ফিশট্যাঙ্ক দেখে চিন্তাভাবনা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: শুক্র, ৩১/০৫/২০১৩ - ৯:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফিশট্যাঙ্ক দেখে চিন্তাভাবনা

ঐভাবে খুটিয়ে দেখার অভ্যাস আমার কোনোদিনই ছিল না। বরাবরই সবকিছু উপরে উপরে দেখার একটা বিশাল গুণ বা দোষ কিভাবে যেন আয়ত্তে নিয়ে এসেছিলাম নিজেই জানি না। আস্ত চাঁদকে গোলাকার বৃত্তের বেশি কিছু কখনো মনে হয়নি। প্রকৃতি, মৃত্যু কিংবা আসবাবপত্র আমার কাছে স্রেফ ঘরের বাইরে কোথাও একটা, মরে যাওয়া কিংবা কাঠের জিনিস। ঠিক এই কারণে আমি নারীশরীর চিনেছিলাম অনেক অনেক পরে। তফাতটা টের করার গুরুত্বই বুঝিনি অনেকদিন। মা বলতেন বোকার হদ্দ। বাবা বলতেন উজবুক। বন্ধুরা বলে ইন্ডিফারেন্ট। চোখে কাজল দিতে দিয়ে ও বলে, অন্ধ। কখনো বা ইন্সেনসিটিভ। ফিশট্যাঙ্কটা বাসায় এসেছে কালকে বা কয়েকদিন আগে। কে কিনেছে, কিভাবে সেটা বেডরুমে ঢুকে গেছে কিংবা একটা বা কয়েকটা গোল্ডফিশের ক্রমাগত সাঁতার আমাকে প্রশ্নহীন রাখে। আজ সকালে ঘুম ভাঙ্গে গরমে। মাথার ওপর ফ্যান চলছে ঠিকই। ফিশট্যাঙ্কে চোখ যেতেই দেখি সেখানকার পানি ফুটছে। ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসে পরক্ষণেই।

রোদ বাড়ছে

আমার বিছানাতে পায়ের কাছে সকালবেলা এক চিলতে রোদ আসে। রোদ দেখে সুবোধ ঘোষের একটা গল্পের কথা মনে পড়ে। জতুগৃহ। ট্রেনস্টেশনের ওয়েটিংরুমে দুজনের হঠাৎ দেখা। আজ কোনো সম্পর্ক না থাকলেও বছর পাঁচেক আগে তারা স্বামী-স্ত্রী ছিলেন। নিতান্ত অর্থহীনতা বোঝাতে গিয়ে সুবোধ ঘোষের হালকা মেটাফরিকাল বাক্য ও মাথায় আসে। ফ্ল্যাশব্যাক সিন। সেদিনই মনে হয়েছিল শতদলের, এই যে পৌষের প্রভাতে জানালা দিয়ে এত আলো ঘরের ভেতরে এসে লুটিয়ে পড়েছে, নিতান্ত অর্থহীন, কোনো প্রয়োজন ছিল না। জানালা দিয়ে বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়ে মাধুরীর শুধু মনে হয়েছিল, অস্তাচলের মেঘে এই ক্ষণিকের রক্তিমা নিতান্ত অর্থহীন, একটা অলুক্ষণে ইঙ্গিত, আর একটু পরেই তো অন্ধকারে সব কালো হয়ে যাবে। জানালা দিয়ে হামলে ঢুকে পড়া রোদ দেখে ফ্ল্যাশব্যাকে-দুর্বল-স্মৃতি ঠিকঠাক কিছু স্মরণে আনতে পারে না। বরং বাড়তে থাকা রোদে অজস্র সব ধুলিকণার নিতান্ত অর্থহীন আমুদে বিচরণ খানিক বাদেই ফিকে হয়ে যেতে শুরু করে। রোদ কমছে।

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
নোট: সিমন সুস্থ হয়ে উঠছে। উঠবেই।


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অনেকদিন পর লিখলেন। সিমনকে যেমন সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে, আপনাকেও তেমনি লিখতে হবেই...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

লেখালেখিতে ফিরতে চাইছি, নজু ভাই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

প্লিজ... ফিরে আসেন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

একলহমা এর ছবি

এইভাবে হইলে চলে! শুরু হইতে না হইতেই ফুরায় গেল গা!
সিমন সেরে উঠবে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সিমন সেরে উঠবেই।

স্পর্শ এর ছবি

অনবদ্য। টুকুনগল্পের একটা বই করার কথা ছিলো না?


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

কি জানি। এইসব আবজাব বই আকারে বের করবে কে?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনি রাজী কি না সেইটা বলেন... এতো চিন্তা যদি লেখককেই করতে হয় তাহলে আমরা আছি কী করতে?

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপ্নারে মেসেজ দিসি। হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

প্রথমটা ভালো। পরেরটা চলুক। শেষেরটা না লিখতে হলেই ভালো হতো!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বদলে দিলাম।

তারেক অণু এর ছবি

বাহ , বেশ লাগল।

সিমন ফিরলেই চাপ খেতে যাব ব্যাটাকে নিয়ে

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

প্রথমটা অসাধারন।
হাততালি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

'টের করা' এক্সপ্রেশনটা নতুন লাগল। পরেরটা ভাল্লাগল।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

থ্যাংকস্। আপ্নে লেখেন না ক্যান?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চোখে কাজল দিতে দিয়ে ও বলে, অন্ধ।

- এই বাক্যটা কোথায় যেন আটকে যাচ্ছে। এছাড়া প্রথম গল্পটা একেবারে ঠিকঠাক।

দ্বিতীয়টাতে শ্রী ঘোষ বেশি জায়গা নিয়ে ফেলেছেন। ভাবনার ঐক্য আনতে অতটা কি আনা দরকার ছিল? নাকি এর কমে সেটা বোঝানো যেতো না?

অটঃ ঠিক বারো মাস, বারো দিন পরে। ঘন্টা-মিনিট-সেকেন্ড হিসাব করলাম না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

যা ইচ্ছে লিখে ফেলি। এতো ভাবি না। আপনার বিশ্লেষণ বা টের করাটা এতো নিখুঁত সেটা নিয়ে আর প্রশংসা না করি।

অটঃ লেখালিখিতে জোরেশোরে আসতেছি আবারো।

স্যাম এর ছবি

ভাল লেগেছে।

তিনটা ছিল নাকি?

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

এবার দুটো। আরো কিছু নামাচ্ছি শিগগির।

শাব্দিক এর ছবি

প্রথমটা বেশি ভাল লাগল।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সুরঞ্জনা এর ছবি

ধন্যবাদ, স্যার। হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

প্রথমটা পড়ে তো থমকে গেছিলাম - দ্বিতীয়টা পড়তে দেরী হয়েছে তাই। তৃতীয় আরেকটা ছিল সেটা তো চেখে দেখা হলো না!! ঘোর অন্যায়!!!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ। দুটো। আরো কিছু নামাচ্ছি শিগগির।

পথিক পরাণ এর ছবি

ফিশ ট্যাঙ্ক দেইখা হউক কিংবা মেইন ব্যাটল ট্যাঙ্ক- চিন্তাটা জারী থাকুক। তাইলে আমরা মাঝে মধ্যে আপনার টুকুন গল্প পাইতে পারি আরকি!

আপ্নার লেখা মিস্করি---

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বহুত দিন চুপ ছিলাম। মাগার আর না। দেঁতো হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

টুকুনগল্পের ভক্ত ছিলাম না কোন কালে, কিন্তু অনেকদিন পরে পড়ে মনে হল জিনিস মন্দ না!

সচলে আপনার অনুপস্থিতি পীড়াদায়ক।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সাধারণত যেকোনো জায়গায় আমার উপস্থিতিই অন্যদের জন্য পীড়াদায়ক হয়ে পড়ে। এই প্রথম শুনলাম আমার অনুপস্থিতি পীড়াদায়ক। খাইছে

সবজান্তা এর ছবি

চমৎকার, বিশেষ করে প্রথমটা দারুণ লাগলো!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

রিসালাত বারী এর ছবি

তিন নাম্বারটা কি মিস করলাম? অনেক দিন পর লিখলেন। চলুক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো।।।।।।লিখতে থাকেন হাততালি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সচল জাহিদ এর ছবি

অনেক দিন পর লিখলি।

গল্প বুঝিনা কোন কালেই, তাই মন্তব্য করলামনা।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

তুই কেমন আছিস? তোর লেখালেখিও তো দেখি কম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেকদিন পর লিখলেন। প্রথমটা বেশি ভালো লাগল। হাসি

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

প্রথম গল্পটা সুন্দর। আপনি আসলেই অনেকদিন পর লিখলেন হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।