১.
আগে অফিসে যাওয়ার সময় দুই ভাই-বোনই বায়না করতো, মা, অফিসে যাবো। চকলেট বা নসিলা দিয়ে শান্ত করতাম। মাঝখানে কিছুদিন হেল্পিং হ্যান্ড নাই। স্টাফের কাছে থাকা, বাবা-মার ছটফটানি। ব্যাপক স্বাধীনতা। দুপুরে লাঞ্চে এসে দেখি বাসা আমার জঙ্গল। বকাবকি, হুলস্থূল। এরপর আমার ছেলের কাতর প্রশ্ন, মা অফিসে যাও না ক্যানো? কখন যাবা? দুষ্টামি করবো।
২.
ছুটির দিন দুপুরে ছেলে-মেয়ের তাদের বাবার পাশে শোয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। ছেলে বলছে, আমার বাবা, মেয়ে বলছে, আমার বাবা। আমি বললাম, তোদের বাবা আমার কি হয়? মেয়ে বলল, ‘ক্যানো জানো না? বাবা তোমার হাজবেন্ট হয়। ওই যে তোমার বিয়ে হয়েছিল, মনে নাই? দাঁড়াও এ্যালবাম দেখাই।’
৩.
টিভিতে চকলেটের এ্যাড হচ্ছে, একটা ছেলে আর মেয়ে তুষারপাতের ভেতর বরফের বল ছুঁড়ছে, খুবই রোমান্টিক দৃশ্য। আমার ছেলে মুচকি মুচকি হেসে আমাকে বললো, মা তোমাকেও এমন বরফের বল মেরেছিল? আমি বললাম কে মারবে বাবা? ও বলল, কেন বাবা মারবে, মারেনি বরফের বল! আমি বললাম আমরা তো কখনো বরফের দেশে যাইনি। আমার আব্বা বলল, আমি বড় হয়ে বরফের দেশে যেয়ে…তারপর সে কি করবে আর শেষ করলো না।
৪.
আমার পেটে সেলাই এর দাগ নিয়ে আধাঘন্টা গবেষণার পর, ছেলে বাপের কাছে একটা ঢোল কিনে দেবার আবদার করলো।
এখন মাঝে মাঝেই দুই পাশ থেকে দুই ভাইবোন আমার পেটের উপর ঢোল বাজায়।
৫.
-মা তোমার সাথে একটা গোপন কথা আছে। কেউ যেন না জানে। শুধু তুমিই জানবে। বাবা, দাদা-দাদী যেন না জানে। শত্ত দাও।
আমি বিপদ টের পেয়ে জেনে বুঝে ‘শত্ত’ দিতে চাই। আমার ছেলের গোপন কথাগুলো ভয়াবহ রকমের হয়। তাই আমার আগাম সতর্কতা। হয়তো বক্সের সব রঙ পেন্সিল ভেঙে টুকরো করেছে নতুবা গোটা সাবান বাথরুমের বালতিতে গুলে এসেছে। আবার হয়তো নিজের মাথার চুলের খানিকটা কাঁচিতে কেটে এসেছে। একদিন তো অফিস থেকে ফিরে দেখি তাকের উপর থেকে নামিয়ে চুমুক দিয়ে সিরাপ খেয়ে নিয়েছে। তাই ছেলের ‘শত্ত’ দেবার মানে হলো, কিচ্ছুটি বলা যাবে না।
-শত্ত পরে। আগে বলো বাপ কোনো আকাম করোনি তো? আকাম না হলে গোপনই থাকবে কথাটা।
-তুমি শত্ত ভাঙছো মা! তুমি বলেছো না, আমাদের গোপন কথা বললে তুমি গোপন রাখবে?
এবার আমি বিপদটা বুঝতে পারি। ছেলে দুই চোখে আকাশ মেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওকে বুকে টেনে নেই। আস্থা হারাবার সংকোচে ছেলেটা একটু সরে যেতে চায়।
-সরি বাবা, ভুল হয়েছে। শত্ত মেনে নিলাম। আর ভুল হবে না। আমার বাবার গোপন কথাটা শুনি এবার।
ও খুশিতে হাততালি দিয়ে ওঠে। তারপর খুব সাবধানে আমার কাছে এসে গলা নামিয়ে বলে,
-মা, মা....আপির না দুইটা পাচ্ছম। আমি আজ গোসলের সময় দেখেছি। ওর না আমার মতো নুনু নেই!
আমার পেছনে মেয়ে দাঁড়িয়ে। ওর গায়ের গন্ধে আমি পিছনে তাকাই। ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরটা সেখান থেকেই আসে,
-তুই তো বোকা। জানিস না কারো সিক্রেট দেখতে হয় না। আর মেয়েদের তো নুনু থাকে না।
৬.
আমি যখন ক্লাস টু বা থ্রিতে পড়ি তখনই বোধহয় কুঁচি দেয়া ফ্রক পড়া শুরু। অতশত মানে বুঝতাম না। তবে ফ্রকের বুকের সামনে খানিকটা কুঁচি যে মা ইচ্ছে করেই দিতেন তা আস্তে আস্তে বুঝেছি। আমার মেয়ের বয়স এখন আট বছর। এখন আমার ছেলেবেলার সেসব দিনগুলো মনে পড়ে। মেয়েটা ছোটবেলা থেকে কোনো এক আয়ার কাছে জামা গলা দিয়ে ঢোকাবার সময় ভয় পেয়েছিল বলে গত পাঁচবছর ধরে আমি বাবা আর ওর বাবা ছাড়া কারো কাছে সে জামা খোলে না নতুবা জামা বা ফ্রকের পিঠে লম্বা করে চেইন দিয়ে দিতে হয় যাতে জামা পা দিয়ে নামানো যায়।
সেদিন অফিসের কি এক প্রোগ্রামে মেয়েকে দূর থেকে দেখে বুকের ভেতর কেমন করে উঠলো, মেয়েটা বড় হচ্ছে! আমি ক’দিন আগে কয়েকটা পাতলা গেঞ্জি কিনলাম মেয়ের জন্য, টপসের নিচে পড়বে। আজ অফিসের প্রোগ্রামে দু’টিকে নিয়ে যাবার আগে মেয়েটাকে প্রথমবারের মতো গেঞ্জি দিলাম, ছেলে দৌড়ে এলো, ‘মা, মা, আপিকে ওটা কি পরালে, আমার গেঞ্জি কই? ছেলেকে স্যান্ডো গেঞ্জি দিলাম। ছেলে আয়নার সামনে যেয়ে নিজেকে দেখে বললো, ‘এখন আর আমার দুদু দেখা যাবে না, আপির তো বড় তাই দেখা যায়।’ এরপর সে প্রোগ্রামে যেয়ে বার কয়েক নিজের শার্টের ভেতরের গেঞ্জি বের করে আংকেলদের দেখাচ্ছে আর বলছে, ‘এই যে আমি বাবার মতো গেঞ্জি পরেছি, আপিও পরেছে, আর আমাদের সেইম দেখা যায় না।’
টুকরো টুকরো অনেক গল্প ওদের, হাসি পায়, আবার বুকের ভেতর ব্যথাও বাজে। বাচ্চা দু’টো হবার পর এদের কোথায় রেখে অফিস করবো, সেই দুর্ভাবনায় দিন-রাত কেটে যায়। মিটিংগুলো কাটে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে। কোনো ফরমাল প্রোগ্রামের ডাক পড়লে বুক হিম হয়ে যায়। কি নাকি বলে সবাই, ডে-কেয়ার সেন্টার না কি যেন, দশ বছরের চাকরি জীবনেও তো ওসব চোখে দেখলাম না। যাই একটু গুগলে সার্চ দিয়ে দেখে আসি।
মন্তব্য
একেকটা অভিজ্ঞতা একেক রকম। সব বাবা-মা’রই থাকে বোধহয়, মায়ের কাছে ছেলেবেলার কত গল্প শুনি, ছেলেমানুষি খুনসুটির কত কথা। পেটের উপর ঢোল বাজায় কেন বুঝতে পারলাম না অনেক ভেবেও! একটু বলে দিয়ো তো। তোমার বাচ্চাগুলো সুপার কিউট!
ডে-কেয়ারে যারা থাকে না বা যেসব মা-বাবা ডে-কেয়ারে বাচ্চা রাখে না তাদের বোধহয় ব্যাপারটাতে তেমন স্বচ্ছন্দ লাগে না তবে যারা অভ্যস্ত হয়ে যায় বেশ মানিয়ে নেয়। আমাদের অফিসের ডে-কেয়ারে কিছু বাচ্চা থাকে, বেশ স্মার্ট বাচ্চাগুলো! ওদের মায়েরাও তেমন একটা ভাবে না বিষয়টা নিয়ে বরং চার বছর পার হয়ে গেলে আর ওখানে রাখা যাবে না বলে চিন্তা করে মাঝেমাঝে।
দেবদ্যুতি
খুব কষ্ট করে বাচ্চাদের নিয়ে জব করি। তারপর রাত জেগে একটু লিখতে বসি। আমি লিখি যা আমার মন চায়। পড়তে পারি খুব কম। সময় নাই। আরেকটু সময় থাকলে ওদেরই দিতাম। তবু ওদের জন্য সাত বছর কলম ধরিনি। ভুলে গিয়েছিলাম আমি লিখতে পারি। এখন ফিরে আসছি, একটু একটু করে বড় হচ্ছে ওরা। তবু ওদের টেনশনে কতগুলো রোগ স্থায়ী হয়ে গেছে শরীরে। প্রতিটা জেলা শহরে একটা ডে কেয়ার সেন্টার থাকলে আমাদের মতো মায়েদের জন্য কিছুটা উপকার হয়। যেসব বাচ্চাদের দেখার জন্য পরিবারে দাদা-দাদী, নানা-নানী বা নিকট আত্মীয় না থাকে তাদের মায়েদের মনের মধ্যে সারাক্ষণ কি চলে জানো? খালি মনে হয়, এই বুঝি রান্নাঘরে যেয়ে দা-বটি ধরলো, এই বুঝি কোনো ওষুধ খেয়ে নিলো, এই বুঝি সুইচবোর্ডে হাত দিলো---এসব কত্ত কি!
(হায়রে, ঢোলের বিষয়টা ক্যামনে বুঝায় বলি! )
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ছোটবেলায় নাকি আমার মাকে বাবার পাশে শুতে দিতে চাইতাম না। বলতাম, "আমার আব্বুর পাশে আমি শুবো। তোমার আব্বু নাকি যে তুমি শুবে?"
ডে-কেয়ার সেন্টার তো খুব দরকার। সবখানে থাকা দরকার। দেশে স্বল্প পরিসরে হলেও শুরু হয়েছে চর্চাটা। আমাদের প্রজন্মের অনেকের ছেলেমেয়ে নানীদাদীর কাছে বড় হয়ে উঠছে। এর পরের প্রজন্মের নানীদাদী কতখানি সময় সুযোগ পাবে ঠিক নেই। ততদিনে ডে কেয়ার সেন্টারগুলো আশা করি দাঁড়িয়ে যাবে, ছড়িয়ে পড়বে ভালোমতো।
আপনাদের ছানাদের জন্য ভালোবাসা রইল।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
পরের প্রজন্মের নানী দাদীরা নিজেরাও অনেকে চাকরি করেন। তাদের পক্ষে নাতিপুতি পালা সবসময় সম্ভব হবে না। ডে কেয়ার সেন্টারগুলো ভালো ভাবে চালাতে পারলে সেখানে বাচ্চাদের অনেক বেশি বুদ্ধির বিকাশ হতে পারে। কেবল সমস্যা থাকে অসুখ বিসুখ সহজে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
আমার বাচ্চাদের জন্য কত্ত কায়দাকানুন করে ওদের দাদা-দাদীকে বুঝিয়ে নিয়ে আসি। এক সপ্তাহ থাকলে দুইমাস থাকেন না। নিজেদের বাড়িঘরের মায়ায় দূরে পড়ে থাকেন। এবার ছেলেটার খিঁচুনি হওয়ার পর দুজনকে হাতে-পায়ে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। ওনাদের শিকড় বাড়িতেই গেঁথে থাকে। সত্যি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ডে-কেয়ার সেন্টার থাকলে বসদের ভ্রুকুটি অন্তত কম সহ্য করতে হতো।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আমি মাঝে মাঝে মন খারাপ করে দেয়াল ঘেঁষে শুয়ে থাকি। তারা তিনজনে মোবাইল, ট্যাব আর কার্টুন নিয়ে বিছানায় কি মাতামাতি! আমি যেন কেউ না। একদিন আমার মেয়ে এসে বললো, মা তুমি কি বাবাকে একটু ধরবে? আচ্ছা শুধু তাইলে হাতটা একটু ধর।
বোঝেন অবস্থা এদের বাপরে এখন এদের পারমিশন নিয়ে ধরতে হয়।
ধন্যবাদ নাশতারান।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ছেলেটা কেমন করে গেদাবেলাটা পার করলো বুঝতেই পারলাম না! বাবা-মা'র থেকে দাদা আর দাদুকেই বেশি পেলো ও।
আপনার বাচ্চাদের চমৎকার শৈশব হোক।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
যাক তবু আপনজনের কাছে নিরাপদ গেদাবেলা কেটেছে তো ওর। ধন্যবাদ নজমুল ভাই।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
চমৎকার লেখার হাত আপনার, মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।
আপনার পুরো পরিবারের জন্যে শুভকামনা, সবাই মিলে দুধে ভাতে থাকুন!
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ধন্যবাদ কনফুসিয়াস। আপনাকে পেয়ে ভাল লাগছে। আমার ছেলেমেয়ে দুটোর দুষ্টামির হাতও যে বেশ পাকা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আমার ছেলেমেয়ে দুটোও আপনার দুটোর সমানই হবে। এতদিন বলতাম কবে তোরা বড় হবি আমি যে বুড়ো হয়ে গেলাম। আর এখন যখন বড় হয়ে যাচ্ছে মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে, দুশ্চিন্তা ভর করছে, সামনে কত রকমের বিপদ ওঁত পেতে আছে বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্য। আপনার পিচ্চি দুটোর জন্য অনেক শুভকামনা ও আদর।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ। আপনার পিচ্চিদুটোর জন্যও আদর।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ছয় মাসের মেটারনিটি লিভ, এক না যেন দুই সপ্তাহের পেটারনিটি লিভ, অফিসে বাধ্যতামূলক ডে কেয়ার সেন্টার থাকা ইত্যাদি ইত্যাদি জিনিসগুলো কাজীর গরু। এগুলো কেতাবে খুব সুন্দর করে লেখা আছে, বাস্তবে চোখে দেখি নাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দুবার চারমাস করে মেটারনিটি লিভ পেয়েছি। দেশে এখনো পেটারনিটি লিভ নাই। আর ডে-কেয়ার সেন্টারের প্রসঙ্গ তুললেই শুনতে পাই, অফিসার বসার জায়গা দিতে পারি না আর ডে-কেয়ার!
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
বেড়ে লেখা। পরিবারের ছোট ছোট ঘটনা কখন সমাজের অদেখা অনেক দিক পাঠকের মনে ঢুকে যায়।
---------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ধন্যবাদ আপনাকে এমন সহজ-সরল কিন্তু অনবদ্য লিখাটার জন্যে।
আপনার বাবু দুটোর জন্যে অনেক আদর রইল।
আমি নীড় সন্ধানী সাথে একমত , আমার মেয়েটার বয়স ২২ মাস এখনই বুঝি যতই বড় হচ্ছে ততই সে আমাদের থেকে দূরে চলে যাচ্ছে?!!!
সবচেয়ে ভাল হত যদি মা-বাবা দুজনকেই মেটারনিটি লিভ দেয়া হত!! অবশ্যই তা পালাক্রমে। কারন এ সময়ের একক ছোট পরিবারগুলিতে বাচ্চাদের ওঁদের মা-বাবার সান্নিধ্য অনেক বেশী প্রয়োজন ।
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
আপনি লেখেন না কেন অভিমন্যু? আপনার উপস্থিতি কি যে খুশি করলো আমায়। আচ্ছা বাঁদর দুটোকে আদর দিবো।
মেটারনিটি লিভ তো গেল ছয় মাসের ব্যাপার। ততদিন বাবুরা কিন্তু কোলেই থাকে। এরপর গড়াবে, হামাগুড়ি দিবে, পোকা মুখে তুলবে, সুইচবোর্ডে হাত দিবে, খাট থেকে পড়ে যাবে, দৌড়াবে, কথা শিখবে, কত্ত্ কি। একক পরিবারের চাকরিজীবী মায়েরা কি করবে বলতে পারেন? সমাধান চাই। আমি পাই বা না পাই আমার পেছনে দাঁড়ানো মা যেন পায়।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
ধন্যবাদ , কিছু নিতান্ত ব্যাক্তিগত কারনেই অচল ছিলাম পুনারায় সচল হবার প্রক্রিয়ায় আছি।
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
বাহ্। প্রক্রিয়ায় গতি আসুক। শুভকামনা রইল।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
হুমম...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হুমম
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
লেখাটা পড়ে নিজের দু’টোর কথা মাথায় এলো। কখনো কখনো আমি অবশ্য ওদের বড় হওয়া ব্যাপারটায় কৌতুহল বোধ করি বেশী, উপভোগও করি। বিশেষ করে দ’শে পা রাখা ছেলে-কে নিয়ে, মেয়ে এখনো অনেক ছোট। বয়ঃসন্ধিতে আমার পণ্ডিত টাইপ ছেলে কেমন আচরণ করবে, প্রথম কাউকে ভাল লাগলে কি করবে, নিজের ও অন্যের যৌনতাকে সঠিক সম্মান দিবে কিভাবে – এসব হাবিজাবি ভাবি নিজের মনে। জানি ওদের শরীর ও মনের গোড়াপত্তনের উপর নির্ভর করে ওরা কতটা সুখী, স্বচ্ছ ও সুস্থ জীবন বেছে নেয়। ক’দিন ফেবু প্রোফাইলগুলোতে সাতরঙা ছবি দেখে দেখেও ছেলের কথাই মাথায় এলো, আমি ওকে ডেকে খুব স্বাভাবিকভাবেই জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'বল তো, একটা ছেলে বেশী অ্যাট্রাক্টিভ না একটা মেয়ে বেশী। লজ্জা পাওয়া লাগবে না, তোমার যা মনে হয় তাই বল।'
সে প্রথমে একটু লজ্জা পায়, তারপর আস্তে করে বলে, মেয়ে।
বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ডের মানে যে ছেলেবন্ধু মেয়েবন্ধু না এরা নিজে থেকে জেনে নেয়, কেমনে জানি। টিভি চ্যানেলে কোন প্রোগামটা প্যারেন্টাল গাইডেন্স, কোনটা এম, কোনটা এম এ, কোনটা জেনারেল এবং এগুলোর অর্থও আমাকে ওর কাছে থেকেই জানা লাগে।
উপরনিচ বাসা নেয়ার পর মেয়ে-কে নিয়ে ভয় ছিল, রোজ তাকে সিঁড়ি ওঠা-নামা শেখানো’র চেষ্টা করতাম, কিন্তু সে উঠবে নিজে নামার সময় নামবে আমাদের কারো না কারো কোলে। কখনোই তাকে নামা শেখানো গেল না। একদিন দেখি নিজের মতো নামা শুরু করল এবং ভাল মতোই নেমে এলো। সিঁড়ি নিয়ে আমাদের কোনো ঝামেলায় পড়া লাগলো না এখনো। আমার সব সময় মনে হয় ওরা অনেক বেশী স্মার্ট, ম্যাচিউরড। যদিও মেয়েটাকে একটু মুডি আর ছেলেটাকে মহা পণ্ডিত লাগে।
খুব ভালো লাগলো আপনার বাচ্চাদের কথা জেনে। আমার মেয়েটা কিন্তু একটু বোকা বোকা আর ছেলেটা পাজী, এক্কেবারে শেয়াল পণ্ডিত।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আমাদের মায়েরা! চমকে উঠলাম এই লাইনটা পড়ে... কি যে বিরক্ত হতাম যেকোন জামায় সামহাউ এরকম কুঁচি বা এরকম কিছু জুড়ে দেবার প্রচেষ্টায়। ভাবতাম শুধু আমার মা-ই বেশি বেশি এরকম করে বুঝি। যতদূত সম্ভব বিদ্রোহ করে নিজের স্টাইল ধরে রাখার চেষ্টা করতাম, সেটা ক্লাস টু/থ্রি নয় অবশ্য, আরো বেশ বড় হয়ে।
আমার নিজের যথেষ্ট বয়স হয়েছে, কিন্তু নিজে মা হইনি বলে মা-বাচ্চাদের সম্পর্ক নিয়ে কিছু ভাবতে গেলে নিজেকে এখনও মা নয় বরং বাচ্চাদের জায়গায় রেখে কল্পনা করি। আপনার বাচ্চাদের সাথে একাত্ব হয়ে গেলাম। সুলতানা সাদিয়া, আপনি ভালো লিখেন, অনেক। কেমন যেন সরল করে ছুঁয়ে যান।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
অশেষ কৃতজ্ঞতা। আজ পড়লাম আপনার লেখা। এতদিন ধরে দূরে থাকবেন না প্লিজ। মাঝে মাঝে আসবেন।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
মুগ্ধতা জানালাম। বরাবরের মতই।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
শুভকামনা আপনার পুরো পরিবারের ৷
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
খুব ভালো লাগলো। ওদের নিয়ে ভালো থাকুন সবসময়।
স্বয়ম
আপনিও ভাল থাকুন। ধন্যবাদ।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
পিচ্চি পাচ্চার কাহিনি শুনলেই অটো ইমোশোনাল হয়ে যাই।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
অনেকদিন পর সচলে লগ ইন করতে পারলাম !
এহসান তো বরাবরই আমার ফেভারিট জানোই। তোমার মায়ের ডায়েরীর লেখাগুলো আমার সবসময়ই ভালো লাগে।
বাচ্চাদের কিছু কিছু শব্দচয়ন আছে, খুব অদ্ভুত। ওরা যে এসব কই থেকে আবিষ্কার করে কে জানে!
ছোটবেলায় আমিও খুব হিংসুক ছিলাম। রাতে ঘুমাবার সময় আমার অভ্যাস ছিল মায়ের পেটের উপর হাত রেখে ঘুমানো। আব্বাকে তো কাছেই ঘেঁষতে দিতে চাইতাম না।
ছেলেবেলা গুলো কিভাবে কিভাবে হারিয়ে গেলো!
তোমার ব্লগিং,লেখালেখি জারি থাকুক। সময়টা কাজে লাগাও।
ভালো থেকো।
অপর্ণা মিতু
আমার ব্যস্ততাতো জানোই। খুব ক্লান্ত লাগে আজকাল। আসো না কেন সচলে?
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
মিষ্টি দুটি ছানা আপনার, ভাল থাকুক সব সময়।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
অশেষ কৃতজ্ঞতা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
কী ভালো লাগলো বাচ্চাদের নিয়ে এই লেখা।
ছোট বাচ্চা নিয়ে চাকরী করা একটা অভিশাপ। এখানে পথে ঘাটে ডে সেন্টার থাকার পরেও ভুগেছি। সকালে উঠে দেখলেন বাচ্চা অসুস্থ্য, ডে কেয়ারে যাবার উপায় নেই। অফিসে মহা জরুরী মিটিং, বাদ দেয়া যাবেনা। কী করবেন? কিচ্ছু করার নেই। আরো কত কত যন্ত্রনা।
বিস্ময়, আমার ছেলে সেদিন জিজ্ঞেস করলো এইমির (সমবয়েসি কাজিন) এর কুকু (পেনিস) নেই কেন? আমি বললাম মেয়েদের কুকু থাকেনা বাবা। ও বললো, আচ্ছা। ঠিক করে রেখেছি ও যা জিজ্ঞেস করবে এভাবেই সাধারণভাবে সত্যি কথাটাই বলবো।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
একটু দেরিতে এলাম বলে দুঃখিত। অজুহাতটা সেই পুরনো। বাচ্চারা। হুম, ছোট বাচ্চা নিয়ে চাকরী করা একটা অভিশাপ আর কষ্ট। এই কষ্ট পরিমাপ করা যায় না। সবাই বলে এইতো আর ক’দিন, তোমার বাচ্চারা বড় হয়ে যাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি এরা বড় হচ্ছে আর টেনশনগুলোর আকৃতিও বড় হচ্ছে।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
নতুন মন্তব্য করুন