২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ইউনূসের বিপক্ষে কিছু মামলা হয়। তাঁকে আদালতে তলব করা হয় তিনবার। সরকার গত এক বছর ধরে ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আলোচনা করছে। কিন্তু পদত্যাগ করতে ইউনূস রাজি নন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী কেউ ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান পদে থাকতে পারেন। ইউনূসের বয়স এর চেয়ে পাঁচ বছর বেশি।’ ইউনূসের সাথে প্রধানমন্ত্রীর রেষারেষির ব্যাপারটা অস্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। ইউনূসের মতে, তিনি পদত্যাগ করলে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ধসে যাবে। তিনি আরো জানান,‘আমরা একটি বিশেষ অধ্যাদেশের আওতায় গ্রামীণ ব্যাংক গঠন করেছিলাম। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আমার বর্তমান মেয়াদ সম্পূর্ণ বৈধ। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের তিনজন প্রতিনিধি আছেন এবং তাঁরা সর্বসম্মতিক্রমে বিষয়টি অনুমোদন করেছেন।’
তদবির করা বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিকতার একটা চলতি ধারা। ইউনূসকে সরকার যখন চাপ দিচ্ছে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে সরে যাবার জন্য, তখন তাঁর আন্তর্জাতিক বন্ধুমহল সহায়তায় এগিয়ে আসে। প্রফেসর ইউনূসের সুনাম রক্ষার জন্য দেশের ও বিদেশের হোমরাচোমরাদের নানামুখী প্রয়াস বা তদবির প্রয়োজনের চেয়ে বাহুল্য বলে মনে হয়। একটা ভুঁইফোঁড় সংগঠন ‘ফ্রেন্ডস অব গ্রামীণ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্ষুদ্রঋণ ব্লগ বা প্রচার মাধ্যমে ইউনূসকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ার জন্য অনেকে দিনরাত খাটতে থাকে। বাংলাদেশের তেরো সংখ্যক বিশিষ্টজন ইউনূসকে নিয়ে লেখার ক্ষেত্রে মার্জিত হওয়ার আহবান করেন। নিউ এইজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে একটা সংবাদ ছাপে, ইউনূসকে অপমানিত করা বন্ধ করা না হলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য হোয়াইট হাউসের দরজা বন্ধ।
পঞ্চাশটি এনজিও-র সমন্বয়ে গড়া ‘ফ্রেন্ডস অব গ্রামীণ’ নামে একেবারে নতুন একটা ফোরাম তৈরি হয় প্যারিসে, ফেব্রুয়ারির এগারো তারিখে। এর সভাপতি আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সাবেক কমিশনার মেরি রবিনসন। ভারতের সাবেক প্রধান বিচারপতি জগদীশ শরণ ভার্মা, বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেমস ডি উলফেনসন, বাংলাদেশের খ্যাতনামা আইনজীবী ড: কামাল হোসেন সহ আরো অনেকেই এই সংগঠনের সাথে যুক্ত। ফ্রেন্ডস অব গ্রামীণের বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
ত্রিশ বছরেরও বেশি আগে ক্ষুদ্র ঋণের একটি টেঁকসই মডেলের ধারণা নিয়ে এসেছিল গ্রামীণ ব্যাংক এবং অধ্যাপক ইউনূস। এর সুদের হার অত্যন্ত স্বচ্ছ ও যৌক্তিক এবং ঋণ গ্রহীতারাই এই ব্যাংকের মালিকে পরিণত হন। আর এই কারণেই এই ফোরাম অধ্যাপক ইউনূসের মর্যাদা এবং গ্রামীণ ব্যাংকের স্বাধীনতা রক্ষা করার ইস্যুতে নেমেছে।
ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যে তৎপরতা চালানো হচ্ছে, সেটা মারমুখী হয়ে উঠছে বলে এই ফোরাম আশংকা প্রকাশ করেছে। এই সংগঠন বাংলাদেশের সরকারকে সরাসরি অভিযুক্ত করেছে ইউনূসের বিপক্ষের শক্তি হিসেবে।
ইউনূস নিজের ইমেজ ঠিক রাখার জন্য দেশের বা সরকারের ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত নন। বাইরের একটি সংগঠন তার প্রতিষ্ঠার প্রথম দিনেই একটা গণতান্ত্রিক সরকারের আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে সন্দেহ করা বেশ বাড়াবাড়ি।
তেইশে ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে বাংলাদেশের তেরোজন বিশিষ্ট নাগরিক জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুলতানা কামাল, খুশী কবির, ইফতেখারুজ্জামান, শিরীন হক, বিনায়ক সেন, রুবী গজনবী, সিমিম মাহমুদ, মুহম্মদ কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ফেরদৌস আজিম, ইউ এম হাবিবুন্নেসা ও স্থপতি জাহেদুল হাসান একটা বিবৃতিতে জানান,
নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন। তাঁর সম্পর্কে লেখা ও বলার আঙ্গিকে আমরা মার্জিত রূপ আশা করছি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নানামুখী ভূমিকার কারণে বেশ বিতর্কিত। ‘এসো নিজেরা করি’ এনজিও-র সমন্বয়কারী খুশী কবির ইউনূসের বিপক্ষে প্রচারিত তথ্যচিত্রে ইউনূস ও গ্রামীণের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। অথচ এখানে বিবৃতিকারিদের দলেও তিনি ঢুকে আছেন।
প্রফেসর ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক আন্তর্জাতিক প্রশংসায় বন্যায় ভাসলেও বাংলাদেশের গরীব মানুষের দারিদ্র্য কমানো বা প্রশমনে এর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ঋণগ্রহীতা মানুষগুলো দারিদ্র্যের একটা দীর্ঘমেয়াদি চক্রে ঢুকে পড়ার ঘটনা অজস্র। বাংলাদেশের প্রথম সারির বেশ কিছু প্রচারমাধ্যম ইউনূসের পক্ষে লড়ছে দীর্ঘদিন ধরে। ইউনূসের বিপক্ষেও প্রচার মাধ্যম আছে। তবে তাদের কার্যক্রম বেশি নয়। পত্রিকাগুলোর আঞ্চলিক সাংবাদিকেরা চাইলেই গ্রামাঞ্চলের ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে একটা বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্ট করতে পারেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা বড়োসড়ো আকারে কোথাও আসেনি। তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় যদি অজস্র আঞ্চলিক ব্লগার পাওয়া যায়, তবে হয়তো ক্ষুদ্রঋণের আসল ফোকর জানা সম্ভব।
এদিকে নিউ এইজে প্রচারিত সংবাদের সত্যতা এখনো জানা যায়নি। ইউনূস প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান ইউনূসের পক্ষে নিয়ে আসার জোর প্রচেষ্টার নানা ধরনের নিদর্শন পাওয়া যাচ্ছে। এর মাধ্যমে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ইউনূস আদৌ তাঁর হারানো ভাবমূর্তি কতোটা ফিরে পান কে জানে।
মন্তব্য
ইউনূছের জন্য মায়াকান্না'র লোকের অভাব নাই। কারণ পশ্চিমা এই দেশগুলার বাংলাদেশের মতো দেশে শেষ সম্পদটুকুও করায়ত্ত করার জন্য তার মডেলের বিকল্প নাই। এই মডেলটা আসলে অসাধারণ একটা মডেল। কারণ যার কিছুই নাই, তার কাছ থেকে পর্যন্ত মুনাফা করার সিস্টেম দেখায়। ইউনূছ সাহেব আসলে শান্তিতে না...একই সাথে অর্থনীতিতেও নোবেল পাওয়া উচিত ছিল। সুশীলদের মধ্যে ভাবমূর্তি ধরে লাভ কি? গ্রামের মানুষজন তারে উঠতে বসতে গালি দেয়। টেম্পু'র ভেতরে চড়ে একদিন যাচ্ছিলাম...বন্ধুর সাথে কথায় কথায় ইউনূছ প্রসঙ্গ...উল্টা দিক থেকে একজন "লুঙ্গি পরা, দেখতে শ্রমজীবী" লোক যেভাবে বলল, ভাবমূর্তিটা কোথায় থাকে তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
হাটুরে
আপনার লেখাটাও (এবং আগেরটাও) স্পষ্টত ইউনুস বিরোধী (বিরোধী হতে বাধা নেই, হয়ে অস্বীকার করলে মুশকিল)।
যেটা আপনি চেপে গেলেন সেটা হলো: মন্ত্রী সেই একই সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন যে ৬৫ বছরের নিয়মটি অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় না।
তারচে বড় যে বিষয়টা চেপে গেলেন যে, মন্ত্রী তদন্ত কমিটির ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটার কদ্দূর কী হলো? বোল্ড করা লাইনটির একটা রেফারেন্স দিলে ভালো হতো। ইউনুস পদত্যাগ করেছিলেন এমন খবরও পত্রিকায় এসছিল।
কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়া (তার বিরুদ্ধে আসা কোন অভিযোগের প্রমাণ আমি দেখিনি।) আপনি আগের লেখাতেও বলেছিলেন ক্ষুদ্রঋণের তথ্য পেতে খুব আগ্রহী। আমার একটা মন্তব্য ছিলো, যে তথ্য-প্রমাণ নিয়েই একটা উপসংহারে পৌঁছানো উচিত। সরকারের কোন পদক্ষেপটা আইনগত? তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছিল সেগুলো আইনসম্মত ছিলো? তাকে এমডি পদ থেকে সরানো আইন-সম্মত হবে? সরকার মনোনীত বোর্ড মেম্বাররা তার নিয়োগে বৈধতা দিয়েছিলেন কেন?
প্রথম বাক্যটা দায়সারা, কোন পরিসংখ্যান ছাড়া। ইউনুসের পক্ষে একমাত্র প্রথমআলো ছাড়া কোন পত্রিকার ভূমিকা দেখা যায়নি। বরং উল্টোটাই বেশী। বিডিনিউস২৪ যেসব রিপোর্ট করেছে তা রীতিমতো মানহানি পর্যায়ের।
আপনার কাছ থেকে পরিসংখ্যান, তথ্য-উপাত্ত নির্ভর পোস্ট দেখতে চাই। তারপর ইউনুসকে ধোলাই করা যাবে।
নিয়ম থাকলে সেটার প্রয়োগ মানাই তো ভালো। ইউনূসের মতো একজন নোবেলজয়ী যদি বাড়তি সুবিধা নেন, সেটাতে তাঁর ইমেজেরই ক্ষতি। এই প্রসঙ্গ আনলেও সেটা ইউনূসের পক্ষে যেতো না।
ক্ষুদ্রঋণের মাঠ-পর্যায়ের তথ্য পেতে তো আগ্রহী। কয়েকটা কেস স্টাডি করলে অনেক তথ্যই বোঝা যাবে। গ্রামীণ তার ওয়েবসাইটে ফ্ল্যাট রেটের গল্প করে। নিরীহ দেখতে এই সুদের হার আসলে কতোটা বেশি সেটার চিত্র বোঝাতে নিচে কিছু অঙ্ক কষে দেখিয়েছি।
আপনি গ্রামীণের অর্ডন্যান্সটা ভালমতো পড়ুন। তারপর আলাপ করি।
নিয়ম কীভাবে প্রয়োগ হয়েছে সেটা আমরা রোববার জানতে পারব আশা করি।
ক্ষুদ্র-ঋণের তথ্য দিয়ে কী করবেন? ঋণের সুদ ইউনূসের পকেটে যায় কিনা এটা না জেনেই মহাজন
তকমা দিয়ে ফেলেছেন। আপনার দাবী হওয়া উচিত গ্রামীণ ব্যাংক অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়ার।
ডিক্রির কথা ভুলে গেছিলাম। আসলেই মার্জিত হওয়া প্রয়োজন। আর আমার মুখে দাবী-দাওয়া বসিয়ে দেয়ার অর্থ নাই। আপনি বরং কিছু দাবী করুন।
গ্রামীণ ব্যাংক এবং ড.ইউনুসের ব্যাপারগুলো কেমন গোলমেলে ঠেকে।
গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৭ সালে এসে হঠাৎ করে গরীবের রক্তচোষা আর সুদখোর হয়ে গেল এটা আস্ত একটা বিস্ময়। সরকার বা রাজনীতিবিদগন কি আপাদমস্তক চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে ছিল ২৪টা বছর?
গ্রামীণব্যাংক গরীবের উন্নতি কতটুকু করতে পেরেছে সেটা গবেষণা ও বিতর্কের বিষয়। কিন্তু যেটি অস্বীকার করতে পারি না, দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশকে পজিটিভ চোখে দেখা হয় কয়টা বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক তার অন্যতম।
দুর্নীতিতে আমাদের র্যাংকিং বরাবরই ভালো। গ্রামীন ব্যাংকের কথিত কর্পোরেট অনিয়মের মতো বিষয়কে খুঁড়ে খুঁড়ে প্রচার মাধ্যমে প্রকাশ করে আমাদের র্যাংকিং কতোটা মজবুত করছি তা কি শেখ হাসিনার মতো রাজনীতিবিদগন বোঝেন?
২০০৬ এর আগ পর্যন্ত ইউনুসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সুদখোর বিষয়ক কোন বানী পাইনি। তাই আনু মুহম্মদের মতো কেউ যখন গ্রামীণ ব্যাংকের সমালোচনা করেন সেটা যতটা সহনীয় লাগে, শেখ হাসিনা বা তার মতো রাজনীতিবিদের মুখে শুনলে তার দ্বিগুন অসহনীয় লাগে।
যদ্দুর বুঝি, ইউনুস সাহেব দেবতাও না শয়তানও না। তিনি একজন ব্যাংকার যিনি ক্ষুদ্রঋনের বিষয়টা অন্যদের চেয়ে ভাল বুঝেছেন এবং অধিকতর সফলতার সাথে প্রয়োগ করতে পেরেছেন, দেশে বিদেশে সেটা ছড়াতে পেরেছেন সুনামের সাথে। তার সেই ব্যক্তিগত সুনামের অংশীদার বাংলাদেশও। তাই আমার ব্যক্তিগত মত, তার দুর্নীতি আবিষ্কারের উল্লাসে সায় দিলে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধরলাম সরকার বা রাজনীতিবিদরা ২৪ বছর আপাদমসতক চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়েছে, তাতে কি গ্রামীন ব্যাংকের সুদের ব্যবসা মিথ্যে হয়ে যায়? আমি জানতে চাচ্ছি গ্রামীন ব্যাংক কি সুদের ব্যবসা করে না?
হক কথা। তিনি ব্যবসায়ী মানুষ, ব্যবসা করবেন- হোক না সেটা সুদের ব্যবসা।
কিন্তু সমস্যা হলো তিনি যখন জাতির ত্রাতার ভূমিকা পালন করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন এবং সাঙ্গপাঙ্গরা সম্মতি নিয়েই তাকে নবী বানানো শুরু করলেন।
এর চেয়ে বোধ হয় জরুরী হচ্ছে হিসেব করা- গ্রামীন ব্যাংক বাংলাদেশকে আসলে কতোটুকু দিচ্ছে এবং এই দেয়ার বিনিময়ে কতোটুকু নিচ্ছে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
১. ব্যাংক মানেই সুদের ব্যবসা। এটা আশ্চর্য কোন বিষয় না। গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋনের ব্যবসা ঘোষিত প্রকাশ্য একটা বিষয়, সরকাল নীতিমালা নিয়ন্ত্রিত। ওটাতে কোন সমস্যা আছে শুনিনি।
তবে গ্রামীণ ব্যাংককে একটা দানবীর ফেরেশতা নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান বলে ধরে নেয়া হয় বলেই এত সব বিতর্কের সুত্রপাত। আর দশটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মতো গ্রামীণেও নানান অনিয়ম আছে। কিন্তু আমাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে সব ফেরেশতাদের প্রতিষ্ঠান তাই আমরা গ্রামীণের অনিয়ম দেখেই তাজ্জব বনে গেছি।
যে অনিয়মের অভিযোগ গ্রামীণের বিরূদ্ধে এসেছে, বাংলাদেশের সৎ ব্যবসায়ী বলে প্রতিষ্ঠিত সেরা দশটা প্রতিষ্ঠানেও সেরকম অনিয়ম বিস্তর। আমার নিজের সেরকম 'সৎ' প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে বলে জানি। কিন্তু সেরকম প্রতিষ্ঠান নিয়ে হৈ চৈ নেই কেননা তার পরিচালনা পর্ষদ উভচর গোত্রের প্রাণী। ইউনুস সাহেবের দোষ হলো উনি ২৪ বছর উভচর থাকলেও পারেননি নোবেল পাওয়া পরপর। নোবেল পাবার পর তার ভারসাম্যহীনতা অতিশয় দৃষ্টিকটু ব্যাপার ছিল। রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়াটাও ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। কিন্তু সেটা তার মূখ্য পাপ হতে পারে না। সুদের ব্যবসাও হারাম বলে কোন সরকার বলেনি। এমনকি ব্যাংকের সুদের ব্যবসা হারাম এটা আজকাল হুজুররাও বলতে ভয় পায়, আমরা বলি কি যুক্তিতে?
২. আপনার শেষ পয়েন্টের সাথে আমি একমত। গ্রামীণ ব্যাংক গত ত্রিশ বছরে বাংলাদেশকে কি দিয়েছে বা কি নিয়েছে তার হিসেব করা যায়। কিন্তু সেই গুরুতর হিসেবের পথে কাউকে যেতে দেখিনি (নাকি আমার চোখেই পড়েনি কে জানে)। সরকারে বা সরকারের বাইরে যারা সমালোচনা করছে তারা দায়িত্ব মনে করে ইউনুসকে দুটো গালি দিয়েই খালাস। 'ঋন আদায় করতে গিয়ে টিনের চালা খুলে নিয়েছে' এত বেশীবার শোনা গেছে যে, আসলে ওটা গ্রামীনের ঋন আদায় পদ্ধতি নাকি কোন দুষ্ট গ্রামীণ কর্মীর কান্ড সেটা বিচার করা হয় না।
বৈদেশিক বানিজ্য এবং রেমিট্যান্স নির্ভর অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সামান্য একটু ভালো ইমেজের বার্ষিক মূল্য বিলিয়ন ডলারের উপর। বৈদেশিক বাণিজ্যের সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তারা (সত্যি সত্যি দুষ্ট হলেও) যে কোন বাংলাদেশী ব্যাংককে দুষ্ট বলতে একশোবার চিন্তা করে। দেশীয় প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাংকের দুর্নাম হলে সেটা আখেরে বাংলাদেশেই ক্ষতি হয়। গ্রামীণের ক্ষেত্রে সেটা আরো বেশী হয় কেননা ওই নামটা বাংলাদেশের সাথে সবচেয়ে বেশী জড়িত। আমি মনে করি, ইউনুসের কয় মিলিয়ন ডলারের অনিয়মের চাইতে বাংলাদেশের ইমেজের ব্যাপারটা অনেক বেশী গুরুতর।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ইউনূস ডাগদর যখন ২০০৬ সালে গলায় নোবেল ঝুলিয়ে রাজনীতির ময়দানে ঢোকার এন্তেজাম করছিলেন, তখন টিভিতে ওনার এক সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম। উনি বলেছিলেন, পাড়ায় মহল্লায় ২০ জন করে ডকটর ইউনূসের সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি করতে। মানে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ক্ষুদ্রঋণ মডেলেই উনি জনভিত্তি শুরু করতে গিয়েছিলেন। পরে আর এই সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি হয় নাই। দীর্ঘদিন পর দেশের বাইরে এই ধলা আদমিদের নিয়ে সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি হতে দেখে তাই নস্টালজিক হয়ে পল্লুম।
এই জিনিসটা কেউ একজন বুঝিয়ে দিতে পারবেন? আমি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এর মালিকানা পেলাম; কিন্তু তারা আবার আমার চালের টিন খুলে নিয়ে যাবে এবং ইউনুস ডাক্তার বেতনভোগীমাত্র পরিচালক হিসেবে আজীবন ব্যবস্থাপনা করে যাবেন, নোবেল পাবেন - কেমন প্যাঁচ লেগে যায়!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এভাবে মালিক হওয়া ব্যক্তি কি বছর শেষে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কোন ডিভিডেন্ড পান? অথবা উনি কি সেকেন্ডারি মার্কেটে উনার শেয়ারটা বিক্রি করে ক্যাপিটাল গেইন করতে পারেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আইনগত উপায় নেই। কারন গ্রা এর ডিভিডেন্ড পেতে হলে আপনাকে এর অংশীদার হতে হবে এবং সেটা হতে হলে আগে এর থেকে ঋণ নিতে হবে। এই ব্যাঙ্ক এর চারজন সরকার নিযুক্ত পরিচালক (ইউনুস ব্যাবস্থাপনা পরিচালক, একজন প্রাক্তন বিদেশ সচিব সভাপতি, একজন অর্থ-অতিরিক্ত সচিব, একজন সংস্থাপন-অতিরিক্ত সচিব) ও ৯ জন ঋণগ্রহীতাদের প্রতিনিধী পরিচালকের আলাদা করে কোন বেতন ভাতার বিধান নেই। তবে পরিচালনা পরিষদ চাইলে গ্রা- এর নিজস্ব নীতিমালায় নিজের বেতনভাতার যোগান করে নিতেই পারে, তবে সেটা যদি করা হয় গিয়ে থাকে, তবে কার্যত সেটা হবে সরকার অনুমোদিত, কারন চার সরাকারি পরিচালক সহমত না হলে গ্রা- তে কিছুই হবার কথা নয়।
আরো কথা আছে। ১৯৮৩ এর আইনের ২৮ ধারা বলে গ্রামীনব্যঙ্কের খেলাপী ঋন আদায়ের ক্ষেত্রে সরকারের ভুমিরাজস্ব আদায়ের বিধানগুলো প্রয়োগ করা যাবে। মানে যদি সরকার ভূমিরাজস্ব অনাদায়ী থাকলে কারোর বাড়ীর টিনের চাল খুলে নিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে গ্রামীনও সেটা পারবে।
ঘ্যাচাং
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কি ঘ্যাচাং?
শেখের বেটির এই দুর্বিনয় ভালো পাই
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ইউনুস ভাল, কিন ইউনুস খারাপ, সেটা আমি জানিনা। কিন্তু হঠাত আমলকির ইউনুস-বধ কাব্যতে আমি রসের চাইতে গরলটাই বেশী দেখি।
সহমত নই। বিদেশী সংগঠন প্রশ্ন তুলেছে বলেই সেটা অবিবেচ্য, বিদেশী মানেই বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী, এরকম ভাবাটা একটু অতিসরলীকরন বলতে হবে। মনে রাখতে হবে গ্রামীন ব্যাঙ্ক কোন সাধারন কোম্পানি বা সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। একে ১৯৮৩ সালে একটি বিশেষ অধ্যাদেশ জারী করে তৈরী করা হয়েছে। মাল মুহিত যে কোম্পানী বা ব্যাঙ্ক আইনে ইউনুসকে অবসর নিতে বলছেন, সেটা আইনসিদ্ধ হতে হলে সুনির্দিষ্ট আকারে গ্যাজেটে প্রকাশ করে নিতে হবে। গ্রামীন ব্যাঙ্ক অর্ডিনান্স ১৯৮৩ দেখুন এখানে।
সুতরাং যদি আদতেই আমলকি যে আসলেই জনকল্যানে ইউনুস-গ্রামীন বধে মাঠে নেমেছে, সেটার প্রমান অপ্রতুল।
মাল মুহিতই আমাদের শোনালো, গ্রামীন আর ইউনুস এক ও অবিচ্ছেদ্য, তাই ইউনুস মরলে গ্রামীনও মরে যাবে। যদি গ্রামীনব্যাঙ্ককে আমলকি বা বিয়েম্পির মত কিছু একটা ভাবি, তাহলে ঠিক আছে। আদতেই 'গ্রামীন দেশের জন্য় ক্ষতিকর' হলে, জনকল্য়ানে গ্রামীনকে মেরে ফেলার আইনী জোর সরকারের আছে। সংসদে সেই ১৯৮৩ অর্ডিনান্সটি রদ করে দিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। কিন্তু আমলকি তো সেই পথে হাঁটছেনা। ঠিক কিভাবে গ্রামীন দেশের জন্য় ক্ষতিকর, সেটাও যদি সহজসরল ভাষায় পাবলিকের সামনে প্রকাশ করে দেয়া যায়, তাহলেও কিন্তু গ্রাহকের চাপে গ্রামীন এমনিতেই ঢিড হয়ে যেতে পারে।
আমার মনে হয় (সুতরাং প্রমান নেই) আমলকি গ্রামীন নামক দানবকে মারতে চাইছেনা, তারা চাইছে এই দানবের স্রষ্টা যাদুকরকে মেরে ফেলে এই বিশাল শক্তিধর দানবটিকে অধিকার করতে। আসলে হাসিনের শোকেসে দুনিয়ার সব পদকই আছে, নেই কেবলে একটা নোবেল। তাকে নোবেল দেয়া হবে কিনা জানিনা, কিন্তু ইউনুসদলিনী গ্রামীনমর্দিনী খেতাবে একটু নবেল নবেল গন্ধ নিশ্চই থাকবে।
আর কিছু না হোক, ডেমোক্রাটদের আদরের গ্রামীনকে হালকা চাপের মুখে রাখলে হাসিনার রিপাবলিকান বেয়াইও বেজায় খুশীই হয়।
এই হিসাবে, গ্রামীনের যাই হোক না হোক, গ্রামীন-ইউনুসকে মাঠে পচাতে পারলে আমলকির লাভ আছে, কোন লস নাই।
---
১৯৪৭ সালে জন্ম হলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ৬৫ বছরে পদার্পন করবেন। আবুল মাল এর নাকি এমনিতেই ঠোঁট পাতলা। কবেনা সে আবার মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীকেও অবসর নিয়ে নিতে বলে, কে জানে?
সেইরকম একটা মন্তব্য লাগলো!
আমার তেমন একটা স্পষ্ট ধারণা ছিল না, বাস্তবে ইউনুস সাহেব কেমন লোক, জনকল্যাণ নাকি ব্যবসা কোনটা ওঁর মুখ্য উদ্দেশ্য। আপনার লেখা পড়ে মনে হল বিষয়টা আসলেই অনিশ্চিত। পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
মহাজনেরা কেন খারাপ সেটা একটু অঙ্ক করে দেখি।
গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে দেখি। সুদের হার নিয়ে সেখানে লেখা আছে:
এখানে ইনকাম-জেনেরেটিং লোনে সুদের হারের ফ্ল্যাট রেট লেখা ১০%, খেয়াল করবেন প্রথমদিকে লেখা ২০% (এটা ইফেকটিভ রেট)।
ঋণদাতারা ফ্ল্যাট রেটের মুলো ঝুলিয়ে (ইফেকটিভ রেটকে পিছনে লুকিয়ে রাখে পৃথিবীর সকল ব্যাংক আর মহাজনেরা, গ্রামীণ ও তার ব্যতিক্রম নয়। কারণ উদাহরণটা দেয়া হয়েছে ফ্ল্যাট রেটের। যেন ১০০০ টাকায় এক বছরে মাত্র ১০০ টাকা সুদ দিচ্ছেন- এ আর এমন কি!) ঋণগ্রহীতাদের তাদের জালে আটকায়। এবার হিসাব।
এখানে দেখেন প্রথমে ১০০০ টাকা দেয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট রেট ১০%; মানে ১০০০ টাকায় ১০০ টাকা সুদ। মোট আপনি দিবেন ১১০০ টাকা। এক বছরে ৫২ সপ্তাহ। প্রতি কিস্তিতে দিবেন ১১০০/৫২= ৳২১.১৫৩৮৫; ওই ভাংতি পয়সা দিবেন কেমনে? রাউন্ড করে দেই। প্রতি কিস্তিতে ৳২১.২৫; বছরে সুদ তখন দাঁড়ায় ৳১০৫; যেহেতু প্রতি সপ্তাহে টাকা ফিরে আসছে ব্যাংকের কাছে (এই টাকা তারা আবার দেবে অন্য ঋণগ্রহীতাদের), তাহলে ফ্ল্যাট রেটের মুলো সরিয়ে ইফেকটিভ রেটে কি দাঁড়ায় দেখি। তখন বছরের গড় ব্যালেন্স ধরে হিসেব আগাতে হবে (কারণ প্রতি সপ্তাহে আপনি টাকা ফেরত দিচ্ছেন)। বছরের শুরুতে হাতে ১০০০ টাকা, বছর শেষে হিসেব চুকেবুকে গেছে। অর্থাৎ গড়= (১০০০+০)/২=৳৫০০; কার্যকর রেট= ১০৫/৫০০=২১%;
এখানে দেখেন প্রথমে ১০০০ টাকা দেয়া হয়েছে। শেয়ার বাবদ কেটে রাখা হয়েছে ১০০ টাকা; এই শেয়ারের ফলাফল পাবেন আপনি কোনো এক বছর। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত মূল ১০০ টাকা ফেরত পাবেন না। ফ্ল্যাট রেট ১০% দেখিয়ে ১০০০ টাকার (৯০০ টাকার ওপর কিন্তু না, খুপ খিয়াল কইরা) ১০০ টাকা সুদ। মোট আপনি দিবেন ১১০০ টাকা। আগের মতো একই হিসাব। প্রতি কিস্তিতে ৳২১.২৫; বছরে সুদ তখন দাঁড়ায় ৳১০৫; কিন্তু আসলে আপনি দিচ্ছেন ২০৫ টাকা; এখানেও ইফেকটিভ রেট হিসাব করতে গেলে গড় ব্যালেন্স ধরে হিসেব আগাতে হবে। বছরের শুরুতে হাতে ৯০০ টাকা, বছর শেষে হিসেব চুকেবুকে গেলে গড়= (৯০০+০)/২=৳৪৫০; কার্যকর রেট= ২০৫/৪৫০=৪৫.৫৬%;
অনেক সময় অরিজিনেশান ফি নেয়া হয়। কিংবা মেম্বার ফি। সেটা আরো ৫০ টাকা ধরলে আপনি পাচ্ছেন ৮৫০ টাকা; কিন্তু ১০০০ টাকা নিয়েছেন ধরে ১০% ফ্ল্যাট রেটে মেরে একই হিসাব দেখানো হবে। তখন আপনার সুদ হবে ২৫৫ টাকা; গড়= (৮৫০+০)/২=৳৪২৫; কার্যকর রেট= ২৫৫/৪২৫=৬০.০০%;
আর কিস্তি দিতে না পারলে সেটার অবস্থা কি হয়ে সেটা পরে অন্য কোনো অঙ্কে দেখবো।
উল্লেখ্য, গ্রামীণ প্রতি লোনেই শেয়ার বাবদ টাকা কেটে রাখে। অন্যান্য ফি কতোটা নেয়া হয় সেটা ঠিক জানা নেই।
--
(আমি অঙ্কে কাঁচা; আর এইসব হিসাব কর্সি অনেকদিন আগে, যদি ভুল থাকে জানায়েন। এখানে জটিল ফরমূলা ব্যবহার করতে চাই নাই। )
গ্রামীন যখন বলছে যে " All interests are simple interest, calculated on declining balance method." তখনো কি তাদের এফেকটিভ রেট ২১% থাকে?
উল্লেখ্য, গ্রামীণ প্রতি লোনেই শেয়ার বাবদ টাকা কেটে রাখে।
শুনেছি শেয়ারের বিপরীতে বড় আকারের ডিভিডেন্ড দেয়া হয়, কোন বছরে ১০০% ও দেয়া হয়েছিল। তাহলে তো অন্যান্য ফি ইত্যাদির মত প্রাপ্ত ডিভিডেন্ডকেও এফেকটিভ রেট গণনায় আনা উচিত।
গ্রামীণের ওয়েবসাইটেই লেখা আছে- 20% for income generating loans; ১০৫ টাকা না ধরে ১০০ টাকা ধরলে এই ২০% (১০০/৫০০=২০%) আসবে।
ডিভিডেন্ড তো বছর বছর ভ্যারি করে। আপনি সর্বোচ্চটা বললেন। সর্বনিম্নটা কতো? আর এফেকটিভ রেটে ডিভিডেন্ডের হিসাব আসলে রেট কিছুটা কমবে।
আসলে কয়েকটা কেস স্টাডি দরকার। তাইলেই সব বোঝা যাবে।
ভিক্ষুকদের ০% ফ্ল্যাট রেটে ঋণ দেয়ার মধ্যেও কিছু হিসাব লুকিয়ে আছে। হাজার হলেও মহাজনেরা ফ্রি ফ্রি কিছু দেয় না।
ডিভিডেন্ড যেহেতু বাৎসরিক হিসেবের লাভ লোকসানের সাথে জড়িত সুতরাং ভ্যারি করবেই। সেটা অনৈতিক না। অনৈতিক হত যদি বাৎসরিক ডিভিডেন্ড দেওয়া না হতো। ডিভিডেন্ডের হিসেবকে সুদের সাথে না জড়ানোই ভাল, তার উপরে গ্রামীণ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করলে যখন শেয়ারের টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে, তখন তো এতে ক্ষতির কিছু দেখিনা। সরকার যদি গ্রামীণকে সেকেন্ডারি মার্কেটে লিস্ট করতে পারে, তখন এই শেয়ারের মূল্য উল্টো আরো বেড়ে যাবে।
এখানে কিছু দরকারি আলোচনা ও সিনারিও পাওয়া যেতে পারে। এখানেও।
ব্যাংকার হিসাবে ডঃ ইউনুস দারুণ সফল। এই দিক থেকে তাঁকে এবং তাঁর সব অর্জনকে অনেক শ্রদ্ধা করি। ভেজালটা শুরু হলো ওনাকে নবুওয়্যাত দেওয়ার চেষ্টা দেখে। কাউকে প্রাপ্যের অধিক সম্মান দিতে গেলেই তার দোষগুলো চোখের সামনে চলে আসে। ১৫-২০-৩০ বছর ধরে উপেক্ষা করে আসা দোষগুলা সেই জন্যই সামনে চলে আসছে।
সহমত। কিন্তু আমার কথা হল, যে দোষগুলির কথা বলা হচ্ছে, (সরকার প্রদত্ত ক্ষমতার অপব্যাবহার, পাবলিকের সাথে ভাওতাবাজী, সরকারি/পাবলিকের টাকা মেরে খাওয়া) সেগুলোর তো আইনী প্রতিকার রয়েই গেছে। তাহলে সেগুলো ব্যাবহার না করে বিষয়টিকে রাজনৈতি রং দিয়ে কি ইউনুসের নবুওয়্যাতকে আরো পাকাপোক্ত করা হলনা?
হ্যাঁ, অবশ্যই হলো। শুধু তাই না, ডঃ ইউনুস ও সমমনাদের প্রথাগত সমর্থকগোষ্ঠীদের (মূলত পশ্চিমা দাতা দেশ) রোষানলের ঝুঁকিও নেওয়া হলো।
রাজনৈতিক হিসাব বিবেচনায় এটা খুবই স্বাভাবিক। ঐ দলের চোখে ডঃ ইউনুস অধিকতর কাম্য শাসক। তিনিও নিজেকে বড় শক্তি হিসাবেই প্রদর্শন করেন। ঘাড়ের পেছনে শ্বাস ফেলা কাউকে বেশিদিন বয়ে বেড়ানো রাজনীতির নর্মের সাথে যায় না। পুরা ব্যাপারটা (আমার চোখে) শুরু হয়েছে ডঃ ইউনুস রাজনীতিতে নামতে যাওয়ায় এবং শেখ হাসিনার লেজে পাড়া দেওয়ায়। যেমনটা আগে কোনো এক পোস্টে লিখেছিলাম... রাজনীতির জুয়ায় ডঃ ইউনুস সর্বস্ব বাজি রেখেছিলেন ইয়াজুদ্দীনের ঘোড়ায়। বাজি হেরেছেন, এখন মূল্য তো দিতেই হবে। Elections have consequences. খুব প্রচলিত, সরল ব্যাপার।
বড় কাউকে অপসারণের সময় "টেকনিক্যালিটি" ব্যবহার করাটাও অপ্রচলিত না। নাৎসি মাপের অপরাধী কিংবা স্পার্টাকাস মাপের বিদ্রোহী না হলে কাউকেই প্রথম ও প্রধান কারণ দেখিয়ে সরানো হয় না। এতে অহেতুক আদর্শিক বিভেদের দরজা খোলা থাকে।
শেখ হাসিনাও একটা বাজি ধরলেন যে তিনি এই ঘটনার পরও দেশি-বিদেশিদের চোখে আগামী নির্বাচনে প্রথম পছন্দ থাকবেন। ডঃ ইউনুসের ভরসা ছিলো বিদেশি সমর্থন এবং নোবেল জয়ের পরবর্তী ইউফোরিয়া। শেখ হাসিনার ভরসা সুশাসন (?), যুদ্ধাপরাধী বিচার (?), এবং বিএনপি-র সাংগঠনিক দুর্বলতা।
টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ব্রেকিং নিউজ:মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
অন্যান্য তাত্ত্বিক বা হাইপোথিটিক্যাল আলোচনায় যাচ্ছি না। তবে সুদের যে হিসাব-নিকাশ এখানে দেয়া হয়েছে বা এ বিষয়ে বিভিন্নজন মন্তব্য করেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে কেউ হয়তো প্রকৃত বিষয়টা এখনো সরেজমিনে যাচাই করে দেখেন নি।
প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকে ফ্ল্যাট রেট হিসেবে কোন সুদ হিসাবের চর্চা করে না। যা আছে তা হলো ইনকাম জেনারেটিং ঋণের ক্ষেত্রে ক্রমহ্রাসমান পদ্ধতিতে ২০% হারে সরল সুদ আদায়। যা ফ্ল্যাট রেটে ১০% এর মতো হয়। আর সুদ হিসাবের পদ্ধতি প্রচলিত ব্যাংকিং হিসাবের মতোই।
এর সূত্রটা হচ্ছে, সুদ = [{(১ম ব্যালেন্স + শেষ ব্যালেন্স)/২}গুন (দিনসংখ্যা/৩৬৫)]গুন সুদের হার।
এটা নিয়মিত ঋণের ক্ষেত্রে। আর অনিয়মিত ঋণের ক্ষেত্রে হিসাবটা হয় ব্রেক মেথডে।
এই হিসাবের কোন ব্যতিক্রম এখনো আমার চোখে পড়েনি। এই নিয়মে কেউ হিসাব করে দেখেন কোথাও স্বচ্ছতায় ঘাটতি আছে কিনা। আসলে সুদের বিতর্ক যে জায়গাটায়, সেটা কেউ খোলে বলে না কেন সেটাই আশ্চর্যের । মূলত উপরোক্ত পদ্ধতিতে ১০০০টাকা ঋণের জন্য বছরে সুদ আসে ১০০ টাকার একটু এদিক ওদিক। গ্রামীণ ব্যাংক যা করে তা হলো সম্ভাব্য সুদের ১০০টাকাকে কিস্তির মতো সমান ৫০ টুকরা করে প্রতি সপ্তায় ঋণের কিস্তির সাথে আদায় করা। সে ক্ষেত্রে এক হাজার টাকার সাপ্তাহিক কিস্তি ২০টাকার সাথে সুদের কিস্তি ২টাকা আদায় করে জমা করা। সর্বশেষ কিস্তি বা ঋণ পরিশোধের সপ্তায় প্রকৃত সুদের হিসাব করে সমন্বয় করা হয়। অর্থাৎ যদি পাওনা হয় তা আদায় করা, কিংবা যদি হিসাব অনুযায়ী বেশি আদায় হয় তা শেষ কিস্তিতে তা বাদ দিয়ে ঋণের কিস্তি কম আনা। বিভিন্ন সরকারি ছুটির কারণে কিস্তি বন্ধ থাকলে দিন সংখ্যা যদি ৩৬৫ এর বেশি হয়, তাহলে সুদের পরিমাণ হিসাব অনুযায়ী ১০০টাকার চেয়ে কিছু বেশি হবে। ধরা যাক ৩টাকা বেশি হলো। এই অতিরিক্ত টাকা শেষ কিস্তিতে অতিরিক্ত নেয়া হয়। আবার গোটা বছরে সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতার কিস্তির সাপ্তাহিক বারে (রবি সোম ইত্যাদি) কোন ছুটি না পড়লে ৫০ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ হবে। সে ক্ষেত্রে দিন সংখ্যা ৩৬৫ এর কম হবে। উপরোক্ত সূত্রে সুদ ১০০টাকার কম হবে। ধরা যাক আগের ৪৯ সপ্তাহে সুদ আদায় হয়েছে ৯৮টাকা। সেক্ষেত্রে ১টাকা বেশি আদায় ঋণের সাথে সমন্বয় হয়ে শেষ কিস্তিতে ঋণ-সুদ (২০+২)= ২২টাকার বদলে মূলত আদায় করা হয় ১৯টাকা।
আমি অংকে এতো সুবিধার নই বলে প্রতি সপ্তাহে সুদের কিস্তি আদায় করায় প্রকৃত সুদের হার কত হবে তা বের করা আমার পক্ষে একটু জটিল। কেউ কি একটু হিসাব করে দেখবেন প্রকৃত হারটা কত ? সাথে এটাও মাথায় রাখলে সুবিধা হবে যে এক সপ্তাহে আদায়যোগ্য ঋণে ওপর সুদ চার্জ হবে কতো, আর আদায় হয় কতো তাও হিসাব করা।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনার হিসাব আর আমার হিসাব তো একই। আমি ৫২ সপ্তাহ ধরেছি। আপনি ধরেছেন ৫০ সপ্তাহ। আমার হিসেবে তাই কার্যকর সুদের হার ২১% ( মানে ১% তাই বেশি হয়েছে)।
ফ্ল্যাট রেটের ব্যাখ্যা গ্রামীণ তার নিজের ওয়েবসাইটেই দিয়েছে।
এদিকে গ্রামীণ তো ঋণ নিলে একটা শেয়ার কেনাতে বাধ্য করে। সেটার হিসাব কার্যকর সুদের হারের ওপরে আসবে। আর প্রথমবার ঋণ নিলে গ্রামীণ ব্যাংক কোনো ধরণের ফি নেয় কিনা জানি না। আপনি হয়তো মাঠ-পর্যায়ের কিছু তথ্য দিতে পারবেন। কিছু কেস স্টাডি করলেই বোঝা যাবে।
একজন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১০০০ টাকা লোন নিল। এক সপ্তাহ পরেই তাকে ২২ টাকা ফেরত দেয়া লাগলো। এক মাসের মধ্যেই ৮৮ টাকা। দুই মাসে ১৬৪ টাকা। যে টাকাটা ঋণগ্রহীতা ধরে রেখে নিজের ব্যবসা বাড়াতে পারে, সেটা সাপ্তাহিক কিস্তির ঠেলায় চলে যায় গ্রামীণের পকেটে। গ্রামীণ সেটা আবার বিলায় অন্য গরীবগুর্বোদের। ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসায়ীরা ক্যামনে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয় এই হিসাব থেকেই বোঝা যায়। আর ভোদাই ঋণগ্রহীতা আজীবন ঐ একই অবস্থায় ধুঁকতে থাকে।
এটা ইউনূস বলেননি। এটা মুহিতের মুখ থেকে বেরিয়েছে।
মিথ্যা কথা। তিনি গ্রামীণের ভবিষ্যৎ এবং দেশের সুনাম নিয়ে চিন্তিত।
অজস্র মানে কত? অন্তত শতাংশ বিচারে বলুন।
পুরো মিথ্যা কথা।
প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, সমকাল, এ তিনটা আমি পড়ি। এদের মধ্যে একমাত্র প্রথমআলো ড. ইউনূসের পক্ষে।
আরো পত্রিকা যোগ করে, শতাংশে বের করুন।
অনলাইন পত্রিকার মধ্যে: বিডিনিউজ, শীর্ষনিউজ, বাংলানিউজ: কোনটাই ইউনূসের পক্ষে না।
ভুঁইফোঁড় শব্দের মানে কী? ড: কামাল হোসেন যে সংগঠনে জড়িত হন সেটা ভুঁইফোঁড়?
আপনার মিথ্যার সংজ্ঞায়ন দেখে মজা পাচ্ছি।
আগের লাইনেই তো মাল মুহিতের কথা এসেছে। এখানে লেখা হয়েছে, ইউনূসের মতে। প্রফেসর ইউনূসের মুখ দিয়ে যা বেরিয়েছে সেটা তো কোটের মধ্যে দিয়েছি।
এটা বেশ মজার কথা। প্রফেসর ইউনূসের বন্ধুবান্ধবেরা ফরাসি দেশে বসে সংগঠন করে ইউনূস প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। আর এতে দেশের সুনাম বেড়ে আকাশে ঠেকে- তাই তো। দেশ নিয়ে তাঁর চিন্তার ছিরিটা খুব ভালো।
হ্যাঁ, বস্। এটা আসলেই পালটে দিতে হবে। গ্রামীণ ঋণ বিতরণ করে বাংলাদেশে দারিদ্র্য বলে কোনো বস্তুই রাখে নাই বলে মনে হচ্ছে।
ডেইলি স্টার বাদ গেছে। এটা তো পেপার, নাকি? প্রচার-মাধ্যম কি খালিই পত্রিকা? টিভি কি দোষ করলো? আর পত্রিকাগুলোতে রিপোর্টিং কয়টা কার পক্ষে গেছে সেটার একটা পরিসংখ্যান করে তারপর জানাচ্ছি।
ভুঁই মানে মাটি। প্রফেসর ইউনূসকে নানামুখী চাপ থেকে বাঁচানোর জন্য ফরাসি দেশের মাটি ফুঁড়ে এই প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব। আর গুণীজন থাকলেই সেটা ভুঁইফোঁড় হতে পারবে না- এটা অবশ্য চমৎকার সংজ্ঞায়ন।
মিডিয়ার সমর্থনের কথা যদি বলতেই হয় প্রথম আলো ডেইলি স্টার গ্রুপের সাথে পশ্চিমা দুনিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী মিডিয়া ইকনোমিষ্ট ম্যাগাজিনকেও এর সাথে যুক্ত করা যায় পুরা ইস্যুটা নিয়ে তারা যে লেখা ছাপিয়েছ তাতে গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া, গ্রামীণ অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণ এই সব কোন কিছুরই বালাই ছিল না। " D.B." নামের এই সাংবাদিক ইউনুস বন্দনা করতে করতে তার সময় পেলেন না। ইউনুসকে সব সময় নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বড় বড় কথা বলতে দেখি কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের ৫৫ টা সাইড বিজনেসের ( গ্রামীণ সাইবার, কল্যাণ, শক্তি দই) মাঝে ৪০ টার মতো বিজনেসের এমডি তিনি একাই ! তিনি কি পারতেন না তার পরিচালনা পরিষদের ৯ নারী হতে কয়েক জনকে এই বিজনেস গুলার এমডি বানাতে !
ইউনুস এখন একজন গণহত্যাকারীও ! অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে টিনের চাল-ফাল বাদ দিয়ে, এত বড় অপরাধের জন্য আমার মনে হয় হেগ-এ আন্তর্জাতিক ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইবুনালে অবিলম্বে তার বিচার হওয়া উচিৎ। কিম্বা আমাদের যুদ্ধাপরাধী ট্রাইবুনালে। আজকে চ্যানেল আইয়ের ৩য় মাত্রা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মোজাম্মেল হক বাবু জানালেন বাংলাদেশে গ্রামীণের ২ কোটি মহিলা গ্রাহক সুনিশ্চিতভাবে আত্নহত্যার একদম দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। সরকার এখনই কিছু না করলে আর ২-১ বছরের মধ্যেই এই ২ কোটি মহিলার কিছু একটা হয়ে যাবে (অর্থাৎ ৭১-এ পাকিস্তানী গণহত্যারও প্রায় ৭ গুণ বেশি ভয়াবহ হবে ব্যাপারটা)। তাদের এই অবস্থার জন্য জনাব মোহাম্মদ ইউনুসই সম্পূর্ণ দায়ী। এছাড়াও, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে লক্ষাধিক ক্ষুদ্রঋন গ্রহীতা নারী নাকি ঋন-ফাঁদে পড়ে আত্নহত্যা করেছেন। এরা আগামী ২/১ বছরে নয় - ইতিমধ্যেই নিহত। আর এদের হত্যাকারীও নাকি মোহাম্মদ ইউনুস। এই বিষয়টা অবশ্য আমার বুঝতে একটু কষ্ট হচ্ছিল - কারন আমার জানামতে ওখানে গ্রামীন ব্যাঙ্কের কোন শাখা নেই যে ঐ নারীরা গ্রামীনের গ্রাহক হতে পারবেন। তবে একটু চিন্তা করতেই মোজাম্মেল হক বাবুর অকাট্য লজিকটা বুঝতে পারলাম। ঐ নারীরা (এক লক্ষ সামথিং) গ্রামীনের গ্রাহক না হলেও ক্ষুদ্রঋনপ্রদানকারী স্থানীয় কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্রঋনের গ্রাহক তথা 'ঋন-ফাঁদে'র শিকার তো ছিলেনই। আর এই ক্ষুদ্রঋনতত্ত্ব যেহেতু ইউনুসের কল্পনাপ্রসূত সেহেতু আল্টিমেটলি তিনিই ঐ লক্ষাধিক নারীর প্রকৃত হত্যাকারী ! ইন ফ্যাক্ট অনুষ্ঠানে মোজা বাবু ইউনুসকে সারা বিশ্বে ক্ষুদ্রঋন সংক্রান্ত সমস্ত দুর্ঘটনার জন্যই দায়ী করছিলেন।
তো এখন আমার প্রশ্ন হলো, গো আযম/নিজামিদের যদি বিচার হতে পারে ৩০ লক্ষ হত্যায় 'সহযোগিতা' করার জন্য, কিংবা গোয়েরিং/আইখম্যানদের বিচার ও মৃত্যুদন্ড হতে পারে ৬০ লক্ষের জন্য, তাহলে কোটি-কোটির জন্য ইউনুসের কি হওয়া উচিৎ ?
মনমাঝি
শেয়ার কেনার ১০০ টাকা এভাবে যোগ করে ফেললেন? এইটা তো কোনো যুক্তিতেই আসছেন না...ভাই..আপনি যদি যেকোনো ভাবে হোক সুদের হার বাড়িয়ে দেখাবেন এই ধরনের ইচ্ছে পোষণ করে থাকেন তাহলে আমার কিছু বলার নাই ...
আপনি ভাই অনেক কিছু বলার পরে বলছেন:
...
তাহলে কেস স্টাডি করার পরে লিখলে সমস্যা টা কোথায় ছিলো? কেস স্টাডি তো ভিন্ন কিছুও বলতে পারে..তাইনা? তাহলে শুধু শুধু কেন আমদের কে বিভ্রান্ত করছেন?...একজন মানুষকেও ছোট করছেন...ড. ইউনুস কে কী খারাপ হতেই হবে?
শেয়ার কেনার ১০০ টাকা এভাবে যোগ করে ফেললেন? এইটা তো কোনো যুক্তিতেই আসছেন না...ভাই..আপনি যদি যেকোনো ভাবে হোক সুদের হার বাড়িয়ে দেখাবেন এই ধরনের ইচ্ছে পোষণ করে থাকেন তাহলে আমার কিছু বলার নাই ...
আপনি ভাই অনেক কিছু বলার পরে বলছেন:
...
তাহলে কেস স্টাডি করার পরে লিখলে সমস্যা টা কোথায় ছিলো? কেস স্টাডি তো ভিন্ন কিছুও বলতে পারে..তাইনা? তাহলে শুধু শুধু কেন আমদের কে বিভ্রান্ত করছেন?...একজন মানুষকেও ছোট করছেন...ড. ইউনুস কে কী খারাপ হতেই হবে?
আগে জানতে চাই, তারপর মন্তব্য ভাইয়া,
হিসাবটা কি নিজে করেছেন? নাকি কারো মুখে কিছু শুনে এখানে এসে মন্তব্য করে গেলেন। হিসাবটা তো বোঝেন নাই। আবারো ব্যাখ্যা করি।
১০০ টাকা তো যোগ করি নাই। ১০০০ টাকা ঋণ নিলে ১০০ টাকা সুদ। তাহলে ঋণগ্রহীতা ঋণ নেয়া বাবদ একবছরে শোধ করবে ১১০০ টাকা। এর মধ্যে শেয়ার কেনার ব্যাপার থাকলে ঋণগ্রহীতা ১০০০ টাকা না পেয়ে পাচ্ছে ৯০০ টাকা। সেটা অনুসারেই এই হিসাব। এখন প্রশ্ন আসতে পারে ১০০ টাকা গ্রামীণের ঘরে যেহেতু ফিরে গেছে সেক্ষেত্রে প্রাথমিক ব্যালেন্স ১০০০ টাকা হবে নাকি ৯০০ টাকা হবে। ঋণগ্রহীতার এই শেয়ারের টাকা গ্রামীণ ব্যাংক সেই মুহূর্তে নিজের অর্থ পরিচলনের কাজে ব্যবহার করলে প্রাথমিক ব্যালেন্স ১০০০ টাকা আসবে। যেহেতু শেয়ারের টাকা এক বছর পরে ঋণগ্রহীতার কাছে ফেরত আসছে না, তাহলে ২২ টাকা করে ৫০ কিস্তিতে (রণদীপম বসুর সহজ হিসাবটা অনুসারে, তাহলে ৫২ সপ্তাহের হিসাবের ঝামেলাটা হয় না) টাকা দিলে সুদ ২০০ টাকায় হয় (কারণ এক বছরে সে পাচ্ছে ৯০০ টাকা, আর দিচ্ছে ১১০০ টাকা)। যাই হোক এই হিসেবে, গড়= (১০০০+০)/২=৳৫০০; কার্যকর রেট= ২০০/৫০০=৪০.০০%;
---
একটা ব্যাপার বুঝি না। ইউনূস ফ্যানকূল মানী লুক মানী লুক করে মাথা খারাপ করে ফেলে কেন? তাঁকে ছোটো বড় মাঝারি করা নিয়ে ফ্যানবৃন্দ এতো ভাবিত কেন? আর সুদখোর বা মহাজন বলা গালি হিসেবে না ভাবলেই হয়। গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সুদের ব্যবসা করে। ধরে নিলাম অতি অল্প সুদ তারা খায়। তাওতো শেষ বিচারে সুদখোর।
আপনার হিসাবটা দেখলাম, তবে ১০০ টাকাকে সুদের মধ্যে ধরার কোন যুক্তি পেলামনা। এটা ঠিক যে এই ১০০ টাকা গ্রাহক "ফেরত" পাচ্ছেননা, কিন্তু এটা তো শেয়ার কেনার কাজে ব্যায় হচ্ছে, এটার হিসাব সম্পূর্ণই আলাদা হবে।
আমি ঐ ১৮ নম্বর মন্তব্যে বলেছিলাম জটিল সূত্র ব্যবহার করতে চাই নাই। এটা আপনার নজর এড়িয়ে গেছে।
ডেভিড রুডম্যান একটা এক্সেল শীট্ অনলাইনে দিয়েছেন। সেখানে হিসাব করা আছে- বাধ্যতামূলক সঞ্চয় ঋণের ২.৫%; কিন্তু গ্রামীণের সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপন থেকে জানলাম- এটা নাকি আদিকাল থেকেই ঋণের ৫%; ফলে হিসাবটা হালকা পালটায়। এই হিসাব এখানে আপালাম। এখানে বাধ্যতামূলক সঞ্চয়, শেয়ার ক্রয়, সেই শেয়ারের ওপর ডিভিডেন্ট সব কিছুর হিসাব আছে।
এই হিসাব ভালোমতো চেক করে সুদের হারটা একটু লিখে দিয়ে যান।
আপনি হিসাবটা বুঝতে থাকুন। তবে দুটা জায়গায় একটু ভালোমতো ফোকাস করলে ভালো হয়।
ঋণের ওপর ৫% সঞ্চয় রাখতে হচ্ছে। টাকাটা গ্রামীণে ফেরত যাচ্ছে। গ্রামীণ ঋণগ্রহীতাকে দিচ্ছে ৮.৫% হারে সরল সুদ। উলটো সেই একই টাকার ওপর (১০০০ টাকার হিসেবে ৫০ টাকা) ২২% বা ততোধিক হারে সুদ আদায় করছে।
এই বাইশ বা ততোধিক পারসেন্টের চক্রে ১০০ টাকার শেয়ারটাও ঢুকে পড়ে। ৩০% ক্যাশ ডিভিডেন্ট দেখে নিশ্চয় মনে হবে- বাহ বাহ ভালু ভালু, ২২% এর চেয়ে বেশি দিচ্ছে। প্রতি বছর ত্রিশ টাকা। ধরে নেই, সময়কাল ১০ বছর। তাহলে দশ বছরে ডিভিডেন্ট পাবে তিনশ টাকা। দশ বছর পরে সে মূলসহ পাবে ৪০০ টাকা। এখন গ্রামীণ যেহেতু টাকাটা দশ বছর ধরে রেখে দেয় আর খাটায় (মোটের ওপর আবার ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ২২% বা ততোধিক হারে সুদও আদায় করে)- তাহলে এই ২২% ধরে নিয়ে ১০০ টাকা দশ বছরে দাঁড়ায় ৭৩০.৫০ টাকা। এখানেও ঋণগ্রহীতা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আমার এই হিসাবটাও গাণিতিক জটিলতা এড়িয়ে বোঝানোর জন্যে বেশ সরলীকরণ (খুপ খিয়াল কইরা)। তবে এটা ভালোমতো বুঝতে পারলে আশা রাখি এক্সেল শীটের হিসাব বুঝে যাবেন।
নতুন মন্তব্য করুন