মৌলবাদ, পাকিস্তান, ধূসরক্ষেত্র ইত্যাদি

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৪/০৫/২০০৯ - ১২:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাকিস্তানের ঘটনাবলী নিয়ে আমি সাধারাণত চুপ থাকি বা আগ্রহ দেখাইনা। এর পিছনে হয়তো জাতীয়তাবাদী সঙ্কীর্ণতা আছে এবং ঐতিহাসিক কারণে আমি তাতে একটুও অনুতপ্ত না। পাকিস্তানের কোথাও কোন ক্ষতি হলে ভালোই লাগে। মনে আছে ১৯৯৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ৪২ রানে অল আউট হবার পরে আমাদের বাসায় মোরগ পোলাও রান্না হয়েছিল। এখনো পাকিস্তানের কোন ক্ষতি হলে মনমেজাজ ভালো হয়ে যায়। রুজি রোজগার বাড়লে হয়তো দানখয়রাতও করবো। এসবের জন্য ১৯৭১ যতটা না দায়ী তার থেকে অনেক বেশী দায় আশির দশকে মানসিক বৃদ্ধির বয়সে পারিপার্শ্বে রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা পাকিস্তানপন্থীদের উল্লাস। আশির দশকের শেষে পূর্ব ইউরোপে সমাজতান্ত্রিক শিবিরে ধ্বস নামার উল্লাসে কিছু লোকের জিভ নাভি পর্যন্ত লম্বা হয়ে বের হতে শুরু করে পাকিস্তান প্রেমে, যদিও পকেটের ফের তাঁদের সকলকেই বাধ্যতামূলকভাবে ভারতীয় পুঁজির দাসত্ব করিয়েছে। আমার শৈশবের কৈশরের তিক্ততম স্মৃতিগুলি এই অসুন্দর মনের পাকিস্তান প্রেমিকদের ঘিরে। তারপর বয়স আরো বাড়ার মুখে পাকিস্তানের বিপরীতে ভারত সমর্থক হবার সরল হিসেবও পাল্টে যায়। রাজনৈতিক ইতিহাসকে গ্যাস বেলুন সংস্কৃতির নাকি কান্নার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে ভারত রাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যবাদী বলেই জানতে বুঝতে শিখেছি।

সাম্রাজ্যবাদের নিয়মিত ঘুঁটি হিসেবে ঘৃণা করতে শিখেছি ধর্মীয় মৌলবাদকে। রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রকে রাজনীতি বিচারের একমাত্র না হলেও প্রধান মানদন্ড হিসেবে ধরে নিয়ে বুশ আর লাদেনের মাঝে ধূসর এলাকা খুঁজতে আতশ কাঁচ নিয়ে বসে না গিয়ে বুশ-লাদেনকে এক পক্ষ বলেই জেনেছি। তাই সাম্প্রদায়িক ভারত আমাকে কখনোই পাকিস্তান প্রেমিক করেনি। উল্টে সাম্প্রদায়িক ভারতে বুঝতে গিয়ে জেনেছি ইসলামী মৌলবাদীদের স্পন্সরদের তালিকায় হিন্দু মৌলবাদের স্পন্সরাও রয়েছেন। ভারতে অঞ্চলভেদে পুঁজিবাদী অবকাঠামোর কিছুটা বিকাশ ঘটায় হিন্দু মৌলবাদীরা রাজনৈতিকভাবে ইসলামী মৌলবাদীদের তুলনায় সংগঠিত এবং অবশ্যই বিপজ্জনক ফ্যাসীবাদী শক্তি। ইসলামী মৌলবাদীদের সেদিক থেকে দেখতে গেলে না গাঁটের পয়সায় না নিজের বুদ্ধিতে কোনদিকেই নিজের মতো করে কিছু বলার বা করার নেই। বহুদিন আগে পৃথিবীতে কমিউনিস্ট বলে এক ধরণের জুজুর বাস ছিল। তাঁরা আঙ্কল স্যামকে অনেক ব্যাথা দিয়েছেন। সেই হোগার ব্যাথায় কাতর রুজভেল্ট, ট্রুম্যান, আইসেনহাওয়ার, কেনেডি, জনসন, নিক্সন, তাঁদের ভাড়া করা থিঙ্কট্যাঙ্ক কিসিঞ্জার, ম্যাকনামারা সবাই মিলে জুজুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ফ্যাসীবাদকেই মোক্ষমতম অস্ত্র হিসাবে বেছে নিলেন। নাৎসীদের মতো করে কমিউনিস্ট পার্টির কাঠামোর সাথে মিলিয়ে তৈরী হয়েছে একটার পর একটা জেহাদী সংগঠন। পুঁজি ধর্মান্ধতা, নিয়ন্ত্রণে ধর্মব্যবসায়ীরা। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত ধর্মীয় মৌলবাদ বলতে এর বাইরে আমরা আর কাউকে জানি না বুঝি না। ভাড়াটে গুন্ডা কখনো বখরার ভেজালে মহাজনের কল্লা নিতে চায় অথবা "পাপ" ঝেড়ে ফেলতে কিংবা মহাজন ১.২ বা মহাজন ১.৩কে ঘিরিঙ্গীতে ফেলতে পুরনো গুন্ডাদের নানান ওছিলায় খতম করেন বা করতে চান। এর কোনটাতেই "ভাড়াটে গুন্ডা" স্ট্যাটাস চ্যুত হন না। মহাজনের প্রতি গুন্ডা তাঁর ক্ষোভকে সত্যিকারের পরিবর্তনের দিকে নিতে পারেন শুধুমাত্র মহাজনের আওতা বহির্ভুত নেটওয়ার্কে সংগঠিত হয়ে এমন কিছু করার মাধ্যমে যাতে মহাজনের বাস্তব ক্ষতি হয়। তাতে প্রয়োজন জনসম্পৃক্তি, সব চাইতে বড় কথা শ্রেণী সংগ্রামের বাস্তব ইস্যুগুলিতে প্রত্যক্ষ সক্রিয় অবস্থান। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। অন্তত আমার উল্লেখিত এলাকায় হচ্ছে না। একটা শ্রমিক আন্দোলনের কথাও মনে পড়ছে না যেটা ধর্মীয় মৌলবাদীদের নেতৃত্বে ঘটেছে। কৃষক আন্দোলনে ধর্মীয় প্রভাবের ইতিহাসও রুশ বিপ্লবের আগের, মোটামুটি শদেড়েক বছরের পুরনো। সুতরাং শোষিত মানুষের বস্তুগত স্বার্থের পক্ষে জানা ইতিহাসে আমার উল্লেখিত ভূগোলে বিগত আশি-নব্বুই বছর ধরে সক্রিয় ধর্মীয় মৌলবাদের কোন রকমের কোন বাস্তব কার্যক্রমের ইতিহাস নেই। থাকলে ধর্মীয় মৌলবাদকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দেখা যেতো। খ্রীষ্টান মহাজনের টাকায় আর আঞ্চলিক শাসক শ্রেণীর তত্ত্বাবধানে খেতে পড়তে হুকুম তামিল করতে দেখা যেতো না।

এই সব কথা সকলেই জানেন। যারা এই মুহুর্তে পাকিস্তানের ঘটনাবলী নিয়ে নানাভাবে উদ্বিগ্ন তাঁদের সকলেই আমার থেকে এই বিষয়গুলি জানেন বোঝেন। তাঁরা অবশ্যই এও জানেন যে তালিবান খতমে পাকিস্থানী সেনাবাহিনির ব্যবহার আসলে ক-গ্রুপের গুন্ডা দিয়ে খ-গ্রুপের গুন্ডা খতম। পাকিস্থানের জমিটা সাহেবদের জন্য হাতে রাখা জরুরি। যুদ্ধ পরিস্থিতি সেই কাজে সর্বোত্তম সহায়ক। আবার ওদিকে রিসেশন ঠেকাতে একটা কোথাও ঢুঁশঢাশ লাগানো ফরজ। পাকিস্তানে আক্রমন করার খায়েশ ওবামা নির্বাচনের আগেই ব্যক্ত করেছিলেন। ইরানে আক্রমন করা বিষয়ে নানান কথা বললেও এই মুহুর্তে ইরান আক্রমণের তেল সফেদ মহাজনের নাই। পুরা আরব বিশ্বেই এই মুহুর্তে আক্রমণ করা বা কোন রকম ঢুঁশঢাশ করতে বর্তমান সাদাবাড়ি প্রশাসনের টেকনিক্যাল অসুবিধা আছে কারণ ভোটের সময় ঐ বিষয়ে জনগণকে নানা রকম ভুজুংভাজুং দেওয়া হয়েছে। সুতরাং হাতের কাছে মোয়ার মতো আছে পাকিস্থান। সেখানে সিন্ধু বা বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামীদের বাইরে যতরকম ক্যাচাল আছে তার পক্ষবিপক্ষের সবাই নিজেদের লোক। সুতরাং সামরিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে এবং পেন্টাগণের এম্বেড করা তথাকথিত সভ্যতা সমূহের দ্বন্দ্ব নামক ডিসকোর্স নতুন করে উস্কে তুলে ইউরোপকে রাজনৈতিকভাবে হাতে রাখা যাতে খোলাখুলি ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকার বানিজ্য যুদ্ধ লোকে সাদা চোখে না দেখে, তার প্রক্রিয়ায় খুবই কার্যকর এবং জরুরি পদক্ষেপ হচ্ছে পাকিস্তানে তালেবান ইস্যুতে সামরিক অভিযান। কথাটা একভাবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সত্য। কিন্তু এলাকা বিশেষে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে। কারণ বাংলাদেশে তালেবানরা সংখ্যায় পাকিস্তানের তুলনায় নগন্য। আরো নগন্য তাঁদের প্রতি শ্রমজীবি মানুষের সমর্থন বা সহানুভূতি। তারপরেও সামরিক লীগেসীর কৃপায় কিছুটা হোমোজিনিয়াস রাজনৈতিক বাস্তবতা এখানে সফেদ মহাজন সৃষ্টি করে রেখেছেন, যা থেকে প্রয়োজন হবা মাত্র তিনি পকেট থেকে এক খাবলা বাংলা ভাই বা শায়খ রহমান বা আরো যেসব অ্যাসহোলরা আছে তাঁদের বের করতে পারেন। তারপর এদিক ওদিক কিছু বোমা ফাটিয়ে সুবিধা মতো তাকিয়া পেতে বসতে পারেন।

এখন সাম্প্রতিককালে বাংলাব্লগাবর্তের উত্তরাধুনিক চাপাবাজ এবং প্রাক্তন হতাশ বামপন্থীদের কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ১৯৭১ সালে গণহত্যায় সক্রিয় সমর্থন এবং অংশগ্রহনকারীদের বিচার ও শাস্তির দাবীর মতো দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পলিটিতে সক্রিয় একটি বিষয়, যার প্রকৃত কার্যকারীতা সম্ভব শুধুমাত্র ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনীতি, যা ১৯৭৫ সালের সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের এবং পরবর্তী সামরিক শাসকদের বন্দুকের জোরে আইনসিদ্ধ হয়েছিল তার আইনি অবলুপ্তি, সেই প্রসঙ্গটির উল্লেখ এবং বিচার অনুষ্ঠানের বাস্তব উদ্যোগে যেহেতু ক্ষমতাসীন সরকারের এবং হয়তো আঙ্কেল স্যামেরও খানিকটা রাজনৈতিক উপকার হয় সেই যুক্তিতে মৌলবাদের প্রতি সহানুভুতিশীল হবার কোন জায়গা তৈরী হয় কি? উত্তরাধুনিকদের কিছু বলার নেই কারণ তাঁরা সিদ্ধান্ত বা প্রয়োগের মতো দুরূহ কাজের মধ্যে নাই। তাঁরা তাঁদের কল্পনার প্রপঞ্চগুচ্ছের বালবাগিচায় ধুসর আইল ধরে ডুব সাঁতার কাটেন। এই বিদ্যা আমার আওতা বর্হিভুত সুতরাং তাঁদেরকে বীর্য্যমাখা মুড়ি খেতে বলা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই।

কিন্তু হতাশ বামপন্থীদের অনেকেই যাদের সকলেই ঠিক পয়সা খেয়ে নয় নিজেদের বা পূর্ববর্তী প্রজন্মের সাংগঠনিক ব্যর্থতা থেকে বাস্তবিক হতাশ হয়েছেন, ধর্মীয় মৌলবাদের প্রতি তাঁদের কারো কারো (সকলের না। এখনো ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে যে কয়জন মানুষ স্পষ্ট করে কথা বলেন তাঁরা সকলেই কোন না কোন ভাবে মার্কসীয় বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনের সঙ্গে জড়িত) সহানুভুতি দেখে আমার ব্রহ্মতালু জ্বলে যাচ্ছে কিছুদিন যাবৎ। পুরনো সংগঠন হাতছাড়া হয়েছে নিজেদের দোষে। সেই সুযোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই জন্য আওয়ামী লীগের উপর গাল ফুলিয়ে বসে থাকার তো আর কোন মানে নেই। আওয়ামী লীগ যেমন পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে কার্যকর হোমওয়ার্ক করে উঠে এসেছিল ষাটের দশকে, সেই রকম সুযোগ নেবার মতো অনেকগুলি পরিস্থিতি কিন্তু গত ৩৮ বছরে আপনাদের চোখের সামনে দিয়ে সুড়ুৎ করে বেরিয়ে গিয়েছে। সেগুলি ধরতে না পারার দায়ও কিন্তু এককভাবেই আপনাদের। এখন কথা হচ্ছে লেনিনবাদী রাজনীতিতে অর্থাৎ মার্কসবাদের মেঠো প্রয়োগে "কী করিতে হইবে?" প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। সুতরাং প্রতিটা মুহুর্তেরই নিজস্ব কর্তব্য স্থির করে নেওয়া এবং সতর্ক বস্তুবাদী ডায়নামিজম সক্রিয় রাখা যে লোক নিজেকে পার্টিজান বামপন্থী বলে দাবী করেন তাঁর জন্য ফরজ। খবরের কাগজে, ফেইসবুকে, ইয়াহুগ্রুপে, গুগলগ্রুপে নিজেদের অতীত নিয়ে হতাশ হয়ে মৌলবাদীদের প্রতি প্যাসিভ সহানুভুতি দেখিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অর্থই কিন্তু সাম্রাজ্যবাদের বাস্তব দালালী।

সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামুন। যেমন নেমেছিলেন ফুলবাড়িতে। আমি বর্তমানে মাঠে নেই। কিন্তু মাঠে কারা থাকে কীভাবে থাকে জানি। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অনেক বড় প্রতিরোধ হয়েছে ফুলবাড়িতে। সেই এশিয়া এনার্জি আবারো নানান ফিকিরে ফিরে আসতে চাইছে। এই বিষয়গুলি নিয়ে সামনে আসুন। শ্রমিক আন্দোলনগুলিকে লুম্পেনাইজেশান থেকে রক্ষা করে সাংগঠনিক রাজনীতির জায়গায় আনবার পুরনো প্রচেষ্টা নতুন উদ্যমে চালিয়ে যান। কোন সমস্যা নাই। কারণ বিষয়গুলি বাস্তব। এবং শুধুমাত্র এই বিষয়গুলিই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাস্তব ক্ষতি করতে পারে। শ্রমিক শ্রেণী আছে এবং তারা ক্রমবর্ধমান। কিছুদিন পর পর তাঁদেরকে জেগে উঠতেও দেখা যায়। আর সেখানে হয় কোন রাজনৈতিক ট্যাগিং থাকেনা বা থাকলে শুধুমাত্র বামপন্থীরা থাকেন। লড়তে চাইলে লড়বার সত্যিকার ইচ্ছা থাকলে দেখবেন মাঠ প্রস্তুতই আছে। পশ্চিমের বিকিনি পড়া নারী কর্পোরেট পণ্য সুতরাং গলা পর্যন্ত পুঁতে পাথর ছুঁড়ে মারা তার থেকে কতটা খারাপ এইসব ধূসর গুমুত যত ছড়াবেন ততই এগুলি আরো বেশী করে আপনার প্লেটেডেগচীতে মাখামাখি হবে।

একসাথে অনেক কথা বলতে গিয়ে সব আবোলতাবোল হয়ে গেলো। কথা শুরু করেছিলাম পাকিস্তান নিয়ে। পাকিস্তান ১৯৪৭ সাল থেকেই কমিউনিস্ট খতমের পুণ্যকাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করতে নিজেদের শরিরে ধর্মীয় মৌলবাদের মতো ক্যান্সার সেল তৈরী করেছে বাড়তে দিয়েছে। এখন রোগযন্ত্রণা ভোগ করাই তাঁদের কপাল। অন্যকোন দেশ হলে হয়তো খানিক সহানুভুতি জানাতাম, কিন্তু পাকিস্তান বলে সেরকম কোন কিছু মনে আসছে না। পাকিস্তানে আজকে যা হচ্ছে সেটা ওদেরই কর্মফল এবং খেলা সবে শুরু।

উত্তরাধুনিক ধর্মাচরনের ঠ্যালা বুঝেন এইবার। মিস পাকিস্তানরেও নিনজা বানাইয়া ছাড়বো।

ছবি : গুগল সার্চ থিকা


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

মৌলবাদ, সাম্রাজ্যবাদ আর সাম্প্রদায়িকতা মানুষের মধ্যে সাধারণ প্রবৃত্তি থেকেই আসে। এগুলো আটকাতে শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া গতি নেই। অন্যভাবে বললে শিক্ষার মাধ্যমে ছোটো থেকে "ব্রেনওয়াশ" না করলে আমাদের যা সমাজ তাতে ভবিষ্যতেও এই তিনটি "গুণ" নিয়েই সবাই বড় হবে। আজকে পাকিস্তানে যা হচ্ছে তা কাল বাংলাদেশ বা ভারতে হতেই পারে - আঙ্কেল স্যামের মর্জি বদলালে। দোষটা স্যামের নয়, দোষটা আমাদের কুশিক্ষিত, শতবিভক্ত আর মেরুদণ্ডহীন সমাজের। পাকিস্তান একটু বাড়াবাড়ি করেছে তাই ওদের ক্ষেত্রে "শুভস্য শীঘ্রম" হয়েছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সমস্যা হচ্ছে কে ব্যবহার করে এবং কী ব্যবহৃত হয়। ব্যবহার করেন আঙ্কল স্যাম। তিনি কি করে শোধরাবেন সেটা অতি দুরূহ প্রশ্ন। ব্যবহৃত হই আমরা। এখন যে সমস্ত গুণাবলী আমাদীগকে ব্যবহৃত হইতে বাধ্য করে সেগুলি শোধরানোর রাস্তাও স্যাম বন্ধ করে রেখেছেন। একটা গণঅভ্যুত্থান হয় বা একটা মুক্তিযুদ্ধ হয় তাতে একেকবার একেকটা সুযোগ আসে শোধরানোর। কিন্তু উদ্যোগ নিতে গেলেই নতুন করে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। একেকটা আক্রমণ একেক ধাক্কায় বহুবছর করে পিছিয়ে দেয়। এই তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উপমহাদেশের গত ষাট বছরের ইতিহাস। ভারত অভ্যন্তরীন অবকাঠামোর কারণে নিজেকে কিছুটা শোধরাতে পেরেছে, হয়তো; আমরা কিছুই পারিনি। রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো আর তার পরিচালক শাসক শ্রেণী দুটি জায়গাই গণবিরোধীরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। শিক্ষাঅবকাঠামোর যে ধরনের বিকাশ গণবিরোধীদের উপর আঙ্গুল তুলতে সহায়তা করবে শাসক শ্রেণী তা কখনো করেছে এমন ইতিহাস জানা নেই। বা জানতে ভরসা হয় না। যেসব দেশে গণসচেতনতা বিকশিত হয়েছে তার প্রতিটির পেছনেই বড় বড় গণজাগরণের ইতিহাস জড়িত। অর্থাৎ গণমুখী পলিসিগুলি সেসব দেশে শাসক শ্রেণী মানবপ্রেমে বেদিল হয়ে গ্রহণ করেনি, জনগণ গলায় পাড়া দিয়ে করতে বাধ্য করেছে। আমাদেরও যতটুকু ভরসা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই প্রতিবাদটুকুতেই। তাতে কাজ হবে কী হবে না সেটা স্বতন্ত্র প্রশ্ন। তবে প্রতিবাদ ছাড়া যে কোন কাজই হবে না সেটা নিশ্চিত। আমাদের কাছাকাছি বা হোমোজিনিয়াস আর্থ-রাজনৈতিক অবকাঠামোর অনেক দেশই ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে, পারছে। এবং এর কোনটাই সেনাশাসন, ফ্যাসীবাদ বা বাবল ইকোনমির চালিয়াতির মাধ্যমে না। সব চাইতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই করে। আমাদের শিক্ষা অবকাঠামোর আমূল পরিবর্তন আবশ্যক তো বটেই। আর সেটা যে সমাজে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে সেটাও ঘটনা। কিন্তু বর্তমান শাসক শ্রেণী এই পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিয়ে দোজাহানের সওয়াব হাসিল করতে আগ্রহী নয়।



অজ্ঞাতবাস

সবজান্তা এর ছবি

কিন্তু উত্তরাধুনিকগো ক্যামনে ক্লাসিফাই করবেন ? আমার তো মনে হয় এগো একটা অংশ বামের থিকাই আইসে...

আরো প্রশ্ন আছে, আস্তে আস্তে কইতেয়াছি...


অলমিতি বিস্তারেণ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কিন্তু উত্তরাধুনিকগো ক্যামনে ক্লাসিফাই করবেন ? আমার তো মনে হয় এগো একটা অংশ বামের থিকাই আইসে...

বামের থিকা আসে না। বামপন্থীরা পল্টি দেওয়ার জন্য এই বটিকা সেবন করেন।



অজ্ঞাতবাস

এনকিদু এর ছবি

বামের থিকা আসে না। বামপন্থীরা পল্টি দেওয়ার জন্য এই বটিকা সেবন করেন।

তার মানে কি হল, বামপন্থী যে ছিল, সে এই বটিকা খেয়ে পল্টি মেরেছে ? তাহলে তো বাম থেকেই আসা হল না ? মনে হচ্ছে ঠিকমত বুঝতে পারিনি ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বাম থিকা আসে এই কথা বলতে পারি যখন উত্তরাধুনিকতাকে আধুনিকতার তথাকথিত পরবর্তী ধাপ হিসাবে আমি মেনে নিচ্ছি। মেনে তো নিচ্ছি না। উত্তরাধুনিকতার সাথে যতটুকু বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই তার প্রায় পুরোটাই করেছেন এবং করছেন বামপন্থীরা। কারণ এই চিন্তাধারাকে পশ্চিমে দুধকলা দিয়ে পোষা হয়েছে মার্কসবাদের বিরুদ্ধে এমন একটা দার্শনিক অবস্থান তৈরী করতে যেখানে প্রায়ই বিভিন্ন মার্কসীয় টেক্সট ব্যবহার করা হয়। আমরা প্রান্তিক দেশের মানুষরা উত্তরাধুনিক কচকচি শুরু করেছি অনেক পরে। কারণ বাংলাদেশের মতো দেশে বিপ্লব ঠেকাতে সেনাবাহিনি, পুলিশ আছে, শাসক শ্রেণী আছে, ধর্মীয় এবং উগ্রজাতীয়তাবাদী ফ্যাসীস্টরা আছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলিতে সরাসরি শারিরিক আক্রমন অনেক সহজ এবং কার্যকর পদ্ধতি বলে শাসক শ্রেণী মনে করেছেন সবসময়। পশ্চিম ইউরোপে ঠান্ডা লড়াই যূগে স্থিতিশীল পুঁজিবাদের মডেল তৈরীতে চিন্তাজগতে সবদিক থেকে সুবিধাজনক চিন্তাপদ্ধতি এমবেড করার প্রয়োজন ছিল। উত্তরাধুনিকতা সেই প্রয়োজন মিটিয়েছে। এবং একই সময়ে ধোলাইও হয়েছে। বাংলাদেশে এই লাইন নব্বুই এর পরে বেশী আলোচিত হয়েছে। বিশেষ করে প্রাক্তন সোভিয়েতপন্থীদের মধ্যে। ষাট-সত্তর এমনকি আশির দশক পর্যন্ত যেখানে ডিগবাজী মারার সময় প্রাক্তন বামপন্থীরা মুখ ফুটে সত্যকথাটা বলতেন যে আর শ্রেণী সংগ্রামে পোষাচ্ছে না এবার কিছু মালকড়ি কামাই, সেখানে নব্বুই এর পরে উত্তরাধুনিকতা একটা তত্ত্বীয় ঢাল হিসাবে চলে এলো। ডিগবাজী দিতে কনফেশানের আর কোন দরকার থাকলো না। প্রাক্তন রুশ বা চীন পন্থীরা এখন পার্টি ছাড়ার আগমুহুর্তে নানারকম ডিসকোর্সের জাগলিং করে একগাল হেসে ফেলেন।

সবজান্তার প্রশ্নের উত্তর দিতে অনেক অপ্রাসঙ্গীক কথা বলে ফেললাম। উত্তরাধুনিকতা বামপন্থীদের তৈরী না। সংশয়ী এবং দলত্যাগী বামপন্থীদের জন্য তৈরী পুঁজিবাদী বটিকা। তবে যেসব ঐতিহাসিক আর্থ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় লীবারেটারিয়ানরা এবং জাতীয়তাবাদীরা বামে অবস্থান করেন সেখানে তাঁদের মধ্যেও অভ্যন্তরীন উৎপাদন অবকাঠামো নির্মান নিরুৎসাহিত করতে এই বটিকার ব্যবহার হয়। আমি এই পোস্টে উত্তরাধুনিক আর হতাশ বামপন্থীদের দুটো আলাদা ক্যাটেগরিতে ফেলেছি। হতাশ বামপন্থী হচ্ছে যারা এখনো পুরো ডিগবাজী দেননি। একভাবে দুই নৌকায় পা দিয়ে আছেন।



অজ্ঞাতবাস

হাসিব এর ছবি

বাম বলতে আমরা কাগোরে বুঝি ? যাহার ডান নন তাহারাই বাম বৈলাই আমি জানি ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঐতিহাসিকভাবে আসলে বাম মানে বিরোধী দল। বৃটিশ পার্লামেন্টের ডানে সরকারী আর বামে বিরোধীদল বসে সেইসূত্রে বিরোধীদের বামপন্থী বলার রেওয়াজ ছিল বহু আগে। পরে এইটা কমিউনিস্ট আর সমাজতন্ত্রীদের ট্যাগিং হইয়া গেছে। আমিও সেই অর্থে ব্যবহার করছি। তবে পরিভাষাটা ধোঁয়াইট্টা এইটা ঠিক। ব্যবহার করা উচিত না। সরাসরি সমাজতন্ত্রী বা কমিউনিস্ট বলা ভালো।



অজ্ঞাতবাস

হাসিব এর ছবি

ব্রিটিশ না । ফ্রেঞ্চ পার্লামেন্টের ঘটনা এইটা ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

খাইছে! এতোদিন ভুল জানতাম!!! মন খারাপ

ডাঙ্কে....



অজ্ঞাতবাস

নীল [অতিথি] এর ছবি

অনেক সময় লাগলো পড়তে এবঙ নিজেকে বোঝাতে।
ভালো লাগলো। ভোট দেবার ক্ষমতা থাকলে দিতাম।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
স্নিগ্ধা এর ছবি

কিন্তু হতাশ বামপন্থীদের অনেকেই যাদের সকলেই ঠিক পয়সা খেয়ে নয় নিজেদের বা পূর্ববর্তী প্রজন্মের সাংগঠনিক ব্যর্থতা থেকে বাস্তবিক হতাশ হয়েছেন, ধর্মীয় মৌলবাদের প্রতি তাঁদের কারো কারো (সকলের না। এখনো ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে যে কয়জন মানুষ স্পষ্ট করে কথা বলেন তাঁরা সকলেই কোন না কোন ভাবে মার্কসীয় বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনের সঙ্গে জড়িত) সহানুভুতি দেখে আমার ব্রহ্মতালু জ্বলে যাচ্ছে কিছুদিন যাবৎ।

বামপন্থীরা মৌলবাদের সমর্থক হচ্ছে?! হায়রে! লিঙ্ক টিঙ্ক দিতে পারেন দু'একটা?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সমর্থক ঠিক না...(ওদের ভাষাতেই বলি) সমব্যথি হচ্ছে...



অজ্ঞাতবাস

স্নিগ্ধা এর ছবি

জুলফিকার কবিরাজ এর ছবি

ভাব দেখে মনে হচ্ছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমেরিকা ও ভারত পাকিস্তানকে একটি তালেবান রাস্ট্র হিসাবে প্রমাণ করবে। পাকিস্তানের মৌলবাদীরা সেই ফাঁদ পাতা পথেই হাটছে। তার পরে আমেরিকা , ভারত মিলে পাকিস্তান আক্রমণ করে তাদের কাজ হাসীল করবে।
এর পরের টার্গেট বাংলাদেশ মনে হচ্ছে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আগের টার্গেটও হতে পারে।



অজ্ঞাতবাস

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

খবরের কাগজে, ফেইসবুকে, ইয়াহুগ্রুপে, গুগলগ্রুপে নিজেদের অতীত নিয়ে হতাশ হয়ে মৌলবাদীদের প্রতি প্যাসিভ সহানুভুতি দেখিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অর্থই কিন্তু সাম্রাজ্যবাদের বাস্তব দালালী।

পুরা লেখাটাই আগুন । তবে এই লাইন কেন কোট করলাম সেইটা বদ্দা জানবেন।
গুল্লি

সুমন চৌধুরী এর ছবি
সাদাচোখ [অতিথি] এর ছবি

আমি মনে প্রাণে চাই পাকিস্থান ধ্বংস হোক। এই দেশ মৌলবাদের ক্যান্সার কে ধারন করেছে। একে কেটে অপসারন না করলে সারা বিশ্বই আক্রান্ত হবে।

বিপ্লব পাল এর ছবি

বামপন্থীরা কেন হতাশ হন?

কারন, এরা সবাই মার্ক্সীয় তত্ত্ব গভীরে না ঘেঁটে লেনিনের ধারাপাত পড়ে 'কি করিতে হইবে' জাতিয় লাল বই নিয়ে বিপ্লব করতে গিয়েছিলেন। লেনিন নিজেই মার্ক্সবাদ বোঝেন নি-তার হাতের কাছে ছিল গুটিকয় মার্ক্সের প্রবন্ধ-পরবর্ত্তীকালে যার একাডেমিশিয়ান, তারা খুব পরিস্কারই দেখিয়েছেন লেনিন কি ভাবে তার অগনতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট ধারনাগুলি বলশেভিক বিপ্লবে ঢুকিয়ে দিলেন। ফলশ্রুতি সোভিয়েত ইউনিয়ানের মতন আরেকটা সাম্রাজ্যবাদি বুরোক্রাটিক রাষ্ট্র।

মার্ক্সবাদও একটি অসম্পুর্ণ দর্শন। সেই অর্থে কোন দর্শনই মানুষ বা সমাজের জন্যে ১০০% সমস্যা সমাধান করবে-এমন আশা করাটাই বিজ্ঞান সম্মত ভুল। যেমন এই লেখক সাম্রাজ্যবাদ বিরোধি ডায়ালোগ মারলেন-কিন্ত উনি এটুকুও জানেন না রাষ্ট্র থাকলে সাম্রাজ্যবাদ থাকবেই। উনি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান আমেরিকা মিশে এক্টিই মাত্র পৃথিবী হৌক?? যেদিন এটা ভাবতে পারবেন, সার্বভৌমত্ব আর সাম্রাজ্যবাদ একে ওপরের দোষর এবং মানবতার শত্রু সেদিন সাম্রাজ্যবাদকে সঠিক ভাবে বুঝবেন। লেনিনের সাম্রাজ্যবাদের ওপর রচিত বিখ্যাত প্রবন্ধটি একটি বালখিল্য রচনা -সেটা নিয়ে চিরকাল লাফালাফি করলে, হতাশা ত জীবনে আসবেই!

সু তরাং বামপন্থী, ডানপন্থী এই সব শব্দগুলি ছাড়তে হবে আগে। প্রতিটা মানুষেরই একটা ধর্ম-মানুষের ধর্ম-এই পৃথিবীতে নিজের এবং অন্যের জেনেটিক প্রিন্টগুলি বাঁচানো এবং উন্নত করা। এই জন্যেই মার্ক্সী এবং ডারুইনিয়ান ঐতিহাসিক বস্তুবাদকে একত্র করলে, তাও কিছু সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সবাই মানুষ এবং বাঁচার চেষ্টা করছে। প্রশ্নটা হচ্ছে কি উপায়ে এগোলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম সুরক্ষিত হয়। এই ওবজেটিভটাতে ডান বাম বিভেদ আছে? এবং এটা ধরে এগোলে দেখা যাবে, বাম এবং ডান, এই উভয় পথেই কিছু ঠিক, কিছু বেঠিক আছে। এবং বিবর্তনের ভবিষ্যত চিত্রটাও ঠিক বেড়িয়ে আসবে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

লেনিন প্রসঙ্গে আপনার জ্ঞানে আমি অভিভূত !

পৃথিবীর সব লেখক-দার্শনিক বা রাজনীতিকের মতো লেনিনেরও অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। তো সেগুলিকে পয়েন্ট করে ঠিকঠাক মতো দেখিয়ে না দিলে শুধু মন্তব্যে কি মুগ্ধ পাঠকদের এতবড় ভূল ভাঙবে? আপনি "সাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ স্তর" নামের বইটাকে বালখিল্য বলে ফেললেন। তা সেরকম বলার অধিকার আপনার আছে। কিন্তু বইটার কোথায় কোথায় লেনিন সাহেব বালকের মতো কী কী খেললেন সেটা পরিস্কার করে না বললে আমার মতো বেকুবদের ভূল কী করে ভাঙবে?

আপনার মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। তবে বানানের ব্যাপারে আরেক্টু যত্নবান হলে ভাল্লাগতো দেঁতো হাসি



অজ্ঞাতবাস

বিপ্লব পাল এর ছবি

"পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদের সর্বোচ্চ ধাপ" এই বইটির লেখক লেনিন হলেও, থিসিসটি হবসন নামে এক বৃটীশ দার্শনিকের। লেনিন সেটাকেই নাকি ' দ্বান্দিক বস্তুবাদের' প্রলেপ লাগিয়েছিলেন। যে দাবী আদতেই ঢপবাজি। আমি দুটো রচনা পাশাপাশি পড়ে দেখেছি, লেনিন তার উক্ত বইটী হবসনের তত্ত্বকেই প্রায় রেখে দিয়ে শুধু কাউটস্কির নামে কিছু গাল পেড়েছেন। তার নিজের মৌলিক অবদান শুন্য।
হবসনের-লেনিন তত্ত্বের মারাত্বক ত্রুটীটি ফ্যাকচুয়াল। তাদের তত্ত্ব অনুযায়ী ইউরোপের বর্ধিত পুঁজি কলোনিগুলোতে খাটার কথা। কিন্ত ইউরোপীয় অতিরিক্ত পুঁজি সব সময় আমেরিকাতে বিনিয়োগ হয়েছে। দক্ষিন পূর্ব এশিয়া-যেখানে সব কলোনি গুলি ছিল-সেখানে সেই পুঁজির ৫% যেত-আমেরিকা ৩৫% মতন অতিরিক্ত পুঁজির প্রাপক ছিল।

তত্ত্ব ত এখানেই শেষ। সব থেকে বড় কথা, তার তত্ত্ব অনুযায়ী সাম্রাজ্যবাদি শক্তিগুলির মধ্যে মার্কেট দখলের জন্যে যুদ্ধ হওয়ার কথা। কোথায় যুদ্ধ দেখছেন বৃটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স, চিন বা ভারতের মধ্যে? এখন?

তাহলে ভুলটা কোথায় হল? এখানেই প্রশ্ন উঠবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে লেনিন এবং মার্ক্সের তত্ত্বে কি বিরোধ আছে? একটু পড়ে নিলেই দেখা যায় মার্ক্সের মুক্ত বাণিজ্যে পক্ষে সওয়াল করেছেন। সেটাও বড় কথা না। প্রশ্ন হচ্ছে লেনিন কি দ্বান্দিক বস্তুবাদ ফলো করছিলেন, তার তত্ত্বের জন্যে? তার লেখার মধ্যে ডায়ালেক্তিক লজিক আছে?

কিস্যু নেই। এই নিয়ে আমি বঙ্গজ কমিদের অ নেক চ্যালেঞ্জ ছুড়েছি। তারাও বাপ-মা বলে স্বীকার করেছেন-লেনিনের লেখা মোটেও ডায়ালেক্টিক নয়-ঐতিহাসিক বস্তবাদকে মেনে নিয়ে লিখে গেছেন।
যাই হোক এগুলো লম্বা গল্প। এত জানতে গেলে, আমাদের পশ্চিম বঙ্গের দিকে কিছু বামপন্থি ফোরামে যোগ দিতে হবে-অর্কুটে। যেখানে শুধই এই থিসিসকে চ্যালেনঞ্জ করে আমার একটি থ্রেড আছে এবং সেখানে পোস্টিং ১০০০ ছাড়িয়েছে। সেখানে আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন। লেনিনের লেখা লাইন বাই লাইন আমি বিশ্লেষন করে দেখিয়েছি।
এত অবশ্য মৌলিকতা নেই। পরে দেখেছি স্বনাম ধন্য রাজনীতিবিজ্ঞানের অধ্যাপকরাও এই নিয়ে অনেক লিখে গেছেন।

বাঙালী কমি তথা বামপন্থীদের পড়াশোনার চেয়ে আবেগ বেশী। এটাই বুঝি।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার লেনিন বিষয়ক জ্ঞান নিয়ে ক্ষুদ্র বিদ্রুপের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আর সব বাঙালীর মতো আমারো পড়াশুনার চেয়ে আবেগ বেশী। এই বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত।

তবে আপনার অর্কুটে আমন্ত্রণ শ্রদ্ধা সহকারে প্রত্যাখ্যান করছি। আপনার মন্তব্যে যে বিষয়গুলি উল্লেখ করলেন সেগুলি ডিটেলসে জানবার আগ্রহ বোধ করছি সচলায়তনেই। লেনিনের লেখার লাইন বাই লাইন বিশ্লেষনের মতো অতি গুরুত্বপুর্ণ কাজটি শুধু অর্কুটে সীমাবদ্ধ থাকবে কেন? আপনি সময় নিয়ে সচলায়তনে এই নিয়ে লিখুন। একজন পাঠকও যদি আপনার বিশ্লেষনের কদর করেন তো সেখানে আমাকে পাবেন।

ধন্যবাদ।



অজ্ঞাতবাস

স্নিগ্ধা এর ছবি

লেনিনের সাম্রাজ্যবাদের ওপর রচিত বিখ্যাত প্রবন্ধটি একটি বালখিল্য রচনা -সেটা নিয়ে চিরকাল লাফালাফি করলে, হতাশা ত জীবনে আসবেই!

সেটি কোনটি?

সবাই মানুষ এবং বাঁচার চেষ্টা করছে। প্রশ্নটা হচ্ছে কি উপায়ে এগোলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম সুরক্ষিত হয়। এই ওবজেটিভটাতে ডান বাম বিভেদ আছে? এবং এটা ধরে এগোলে দেখা যাবে, বাম এবং ডান, এই উভয় পথেই কিছু ঠিক, কিছু বেঠিক আছে। এবং বিবর্তনের ভবিষ্যত চিত্রটাও ঠিক বেড়িয়ে আসবে।

উভয় পথেই কিছু ঠিক, কিছু বেঠিক তো আছেই, থাকারই তো কথা! কে কোনটাকে ঠিক মনে করে, আর কে কতটুকু বেঠিককে মেনে নিতে রাজী - তফাত বা দ্বন্দ্বটা সেখানেই বোধহয় শুরু হয়। আর, বিবর্তনের ভবিষ্যত চিত্রটা ঠিক কী?

সুমন চৌধুরী এর ছবি
স্নিগ্ধা এর ছবি

ওহহহ! আসলে, প্রবন্ধ বলেছেন দেখে আমি ভাবছিলাম চোখ বুলিয়ে দেখতে হয় ......

সুজন চৌধুরী এর ছবি
তানবীরা এর ছবি

এখনো পাকিস্থানের কোন ক্ষতি হলে মনমেজাজ ভালো হয়ে যায়। রুজি রোজগার বাড়লে হয়তো দানখয়রাতও করবো।

আমার কথাটা মনে রাইখেন।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সুমন চৌধুরী এর ছবি
হাসান মোরশেদ এর ছবি

দরকার ছিলো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

রানা মেহের এর ছবি

সেই মহান পন্থীরা এই লেখাটা পড়লে হয় চলুক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অবাঞ্ছিত এর ছবি

ফাকিস্তানরে শোয়ায় দিলেই আমি খুশি। সে যেই দিক্, যেমনেই দিক্, সব জায়েজ আমার কাছে দেঁতো হাসি

তবে আমার মনে হয় দুনিয়াতে মানুষ যতদিন থাকবে, সাম্রাজ্যবাদও থাকবে। সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে জ্ঞান খুব বেশি নাই, বড় মানুষদের লেখা পড়েও তেমন বুঝি না। সাম্রাজ্যবাদ নিয়া সহজ বাংলায় ভালো লেখা কই পামু একটু কইতারবেন?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

এনকিদু এর ছবি

ফাকিস্তানরে শোয়ায় দিলেই আমি খুশি।

আমার পাকিস্তান প্রীতি আপনার থেকে কোন অংশে বেশিনা । কিন্তু তারপরেও আমি খুব একটা খুশি হতে পারছি না । পাকিস্তানকে শোয়ানো মানেই দক্ষিন এশিয়ায় তাদের খেলা শুরু হল আর কি । ভুল করেও যে খেলতে খেলতে বল একটা দুইটা কোর্টের বাইরে পড়বেনা কে বলেছে ? আর সঠিক করে কোর্টের বাইরে বল ফেলতে চাইলে তো কথাই নাই ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বাংলা বই বা প্রবন্ধগুলির অবস্থা করুন। ভালো বইও আছে কিন্তু তার সব লেখকের গায়েই কোন না কোন রাজনৈতিক সীলমারা আছে। তাতে আমার কখনো কোন সমস্যা হয়নি কারণ আমি নিরপেক্ষতা খুঁজিনি কখনো। আপনি বাংলায় পড়তে চাইলে আনু মুহাম্মাদের ক্রান্তিকালীন বিশ্ব অর্থনীতি এবং উন্নয়ন সাম্রাজ্য বইটা দেখতে পারেন। স্যারের বাংলা অতি সহজ এবং সুখপাঠ্য। তবে সবচাইতে ভালো হয় যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার থেকে রুটলেজ প্রকাশনীর এনসাইক্লোপেডিয়া অফ গাভার্নমেন্ট অ্যান্ড পলিটিক্স এর দ্বিতীয় খন্ডের শেষ অধ্যায় ইম্পেরিয়ালিজম টা পড়ে নিলে। মাইকেল প্যারেন্টি যে অসাধারন সরল ইংরেজীতে প্রবন্ধটি লিখেছেন অত সরল বাংলায় আমি এখনো খুব বেশী রাজনৈতিক প্রবন্ধ পড়িনি।



অজ্ঞাতবাস

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

তাঁর এই লেখাটা অনেক লম্বা, টাইম নিয়ে পড়তে হবে। তবে শেষের কথাগুলা বেশ লাগলো।

In all, the Third World is something of a capitalist paradise, offering life as it was in Europe and the United States during the nineteenth century, with a rate of profit vastly higher than what might be earned today in a country with strong economic regulations. The comprador class is well recompensed for its cooperation. Its leaders enjoy opportunities to line their pockets with the foreign aid sent by the U.S. government. Stability is assured with the establishment of security forces, armed and trained by the United States in the latest technologies of terror and repression. Still, neoimperialism carries risks. The achievement of de jure independence eventually fosters expectations of de facto independence. The forms of self rule incite a desire for the fruits of self rule. Sometimes a national leader emerges who is a patriot and reformer rather than a comprador collaborator. Therefore, the changeover from colonialism to neocolonialism is not without risks for the imperialists and represents a net gain for popular forces in the world.

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

মামুন হক এর ছবি

মানুষ মানুষ না হওয়া পর্যন্ত এইসব সমস্যার কোন স্থায়ী সমাধান নাই। কিন্তু মানুষরে মানুষ হওয়ার রাস্তা দেখাবে সেই মানুষ তো আজকাল তেমন দেখিনা। ডিভাইড অ্যান্ড রুল এর শয়তানী পলিসির ধোঁকায় পড়ে মানবজাতি আজ শতধা বিভক্ত । কেউ মানুষকে না বুঝে প্রাগৈতিহাসিক থিওরীর কব্জায় পড়ে খাবি খায়, কেউ চুড়ান্ত ইন্ডিভিজুয়ালিজমকে আটমোস্ট মানবাধিকার সমঝে জীবন নিয়ে জুয়া খেলে। দুইটাই আমাদের মাথা খেয়ে ছোবড়া করে দিচ্ছে। মধ্যপন্থী, পরিস্কার মাথার, ব্যালেন্সড, আন বায়াসড মানুষেরা সব গেল কই কে জানে? চিন্তার মৌলবাদ দিয়া ধর্মীয় মৌলবাদের মোকাবেলা করা আজকাল হটকেকের মত চলে, শালিস-বিচার যাই হোক তালগাছ আমার এইটা তো আরো পপুলার, মানুষরে নিয়াই পৃথিবী, সবার আগে মানুষরে বুঝতে হতে , তোমার সাথে বনেনা তাই তুমি অচ্ছুৎ, তোমার ক্ষতিতে বগল বাজাবো এইসব ভাবনা চিন্তার কোন বেইল নাই।
পৃথিবী হয়ত প্রতিদিনই ধ্বংসের দিকে আরো একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে, হয়ত এইটাই তার নিয়তি।
এখন নিজে বাঁচলে বাপের নাম, এইসব জটিল আলোচনা মুরুব্বীদের জন্য থাকুক, আমি গিয়ে লবন আর শর্ষেবাটা মাখিয়ে আমড়ার আচার খাই।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার অবস্থান বুঝতে পারছি। মানবজাতি হয়তো আত্মহত্যার দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।

তবে রাজনীতি কোনকালেই আনবায়াসড অর্থে মধ্যপন্থী ছিল না। বায়াসড লোকেরা অবস্থানগত স্বার্থ সাপেক্ষে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেওয়া কার্যকর করা বগল বাজানো ইত্যাদি করে গেছে।



অজ্ঞাতবাস

সিরাত এর ছবি

পড়লাম। অনেকক্ষেত্রেই সহমত নই, কিন্তু এ ধরনের একটা লেখা দরকার ছিল। আরেকটি দৃষ্টিভঙ্গীও জানা হল। ধন্যবাদ!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দ্বিমতের জায়গাগুলো জানালে কৃতার্থ হতাম।

আপনাকেও ধন্যবাদ।



অজ্ঞাতবাস

নজমুল আলবাব এর ছবি

পতাকা ছাড়া ছবি নাই। চোখ টিপি

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আপনার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন সচলে লগায় না?

ধুসর গোধূলি এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি

পিত্রালয় সঙক্রান্ত জটিলতা

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আচ্ছা, আমার দুর্গতির শুরু বা ভবিষ্যত দুর্গতির জন্য আঙ্কেল স্যামকে দোষারোপ করবো কেন? আসল দোষটা তো আমার আর আমার ভাইয়ের। আমরা চাচাকে বাড়ীর রাস্তা চিনিয়েছি, আমাদের ঘরের যে দরজা নাই সেটা দেখিয়েছি, আমাদের আরো আরো কী করা যায় সব বলেছি। এখন ফন্দিবাজ চাচা যদি সব লুট করে নেয় আর ভাইয়ে ভাইয়ে কাজিয়া লাগিয়ে দেয় তাহলে চাচাকে কেন দুষবো? নিজের ভালো নাকি পাগলেও বোঝে, আমরা কি তাহলে পাগল হবার যোগ্যও নই?

গত কয়েকশ' বৎসর ধরে পশ্চিম পূবের উপর বা উত্তর দক্ষিণের উপর যে ছড়িটা ঘোরাচ্ছে, পিট্টি লাগাচ্ছে, লুট-পাট চালাচ্ছে তার জন্য পূব বা দক্ষিণের সীমাবদ্ধতাগুলো আজকাল বড্ড চোখে পড়ছে। কয়েকদিন ধরে মাথায় ছেঁড়া ছেঁড়া চিন্তা ঘুরছে এসব নিয়ে। জোড়া লাগাতে পারলে পোস্টাবো।

ছোট ছোট বা স্থানীয় পর্যায়ের বা হঠাৎ ফুঁসে ওঠা বা অসংগঠিত বা কখনো কখনো নেতৃত্বহীন বা প্রায় সব সময়েই সংঙ্ঘবিহীন বৈপ্লবিক ঘটনাগুলো সামগ্রিক বৈপ্লবিক পরিস্থিতি তৈরিতে কীভাবে সহায়তা করে? বৈপ্লবিক ধারাবাহিকতা কীভাবে তৈরি হয়? এতে কি প্রতিপক্ষ তার শত্রু-মিত্রদের চিনে নিতে বা সংগঠিত হতে বেশি সময় পেয়ে যায় না? প্রতিবিপ্লবী গ্রুপ তৈরি হবার সময় পেয়ে যায় না? আর সংঙ্ঘের নেতৃত্ব ছাড়া বিপ্লব হাঁটার অন্য কোন পথ কি হতে পারে?

পুনশ্চঃ বানানটা কি "পাকিস্তান" হবে না? নাকি ইচ্ছে করেই "পাকিস্থান" লিখেছেন?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাব আমি জানিনা। কারণ সেটা আমারো প্রশ্ন।

শেষের আগেরটাও। এগুলি মৌলিক প্রশ্ন। যেগুলি থেকে প্রাক্তন বিপ্লবীরা অনবরত পালিয়ে বেড়াতে ভালোবাসেন।

বানানটা পাকিস্তান। কাল রাগের মাথায় বারে বারে শিফটে চাপ পড়ে পাকিস্থান হয়ে গেছে। মেরামত করতে একটু সময় লাগবে মন খারাপ



অজ্ঞাতবাস

দিগন্ত এর ছবি

একটা বিষয়ে একমত। আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণেই আঙ্কেল আমাদের চোখ রাঙায়।

দ্বিমত এখানে যে পূব আজ আর পূব নেই। চিন-জাপান-কোরিয়া সহ দূরপ্রাচ্য এখন আঙ্কেল স্যামের হিটলিস্টে আসে না। তারা আমেরিকার মতই বুর্জোয়া।

একটা ছোটো উদাহরণ দিই। দক্ষিণ কোরিয়া আর পাকিস্তান উভয়েই আমেরিকার সাথে সহযোগিতা করেছে বামবিরোধী জোটে - তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাও একইরকম ছিল। আজকে দু'দেশের অবস্থার এত ফারাক কেন? আমেরিকার সাথে সহযোগিতাই যদি দুর্গতির কারণ হয় তাহলে জাপান-কোরিয়ারও একই হাল হবার কথা ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জাপান আর কোরিয়া বোধহয় দুটো ভিন্ন প্রসঙ্গ। জাপানে অনেকটা ইউরোপের সাথে তাল মিলিয়েই শিল্পবিপ্লব ঘটেছে। জাপান কখনোই পাকিস্তানের স্ট্যাটাসে ছিল না। আর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কোরিয়া যুদ্ধ এবং চীন বিপ্লবের ইতিহাস জড়িত। দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পায়ন এবং ভুমি সংস্কার হয়েছে মার্কিন তত্ত্বাবধানে। উদ্দেশ্য কোরিয়া উপসাগরে সামরিক অবস্থান স্থায়ী করা। ( কোরিয়া যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা খুব সুখকর ছিল না) অনেক বুজুর্গ বলে থাকেন দক্ষিণ ভিয়েতনামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার পলিসি গ্রহণ করলে হয়তো আজকের ভিয়েতনাম অন্যরকম হতে পারতো।



অজ্ঞাতবাস

দিগন্ত এর ছবি

জাপান আর কোরিয়া অবশ্যই আলাদা বিষয়। কোরিয়ার কথাই বলছি। দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে যেমন কোরিয়া যুদ্ধ জড়িত তেমন আফগান যুদ্ধে পাকিস্তান জড়িত। দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পায়ন হয়েছে মার্কিন তত্ত্বাবধানে, পাকিস্তানেও হতে পারত। আমাদের দেশগুলোতে হয়নি, কারণ আমরা ধরেই নিয়েছি দুদিন পরে এরা আমাদের উপনিবেশ বানাবে। দক্ষিণ কোরিয়া কার্যত এখন আমেরিকার বাণিজ্যিক উপনিবেশই বটে - কিন্তু তাতে কি তারা খারাপ আছে?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

খারাপ থাকা ভালো থাকা বোধহয় প্রসঙ্গ ছিল না। কথা হচ্ছে পাকিস্তানের বা বাংলাদেশের দক্ষিণ কোরিয়া হবার কোন বাস্তব সম্ভাবনা ছিল কি না। কোরিয়া যুদ্ধের রাজনৈতিক চরিত্র আর আফগানযুদ্ধের রাজনৈতিক চরিত্রে বহু তফাৎ। শিল্পায়ন/ভূমি সংস্কার না হলে দক্ষিণ কোরিয়ার পরিণতি দক্ষিণ ভিয়েতনামের মতো হবার সম্ভাবনা প্রবল ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের শুধু মাত্র ব্যবহৃত হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন গতি ছিল না।



অজ্ঞাতবাস

হাসিব এর ছবি

আচ্ছা, আমার দুর্গতির শুরু বা ভবিষ্যত দুর্গতির জন্য আঙ্কেল স্যামকে দোষারোপ করবো কেন? আসল দোষটা তো আমার আর আমার ভাইয়ের। আমরা চাচাকে বাড়ীর রাস্তা চিনিয়েছি, আমাদের ঘরের যে দরজা নাই সেটা দেখিয়েছি, আমাদের আরো আরো কী করা যায় সব বলেছি।

আমি বোকাোা হৈতে পারি । কিন্তু সেইটা কারো কুকর্ম হালাল করে না ।

এতে কি প্রতিপক্ষ তার শত্রু-মিত্রদের চিনে নিতে বা সংগঠিত হতে বেশি সময় পেয়ে যায় না?

একটা সময় ছিলো যখন (খুব বেশী আগের কথা না সেইটা । শ'খানেক বা তার কিছু আগে ) শোষক শ্রেনী ও শোষিত শ্রেনীর মধ্যে ফারাকটা খুব বেশী ও স্পষ্ট ছিলো এবং তখন শোষিত থেকে শোষক বনে যাবার (অর্থাত মাইগ্রেশন) সম্ভাবনা কম ছিলো । কিন্তু যামানা ভিন্ন এখন । সামন্ত রাজা রাজড়ার পরে কর্পোরেট দুনিয়া সিংহাসন নেবার পর এই চুড়ান্ত শোষিত ও চুড়ান্ত শোষকের মধ্যখানে অনেকগুলো লেভেল গজাইছে যেই লেভেলগুলার সবসময় শোষক হয়ে ওঠার সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকে । বিপ্লব নষ্ট করতে আসলে এই মাঝখানের শ্রেনীটাকেই কাজে লাগায় চুড়ান্ত শোষকেরা । এইখানে চুড়ান্ত শোষকেরা কতটুকু সময় পেলো সেটা মনে হয় গৌন ।

দিগন্ত এর ছবি

এই চুড়ান্ত শোষিত ও চুড়ান্ত শোষকের মধ্যখানে অনেকগুলো লেভেল গজাইছে যেই লেভেলগুলার সবসময় শোষক হয়ে ওঠার সুযোগ ও সম্ভাবনা থাকে ।

দামী কথা বলেছেন। আপনি ইতিহাসের পাতায় দেখতে পাবেন এই লেভেলগুলো শিল্পবিপ্লবের ফসল। ব্রিটেনে এদের বলা হত বুর্জোয়া। আমার প্রশ্ন হল এটা কি মানুষের স্বাভাবিক পরিণতি নয়? মানে এই অনেকগুলো লেভেলে ভাগ হয়ে থাকা - শোষক থেকে শোষিত পর্যন্ত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

হাসিব এর ছবি

প্রথমে এই বাক্যটা দেখেন -
ইহাই হৈয়া থাকে, অতএব ইহাই স্বাভাবিক ।

আবার ধরেন বাক্যটা যদি এইটা হয় -
ইহাই হৈয়া থাকে, ইহার পরিবর্তন আবশ্যক ।

প্রথম বাক্যটা আপনার বলা স্বাভাবিকতা । দ্বিতীয়টা ঔচিত্য নির্দেশ করে ।

এখন একটা ক্রুড উদাহরন দেই,
বাংলাদেশে জামাত আছে । ইন্ডিয়ায় আছে বিজেপি । সুতরাং রাজনীতিতে ধর্মীও মৌলবাদ এই দুইটা দেশে বাস্তবতা ও এইটা স্বাভাবিক

এইখানে আমার অবস্থান কি হবে ? স্বাভাবিকতার দোহাই দিয়ে পরিস্থিতি/সিস্টেম/ব্যবস্থা মেনে নেয়া ? নাকি, একটা ঔচিত্যের স্টান্ডার্ড তৈরী করে সেইমতে আগানোর চেষ্টা করা ?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

স্বাভাবিকতার দোহাই বিষয়টাই প্রয়োগ বিরোধী দর্শনের দিকে ঠেলা দেয়। গিভেন রিয়েলিটির প্রশ্নে নিষ্ক্রিয়তার অর্থ পরিবর্তন বা প্রয়োগ নামের ক্রিয়াকে অস্বীকার করা।



অজ্ঞাতবাস

দিগন্ত এর ছবি

মৌলবাদের কারণ হল মানুষের ধর্মভীরুতা ও অশিক্ষা। এই দুই যতক্ষণ আছে ততক্ষণ মৌলবাদও স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু জামাত-বিজেপিকে হটিয়ে মৌলবাদ দমন করার চেষ্টা বৃথা। একইভাবে পাঁচজন মানুষ থাকলে তাদের মধ্যে সমস্ত ক্ষেত্রেই পার্থক্য থাকার কথা। তাই শোষক থেকে শোষিত এই ভাগও থাকবেই, যেমন থাকবে ধনী-গরিব বিভাজন। এটা পরিবর্তন করতে গেলে মানুষের মধ্যে একটা আমূল পরিবর্তন দরকার হবে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার কথা একদিক থেকে ঠিক।

তবে এর মধ্যে আরো অনেকরকম সম্ভাবনা আছে যেগুলি ছাগুরা ব্যবহার করে। তার একটি হচ্ছে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন বা বিপ্লব ঠিকঠাক মতো হবার আগে পলিটিক্যাল পরিবর্তন বা পদক্ষেপে কিসু হবে না। এবং এই কথা তাঁরা বলে থাকে ইতোমধ্যে শিং বাগিয়ে বিচরণ করতে থাকা ছাগুদের বাঁচাতে।

ব্যাপারটাকে আমরা এভাবে বলতে পারি, ছাগুদের প্রকাশ্যে আর বাড়তে বাঁধা দিতে প্রয়োজন রাজনৈতিক পদক্ষেপ, তারপর তাকে স্থায়ী করতে ঢালাও সাংস্কৃতিক সংস্কার। অবকাঠামোগত সংস্কারও যার আওতায় পড়ে।

নাকি?



অজ্ঞাতবাস

দিগন্ত এর ছবি

ব্যাপারটাকে আমরা এভাবে বলতে পারি, ছাগুদের প্রকাশ্যে আর বাড়তে বাঁধা দিতে প্রয়োজন রাজনৈতিক পদক্ষেপ, তারপর তাকে স্থায়ী করতে ঢালাও সাংস্কৃতিক সংস্কার।

আমার মতে এটা মানবসমাজের একটা ধীরগামী পরিবর্তন যা মানুষ দেখে শিখবে। মানে ধরুন মিডিয়া যদি তুলে ধরে ছাগুদের কুকীর্তি, রাজনৈতিক নেতারা যদি ছাগুদের বর্জন করেন আংশিকভাবে আর শিক্ষায় ছাগুগিরি কমানো হয় তাহলে একসাথে তিনটেই চললে তবেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। তবে কোনোটাই হতে ২-৩ প্রজন্মের কম সময় লাগার কথা নয়, কারণ মানুষ এখনও তার মূল্যবোধের শিক্ষাটা বাবা-মায়ের কাছ থেকেই পায়। তাই ছাগু-ভর্তি সমাজ থেকে ছাগুবিহীনে উত্তরণের জন্য প্রজন্মান্তর লাগবে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

ব্যাপারটাকে আমরা এভাবে বলতে পারি, ছাগুদের প্রকাশ্যে আর বাড়তে বাঁধা দিতে প্রয়োজন রাজনৈতিক পদক্ষেপ, তারপর তাকে স্থায়ী করতে ঢালাও সাংস্কৃতিক সংস্কার।

আমার মতে এটা মানবসমাজের একটা ধীরগামী পরিবর্তন যা মানুষ দেখে শিখবে। মানে ধরুন মিডিয়া যদি তুলে ধরে ছাগুদের কুকীর্তি, রাজনৈতিক নেতারা যদি ছাগুদের বর্জন করেন আংশিকভাবে আর শিক্ষায় ছাগুগিরি কমানো হয় তাহলে একসাথে তিনটেই চললে তবেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। তবে কোনোটাই হতে ২-৩ প্রজন্মের কম সময় লাগার কথা নয়, কারণ মানুষ এখনও তার মূল্যবোধের শিক্ষাটা বাবা-মায়ের কাছ থেকেই পায়। তাই ছাগু-ভর্তি সমাজ থেকে ছাগুবিহীনে উত্তরণের জন্য প্রজন্মান্তর লাগবে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমি যদি পাঞ্জাবীর পকেটে টাকা নিয়ে গুলিস্তানের রাস্তা দিয়ে হাঁটি, আর তাতে যদি আমার পকেট মারা যায় তাতে পকেটমারের অপরাধ মাফ হয় না, তবে বেকুবীর জন্য আমার অন্ততঃ তিরস্কার পাওনা হয় (আর টাকাটা তো গেলই)।

মধ্যবর্তী শ্রেণীগুলো আগেও ছিল। বেশিরভাগ সময় এদের বড় অংশকে চেনা যায় না। একটা উদাহরণ দেই। ধরুন টিক্কা খান নিজে গুলি করে কোন বাঙালী মেরেছে কিনা জানি না, কিন্তু ১৯৭১-এর গণহত্যার দায় যাদের উপর প্রধানত বর্তায় টিক্কা খান তাদের একজন। টিক্কা খান আর অন্য পাকি জেনারেলরা এবং একজন শহীদ বাঙালীর মাঝখানে প্রথমে নানা পদমর্যাদার পাকি সেনা সদস্যরা, তারপর নানা পদমর্যাদার রাজাকার-আল বদরেরা ছিল, কখনো তারপর হঠাৎ গিজিয়ে ওঠা সুযোগসন্ধানী বাঙালীও ছিল। এই শ্রেণীগুলোর সবাই গণহত্যার জন্য কম-বেশি দায়ী। তবে দায়ী যে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। আজ দেখুন এক আর দুই নাম্বার শ্রেণী মোটামুটি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। তিন নম্বরকে কিছু কিছু চেনা যায়, তবে তিনের বড় অংশ আর চার নম্বর শ্রেণী কিন্তু আমাদের সাথে মিশে গেছে। মধ্যবর্তী শ্রেণীগুলোর এই এক সুবিধা একটু সময় পেলেই এরা মুখ লুকিয়ে নাম-চেহারা পালটে ফেলতে পারে। বিচার যদি ২০০৯ সালে না হয়ে ১৯৭২ সালে হত তিন আর চার নাম্বার শ্রেণীকে চিহ্নিত করা আর বিচার করা সহজতর হত। আমি সময় নষ্ট করার এই কুফলটার কথা বোঝাতে চাইছিলাম। সময় নষ্ট করার এই বেকুবীর জন্য আমার কী প্রাপ্য হয়?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জুতা প্রাপ্য হয়। কিন্তু সময় যেহেতু সরল রেখায় এগোয় না ঐ একদুইতিনচারের তালিকা ইতোমধ্যে আরও অনেক লম্বা হয়েছে। ২০০৯ সালে আমাদের সেদিক থেকে আরো বেশী কিছু করার আছে। সময় নষ্ট করার বেকুবিতে কাজ বাড়ছে, শত্রুর তালিকা বড় হইছে।



অজ্ঞাতবাস

হাসিব এর ছবি

মোটা দাগে আপনার বক্তব্যের সাথে একমত শুধু একটা বিষয় ছাড়া । আপনি এখানে "আমার" এবং "আমার ভাই" শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন । কে কোন অপকর্ম করে কার রাস্তা পরিস্কার করে দিলো সেটা দায় দায়িত্ব আমি কেন নেব ? আওয়ামী লীগ জামাতের সাথে জোট করে, বিএনপি জামাতের সাথে থাকতে গিয়ে নিজেই জামাতে পরিণত হয় - এসবের দায়িত্ব বিশ্লেষণের "আমরা" শব্দটা ব্যবহারের আমি নারাজ । এর থেকে কোন শ্রেনী কি স্বার্থ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কি কাজ করলো সেটা ভেঙে ভেঙে বিশ্লেষণে আগ্রহী ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রত্যেকের প্রকাশভঙ্গী স্বতন্ত্র, সেই হিসাবে আমার প্রকাশভঙ্গীতে আপনার সমর্থন না-ই থাকতে পারে। "আমার" এবং "আমার ভাই" বলার সেটা একটা কারণ। দ্বিতীয় কারণটি আমার মন্তব্যর অন্যত্র পূর্বের উপর পশ্চিমের বা দক্ষিণের উপর উত্তরের শোষন, মাতব্বরী, বঞ্চনার ইতিহাসের সাথে যুক্ত। আমি আগেই বলেছি ছেঁড়া সুতোগুলো জোড়া দিলে পারলে এ'ব্যাপারে পোস্টাবো।

বিশ্লেষনের পদ্ধতির ব্যাপারে আপনার সাথে আমি একমত। শ্রেণীচরিত্র বিশ্লেষন আর শ্রেণীস্বার্থ নির্নয়ের ক্ষেত্রে সাধারণীকরন বা গা ঢিলে দেবার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, সুযোগসন্ধানীরা এ'ধরণের যে কোন সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এনকিদু এর ছবি

এই বইটার কথা লিখেছেন, উইকির লিঙ্কটা দিলাম । কাজে লাগতে পারে । http://en.wikipedia.org/wiki/Clash_of_Civilizations


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সুমন চৌধুরী এর ছবি
নীড় সন্ধানী এর ছবি

পাকিস্থানে আজকে যা হচ্ছে সেটা ওদেরই কর্মফল।

সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।

পাকিস্তানে মার্কিন হামলা সময়ের ব্যাপার। অজুহাত যাই হোক, হামলা হবেই। সেই হামলার তাপ আমাদের কতটা পোড়াবে সেটাই চিন্তার বিষয়। আমাদের চারপাশে অমুসলিম দেশ থাকার অন্যতম উপকারিতা হলো আমেরিকা চট করে বাংলাদেশকে জঙ্গীদেশ ঘোষনা করে হামলা করতে পারবে না। কিন্তু দুরবর্তী হামলার তাপে আমাদের মন্দা যদি দুর্ভিক্ষে রূপ নেয়? সেরকম সম্ভাবনায় করনীয় সম্পর্কে সরকারের নীতিনির্ধারক অর্থনীতিবিদেরা কি ভেবে রেখেছেন?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যর জন্য। দুর্ভিক্ষের কথা আপাতত ভাবছি না। নিকট ভবিষ্যতে মনে হয় সেরকম সম্ভাবনা নেই। যেটা হতে পারে সেটা আরো ভয়ঙ্কর। পাকিস্তানে এখন যা হচ্ছে সেই একই মেথাডে রিভার্স গেইম।



অজ্ঞাতবাস

দ্রোহী এর ছবি

ছবিটা পুরা কোপানি!!!

আলমগীর এর ছবি

সেইটা দেইখাই ঢুকলাম, তারপর হতাশ হইলাম। এই ছবি লটকায়া বদ্দা একটা চালাকি করছে।

দ্রোহী এর ছবি

হ! আমিও একটু ইয়ে টাইপ পোস্ট আশা করেছিলাম।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি
সুমন চৌধুরী এর ছবি
মুস্তাফিজ এর ছবি

ওর নাম সারকারী, মোশাররফের সাথে ডেট করার আগ্রহ প্রকাশ করে এর আগে একবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলো

...........................
Every Picture Tells a Story

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ইউটিউবে কিছুমিছু দেখলাম। এক হুজুরের বয়ানও শুনলাম।



অজ্ঞাতবাস

আলমগীর এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই
নামের বানানটা কয়ে দিলে খুজাখুজির পরিশ্রেমটা একটু কম হইত দেঁতো হাসি
এইটা কি?
auto

সুমন চৌধুরী এর ছবি
সাজেদ এর ছবি

আঙ্কেল স্যামরা জানে কি ভাবে দুনিয়ায় টিইক্যা থাকতে হয়। আঙ্কেলরা দুনিয়ার ধর্ম, নীতি, মতবাদগুলিরে হজম আর সাইজ কইরা অনন্তকাল টিকা আছে, টিকা থাকবো। এই গেমপ্লেতে এরে কেউ হারাইতে পারবো না। শত বছরের শত ঝড়ঝঞ্ঝায় বহুতবার কাইত হইলেও পড়ে নাই; ওবামাগং এইবারও ঠিকই ঠেক দিয়া রাখবো।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আলহামদুলিল্লাহ্



অজ্ঞাতবাস

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

ঠিকাছে হাসি

সুমন চৌধুরী এর ছবি
রণদীপম বসু এর ছবি

শেষপর্যন্ত আমার কোন মন্তব্য দেয়ার ক্ষমতাই নাই !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সুমন চৌধুরী এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।