নিয়মিত লেখা আর ব্লগের লেখা ২

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: রবি, ০২/০৩/২০০৮ - ১:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলা ব্লগ জগতের বয়স বাড়ছে। এলাকাও বড় হচ্ছে। লেখক-পাঠকদের একটা সীমাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে, থাকবেও। অন্তর্জালে ঘোরাফেরা করেন না যারা তারা এর বাইরেই থেকে যাবেন শেষপর্যন্ত। ব্লগের লেখা থেকে সংকলন প্রকাশিত হচ্ছে। ছাপা মাধ্যমে গিয়ে ব্লগের কিছু নির্বাচিত লেখা অফলাইন পাঠকের নাগালেও যাচ্ছে। কিন্তু সেগুলো শেষ পর্যন্ত ছাপামাধ্যমের নিয়মিত লেখার তালিকাভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। ছাপা হয়ে আসা কাগজ সময়ের সাথে পুরনো হয়ে ঝুর ঝুর ঝরে গেলেও ছাপা হওয়া লেখার সারবস্তু কাগজে এঁটে থাকছে, অক্ষর সমাবেশ বদলে যাচ্ছে না। ব্লগের লেখা কিন্তু নিজেকে প্রতিমুহুর্তে বদলে নিচ্ছে। নবাগত ব্লগারের নিয়মিত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে পুরনো ব্লগারকে। মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য কখনো আংশিক কখনো পুরো লেখাকেই বদলে দিচ্ছে। এই গতি ছাপামাধ্যমে অনুপস্থিত। ইউরোপে এসে দেখলাম বেশীরভাগ খবরের কাগজের অন্তর্জাল প্রকাশনায় পাঠকের সরাসরি মন্তব্য করার জায়গা। ছাপামাধ্যমে প্রকাশিত কাগজেও পাঠকের জন্য সম্পাদক মহাশয় খানিক জায়গা ছেড়ে থাকেন। কিন্তু তাতে শতসহস্র মন্তব্যের তোড়ে বেশীরভাগই হারিয়ে যায়। যেগুলি ছাপাখানার মুখ দেখে তাতে কমপক্ষে সপ্তাহখানেক কখনো মাসও পেরিয়ে যায়। অন্তর্জালের মন্তব্যকেও ভার্চুয়াল কাঁচির মুখে পড়তে হয় বটে। তবে সেটা কদাচিৎ। বেশিরভাগ কথাই সরাসরি চলে যায় লেখার প্রতিক্রিয়াতে। তাতে মূল লেখায় আলাদা মাত্রা চলে আসে। তারপরেও সেখানে যতটুকু রাখঢাক যতটুকু কুলীন-অকুলীনের বিচার থাকে, ব্লগিং প্লাটফর্মে তা কমতে কমতে শুন্যে না এলেও অনেকটা শুন্যের কাছাকাছি চলে আসে।

নতুন মাধ্যম মাত্রেই কোন না কোনভাবে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতাকে ধারণ করে। সেখানে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠাণে প্রকাশ করতে না পারা কথাগুলি সামনে আসে। ব্যাপারটা অবশ্যই সরলরৈখিক নয়, কারণ যে কোন রেকর্ডকৃত তথ্যই কোন না কোন পাটাতনের উপর অধিষ্ঠাণ করে। এই প্রক্রিয়ায় সেই পাটাতনকে নানাছাঁচের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে পাটাতন হিসেবে অস্তিত্ব জানান দিতে হয়। সেদিক থেকে সর্বৈব প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার ধারণাকে যুক্তিসিদ্ধ করা প্রায় অসম্ভব। নির্দিষ্ট কাঠামোর যৌক্তিকতাকে বাতিল করতে যে কারণে প্রস্তাবিত কাঠামোর তথ্যসমাবেশের সুলুক খুঁজতে হয় সে কারণেই অসম্ভব। তাই অনপেক্ষ প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার বদলে প্রতিষ্ঠানের চলমান সমালোচনাকে দেখা যায় কোন নির্দিষ্ট সময়ের বিকল্প পাটতনে। ছোটকাগজ এসেছিল যে ধরণের পাটাতন হিসেবে। প্রতিষ্ঠিত পত্রিকার প্রতিষ্ঠিত লেখককূলের উন্নতনাসিকাক্রান্ত কাঁচি যেখানে সময়ের নতুন স্বরগুলি ধারণ করতে অক্ষম থেকেছে, ছোটকাগজ সেখানে সেই দায় নিয়েছে। কোন কাগজে গোষ্ঠীকেন্দ্রিকতা দেখা দিলে নতুন কাগজ জন্মেছে। এখনো জন্ম নিচ্ছে প্রতিদিন।

অন্তর্জালের ব্লগিং পাটাতনগুলি ছোটকাগজের চৈতন্যকে আরো বেশী করে ধারণ করে। পাঠকের তীব্র মন্তব্য,সমালোচনা, উপহাসের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে এখানে প্রায়ই ছাপামাধ্যমের মোহরাঙ্কিত প্রথিতযশা লেখককে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এদের অনেকে অভিমান করে চলে যান, অনেকে প্রকাশ্যে বিষোদগারও করে থাকেন, অভিশাপও দেন। কিন্তু এদের বাইরে উঠে আসছেন আরো একঝাঁক লেখক যারা এই ভার্চুয়াল আক্রমণ মোকাবিলা থেকেই নিজেদের লেখাকে গড়েপিটে নিচ্ছেন। অন্যমাধ্যমে যা প্রান্তিক নতুন পাটাতনে প্রান্তকে বিস্তৃত করছে শেষ কথা বলে দেবার মুখে ছাই দিয়ে।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হুমম।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি প্রায় একই রকম।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

পাঠকের তীব্র মন্তব্য,সমালোচনা, উপহাসের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে এখানে প্রায়ই ছাপামাধ্যমের মোহরাঙ্কিত প্রথিতযশা লেখককে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এদের অনেকে অভিমান করে চলে যান, অনেকে প্রকাশ্যে বিষোদগারও করে থাকেন, অভিশাপও দেন। কিন্তু এদের বাইরে উঠে আসছেন আরো একঝাঁক লেখক যারা এই ভার্চুয়াল আক্রমণ মোকাবিলা থেকেই নিজেদের লেখাকে গড়েপিটে নিচ্ছেন।

কথা এক্কেরে সইত্য।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

হিমু এর ছবি

নিয়মিত লেখার পাটাতনগুলোতে মরিচাময় একটি জায়গা প্রায়শই ক্যাঁচক্যাঁচ করে নিজের অবস্থান জানান দেয়। সেই জায়গায় যথাযথা তেল না দিলে নিয়মিত লেখার পাটাতনে পাট বিছানো মুশকিল হয়ে পড়ে। কখনো কখনো তেল দিলেও মরিচার বিপত্তি দূর হয় না, সেই তেল রীতিমতো মর্দন করে যেতে হয় ধারাবাহিকভাবে, প্রকাশ্যে, যাতে দশজনে দেখে আর বোঝে যে হাঁ, উহা একটি তৈলমর্দন বটে! ব্লগ এই মরিচার সমস্যাকে দূর করতে পারে অনেকখানি। তেল নয়, প্রয়োজন লেখা। যিনি লেখেন, তিনি লিখেই নিজের জায়গা করে নিতে পারেন ব্লগের পাটাতনে। অযথা তেল মাখানোর ঝামেলার মধ্যে দিয়ে তাঁকে আর যেতে হয় না।

মরিচাপন্থীরা এ কারণে হয়তো ব্লগের ওপর নাখোশ হতে পারেন। আগে যেখানে তারা বিভিন্ন আসরেআড্ডায় সিক্ত হতেন, উপাসিত হতেন, সেখানে নতুন উটকো লেখকেরা যথাবিহিত প্রণামী কি অর্ঘ্য না দিয়েই গ্যাটম্যাট করে একজায়গায় ঢুকে লেখার মতো একটা কাজ শুরু করে দিতে পারছে, এ চিন্তাটি তাদের সুখমগ্ন দিনগুলির স্মৃতি উসকে দিয়ে কিছুটা পীড়া দেয় হয়তো। কিছু নমুনা দেখেছি এখানে সেখানে। লিখতে পারেন না, অথচ তৈলপ্রয়োগে মরিচাহননে সিদ্ধহস্ত, এমন কিছু "লেখক"ও বেশ উচ্চকণ্ঠ ব্লগের এই স্বাধীনতার বিপক্ষে। ব্লগের ক্ষমতার সীমাপরিসীমা নিয়ে পড়াশোনা করার উপদেশও পাওয়া গেছে এমন কিছু উজবুকের কাছ থেকে।

নিয়মিত লেখার সাথে ব্লগের লেখার মূল দ্বন্দ্ব প্রতিক্রিয়ার গতিতে। একটা লেখা লিখে তিষ্ঠানোর উপায় নেই ব্লগে, পাঠক এসে ঘন্টা বাজান দরজায়। হোক মধুসিক্ত প্রশংসাবাণী কি তিক্ত কদালোচনা, পাঠকের হাত খালি থাকে না। নিয়মিত লেখার পাটাতনে অভ্যস্ত লেখকদের সমস্যা এখানেই। এত দ্রুত সাড়া, আর কখনো কখনো এত বেশি সাড়ায় হিমসিম খান তাঁরা।


হাঁটুপানির জলদস্যু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লেখালেখিকে ভাগ করার কি দরকার আছে?
ব্লগ কি পত্রিকার বিকল্প না সম্পূরক?

অনেকে লিটল ম্যাগকে দৈনিকের বিকল্প ভাবেন। আমি বলি সম্পূরক। আর তারও আরেকটা সম্পূরক ব্লগ

একসময় ব্রাহ্মণরা ছাড়া কেউ পড়তেই পারতো না। লেখাতো দুরের কথা
আমরা জানি না সেই ব্যবস্থায় কালিদাসের সময় তার চেয়ে আরো কোনো মেধাবী ছিলেন কি না যিনি সুযোগ পেলে কালিদাসকে ছাড়িয়ে যেতেন

আরেকটা সময় লেখাপড়াটা চলে আসে বিত্তবানদের হাতে। লেখালেখিও। এখনও প্রায় লেখক পরিচয়ে দেখা যায় একটা লাইন - তিনি অত সালে একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই সম্ভ্রান্ত মানে পয়সা বোঝায়

তারপর মধ্যবিত্ত (এবং অবশ্যই তাদের বেশিরভাগের লেখাপড়া শেখার সুযোগ ছিল)

আমাদের দেশে লেখাপড়া এবং লেখালেখি প্রায় সাধারণের হাতের কাছে এসেছে মাত্র কিছুদিন। কিন্তু তার পরেও প্রকাশ মাধ্যম বলতে ছিল দৈনিক পত্রিকা। যার সম্পাদকেরা আবার ব্রাহ্মণেরও ঠাকুর। শুচি নষ্ট হয়ে যাবার ভয়ে অনেক লেখা খুলেও দেখেনা। আর তরুণরাতো তাদের কাছে নিষিদ্ধ শুওর থেকে অশুচ

সেখানে লিটল ম্যাগ একটা বিকল্প। অনেককে লেখার সুযোগ করে দিয়েছে। যারা এক সময় আবার নিজেরাই ব্রাহ্মণ হয়ে গেছেন। (বাংলাদেশের ২/১টা ছাড়া সবগুলো দৈনিকের বর্তমান সাহিত্য সম্পদাক লিটলম্যাগ কর্মী)
এতে দৈনিকের সাথে লিটলম্যাগ এর দূরত্ব কিন্তু কমছে। ছ্যা ছ্যা দূর দূর ব্যাপারটা দুপক্ষ থেকেই কমছে

এইবার ব্লগ
ব্লগের সরাসরি দুটো বৈশিষ্ট্য
০১
যারা অনেকদিন থেকে লেখা বিরতি দিয়ে বসে আছেন। তাদের সেই অভ্যাসটা আবার চালু করছে এই ব্লগ
০২
লেখালেখিকে যারা একটু দূরের জিনিস মনে করে দূরে থাকতেন (অনেকের ভীতিও আছে) তাদেরকে দ্রুত তুলে আনছে লেখার জগতে

............
যিনি প্রিন্ট মাধ্যমে লেখেন ব্লগ তাকে সম্প্রসারিত করছে। আর যিনি ব্লগ লেখেন তাকে নিয়ে যাচ্ছে প্রিন্ট মাধ্যমের কাছে
তাহলে?
দুটো ধারাই অন্য ধারাগুলোর সাথে গিয়ে মিলিত হচ্ছে পাঠকের কাছে
তা যেভাবেই হোক
প্রতিটা লেখার উদ্দেশ যখন পাঠকের কাছে পৌছানো। সেহেতু কীভাবে গেলো সেটা কি খুব বড়ো বিষয়? নাকি কত বেশিভাবে যাওয়া গেলো সেটাই বড়ো?

....
আজকের যুগে কালিদাসের লেখাও ইন্টারনেটে পাওয়া যায়
তাহলে তিনি কোন মাধ্যমের লেখক?
আর যখন ব্লগারের লেখা বই আকারে প্রকাশিত হয়ে যায় তখন তিনিই বা কোন ধারার লেখক থাকেন?

.....
লেখালেখিতে মাধ্যমটা কি আদৌ কোনো বিষয়? কিংবা গণ্য কিছু?
মনে হয় না। অন্তত আমি স্বীকার করি না
আমি শুধু দেখি দিন দিন লেখা এবং পড়ার সুযোগ বাড়ছে। ব্যাস। সবকিছুই সম্পূরক। আর বেসিক জিনিসটা হলো নিজের সম্প্রসারণ

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

অসাধারণ ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সুমন চৌধুরী এর ছবি

"সম্পুরক" কথাটা সঠিক।
লেখা তো এমনিতে লেখাই। কবিতা, গল্প, নাটক, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, প্রবন্ধ, রম্য এগুলো সবাই নানান ফর্মের লেখা। তবে মাধ্যমের পরিবর্তন অন্তত আমার ক্ষুদ্র পর্যবেক্ষণে তার চরিত্রে খানিক প্রভাব ফেলে বৈকি! সাবেক ছোটকাগজ কর্মী দৈনিক/সাপ্তাহিকের সাহিত্য পাতার সম্পাদক হবার পরে তার অবস্থিতিতে একটা মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। তিনি তখন সমকালীন সাহিত্যের মরতে দম লাঠিয়াল থেকে খানিক অন্যকিছু। কারণ তখন সম্পাদকের পদাধীকারে তাঁর ভাত জুটছে। সেই পাতায় যাদের লেখাজোখা প্রকাশ হচ্ছে সকলেরই দু-দশটাকা পকেটে যাচ্ছে। সেখানে অবধারিতভাবে একটা আলাদা ইন্টারেস্ট স্ট্রাকচার ক্রিয়াশীল। ছোট কাগজের পাতায় একটা আলাদা মায়া সৃষ্টি হয় বাড়ি থেকে পাওয়া মাসকাবারি পকেট খরচ কিংবা টিউশানির বেতন থেকে প্রাণান্ত কষ্টে বাঁচানো কয়েকটা উজ্জ্বল টাকার আশির্বাদে। প্রায়শ: ছাপার পয়সা বাকী পড়ে। প্রকাশক বিরক্ত মুখে তাগাদা দেন। দেনার পরিমান বেড়ে গেলে সম্পাদক শাহবাগ এলাকায় ছদ্মবেশে যাতায়াত করেন। এতো কিছু কেন? লেখার জন্য তো! যে আমি এবং আমার মতো আরো কিছু লেখক-পাঠকের মতে এই লেখাগুলিই এই সময়ের লেখা, যেটা বড় কাগজের মাথারা মানতে পারছেন না, সেই লেখাগুলি প্রকাশ করে পাঠকের কাছে পৌছানো, লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে সেখানে চলতি সময়ের গেঁড়েবসা কর্পোরেট মানদন্ডকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো হয়। তো এই বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর কাজটাকে ভার্চুয়াল মাধ্যম অনেক অনেক বেশী সহজ আর শক্তিশালী করে তুলেছে। সাথে উপরি পাওনা মন্তব্যের সারি।
এই আর কি।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

হিমু লিখেছেন:
নিয়মিত লেখার সাথে ব্লগের লেখার মূল দ্বন্দ্ব প্রতিক্রিয়ার গতিতে। একটা লেখা লিখে তিষ্ঠানোর উপায় নেই ব্লগে, পাঠক এসে ঘন্টা বাজান দরজায়। হোক মধুসিক্ত প্রশংসাবাণী কি তিক্ত কদালোচনা, পাঠকের হাত খালি থাকে না। নিয়মিত লেখার পাটাতনে অভ্যস্ত লেখকদের সমস্যা এখানেই। এত দ্রুত সাড়া, আর কখনো কখনো এত বেশি সাড়ায় হিমসিম খান তাঁরা।

সুমন চৌধুরী লিখেছেন:

পাঠকের তীব্র মন্তব্য,সমালোচনা, উপহাসের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে এখানে প্রায়ই ছাপামাধ্যমের মোহরাঙ্কিত প্রথিতযশা লেখককে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

বিনয়ের সাথে বলছি, প্রিন্ট মিডিয়ার সাথে প্রায় ২০ বছর এর সম্পর্ক কে পিঁছে ফিলে অন্তর্জাল (মুক্তমনা) আর ব্লগ ( সচলায়তন ) এ এখন আমার স্বাচ্ছন্দ হিমু আর সুমনের বর্নিত কারনে। আরেকটা ব্যাপার ,আমার ভাল লাগার কারন "বন্ধুত্ব " ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আরেকটা জিনিষ হলো 'প্রবাহ'। একসময় মানুষ পাতায় লেখতো। তারপর কাগজ আবিষ্কার হয়ে এখন কাগজ কলম ছাড়া, এবং ব্যাপ্তি সারা দুনিয়া এমন কি চান্দে গিয়াও সেই লেখা অ্যাকসেস করা যায়।

সুমন চৌধুরী যেমনটা বললেন, জার্মানীতে মূলধারার অনেক পত্রিকায় পাঠকের সরাসরি অংশগ্রহনের সুযোগ আছে (যেখানে আমাদের দেশে এটা ভাবাটাও একটা বিশাল অন্যায়)। এই সুযোগটা ধীরে ধীরে প্রিন্টিং মিডিয়াকে যাদুঘরে পাঠিয়ে দেয় কিনা সেটাই আসলে দেখার বিষয়!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ছাপামাধ্যম জাদুঘরে যাবে এমন ভাবনা অবশ্য আমার এখনো আসে না। দুটো বিষয়। একটা হচ্ছে অন্তর্জাল ব্যবহারকারীদের সংখ্যা : যেখানে ব্যবহারকারীকে যন্ত্রগণক টেপার ন্যুনতম জ্ঞান রাখতে হয় আর সেইসাথে অন্তর্জালের যোগাযোগকেও নাগালের মধ্যে থাকতে হয়। আরেকটি হচ্ছে অন্তর্জালে প্রাপ্ত পুঁথিপত্রের পরিমাণ। দ্বিতীয় কারণটি লাইব্রেরীগুলিকে টিকিয়ে রেখেছে। দুটোই সময়ের সাথে অন্তত আংশিক সমাধানযোগ্য। তবে বিশ্বজোড়া অসম বন্টনব্যবস্থা ক্রমশই প্রযুক্তির মাঙ্গলিক সামাজীকরণ শ্লথতর করে দিচ্ছে। তাই অতবড় ভবিষ্যতবানী চট করে ঝাড়তে ভরসা পাই না।
তবুও আশা রাখি :

যে পৃথিবীর সমস্ত বানর একদিন মারা যাবে...
দেঁতো হাসি


ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কথাটা অফটপিক গেলগা মন খারাপ



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

দুর্দান্ত এর ছবি

বন্ধুগন, শুধু লেখার মধ্যেই এই পরিবর্তন তা তো নয়, সবখানেই এখন পাঠক আর লেখকের পরিচিতির ফারাক ঘোলা হয়ে আসছে। পাঠকেরা দাবী করছেন অন্য পাঠকের মনভাব জানতে, পাঠকদের একটা অংশ আবার পছন্দ করছেন মানুষের মনের সেইসব কথাকে, যা এখনো পেশাদার লেখকের মগজ ঘুরে আসেনি।

মৌলিক চিন্তা আর পাঠকের মধ্য যা কিছু, তার সবটাই 'মাধ্যম', আর আগামিতে এই মাধ্যমের আগা পাশ তলা, সবটাই প্রশ্নের মুখোমুখি।
হিমুর সাথে তাই গলা মেলাই। তেলের শিশিটা বোধহয় খালি হয়েই এল।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

(বিপ্লব)



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

এই লেখাটা একদিন অফলাইনে পড়ছিলাম।
আজ 'অসাধারণ' রেটিং দিয়ে গেলাম ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শুক্রিয়া...দেঁতো হাসি



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।