Over the last 30 years, the 1% have created a global economic system - neoliberalism - that attacks our human rights and destroys our environment. Neoliberalism is worldwide - it is the reason you no longer have a job, it is the reason you cannot afford healthcare, education, food, your mortgage.Neoliberalism is your future stolen.
পুরো বিশ্বজুড়ে নেমে আসা মন্দা বোঝার জন্য একটা প্রামাণ্য দলিল চার্লস ফার্গুসনের ডকুমেন্টরি ‘ইন্সাইড জব’। এই প্রামাণ্যচিত্রে নিওলিবারেলিজম শব্দটা উচ্চারণ করা নাহলেও ডিরেগুলেশন (অনিয়ন্ত্রণ)-এর কথা বারবার বলা হয়েছে। নিওলিবারেলিজমের মূলমন্ত্র মুক্ত-অর্থনীতির নামে অনিয়ন্ত্রিত বাজারব্যবস্থা চালু করা। কর্পোরেট আর অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হোমরা-চোমরাদের লোভ অনিয়ন্ত্রণের কারণে সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ১% এর বনামে বাকি ৯৯% এর অর্থ-সম্পদের তুলনা করলে সেটা স্পষ্ট হয়।
সূত্র: (হার্ভে ২০০৫:১৬)
২০০৭-০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দাতে আমেরিকার প্রধান কয়েকটি ব্যাঙ্ক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়। এসব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন প্রধানেরাই বুশের আমলে সরকারি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান সেজে এই বিশাল মন্দা সামলাতে গিয়ে বেইল-আউটের প্রস্তাব দেয়। জনগণের করের টাকায় দেয়া বেইল-আউটের টাকা পেয়ে কর্পোরেটগুলো উচ্চপদস্তদের বোনাসের ব্যবস্থা করে। দায়িত্বহীন এসব কাজের জন্য শাস্তির কোনো ব্যবস্থাও করা হয় না। ওবামা ক্ষমতায় এসে ওয়াল-স্ট্রীটের সীমাহীন লোভ-কে এই অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তবে বিপর্যয়ের মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। মজার ব্যাপার- ওবামার আমলেও মন্দা সামলানোর দায়িত্ব দেয়া হয় আবারো এদেরকেই। সামনের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী রমনি-কেইন-পেরি-র অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে যাঁরা আছেন তাঁরাও হার্ভার্ড কিংবা কলম্বিয়া নিওলিবারেল মুক্ত-অর্থনীতির লবিইস্ট গ্রুপের লোকজন। এদের ক্ষমতা এতোই প্রবল যে আরো অনেকদিন এই নিওলিবারেল দিবারাত্রির মধ্যেই বিশ্বকে যেতে হবে বলে মনে হওয়া অস্বাভাবিক না।
আমরা সকলে নিওলিবারেল দিবারাত্রি নিয়মিত পার করলেও এই মতবাদ সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান অনেকেরই নেই। বিশ্বজুড়ে ঢুকে থাকা নিওলবারেল বিশ্ব আমাদের দেখিয়েছে- The Emperor has no clothes (রাজার নেংটু দেখা যায়)। একই সাথে এই মতবাদ রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি, পরিকল্পনা অনেক কিছুর সাথে এতো আষ্টেপৃষ্ঠে ঢুকে আছে, তৎক্ষণাৎ একে নাকচ করে দেয়াও প্রায় অসম্ভব। তাহলে কথাবার্তা শুরু হোক কিছুটা।
নিওলিবারেলিজম ডিএলপি (D-L-P) ফর্মুলা মেনে কাজ করে-
১) ডিরেগুলেশান অফ ইকোনমি (অনিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি)
২) লিবারাইজেশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ব্যবসা ও শিল্পের মুক্তায়ন বা বিশ্বায়ন)
৩) প্রাইভেটাইজেশন অব স্টেট ওনড্ এন্টারপ্রাইজ (সরকারি প্রতিষ্ঠানের বেসরকারীকরণ)
The subsequent incorporation of neoliberal ideas into specific government policy more accurately reflects a political project allied to specific state-led strategies that promote neoliberalism through different processes characterized by privatization, liberalization, marketization, deregulation and monetarism. (বার্চ ২০১০ : ৬)
এই তত্ত্বকে বাজারে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সেই সময় বেশ কয়েকটি নিওলিবারেল থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও লবিইস্ট গ্রুপ তৈরি করা হয়। ১৯৮০ সালের দিকেই গঠিত হয় ওয়াশিংটন কনসেন্সাস্ বা ওয়াশিংটন ঐক্যজোট। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক সহ বেশ কয়েকটা বড়ো বড়ো অর্থনৈতিক সংগঠন (আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, ক্যাটো ইন্সটিটিউট, হেরিটেজ্ ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিস, অ্যাডাম স্মিথ ইন্সটিটিউট) পুরো বিশ্বে নিওলিবারেল টোটকা সেবনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়। সেই সময়ের চার ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান আমেরিকার রিগ্যান, ইংলন্ডের থ্যাচার, কানাডার মুলরোনে, অস্ট্রেলিয়ার ফ্রেজার সহ অজস্র কর্পোরেট লবিইস্ট, প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক, প্রধান নির্বাহী, মিডিয়া তারকা, কূটনৈতিকসহ অনেকেই এই তত্ত্বের বাজারজাতকরণে নেমে পড়েন। ওয়াশিংটন কনসেন্শাসের মূলনীতি গুলো অল্প কথায়-
The proposed ten policy reforms included an imposition of a tight fiscal discipline (with virtually no public budget deficit allowed); an end to subsidies and re-direction of public expenditure on basic health, education and infrastructure; tax cuts; financial liberalization; free-floating exchange rates; trade liberalization with a unified low tariff; openness to foreign direct investment (FDI); privatization; deregulation; and secure private property rights. (বার্চ ২০১০ : ৯)
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেশি থাকলে কর্পোরেটগুলোর অসুবিধা। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারি করা প্রয়োজন দেখা দেয়। ধনী দেশগুলোর শীর্ষধনীদের প্রাচুর্যের লেখচিত্র দেখলে এসব উদ্দেশ্য কিছুটা বোঝা যায় । নিওলবারেল অর্থনীতির কারণে ধনী-গরীব ব্যবধান বিশাল ব্যবধানে বাড়ে। এর মাধ্যমে বড় ব্যবসায়ী বা ধনীদের কর মওকুফ, আমজনতার সামাজিক সুযোগ-সুবিধা কমানো, সরকারের আকার ছোটো করা, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কর সুবিধা দিয়ে বাণিজ্যে আগ্রহী করানো, খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-স্বাস্থ্য এইসব মৌলিক চাহিদাকে উচ্চমূল্যের পণ্যে পরিণত করা, শ্রমিকদের মধ্যে ইউনিয়ন গড়ে তোলা বন্ধ করা, নিওলিবারেল সমর্থনকারী নানা ধরনের নতুন রাজনৈতিক সংগঠন, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা ঘটে। (স্টেগার ২০১০: ১৪) ধনীরা তার প্রাচুর্যের পরিমাণ নির্দিষ্ট গণ্ডি ছাড়িয়ে অসীমতটে নিয়ে যাবার জন্যেই এই তত্ত্বের প্রায়োগিক রূপ বিশ্বজুড়ে চালু করতে চেয়েছে।
নয়া উদারতন্ত্র বা নিওলিবারেলিজম তত্ত্বকে মাঠে প্রয়োগের চেষ্টা শুরু হয় আশির দশক থেকে। লবিইস্ট গ্রুপ অ্যাডাম স্মিথ ইনস্টিটিউটের ম্যাডসেন পিরাই লিখেছেন-
The successes achieved by the new-style politics allowed for the rise of the attractive but erroneous view that the work of lonely scholars, their acolytes and their advocates had finally paid off. And brought results in its train. That these results had not come in the earlier administrations which attempted them was put down to a wrong climate or wrong personnel. In fact, it was wrong policies. It was the policy engineers, coming in the wake of the pure scientists of politics and economic theory, who made the machines which made events. The ideas had been sufficient to win the intellectual battle, but this was not enough. Men and women with spanners in their hands and grease on their fingers had first to devise the ways in which the ideas of pure theory could be turned into technical devices to alter reality. The idea at the core of micropolitics is that creative ingenuity is needed to apply to the practical world of interest group politics the concepts of free market theory. (পিরাই ১৯৮৮: ২৬৭)
অর্থাৎ, তত্ত্বকে বাস্তবে করে দেখাতে হবে। অনেকটা মার্ক্সের মতবাদের উলটোপথে হাঁটার মতো। কার্ল মার্ক্স তাঁর ‘জার্মান আইডিয়োলজি’ তে লিখেছেন-
We do not set out from what men say, imagine, conceive, nor from what men as narrated, thought of, imagined, conceived, in order to arrive at men in the flesh. We set out from real active men, and on the basis of their real life process we demonstrate the development of the ideological reflexes and echoes of this life process. The phantoms formed in the human brain are also, necessarily, sublimates of their material life process, which is empirically verifiable and bound to material premises. Morality, religion, metaphysics, all the rest of ideology and their corresponding forms of consciousness thus no longer retain the semblance of independence. They have no history, no development; but men, developing their material production and their material intercourse, alter, along with this their real existence their thinking and the products of their thinking. Life is not determined by consciousness, but consciousness by life. (মার্ক্স ১৯৭৬: ৪০-১)
মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতাকে তত্ত্বে নিয়া আসার বদলে ১% ধনী শ্রেণীর অর্থ-সম্পদকে অল্প আয়াসে বাড়িয়ে তোলার পুঁথিগত তত্ত্বকে প্রায়োগিক ক্ষেত্রে নিয়ে আসার পেছনে শ্রম দিচ্ছে অবশিষ্ট ৯৯% লোক।
ধনী ও ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো ১৯০০ সালের শুরুর দিকে নিজেদের তত্ত্ব বা ফতোয়াকে বাজারে প্রতিষ্ঠিত করতে অজস্র থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, লবিইস্ট গ্রুপ ও গবেষকদের গ্রুপ তৈরি করে। খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারেরা বিশাল অঙ্কের বিনিময়ে এসব লবিইস্ট গ্রুপে শ্রম দেয়। এদেরই একজন মিল্টন ফ্রীডম্যান ছিলেন ‘শিকাগো স্কুল অব ইকোনমিকসের’ হর্তাকর্তা। তিনি ‘বৃহৎ সরকার’ গঠনের বিরোধিতা করে সরকারের হাত সীমিত করে মুক্ত অর্থনীতির বহুল প্রচারের মিশনে নামেন। তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য হয় লাতিন আমেরিকা। ‘চিলি প্রজেক্ট’ নামের একটা মিশন চালু হয়। এতে চিলির প্রায় শ’খানেক ছাত্রকে নিওলিবারেল অর্থনীতির পাঠ দেয়া হয়। এরা পরিচিত ছিলেন ‘শিকাগো বয়েজ্’ নামে। ১৯৭৩ সালের এগারোই সেপ্টেম্বর আগুস্ত পিনোচেট সিআইএ-এর সমর্থন নিয়ে একটা ক্যু জারি করে ক্ষমতা দখল করে বসেন। শিকাগো বয়েজ্-রা পিনোচেটের ক্ষমতা দখলের পরে সেখানকার অর্থ মন্ত্রণালয়ে হোমরা-চোমরা হিসেবে প্রবেশ করেন। তারা তাদের শিখে আসা মুক্ত অর্থনীতির ব্যবহারিক ক্ষেত্র পেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বেসরকারীকরণের ধুম তোলেন। স্বৈরশাসক পিনোচেটের যাবতীয় নির্যাতন-নিপীড়ন, গণহত্যার মাধ্যমে এক নতুন নিওলিবারেল চিলি বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। মার্ক্সবাদীদের হাত থেকে চিলিকে বাঁচানোর কথা বলে পিনোচেট প্রায় তিন হাজারের মতো মানুষকে হত্যা করে গুম করেন। জেলে ঢুকিয়ে নির্যাতন করা হয় ত্রিশ হাজারের বেশি লোককে। এইসব জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের সময়ে বিশ্বব্যাঙ্ক টু শব্দ করেনি। পিনোচেটের এই নির্যাতনের সময়কালেই বিশ্বব্যাঙ্ক উন্নয়ন কাজের জন্য চিলিকে সাতটা বড়ো আকারের অর্থসাহায্য দেয়।(টেইলর ২০০৬: ৩২) পিনোচেটের সময়ে দেশের মাত্র ১০% ধনী লোক এই অর্থনীতির সুফলটা ভোগ করেন। আর্জেন্টিনাতে একই ঘটনা ঘটে ১৯৭৬ সালে। মেক্সিকো নিওলিবারেলিজমে দীক্ষিত হয় ১৯৮০ সালে। ব্রাজিলে ফার্নেন্দো দি মেলো মারফত এই নীতি প্রবেশ ঘটে ১৯৮৯ সালে। (বার্ডিক ২০০৯: ১০৩) দেখা যাচ্ছে, সামরিক সরকারগুলোকে এই টোটকা সহজে হজম করানো যায়। এর মূল কারণ- সামরিক বাহিনীর মধ্যে ঢুকে থাকা অসম্ভব লোভ ও ক্ষমতার প্রতি মোহ। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলে সেখানে নিওলিবারেল অর্থনীতি চালু করে ১৯৮০ সালে। (রায় ২০০৭: ৩১৩) শুরুর দিকে এশিয়াতে ধাক্কা না লাগলেও নব্বইয়ের দশকে ‘এশিয়ান ডেভলেপমেন্ট মডেল’ হিসেবে এশিয়ায় এর জোর প্রবেশ ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নতুন নিওলিবারেল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা মানেই একটা চকচকে বিমানবন্দর, নতুন একটা ম্যাকডোনাল্ডস্, ২/৩টা বিলাসবহুল হোটেল, হাজার তিনেক এনজিও, আর একটা মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। (জনস্টন ২০০৫: ২)
রিগানোমিকস্ (Reaganomics) আর থ্যাচারিজম (Thatcherism) নিওলিবারেল প্রচারণার প্রথম ঢেউ। এর পরে আসে এর দ্বিতীয় পর্যায় যার হাল ধরেন ক্লিনটন আর টনি ব্লেয়ার। ক্লিনটনের মার্কেট গ্লোবালিজম আর ব্লেয়ারের থার্ড ওয়ে নাম দিয়ে এই তত্ত্ব দ্বিতীয় পর্যায় পার করে। এই অর্থনীতির মূল আগ্রহ মুনাফায়। ১৯৮৭ সালের ‘ওয়ালস্ট্রিট’ সিনেমায় গর্ডন গেক্কোর মুখ থেকে বেরোয়, ‘গ্রীড ইজ গুড’। এই একটা বাক্যেই নিওলিবারেল তত্ত্বের যাবতীয় বিভ্রান্তি চোখের সামনে চলে আসে। নিওলবারেলিজম চায় বাজারকে অনিয়ন্ত্রিত চেহারায় দেখতে (যেখানে স্বয়ংক্রিয় ভুলশুদ্ধি হবে বলে তাদের ধারণা), সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারীকরণ করতে আর মুক্তবাজার অর্থনীতির নাম করে ধনী ও সক্ষমদের আধিপত্য আরো বাড়িয়ে তুলতে। সরকারি ব্যাঙ্ক বেসরকারি হওয়ার ফলে তাদের প্রধান নির্বাহীর বেতন, সুযোগ-সুবিধা দেখলেই বোঝা যায়- কেন এই নিওলিবারেল তত্ত্বের এতো রমরমা অবস্থা। সরকারের ক্ষমতা সীমিত করে ব্যবসায়ীদের কাছে মানুষকে জিম্মি করে রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণ কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারে না কিন্তু ভোট দিয়ে নির্বাচিত সরকারের অনিয়মের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ গোষ্ঠীবদ্ধ প্রতিবাদ গড়ে তুলতে পারে। জনগণের সেইটুকু সুযোগও রহিত করার যাবতীয় চেষ্টা করা হয় নিওলিবারেল রাজনীতির মাধ্যমে। আর মানুষের মৌলিক চাহিদা রাষ্ট্র পূরণ না করে বেসরকারি মুনাফালোভী প্রতিষ্ঠান পূরণ করবে- এটা বিশ্বাস করা কষ্টকর। সরকারের গোষ্ঠীবদ্ধতাকে কাটিয়ে মানুষ একাকি সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে- এইরকম কথাও প্রচার করা হয়।
নিওলিবারেল তত্ত্ব মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে সংকুচিত করেছে। আমজনতার চাহিদা পূরণের ভার নিতে গিয়ে কর্পোরেট প্রতিষ্টানগুলো জনসাধারণের চাহিদা বা সামর্থের ওপর নজর না রেখে মুনাফাকে কেন্দ্র করেই প্রতিষ্ঠান চালায়। জনতার উপার্জন থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছে এসব প্রতিষ্ঠান। ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্যাকেজ গণতন্ত্র সহ আরো অনেক বিষয়ে নিওলিবারেল আধিপত্য। পরের পর্বগুলোতে এসব আলোচনায় আসবে।
সূত্র
১। Steger, Manfred B. , Ravi K. Roy, Ravi K., Neoliberalism: A Very Short Introduction, Oxford University Press, USA , February 8, 2010
২। Harvey, David, A Brief History of Neoliberalism, Oxford University Press, USA, First Edition, September 15, 2005
৩। Birch, Kean, Mykhnenko, Vlad, Edited by, The Rise and Fall of Neoliberalism: The Collapse of an Economic Order?, Zed Books , August 31, 2010
৪। Pirie, M. (1988) Micropolitics: the Creation of Successful Policies, Wildwood House, London.
৫। Marx, K. and Engels, F. (1976) The German Ideology. In Collected Works, Lawrence and Wishart, London, Vol. 5, pp. 19–539.
৬। Taylor, Marcus, From Pinochet to the ‘Third Way’: Neoliberalism and Social Transformation in Chile, Pluto Press, 2006
৭। Burdick, John, Oxhorn, Philip, Roberts, Kenneth M., Beyond neoliberalism in Latin America?: societies and politics at the crossroads , Palgrave Macmillan , January 6, 2009
৮। Roy, Ravi K. , Denzau, Arthur , Willett, Thomas D., Neoliberalism: national and regional experiments with global ideas, Routledge; 1 edition , January 31, 2007
৯। Johnston, Deborah, Saad-Filho, Alfredo, Neoliberalism: A Critical Reader, Pluto Press , February 3, 2005
(প্রথম ড্রাফট্)
মন্তব্য
লেখকের নিয়ত ভালো, অভিনন্দন, বুঝানোর ইচ্ছা নিয়েই এসেছেন, আরেকটু গোছানো হলে ভালো হবে, একবারে সবকিছুকে এড্রেস করার প্রবণতা থেকে খাপছাড়া মনে হয়ে যায়, অসংখ্য ধন্যবাদ জানবেন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্বে আরেকটু গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করবো।
ভালো লাগলো লেখাটা। অনেক তথ্যপূর্ণ।
কয়েকটা বিষয় -
তত্ত্বগতভাবেই কি এটা ১%এর স্বার্থ রক্ষার কথা ক্লেইম করে? এমনিতে জীবন থেকে চেতনা চালিত করা উচিত নাকি চেতনা থেকে জীবনকে চালিত করা উচিত, সেটার মধ্যে মালিক আর শ্রমিকের স্বার্থ সরাসরি জড়িত মনে হচ্ছে না। তবে ব্যাপারটা এমন হতে পারে যে উপরতলার মানুষরা বেশি কজিটেটিভ হয় নিচের তলার মানুষের চেয়ে। সেটাই যদি হয়, তাহলে কজিটেটিভরা তো ধ্যান ধারণা দিয়ে জীবন চালাতে চাবেনই। মালিক শ্রমিক স্বার্থের ক্ল্যাসিকাল সংঘাত যাকে বলে আর কি।
তবে জীবনের উপর চেতনার এই কঠোর নিয়ন্ত্রিত প্রয়োগই কিন্তু একে প্রাতিষ্ঠানিকতার দিক দিয়ে সোভিয়েত ঘরানার কমিউনিজমের সমতুল্য করেছে। বা যেকোনো কমিউনিস্ট রাষ্ট্রকেই সচরাচর যেটা দেখা যায়, নিয়ন্ত্রিতভাবে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। এর জন্যে প্রাতিষ্ঠানিকতা থাকে। পার্থক্য এই যে কমিউনিজমের প্রাতিষ্ঠানিকতাটা সরকারকে ঘিরে, নিওলিবারেলদের প্রাতিষ্ঠানিকতাটা অসরকারি আন্তর্জাতিক সংগঠনদের ঘিরে।
আর এই প্রাতিষ্ঠানিকতাটাই কিন্তু অনেক নিওলিবারেল অর্থনৈতিক তত্ত্বের বাস্তবায়নেরই অন্তরায়। যেমন - রাষ্ট্রের অনিয়ন্ত্রণ। কল্পনা করুন, এটা নিশ্চিত করার জন্য তারা কী করে? রাষ্ট্রনায়ককে অপসারণ করে, সরকারের আনাচে কানাচেতে নিজেদের লোক বসায়। তারা প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক নিওলিবারেল সংগঠনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়ন করে। এবং তাদের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের যা যা ক্ষমতা বর্ধন প্রয়োজন পড়ে, সব তারা অনুমোদন করে। ফলত, সরকারগুলো মূলত স্বৈরাচারী। তা, সেটা তো নিওলিবারেলদের পক্ষ থেকে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ। এবং সরকার মোটেও দুর্বল বা ছোটো না। স্বৈরচারী সরকার আবার দুর্বল বা ছোটো হয় কীভাবে? নিওলিবারেল যন্ত্রের দেখভাল করতে হলে তো রাষ্ট্রকে সর্বক্ষমতাশালী হতেই হবে। এমনি এমনি রাষ্ট্রে ওগুলো বাস্তবায়ন হয়ে যাবে না। তার মানে যেটা দাঁড়াচ্ছে - নিওলিবারেল তত্ত্ব হচ্ছে সরকারকে ছোট করা, সেটা নিশ্চিত করার জন্য তারা নিজেদের লোক বসিয়ে সরকারের হাত শক্তিশালী করছে যাতে তারা কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ তৈরি করতে পারে। ব্যাপারটা স্ববিরোধী হয়ে গেলো না? অনেকটা শান্তির জন্যে যুদ্ধের মতো!
স্বয়ংক্রিয় ভুলশুদ্ধির যে অর্থনৈতিক তত্ত্ব, সেটার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। অর্থনীতির সূত্রতো একথা বলে নি যে তোড়জোড় করে শক্তহাতে নিয়ন্ত্রিতভাবে নিয়ন্ত্রণহীনতা তৈরি করতে হবে। তাছাড়া, স্বয়ংক্রিয় ভুলশুদ্ধি তখনই হয়, যখন ভুল করলে ব্যবসায়ী ধরা খায়, অর্থাৎ অর্থনীতি যদি কঠোর, কঠিন ও ক্ষমাহীন হয়। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক নিওলিবারেল তো সেই তত্ত্বের ধারই ধারে না, বরং ১% এর সম্পদ বাঁচাতেই ব্যস্ত। তাই ১%রা যখন ব্যবসায় ধরা খায়, তখন নিওলিবারেলরা সরকারকে চাপ দিয়ে বেইল আউট দেয়ায়। এতে ১) স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভুলশুদ্ধি হবার উপায় থাকে না, কারণ যেই ভুল সিস্টেম বা আইডিয়া অনুসরণ করে দেউলিয়া হয়েছে, সেই সিস্টেমকে ধরা খেতে দিলে মার্কেট আপনাআপনি সেই আইডিয়া থেকে সরে আসতো, বেইলআউট পাবার কারণে বরং সেটা রিপিট করার প্রেরণা পেলো মার্কেট - যেটা এখন হচ্ছে। ফলত বিপর্যয়টাও আবার রিপিট হতে যাচ্ছে। দেউলিয়া হতে দিলে সিস্টেম একই পথে আর কন্টিনিউ করতো না। ২) বেইল আউট দেওয়ানোর মাধ্যমে সরকার মার্কেটে ইনভল্ভ করলো। স্বয়ংক্রিয় মার্কেটে তো এভাবে ঠাস করে সরকার ১৭০ বিলিয়ন ডলার যোগ করে দিতে পারে না। ফলে অনিয়ন্ত্রণের প্রতিও বৃদ্ধাঙুলি দেখানো হলো।
ফলত আমার চোখে নিওলিবারেলিজম এখন কিছু অর্থনৈতিক তত্ত্বের মুখোশে ১%এর সম্পদের দেখভাল করার একটা সম্মিলিত আন্তর্জাতিক মোর্চা। তবে এই দুষ্ট প্রকৃতির মোর্চার পরীক্ষিত ব্যর্থতা মাত্রই কিন্তু অর্থনৈতিক তত্ত্বগুলোর ব্যর্থতা না, যেহেতু সেগুলোকে সঠিকভাবে পরীক্ষার মুখোমুখিই করা হয় নি।
কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে-
প্যারা ১। আমি যতোটুকু বুঝি, তত্ত্বগতভাবেই এটা ১% এর স্বার্থকে দেখে। ক্ল্যাসিক লিবারেলিজমে কিন্তু ‘সমান অধিকার’ এর প্রতি জোর দেয়া হয়। এখানে সেটা একেবারেই অনুপস্থিত। মূল আগ্রহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। আর সেটা অনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। ফলে এই তত্ত্বকে প্রায়োগিক ব্যবহারে ক্ষমতাধর ১% এর বিত্ত বাড়বে বৈ কমবে না, এই হিসাব মাথায় রেখেই তারা এগিয়েছে। আর স্যাম্পল হিসেবে শুরুর দিকেই নিওলিবারেল চেতনা/ধ্যান ধারণা প্রয়োগ করেছে সেই কালের স্বৈরশাসক চালিত চিলির ওপর।
প্যারা ২। এই প্যারার সাথে একমত। আরো একটা ব্যাপার। কম্যুনিজম তার প্রচারণার জন্য পেয়েছিল পরীক্ষিত আত্মত্যাগী কিছু কমরেডকে। এই ইউটোপিয়া বা দর্শন বা তথাকথিত (!?) ‘জীবন থেকে নেয়া মতবাদ’ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার জন্য পেয়েছে মার্ক্স এঙ্গেলস্ এর মতো দার্শনিকদের। নিওলিবারেলরা উল্টোদিকে ব্যাপক বড়ো অঙ্কের বিনিময়ে হার্ভার্ড কিংবা কলম্বিয়ার অর্থনীতি স্কুলগুলোর মাস্টারদের লবিইস্ট হিসেবে কেনে।
প্যারা ৩। স্বৈরশাসক না হলে তো লবিইস্ট গ্রুপের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে মানা যাবে না। আশির দশকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে স্বৈরশাসকেরা নিওলিবারেলিজমকে বুকে জড়িয়েছে। পিনোচেট সেই আমলে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক ও আইএমএফ বিশাল বিশাল অঙ্কের অর্থঋণ পেয়েছেন। এর কতোটা দেশের কাজে লেগেছে, আর কতোটা পিনোচেটের নিজের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে গেছে সেটাই প্রশ্ন। মুক্ত অর্থনীতি আর বেসরকারিকরণ এই দুটো কাজ করার মাধ্যমে জনগণকে কর্পোরেট শোষণের সরাসরি আওতায় নিয়ে আসা তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। এর পরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে- যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে সেগুলোর হোমরা চোমরা হচ্ছেন স্বৈরশাসকের পছন্দের কিংবা আন্তর্জাতিক নিওলিবারেল চক্রের পছন্দের লোকজন। বেসরকারিকরণ করে ডিরেগুলেশন করা হলেই সরকারের হাত আস্তে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়ে। একটা নির্দিষ্ট সরকার বা স্বৈরশাসক তো আর আজীবন থাকবেন না। এক সময় না এক সময় পতন ঘটবেই। কিন্তু প্রাইভেটাইজেশানের মাধ্যমে যে চক্র প্রাক্তন-সরকারি-বর্তমান-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েছেন, তারা তারা মনপছন্দ লোকজনকে দিয়েই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নাম করে ১% এর বিত্তবৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বহাল তবিয়তে চালাবে। আমেরিকার প্রধান কয়েকটা বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানদের প্রথম সারির লোকজন এবং প্রধান সরকারি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম সারির লোকজনের সিভি দেখলেই বুঝতে পারবেন- এরা একই চক্রের লোকজন। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো আসন বদল করছেন খালি। আর কিছু না। এরা আসলে ১% এর মুনাফা বাড়ানো ছাড়া সরকার বা জনগণের কোনো স্বার্থই দেখে না। আর এদেরকে সরানোর ক্ষমতা সরকার বা জনগণের হাতে নেই। ওবামা সরকারের মধ্যেই এনারা আছেন। সামনে যদি রিপাবলিকানেরা আসে, তবে সেখানেও থাকবেন। হার্ভার্ডের বদমায়েশ ল্যারি সামারস্ এর উত্থান নিয়ে একটু পড়তে পারেন।
প্যারা ৪। আপনার প্রথম চার লাইন এক্কেবারে ঝাক্কাস। আসলেই নিয়ন্ত্রণ একটা বিশাল ফ্যাক্টর। অফটপিক একটা উদাহরণ টানি। সামহোয়ারইন কিংবা আমারব্লগ হয়তো নিওলিবারেলদের মতোই ব্লগ চালাতে চেষ্টা করে। ব্লগারেরা কোনো নীতিমালার ধার ধারবে না। ব্লগ চলবে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এর ফল কি হয়েছে আমরা দেখতে পাচ্ছি। মানুষ নিজের সময় নষ্ট করে বেশিদিন বিষ্ঠা ঘাঁটে না। একটা কোনো সময় আগ্রহ হারায়। এবার অনটপিকে ফিরি। স্বয়ংক্রিয় ভুল সংশোধন যে হবে না, সেটা নিওলিয়াব্রেলরা ভালোই জানে। এজন্য তারা তাদের লোকজনকে সরকারি প্রতিষ্ঠানেও প্রধান সাজিয়ে রেখেছে। দেউলিয়া হৈলেই এরা গিয়ে বলবে-এতো বিলিয়ন ডলার বেইল-আউট। টিনা (TINA- There Is No Alternative)। সরকার জনগণের করের টাকা বেইল-আউট হিসেবে দেয়। আর সেই টাকা দিয়ে তারা নিজেরা নিজেদের বোনাস দেয়। আর সরকার দেখে। ফলে সরকারের আদৌ কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে কিনা সেটাই প্রশ্ন।
প্যারা ৫। আপাতত দ্বিমত নাই।
ধ্রুব বর্ণন, রাষ্ট্রনায়ককে অপসারন কিংবা স্বৈরাচারী রাষ্ট্রনায়কের দরকার ছিল হয়ত প্রাথমিক সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থাকে রিপ্লেস করে এই তত্ত্বের প্রসারের সময়। কিন্তু তারপর এটার আর দরকার নেই মনে হয়। বাংলাদেশে নিওলিবারেলিজম কিন্তু শুরু হয় ৯০এর গনতান্ত্রিক সরকার আসার পর, প্রয়াত সাইফুর রহমানে হাত ধরে। অথবা ভারতে মনমোহন অর্থমন্ত্রী থাকার কালে, গনতন্ত্রের মধ্যে। কিংবা ধরুন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের দেশগুলিতে, যেখানে নিওলিবারলিজমের চর্চা হয়, সেখানে কিন্তু গনতন্ত্র বর্তমান।
আবার মালিক-শ্রমিক শ্রেণীবিভাগও অস্বচ্ছ হয়ে যাচ্ছে এই তত্ত্বে। ম্যানেজারিয়্যাল একটা ব্রীড তৈরী হচ্ছে যারা করপোরেটের চালিকাশক্তি। মালিক, ট্র্যাডিশন্যাল অর্থে পুঁজির মালিক, কিন্তু এই ম্যানেজারিয়্যাল ব্রীড ‘শ্রমিক-শ্রেণী’ থেকেও উঠে আসতে পারে, যার মধ্যে এই তত্ত্বের প্রয়োজনীয় রসদ আছে।
আবার যেমন ধরূন মাইক্রো লেভেলে আমরা ব্যবস্থাপণার কিছু প্র্যাক্টিস নিজের অজান্তেই গ্রহণ করেছি যেটা নিওলিবারলিজমের পরিপুরক (বিজনেস স্কুল গুলো কিন্তু নিওলিবারেলিজমের প্রিচিং গ্রাইন্ড)। যেমন ধরূন পারফরমেন্স রিলেটেড পে (আপনার পারফরমেন্সের সাথে পেয়ের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা)। বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বেচের চারজন একই পে’তে কাজ শুরু চার বছরের মাথায় একজনের পে চারগুণ হয়ে যেতে পারে, কিংবা সে ‘মালিক-শ্রেণীতে’ উন্নীত হতে পারে...।
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়লাম। অনেক কিছু জানলাম।
এত পরিশ্রম করে বিষয়টিতে আলোকপাত করার জন্য অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
অনেক ধন্যবাদ।
ঞলিবারেল, বিনির্মানের বিপত্তি, ডিসকোর্স, গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ, কাউন্টার ন্যারেটিভ, ফুকো, দেরিদা, হাফু, গুয়েবাড়া জাতীয় শব্দগুলো সবসময় মাথার উপর দিয়া যায়।
হৈ মিয়া। ঞলিবারেল আর ফুকোদেরিদাবিনির্মাণ এক হৈলো। প্রথমটা তো ক্যাশ টাকার কথা কয়। দ্বিতীয়টা হাদুম্পাদুম।
ঞলিবারেল বুঝতে না পারলেও এই কমেন্টটা বুঝতে পারছি।
_________________
[খোমাখাতা]
চমৎকার বিশ্লেষণ। আপাতত কিচু যোগ করার নেই। আরও পর্ব আসুক, মন্তব্য করব।
আপনি যোগ না কর্লে ক্যামনে কি। আমার তো পুঁথিগত ও কমন সেন্সের বিদ্যা। আপনারটাতো পেরেক্টিক্যাল।
ব্যক্তিআক্রমণে পেতিবাদ ফর্মাইলাম
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কিছু লোক কিছু কথা বলবেই, অপবাদ দেবে, অভিযোগ দেবে, তবু...
বিশ্লেষণ অনেক ভালো হইছে। অনেক বিষয়ে আগ্রহ জাগছে। সাথে আছি। চালায়ে যান। আর এই লাইন সবচেয়ে আল লাগছে।
এর উপরে সত্য নাই।
অলস সময়
পড়লাম তবে এই ব্যাপারগুলো একটু কষ্ট হয় বুঝতে। বুঝতে পেরেছি বলে মনে হল। তবে একটা ব্যাপার বুঝতে পারিনা, সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কারণ এবং চায়নার নব্য অর্থনীতিক পরাশক্তি হয়ে উঠার পিছনের কারণটা কী? এই ব্যাপারে একটু খোলসা করে যদি বলেন।
দুইটাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। অল্প কথায় উত্তর দেওয়া তো মুশকিল। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করার মতো- সোভিয়েত কম্যুনিজমের পতনের সময়ে বিশ্বজুড়ে নিওলিবারেলিজমের উত্থান; আবার নিওলিবারেলিজমের প্রায় পতনের কালে চীনের পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভাব।
ভালো লাগল।
facebook
বুঝলাম। আসল কথা হইল এইগুলা সব মেধাবী, সাহসী, বুদ্ধিমান, কর্মী, পরিশ্রমী, উদ্যোগী, এন্টারপ্রিনিয়াল ১% সুপার-মানুষদের টাইনা ৯৯% মেডিওক্রিটির লেভেলে নিয়া আসার কমিউনিস্ট ষড়যন্ত্র। কে জানে আহমেদিনাজাদ আর উগো চাভেজ হয়তো ইন্ধন যোগাইতেসে। আরে বাবা তোরা সংখ্যায় ৯৯% হলে কি হবে, মানবজাতির টোটাল ঘিলুর ৯৯% তো আসলে আমাদের ১%-এর মাথায়। আমরাই তোগো মা-বাপ, আমরাই তোগো খাওয়াই-পরাই, আমরাই তোগো কর্মসংস্থান জোগাই, আমরাই আম্রিকারে পরাশক্তি বানাইসি, শানে-শওকতে বাড়াইসি, আর ৫২% ট্যাক্সো না দেওয়া আকাইম্মার ধাঁড়ি - তোদের এত্তবড় সাহস আমাদের সমালোচনা করস্! আমগো সিইও-রা নাহয় কিছু বোনাস-ফোনাস নিলই, তাতে তোদের এত গায়ে্র চামড়া জ্বলে ক্যান? আমগো ঘিলুর দাম আসে না? যেই দ্যাশে ঘিলুর দাম নাই, ঘিলুর জন্য উপযুক্ত ইন্সেন্টিভ নাই, সুপার-ঘিলুর জন্য সুপার-ইন্সেন্টিভ নাই, সেই দ্যাশে ঐ সব সুপার-ঘিলুওয়ালাদের ঘরের খায়া বনের মোষ তাড়ানোর কি ঠ্যাকা পরসে?
আসল কথা হইল এইগুলা সব ইর্ষাকাতর, পরশ্রীকাতর, কর্মবিমুখ আকাইম্মাদের কথা। নিজেরাও কাজ করবে না, অন্যদেরও কাজ করতে বা কাজ করে নিজের সাফল্য উপভোগ করতে দিবে না। ঐ কাকড়াদের মত, কাউরে গাড্ডা থিকা বাইর হইতে দেখলেই, বা কাজ করে সাফল্য পাইতে দেখলেই - পা ধইরা টান দিবে। হতভাগারা এইটা বুঝে না যে, গড্ডালিকাপ্রবাহের নেতৃত্বে একটা বুদ্ধিমান সারমেয় চাই, নাইলে ঐ গড্ডালিকাপ্রবাহের পরিণতি কি হবে সবাই জানে। আর গড্ডালিকাপ্রবাহকে তার অন্যথায় অবধারিত পরিণতি থিকা বাঁচানোর জন্য পুরষ্কারস্বরূপ বুদ্ধিমান সারমেয়রা একটু-আধটু মাংস-টাংস খাইতে চাইতেই পারে। এটা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য। তাতে ঐ গড্ডালিকাদের এত গা-জ্বলুনির কি আছে। ওদের জন্য তো ওদের ঘাস বরাদ্দ আছেই!
======================
ডিস্ক্লেইমারঃ এই কথা গুলা পোস্টের লেখকের উদ্দেশ্যে বলা হয় নাই।
এমনকি আমার কথাও না এগুলি। আমি অর্থনীতির এইসব জটিল তত্ত্বকথা বুঝিও না কিছু। শুধু অবসর সময় সিএনএন ইত্যাদিতে সাম্প্রতিক ওয়াল-স্ট্রীট-বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে কিছু সাক্ষাৎকার, বিতর্ক, ইত্যাদি দেখে ওয়াল-স্ট্রীট-সমর্থক কোন কোন বক্তার কথা শুনে মাঝেমধ্যে মনে হয়েছে উপরের কথাগুলিই তারা সরাসরি না বলে প্রচ্ছন্নে বলতে চেয়েছেন। অবশ্য আমার ভুলও হতে পারে।
****************************************
না, আপনি চিন্তা ঠিকভাবেই করছেন।
এনারা বলতে যায়- ১% মানেই সুপারহিরো। অ্যাভারেজ আমজনতার সাথে তাদের মিশিয়ে ফেলার মতো ভুল করা চলবে না।
চমৎকার লাগলো আলোচনার শুরুটা। ক'দিন ধরেই কেইন্সিয়ান মডেলের ফিরে আসার বা না আসার কথা নিয়ে রেডিও-টিভিতে ব্যাপক ভ্যাজর-ভ্যাজর শুনছিলাম, আর অর্থনীতির এই দিকটা নিয়ে জানার আগ্রহ হয়েছিলো। বিষয়বস্তু নিয়ে জ্ঞান শুন্যের কোঠায় - তাই আলোচনায় যোগ করার মত কিছু নেই। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
"কিছু কিছু ক্ষেত্রে নতুন নিওলিবারেল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা মানেই একটা চকচকে বিমানবন্দর, নতুন একটা ম্যাকডোনাল্ডস্, ২/৩টা বিলাসবহুল হোটেল, হাজার তিনেক এনজিও, আর একটা মার্কিন সামরিক ঘাঁটি"
তাহলে বাংলাদেশ তো অতি অবশ্যই নিও লিবারেল দেশ হতে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের ৫০ হাজার কোটি টাকার বিমানবন্দরের স্বপ্নটাও সেই নিওলিবারেজম প্রসবিত। ০.০১% মানুষ বাকী ৯৯.৯৯% মানুষের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে যাচ্ছে গত ৪০ বছর ধরে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হ।
অনেক খাটসেন (গুড়) নেন। পুরাটা এখনও পড়া হয়নাই। আস্তে ধীরে পড়তেছি। নিওলিবারেল শব্দটার তো মোটামুটি জাত-পাত মেরে দিয়েছে, এইটার কোন পজিটিভ এস্পেক্ট থাকতে পারে সেইটা ভাবিনাই
আপনার আর একটা খাসা সিরিজ শুরু হল৷
মন দিয়ে পড়ছি৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
মাত্রই আগ্রহ জেগেছিল বিষয়টি নিয়ে -- সাথে সাথেই আপনার এরকম একটা দুর্দান্ত লেখা পড়ে দারুণ লাগলো। নিওলিবারেল তত্ত্বকে ছুঁড়ে ফেলে দক্ষিণ আমেরিকা কিভাবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে তার একটা দারুণ প্রামাণ্য পাওয়া যাবে আপনার উল্লেখ করা 'ওয়াল স্ট্রিট' ছবির পরিচালক অলিভার স্টোনের একটা দুর্দান্ত ডকুমেন্টারি 'South of the Border' এ ! নিওলিবারেলিজম যে একটা ভুয়া তত্ত্ব এর জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ মনে হয় কিউবা -- নিওলিবারেলিজমের সব উল্টো কাজ করে সফল হয়ে!
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি!
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
সকল দুষ্ট হেজামোনির বিয়োগই কাম্য। কিন্তু তার পরিবর্তে যখন আরেকটা তন্ত্রকে জাজ্জ্বল্যমান প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন জানা দরকার সেই জৌলুস কীসের বিনিময়ে মিলেছে:
উইকিতে কিউবার মানবাধিকার
।
দীর্ঘ আয়ুষ্কাল আর সুচিকিৎসাসেবার লোভে এইসব হ্যাপারে নিবা মাঝি?
কিউবার মানবাধিকার পরিস্থিতি, জোরজবরদস্তি নিয়ে তোমার কী মত জানলে ভালো লাগতো। আর ক্যাস্ট্রো বা সেরকম ক্যারিশমেটিক নেতা ছাড়া এই ধরনের 'কিউবাঘরানার উন্নয়ন' সম্ভব? নাকি এ কেবলই একজন একক ইমামকেন্দ্রিক তন্ত্র? সেটা হলে সেখান থেকে আমাদের নেওয়ার কী উপায় থাকতে পারে? মানুষকে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলতে দিয়েও ডেমোক্রেসিতেই সোশ্যালিস্ট ইকোনোমির উন্নতির উদাহরণ স্ক্যান্ডিনোভিয়াতেই আছে! তবু কিউবা কেনো?
ফ্লোরিডা ডিবেট দেখতেছিলাম। কিউবার কথা আসতেই রিপাবলিকান মামুগুলান কিউবার সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা-মানবাধিকার নিয়ে প্যাকপ্যাক শুরু করে দিল। রন পল ছাড়া বাকিগুলান এখনো চোখে ঠাণ্ডা-ঠাণ্ডা-কুল-কুল-যুদ্ধ দেখে।
এদের প্রায় সবারই একটা কিউবান-স্প্রিং এর শখ। কিউবাতে বিপ্লব দেখা দিলে, নিজেদের লোকেরা সেটা করুক। আম্রিকার উস্কানিতে হলে তো মহাবিপদ!
কেউ আগ্রহী হলে ট্রান্সক্রিপ্টের কিউবা-অংশটুকু দেখতে পারেন।
বটেই! গায়ে পড়ে তাদের 'উদ্ধার' করতে যাওয়ার পায়ঁতারা তো তারা করবেই। আরেকটা যুদ্ধ আর গণহত্যার চান্স নিবে শালারা। কিউবার মানুষ নিজের ভালোটা নিজেরাই বুঝবে।
কিন্তু কথা হলো ক্যাস্ট্রোকে অনুসরণীয় মডেল হিসেবে প্রস্তাব করা হলে তখন সেটা সে কীসের বিনিময়ে পেয়েছে সেটাও তো একটু জানা দরকার কিনা!
আপনার রন পলরে ভাল্লাগছে নাকি?
কম্যুনিজম ফ্যাসিজম হয়ে গেছে- এর তো উদাহরণের কমতি নাই। অন্যদিকে ঞলিবারেল ধনতন্ত্র নিজের বদমায়েশি ঢাকার নানা তরিকা জানে। আম্রিকা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
কিউবা কতোটুকু সফল জানি না। ক্যাস্ট্রো মডেল আদৌ কার্যকর কোনো মডেল কিনা সেই সন্দেহ আমারো আছে।
না, রন পল মামুরেও ভালা পাই না। পররাষ্ট্র নীতিতে ঐ তিনটার চাইতে বুড়া কিছুটা ভিন্ন কথা বলে- এই যা।
আম্রিকা আবার ঢাকে টাকে নাকি?
রন পল খালি শুনি ভালো ভালো। কিছু খ্রাপ কতা বলেন তো এই লোকরে নিয়া।
ঐটা সরাসরি ফ্যাসিজম চর্চার কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম। দ্যাখেন না, কম্যুনিস্ট দেশে এতো এতো ফ্যাসিস্ট প্রেসিডেন্ট, অথচ আম্রিকায় একটাও নাই।
খ্রাপ কতা তো পত্রপত্রিকায় আছে। রন পলরে মাঝে সিএনএন চিবি দিয়ে ধর্ছিলো। তার নামে যেইসব নিউজলেটার ছাপানো হতো (কিছু বছর আগে), সেখানে নাকি আফ্রো-আমেরিকানদের প্রতি রেইসিস্ট কথাবার্তা আছে। রন পল এর বিপরীতে এড়িয়ে যাওয়া ছাড়া খুব একটা রা কর্তে পারে নাই। আর তারে যে Dr. No বলা হয়- সেটা তো জানেনই।
আফ্রো-আমেরিকানদের নিয়ে ওই বক্তব্য তার পাশ করা ছিলো না এরকম কী জানি বলছে শুনছিলাম।
ইমিগ্রেশানে সে আবার কোনো এমনেস্টি নাই বলছিলো। ইল্লিগালদের দৌড়ানি দিবে বলছিলো।
আর ডঃ নোয়ের পেছনে তো তার সংবিধানপন্থী একটা রক্ষণশীলতা আছে, যেটা আমি মনে করি গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু এগুলা তো ছোডোমোডো ইস্যু। তার অর্থনৈতিক মডেল নিয়াই না ভাবছিলাম কিছু বলবেন। সে নাকি কর্পোরেট বিরোধী। ফ্রি ইকোনমি মানেই বর্তমান নিওলিবারেল ইকোনমি না এরকম কী একটা জানি সে নাকি দেখাইতে চায়। তার সমর্থিত অস্ট্রিয়ান স্কুল অব ইকোনমিক্স নিয়ে কিছু জানেন?
তার ননইন্টার্ভেনশনিস্ট পররাষ্ট্রনীতি, ইসরায়েলের সামরিকতাবাদে ঘি ঢালা বন্ধ করার পক্ষে সরবকন্ঠ হওয়া, এমন কি লাদেনকে হত্যা করার কায়দাকে পর্যন্ত সমালোচনা করা ব্যাপক চাঞ্চল্যকর। আমেরিকান লিবার্টারিয়ানরা দেখি খুব লাইক করে। তারা ওরে আমেরিকার স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, জাতির স্থপতিদের চেতনাবাহী ইত্যাদি ইত্যাদি মনে করে।
হে হে, তোমার পোস্টের আলোচনাটাকে এগিয়ে নিব তো -- নিজেকে একটু শিক্ষিত করে নিয়ে নিই তার আগে
চলো দেখি মানবাধিকারের ব্যাপারটা নিয়ে কাস্ত্রো কি বলে! সাক্ষাৎকারের সময় প্রশ্ন করা হয়েছিল --
"What are the main concerns that you, as head of state, have at the present time?"
তো এইখানে এক জায়গায় বলতেসে --
" .....The world has not been told that 80 per cent of the measures in defence of human rights passed by that commission [UN Human Rights Commission] have been proposed by Cuba. "
আবার জিজ্ঞেস করতেসে --
"Are you particularly irritated by the accusations of violations of human rights that are regularly labelled against Cuba?"
উত্তর দিচ্ছে --
"Listen, I think there is not a country with a cleaner history with respect to human rights than Cuba. What the Revolution has done for our popuইlation can be expressed in numbers that no other state is able to claim. In these forty-six years since the triumph of the Revolution, the lives of at least 450,000 children have been saved -- children who would have died without the advances achieved by the Revolution". The life expectancy of Cuban citizens is now almost eighteen years longer than in 1959, when the Revolution came to power.
We have made universal literacy possible, made it possible for every child to go to school, made it possible for every citizen to get an education. In the fields of education and health, there is no country in the Third World, or in the developed capitalist world, that's done what we have done in those areas, for the good of the people.Begging and unemployment have been eradicated. Drug use and gambling have also disappeared. You won't find children begging in the streets; we don't have homeless beggars here, or children sleeping in the street, or barefoot, or malnourished, or not going to school.
And I won't go on too long about the aid we've given dozens of countries in the Third World. There are Cuban doctors in over forty countries, and they have saved thousands of human lives. We've given free treatment to thousands of children from Chernobyl that no other country took in. .........."
সাউথ আফ্রিকার বর্ণবাদ নিরসনে অনেক বড় একটা ভূমিকা ছিল কিউবার যেজন্য নেলসন ম্যাণ্ডেলা ক্যাস্ত্রোকে সম্বোধন করে 'মাই প্রেসিডেন্ট' বলে। আরেক জায়গায় বলতেসে --
"" ...... Not for nothing was it (Cuba) re-elected, in July 2003, by acclamation,in the United Nations Economic and Social Council, to an additional 3 year term on the Human Rights Commission, a membership it has held uninterruptedly for fifteen years "
তাই ক্যাস্ত্রো মডেল আসলেই দুষ্ট হেজিমোনি কিনা এইটা নিয়া আমার সন্দেহ আছে। তবে এইটাকে সফল মডেল বলা যায় কিনা এইটা নিয়াও আমার সন্দেহ আছে -- কারণ এইটাকে সফল করতে একজন প্রচণ্ড ক্যারিশমাটিক ফিদেল ক্যাস্ত্রো বড্ড জরুরি। তার চেয়ে স্ক্যান্ডিনোভিয়ার যে উদাহরণ তুমি দিলা সেইটাই সম্ভবত বেশি অনুসরণীয়। এমনকি কানাডিয়ান যে কয়জনের সাথে আমার কথা হয়েছে যারা কিউবাতে গিয়েছে, তারাও সবাই কানাডার জীবনকে অনেক বেশি পছন্দ করেছে কিউবার চেয়ে।
তবে প্রায় প্রতিবেশি প্রবল পরাশক্তি আমেরিকার বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, নানা ষড়যন্ত্র (এ পর্যন্ত ৬৩৮ বার চেষ্টা করেছে ক্যাস্ত্রোকে অ্যাসাসিনেট করার জন্য-- একটা ডকুমেন্টারি আছে 638 ways of killing castro নামে) না থাকলে কিউবা যে আরও অনেক ভালো করত এটা মনে হয় ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। আর বইটাতে (Fidel Castro : My Life) ফ্রি-মিডিয়া,মুক্তমত সবকিছু নিয়েই খোলাখুলি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে-- আমার কাছে মোটামুটি কনভিন্সিং মনে হয়েছে -- পড়ে দেখতে পার!(Cuba Today, Summing Up a Life and a Revolution অধ্যায়ে)।
ভেনেজুয়েলাতে কিন্তু মিডিয়া ফ্রি -- শতকরা ৮০ ভাগ মিডিয়ার মালিক হচ্ছে শাভেজ এর তীব্র বিরোধী ধনিক শ্রেণী। মিডিয়াকে ব্যবহার করে কিভাবে একটা ক্যু করে ফেলসিল আম্রিকা এইটার একটা বর্ণনা 'সা্উথ অব দ্য বোর্ডার' ডকুমেন্টারিটাতে আছে --দেখতে পার!
আর সফল বা বাংলাদেশের জন্য অনুসরণীয় রাষ্ট্রের উদাহরণ হিসেবে কিউবাকে ধরা যায় কিনা এইটা নিয়ে সন্দেহ আছে -- কিন্তু নিওলিবারেলিজমের নেমেসিস হিসেবে কিউবার উদাহরণটা মনে হয় ঠিক আছে -- কি বল?
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
কিউবার মানবাধিকার নিয়ে ইমাম ক্যাস্ট্রোর বক্তব্য শোনাচ্ছো?
ইরাক যুদ্ধের সমস্যা নিয়ে বুশের বক্তব্য শুনলে হবে?
ইমাম ক্যাস্ট্রোর সদিচ্ছার অভাব আছে বলে মনে হয় না। উনি নিজের দৃষ্টিতে যেটা মানবতা বলে মনে করেন, সেটার উন্নয়নের জন্যে যথাসাধ্য করেছেন। তোমার মানবতার সংজ্ঞার সাথে মেলে দেখে হয়তো ইমাম ক্যাস্ট্রোর কর্মকাণ্ড তোমার ভালো লাগে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে তিনি এমন বিষয়ের বলি দিয়েছেন, যেটাকে অন্য অনেকে মানুষের স্বাভাবিক, অলঙ্ঘনীয়, অনন্যসমর্পণীয় অধিকার মনে করে। সেটার লঙ্ঘন যদি দুষ্টের হেজামোনি না হয়, তাহলে দেশে দেশে স্বৈরাচারী শাসনের বিচার বহির্ভূত অত্যাচার হত্যা, বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, এইসবের বিরুদ্ধে বলার অবস্থানটাই তো নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশে ব্লগের অধিকার হরণের পায়তারা করার সময় তাহলে কোন মুখে প্রতিবাদ করবেে তখন? সরকারের তো এর পিছনেরও একটা মহৎ উদ্দেশ্য যে আছে। সুচিকিৎসা দিচ্ছেন বলেই তো অন্য অন্যায়গুলো হালাল হয়ে যায় না। সেগুলোর লঙ্ঘন দেখেও তাকে দুষ্টের হেজামোনি বলা যায় না? একটা মহৎ উদ্দেশ্যে একটা অপরাধ করা তো সাজে না রে ভাই। সেই যুক্তি তো আমেরিকাও দেয়। বলে যে একটা যুদ্ধ খালি সহ্য করে, তোমাদের মানবতার বৃহত্তর মুক্তি ঘটবে। এরপর হয়তো সত্যিই তাদের উপস্থিত সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু সেটা সমাধান করে দেওয়ার জন্যে কি চাপিয়ে দেয়া একটা যুদ্ধ হালাল হয়ে যায়? ইমাম ক্যাস্ট্রোর বেহেস্তও তার নিচে চাপা পড়া মানুষের অত্যাচার অনাচারকে হালাল করে না। তার সদিচ্ছা থাকলেও না। অধিকাংশ স্বৈরাচারীই সদিচ্ছা নিয়েই শুরু করে। ভাবে যে, আমি তো ভালো মানুষ, ভালো আদর্শ সম্পন্ন খাঁটি মানুষ। আমার হাতে অন্যায় কীভাবে হবে। কিন্তু অধিকাংশ স্বৈরাচারী শাসনে অত্যাচার আর গণহত্যাই ঘটে। আর দুয়েক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্যাস্ট্রোর মতো উন্নতি হয়।
তোমার এই বক্তব্যের ব্যাপারে আমার খুব বেশি দ্বিমত আছে বলে তো মনে হয় না! কিন্তু আমি যে কারণে এটাকে তোমার মত দুষ্ট হেজেমোনি বলতে পারতেসি না সেটা হলো দেশের 'সব' মানুষের জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণে কিউবান সোশ্যালিজমের অসাধারণ সাফল্যের কারণে। আর তুমি যে কারণে এটাকে দুষ্ট হেজেমোনি বলতেস তোমার আধুনিক মুক্তিকামিতার জনক রাষ্ট্রটি যদি নিজের দেশের নাগরিক ছাড়াও পৃথিবীর অন্যদেরকে মানুষ মনে করত, কিউবাকে তার নিজের মত থাকতে দিত, কিউবার মানুষজন কিভাবে তাদের দেশ চালাবে এইটার সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার তাদের উপরই ছেড়ে দিত এবং তারপরও যদি তোমার আপত্তির এই কারণগুলো উপস্থিত থাকত --তাহলে হয়ত মেনে নিতাম!
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
ওহ! মানে বিশ্ব মোড়ল কিলায় দেখে কিউবার নিজের দেশের লোকরে পিষা জায়েজ আছে? বুঝলাম না তোমার এই যুক্তি! আমার আধুনিক মুক্তিকামিতার জনক রাষ্ট্রটিকে তো আমি এখন দুষ্টের হেজামোনি মনে করি। তা এখন যদি বলি যে ইস্লামি জঙ্গিরা যদি নাইন ইলেভেনে হামলা না করতো, তাইলে নয় তারা যে দুষ্ট হেজামোনি তা মেনে নিতাম। বা ধরো জামাত বিএনপি সমর্থকরা কিন্তু বলেই যে ভারত যদি এতো সাম্রাজ্যবাদী না হতো তাহলে জামাত বিএনপি একটা সাম্প্রদায়িক শক্তি সেটা ‘মেনে নিতাম’। এভাবে দায় ঠেলে দেয়া মানায় না কো। দোষীকে দোষী বলার হিম্মত রাখতে হয়। চোখ মেলে তাকাতে হয়।
"ইন্ডিয়ান" গণহত্যা আর দাসপ্রথার উপ্রে দাঁড়ায়া আধুনিক মুক্তিকামিতার জনক হওয়া দাবি করা রাষ্ট্র হইতেও হিম্মত লাগে বড় ভাই। চোখ মেললে ইতিহাস দেখতে পাই॥
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কিন্তু সেগুলা কইতে তো আমার লেখাখানায় হিম্মতের অভাব হয় নাই। এগুলার কোনটা বাদ রাখছিলাম লেখায়? বইলা যাইয়েন ওখানে।
কিন্তু কিউবা কিউবা কইতে গেলে তো আর কিউবার বাকি ঘটনা কেঞ্জানি শুনতে পাই না। শুনতে তো পাই-ই না, কইলেও লোকে স্বীকার যায় না। কী হ্যাপারে বাবা!
দোষীরে দোষী কইতে হিম্মত তো লাগেই দেখতেছি!
হিম্মত নিয়ে খোঁটা দিলে চলবে? আমার ফেসবুকেই তো একদিন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো কেন এখনো মুক্তমতকে প্রশ্রয় দিতে পারে না এইটা নিয়ে আমরা আলাপ করসিলাম, তুমিও তো সেইখানে অংশ নিসিলা -- তাই না? এখন যদি বলো দোষীরে দোষী কইতে হিম্মত নাই তাহলে কেমনে চলবে। কোনো সিস্টেমই তো পারফেক্ট না। 'গ্রিড ইজ গুড' যার মূলমন্ত্র সেই ক্যাপিটালিজমের বেলুনও তো ফুটা হয়ে গেসে! রন পলকে অবশ্য বলতে শুনসি--সমস্যার কারণ হচ্ছে কর্পোরেটিজম; ক্যাপিটালিজম না। কিন্তু ক্যাপিটালিজম যে কর্পোরেটিজমকে ঠেকাতে পারে না -- এইটা তো সেই সিস্টেমেরও অন্তর্নিহিত একটা ব্যর্থতা তাই না! তার উপর দেশে দেশে রপ্তানি করসিল নিওলিবারেল গ্লোবালাইজেশন -- কর্পোরেটিজমের চূড়ান্ত! যে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর গুণগান করলাম উপরে তারাও তো ধারটার কইরা এখন চরম সমস্যার মুখোমুখি।
ধর ছোটবেলায় আমরা বইতে পড়সি -- মানুষের মৌলিক চাহিদা -- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান,শিক্ষা, চিকিৎসা!এর সাথে এখন ধর -- স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার। এখন সৌভাগ্যক্রমে তোমার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান,শিক্ষা, চিকিৎসার যোগান সুনিশ্চিত -- তাই তুমি এখন স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকারের জন্য সোচ্চার। কিন্তু যে মানুষটার শিক্ষাই নাই তার আবার স্বাধীন মত কি? এখন আমি যদি তোমাকে স্বার্থপর বলি তাহলে কেমন হয়? তুমি নিজের সব চাহিদা,অধিকার সব কড়ায়-গণ্ডায় ষোলআনা চাও, কিন্তু সেটা নিশ্চিত করতে যেয়ে যে দেশের একটা বড় অংশের মানুষের আরো মৌলিকতম চাহিদা পূরণ না হওয়ার সম্ভাব্যতা তৈরি হয় --সেদিকে তোমার ভ্রুক্ষেপ নাই। আমেরিকাতে হেলথ কেয়ারের বিল পাশ করা নিয়ে ওবামাকে কিসের মধ্যে দিয়ে যাইতে হইসে সেইটা তো আর অজানা না!
কিন্তু তার মানে এই না যে কিউবাতে যে মানবিক অধিকারের যে লংঘন ঘটতেসে আমি সেইটাকে আমি সাপোর্ট করতেসি এবং মনে করতেসি না যে এইসব ক্ষেত্রে তাদের আরও উন্নতি করতে হবে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় যেখানে দুনিয়াজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটে গেছে সেখানে টিকে থাকার স্বার্থেই কিউবাকে অভিযোজিত হতে হবে এবং তুমি যে উইকির লিংক দিয়েছ সেখানে যেয়ে দেখ যে তারা সেটা হতে শুরু করেছেও। 'সাউথ অব দ্য বোর্ডার' ডকুমেন্টারির গবেষক এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার তারিক আলী'র একটা সাক্ষাৎকার দেখতেসিলাম যেখানে সে বলতেসিল কিউবা আর ভেনেজুয়েলা কিভাবে একে অপরকে সাহায্য করতে পারে, একে অপরের কাছ থেকে কি শিখতে পারে। সে বলতেসিল --"ভেনেজুয়েলা কিউবার কাছ থেকে শিখতে পারে কিভাবে দেশের সব মানুষের বেসিক চাহিদাগুলো পূরণ করা যায়, আর কিউবা ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে শিখতে পারে কিভাবে ফ্রিডম অব প্রেস, ফ্রিডম অব এক্সপ্রশেনকে তাদের সিস্টেমে ইনকরপোরেট করা যায়"। ভনে
ভেনেজুয়েলার মানুষজন সকাল-বিকাল রিপাবলিকানদের প্রোপাগান্ডা মেশিন ফক্স নিউজ দেখতে পারে চাইলে।আবার ভেনেজুয়েলা কিউবাকে ফলো করে ৬ বছরে তাদের অর্থনীতির আকার দ্বিগুণ করেছে, জনগণের দারিদ্র্য কমিয়ে এনেছে শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি। নিওলিবারেলিস্টদের গিনিপিগ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো (ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া, ইকুয়েডর,ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা) এখন ওই তত্বকে ছুঁড়ে ফেলে কিউবার আদলে নিজের দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতেই নিওলিবারেলিজম নিয়ে এই পোস্টে কিউবার কথা বলসি আমি!
আচ্ছা, যেই কিউবার মানবাধিকার নিয়ে তোমার এত আপত্তি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গ্রহণ করা শতকরা ৮০ ভাগ প্রস্তাবনাই কিউবার প্রস্তাব করা -- এইটাকে তোমার আয়রনি মনে হয় না?
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
চইটো না ভাই।
মানুষের মৌলিক চাহিদা কী কী সেটা নিয়ে তর্ক আর একজন একক ক্ষমতাধারীর প্রশংসার বিরোধিতা আমার কাছে এক মনে হয় না। আগে অমুক সমুক অধিকার, তারপর বাক্ স্বাধীনতা, এই প্রায়োরিটির আমি কোনো কারণ দেখি না। কারণ এরা কনফ্লিকটিং না। বিশেষ করে ধর্ম পালনের অধিকার, বাক স্বাধীনতা, এগুলো রিসোর্স লিমিটেড বিষয় না যে এগুলো প্রদানে রাষ্ট্র কার্পণ্য করবে। কথাটা হচ্ছে অঢেল বিষয় রাষ্ট্রের লিমিট করাটা দুষ্টামিপূর্ণ।
আর এখানে আমাকে স্বার্থপর কীসের বিচারে বলবে? অন্য মানুষের বাক স্বাধীনতা চাইলে কি তার শিক্ষা বা চিকিৎসার সমস্যা হয় যে মানুষের বাক স্বাধীনতার কথা বলে আমি স্বার্থপর হবো? কেমন কথা হলো? শিক্ষা চিকিৎসার অভাবে থাকা মানুুষ বাক স্বাধীনতা চায় না, এরকম দাবিও করছো কি? প্রমাণিত?
অন্যদিকে আমি প্রমাণ অপ্রমাণে যাচ্ছি না। আমি মনে করি একজন মানুষ পর্যাপ্ত শিক্ষা চিকিৎসার অভাবে থাকা মানেই সে মানুষের থেকে হীন, কথা বলার অধিকার রহিত, পশুশ্রেণীতে পরিণত হয় না, যাকে রাষ্ট্র তার নিজের উৎপাদনে ব্যবহার করার জন্যে খাইয়ে পড়িয়ে চাঙা করে রাখবে, নিজের প্রপাগান্ডার বাহক তৈরির জন্যে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় শিক্ষাদীক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করবে। রাষ্ট্রের শুভকামিতা থাকলে সে তার নাগরিককে মানুষ হিসেবে ট্রিট করেই এই সুবিধা দিতে পারতো। কিন্তু ইনফাইনাইট রিসোর্সপূর্ণ অধিকারগুলো হরণ করে রাষ্ট্র যখন স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসেবা দেয়, তখন সেটা কোনো শুভকামিতা থেকে দেয় না। নিজের কলকারখানা, প্রপাগান্ডা যন্ত্রের মাল মশলা হিসেবে খোঁয়াড়ের জানোয়ারের মতো ব্যবহার করার জন্যে সেটা দেয়। ফার্মের পশুকে মানুষ যেমন মোটা তাজা করে. টিকা দেয়, সুস্বাস্থ্য দেয় নিজের কাজে ব্যবহার করাটা নিশ্চিত করার জন্য। ফার্মের পশুর নিয়ন্ত্রক মানুষ। স্বৈরাচারী, কর্তৃত্ববাদী শাসনে মানুষ ফার্মের পশু। সুস্বাস্থ্য নিয়ে রাষ্ট্রের বলে দেয়া চৌহদ্দির মধ্যে সে বিচরণ করুক। সুষম খাবার খাও আর ডিম পারো। সুস্বাস্থ্য আর উৎপাদনই হলো জীবন!
আর বনের পশু! যদিও হয়তো একটু বেশিই তার রোগশোক হয়। তবুও তো সে ওই হতভাগা, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ফার্মের মুরগির চেয়ে অনেক বেশিই স্বাধীন! কোনটা প্রাকৃতি অধিকার এখন তুমি বলো তো? মানুষের কাজে মানুষ ফার্মের মুরগিকে বন্দি করে। রাষ্ট্র মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে কেনো বন্দি করা লাগে বলো তো? অধিকারগুলোর মধ্যে কোথায় কনফ্লিক্ট? কনফ্লিক্ট নেই। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র চাইলে সেটা দিতে পারার কথা। কিন্তু মৌলিক অধিকার হিসেবে এই সেবা দেয়াটা তো তার উদ্দেশ্য না। তার উদ্দেশ্য উৎপাদন। নিয়ন্ত্রিক কঠোর পরিবেশে কেবল একক উৎপাদক হিসেবে উৎপাদন করে যাওয়াটাই তার মূল লক্ষ্য। সেগুলোর জন্যে শিক্ষাসেবা, চিকিৎসাসেবা এগুলো হলো তার সহচর মিথ্যা বয়ান। মানে এগুলো দেয়া হলে তার মূল উদ্দেশ্য সাধনে সাহায্য হয়। আবার এগুলো বলতেও গাল ভরে ওঠে। আবার একক উৎপাদক হিসেবে বর্ধিত হবার যে মূল উদ্দেশ্য, বাক স্বাধীনতার মতো বিনাসাংঘর্ষিক বিষয়টাও রহিত করা হয় সেই একই উদ্দেশ্য সাধনে। রাজনীতিও নিষিদ্ধ ওই একই কারণে। এখন বলো মানুষের মুক্তি চেয়ে আমি স্বার্থপর? একক উৎপাদনকারীর পাতে ঘি ঢালতে অস্বীকার করায় আমি স্বার্থপর? মানুষকে ফার্মের বন্দী পশু হিসেবে নয় মুক্ত মানুষ হিসেবে দেখে, তার প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক জন্মগত অধিকারের কথা বলে আমি স্বার্থপর? মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য নিয়ন্ত্রিত ফার্ম বা ল্যাবরেটরি লাগবে, বন্দীত্ব জরুরি, তুমি এই বুলি শোনাচ্ছো? এই বুলি তুমি বিশ্বাস করো? মানুষ সভ্যতা পারি দিয়েছে ফার্মের কঠোর নিয়ন্ত্রণে? হঠাৎ এখন এসে মানুষ ফার্মের বাইরে থাকার অযোগ্য পরিগণিত হয়ে গেলো? মানুষের আগামি বিবর্তনের জন্যে নিয়ন্ত্রণ জরুরি? কাম্য? অনুকূল?
আমি তোমাকে জাজ করছি না। কিন্তু তোমার যুক্তিগুলো জানায় আগ্রহ আছে। কিউবার কথা তুমি বলেছো। কিউবা সেটা কীসের বিনিময়ে পেয়েছে সেটা প্রথমে স্মরণ করায়ে দিলাম। তুমি সরাসরি বলতে পারতে যে হ্যাঁ এই সব ত্যাগের বিনিময়ে কিউবা এটা সত্যিই পেয়েছে এবং ভালোই করেছে - সমর্থনই করি। বা পুনর্বার বলতে পারতে যে "সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো কেন এখনো মুক্তমতকে প্রশ্রয় দিতে পারে না" এইটা সত্যিই একটা প্রশ্ন। অর্থাৎ এ ব্যাপারে তোমার বস্তুনিষ্ঠ, সৎ, সরাসরি, দৃঢ়, প্রত্যয়পূর্ণ বক্তব্য চাচ্ছিলাম। কিন্তু তার বদলে দায়টা যেভাবে অন্যান্য দিকে সরিয়ে দিচ্ছিলে, তাতে তোমার পূর্বের উদ্বেগের কথা ভুলে যাবার উপক্রম হয়েছিলো। নতুন করে এই নিয়ে আবার কথা বলার প্রয়োজন পড়েছে তাই।
দেখো। বলে লাভও হয়েছে। আমি জানতাম না, তোমার কাছে অধিকারের একটা প্রায়োরিটি আছে। আগে ফেইসবুকে তোমার ওই উদ্বেগ থেকে সেটা পরিষ্কার হয় নি। এখন সেটাও পরিষ্কার হলো। বোঝা যাচ্ছে তুমি মানুষের স্বাভাবিক স্বাধীনতাকে অনেকটা দ্বিতীয়মানের অধিকার মনে করো। এখন চাইলে এমন কি তুমি এটাও ভাবতে পারো যে মানুষের মত প্রকাশের প্রাকৃতিক, অনন্যোসমর্পণীয় অধিকার ফধিকার বলে টলে কিছু নেই। সেটাতে তো আমি দোষণীয় কিছু দেখি না। তুমি তো আমার সরকার না যে তুমি এরকম কিছু একটা ভাবলে তাতে আমার দেশের বা আমার বা আমার প্রিয়জনদের বা আমার দেশের মানুষের কোনো ক্ষতি হবে। কিন্তু যে বিষয়ে অভিযোগ করছি, উপরে দেখো, তুমি না সেই অভিযোগ স্বীকার করছিলে, না অস্বীকার করছিলে। বরং সেটার দায় এ সংক্রান্ত একটা অকর্তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছিলে। তো সেই যুক্তির অসঙ্গতি তো তুলে দেখানো দরকারই!
তর্ক করা তো তর্ক বাড়ানোর জন্যে না। তর্ক করা হচ্ছে মীমাংসার জন্যে। যেমন এখন কিউবা নিয়ে তোমার সাথে আমার আর তেমন তর্ক বাকি নেই। কারণ, বোঝা হয়ে গেছে তোমার সাথে আমার দ্বিমতের মূল কিউবা সম্পর্কে দুজনের দৃষ্টিভঙ্গিতে না। মৌলিক অধিকার সম্পর্কে দুজনের দৃষ্টিভঙ্গিতে। সম্ভবত তুমি মনে করো যে শিক্ষা চিকিৎসার জন্যে মত প্রকাশের অধিকার স্থগিত করে রাখার পরিস্থিতি থাকতে পারে। আমি মনে করি তা পারে না। এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে না। তা একটা গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়ে দ্বিমত থেকে যে এই আনুসঙ্গিক ও দীর্ঘায়িত তর্কের সূত্রপাত, সেটা জানতে পারাটা কিন্তু এই তর্কের, এই খোঁচাখুঁচির স্বার্থকতা!
রেফারেন্স?
নিজের দেশের লোকরে পিষা বলতে কি বুঝাইলা? তোমার কি ধারণা কিউবার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ না চাইলে কাস্ত্রো সাহেব বা রেভল্যুশন ৫০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকতে পারত? আর যেসব মানবাধিকার সংগঠনের রিপোর্ট নিয়া এত কথা বলতেস সেইগুলা কার পয়সায় চলে একটু খোঁজ নিয়া দেখো!
আর শেষে কি বললা বুঝি নাই!
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
তাই? স্বৈরাচার তার সিস্টেম বলবৎ রাখার জন্যে জোর খাটাচ্ছে, এখানে পরিমাপের সুযোগ কই যে তার জনগণ কী চাচ্ছে? তারা কী চাচ্ছে সেটা জানার তো কোনো উপায়ই-ই নাই। জনগণের সমর্থন ছাড়া একজন স্বৈরাচারের পক্ষে পঞ্চাশ বছর ক্ষমতায় থাকা সম্ভব না?
তাদের অত্যাচার অনাচার তাদেরই রফা করতে হবে। তার মানে এই না যে রফা করে উঠতে না পারলে তার অর্থ তারা সমর্থনই করছে। এ কারণে আমি কিউবার জনগণ কী ভাবছে সেই ইম্প্লিকেশানে তো যাচ্ছি না। একজন স্বৈরাচারের স্বৈরাচারী শাসনপদ্ধতিকে সমালোচনা করতেও এতো খুঁতখুঁত? যদি বলো যে তার নাগরিক অধিকার সীমিত রাখার পলিসিও তুমি সমর্থন করো, তাইলে সেটা পরিষ্কার করে দেয়াই ভালো। কিন্তু যদি মনে করো যে ওনার এই পলিসি অন্যায়, সেটার জন্যে তো যুদ্ধবাজদের দোহাই দেয়া আর খাটে না, এটাই বোঝাতে চাচ্ছি।
"এরপর হয়তো সত্যিই তাদের উপস্থিত সমস্যার সমাধান হয়। "
উদাহরণ দিয়েন টাইম থাকলে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আর্গুমেন্টে পয়েন্টাতো এটাই যে ইভেন যদি বিশেষ কোনো প্রমিজ্ড ত্রাণট্রাণ ভিক্ষাটিক্কা মিলেও, তারপরেও তো যুদ্ধ হালাল হয় না। অর্থাৎ "উপস্থিত সমস্যার সমাধান হয়" না কি হয় না হয়, সেটা আর পয়েন্ট থাকে না। "উপস্থিত সমস্যার সমাধান হয়"-এর উদাহরণ তো তাইলে দিবে যুদ্ধের অ্যাপোলজটিকরা! আমার আর্গুমেন্টটার জন্যে আমার উদাহরণ দেয়া খোঁজা নেসেসারি নহে বাহে।
নতুন মন্তব্য করুন