ইলিয়াস ও বিপ্লবী
বিপ্লবী মার্কেটে ঢুকে ইলিয়াস সম্পর্কে বলতে শুরু করে- ইলিয়াসকে বুঝতে হলে তাঁর কাটা পা-কে বুঝতে হবে। চশমার মোটা ফ্রেম কিংবা জাঁদরেল পাইপের মতো কাউন্টার ন্যারেটিভে আপনাদের যাবতীয় নজর। অথচ ইলিয়াসের কথা মাথায় আসলেই আমি দেখতে পাই তাঁর অদৃশ্য পায়ে ব্যথার নীলচে আভা। আমাকে উনি চিনতেন। জানেনই তো। ক্যান্সারে মুমূর্ষু অবস্থায়ও খোঁজ রাখতেন আমার ফুসফুসে জমে থাকা বিপ্লবী পানির। বিপ্লবী এক নাগাড়ে নিজের কথা আউরাতে থাকে। কোনায় ইলিয়াস মৃধার চায়ের দোকান তখন কাস্টমারশুন্য। এই সুযোগে সে লুঙ্গি উপরে তুলে আস্ত দুটো পায়ের বাম রানের ওপরের ফোঁড়াটা হালকা চিপতেই পুঁজ আর তার সাথে শক্ত দানা কি একটা যেন বেরিয়ে আসে। দৃশ্যমান রানের অদৃশ্য ব্যথায় ইলিয়াস মৃধা কঁকিয়ে ওঠে। শব্দ শুনে তাকাতেই ইলিয়াস মৃধার শীর্ণকায় বিচি-নুনুর দিকে চোখ পড়ে একালের বিপ্লবীর।
পিতাপুত্র
আমার ছেলে রক্ত খুব পছন্দ করে। বাসায় একবার মুরগি এনে জবাই করার সময় ওর চোখমুখে আনন্দের শিহরণ প্রথম লক্ষ্য করি। তখনো কথা বলতে শুরু করেনি। তারপর একদিন টিভি খুলে মারদাঙ্গা একটা সিনেমা দেখছি, দেখি ছেলে হামাগুড়ি দিয়ে পায়ের কাছে। কোলের ওপর নিয়ে বসি। টিভিতে নায়ক নিজের দিকে ধেয়ে আসা সব গুলি এড়িয়ে নিজের বন্দুক দিয়ে অন্যদের নিঁখুতভাবে আহত কিংবা নিহত করতে থাকে। রক্তের বন্যা দেখে আমার ছেলে খুশিতে হাততালি দিয়ে ওঠে। ওর ক্রমাগত উৎফুল্ল আচরণে রেগে টিভি বন্ধ করি। অনেক জোরে কান্না শুরু করলে আবার টিভি চালু করতে হয়। সিনেমায় রক্তপাতের আরো ধারাবাহিকতায় তার কান্না থামে। একটু ভীত হই। পরদিন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার লাল জিনিস দেখিয়ে তাকে আকৃষ্ট করানোর চেষ্টা করে। কাজ হয় না। লাল রঙ মেশানো ঘন পানি দেখেও তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। ডাক্তার এবার সুঁই নিয়ে হালকা একটা খোঁচা দেন তার হাতে। রক্ত বেরোতেই ব্যথার বদলে আনন্দে লাফিয়ে ওঠে আমার ছেলে।
টপসি টারভি
আমি যেই বইখানা বইমেলায় আনতেছি ঐটাতে আপনেরা পাইবেন যুগলবন্দি সাক্ষাৎকার, দ্বৈত উপন্যাস, সাথে একখানা যৌথ মহাকাব্য। বইটাতে আছে এক লক্ষ সাত হাজার সাতশো তেষট্টি শব্দ, হাজার তিনেক যতিচিহ্ন। পৃষ্ঠা সংখ্যা এখনো গণনা কৈরা সারা হয় নাই। দাম মাত্র এক হাজার চারশো টাকা। কোনোপ্রকার কমিশন নাই। প্রতি টাকা থিকা আপনেদের মিলতেছে ছিয়াত্তরটার মতো মহামূল্যবান শব্দ। খেয়াল করবেন, যতিচিহ্নের কোনোপ্রকার মূল্য ধরা হয় নাই। ঐগুলা পাঠকের কথা ভাইবা ফ্রি দেয়া হৈতেছে। এইটা একটা যূথবদ্ধতার বহি। দুষ্ট লোকে এটারে পুনর্মিত্রতার বহি কৈয়া ডাকে। তবে তাগো কথায় আমল দেয়ার কিছু নাই। আর সুলভ যাগো মনে হইবে না, তাহাদের অনুকম্পায়িত কৈরা সেলাম দেই।
মন্তব্য
ইলিয়াস ও বিপ্লবী :
পিতাপুত্র : ভাল্লাগছে
টপসি টারভি : (আমি যদি ঠিক বুইঝা থাকি তাইলে)
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পিতাপুত্র'র আড়ালকাহিনীটা মনে হয় ধরতারি নাই, বাকী দুইটা বুঝছি।
দুইডাতেই অপছন্দ জানাইলাম। আপনার দারুণ দারুণ গল্প পড়ে অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে, তাই গল্প ট্যাগে এগুলো পড়তে ভালো লাগে না...
"আপনার গল্প" পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হ, এগুলো আকামের গল্প।
আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ।
এক এবং তিন ভালো।
মাঝেরটা কি কোনভাবে টিভি সিরিজ ডেক্সটার দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা ??
ডেক্সটার এখনো দেখা শুরু করি নাই। দুই নম্বরটার দূরবর্তী ছায়া এটা।
তিনটাই চরম হইছে।
নতুন মন্তব্য করুন