কখনও কখনও তেতলা একটা মাটির বাড়ি স্বপ্নে দেখি আমি;
সেই বাড়িটা, ক্লাস ফোরের বার্ষিক পরীক্ষা দেয়ার পর যেটি ছেড়ে শহরে চলে এসেছিলাম।
বাড়িটার ভেতর থেকে কে যেন আমায় ডেকে বলে
‘ আয় বাপি, আয়, মাটির দেরাজের ভেতর লুকিয়ে রেখেছিলি যে পাঁচ পয়সাটা,
সেটা নিয়ে যাবি আয় ’
মাঝে মাঝে শহরের বহুদূরে মেঠোপথ আর ধানক্ষেতে ঘেরা শান্ত একটা গ্রাম স্বপ্নে আসে আমার।
দেখি গ্রামের বাজারে সিজার ফিল্টার আর ক্যাপস্টান সিগারেটের প্যাকেট কুড়োতে থাকা লাজুক একটা কিশোর
বলে আমাকে, ‘ অনেক টাকা হল, চল বাপি, এবার চাড়া খেলি শিবুদের বাড়ি গিয়ে।’
দূরদেশের ক্লান্ত দুপুরে ঘুমিয়ে পড়লে প্রায়ই একটা স্বপ্ন দেখি,
ঘুড়ি হয়ে আকাশে উড়ছে একটা দেশের ছবি,
অভিমানী মায়ের গলায় সে আমায় ডেকে বলে,
‘ আয় বাপি, আয়; ডাল, মাছ আর ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে যাবি দুটো, আয়।’
দেশে গিয়ে একদিন বন্ধুকে বলি, ‘ চল, সুজন বাড়ি ঘুরে আসি ’
মাটির তেতলা বাড়ি নজরে এলে হঠাৎ মনে হয়
পাঁচ পয়সা লুকিয়ে রেখেছিল মাটির দেরাজে যে শিশু সে আর আমি নই।
বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে বাজারের দিকে চলে যেতে যেতে দেখি
চেনাজানা মুখগুলো আমায় দেখে আর চিনলনা।
বাজারে গিয়ে কোথাও আর খুঁজে পেলামনা গৌরাঙ্গের মিষ্টির দোকান
বাতাস কোথাও থেকে ভাসিয়ে নিয়ে এলনা ‘ হাওয়ামে উড়তা যায়ে ’ গান।
বিমান যখন ভূমি ছেড়ে অনেক উঁচু আকাশে গা ভাসিয়ে দিল
নিরাসক্তভাবে জানালার ওপারে তাকাতেই দেখি অদূরে ঘুড়ি হয়ে উড়ছে একটা দেশের ছবি
মাইক্রোফোনে শুনলাম যেন বিমানবালা বলছে, ‘ আসিস বাপি,
ডাল, মাছ আর ভর্তা দিয়ে আবার দুটো ভাত খেয়ে যাস। ’
মন্তব্য
খুব মন খারাপ হলো
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
তুই তো দেশে, তোর মন খারাপ কেন? মাটির বাড়িতে শৈশব কেটেছে তোর? ধূলোপথে স্কুল পালিয়ে এসে মার্বেল খেলেছিস কখনও?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
বললেন না তো।।। আপনি কি ওই দাদাটা যার ভূড়িটা একটু বড় তাই ভূরিভোজ করে বেশি?আপনি কি ওই দাদাটা যা।।।র।।।
ভালো লাগলো। তারাপদ রায়ের একটা কবিতা শেয়ার করছি।
পুরনো শহরতলিতে
আবার ফিরে এলাম,
আর একটু খোঁজ নিয়ে এলেই ভাল হত।
বাড়ির সামনের দিকে
একটা কয়লার দোকান ছিল
কাঠ, কয়লা, কেরোসিন - খুচরো কেনা বেচা,
কেউ চিনতে পারল না
দু'জন রাস্তার লোক বলল,
'এদিকে কোনো কয়লার দোকান নেই
গলির এপারে রাধানাথ দত্তের গ্যাসের দোকান
সেখানে খোঁজখবর নিয়ে দেখুন।
'মনে আছে কয়লার দোকানের পিছনে ছিল বড় উঠোন,
কয়েকটা আম কাঁঠাল গাছ, ভাঙা বারান্দা, ঘর দোর।
এখন তো কিছুই নেই,
শুধু একটা নেমপ্লেট, 'নাগরিক'।
চারতলা বাড়ি, ষোলটা ফ্ল্যাট,
এরই মধ্যে কোনওটায় আমি ফিরে এসেছি।
কিন্তু কয়তলায়, কাদের ফ্ল্যাট?
স্বর্গীয় রূপকবাবুর পদবিটা যেন কী ছিল,
তাঁদের নতুন বাসাবাড়িতে এখন কে থাকে -
কোনও খোঁজখবর রাখি না,
শুধু মনে আছে তাঁর ভাইঝি টুলটুলি।
না। সেই বাড়িটা জগৎসংসারে আর নেই,
টুলটুলিকে কেউ চেনে না।
পুরনো শহরতলির নতুন পাড়ায় বোকার মতো ঘুরি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
..................................................................
#Banshibir.
ফারাসাত
ধন্যবাদ তাসনীম ভাই। অনেক ধন্যবাদ মনকাড়া কবিতাটি শেয়ার করেছেন বলে।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ধন্যবাদ তাসনীম ভাই। অনেক ধন্যবাদ মনকাড়া কবিতাটি শেয়ার করেছেন বলে।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কি সুন্দর!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
মন খারাপ হয়ে গেল, বিমান থেকে যখন ঢাকাকে দেখেছিলাম তখন মনে হয়েছিল জীবনটাকে পিছনে ফেলে আসলাম।
--বেচারাথেরিয়াম
খুব ভালো লাগলো। অসাধারন কবিতা।
অসাধারণ হয়েছে দাদা। শেষের চার লাইনের অনুভূতির সাথে নিজের অনেক মিল পেলাম।
অমি_বন্যা
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
চমৎকার
..................................................................
#Banshibir.
ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
রেখনা মনে বিষাদের স্মৃতি
সুখ খুঁজে নিও চোখ দুটো বুজে
দেখবে কত শান্তি শুধুই শান্তি।
শুভকামনা রইল।
তুহিন সরকার
tuhin_preeti@yahoo.com
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
খুব সুন্দর লিখেছেন বাপি!
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
সুমাদ্রী ভাই @ শেষ লাইনের আগের লাইনে "বিমানবালা" এর উপস্থিতি টা বেমানান লাগলো শুধুমাত্র " আসিস বাপি,
ডাল, মাছ আর ভর্তা দিয়ে আবার দুটো ভাত খেয়ে যাস। ’ এই ডায়লগটুকুর জন্যে। শুধু ব্যক্তিগত অভিমত "বিমানবালা" শব্দটা বাদ দিলেও বোধহয় কবিতার জন্যে খুব বেশি ক্ষতি হয় না, বা অর্থ ও বদলায় না কোথাও ।
ভালো লাগলো।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রাজীব। ভাল থাকবেন।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
মন খারাপ করে দেয়ার কবিতা।
ইমা
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কত সহজ করে মন খারাপ করে দেয়... তার জন্যই ভাল লাগে...
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
জীবনের প্রয়োজনে, জীবনকে ফেলে
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কখনো দেশ ছেড়ে সাতদিনের বেশী থাকিনি কিন্তু থাকলে কেমন লাগবে তা আপনার কবিতা পড়েই বুঝতে পারলাম। খুব মন ছুঁয়ে গেলো।
ফারাসাত
দেশ ছেড়ে বাইরে গেলেই যে মন খারাপ থাকে এমনটি নয়। উল্টোটাও হয়। আসলে একদিক দিয়ে পুরো পৃথিবীটাই আমাদের দেশ তো। তবে যে মাটির ভাষা আমার হৃদয়ে বহমান, যে মাটির ফুলের গন্ধ আমায় উন্মন করে রাখে দিনমান, যে মাটির শরীরে ছুটেছি ঘাসফড়িংযের পিছু পিছু সে বারে বারে এসে ডাক দিয়ে যায় আমায়। ব্যাপারটা বোধয় সাংস্কৃতিক।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
খুবই ভালো লাগলো। জীবনের প্রয়োজনে কখন যেন বড় হয়ে গেছি। কিন্তু সে ছেলেবেলা সবর্দাই রঙিন।
স্মৃতির পাতায় তাকিয়ে দেখি
আমার ছেলেবেলা,
মনের ভেতর চুপটি বসে
খেলছে রঙিন খেলা।
মানসিক বিকারগ্রস্থ
আসলেই।।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
এই লাইন দুটো আমাকে সে কোন সুদূর অতীতে ফিরিয়ে নিল!!!
গৌরাঙ্গের দোকানটা যেন আমিও দেখেছি কবে.............
আপনার কি একটা অভিনন্দন পাওনা আছে? থাকলে দিয়ে দিলাম এখুনি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হারুণ ভাই, গৌরাঙ্গের মিষ্টির দোকান পটিয়ায় কমলমুন্সির হাটে একটা আছে। আরেকটা ছিল আমাদের গ্রামে। এখন আর নেই। কিসের অভিনন্দন?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আরে তাইতো! আগে খেয়াল করিনি। অভিনন্দন।
..................................................................
#Banshibir.
সুন্দর!
ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
facebook
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
কিছুক্ষণ ঘোরের মধ্যে রাখল প্রতিটি লাইন
ডাকঘর | ছবিঘর
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
চমৎকার, সুমাদ্রী!
ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
"পাঁচ পয়সা লুকিয়ে রেখেছিল মাটির দেরাজে যে শিশু সে আর আমি নই।"
আহা সেই শৈশব...
কষ্ট কষ্ট কবিতা।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমার মনে হয় প্রবাসী মাত্রই আপনার মত মাটি ও শেকড়ের তীব্রটান অনুভব করে প্রতিনিয়ত। এমন করে টানার ক্ষমতা আর কারুরই নেই।
তামান্না ঝুমু
ভালো লাগলো খুব
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
স্মৃতিকাতরতা বড় ব্যথার সুমাদ্রীদা।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
এই অনুভূতিগুলো বোধহয় দেশ ছেড়ে না গেলে আসে না।
ঈদ বা একই সময়ের পূজায় ঢাকা শহর খালি করে গ্রামে ছুটে যাওয়ার প্রবণতা বোধহয় এই কারণেই আসে।
#অনেক সুন্দর লিখেছেন,শুভেচ্ছা আপনাকে।।
আশরাফুল কবীর
অনেক ভাল লাগলো।
গ্রামের বাজারে সিজার ফিল্টার আর ক্যাপস্টান সিগারেটের প্যাকেট কুড়োতে থাকা লাজুক একটা কিশোর
বলে আমাকে, ‘ অনেক টাকা হল, চল বাপি, এবার চাড়া খেলি শিবুদের বাড়ি গিয়ে।’
অনেক ভালো লাগলো।
মন চলে গেল যেখানে ফেরা যায় ক্লান্তির শেষ ঘাম নিয়ে
অথচ উন্মুল আমি চেনা মাটির ঘ্রান থেকে---------
স্বয়ম
চমৎকার। মন এলোমেলো করে দেওয়া কবিতা। খুব ভালো লাগলো।
কবিতাটা ভালো লেগেছে। আধুনিক কবিতা ক্যামন যেন শুধু নস্টালজিয়ার জয়জয়কার
ভালো লাগলো । আহা রে ! কত দিন গ্রামে যায়নি ।
নতুন মন্তব্য করুন