নব্বই এর শুরুতে তুমুল মুর্তি ভাঙাভাঙির পরে লেনিনের ঠাঁই পাকাপাকি হলো শুধু পাঠাগারে। বহু পাঠাগার থেকে তাঁকে কেজি দরেও বিদায় করা হলো। বেড়াল তাত্ত্বিকদের কল্যাণে মাও হারিয়েছেন আরো কিছু আগে। বিপ্লবের আইকন দুরে থাক আমরা যারা নব্বুই এর শুরুতে বড় হতে শুরু করেছি বিপ্লব জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করাও তাদের জন্য একরকম হারাম ছিল বহুদিন পর্যন্ত।
শুধু একটা ছবিই ছিল যেটা আপাত: নির্বোধ প্রজন্ম অন্তত অস্পষ্ট ইতিহাস জ্ঞানের কারণেই হোক আর খোদাই করা মুখের দাপটেই হোক তখনো দেয়ালে টিশার্টে ধারণ করে রেখেছিল। চে গেভারার সেই খোদাই করা ছবিটা এখনো আছে। টিশার্টে, বীয়ারের মগে, চুরুটের ব্র্যান্ডে, কিছুদিন আগে শুনলাম কী একটা ক্যারিবিয়ান রামের বোতলেও নাকি কমান্দাত গেভারাকে দেখা গেছে।
লোকটার মুখে, মুখভঙ্গিতে শরিরের ভাষায় কোন এক আশ্চর্য শক্তি কাজ করে যাতে যে কোন ধরণের প্রতিক্রিয়াশীল তর্ক এক মুহুর্তে থেমে যেতে পারে। আমি লড়াই করেছি, লড়াই করছি, লড়তে থাকবো...এর বাইরে অন্য জীবনের আর অস্তিত্ব নেই। বিপ্লবের নানারকম বিজ্ঞাপন এড়িয়ে শুধু এই মন্ত্র আউড়ে নিলেও অন্তত আয়নায় নিজের চোখের দিকে চেয়ে বলা যায় শুধু ব্যাখ্যায় না কাজেও পৃথিবীটাকে বদলে দেওয়া যায়
মন্তব্য
আর্জেন্টিনার এক নিভৃত গ্রামে এক নতুন সন্তুর মন্দির আছে। সেই গ্রামের পাশে অনেক বছর আগে তাদের যীশুকে কাঁটার মুকুট পরিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। গ্রামের সমস্ত মানুষ সপ্তাহে একদিন সেখানে সমবেত হয়ে মুক্তির প্রার্থনা করে। মুক্তির দেবতাকে তারা শ্রদ্ধার্ঘ্য দেয়। সেই সন্তুর নাম জানা যায় চে গেভারা।
সেই মুক্তির সন্তুপুরুষকে ভালবাসা জানাই।
চে'র মৃত্যু আমাদের অপরাধী না করে সঙ্কল্পবদ্ধ করে তুলুক।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
'চাঁদ অস্তে গেছে,
চাঁদের বদলে আজ জেগেছেন চে'...
-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
লাল সালাম.....
....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বঙ্কিমের আনন্দমঠে গুরু শিষ্যকে বলে, দেশমার্তৃকার জন্য তুমি কী দিতে পার। শিষ্য বলে, প্রাণ দিতে পারি। গুরু আবার বলে, প্রাণ তো অনেকেই দেয়, আর কী দিতে পার? শিষ্য অবশেষে বলে, 'ভক্তি'।
ভক্তি শব্দের মতাদর্শিক অনুরণণ মাথায় রেখেই বলছি, চে নিজের জীবন এবং জীবনের প্রতি সব ভালবাসা তথা ভক্তিকে এক করে তাঁর অভীষ্টের জন্য উতসর্গ করেছেন। তাই তাঁর সম্পর্কে মনে হলে আগে তাঁর প্রাণদান এবং প্রাণদানের বিশিষ্ট ধরনকেই মনে আসে।
অনেকটা যীশু'র মতো। যীশুর শিক্ষার থেকে আগে তার জীবন ও মৃত্যুর কথাই মনে আসে। এখানেই চে'র শক্তি। তিনি জয় চান নাই, অভীষ্ঠে পৌঁছতে চেয়েছেন। এখানেই তিনি অনন্য।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আমার মনে হয়েছে একেকটা সময়ে কেমন যেন একটা ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি হয়, অন্তত: দৃশ্যত। দানব এই সময়গুলিতে আত্মসমর্পণের সুবিধাবাদকে যুক্তিসঙ্গত করে তোলার মওকা পায়। চে'র মুখটা মুহুর্তের জন্য হলেও সেই সুবিধাবাদের মুখে থুতু দিতে পারে। চে'র এই জনপ্রিয়তা আসলে বিপ্লবের গণভিত্তিই প্রমাণ করে।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
ঠিকাছে। চে'র সর্বসাধারণ জনপ্রিয়তা ও আইকন হয়ে ওঠা তার শক্তিরই প্রমাণ এবং তার জীবনের অর্থকে ভালবাসে ফেলার নজির। সেই অর্থে চে বিপ্লব-বিদ্রোহ-প্রতিরোধের প্রতি তারুণ্যের উতসাহের প্রতীক।
আবার তন্ত্র যখন ধর্ম হয়ে ওঠে, আইকন,মূর্তি, ভক্তির মাধ্যমে তখন তা চে'কে সৃষ্টি করে। জাতীয়তাবাদের মতো, সমাজতন্ত্রও পবিত্র প্রতীক ও ভালবাসার রিচুয়াল সৃষ্টি করে। সাবেকি ধর্মের থেকে এই রিলিজিওসিটি আলাদা হলেও তা কিন্তু ধর্মভাবসম্পন্ন। এই স্তরে উঠতে না পারলে কোনো মতবাদ, মতপথ সার্বজনীন আগ্রহ পায় না। সেকারণে, ধর্ম হলেও এই অর্থে আমি ধার্মিক হতে রাজি।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
সার্বজনীনতার বিষয়ে খানিক মতভেদ আছে। ধর্ম সেপথে যেতে পারে সহজে কারণ তার ক্রিটিক্যাল হবার পথ রুদ্ধ। সেখানে প্রাতিষ্ঠাণিকতা রাজত্ব করে মূখ্যত। জনগণের অনুশীলনে ধর্মের যে ক্রিটিক্যাল চেহারা ফুটে ওঠে তার সাথে মানুষের দীর্ঘ সংগ্রামের অভিজ্ঞতা জড়িত। সেখানে জনগণের মধ্যকার রিচুয়াল, প্রাতিষ্ঠাণিক চাতুরিতে সহস্রাধিকবার প্রতাড়িত।
চে যে রাজনৈতিক মতানুসারি ছিলেন তার বিকাশ সার্বজনীনতাকে অস্বীকার করে বরঞ্চ সার্বজনীন পরিবর্তনের নীতিকে আশ্রয় করে, যেখানে বস্তুজগতের অবিরাম নির্মম সমালোচনা প্রত্যেক পরবর্তী পরিবর্তনের দিকে যেতে থাকাকে ইতিহাসের গতিমুখ বলে দেখায়। সেখানে ফিগারেটিভ অর্থে সার্বজনীনতা বলতে মানব সমাজে অবিরাম শোষণ মুক্তির সংগ্রামের কথা বলা যেতে পারে। কিন্তু এই শব্দগুলির প্রচলিত অর্থ আদতে সংগ্রাম আর পরিবর্তন দুইয়ের পায়েই কুড়াল মারতে অভ্যস্ত।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
ঠিক এই অর্থেই অর্থাত চে এখন সকল পক্ষের কাছেই তারুণ্য-বিদ্রোহ-বিপ্লবের প্রতীক। বুর্জোয়ারা বিপ্লবকে ধুয়ে মদের বোতলে লাগিয়ে দিতে পারে আর বিপ্লবীরা বিপ্লবের প্রতীককে সংগ্রামের সঙ্গে, মতাদর্শের সঙ্গে টাইট করে বেঁধে রাখতে পারে, যাতে আমানত খিয়ানত না হয়ে যায়।
সংস্কৃতি বা চেতনা সবসময়ই একটা লড়াইয়ের ক্ষেত্র। সেখানে ধারণা, প্রতীক, প্রথাগুলো বিভিন্ন শ্রেণীর হয়ে বিভিন্ন স্বার্থের হয়ে লড়াই করে। চাক্ষুষ বাস্তবের লড়াই থেমে গেলেও সংস্কৃতির মধ্যে সেই লড়াই পরের উত্থান পর্যন্ত একা একাই লড়ে যেতে পারে। চে আজ মুক্তির হয়ে প্রতীকের মাধ্যমে সেই লড়াই-ই করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাকে তো বিজ্ঞাপনের কাজেও লাগানো যাচ্ছে। গোষ্ঠীগত ধারণা বা শ্রেণীগত প্রতীক যখন সমাজের কমন স্পেসে এসে জায়গা নেয় সেটা কিন্তু ঐ ধারণা বা প্রতীকের একটা বিজয় বটে। এই অর্থেই আমি বলেছি, চে'র প্রতি আগ্রহটা 'সার্বজনীন'।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ঠিকাছে।
অফ টপিক,
The history of all hitherto existing society is the history of class struggles.
এইটা কিন্তু ফিগারেটিভ না।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
.
তুমি বলেছিলে, সূর্যোদয় হবে। চলো যাই, সেই অচিহ্নিত পথে, তোমার ভালবাসার সবুজ কুমিরকে মুক্ত করতে। অতঃপর যুদ্ধ শেষে দেখবে, আমরাও রয়েছি তোমার সাথে--যেখানে হায়নাকে বিদ্ধ করে কিউবার সুতীক্ষ্ন বর্শা।।
-ফিদেলের প্রতি গান, চে গুয়েভারা-
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
তা ঠিক।
অফ টপিক,
2. The question whether objective truth can be attributed to human thinking is not a question of theory but is a practical question. Man must prove the truth, i.e., the reality and power, the this-sidedness [Diesseitigkeit] of his thinking, in practice. The dispute over the reality or non-reality of thinking which is isolated from practice is a purely scholastic question.
(Theses On Feuerbach)
এটা কিন্তু নরম্যাটিভ না স্যার।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
@ফারুক
তাতো বটেই। তাছাড়া.....
10.The standpoint of the old materialism is civil society; the standpoint of the new is human society, or social humanity.
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
এই হইল আসল ঘটনা মাগর এই ঘটনার কোনো প্রমাণ নাই। কারণ,
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে, হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
তাইলে আর কি! ফুটোস্কোপ দিয়ে ইতিহাসের হুঁকো ফুকি...
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
হ...
যতক্ষণ না রাজনৈতিক মুক্তি অর্জনের পর মানবিক মুক্তির ধাপে প্রমোশন পাচ্ছি।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
মিলান কুন্ডেরা বোধহয় কোথায় জানি এটাকে ঘুরিয়ে বলেছিলেন -
এই ইতিহাস স্মৃতির বিপরীতে বিস্মৃতির ইতিহাস...
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
ঠিক! চে আর কাল্টের গলীতে নেই, সে এখন মূলধারার রাজপথে।
অস্পষ্ট ইতিহাস জ্ঞানের কারণেই হোক আর খোদাই করা মুখের দাপটেই হোক তখনো দেয়ালে টিশার্টে ধারণ করে রেখেছিল। লোকটার মুখে, মুখভঙ্গিতে শরিরের ভাষায় কোন এক আশ্চর্য শক্তি কাজ করে যাতে যে কোন ধরণের প্রতিক্রিয়াশীল তর্ক এক মুহুর্তে থেমে যেতে পারে।
কথা সত্য। তার ব্যক্তিত্ব, তার সত্ত্বা, তার সংগ্রাম, তার কথাগুলো যেন তার মুখেই প্রতিবিম্বিত হচ্ছে।
জিজ্ঞাসু
'এখন আমি আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি আসল আমি-র মাঝখানে, সেই আমির কাছে; এককালে যেরকম মানুষ আমি ছিলাম...'
-চে গেভারা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লাল সালাম
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
একদিন সবাইকে স্বীকার করতে হবে। স্বীকৃতি দিতে হবে তাকে। জেগে উঠুক আবার পৃথিবী- বিপ্লবের মহামন্ত্রে।
"কোনো মুক্তিই আসে না- পেছনে যদি না থাকে কোনো বিপ্লবের ইতিহাস।"
মূল লেখার চাইতে বাদানুবাদটাই আরো বেশি হৃষ্টপুষ্ট। অসংখ্য ধন্যবাদ।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
তোমাকে সালাম
আমরা ভালবাসি বলেই তুমি অমর; যদিও এতে তোমার কিইবা আসে যায়!
নতুন মন্তব্য করুন