বয়স বাড়ছে। বুড়ো হচ্ছি। নানান কথাই কানে আসে। শ্রমিক শ্রেণী নাকি নাই। কথাটা একদিন কামলা দিতে গিয়া ব্রেকের সময় সহকর্মী য়ুর্গেনকে জিজ্ঞাসা করলাম। তার গলায় চা ঠেকলো। কাশিটাশি দিয়ে চোখ লাল করে বললো, তাইলে আমি কে?
প্রশ্নটা আমিও আমারে করি, তাইলে আমি কে?
শ্রমিক শ্রেণী যদি নাই থাকবে তাইলে কিসের খোঁজে সাহেবরা পোড়ার দেশে সিলাই মেশিন পাঠায়? বড় রাস্তার মোড়ে টুকরি নিয়া কারা বসে? রিক্সায় চালকের সীটে কে বসে? বাড়িঘর কারা বানায়? ক্ষেতে কে কামলা দেয়? ভুতে?
একশ বাইশ বছর আগে শিকাগোর কামলারা পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছিলো। সেই আটঘন্টার দাবী আজকের প্রান্তিক দেশের প্রান্তিক কামলাদের কাছে রসিকতার মতো। হয় নাই। সেই দাবী সব জায়গায় আদায় হয় নাই। শ্রম আইনের চতুর ধারা-উপধারার প্যাচে শুধু রক্ত না, হাড়গোড়ও কিছুদিন পরে গুড়া করে জমা দিয়ে আসতে হবে পরবর্তী পুঁজির জোগান দিতে।
শ্রম আছে। মজুরি আছে। শ্রমিক আছে। শোষণ আছে। প্রতিবাদও আছে।
আজ মহান মে দিবস। শ্রমিকের জয় হোক।
দুনিয়ার মজদুর এক হও!
হেমাঙ্গ বিশ্বাসের কণ্ঠে মে দিবসের গান
|
মন্তব্য
জয় মেহনতি, জয় সর্বহারা।
প্রতিবাদ মুনাফাযোগ্য ইনভেস্টমেন্ট না যে, সবাই তাতে যোগ দেবে।
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
শ্রমজীবি মানুষের কল্যাণ চাই। তবে....ঘুম ভেঙে সকালে রাস্তায় ও রাতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের হাঁটার মিছিল দেখে মনে হয় না 'মে দিবস' এর কোনো মর্ম পৌঁছে যাবে পুঁজিবাদীদের কানে!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
ঠিক আছে ।
মুক্তি চাই
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
মে দিবসে সরকার একটি রাষ্ট্রীয় শ্লোগান প্রচার করছে:
শ্রমিক-মালিক একপক্ষ
উৎপাদন বৃদ্ধি মূল লক্ষ্য।
জোক অব দা ডে!
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
এই শ্লোগানের উপর ভিত্তি করে হায়দার হোসেনের একটা গান শুরু হয়ে যাবে যেকোন সময়।
দুনিয়ার মজদুর এক হও!
শুনতেই কেমন হাস্যকর লাগতেছে এইসব স্লোগান। আমাদের পায়ের নিচে মাটি কই?
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
অনেক দিন পর শুনলাম গানটা ?!
এইটার মনে হয় আরেকটা রেকর্ড আছে হেমাঙ্গ বিশ্বাসেরই।
ঐ IPTI-এর মুভমেন্টের সময়।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
আমি ঐটাই খুঁজতেছিলাম। পাই নাই।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
একশ বাইশ বছর আগে শিকাগোর কামলারা পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছিলো।
মজার ব্যাপার হল, কম্যুনিস্ট গন্ধ থাকায় খোদ আমেরিকায় 'মে দিবস' পালন করা হয় না (এই যে এখন কামলা দেয়ার ফাঁকে ব্লগিং করছি )। বদলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এটার নাম দিছে 'লয়ালটি ডে' । তাও সরকারী ছুটি নাই বিধায় এটার নাম ও কাম কী কেউ ঠিকমত জানে না। 'লেবার ডে' নামে সেপ্টেম্বর মাসে অবশ্য একটা দিন ছুটি আছে, তার সাথে মে দিবসের ঘটনার কোন সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।
আয়রনি হইল, আমেরিকা 'মে দিবস' পালন না করলেও নিজ দেশের শ্রমিকের স্বার্থ ঠিকই রক্ষা করে। আর যে সব দেশে ঘটা কইরা 'মে দিবস' পালন করা হয়, তেমন অনেক দেশেই শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশী শোষিত হয় (বাংলাদেশ লিস্টে উপরের দিকেই থাকবে)। শ্রমিকের নাকের উপর এইটা একটা "মূলা ঝুলায়ে রাখার দিবস" আর কি।
=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"
- ইয়া হাবিবি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হে হে! যে আমেরিকায় মে দিবস লইয়া এত হাঙ্গামা হইছিল সেই আমেরিকায় সবাই উর্দ্ধশ্বাসে কি রকম কাজ করে যাইতেছে আজ এই মে দিবসে।
তানভীর ভাই সব কইয়া দিসে।
আজ একটা ক্লাস প্রেজেন্টেশন ছিল। গত সপ্তাহে যখন এই প্রেজেন্টেশনের দিন ঠিক করা হয় তখন আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম "ওই দিন না মে দিবস? ওই দিনে প্রেজেন্টেশন হবে।"
সহপাঠী আমেরিকান ছাত্র-ছাত্রীরা আমার দিকে এমনভাবে তাকালো যেন ১৮৮৬ সালের হে মার্কেটের ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছিল এবং তা আমার দোষেই ঘটেছিল।
সব দোষের বোঝা মাথায় নিয়ে আমাকে সেদিন বলতে হয়েছিল মে দিবসে আসলে কি হয়েছিল।
কি মাঝি? ডরাইলা?
কন কি??
!
শ্রমিকের নাকের উপর এইটা একটা "মূলা ঝুলায়ে রাখার দিবস" আর কি?
- এই কথাটা কয়্জনে অনুভব করতে পারে?
তারপরও কেউ কেউ প্রতিবাদরেই মুনাফা বানিয়া ভাত খায় মদ মাংস ডিম দিয়া।
নতুন মন্তব্য করুন