১.
মাথাটা হাঁটুতে গুঁজে টেনশন কমাবার চেষ্টা চলছিল। মালগাড়িতে এমনিতে টিকিট চেকার সচরাচর আসে না। তারপরেও এসে পড়লে মুশকিল। ঢাকাগামী যাত্রীবাহী ট্রেন মিস করে গয়রহ মফিজদের সাথে চরে বসেছে মালগাড়িতে। চেকার যদি আসেও কিছু পয়সা দিলে কথা বাড়াবে না। ভয় আসলে চেকারকে না পুলিশকে। চেকার যদি হুট করে ঠোলা ডেকে বসে তাহলেই সর্বনাশ। কোমরে গোঁজা পিস্তলে এখনো রাউন্ড দুয়েক গুলি জীবিত আছে। যাত্রীবাহী ট্রেন মিস করে একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। সেখানে প্রায়ই ঠোলারা উঠছে। নয়তো টিকটিকি গিজগিজ করছে এখানে সেখানে।
কিন্তু মফিজ শব্দটা তার মাথায় কি করে এলো? সে না সর্বহারা? না। সে সর্বহারা নয়। সর্বহারার শ্লোগান দিলেই কেউ সর্বহারা হয়ে যায় না। সে কেরানির সন্তান। বাপ বহু কষ্টে পড়িয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে পেটি শব্দটা ইরেজার দিয়ে মুছে শুধু বুর্জোয়া হতে পারে। নামটাও রেখেছে সেই মডেল অনুসরণ করে। ফয়সাল খন্দকার। খন্দকাররা সর্বহারা হয় না। তাদের ডাক নামও ফয়সাল হয় না। রেলগাড়িতে নিদেনপক্ষে সেকেন্ডক্লাসে যাতায়াত করা যাত্রীরা খুচরো পয়সা দিয়ে মালগাড়ি চড়া হতদরিদ্র দিনমজুরদের মফিজ বলে ডাকে। যতই লালবই পড়ুক না কেন পেটিবুর্জোয়া খাসলত উবে যায় নি। কারোই কি যায়? হয়তো যায় হয়তো যায় না।
বগীর ভিতরে সে ছাড়া আর আটজন মফিজ মানে দিনমজুর। সাথে একটা করে টুকরি আর কোদাল। না, সবার কোদাল নেই। কোদাল সবমোট তিনটা। এরা তাহলে সবাই মাটি কাটা শ্রমিক নয়। যাদের কোদাল নেই তারা সম্ভবত যোগালী। মিনিট দশেক আগে উঠেছে। মাঝে একজন দুজন কয়েকবার করে তার দিকে উৎসুক দৃষ্টি দিয়েছে।
- ডাহা যাবায়?
একজন জিজ্ঞাসা করলো।
- ঊ? হয়।
কোন রকমে জবাব দিয়ে আবারো ঝিমায় ফয়সাল। আর কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করে না। হয়তো বুঝে নেয় ঢাকায় নেমে তাদের মতোই কামলার সন্ধানে দৌড়াতে হবে। তাই পথের সময়টুকুই একটু বিশ্রাম। কিন্তু ফয়সালের ভয় কাটে না। ভৈরব/নরসিংদী এলাকার ভাষা তার আসে না।
কিন্তু ওরা একটু পর পর ওর দিকে তাকাচ্ছে কেন? ওরা কি পার্টির কেউ? নাকি পুলিশের ইনফর্মার? নাকি নিতান্ত নিরিহ সর্বহারা?
গাড়ি তেজগাঁ পৌঁছতে আরো চল্লিশ মিনিটের মতো বাকি। খুব সাবধানে একবার কোমর চুলকাবার ভান করে পিস্তলটা অনুভব করে নেয়। তারপর খুব সহজভাবে গামছায় বাঁধা টিফিন ক্যারিয়ারের বাটিটা বামপাশে খড়ের উপরে এনে রাখে। একজন মফিজের মুখে হাসি দেখা যায়।
- তুমার বউ নানছুইন?
একটা বোকা বোকা হাসি দেয়। ওরাও হাসে। হাসি দেখে কিছু বোঝা যায় না, নির্দোষ হাসি না শিকার ধরা হাসি।
আচ্ছা নির্দোষ হাসি কী?
ট্রেন ঘটাঙ ঘটাঙ করে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন বাজে সোয়া এগারোটা। সকাল। আরো সকালে হলে মালগাড়িতে শ্বাস ফেলারও জায়গা থাকতো না। তাতে ধরা পড়ার চান্স বেশী ছিল। হয় ধরা পড়তো নয় মাল খোয়াতো।
গাড়ি সামান্য ঝাঁকি খেতে ফয়সাল কাৎ হয়ে পড়লো তাঁর পোটলার উপর। আর একটু হলেই কেলেঙ্কারি হয়ে যেতো। গিঁটের উপর ধাক্কা লাগাতে ঢাকনা খানিক ফাঁক হয়ে গিয়েছিল। তাতে মুহুর্তের জন্য শেখ মুজিবের ছবিওয়ালা বড় নোট উঁকি দিয়েছিল। দ্রুত সামলে না নিলে কী হতো? ভাবতে ভয় করছে।
এতো ভয় আগে কখনো করেনি। এমন কি শেষ রাতে মাহফুজের মাথায় বুলেট ভরে দেবার সময়ও না। খুব দক্ষতার সাথে খড়ের গাঁদায় পুঁতে রেখে এসেছে। রক্তমাখা খড়গুলো ভিতরে দিয়ে তার উপর দিয়ে মোটামুটি দুই ফুট পুরু করে খড় বিছিয়েছে। লাশ বের হতে তিনদিন। আর লাশ পঁচে দুর্গন্ধ বের হতে কতদিন?
মাহফুজ এসেছিল তাকে খতম করতে। কসবা বাজারের মহিউদ্দিন শেখের বাড়িতে রাজনৈতিক ডাকাতি থেকে ফেরার পথে ফয়সালের লাশ ফেলে টাকা নিয়ে আজ বিকালের মধ্যেই গৌরনদী ফেরার কথা ছিল মাহফুজের। পার্টি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ফয়সালকে। গত শুক্রবার সন্ধ্যার গোপন মিটিঙে সিনিয়র কমরেডদের সামনে খতমের লাইন এর বিরোধীতা করার কারণে। শুধু তাই নয় ফয়সালের বিরুদ্ধে পার্টির টাকা আত্মসাতেরও নাকি অভিযোগ আছে। আর সেটা নেতাদের জানিয়েছিল মাহফুজ। টাকার ভাগ দেওয়া সত্ত্বেও মাহফুজ বিশ্বাসঘাতকতা করলো তার সাথে। অথচ স্কুল জীবনের বন্ধু। রাজনৈতিক বিশ্বাস কত অন্ধ করে দেয় মানুষকে। কী হবে মহিউদ্দিন শেখের মতো কয়েকটা জানোয়ারকে মেরে তাদের সিন্দুক খালি করে? কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আরো পঁচিশটা মহি শেখ উঠে দাঁড়াবে। বিপ্লব মানে ব্যবস্থার পরিবর্তন। ইণ্ডিভিজুয়াল টেরোরিজম না। বলেছিলেন ট্রটস্কি। ট্রটস্কি আরো কী কী যেন বলেছিলেন......?...
ট্রেনের দুলুনিতে আবারো চোখ ধরে আসে ফয়সালের........
২.
শ্যাম্পেনের কর্কটা শব্দ করে খুলে ভুশ করে সবার গায়ে খানিকটা ছিঁটে যেতেই তুমুল হাততালি। টেবিলের উপরে রাখা ছয়টা গ্লাসে খুব দক্ষতার সাথে ঢেলে ফেলা গেলো। প্রফেসার হপকিন্স গ্লাস উপরে তুলে বললেন, হোয়ার ইজ ইউর গ্লাস ইয়াং ম্যান? ইউ আর এ ডক্টর নাউ! ফয়সাল লজ্জিত মুখে আরেকটা গ্লাসে খানিক ঢেলে নিতে প্রফেসার বললেন, চিয়ার্স!
সবাই এসেছেন। প্রফেসার হপকিন্স, তাঁর আন্ডারে পোস্টডক স্টুডেন্ট মারিয়া পিটারসন, সোশাল সাইকোলজির ড. রুজভেল্ট হগ, গ্লোবাল পলিটিক্যাল ইকোনমির ড. সেবাস্তিয়ান ক্লুগ, পলিটিক্যাল অ্যানথ্রোপলজির রয় অ্যান্ডারসন আর তাঁর সেক্রেটারি প্রিয়দর্শিনী শ্যারন গিডেন্স। সবার হাতে শ্যাম্পেনের গ্লাস। চুমুক দিতে দিতে সবাই বিশ্বব্যাঙ্ক আর আইএমএফের পিণ্ডি চটকাচ্ছেন।
প্রফেসার হপকিন্স একটু সরে আসেন ফয়সালের দিকে। উই হাইলি এপ্রিসিয়েট য়ূর ডেভেলপমেন্ট মডেল কনসার্নিং মাইক্রোলেভেল এগ্রিকালচার উইথ এ ভেরি কনট্রোলড লেভেল অফ মাইক্রোক্রেডিট। দিস ইজ নট নিউ এনিওয়ে, বাট দ্য ওয়ে ইউ ডিড য়ূর প্রেজেন্টেশান ওয়াজ রিয়েলি কনভিন্সিং।
- থ্যাঙ্ক য়ূ! বলে একটা লাজুক হাসি দিলো ফয়সাল।
- বাট খন্দকার, হাভানা চুরুটের একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে হপকিন্স বলতে থাকেন, ইফ ইউ গেট দ্য ফান্ড, ইউ মাইট হ্যাভ টু চেইঞ্জ এ বিট। য়ূর প্রোপোজাল আই মিন। আফটার অল.....ওয়ার্ল্ড ক্যাপিট্যালিজম ইজ পেইং ফর দ্য চেইঞ্জ। হা হা হা....
- আই নো স্যার।
- আই উইশ য়ূ ডু! সো ইঞ্জয় য়ূর সেলফ ইয়াং ম্যান। বেস্ট অফ লাক! ......অ্যান্ড ওয়ান মোর থিঙ। ডু য়ূ হ্যাভ সিকিউরিটি প্রবলেমস গেটিং ব্যাক টু ইউর কান্ট্রি?
- আই ডোন্ট থিঙ্ক স্যার। থিঙস্ হ্যাভ চেইঞ্জড আ লট ইন লাস্ট ফিফটিন ইয়ারস....
বিকেলে একা একা হাডসন নদীর ধারে হাওয়া খায় ফয়সাল। জীবনে দ্বিতীয়বারের মতো হাভানা চুরুট ধরায়। একেকটা চুরুটে কত সেন্ট করে যায় সমাজতন্ত্রের পকেটে? ফিডেল বলতে পারবে। হয়তো পারবে না.....চে কি পারতো?
৩.
- সার বাড়িজ্জাই...কাম শ্যাষ আইজকার মতো।
- হুঁ...কতবার বলছি আমারে সার বলবা না! ভাই বলবা। নাইলে নাম ধইরাও ডাকতে পারো।
- আইচ্ছা খনকার সাব..
- আবারো সাব?
মফিজ মিয়া হাসে। তার পানবিড়ি খাওয়া দাঁত দেখা যায়। আগামী টার্মের ফান্ডটা এসে গেলেই সবাইকে একবার হাভানা চুরুট খাওয়াতে হবে।
ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক খুব খুশী ফয়সালের উপর। পোস্ট কলোনিয়াল সমাজে কনজিউমারস বিহেভিয়ার বদলাতে ফয়সালের মডেল নিয়ে পশ্চিমে ধন্য ধন্য পড়ে গেছে। ফয়সাল অবশ্য তাঁর যৌবনের রাজনৈতিক অঙ্গীবার ভোলেনি। তাঁর লক্ষ্য তো আসলে কনজিউমারস বিহেভিয়ার পরিবর্তন নয়। তাঁর লক্ষ্য সমাজকে সত্যি সত্যি বদলে দেওয়া। তাই শুধুমাত্র বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের কর্মঠ আর তুখোড় বুদ্ধিমান ছেলেমেয়েরাই এই প্রজেক্টে চাকরি পায়। ক্যারিয়ার বাঁচিয়ে সমাজ পরিবর্তনের এই যূগান্তকারী মডেল যদি ফয়সালের যৌবনে থাকতো বহু মেধাবী প্রাণ অকালমৃত্যু থেকে বেঁচে যেতো।
মার্কসিজম ইজ নট আ ডগমা বাট এ গাইড টু অ্যাকশান......বলেছিলেন কমরেড স্তালিন। লোকটা ট্যালেন্টেড ছিলেন। শুধু কয়লা খনি শ্রমিকের রূঢ়তা থেকে বের হতে না পেরে অতগুলি মানুষের রক্তে হাত ভেজালেন.......
মার্কসিজম ইজ নট আ ডগমা বাট এ গাইড টু অ্যাকশান......খুব খাঁটি কথা বলেছিলেন কমরেড। নিজের সাফল্যে আজ খানিক গর্বও হয় ফয়সালের। হ্যা...গাইড টু অ্যাকশান....অ্যাকশানেই প্রয়োগ, কর্ম....আমল.....
মন্তব্য
ফয়সাল পেটুক বুর্জুয়া নফিজ ----মার্ক্স্র দুলাভাই --সিনডা কি>
সব মিলাইয়া এট্টা সীন...সবাই একসাথে নাচে...আর কয়...এইটা এট্টা গান....
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ভুলে ভরা জিন্দেগী...
জিন্দেগী এক সফর
হ্যায় সুহানা...
ইয়াহা কাল ক্যা হো
কিসনে জানা...
ইডলেই ইডলেই ও ঊঁ.....
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
হায়াৎ দরাজ মাঙ কর মিলা স্রিফ চার দিন
দো দিন কাট গ্যয়া আরজুমে, দো দিন ইন্তেজারমে।।
জিন্দেগী কে সফরমে গুজার যাতে হ্যায় যো মকাম
ও ফির নেহি আতে.....কছ কী !!!!!
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
নিগাহ নেহি হ্যায় জিসকি উ আভি সুরাজ পর
ও ডুবতে হুয়ে তারো কি বাত করতে হ্যায়...
( গুস্তাখী মাফ কি জিয়ে )
এই গল্প নিয়ে আলাপে অক্ষম পাঠক। শিক্ষানবীশ।
স্যারেরা কেউ আসলে তাওয়া গ্রম হইতো হয়তো...
____________
অল্পকথা গল্পকথা
বদ্দার লেখা বোঝা বড় দায়। তবে কথা হইলো সমাজতন্ত্র দেখতে ভালো, শুঁকতে ভালো, শুনলে পরে আরো ভালো কিন্তু চাখতে খারাপ।
ঠিকাছে।
গল্পের লোকগুলাও কেউ চাখে নাই।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
শেষ দুটি প্যারায় বোল্ড টাইপ কেনো সুমন?
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
এহ্ হে.....
আসলে ঐ কথাটা উদ্ধৃত করতে চাইছিলাম। মনে হয় দরকার নাই। বাক্যাংশ হইয়াই থাক।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ঠিক্করা হৈল।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
খতমের লাইন--টাও নর্মাল ফন্টে হোক।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
হৈল
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ঐ
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
জেনেসিসের ভার এখনো কাটেনি দেখে ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে পড়তে এলাম। আপনি তো দেখি গল্পও লেখেন না বোঝার মতো করে
বরং শিমুলের মন্তব্য কোট করি
হা হা হা হা
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ভালো হৈছে, পইড়া মজা পাইলাম।
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
মজা লাগলো।
ধন্যবাদ
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ঠিক বুঝলাম না! হয়ত দুই একটা লাইন বা একটা প্যারা যোগ করলে পাঠকের কাছে পয়েন্টটা পরিষ্কার হত। বিশেষ করে কনজিউমারস বিহেভিয়ার কি ছিল আর কি হবে - সেই পরিবর্তনে পশ্চিমের স্বার্থ কি? এই স্বার্থটা কি নেহায়েত বিজ্ঞানের উন্নতি নাকি অন্য কোন কায়েমী উদ্দেশ্য আছে তার পেছনে এসব প্রশ্নের উত্তর আভাসে ঢুকিয়ে দিতে পারেন গল্পে। যে রাস্তাই নেন বিতর্কের ঝুঁকি আছে। বিতর্ক এড়াতে রাস্তাটা পরিষ্কার যদি না করেন পাঠকদের মনের কুয়াশা কিন্তু কাটবে না।
গল্পটারে আর একটু ঘষামাজা করলে বেশ চমৎকার একটা কিছু দাঁড়িয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। গল্পের চরিত্রের ধ্যান ধারনা নিয়ে বেশ উপভোগ্য বিতর্কও হতে পারে।
মডেলটা চেনা চেনা লাগতাসে। আমাগো ইউনুস সাহেবের মডেল মাইরা দিল নাত আপনার নায়ক? দিলে অসুবিধা নাই অবশ্য...
ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
গল্পে মনে হয় প্রবন্ধের দায় থাকে না। সেখানে লেখক তার ফ্যান্টাসীর সমর্থনে যা খুশী তাই করতে পারেন। যেকোন দিকেই বায়াসড হতে পারেন। লেখকের ইঙ্গীতে বা বিদ্রুপে এমন কিছুও হয়তো থাকতে পারে যা তাঁর নিজস্ব বর্গের বাইরে থেকে কমিউনিকেট করা খানিক কষ্টকর। বলতে চাচ্ছিলাম, গল্প, বিশেষত ছোটগল্প এদিক থেকে অনেকবেশী করে কবিতার কাছাকাছি। আমার মতে উপন্যাসও। পুরো জিনিসটা একটা কম্পোজিশান। আগুপিছু করে পুরো ক্যানভাসটা দেখতে হয়। ক্যানভাসের কোন চরিত্রেই লেখকের নিজের থাকবার কোন দায় নেই। এমন কি সেখানে উত্থাপিত দার্শনিক তর্কগুলিতেও না। কখনো হয়তো মেথাডে থাকেন লেখক, আবার একাধিক মেথাডের কম্পোজিশান হলে সেখানেও চট করে ব্যক্তিটাকে বা তাঁর দর্শনকে পাওয়া যেতেও পারে নাও যেতে পারে।
আপনি যা বললেন বা জানতে চাইলেন সেই বিষয়ে অন্যকোথাও কথা হবে। রাজনৈতিক বা রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র নিয়ে কখনো যদি কিছু মিছু লিখে ফেলি বা অন্যকারো ব্লগে যদি দেখা হয়ে যায় তখন অবশ্যই নিজের কথাগুলি বলবো।
গল্পটা গল্পই থাক। প্রবন্ধ না হোক।
ধন্যবাদ।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
আমার মন্তব্য পরিপক্ক সমালোচকের নয়। একজন সাধারন পাঠকের। সেভাবেই বিষয়টি দেখবেন।
পাঠক হিসাবেও তেমন সমঝদার নই যদিও কিন্তু কিছু কথা কেবল না বলে থাকতে পারছিনা বলেই বলছিঃ
১)
সহমত। অবশ্য গল্পের দায় কিন্তু থাকে। সেই দোহাই দিয়েই বলছি। ধরুন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি লিখলেন। অতিরঞ্জিত অথবা অতি কাল্পনিক হলেও আপনি যে জগতটি রচনা করলেন তার চিত্রটি পাঠক তার কল্পনার জগতে নিজের মত করে দেখার সুযোগ পাচ্ছে কিনা সে দায়টা কিন্তু গল্পকারের থাকে। জুল ভার্নের কল্পকাহিনি যে পদার্থবিদ্যার অনেক মৌলনীতির বিরুদ্ধে যায় সেটা বিজ্ঞানিরা জানেন। যত গাজাখুরি ব্যাখ্যাই দেয়া হোক পাঠকেরা কিন্তু বিরক্ত নয়। কিন্তু গল্পের ভেতর ব্যখ্যাটা কোনভাবে থাকে কিন্তু। আপনার গল্পটি এরকম তত্ত্বের জগতে ঢোকার চেষ্টা করল বলেই প্রশ্ন এসে গেল।
২)
মানছি। হয়ত গোলমালটা এখানেই। এটা হয় গল্পকারকে নাহয় পাঠককে কাটিয়ে উঠতেই হবে। তবে বর্গভুক্তির দায়মুক্তির দায়টা বোধকরি গল্পকারেরই বেশি। অবশ্য গল্পকার চাইলে কোন বর্গভুক্ত পাঠকের জন্য লিখতেই পারেন। এই স্বাধিনতা বোধকরি গল্পকারদের থাকা চাই। কিন্তু, আমার মনে হয় অনেক গল্পকারই হয়ত পারতপক্ষে তার গল্পকে/লেখাকে নিজের আদর্শের গন্ডির বাইরের পাঠকদের গম্যতার মধ্যে নিয়ে আসতে চেষ্টা করেন। সেজন্য আদর্শকে বর্গের বাইরে না আনলেও চলে।
৩)
এতেও কোন সমস্যা দেখছিনা - পাঠক যদি নিজের মত করে শুন্যস্থান গুলো পুরন করে নিতে পারে। কিন্তু আপনার লেখায় এমনকিছু ইঙ্গিত আছে যার অর্থ কল্পনা করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
গল্প বা উপন্যাসের ক্ষেত্রে দায়টা বোধ হয় পাঠকেরই। লেখকের কম্পোজিশান থেকে কোন প্রতিফলন তৈরী হচ্ছে এটা যখন কোন কোন পাঠকের বুঝতে কষ্ট হয় তার দায় হয়তো লেখকের। কিন্তু বুঝতে না পারার যে ব্যর্থতা পাঠকের থাকে তার দায় কিন্তু লেখক নেন না।
ধন্যবাদ।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
- কীরম জানি ঠেকে বদ্দা! কি জানি বুঝলাম, মানে ঐ যে অল্প জ্ঞান ভয়ঙ্করী অবস্থা! তার চেয়ে না বুইঝাই থাকি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
পুঁজিবাদের সর্বশ্রেষ্ঠ উদারহণ দিয়েছে মুখফোড়ের ডাগদর সাব।
ডাগদর সাব কহিয়াছেন,"সবাই তিনটি করিয়া বিবাহ করিবে। দুইটি নিজে রাখিবে এবং তৃতীয় বউটিকে প্রতিবেশীর সাথে ভাগাভাগি করিয়া লইবে। ইহাতে প্রতিবেশীর সহিত বউতুতো সম্পর্ক স্থাপিত হইবে।"
আমি পুঁজিবাদ ভালোবাসি। তাই মাঝে মাঝেই বউ যখন সোহাগ করে জিগায়, "আমার চেয়ে বেশী তোমাকে আর কেউ ভালোবাসবে?" তখন আমি তাকে বলি, "পাশের বাসার মেয়েটাকে একটা সুযোগ দিয়েই দ্যাখো না। পরীক্ষা হয়ে যাবে।"
সমাজতন্ত্র থাকলে সবাই একটা করে বউ পেত কীনা সন্দেহ আছে! তার উপর আবার পার্টি চাইলে ওই এক বউকেই প্রতিবেশীর সাথে ভাগাভাগি করে নিতে হত।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
আবারো দ্রোহীদার মন্তব্যে ঐ
নতুন মন্তব্য করুন