অনুবাদ: টুকুন গল্প। ১৫।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: বুধ, ১৮/০৫/২০১১ - ৮:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ও জানলে কি হবে
অ্যান্থনি ভারাল্লো
-

মাঝে মাঝে ভাবি ও যদি জানতে পারে, তাহলে কি হবে। রাগবে তো বটেই। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নাই। একদম ক্ষেপে আগুন হয়ে যাবে। এমন এমন সব বাজে কথা বলবে যেগুলো সে নিজে পর্যন্ত বিশ্বাস করে না। ঝগড়া করতে গেলেই ও এইরকম করে। বলতে থাকে- কেমনে আমি এই জঘন্য কাজটা করতে পারলাম? তার সাথে এইরকম কাজ কেমনে করলাম? কেন বারবার ওর অপছন্দের কাজগুলো আমি করতে থাকি? এইসব না করার কথা কি কখনোই আমার মাথায় আসে টাসে কিনা? ও আসলে এটাই জানতে চায়: ওকে পরাস্ত করার ভাবনা বন্ধ করার কথা আদৌ আমি ভাবি কিনা? নানাভাবে ও এটা জানতে চাইবে। কোন কোন জায়গা থেকে ধরে এনে উদাহরণ হাজির করবে। “কবেকার কার ডলার পেয়ে ফেরত না দেয়ার কথা” কিংবা “খাবারের প্যাকেট পাঠানোর কথা মনে করিয়ে দেয়া সত্ত্বেও ভুল করে অন্য জায়গায় হারিয়ে আসা” কিংবা দুম করে বলে বসবে- “ তুমি যা কর সেটা খাম্বার তার-চোরদেরই খালি মানায়।”

তারপর শুরু হবে গাল ফুলানো। সামনে থাকলে তো দীর্ঘক্ষণ এই ভাব রাখা যায় না। তাই জ্যাকেট গায়ে দিয়ে রাগ দেখিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাবে। দরজা বন্ধ করবে অনেক জোরে। তারপর ঘন্টাখানেক পরে ফিরবে। এইসময় আর আগের মতো উত্তেজিত আচরণ করবে না। তারপর ফ্রিজ খুলে বিয়ার নিয়ে বসা, হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শোনা আর মুখটা রাগ রাগ ভাব করে রাখা। এরপরে সোফায় গিয়ে শোয়া, টিভি চালিয়ে দেয়া। যখন আমি শুভ রাত্রি বলতে যাবো, এমন ভাব করবে যেন শোনেই নি। বরং তাড়াতাড়ি টিভি চ্যানেল পাল্টাতে থাকবে। সিএসআই আর দা গার্ল নেক্সট ডোর এই দুইটা সিরিয়াল ও সহ্য করতে পারে না। অথচ সে দুটাই চালিয়ে দেখবে। পরদিন খুব ভোরে আমি ওঠার আগেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাবে, যেন আমি ওর জন্য চিন্তা করি।

মাঝে মাঝে আমি ভাবতে চাই না, ও জানতে পারলে কি হবে। আমরা দুজনে সিনেমায়, বইয়ের দোকানে অথবা কৃষক মার্কেটে যাই। একদমই ও জানলে কি হবে টবে তখন আর পাত্তা দেই না। কথা বলি, খুনসুটি করি, হাসি। দিন চলে যায়। সপ্তাহও। সুখে শান্তিতে দিন কাটতে থাকে। ভারতীয় বাফেতে খেতে যাই। কখনোবা যাই আরাকানসাসে, ওর বাবা-মাকে দেখতে। সঙ্গম ভালোবাসাবাসি এসব নিয়মিতই হয়। কোনো কোনো সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে অনেক সুখী মনে হয়, মাথাটাও একটু ঘোরে, তারপর বলা নেই কওয়া নেই দুম করে চিন্তাটা এসে আমাকে বিষন্ন করে ফেলে। ও যদি জানতে পারে, তাহলে কি হবে!

--
অনুবাদ: টুকুন গল্প। ১৪।


মন্তব্য

রু (অতিথি) এর ছবি

ভালো লেগেছে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কালো কাক এর ছবি

দারুণ লাগলো !

আব্দুর রহমান এর ছবি

জানবে না। কে জানে হয়তোবা ওর নিজেরও এমন কিছু বা তার চাইতে বেশি কিছু আছে।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

হৈতেপারে

প্রমা এর ছবি

ভাল লাগল।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

িরফাত হাসান এর ছবি

দারুন ভালো লাগলো। এই লেখকের আরও কিছু অনুদিত গল্প পেলে ভালো হতো। অপেক্ষায় থাকলাম।
মরুশেয়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফাহিম হাসান এর ছবি
শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

উত্তম জাঝা!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মূল গল্পকারকে পেলে জিজ্ঞেস করা দরকার ছিলো - পাঠকের ঘাড়ে গল্প বানানোর বোঝা চাপানো কতোটা ন্যায়সঙ্গত?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

শয়তানী হাসি

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

পাণ্ডবদা'র কমেন্ট কপিপেস্ট।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।