মন খারাপ হলে আমি মৃত্যদৃশ্যগুলো একসাথে জমাই। ছোটোকাকুর মৃত্যু, পুকুরে ডুবে মাসতুতো ভাই অর্ণবের মৃত্যু দিয়ে শুরু করি। অ্যাকুরিয়ামে আমার গোল্ডফিশের একযোগে মরে যাওয়ার কথাও যোগ করি। বাবা একদিন গরম পানি ঢেলে আমার মাছগুলো মেরে ফেলে। কনক্রিট আলকাতরায় ঢেকে থেকে মাটিহীন এই নগরে ওদের সৎকার করা হয় না। জায়গা দেই ময়লার বালতিতে। মা সেদিন খুব কাঁদে। আমি বাবার বিড়বিড় শুনতে শুনতে কেঁদেকেটে ঘুমিয়ে পড়ি। অনেক রাতে বাবা আমাকে জাগিয়ে তুলে একটা গল্প শোনায়। অথচ বাবা কখনো গল্প বলে না। এক বাচ্চা বাড়ির সামনের লনে গর্ত খুড়ছে। পাশের বাড়ির ভদ্রমহিলা তাকে জিজ্ঞেস করেন- এখানে গর্ত করছো কেন, বাবু? বাচ্চাটা উত্তর দেয়- আমার গোল্ডফিশটা মরে গেছে। ওকে কবর দিব। মহিলা আবার বলেন- এইটুকুন ছোট গোল্ডফিশের জন্য গর্ততো অনেক বড়। বাচ্চাটা উত্তর করে- আমার গোল্ডফিশ তো তোমাদের বিড়ালের পেটে। বাবা গল্প বলে উঠে চলে যায়। আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
মা কিছুদিন পরে একটা টিয়া নিয়ে আসে। আমার সাথে বন্ধুত্ব পাতানোর আগে সেটা মারা যায়। বাবা পাখিটার নাম দেয় ফ্রয়েড। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখি ডাইনিং টেবিলের ওপর রাখা সাদা প্লেটে ফ্রয়েড নিথর হয়ে পড়ে আছে। বাবা নিজের রুমে। মা বাসায় নেই। আমি পাখা ধরে টেনে তুলে ফেলে দিই ময়লার বালতিতে। আর সাবান দিয়ে আমার খাবারের সাদা প্লেটটা ধুতেই থাকি।
মা একদিন আমার সাথে এসে বেশ গম্ভীর গলায় কথা বলতে শুরু করে। বাবার মধ্যে নাকি ড্যাকনোম্যানিয়া না কি যেন দেখা দিয়েছে। বাবার হাতে মৃত পিঁপড়া, মশা, মাছি, টিকটিকি, আরশোলা, চড়ুই, আটটা গোল্ডফিশ, ফ্রয়েডসহ সব মৃতদের ইতিহাস মা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে হাজির করে। আমি কেন জানি মাকে বিশ্বাস করে ফেলি। মা বাবাকে ছেড়ে চলে আসে। আমিও।
মৃতদের হিসাব জমানোর খাতায় কোনো একদিন খুনী কিংবা অখুনী বাবাও ঢুকে পড়ে। বাবার নামটা ঢুকিয়ে ইউটিউবে ‘কিল দা পেইন’ চালিয়ে দেই। আ শ্যাডৌ ইন অ্যান এম্পটি ডোরওয়ে, কল ইওর নেম বাট নো রিপ্লাই।
মন্তব্য
সিজ্রফেনিয়া...............(বানানটা বোধহয় ভুল হল)......। কত মানুষ এই অসুখ নিয়ে স্বাভাবিক মানুষ এর মত সমাজে বাস করে তার কোনও পরিসংখ্যান নাই.........। মাঝখান দিয়া কিছু সুস্থ মানুষরে অসুস্থ করে তোলে............। যাইহোক, ভালো লাগলো লেখাটা পরে...
প্লট ভাল; শুরুটা বেশি ভাল লাগছিল,শেষেটার তুলনায়। গোল্ডফিশের গল্পটা কেন যেন অহেতুক মনে হয়েছে।
কিছুটা প্রয়োজন হয়তো আছে।
আপনি কি খুঁজেন ?
****************************************
ঠিক ধর্ছেন। আপনার এই মন্তব্যে গল্প হালকা চ্যাঞ্জালাম। এবার খোঁজার দায়িত্ব আপনার।
নাহ্, আমি কোন কান পেলাম না পাকড়ানোর মত। আপনারে কেউ ডাকাডাকি করে নাকি ? আমার কিন্তু আপনার কথাবার্তায় কেমুন জানি ভয় ভয় লাগতাসে। একটু সাবধানে থাকবেন, বুঝছেন !
তবে সিরিয়াসলি, 'ডাকাডাকি'টাই যদি ব্যাপার হয় তাহলে আমি একটা তরিকা বাতলাই। আমার কেন জানি মনে হয় আপনার রিগপাই অর্থাৎ আপনার 'পরম অদ্বৈত চৈতন্য' শ্যাডৌ ইন এম্পটি ডোরওয়ে হয়ে আপনার 'সেমস' তথা কায়ারূপী মায়াজাত মনের উপর ছায়া ফেলতেসে। আপনারে ডাক্তেসে, কিন্তু আপনি তারে ঠিকমত শুনতে, দেখতে বা চিনতে পারতেসেন না। বাট নো রিপ্লাই। তাই বলি কি, আপনি তিব্বতী জগচেনি তরিকায় 'রিগপাত্ব' অর্জনের সাধনা শুরু করে দ্যান এবার। একবার এই মনের মানুষ/আসল মানুষ 'রিগপা'-রে পেয়ে গেলে আপনি ঐ এম্পটি ডোরওয়ের ছায়ার সাথে অনর্গল কথা বলতে পারবেন। দেখবেন, ছায়াই বা কি আর কায়াই বা কি! বুঝবেন, যাহা ছায়া তাহাই আসলে কায়া আর যাহা কায়া তাহা আসলে নেহাতই মায়া। দুঃখের কিছু নাই। ইন ফ্যাক্ট, তখন আপনি সবরকম ছায়া-কায়ার নাগালের বাইরে পরম অদ্বৈততার মধ্যে চলে যাবেন। হয়তো এই কথাটাই আপনার শ্যাডো ইন এ্যান এম্পটি ডোরওয়ে আপনেরে বলে সান্ত্বনা দিতে চাইতেসে। আপনে ওরে ডাইকা বসান। পান-তামুক দ্যান।
তবে হ্যাঁ, ঐ ছায়া ব্যাটার কথায় কিছু করার আগে বউ-বাচ্চার লগে একটু আলাপ করে নিয়েন, ঠিক আসে ? ওরা যদি বেবুঝের মত আপনেরে কোথাও নিয়া যাইতে চায়, আপত্তি কইরেন না। আমার দিব্যি থাকল
.....................................................................................
বিঃদ্রঃ উপরের লিঙ্কের পেইজ দুইটা ভাল করে পড়ে দেইখেন। আপনার কেমন লাগবে জানি না, আমার কিন্তু দারুন লাগসে। ইন ফ্যাক্ট, আপনার লেখাটা পড়ার ঠিক আগে আগে পড়তেছিলাম।
****************************************
যদিও ক্যাটেগরিতে দেয়া আবজাব গল্প, তবুও নিখাদ বেওকুফের মত ভয়েভয়ে জিজ্ঞেস করছি, এটা কি আপনার জীবনের সত্য ঘটনা?
সত্য ঘটনা না। নিখাদ একটা গফ।
অসাধারণ!!!
কঙ্কি!
ড্যাকনোম্যানিয়া, হু... বিচিত্র।
শুধুমাত্র এই শব্দ ব্যবহার করে কোনোপ্রকার ইঙ্গিত না দিয়ে গল্পের টুইস্টটা ফোটাতে চেয়েছিলাম। সফল হই নাই। তাই চ্যাঞ্জালাম কিছুটা। অপরের আচরণকে বা সাজিয়ে হাজির করা আচরণকে আমরা একটা নাম দিয়ে কোণঠাসা করে ফেলি। আমাদের স্বার্থেই।
পেরেছেতো। আমার কাছেতো টুইস্ট মনে হল।
আচরণকে ইন্টারপ্রট করে নাম দিয়ে ফেলার, ইনব্রড সেন্স, এই মুহূর্তে আমি কিছুটা ভুক্তভুগী
গল্পের পেটের মধ্যেকার গল্পটাও ভালো লাগলো। তুলে রাখলাম, সময়ে ভাজতে হবে ওটা।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পেটের ভেতরটা কোথায় যেন শুনছি।
ওরে!! জটিল গল্প!! বেশি জোশ!!
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
গানটাই আসল। গল্পটা ফাউল। আপনার সৌজন্যে শোনা এই গান তো কয়েকদিন ধরে শুনতেই আছি। আর উইড়া যাইতেছি।
খুব ভাল লাগল।।।।
গল্পভালো লাগলো, সেইসাথে মন্তব্যগুচ্ছ! চালিয়ে যান ভাইজান। গোল্ডফিশগুলা র জন্যে মনটা খারাপ লাগলো। শুভেচ্ছা, তানিম এহসান
সব কিছুরে একটা নাম দেবার আগ পর্যন্ত আমাদের প্যাট কামড়ায়! :|
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
হ
জমে গিয়েছিল, কিন্তু হায় এত দ্রুত ছেড়ে দিলেন?
টুকুন তো।
কী একটা টার্ম আছে না "থিংকিং লাউডলি" বা এই রকম। এটা সবার মধ্যেই আছে, কম বা বেশি। চারপাশের মানুষ যদি প্রজ্ঞা আর empathy দিয়ে কথা না শোনে, না বোঝে তাহলে অদৃশ্য বন্ধুকে ডাকা ছাড়া উপায় কী? উন্মত্ততার লাইকার্ট স্কেলে কে কোথায় অবস্থান করছে, আর কে নিয়ন্তা সেটাই ঠিক করে দেয় কে ঘর ছাড়বে আর কে রাঁচীর টিকিট কাটবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একদম ঠিক।
নতুন মন্তব্য করুন