ইন-বক্স খুলতেই মিলন ভাইয়ের নামটা চোখে পড়ল। অপঠিত এই একটাই মেল। এসেছে তাও সপ্তাহখানেক হল। বাদবাকী মেলগুলো সব পড়া। অধিকাংশই সুচরিতার। ইচ্ছে করেই রেখে দিয়েছি। ডিলিট করতে মন চায়নি। স্মৃতি। শেষ মেলটির বয়সও হবে প্রায় বছর দেড়েক। এছাড়া আছে ইয়াহু থেকে আসা কিছু অর্থহীন মেল। ওগুলো বোধ হয় ডিলিট করার পরিশ্রমটুকুও করতে ইচ্ছে হয়নি বলে এখনও রয়ে গেছে। আর আছে মাঝে মাঝে আসা মিলন ভাইয়ের কিছু মেল। মিলন ভাইকে এই ইমেইল এড্রেসটাই কেন যে দিয়েছিলাম ভুলে গেছি এখন। এটা খুলেছিলাম সুচরিতার সাথে চিঠি চালাচালি করব বলে। ঐ প্রয়োজনটা এখন ফুরিয়েছে। ইয়াহুটা এখন আর তাই নিয়মিত খোলা হয়না। মাঝে সাঝে খুলে দেখি নতুন কিছু আছে কিনা। না, ওর ঐ শেষ মেলটাই প্রতিবার আমার দিকে তাকিয়ে থাকে বোকার মত। কেন জানি আশার কখনো মৃত্যু হয়না।
মিলন ভাই আমার কোন আত্মীয় নন। উনার সাথে সত্যি বলতে আমার কোন অন্তরঙ্গ সম্পর্কও ছিলনা কোনদিন। মিলন ভাই পাড়ার মাঠে আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলতেন। বয়সে আমার চেয়ে অনেক বড়। আমার বড় ভাইয়েরও বড়। মিলন ভাইকে আমি আসলে অপছন্দই করতাম। উনি সবার আগে ব্যাট করতে নামতেন। আমাকে নামাতেন সবার শেষে। বল করতে গেলে শুধু ওয়াইড করতেন। আমাকে বলও করতে দিতেন না। আর রান চুরি করতেন। আমাদের পাড়ার মাঠের ভেতর লোহার রডের ঘেরাও দেয়া একটা ফুল-বাগান ছিল। কখনও বাগানে গিয়ে বল পড়লে মিলন ভাই আমাকেই সেই বল খুঁজে আনতে পাঠাতেন। আমি যেতে না চাইলে বলতেন, ‘ কাল থেকে তাহলে আর মাঠে আসিস না।’ মিলন ভাই মাঠের কোনা থেকে আমাদের পাশের বাসার নাহিদা আপার সাথে ইশারায় কথা বলত। নাহিদা আপা ছাদে গেলে আমি বুঝতে পারতাম। তার চুলের একটা মিষ্টি গন্ধ রয়ে যেত ছাদে। একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে ওদের দুজনকে আমি হুডতোলা রিকশাতে একসাথে দেখেওছিলাম। মিলন ভাই কখনোই আমার প্রিয় কোন মানুষ ছিল না।
কলেজে পড়ার সময় একদিন শুনেছিলাম মিলন ভাই ইটালি চলে গেছে। ততদিনে অবশ্য পাড়ার মাঠে খেলা ছেড়ে দিয়েছি। বিকেলে ছুটতে হত প্রাইভেট স্যারের বাসায়। নাহিদা আপারও বিয়ে হয়ে গিয়েছিল পাড়ার একটা কম্যুনিটি সেন্টারে। আমরা অনেকেই দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। মিলন ভাইকে রাস্তায় দেখলে তখন আমরা মুচকি মুচকি হাসতাম। বিয়ের কয়েকদিন আগে অবশ্য একদিন আমি ছাদে নাহিদা আপাকে একটা চিঠি পড়তে পড়তে কাঁদতে দেখেছিলাম। ঘটনাটা কাউকে বলিনি আমি। মিলন ভাই ইটালি চলে যাওয়াতে আমার একটুও মন খারাপ হয়নি। উনার কথা আমার মনে পড়ত কেবল নাহিদা আপা কয়েক দিন পর পর ওর মা’র বাড়িতে বেড়াতে এলে। নাহিদা আপা কেন জানি আর ছাদে যেতনা বা গেলেও উনার চুলের গন্ধটা আমি আর পেতাম না।
মিলন ভাইকে একদিন খুঁজে পাই ফেসবুকে। ততদিনে উনার প্রতি জমা অভিমানগুলো উড়ে গেছে। চেহারাটাও একটু বদলে গেছে। প্রোফাইল পিকচারে দেখলাম কলোসিয়াম এর সামনে দাঁড়ানো একটা ছবি। মাঝে মাঝে উনার সাথে চ্যাট হত। বেশী কিছু বলার মত থাকত না আমার, উনিই খালি এটা সেটা প্রশ্ন করে যেতেন। পাড়ার মাঠে এখন কেমন খেলা হয় জানতে চাইতেন। আমি যখন বলতাম মাঠটা আর নেই, ওখানে বিল্ডিং উঠে গেছে তখন উনি বিশ্বাস করতে চাইতেন না। কেমন আছেন জানতে চাইলে বলতেন, ওখানে অনেক কষ্ট। মিলন ভাই পিজ্জার দোকানে কাজ করতেন। মিলন ভাই কখনও আমাকে নাহিদা আপার কথা জিজ্ঞেস করতেন না। দেশে কখন আসবেন জিজ্ঞেস করলে বলতেন, কাগজ হয়ে গেলেই আসবেন, কাগজ করাটা নাকি অনেক ঝামেলার ব্যাপার।
মিলন ভাইয়ের সাথে গত বছর রোমে কয়েকটা দিন একসাথে ছিলাম। ছুটিতে ইটালি আসব শুনে খুব করে বললেন উনার সাথে দেখা করতে। মিলন ভাই আমার কাছের কেউ না। উনার প্রতি কখনও কোন গভীর টান অনুভব করিনি আমি। বিদেশে থাকেন বলে উনাকে নিয়ে সবসময় একটা অন্যরকম কৌতুহল ছিল । উনি জোরাজুরি করছেন দেখেই বরং আমি অবাক হলাম একটু। ভেবেছিলাম রোমে দুয়েকটা দিন নিজের মত ঘুরে বেড়িয়ে অন্যদিকে পা বাড়ানোর আগে উনাকে একটা টাচ দেব। কিন্তু এয়ারপোর্টের বাইরে আসতেই দেখি পরিচিত একটা মুখ নিয়ে সেই সাত সকালে উনি এসে হাজির। এভাবে ধরা পড়ে গিয়ে একটু লজ্জ্বিতই হলাম। অভিমানি কন্ঠে উনি বললেন, ‘ তুমি তো মিয়া আপন মনে করনা, একবার জানাইতে তো পারতা অমুক তারিখ আসতাছ রোমে।’ অজুহাত হিসেবে বললাম, ‘ সরি মিলন ভাই, আসলে তাড়াহুড়ায় আপনাকে জানাতে পারিনি। ভেবেছিলাম রোমে নেমেই ফোন দেব আপনাকে।’ ‘ হ, আর কইওনা, ফেসবুকে ত স্ট্যাটাস দিতে পার, ঐখান থেকেই তো জানছি তুমি আইজ আইবা।’ চোখে তখন ভাসতে লাগল প্লেনে ওঠার আগে ফেসবুকে লেখা স্ট্যাটাসটা, ‘ কামিং টু রোম টু এনজয় আ রোমান হলিডে টুমরো… ’
ভিত্তোরিয়া নামের একটা এলাকায় মিলন ভাইয়ের দুই রুমের ছোট্ট বাসাটাতে যখন গিয়ে পৌঁছালাম তখন গায়ের জামা হালকা ভিজে গেছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। ট্রাম থেকে নেমে অল্প একটুকু পথ হাঁটলাম। ওতেই হবে বোধ হয়, সারা গায়ে কেমন একটা শীত শীত ভাব করছিল। ব্যাপারটা বুঝেই উনি বললেন, ‘বাথরুমে গরম পানি আছে, গোসল কইরা আইসা এইটার তলে ঢুইকা একটু আরাম কইরা নাও’। দেখলাম একটা সুন্দর সাদা-লাল কাঁথা। লাল মোটা সুতোর চমৎকার সব নক্সা আঁকা কাঁথাটায়। আমি বললাম, ‘ বাহ, বেশতো কাঁথাটা, পেলেন কোথায়?’ ‘ হ, হইবো কথা, আগে ফ্রেশ হইয়া আসো। তারপর বলতাছি।’
গোসল করে এসে দেখি রুমটা কফির গন্ধে ভরে গেছে। মিলন ভাইয়ের রুমে আর কেউ আছে বলে মনে হলনা। হঠাৎ করেই নাহিদা আপার কথা মনে পড়ল। অদ্ভুত! জিজ্ঞেস করলাম, ‘ মিলন ভাই একা থাকেন নাকি? ভাবী কই?’ আমার নিজের বিয়ের বয়সই যায় যায় অবস্থা। মিলন ভাইয়ের কথা আর না হয় নাই বললাম। বললেন,‘ ধুর মিয়া, মজা কর না, আমারে কেডা বিয়া করবো? একা আছি, ভালই আছি। তয়, একদম একা ঠিক না, রোমে বহুত বাঙ্গালি। মাঝে মধ্যে এ আসে, হে আসে। রাস্তায় বাইর হইলেই কারো না কারো সাথে দেখা হইয়া যায়।’ কফির মগটা নিয়ে আমি মিলন ভাইয়ের কাঁথাটার ভেতর ঢুকে পড়লাম। একটা পরিচিত গন্ধ নাকে এসে লাগল। কিসের গন্ধ? ন্যাপথলিনের? মিলন ভাইয়ের কথাটাই ঠিক। কাঁথাটা গায়ে চাপাতেই শীত শীত ভাবটা কেটে গেল। বেশ আরাম লাগছিল। আমি কাঁথাটা উল্টিয়ে পালটিয়ে দেখতে লাগলাম। দুই কি তিন পরতের সুতীর শাড়ি দিয়ে বানানো সাধারণ একটা কাঁথা। যেমনটি আমাদের অনেকের ঘরেই থাকে। তাতে মোটা লাল সুতো দিয়ে বোনা অনেকগুলো ফুল। পাতা। পাখি। লাইন। জিজ্ঞেস করলাম, ‘ কাঁথার কথা বলবেন বলেছিলেন?’ ‘ হ। এইডা দেশ থেইক্যা আসার সময় আম্মা ব্যাগে গুইজা দিছিল। অই সময় ক্যাঁথাডা আরও পরিস্কার আছিল। কাপড়গুলা ছোডকালে আম্মারে পড়তে দেখছি। এই ক্যাঁথাডা গায়ে দিলেই কেমুন জানি মনে হয় আম্মার বুকে মাথা রাইখা ঘুমায় আছি। তখন মনে হয় আম্মা আমার দেখভাল করতাছে।’ কথাটা শুনেই মনটা কেমন করে উঠল। গুনে গুনে দেখলাম ইটালিতে মিলন ভাইয়ের প্রায় তের বছর হয়ে গেছে। এই এতগুলো বছরে একবারও উনি দেশে আসেননি। জিজ্ঞেস করলাম, ‘ আপনি তো এখানে আসার পর একবারও দেশে আসলেন না।’ কথায় কথায় ‘হ’ বলার একটা বাতিক আছে উনার। বললেন, ‘ হ, সাধে কি আর দেশে না যাই। আমি তো বহুত ঘুরপথে এইখানে আইছিরে ভাই। আসার পর এখানে কাউরে চিনিনা। মাইনষের কথা বুঝিনা। দোকানে দোকানে কামলা খাটছি বহুত দিন। পুলিশ দেইখলে ডরে থাকি। কাগজ নাই। কাগজ বানানোর লাইগ্যা এরে ওরে কত ধরছি। ট্যাকাও দিছি। লাভ হয় নাই। এখন কেইস চলতাছে আমার। পসিটিভ হইয়া গেলেই কাগজ পাইয়া যামু। আর কাগজ হইলেই যাইতে পারুম দেশে।’ মিলন ভাইয়ের সাথে আমার এমন কোন হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিলনা যে উনার দুঃখে আমি দুঃখ পাব। অথচ উনার গল্প শুনে কেন জানি উনার প্রতি একটা করুণায় মনটা ভরে গেল। জিজ্ঞেস করলাম, ‘ তো এইখানে আপনার বন্ধু-বান্ধব হয়নি?’ উনি কাঁথাটা দেখিয়ে বললেন, ‘ আরে এইখানে আমার অনেক বন্ধু। সব এই ক্যাঁথা আইন্যা দিছে। তোমার বয়সী, আমার বয়সী, বুড়া অনেকেই এই ঘরে আসে। আইসা এই ক্যাঁথার ভিতরে ঢুইক্যা একবার আরাম কইরা লইলেই হেরা আমার বন্ধু হইয়া যায়। অগো কারও কাছেই নাকি ক্যাঁথা নাই। কয় কি শুনবা, এই ক্যাঁথাটা গায়ে দিলেই নাকি অগো মনে হয় অদের মা অগো পিঠে হাত বুলাই দিতাছে।’ চোখ ভিজে গেল আমার কথাটা শুনে। মিলন ভাই হেসে বললেন, ‘ কি মিয়া কাইন্দা দিলা নাকি?’
মিলন ভাইয়ের সাথে দিন চারেক থেকে আমি সারা রোম শহর ঘুরে ঘুরে দেখলাম। উনি পিজ্জার দোকান থেকে ছুটি নিয়ে আমাকে সময় দিয়েছিলেন। মিলন ভাই, যাকে আমি কখনও ঠিক পছন্দ করতাম না, উনি আমাকে কলোসিয়ামের একটা প্লাস্টার অব প্যারিসের রেপ্লিকা কিনে দিয়ে বলেছিল, ‘এইটা তোমার পড়ার টেবিলে রাখবা। আমারে মনে থাকবো’।
কালে ভদ্রে মেল করেন মিলন ভাই। তেমন কিছু লেখেন না। এই, ‘ক্যামুন চলতাছে, ঐখানে তো নাকি গণ্ডগোল লাইগ্যা রইছে, আফ্রিকান মাইয়া বিয়া করবা নাকি হ্যাষে?’ এইরকম কয়েকটা বাক্যে শেষ করে দেন মেল। বড় স্বার্থপর টাইপের মানুষ আমি। উনার মেলগুলোর জবাব দিতেও দেরী করে ফেলি। মিলন ভাইয়ের এবারের মেলটার তাই ভাবলাম সাথে সাথেই একটা জবাব দিয়ে ফেলব। কিন্তু চিঠিটা পড়তেই মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। দুটো দূর্ঘটনার কথা লিখেছেন উনি। আম্মা মারা গেছেন উনার দিনকয়েক আগে। কেইসের যেহেতু এখনও কোন ফল আসেনি, তাই দেশেও উনি যেতে পারেননি। আম্মার কবরে মাটি দেয়াও হলনা উনার। তার কিছুদিন পর উনার দুই রুমের বাসাটায় আগুন লাগে এক রাতে। অনেক কিছুর সাথে তার আম্মার দেয়া সেই কাঁথাটিও নাকি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মিলন ভাইয়ের জন্য তখন সত্যিই আমি কেঁদে উঠি। সেই সাদা সুতী কাপড়ের উপর মোটা লাল সুতোর নক্সা আঁকা কাঁথাটা আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সেই কাঁথাটা যেটা গায়ে দিলেই যেন মায়ের পরশ পাওয়া যেত গায়ে। যে কাঁথাটা গায়ে জড়াতে আসত আরো অনেকগুলো মিলন ভাই, দেশে ফিরতে পারেনা যারা, একটা কাঁথার ওমে যারা একটা মানচিত্রের মমতা খোঁজার চেষ্টা করত।
মন্তব্য
চমত্কার!
আমার কাছে একটা মেলামাইনের প্লেট আসে, আম্মা দিসিলো আসার আগে. ছয় বছর হয়া গেসে আমি এখনো ঐটাতে ভাত খাই
..................................................................
#Banshibir.
যত্ন করে রেখে দেন থালাটা। আমার বড় ভাইয়ের জন্য মা একটা লাল জামা বুনেছিল, ছোটবেলায় ও সেই লাল জামাটা পরত। ঐ জামাটা মা রেখে দিয়েছিল। এখন দাদা'র মেয়েটা ঐ জামাটা পরে।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
প্রথম দিকটা পিকচারেস্কু ছিল, সব দেখতে পারছিলাম। মিলন ভাইএর আপুর কথা কউলেন, আপ্নেরটা টা কয়লেন না ; একটু দুষ্টামির করলাম, মনে লয়েন না । ভালো লাগছে। //সারাজীবন
'আমি' মানে গল্পটার কথক একটু করে ইঙ্গিত দিয়েছে তার প্রেমের।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
বলার মতো কিছু নেই...
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ভাল লাগছে (গুড়) ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
দারুণ একটা গল্প, কিন্তু শুরু হবার আগেই শেষ হয়ে গেল। সবাই ফাঁকিবাজি করলে ক্যাম্নেকি?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কী বলবো...
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
মিলন ভাই খুব উদার মনের একজন মানুষ তাতে কোন সন্দেহ নেই। উনি জানেন আপনি ওনাকে মনে রাখেন নি তবু নিয়ম করে মেইল পাঠিয়ে আপনার খবর নিছ্ছেন। ওনার ভালবাসার ক্ষমতা আছে কিন্তু ভালবাসা পাওয়ার ভাগ্যটা নেই অন্তত আপনার কাছ থেকে। এবং আপনি যেভাবে বলে গেছেন যে উনি আপনার তেমন প্রিয় কেউ নন তাতে উনি যদি এই লেখাটা কোনভাবে পড়ে থাকেন তবে হয়ত মনে মনে কেঁদেছেন। মিলন ভাই সত্যি একজন গ্রেট মানুষ এবং আমরা খুব স্বার্থপর প্রজাতি।
ট্যাগ তো বলছে এটা গল্প!
হুম গল্পের 'মিলন ভাই' অনেক উদার। আর গল্পের কথক তো স্বীকারই করেছে যে সে স্বার্থপর। আর গল্পের লেখকও খুব একটা মহামানব নয় এটা আপনাকে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
মশায় আমরা কেউই মহামানব নই কিন্তু যে লোকটি আমাদের এতখানি মনে রাখে তাদেরকে মনের মাঝে আরেকটু বেশি জায়গা দিতে পারি। অনুরোধ রইলো আর কখনোই মিলন ভাই আপনার কাছের কেউ নয় তা কোনভাবেই আর বলবেন না এমনকি গল্পের প্রয়োজনেও নয়।নাই বা লিখুন সেই গল্প ক্ষতি কি! আর ভালবাসাবীহীন করূনা ? শুধু তার দুঃখই বাড়াবে। সরি যদি ভুল কিছু বলে থাকি । আসলে তার জন্য মনটা এত বিগলিত হয়ে গেল যে কিছু কথা আপনা আপনি চলে আসল। লোকটা কি বোকা ভাবতে পারেন আপনাকে উপহার দিয়ে বলেন ওটা দেখলে তার কথা আপনার মনে পড়বে!!
এটা বোকা মিলন ভাইয়ের মতো আপনাকে আমার উপহার
সেদিনের গান
এইতো সেদিন বালির বাধের মতো
বেধেছিনু ঘর বাধাহীন দুপুরে মমতার গাথুনিতে।
এইতো সেদিন কোলাহল তুলে দিতুম লাল-নীল মার্বেলে
যেন হয় দিখন্ডিত প্রবল সংঘাতে।।
নবপ্রসূত রোদের নাঙ্গা গায়ে ভীষণ লেপটে
এইতো সেদিন লেগেছিল সরষের ঘ্রাণ।।
এইতো সেদিন হলুদের আসর থেকে কণ্যারা যেত চুরি
সখাসখি লয়ে।।
বৃষ্টি—মাতাল মন টিনের সৃষ্টি শুনেছিল কান পেতে
এইত্ত সেদিন...
এইতো সেদিন ভূতূড়ে চরিত্রগুলো
অদৃশ্য অস্ত্র হাতে কড়া নাড়ে রাতের দুয়ারে।।
এইতো সেদিন দেখেছিনু শিশিরের আহ্লাদ
নরম ঘাসের কোল চেপে।।
চকচকে চোখ তার জমে যাওয়া গল্পের পসরা বুকে।
এইতো সেদিন পাকা ধান ভুলে যেত খড়কুটারে
অযত্নে ফেলে যেত নির্দয় গ্রামীন পথে পথে ।
রেসের ঘোড়ার মতো এইতো সেদিন
ছুটে যেতো মানব ঘোড়া চেনা সুখে...অচেনার পানে।
............সেই স্বাদ আজো দাপট নিয়ে ফেরে
এই বিবর্ণ পাতে...
দারুণ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কোমল আবেগ মেশানো গল্পটি মনকে ভিজিয়ে দিল। কাঁথাটার জন্য সত্যি কষ্ট হচ্ছে! মায়ের কাপড়ের তৈরি কাঁথার ওম পায়নি, এমন বোধহয় আমাদের ভিতর কেউ নেই। কাগজের জন্য মায়ের মৃত্যুতে দেশে আসা হল না, মায়ের সাথে সাথে প্রবাস জীবনে মায়ের একমাত্র চিহ্ন কাঁথাটার চিরবিদায়!
সত্যি, ভীষণ ছুঁয়ে গেছে আপনার গল্পটা! আপনি আরও বেশী বেশী গল্প লিখুন, সুমাদ্রী ভাই।
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ মামুন ভাই। চেষ্টা করব দেখি গল্প লেখার।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
(গুড়) অসাধারণ লেখা।
মিলন ভাই যেন ভালো থাকেন সবকিছুর পরও।
facebook
ধন্যবাদ অনু ভাই। মিলন ভাইদের মতন মানুষগুলোরই আসলে ভালো থাকা হয়না সবসময়।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আসলেই অসাধারণ লেখা। মুগ্ধতা জানাতে এলাম।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ মাদাম।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
বাহ! দারুণ।
_________________
[খোমাখাতা]
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
দারুণ
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ভালো লাগলো।
থ্যাঙ্কস বাণী।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
চোখ ভিজিয়ে দিলেন ভাই, হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, আমিও মায়ের দেয়া কাঁথাটা গায়ে জড়িয় বসে আছি
যত্ন করে রাখুন কাঁথাটা।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আপনার গল্প বলার স্টাইলটা চমৎকার, বর্ণনার ভারে জর্জরিত নয়। গল্প লেখা চালিয়ে যান।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ পাণ্ডব'দা।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ঠিক্কথা!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কী কারণ, অকারণ এই বাঁধ না মানা দেঁতো হাসির প্রদর্শণ?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
লাজুক লতা চুপিসারে কহে
ধরো না আমায় সুঁড়সুঁড়ি বাহে।।
কিছুই বুঝলাম নারে ভাই।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
লাজুক লতা মানে লজ্জাবতী লতা বা ওইরকম বৈশিষ্টের কোনো মানুষ,
চুপিসারে মানে চুপিচুপি,
ধরো না মানে টাচ করো না
সুঁড়সুঁড়ি মানে টিকেল
তাও তো কিছু বুঝলাম নারে ভাই?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
হে হে টুমি ভীষণ মজাড় হে। টোমায় নাম দিলুম সজাড়ু।।।
এখন আসল কথা বলেন।
এইটা শুধুই গল্প? না ব্লগরব্লগর?
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ব্লগরব্লগর করতে করতেই গল্প ফেঁদে বসার চেষ্টা করা আর কি। ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
হু, মনটা ভরে গেল। মনটা ভারী হয়ে গেলো।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ স্যার।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
মন খারাপ হয়ে গেল।
ইমো দিতে ইচ্ছে করছে না, তাই লিখেই দিলাম।
সরি মাশরুম।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
মন ছুঁয়ে গেল!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
ভীষণ রকম ভাল লাগল গল্পটা!
[একটা কাঁথার ওমে যারা একটা মানচিত্রের মমতা খোঁজার চেষ্টা করত।]
কি অসম্ভব সুন্দর একটা লাইন। অনেক ভাললাগা জানবেন
meghporee_sheela
নতুন মন্তব্য করুন