আজ খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই দেখি সবুজ ঘাসে ছেয়ে গেছে ঘরের সামনের এক চিলতে মাঠটা। ঘাসের মাথায় লেগে আছে মুক্তোদানারা যেখান থেকে ঠিকরে পড়ছে অপার্থিব রুপালি আলো। আমাকে দেখেই কিনা কে জানে, মুক্তোর মালাখানি দুলিয়ে এক ঘাসবালিকা একটুকু মাথা নাড়াল, আমিও বললাম,‘সুপ্রভাত’। রবিবারের ছুটির দিনে এই ভোরে এদিকটায় ঘুমকাতুরের দল আসবেনা। কতদিন আমি পায়ের তলায় মাটির কোমল স্পর্শ পাইনা! শেষ কবে হেঁটেছিলাম ভেজা ঘাস-মাটির উপর মনে করতে পারলাম না, এদিক ওদিক তাকিয়ে দুম করে তাই খালি পায়ে ঢুকে পড়লাম ঘাসের বনে। আহা, কী অপূর্ব এ অনুভূতি! মনে হল যেন পৃথিবীর কোন গোপন তরঙ্গধারা মাটি থেকে সরাসরি ঢুকে পড়েছে শরীরে। দূর্বাঘাসগুলির মাথায় মাথায় ছোট ছোট ফুল, অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকলে মনে হয় যেন কপালে টিপ পড়ে থাকা কোন শ্যামাঙ্গী রমনী। আহা কতদিন কোন শ্যামবালিকাকে অমন করে চেয়ে থাকতে দেখিনি।
মনে পড়ে গেল আমার বাসার কথা, যে বাসায় আমি শিশু থেকে কিশোর হয়ে কখন যে তারুণ্যে পা দিয়েছিলাম কোনদিন বুঝিনি। সে বাসার সামনেই ছিল বড়সড় একটা মাঠ। তার ঝাঁপিতে ছিল রাজ্যের সব বিস্ময়। স্কুলবেলায় খুব ভোরে ঘুম ভেঙে গেলে চোখ মেলতেই দেখতাম বিশালদেহী গালিভারের মত শুয়ে আছে সাদা মাঠটা। এককোনায় ছিল তার একটা ঘেরাও দেয়া ফুলের বাগান। সে বাগানে থোকায় থোকায় ফুটে থাকত রাজ্যের সব ফুল। ফুলকুড়োনি ছেলেরা দলবেঁধে আসত ফুল তুলতে, আমিও এক ছুটে গিয়ে সে দলে মিশে গিয়ে ফুলেদের গায়ে গায়ে হাত বুলোতাম। সে ফুলেদের আমি কখনও বিষন্ন মুখে দেখিনি, সারাবেলা মুখে হাসিটুকু লেগেই থাকত। আমি দূর্বাঘাস তুলে আনতাম মা’র জন্য, সেই দূর্বাদলের গলায়ও দুলত এমন বাহারি মুক্তোর মালা, আর সারারাত বুকে শিশির জমানো বালির ভেতরে পা ডুবিয়ে আমরা বানাতাম আদিম মানুষের গুহা। গ্রাম ছেড়ে আসার দুঃখ ভুলতেই কিনা জানিনা, ও মাঠে গেলেই আমার কেবল খালি পায়ে ছুটতে ইচ্ছে হত, মাটির স্পর্শসুখ নিয়ে তারপর ফিরতাম ঘরে।
আমাদের পাড়ার শিরোমনি ছিল সে মাঠটি। চট্টগ্রাম শহরে এক নামে সবাই তাকে চেনে। রোজ বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে এসে অপছন্দের ব্যাগটা পিঠ থেকে নামিয়ে এক ছুটে গিয়ে হাজির হতাম তার দুয়ারে। বিকেল চারটার মধ্যে মাঠ ভর্তি হয়ে যেত পাড়ার ছেলেপুলেতে। আমি স্কুল থেকে ফেরার পথেই প্ল্যান করতাম কাকে কোন জায়গায় বলটা করব, কার বলে কেমন করে খেলব, কোন খেলোয়াড়ের জন্য কেমন ফিল্ডিং সাজাব। মাঠে খেলত বিভিন্ন বয়সীরা, কোনদিন বড়দের সংখ্যা বেড়ে গেলে আমাদের ছোটদের কাউকে কাউকে দুধভাত হয়ে বসে থাকতে হত। এই দুধভাত হওয়ার অপমান ছোটরাও বুঝত ভালই, তাই সবাই চাইত বড়দের কেউ না কেউ যাতে কোন না কোন কাজে আটকে গিয়ে মাঠে না আসে। ছোট হওয়ার জ্বালা অনেক, মাঠের ঘেরা দেওয়া বাগানে বল গিয়ে পড়লে ছোটদের কাউকেই দেয়াল টপকে বাগানে নামতে হত বল খুঁজে আনার জন্য, কখনও কখনও এমন হয়েছে যে বল খুঁজে এসে দেখি এক দলের ব্যাটিং শেষ, এখন খেলা বলতে শুধু ফিল্ডিং কর। তখন আমাদের কাছে ক্রিকেট খেলা বলতে শুধুমাত্র ব্যাটিংটাই। ব্যাট করতে না পারার দুঃখে সে রাতে মুখ দিয়ে ভাতই যেতনা।
মাঠ আর খেলার টানের কাছে হার মেনেছিল অন্য সব টান। আমার বেতাল অবস্থা দেখে বাবা আমার জন্য ঠিক করেছিলেন এক তবলার শিক্ষককে। রোজ শুক্রবার সকাল দশটায় তিনি এসে হাজির হতেন। সপ্তাহে ঐ একটাই দিন ছিল যেদিন বাসায় পড়ার শিক্ষক আসতেন না, তাই আমরা ভাইয়েরা মিলে সারাদিন মাঠে ধুলো ওড়াতাম। ব্যাপারটা বোধয় বাবার মনে ধরেনি, তাই শাস্তিস্বরুপ ডেকে আনলেন তবলার এই শিক্ষককে। কিন্তু বড়রা তো জানেনা ছোটদের মাথায় কতশত ছোটছোট বুদ্ধি খেলা করে। তারই কিছুটা প্রয়োগ করে প্রায়শঃই আমি তবলার শিক্ষককে ফাঁকি দিয়ে মাঠে গিয়ে হাজির হতাম। আর একবার মাঠে খেলা শুরু হলে আমাকে আর ফেরাতে পারে কে? নিরুপায় তবলার শিক্ষক জানলা দিয়ে বসে বসে আমাদের খেলা দেখতেন, আমি আড়চোখে দেখতে পেতাম জানালার গ্রীলের উপর তাঁর হাতদুটো আনমনে বাজিয়ে চলেছে শতশত তেরেকেটে। তবলা শেখা আমার আর হয়নি, তাই তালজ্ঞান হারিয়ে আজ সোজা পথ থেকে সরে গিয়ে কোন পথে যে চলে এসেছি নিজেও জানিনা।
বর্ষার মৌসুমে মাঠের চেহারা বদলে যেত। হঠাৎ করে যখন বৃষ্টি নামত বড় বড় ফোঁটায়, মাঠের উপর জলের একটা ধারা তৈরী হত, তারপর এঁকেবেঁকে চলতে চলতে বড় নালায় গিয়ে পড়ত। দেখে মনে হত যেন একটা নদী বিভিন্ন বাঁক ঘুরে গিয়ে হঠাৎ সমুদ্রে পড়েছে। ক্রিকেটকে হঠিয়ে দিয়ে মাঠ তখন দখল করে নিত ফুটবল, দাপিয়ে বেড়াত সারা মাঠে কালোমানিকেরা। এই খেলায়ও বঞ্চিত-লাঞ্ছিত অল্পবয়সী রোগা-পটকা ছেলেগুলো। আমরা যারা পাটকাঠির মত পা নিয়ে খেলার মাঠে গিয়ে হাজির হতাম, প্রায়শঃই আমাদের দেয়া হত গোলপোস্টের সামনে দাঁড় করিয়ে, গোলকিপারকে আমরা বলতাম দারোয়ান মিয়া। এই দারোয়ান মিয়ার রোল প্লে করতে গিয়েই একদিন ঘটল বিপত্তি। হবে পেনাল্টি শুট, নেবে ইয়া মোটা গম্বুজের মত পাঅলা একটা ছেলে। ছেলেটার আসল নামটাই হারিয়ে গিয়েছিল আমাদের কাছে, আমরা আড়ালে আবডালে ডাকতাম ওকে গম্বুজ বলেই। গম্বুজের আবার দুচোখ ট্যারা, সে যে কোনদিকে তাকিয়ে আছে তা বোঝা দুস্কর, তার মাথায় যে কী মতলব তা বোঝার সাধ্য কারও নেই। গম্বুজের শুট আমার গায়ে লাগলে আমি নিশ্চিত পাখির মত উড়ে যাব, তাই ভাবছিলাম ব্যাটা যেদিকে তাকাবে তার উল্টোদিকেই দেব লাফ। কিন্তু বিধি আমার বাম, বঙ্কিমলোচনের চোখ দুটি আমাকে এমন ডজ দিল যে যেদিকে অঙ্ক কষে লাফ দিয়েছিলাম, সেদিকেই কামানের গোলার মত ছুটে এল বলটা, আর আমি মুখ বাঁচাতে গিয়ে গোলটাই দিলাম বাঁচিয়ে। মনে হল একটা বুলডোজারের চাকা যেন হাতের উপর দিয়ে চলে গেল। সবাই আমাকে বাহবা দিচ্ছে, আর আমি তাতে সাড়া দিতে গিয়ে দেখি আমার সোজা হাতটা মোটামুটি ১৩০ ডিগ্রি এঙ্গেলে বাঁকা হয়ে গেছে। তারপর দুমাস হাতে প্লাস্টার লাগিয়ে জানলার সামনে বসে বসে দেখতাম ঘোর বর্ষায় ভিজে যাচ্ছে মাঠ, জলের একটা ধারা সাপের মত এঁকেবেঁকে চলেছে বড় নালার দিকে।
গ্রীষ্মের দীর্ঘ বিকেলগুলোতে মাঠে বসত মার্বেলের হাট। সবার পকেটে পকেটে তখন রংবেরং এর মার্বেল। আমরা টিফিনের পয়সা জমিয়ে জমিয়ে মার্বেল কিনতাম, ঘরে কাঁচের বয়ামে লুকিয়ে রাখতাম। মার্বেলের খেলাগুলিরও ছিল বিচিত্র সব নাম। বাত, এমনি, জাপানি বাত। আমাদের প্রিয় খেলা ছিল জাপানি বাত। মাঠের এক অংশে সারি করে সাজিয়ে রাখা হত কয়েকশ মার্বেল আর অনেক দূর থেকে নিখুঁত নিশানা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত মার্বেল শিকারিরা। সারাটা বিকেল পকেটে থাকা মার্বেলগুলো নিজেদের মধ্যে ঠোকাঠুকি করত আর সেই কলরবে মাঠটা মুখরিত হয়ে উঠত। কখনো সখনো আকাশটা রঙিন হয়ে উঠত। পাখিদের সাথে পাল্লা দিয়ে উড়ত নানা রঙের, নানা আকৃতির ঘুড়ি, তাদের সাথে উড়ত আমাদের হৃদয়গুলোও। মাঠের একপ্রান্তে লাটাই হাতে থাকত একজন আরেকজন অন্যপ্রান্ত থেকে ঘুড়িটা উপরে ছুঁড়ে দিত। আমি ভাল ঘুড়ি উড়াতে পারতাম না, তবে ঘুড়ি ভোকাট্টা হয়ে যখন আকাশে চক্কর দিতে দিতে পড়ে যেত তার পিছু নিতাম আমি। ঘুড়ির সাথে কখনো সখনো আমরা জুড়ে দিতাম অন্য আকাশের পরীদের জন্য লেখা প্রেমের চিঠিগুলো। চিঠিগুলোর জবাব কখনোই আসতোনা।
আমাদের স্কুল এবং কলেজ বেলায় তখনো আমাদের হাতে মোবাইল এসে পৌঁছায়নি। পাড়ায় পাড়ায় তখনো সাইবার ক্যাফেগুলো গজিয়ে ওঠেনি। পৃথিবীতে ঘটেনি তখনো ফেসবুক বিপ্লব। কম্পিউটার যন্ত্রটিই চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়নি অনেকের। বাড়ির পাশের মাঠটিই ছিল আমাদের সামাজিকতার একমাত্র কেন্দ্র, পাড়ার সবগুলো মুখই ছিল কমবেশী পরিচিত। কাছেপিঠের অন্য পাড়াগুলোয়ও ছিল একটা দুটো মাঠ। মাঝেমাঝে সেসব পাড়ার সাথে প্রীতি ম্যাচ খেলতাম আমরা। এতে করে এলাকায় অনেকগুলো বন্ধু জুটে যেত সবার। শীতকাল এলে পাড়ার মাঠগুলোতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের হিড়িক পড়ে যেত, আর এসব টুর্নামেন্টকে ঘিরে থাকত আমাদের সমস্ত উত্তেজনা আর আগ্রহ। দলবেঁধে আমরা খেলা দেখতে যেতাম, তারপর দল গোহারা হারলে সব দোষ আম্পায়ারের উপর চাপিয়ে দিয়ে পাড়ায় ফিরে এসে আবার মেতে উঠতাম খেলায়। এই মাঠগুলোকে দিনরাত শাপশাপান্ত করত ভিডিও গেমস দোকানের মালিকেরা। একবার প্রবল আগ্রহ নিয়ে মোস্তফা খেলতে গিয়ে একরাশ বিরক্তি নিয়ে মাঠে ফিরে এসেছিলাম। প্রতি বিকেলে আমরা মাঠে খেলতে যেতাম বলে আমাদের কাউকে ডাক্তার চাচুদের লাল যোগচিহ্ন আঁকা দরজায় টোকা দিতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মাঝামাঝি সময়ে এসে টিউশনির গোলকধাঁধায় পড়ার আগ পর্যন্ত দুঃশ্চিন্তা নামক শব্দটি তেমন একটা পাত্তা পায়নি আমার কাছে। সমস্ত রাগ, চাপ, চিন্তা, ক্ষোভ দু-তিন ঘন্টার দৌঁড়ঝাপের পর কোথায় যে পালাত!
আমার পাড়ার মাঠটির বুকে এখন আর কোন দুর্বাঘাস নেই। বছর কয়েক আগে সারাটা মাঠ কোন এক অর্বাচীনের বুদ্ধিতে সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির তোড়ে মাঠের মাঝবরাবর এখন আর কোন নদীর জন্ম হয়না। ফুলকুড়োনি ছেলেরা এখন বোধয় অন্য আমোদে মশগুল। লাটাই হাতে কেউ কি আসে? কিংবা কারো পকেট থেকে মার্বেল-শিশুদের হাসির কলরোল উঠে কি আর? আশেপাশের পাড়াগুলোর একটা মাঠও আর জীবিত নেই। সেখানে এখন সদম্ভে দাঁড়িয়ে আছে আবাসিক ভবনগুলো। কোথাও কোন টুর্নামেন্ট এর আমেজ নেই, প্রীতি ম্যাচ তো অবোধ্য একটা শব্দ। ছোট্ট একটা পাড়ার ছেলে-ছোকরারা একে অপরকে চেনেনা, পাশের পাড়ায় কারা থাকে তার খবর কেই বা নিতে যায়। পাড়ায় পাড়ায় এখন বিনোদন(কোচিং) সেন্টার। স্কুল ফেরত কিশোরটি হয় ঘরে নাহয় বাইরে গিয়ে ফেসবুক খুলে বসে ক্লাসমেটের খবর নেয়, লেখে ‘ লাইফ সাক্স ’। মাঝে মাঝে শুনি অমুকের বাচ্চার ডায়াবেটিস, তমুকের বাচ্চার উচ্চরক্তচাপ। খবরগুলো দুঃখজনক নাকি কৌতুককর তাই বুঝে উঠতে পারিনা। খেলার মাঠগুলো দখল করে করে গোটা একটা প্রজন্মকেই এভাবে পঙ্গু, অথর্ব, বিকৃত করে ফেলা হচ্ছে। যদিও এ সমস্যাটা বহুলাংশে নাগরিক, এবং বাংলাদেশে বৃহৎ নগরীর সংখ্যা হাতে-গোনা, তবুও ব্যাপারটা ভয় উদ্রেক করার মতই। কল্পনা করুন তো একবার, আপনার-আমার শিশু-সন্তানদের খেলার জন্য পাড়ায় কোন মাঠ নেই, তারা কোনদিন খালি পায়ে মাটির উপর হাঁটার আনন্দটুকু পাবেনা, ঘাসের বুক জড়িয়ে থাকা শিশির-মালা দেখে অবাক হবেনা, বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা কোন মাঠ কস্মিনকালেও দেখবেনা, আকাশে রঙিন ঘুড়ি দেখে আপনাকে বলবেনা,’ আমাকে ঘুড়ি কিনে দাও’।
আজ আমার খুব ঘুড়ি ওড়াতে ইচ্ছে করছে।
[ আমাদের পাড়ার মাঠটির নাম জে,এম,সেন হল মাঠ। এই লেখাটা লিখেছি আমার ছোটবেলার খেলার মাঠের সমস্ত বন্ধু এবং বড় ভাইদের কথা মনে করে। বিশেষ করে টুসুমদা’র জন্য।]
মন্তব্য
(গুড়)
আফ্রিকা ফিরলেন নাকি ! অনেক দিন পর !
facebook
দেশে ছিলাম দু'সপ্তাহ। এখন আবার আফ্রিকার জলপাই বনে।
ছুঁয়ে যায়।
এভাবে বললে মন ভীষণ আনচান করে ভাই। সব কথা যে নিজের নিজের লাগে।
ডাকঘর | ছবিঘর
কথাগুলোতো আপনার আমার।
সেই শাপশাপান্ত মনে হয় কাজে লেগেছে। একে একে মাঠগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। উঠছে ধাতব আর সুরম্য প্রাসাদ, যার ভিতর বসে ভিডিও গেমস নিয়ে মাতছে এখনকার শিশু-কিশোরেরা। খেলার জন্য বাইরে যায় না বলে তাদের অভিভাবকেরাও থাকে নিশ্চিন্ত। সুরক্ষিত ও শক্ত দেয়ালের মাঝে বেড়ে উঠছে নরম ও অরক্ষিত একটি প্রজন্ম।
এদেশে কত কিছু নিয়ে আন্দোলন হয়; কিন্তু খেলার মাঠের জন্য কোন আন্দোলন হয় না!
সময়োপযোগী এক অসাধারণ পোস্ট!
অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছি সবাই।
লেখাটি পড়তে পড়তে সেই বিকাল গুলোতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। মানশদা, সনজয়দার সাথে প্রতিটি রান নিয়ে বাকবিতণ্ডা করছি।বড় বেশী ভালো দিন গুলো নিমিষেই কোন সূদুরে মিলিয়ে গেল।
ধন্যবাদ।
মন খারাপ করে দেয়া লেখা একটা সময় অপেক্ষায় থাকতাম বিকেল হলেই মাঠে ছুটবার। মাঠেই একটা বন্ধন তৈরী হয়ে যেতো সবার সাথে। আমার সেই খেলার মাঠ ছোট ছোট হতে হতে এখনো ঠিকে আছে কিন্তু খেলার কেউ নেই। মাঠের খেলার চেয়ে পিসিতে খেলায় বোধহয় এদের কাছে আনন্দের আর অভিভাবকরাও তাতে নিশ্চিন্ত।
এই নিঃশ্চিন্ততা বেশীদিন স্থায়ী হবার নয়।
লেখার প্রথম অংশটুকু ভীষণ ভীষণ কোমল। ঠিক পায়ের নীচে নরম কচি দুর্বাঘাসের স্পর্শের মতো।
মাঠের অভাব বাচ্চাদের অভ্যাসও বদলে দিয়েছে বোধহয় অনেকটাই। মাঠে রোদের ভেতর বেশিক্ষণ থাকলেই তো দেখি টপাটপ বসে পড়তে থাকে। মাথা ঘুরে পড়ে যায়।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
মাটির স্পর্শ পায়না যে শিশু তার হৃদয় হয়ে যাবে সিমেন্টের।
তোর স্মৃতিচারণমূলক লেখাগুলো বেশ হৃদয়স্পর্শী হয়। এই লেখাটাতেও সেই স্বর শোনা যায়।
অতীত আমাদের সোনালী অতীত সারা জীবন তাড়া করে ফিরবে।
তবে আজকের প্রজন্মের জন্য যে হাহাকার আমরা করি, তারা সেটা খুব একটা উপলব্ধি করতে পারবে না। আনন্দের জন্য তাদের এখন প্রকৃতির কাছে যেতে হয় না, তাদের বিনোদনের জন্য অনেক কিছু ছড়িয়ে আছে চার দেয়ালের মধ্যেই।
বাণীব্রত
নতুন মন্তব্য করুন