গোয়েন্দা ঝাকানাকার চেহারাটা অনেকে পছন্দ করতে পারেননি। অভিযোগ-অনুযোগ এসেছে। একটু নাকি বেশি পেকে গেছে বেচারা। চুল-ভুরু-মোচ সব সাদা। আরেকটু কাঁচা আর কচি গোয়েন্দা চাইছেন সবাই। কিন্তু বয়স কি আর চুলের রং দেখে বোঝা যায়? বদরুর মডেলকে দেখুন। ৮২ বছর বয়সেও পোস্টারভর্তি কালোচুল মাথায়। আর বয়স তো মনের ব্যাপার। ওখানে ঝাকানাকা বরাবরই মাসুদ্রানার মত চিরতরুণ।
কিন্তু ঝাকানাকার চেহারাটা এমন হতে গেলো কেন?
ঝাকানাকার গল্পগুলো পড়ে আমার প্রথমেই মনে ভেসে উঠেছিলো উৎপল দত্তের চেহারা। একটু খর মেজাজি, কিন্তু রসিক, এই চটে গিয়ে মারপিট করছে, আবার ফুড়ুক ফুড়ুক হেসে মশকরা করছে ভিক্টিমের সাথে ... উৎপল দত্তের সাথে বেশ মানিয়ে যায়। যেইসেই উৎপল দত্ত নয় একেবারে হীরকরাজ উৎপল দত্ত। এই যে দেখুন এখানে।
কিন্তু মাথা থেকে খাতাতে নামাতে গিয়ে মনে হলো, না, ঠিক হীরক রাজের সঙ্গে যাচ্ছে না ঝাকানাকা। যে লোক তিব্বতের ঝালাই লামার গুম্ফায় ছয়টি মাস বিনা ভিসায় সাধনা করে আড়াই প্যাঁচের গাঁট্টার কুস্তিকলা শেখে, তাকে আরেকটু ফ্লেক্সিবল হতে হবে।
ফ্লেক্সিবল কথাটা মাথায় আসতেই চোখের সামনে ভেসে উঠলো কিশোর কুমারের চেহারাটা। লোকটা ফ্লেক্সিবল ছিলো বটে। চেহারাটায় একটা নিপাট ভালোবদমাশ ভাব। একটু লুলপুরুষ। বেশি বর্ণনায় আর গিয়ে কী হবে, দেখুন।
কিন্তু মাথা থেকে খাতায় নামতে গিয়ে আবারও আটকে গেলো। নাহ, যাচ্ছে না ঝাকানাকার সাথে। ঝাকানাকা ঠিক কিশোর কুমারও নয়। কিশোর কুমার যেমন কিশোর বা কুমার কোনোটিই ছিলো না, ঝাকানাকাও তেমনি। চিরতরুণ, দুষ্ট, আবার অ্যাকশনের সময় ইয়াভিসুমাইক। এরকম লোকের চেহারাটা কেমন হওয়া উচিত?
তখনই ফোন বেজে উঠলো। ফোন কানে দিয়ে বললাম, "হ্যালো?"
ওপাশ থেকে রিটন ভাই ফোন ধরেই দিলেন ঝাড়ি, "সুজন তুমি এত লোকের ক্যারিক্যাচার করো, আমার ক্যারিক্যাচার করো না ক্যান?"
তখন মাথাটা একটু সাফ হয়ে গেলো। ঝাকানাকার চেহারাটা একটু যেন দেখতে পেলাম চোখের সামনে।
রিটন ভাইয়ের ক্যারিক্যাচার করতে করতেই ঝাকানাকার খসড়া করে ফেললাম। চেহারাচরিত্রে আমাদের গোয়েন্দা ঝাকানাকা আসলে রিটন কুমার দত্ত।
দ্যাখেন। চেনা চেনা লাগে, তবু অচেনা।
আর আজ একটু পরই সন্ধ্যা ছয়টায় গোয়েন্দা ঝাকানাকার মোড়ক উন্মোচন হচ্ছে। চলে আসুন বইমেলায়, পাঠসূত্র স্টলে, স্টল নাম্বার ২০২-২০৩। আর বিস্তারিত জানতে দেখুন এখানে।
মন্তব্য
আজ থাকুম
সুজন্দা কি বাংলাদেশে?
রিটন ভাইকে এভাবে ঝাঁকালেন?
গোয়েন্দা ঝাকানাকার কমিকসের জন্য শুভ কামনা রইলো।
হার্জের কাছে লোকে ছবি দিয়ে অনুরোধ করত তাদের টিনটিনের কোনো একটা ক্যারেকটার করে বইতে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য, আর হার্জও এমন অনুরোধ মাঝেসাঝেই রাখতেন। আপনাদের কাছে দাবি রইল, সামনের বই থেকে ঝাকানাকার একটা পাড়াতুতো ভাগনে-টাগনে রাখতে, যে প্রচণ্ড পড়ুয়া, দারুণ ব্রিলিয়ান্ট, ভীষণ ট্যালেন্টেড... সেরকম ক্যারেকটারের জন্য যতরকম অ্যাঙ্গেলে হেডশট ভুঁড়িশট চান পাঠিয়ে দেব।
এখনও অবধি যে তিনটে মডেল দেখালেন সব ছবিরই চুলদাড়ি কালো; ঝাকানাকার চেহারা প্ল্যাটিনামব্লন্ড করার পেছনে আইডিয়াটা কী সেটা নিয়ে লেখা চাই।
হে হে হে
এইটা সবচেয়ে চরম হইছে। হাসতে হাসতে জান শেষ।
মেলা থেকে খবর এসেছে, প্যাকেট খুলে ঝাকানাকা'র প্রথম কপি বিক্রির রহস্যের। আনন্দ হচ্ছে, খারাপও লাগছে। এরকম আয়োজনগুলোতে থাকা হয় না বলে।
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম কমিক "গোয়েন্দা ঝাকানাকা ও জাদুঘরে চুরি রহস্য"র সর্বাত্নক সাফল্য কামনা করি। তবে একটু নেতিবাচক ধারণাও মনের ভেতর উঁকি দিয়ে যে যায় না, তা নয়। স্টার সিনেপ্লেক্স কিংবা বলাকা'য় দেড়'শ— দুই'শ টাকা খরচ করে মেহেরজান দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করা মানুষের অভাব আমাদের মাঝে নেই। সাথে আনুষঙ্গিক আরও শ'দুয়েক টাকা নাস্তাপানিতে চলে গেলেও সেটা আমাদের গায়ে লাগে না। কিন্তু বইমেলায় দুইজন মানুষের চার মাস ধরে আর অনেকগুলো মানুষের সপ্তাহ কয়েক ধরে অমানুষিক খাটাখাটুনির ফসল 'গোয়েন্দা ঝাকানাকা ও জাদুঘরে চুরি রহস্য'র মূল্য নিয়ে গরিমসিও করি আমরা।
আশাকরি এইসব নেতিবাচক ধারণার পরেও ঝাকানাকা ঝাঁকিয়ে দিয়ে যাবে বইমেলা এবং ঝাঁকাতে থাকবে বইমেলা পরবর্তী সময়েও। এই আশা করতেই পারি আমি। কারণ, সবশেষে শুভবুদ্ধিরই জয় হয়।
সুজন্দা আর হিমু'কে শুভেচ্ছা তো বটেই। সাথে ঝাকানাকা'র সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাই।
দিরিম দিরিম দ্রুম
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তাই কি ?
বাংলাদেশের আরও কোনো কমিক আছে নাকি? সবগুলাই তো বিদেশি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহসান হাবীবের পটলা-ক্যাবলা। আমাদের জিএমটিরাই ভাক্ষস বের করেছিলো। তবে ঝাকানাকা বাংলাদেশের প্রথম সম্পূর্ণ রঙীন রহস্য কমিকস!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ট্রান্সফর্মেশনটা মজার হইসে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
প্রভুখন্ড!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমার তিনটা প্রিয় ব্যক্তিত্বের খিচুড়ি যে ঝাকানাকা জানতাম না। -রু
দুর্দান্ত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফাটাফাটি!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আর শুভকামনা
আরে খাইছে! হা হা হা! আজকে আমি রিটন ভাইয়ের অটোগেরাফ নিছি!! তাও আবার নিধি, নূপুরাপু আর নজরুল ভাইকে উৎসর্গ করা ছড়ার বইতে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই তাইলে গঠনা? আগে বলবেন না? তাইলে আজকেই একটা রহস্য চাপায়ে দিতাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দুর্দান্ত সুজন্দা! ঝাঁকানাকার চেহারা আসলেই একটু বুডঢা হয়ে গেছে! চেহারায় রসের পরিমাণ একটু কম... কভারটা দেখে বলছি আর কি! ভেতরটা এখনো দেখা হয় নি। নিজের জন্য তো কিনবই, পরিচিত বাচ্চাদের জন্যও কিনব! একদম খাঁটি বাংলাদেশি কমিকস বলে কথা!
বইটার জন্য শুভকামনা।
আর... আপনি কি বাংলাদেশে নাকি?
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আরে সুজন তুমি তো মিয়া একটা জিনিস!
কর্ছো কি!!
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
আসলে অল্প যে কয়জন লোকরে আমি তাদের মধ্যে ঠিক এই ধরণের রসিক লোক আপনি একাই! মোক্ষম!!
পরের গল্পে যেটা আরো দারুণ ভাবে আসছে!!! এবার ড্রয়িং করতে গিয়ে কিছুতেই হাসি ঠেকাতে পারছিনা।
চরিত্রগুলা অসাধারণ বানাইছে হিমু!!!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
অপেক্ষায় নাজির ...
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
নতুন মন্তব্য করুন