কি আরেকটু নৈর্ব্যক্তিক করা যায়? একটা গল্পকে তো দশক-শতক পেরিয়ে বেঁচে থাকতে হয় তাই নৈর্ব্যক্তিকতাটা দরকার হয়। এভাবে কলাম বা চলতি বিষয়ের উপর আলোচনা/রম্য রচনার সাথে সাহিত্যের পার্থক্য তৈরি হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

করা যায়। আপাতত না করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলায় 'বাঁ হাতের কাজ' বলে একটা বাগধারা আছে। 'বামপন্থী' বলতে যদি 'বাঁ হাত পন্থী' হয় তাহলে এধরণের মেটামরফসিস সহজানুমেয়। আর 'ডিসকোর্স' প্যারাটার শেষদিকের লাইনগুলো পড়তে খুবই কষ্ট হচ্ছিল, শরীরে ঘাঁ লাগার মত একটা ব্যথা বোধ হচ্ছিল। ঐ ভদ্রলোকের ঐসব ইংরেজী শব্দের কাঠিন্য দিয়ে কি এমন বাক্যগুলোর অন্তর্নিহিত ভয়াবহতা আর দুঃখবোধ লাঘব কোনদিন হবে?

ধৈবত

নাশতারান এর ছবি

দীর্ঘশ্বাস!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

দ্রোহী এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

অতিথি লেখক এর ছবি

উত্তম জাঝা!
গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

------------------------------------
সবুজ পাহাড়ের রাজা

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দুর্দান্ত!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এত উদাহরণের পরেও পুরাটা বুঝলাম না। এই শব্দগুলো বুঝতে হলে কোনো কোন ভাষার কি কি বই পড়ে আসতে হবে এটাই কেউ বলে না। মন খারাপ

আর উদাহরণ হিসেবে বারবার ৭১ আসবে কেন? পুরোনোকে ফেলে নোতুনকে বরণ করে নিতে হবে। এই নোতুন হলো মেহেরজান। তবে মেহেরজান সিনেমার কথা বলছি না, বলছি মেহেরজান নামে একজন হাগু করেছে, সেটার ডিকন্স্ট্রাকশন, রিকন্স্ট্রাকশন, ডিসকোর্স, ইন্টারকোর্স, ন্যারেটিভ, ফুকো, ফিচেল ইত্যাদি কেমন হবে?

ডিসকোর্স: হাগু একটি স্বাভাবিক বিষয়। যার ইচ্ছা, সে হাগু করে যাবে।

কাউন্টার-ডিসকোর্স: মেহেরজান হাগু করতে বাধ্য হয়েছে।

ন্যারেটিভ: মেহেরজান। তার হাগু। আহ! হাগুর কী রঙ, কী গন্ধ, কী ঝাঁজ!

কাউন্টার-ন্যারেটিভ: অছ্যুৎ বলাই হাগু করে মেহেরজানের দোষ দেয়।

গ্রান্ড ন্যারেটিভ: মেহেরজান ৩ বার হাগু করেছে। একবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সেমিনারে, একবার শাহজালাল এয়ারপোর্টে, একবার গুরু সিনেমার সেটে।

ডিকনস্ট্রাকশন: মেহেরজানের হাগু ভাগাভাগি নিয়ে ম্যারিকা ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক হাতাহাতি শুরু হয়েছে।

ইনোসেন্স অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স: মেহেরজান হাগু করে, আমাদের কমোডে, আমাদের সুদৃশ্য টয়লেটে, আমাদের বেডরুমে। মেহেরজান ললিপপ খায় আর হাগু করে।

রিকন্সিলিয়েশন: মেহেরজানের হাগু মেহেরজানকে ফিরাইয়া দেয়া হোক, সবার ওপরে মানবতা!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই, সেই মাপের!!!

"মেহেরজান। তার হাগু। আহ! হাগুর কী রঙ, কী গন্ধ, কী ঝাঁজ!"

পুরাই অস্থির!!!

হিমাগ্নি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

চিন্তিত
চিরকাল মূর্খই থাইকা গ্লাম! হাগুবৎ তরলং করার পরেও শব্দগুলোর মানে বুঝলাম না! মন খারাপ

ফাহিম হাসান এর ছবি

হাগুবৎ তরলং

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হো হো হো

মণিকা রশিদ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অসাধারণ!!!

অতিথি লেখক এর ছবি

"একাত্তরে দেশে বনভোজনের মৌসুম শুরু হয়। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অজস্র সৈন্য বাংলাদেশ পর্যটনে আসে। বাংলাদেশের মেয়েরা পাকিস্তানিদের ম্যাসকুলিন মাসল দেখে প্রেমে কাতর হয়ে গোলাপি জামা পড়ে দৌড়াতে থাকে। এসব স্বাভাবিক ঘটনা কিছু কিছু বাংলাদেশের পুরুষের ইগোতে লাগে।"

এইটুকু পইড়া মুখে হাসি চইলা আসছিল... দেঁতো হাসি

এক অর্থে রুবাইয়াত কিন্তু সিনেমা বানানোর আঙ্গিকে আমগো দেশের কতিপয় হারামি নেতার মত '৭১ এর ঘটনা, প্রত্যেকটা মানুষ, গোষ্ঠির অবস্থান, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পুরা উল্টাইয়া দেয়ার প্রচেষ্টা চালাইছে....

হিমাগ্নি

সচল জাহিদ এর ছবি

চলুক চলুক চলুক


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

মণিকা রশিদ এর ছবি

চলুক লেখাটা শেয়ার করলাম।

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

স্বাধীনতা দলিলপত্র থেকে কিছু স্ক্রিনশট।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
দলিলপত্র: অষ্টম খণ্ড
গণহত্যা, শরণার্থী শিবির ও প্রাসঙ্গিক ঘটনা
সম্পাদক: হাসান হাফিজুর রহমান
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (তথ্য মন্ত্রণালয়)
প্রথম প্রকাশ: জুন, ১৯৮৪
[পৃষ্ঠা ৫৩-৫৬]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
দলিলপত্র: অষ্টম খণ্ড
গণহত্যা, শরণার্থী শিবির ও প্রাসঙ্গিক ঘটনা
সম্পাদক: হাসান হাফিজুর রহমান
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (তথ্য মন্ত্রণালয়)
প্রথম প্রকাশ: জুন, ১৯৮৪
[পৃষ্ঠা ২৪০-২৪১]

মানাবি এর ছবি

স্ক্যান করা পেইজগুলি শেয়ার করার অনুমতি চাচ্ছি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হ্যাঁ। অবশ্যই। স্ক্যান করা পেইজের লিঙ্ক:

http://i.imgur.com/DeFBP.jpg

http://i.imgur.com/jcsD3.jpg

http://i.imgur.com/OlSXi.jpg

http://i.imgur.com/4J8Rt.jpg

http://i.imgur.com/hKBZz.jpg

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরোটা পড়তে পারলাম না, সহ্য করতে পারলাম না। -রু

হিমু এর ছবি

আশা করবো রিকনসিলিয়েশনের পাইকার বুদ্ধিজিগোলো ফারুক ওয়াসিফ ৎসিগমুন্ট বোমানের বই নামিয়ে রেখে এই বইটির পৃষ্ঠাগুলো পাঠ করবেন।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

তাহমীনা রহমান (দিপালী) যার কথা বলেছেন সেই কুখ্যাত কসাইয়ের নাম আকিজ উদ্দিন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাকে কোমরে দড়ি বেঁধে হোগার দিকে আরেকটা দড়ি দিয়ে লেজ বানিয়ে বান্দর সাজিয়ে বাগেরহাট পিসি কলেজের মাঠে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রের মুর্তির নিচে বেঁধে প্রদর্শনীর জন্যে রাখা হয়েছিলো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সাম্য এর ছবি

চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না...... এই দলিলপত্রের কোন ইংলিশ ভার্সন কি পাওয়া যাবে?

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল আলম বলেছেন-

বাংলাদেশের তরুণ গবেষকদের আশু কর্তব্য মুক্তিযুদ্ধে নারী ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যাপকতর গবেষণা শুরু করা।

তিনি কি জানেন গবেষণার নামে পাকিসঙ্গমের স্বপ্নে বিভোর তরুণ গবেষক (???) রুবাইয়াত কি করেছেন?

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই চরম লিখছেন।
গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু
---------------------------------------------------------------------------------------------
Sad Songs

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আগে চোখ এড়াইছিলো...
দুর্দান্ত...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।