[justify]তিনি মাত্র তিরিশটা গল্প লিখেছেন। এতেই তাঁর নাম বাংলা সাহিত্যে অক্ষয় হয়ে গেছে। ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’ গল্পটি ছাড়া বাকি সব গল্পে প্লেটোনিক ভাষার আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে পাওয়া যায় না। তিনি সেখানে খুব শক্তভাবে জীবনঘনিষ্ঠ। আর সাথে আছে নিখুঁত ডিটেইলস্। দেহ মনের যোগসূত্রে যে অস্তিত্ব তার ভাবগতিক ইলিয়াসের লেখায় যেভাবে ফুটে উঠেছে, অন্য কারো লেখায় তার যথাযথ আবহ আসে না। ইলিয়াস এইদিক...
[justify]কমরেডের কোন কাজ নেই। জগতে তাঁর গোত্র কমতে কমতে এখন বিলীনপ্রায়। আজকাল মৃত্যু ছাড়া তাঁদের নাম কখনো পত্রিকায় আসে না। সাম্যবাদ কোকাকোলার বুদবুদের মত উবে গেছে। ব্লু-ব্লাড, প্রতিভাবান, কর্পোরেট একে অন্যের পিঠ চুলকিয়ে লাল করে ফেলে। কমরেড অবলীলায় দেখেন। শিল্পবিকাশ ঘটাতে গিয়ে কর্পোরেটরা হতদরিদ্রদের চিন্তাহীন শ্রমমেশিন বানায়। দরিদ্র কৃষক প্রান্তিক জন হতে হতে একসময় আত্মহননে না...
[justify]জামি কাকলির মোড়ে বাস থেকে নেমে পড়ে। ফুট ওভারব্রীজের ওপর দিয়ে হেঁটে ওপাড়ে বনানী মার্কেটের সামনে এসে সামান্য থামতে হয়। আবুল উলাইয়া থেকে ফজলুল রহমান বাবুর গলা শোনা যাচ্ছে। নিথুয়া পাথারে নেমেছি বন্ধুরে ধর বন্ধু আমার কেহ নাই। কেহ নাই কেহ নাই এই শব্দপুঞ্জের অর্থ এত মানুষের ভিতরে মাথায় খেলে না। মার্কেটের নীচতলার খাবারের দোকানের সামনে টিকলির দাঁড়ানোর কথা। নেই। মানে ক্লাস এখনো শ...
[justify]হঠাৎ কি ভেবে রাজন একটা গল্প লিখে ফেলেন। তারপর একটা প্রধান জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদক বরাবর পাঠিয়ে দেন। মজার ব্যাপার কিছুদিন পরে গল্পটা ছাপাও হয়। গল্পে কাহিনী প্রায় কিছুই ছিল না। ঠিক গল্প কিনা সেই নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। তবে পাঠক এই লেখার মধ্যে নানা কিছু পাচ্ছেন। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিক্রিয়ার পর প্রতিক্রিয়া সাহিত্য সম্পাদক ছেপে যাচ্ছেন। সাহিত্য পাতায় নতুন লেখা ছাপ...
[justify]নয়ন খালি একই খোয়াব দেখে। তার কাম কাজ বিশেষ কিছু নেই। লোকে তার সাথে খুব একটা মেশে না। সে নিজেও কারো সাথে মেশার চেষ্টা করে কিনা বলা মুশকিল। তার মধ্যে কোন নতুন কথা নাই। সব একই, গৎবাঁধা অপ্রয়োজনীয় কথা। চেকভের গল্পের এক চরিত্রের মত সবাই যা জানে সেরকম কথাই সে ঘুরেফিরে বলে। শীতকালে তার মুখে শোনা যায়- হ্যাঁ, শীতকালে খুব ঠাণ্ডা পড়ে। সোয়েটার বা গরম কাপড় না পরে বেরোলে আরো কষ্ট হয়। তাই সবা...
[justify]সানুর মা আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। এর আগে দুই চারবার ছিঁড়ে ছিঁড়ে বের হয়ে গেছি। ওরা কিভাবে কিভাবে খুঁজে আমাকে আবার ধরে নিয়ে আসে। এবার বাঁধার দড়িটা খুব মোটা আর শক্ত। তবে উপায় আমি বের করে ফেলব। সানুর মা অনেকদিন ধরে ঘৃণার চোখে ছাড়া আমাকে দেখে না। আমি ওর চোখ বুঝি। কিছুদিন আগে মেয়েটার বিয়ে ভেঙ্গে গেল। সানুর খুব মন খারাপ ছিল। বারান্দায় একা একা দাঁড়িয়ে থাকত। মেয়েটা আমার চোখের দিকে ত...
[justify]নাখালপাড়ার রাস্তার কুকুর ভোলা ঘুম থেকে উঠে বেশ কিছুদূর হেঁটে মোড়ের কসাইয়ের দোকানের একটু দূরে দাঁড়িয়ে মাংসের ঘ্রাণ নেয়। সকালবেলায় খেতে না পেলেও এই সুঘ্রাণ নেয়া কম সুখের কী। কসাই লোকটা খুব একটা সুবিধার না। এক দুই টুকরা হাড্ডি পাওয়া যায় অনেকক্ষণ অপেক্ষায় থাকলে। তাও খুব সতর্ক থাকতে হয়। কসাই ব্যাটা হাড্ডি ছোঁড়ার সময় তার মুখ টার্গেট করে। রাস্তায় লোকজন ভোলার বিভৎস ঘেঁয়ো শরীর দে...
[justify]
পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ। বইটা প্রথম পড়ি ২০০১ সালে। কেবল নাম দেখেই কিনেছিলাম। বইয়ের প্রচ্ছদ অদ্ভুত ছিল। কাঁধে পাখি নিয়ে ছফার একটা ছবিও ছিল প্রচ্ছদে। বাসায় গিয়ে পড়তে শুরু করি। আমার সামনে একটা নতুন জগৎ খুলে যায়। উপন্যাস আত্নজীবনী সব মিলে ছফা একটা ভিন্ন জগৎ তৈরি করেছেন। এক একটা পাতা পড়া শেষ হয় আর আমি ভাবতে থাকি এই সহজ কাহিনী একজন মানুষের পক্ষে লেখা কিভাবে সম্ভব...
[justify]আমি অনেকদিন ধরে একটা গল্পের কথা ভেবেছি। মাপে খুব বেশি বড় হবে না। একটা ছোটগল্প। চরিত্রের নামধাম, গল্পের শিরোনাম কি প্লট কিছু কিছু লিখে রেখেছি আমার নোটখাতায়। ঠিক করে গোছানো এখনো হয় নি। মজার ব্যাপার, আমার গল্পের চরিত্রেরা আমার সাথে সময় সুযোগ মতো কথা বলে, আবদার করে। আমি একা ডাইনিং টেবিলে বসলে সীমা এসে বসে। বলে, ওর চরিত্রের বাচালতা একদম পছন্দ হচ্ছে না। কথা কম বলাতে হবে। বলি, ঠিক কর...
[justify]একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্যের স্বীকৃতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ ঘটা করে দিয়েছে বলে জানা নেই। এটা ঠিক করে দিলে জাতি হিসেবে আমাদের সম্মান বাড়তে পারত। এই কাজ করা রাজনৈতিক দলগুলোর হয়ে ওঠে নি। আহমদ ছফার ‘রাজনৈতিক জটিলতা’ প্রবন্ধের নয়টি অধ্যায়ের প্রথম ছয়টি আগের কিস্তিতে আলোচনায় এসেছে। প্রবন্ধের বাকি তিন অধ্যায়ের ব্যাখ্যা এই পর্বে। একটু বলে রাখি আহমদ ছফার মত লেখককে ধরার ম...