আমি আর হাসান দীর্ঘ দিন পরস্পর মুখোমুখি বসি না। একই বিছানায় থেকেও পাশাপাশি শোয়া হয় না দীর্ঘ দিন। রাতে ঘুমের সময় আস্থা আমাদের দু’জনের মাঝখান জুড়ে থাকে। বিছানায় যাওয়ামাত্রই হাসান ঘুমিয়ে যায়। ইদানিং লিগ্যাল কন্সাল্টেন্সি সেন্টারটা নিয়ে ও খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের দুজনের পড়াশুনা আইন নিয়ে তাই এই পেশায় ব্যস্ত থাকা যে দারুণ সুখকর তা আমি জানি। কারণ ব্যস্ততার সাথে আয়ের সূচকও বাড়তে থাকে। আমিও অফিস-বাসা করেই ব্যস্ত।
দৈনন্দিন ব্যস্ততায় আমাদের নৈমিত্তিক সুখ-দুখের ভাগ বাটোয়ারা করা হচ্ছে না। তবে হাসপাতাল ফেরত আমার প্রতি যত্নের কমতি ছিল না হাসানের। নিয়মিত চেক-আপ করানো, সময়মতো ওষুধ খেলাম কিনা তার খোঁজখবর করা ইত্যাদি সব কিছুই হাসান নিয়মমাফিক করেছে। এমনকি আমি উল্টোপাল্টা কিছু করছি কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য দু’একদিন মাঝরাতে আমার পিছু পিছু স্টাডি রুমেও এসেছে। গত সপ্তাহেও বলছিল আমার ডিপ্রেশন কাটাবার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার। তবে আমার শরীরের নাজুকতা দিন দিন কমে আসছে। তাই হাসান আমাকে এখন প্রশ্ন করে কম।
আমি বুঝতে পারছি হাসান বিছানায় উসখুস করছে। আস্থাকে দেয়ালের পাশে সরিয়ে দিয়ে হাসান আমার পাশে সরে আসে। অনেকদিন পর যেন প্রিয় কোনো পুরনো সুবাস নাকে এসে লাগে। আমি হাসানের দিকে সরে আসি।
-শরীরটা ভাল লাগছে আজ? তলপেটের ভারি ভাবটা কমেছে? ইউরিনে জ্বালা নেই তো?
হাসানের গলাটা ঘুমক্লান্ত। তবু খুব প্রিয় বন্ধুর মতো হাসান আমার কুশল জানতে চাইছে। আস্তে আস্তে ও আমার চুল ছুঁয়ে দিচ্ছে, চিবুক ছুঁয়ে দিচ্ছে। আমি হাসানের দিকে পাশ ফিরে শুই। স্পর্শের ইচ্ছেটুকু হাসান নিজের নিভৃতে ভালই লুকিয়ে রাখতে পারে। অনেকদিন পর হাসানের উষ্ণ স্পর্শ পেয়ে আমি ছটফট করে উঠি। আমি প্রাণপনে ওর সবটুকু স্পর্শ শুষে নেই। বিবসন বুকের ভাঁজে দু’হাত রেখে আমি হাসানের কাছে নিজেকে উজার করে দেই। আমি কি নিজেকে ফিরে পাচ্ছি? কি জানি! তবে যে আমার খুব মেঘ হতে ইচ্ছে! সাদামেঘ, ছাইমেঘ, নীল মেঘ! হাসানের স্পর্শে ধীরে ধীরে আমি নবীন মেঘ হয়ে যাই।
ঠিক তখনি ডিমলাইটের আলোয় ফ্ল্যাশব্যাকে কিছু সুখদৃশ্য চোখের সামনে চলে আসে। ইউনিভার্সিটি লাইফে পূর্ণেন্দু পত্রীর কথোপকথনের দিনগুলো!
অতীতের সেই সব দিন
তাহলে এখনো অমলিন?
স্মৃতিতে সোনালি হয়ে জ্বলে?
নৌকো ডুবে যায়নি অতলে?
মনে পড়ে? সব মনে পড়ে?
প্রথম আলাপ কোন্ ঝড়ে?
প্রথম চিঠির দ্বিধা ভয়,
প্রথম চুম্বনে বিশ্বজয়।
মনে পড়ে? সব মনে পড়ে?
আগুন ছড়ালো শুকনো খড়ে।
নন্দিনীর মতো আমার সব মনে পড়ে, বৈশাখী ঝড়, শ্রাবণ জল, ঢেউয়ের নাচ, ছোট্ট রেস্তোরার অন্ধকার আর পারিজাতের গন্ধে ভুরভুর চাপা আবেগ! আমার মনে পড়ে, এই তো কবে যেন শরীরে তীব্র জ্বর নিয়ে আমি শুয়েছিলাম। আমার জ্বরতপ্ত শরীরে হাসানের হাত সূক্ষ্ম ঢেউয়ের মতো উঠা-নামা করছিল। আমার কানের কাছে হাসান বলেছিল, আজ আমি তোমার জ্বর হবো! সেই একই অস্ফুট স্বরের পুনরাবৃত্তিতে আমি কেঁপে উঠি। হাসানের স্পর্শের অনিবার্য আগুনে আমি পুড়ে যেতে চাই। কিন্তু কি যে হয় আমার, হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করি আঙুলবিহীন, শরীরবিহীন!
তারপর চোখের জলে আমার সামনের দৃশ্যপট ঝাপসা হয়ে যায়। আমি হাসানের কানের কাছে ফিসফিস করে বলি,
-তোমার কষ্ট হচ্ছে? ছেড়ে দিচ্ছো না কেন আমায়?
-ছেড়ে দিবো মানে?
-এই যে কিছু দিতে পারছি না তোমাকে আজকাল।
-কি শুরু করলে? ঘুমোও তো। ঘুমের ওষুধ খেয়েছো?
-না ঘুমোবো না। কথার উত্তর দাও।
-তুমি তো জানো আমি এমনই। খুব কি চাহিদা আমার?
-কেন চাহিদা নেই কেন? তুমি কি নিজেকে মুনি-ঋষি মনে করো? নাকি সব ভণ্ডামি?
হাসান আমাকে ছেড়ে দিয়ে চিৎ হয়ে শোয়। ঘরের আবছা হলুদ আলোতেও আমি ঠিক দেখতে পাই হাসানের মুখে হাসি। কিন্তু হাসির বর্ণ ধরতে পারি না। আমি পাশ ফিরে হাসানের বুকে হাত রাখি।
-কথার উত্তর দিচ্ছো না কেন?
-এসব কথার উত্তর দেওয়ার কি আছে। তুমি আমাকে চেনো না? আমার কি খুব বেশি দাবী তোমার কাছে? একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
-কি ঠিক হবে? কিচ্ছু ঠিক হবে না। আমি পারছি না তুমি টের পাচ্ছো না? নাকি ভান করছো?
-সুরভি, চুপ করো তো এবার। অনেক রাত হলো। ঘুমাও। আসলে মিসক্যারেজটা তুমি মেনে নিতে পারছো না এখনো। অনেকদিন তো হয়ে গেল। এবার স্বাভাবিক হও!
-শুধু কি মিসক্যারেজই হয়েছে? তুমিও একই টাইপ কথা বার্তা বলছো? আর খুব মহত্বের ভান দেখাচ্ছো! যেন আমার সাথে সেক্স না করেও তুমি বেশ আছো! যেখানে আমার জীবনের পুরো পরিবর্তনটাই তোমার কাছে অন্য সবার মতো শুধুই মিসক্যারেজ সেখানে শরীরের ব্যাপারে তুমি মুনি-ঋষি ভাব মারছো?
একসাথে এতগুলো কথা বলে আমি হাঁপাতে থাকি। হাসানকে নিরুত্তর দেখে আমি জোরে চিৎকার করে অশ্রাব্য গালি দিয়ে উঠি। হাসান তড়িঘড়ি উঠে বসে।
-শান্ত হও। রাত দুপুরে এসব কি শুরু করলে। পাশের ঘরে আম্মা আছে তো। ঠিক আছে আমি ভুল করেছি। আমি ভুল বলেছি।
হাসানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে আমি নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি না। উঠে বসে আমার সবটুকু শক্তি দিয়ে হাসানের বুকে আঘাত করতে থাকি।
-বাদ দিবো কেন? কিছুই চাই না তোমার? ভণ্ড! সিমার!
হাসান নিজেকে সরাবার কোনো চেষ্টাই করে না বরং আমাকে জড়িয়ে ধরে। হাসানের হাসির শব্দে এবার আস্থা ঘুমের ভেতর চমকে ওঠে। আমি কাঁদি। উথাল-পাথাল দুঃখে আমি কেঁদে চলি। হাসানের স্পর্শের রূপান্তরে আমি আস্থার মতো ছোটটি হয়ে ওর বুকের ভেতর মাথা গুঁজে দেই। শুয়ে পড়ে হাসান আমার মাথায় হাত বুলাতে থাকে। আস্তে আস্তে আমি শান্ত হয়ে যাই। রাগ চলে গিয়ে এবার আমার ভয় লাগতে থাকে। কি যে দীর্ঘ একটা রাত শুরু হবে এখন! হাসানের নিঃশ্বাসের শব্দে বোঝা যাচ্ছে ও ঘুমিয়ে পড়েছে। কি সুখী মানুষের ঘুম! আমি বুঝতে পারি কিছুক্ষণ আগের কথোপকথনের কোনো প্রভাবই পড়েনি ওর উপর। শুধু আমিই জেগে বসে আছি। প্রতি রাতে একই ঘটনা।
আর এটা আমার অনুভবের দেয়ালে আঘাত করে বলেই আমার আরো কষ্ট হয়। কেন আমার কষ্ট ওকে স্পর্শ করে না? বাচ্চাটার অংশীদারিত্বতো দুজনেরই। তাহলে ও কি করে ভুলে যায়? আমার কষ্ট আর কেউ না দেখুক ও তো দেখেছে। দীর্ঘ দুই মাস বিছানায় পড়ে থাকা, দিনের পর দিন রক্তের স্রোতে ভেসে যাওয়া, নির্ঘুম রাত, সারাদিন ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সুখাদ্য বমি গেলার অনুভূতিতে খাওয়া আর দিন শেষে আরেকটি দিনের অপেক্ষা যেন সেই দিনটির পুনরাবৃত্তি না ঘটে। তখন তো দুজনেই ভেবেছি বাচ্চাটা বেঁচে থাকুক। তখন তো দুজনেই কেঁদেছি। তবে এখন কেন যন্ত্রণা শুধু আমার?
এই যন্ত্রণার অভ্যাসে আমার ফোলা চোখের পাতা আরও ফুলে গেছে কি? আমাকে কি এখন আরও বেশি গারো নারীর মতন দেখায়? ইউনিভার্সিটি লাইফে হাসান বলতো, আমার চোখ দেখে মনে হয় আমি গারো বংশীয়। আমার চেহারায়ও নাকি উপজাতীয় ছাপ আছে। রাত জেগে জেগে নিশ্চয়ই সেই ছাপচিত্র চোখে মুখে ভাল করে বসে গেছে। এপাশ ওপাশ করেও ঘুম আসে না। আমি পাশ ফিরে হাসানকে জড়িয়ে ধরি। চোখ বন্ধ করতেই মনে হচ্ছে একাকী বালিকার মতো কোনো গভীর অরণ্যে ঢুকে পরেছি। পথ খুঁজে পাচ্ছি না। আমি তবু তাকিয়েই থাকি।
নির্ঘুম আমাকে পাশে রেখে গভীর ঘুমে থাকা হাসানকে আমার খুব স্বার্থপর মনে হয়। খানিক আগে দেখানো ওর উদারতা যেন অভিশাপের মতো মনে হচ্ছে। এতই বোঝে যদি আমাকে তবে কেন এত দ্রুত ঘুমিয়ে পড়লো ও? নিরাসক্তি যে ওর নেই তাতো আমি ঠিকই জানি। তবে কেন হাসানের মুখে কোনো অপ্রাপ্তির আঁকিবুকি নেই?
আর আমি? অন্ধ রাত্রির পাহারাদার হয়ে রোজ আমি জেগে থাকি। কষ্টের রূপান্তর ঢেউ হলে কষ্টেরা পানির ছলে ভেসে ভেসে চলে যায়। আর আমার আজকের কষ্টের রূপান্তর ঘটেছে চোরাবালিতে। আমি হাত তুলছি, মাথা জাগাচ্ছি। দু’চোখে আকুতি নিয়ে হাসানের দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করতে করতে আমি আরো অতলে তলিয়ে যাই। একসময় আমি টের পাই আমার আপাদমস্তক রাতের অন্ধকার ফ্রেমে স্থিরচিত্র হয়ে গেছে।
(চলছে)
মন্তব্য
সাদিয়া-দিদি, কি অসাধারণ লেখা! ৫ তারা অবশ্যই!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সচলে এই প্রথম এত আদরের ডাকের সাথে সাথে এত কদর পেলাম। আপনার জন্য হাজার তারা। ইমোটা শুধু দেখতেই ইচ্ছে হচ্ছে।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
হাজিরা দিয়ে গেলাম। পড়ে চলেছি
অশেষ কৃতজ্ঞতা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আপনার লেখা পড়ার জন্য মুখিয়ে ছিলাম , অপেক্ষা এবং প্রত্যাশার ষোলআনাই পেলাম।
আমার মনে হয় কি গল্পে সংলাপ যতটা পরিপক্ক গল্পটাও তত পরিপক্ক হয় , সেদিক থেকে আপনি ঝানু ।
অনেক ভালো লাগল। ভালো থাকবেন ।
মজিবুর রহমান
অশেষ কৃতজ্ঞতা। আপনার নতুন লেখা দিন। পড়ে আমিও সাধ মেটাই।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
অনেকদিন পর সচলে ঢুঁ মারতে এসে শুরুতেই দেখি প্রিয় লেখা!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
আমার সৌভাগ্য আপনাকে পেলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আপনার লেখা পাচ্ছি না অনেকদিন। হারাবেন না প্লিজ।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
হারাতে চাই না, কিন্তু চেষ্টাও নেই অনেকদিন। সময়টা বড় অস্থির, একে একটু পোষ মানিয়ে নেই। হয়ত ফিরব শিগগিরি। ভাল থাকুন।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
আশায় থাকলাম। সুসময় আর আপনার লেখার জন্য।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
হে গান্ধর্বী, কবে সময় স্হির হবে বাপু! জলদি ফেরা হোক পগসগ সহ। শুভকামনা
আপনার বায়না শুনলেই তো হাত নিশপিশ করে। কিন্তু মাথাও যে খোলাতে হবে ভাই
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
তোমার এই লেখাটা পড়লে বোঝা যায় খুব স্বচ্ছন্দ্যে লিখে যাচ্ছ প্রতিটা পর্ব। কবিতাটা ভালো লাগলো। পুর্নেন্দু পত্রীর কথোপকথন সিরিজ ওই লাইফে মানে কলেজ, ইউনি বা পেম পেম টাইমে খুব ক্রেইজের একটা ব্যাপার হয়ে মনে হয় কাজ করে
ভালো থাকো আর তাড়াতাড়ি ময়ূর সিরিজ শেষ করো। আমিও একটা লেখা দিছিলাম ৩ দিন আগে। অতিথিদের ব্যাপারে রেস্ট্রিকশন মনে হয় বেশি! যখনই ভাবি ব্লগে সময় দিবো একটা না একটা টুকরা টাকরি কাজ এসে হাজির হয়।
অপর্ণা মিতু
তুমি লেখা ভাল বললে অস্বস্তি হয়। লেখার ভুলগুলো বলবার একজন মানুষই আমার। আর লেখা দিতে থাকো, হঠাৎ করে নিজের লেখা চোখে পড়লে খুব আনন্দ লাগবে। আর আমার মনে হয় অবসরেই লেখা আসে না। কাজের মাঝেই মাথার ভেতর শব্দের বাজনা বাজে।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
পড়লাম। ভালো, বেশ ভালো লাগলো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমার লেখায় বোধহয় প্রথম পেলাম আপনাকে। শুভকামনা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
হ্যাঁ, ঠিক এমনই প্রত্যাশা ছিল তোমার কাছ থেকে! নিবের সূক্ষ্ম আঁচড়ে আরো সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো হৃদয়ের অতল থেকে এমন সযতনে তুলে আনাই তো নিপুণ কথাশিল্পীর কাজ! একটি ভাঙনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা আরো শত ভাঙনের শব্দ বেহাগের মিহি সুরে আলতো করে ছেঁচে আনবার জন্যেই তো প্রহরের পর প্রহর জুড়ে চলে গুণীর সাধনা। আজ সেই প্রত্যাশার বধুমুখ দেখা গেল। এখন থেকে তুমি লিখবে, আর আমরা বিস্ময়াভিভূত হয়ে পড়বো!
একটি কথা মনে রেখ কিন্তু! এই যে, এই উচ্চতায় এসে পৌঁছুলে, এখন হতে তোমার ক্ষেত্রে পাঠকের প্রত্যাশার পারদের কিন্তু এটাই বটম লাইন। এখন থেকে এই মানদণ্ডেই তোমার বিচার! তাই সামনে বিস্তর চ্যালেঞ্জ, প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ নয়, তোমারই বিগত দিনের তাবৎ রচনা-সম্ভার।
ধীরে বহে যমুনা, তাই তো তার তীরে রাধাকৃষ্ণের লীলা অনন্ত প্রেম হয়ে বাজে। ধীরে বহ, সযতনে পরশ বুলিয়ে যাও তলদেশের অজস্র বালুকার প্রতিটি অণুতে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
রোমেল ভাই, এত সুন্দর মন্তব্যের কি জবাব দেই জানা নেই। আপনার জাদুর হাত। কিন্তু আপনি তো ভয় ধরিয়ে দিচ্ছেন। চেষ্টা থাকবে। আশায় থাকি ভুল করলে, ভুল পথে গেলে ভাই একটা দুটো গালমন্দ করে পথে ফেরাবেন।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আপনার লেখা পড়লে মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের একান্তে আড়াল করা কষ্টগুলোই শব্দ হয়ে ভাসছে চোখের সামনে... একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে পড়ে গেলাম।
পরের পর্বের অপেক্ষায়...
অশেষ কৃতজ্ঞতা। পরের পর্ব লিখেছি। এখন শুধু ভুল শুদ্ধি অভিযান। শুভকামনা রইল।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
অসাধারণ, আপু। এত ভালো লেখেন কী করে? আগের পর্বগুলো এখনও পড়া হয়ে উঠছে না বলে এত সুন্দর লেখাটার মন্তব্যও করতে পারছিলাম না। আজ মনে হল, এই পর্বের প্রশংসাটা তো অন্তত জানাই, বাকিগুলো তোলা রইল
দেবদ্যুতি
কৃতজ্ঞতা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ভাবতেছি সুলতানা সাদিয়া বরাবর একখানা দরখাস্ত পেশ করিবো।
এই ভাবনায় আরো দু'জন ছেলেবেটি সচল অবশ্য আছেন। কিন্তু তাঁরারে ব্যাপুক ডরাই।
ঐ গেলি শুনতে হবে নির্ঘাৎ। এক্ষেত্রে আপনি বেশ মায়াবতী, দয়ার শরীর টাইপ লাগে।
ব্যাপার হচ্ছে এভাবে কেম্নে লিখে আমারে শিখাইবেন? সাহিত্য করেই ছাড়বো এ আমার প্রতিজ্ঞে।
হেহেহে বামুন হয়ে চাঁদ ছুঁয়ে দেবার সাধ জাগলে আমি কি করি কন তো!
গপ নিয়ে কিছু বলিনি ভাইবেন না। এত উচ্ছ্বাসের কারণটা না বুঝলে কেম্নে কি
সুপ্রিয় আয়নামতি,
সবিনয় নিবেদন এই যে, এত্ত এত্ত ভাল বললে ভয় পাই। এত্ত ভাল পাঠক আয়নামতি। সামান্য ভুল ত্রুটি, বাক্যের বেয়াড়াপনা যার চোখ এড়ায় না তার ঝুলি ভরা সাহিত্য আমি জানি। উচ্ছ্বাস জারি থাকুক। বেদনা আর বিষণ্নতা ডুবে যাক। ফিরে আসুক সোনালী সময়।
নিবেদক সাদিয়া
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আপনার এই গল্পটা আমার অসম্ভব ভাল লেগে গেছে ৷ পুরো কাহিনী তেই একটা শান্তিপূর্ণ স্নিগ্ধতা আছে৷ পরের পর্বটার জন্য অপেক্ষা করে থাকব৷আর, লেখাটা প্লিজ জলদি শেষ করবেন না৷
আপনাদের ভাল লাগা থাকতে থাকতে যেন শেষ হয়, সেই আশীর্বাদ করুন। খুব বেশি নেই আর। বিষণ্নতা বয়ে বেড়াতে ভাল লাগে না। সাথে আছেন জেনে ভাল লাগে।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
এই লেখার চারটা পর্বই আমি প্রিন্ট করে নিয়ে বারে বারে পড়েছি, পড়তে পড়তে দেখতে পেয়েছি ওর মুখ, চুল, হাত, চলাফেরা, শুনেছি কথা তার। দেখতে দেখতে শুনতে শুনতে কান্নায় ভেসেছি, কখনো হেসেছি। আর বার বার ভাবছি এর পর কী হবে?
এমন করে কোনো লেখা আমায় দোলায় নি সাম্প্রতিককালে। লেখিকা, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আসলে আমিও এই প্রথম নিজের লেখার গতিপথ নিয়ে সন্দিহান। আমার খুব কাছের এক বন্ধুকে এত উচ্ছল দেখি, ভাবি এই তো সব স্বাভাবিক ওর। ঠিক হয়ে গেছে, ভুলে গেছে। আবার হঠাৎ একদিন দেখি অফিসে বা ফোনে হাহাকার তুলে কাঁদছে, আমি ভুলিনি, আমাকে ভুলতে দেয়নি। এই ভাবি শেষ লেখাটা, আবার সমস্ত অস্তিত্ব নিয়ে বিষণ্নতা মনিটর জাঁকিয়ে বসে থাকে।
পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
বরাবরের মতো অনেক মন ছোঁয়া।
অনেক অনেক সাবলীল লেখা আপনার।
আমার শুভকামনা জানবেন সুলতানা সাদিয়া। অনিঃশেষ।
ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক।
দীপংকর চন্দ
কৃতজ্ঞতা দীপংকর দাদা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
নতুন মন্তব্য করুন