আমার মুখে বুলি ফুটিয়েছেন সুকুমার রায়। বয়স বাড়তির দিকে যেতে যেতে আরো অনেকের অনেক কিছু পড়েছি বা পড়ার ভ্যাক ধরেছি। খাবলা-পরিমাণ হয়তো জেনেছিও। ভুল বুঝেছি সম্ভবত তার নয়দশমাংশই। পুরো জীবনটা ব্লেন্ডারে ফেলে পাস্তা বানিয়ে রাম চিপড়ানি দিলে যতটুকু সারবস্তু তার পুরোটাই হযবরল। "নিঝুম নিশুতিরাতে একাশুয়ে তেতলাতে" প্রবল ক্ষুধার মুখে লাল রঙের সেই ডিমাই আকারের বইটা সর্বশেষ বেঁচে থাকে। সারা দুনিয়া রসাতলে গেলেও "আই গো আপ উই গো ডাউন" ইসিজির চড়াইউৎড়াই নিশ্চিত করে।
জীবনে বহু বস্তুগত গুরুত্বের গুরুকথা বেমালুম হলেও সুকুমার রায়ের অমৃত পদাবলী কখনো ভুলিনি। বেঁচে থাকার শেষ মুহুর্তটুকুও সর্বশেষ স্মৃতিতে সম্ভবত ঐ ছড়াগুলিই টিকে থাকবে।
সুকুমার রায়কে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
মেঘ মুলুকে ঝাপ্সা রাতে,
রামধনুকের আব্ছায়াতে,
তাল বেতালে খেয়াল সুরে,
তান ধরেছি কণ্ঠ পূরে।
হেথায় নিষেধ নাই রে দাদা,
নাইরে বাঁধন নাইরে বাধা।
হেথায় রঙিন আকাশতলে
স্বপন-দোলা হাওয়ায় দোলে
সুরের নেশায় ঝরনা ছোটে,
আকাশকুসুম আপনি ফোটে
রঙিয়ে আকাশ, রঙিয়ে মন
চমক জাগে ক্ষণে ক্ষণ!
আজকে দাদা যাবার আগে
বল্ব যা মোর চিত্তে লাগে
নাই-বা তাহার অর্থ হোক্
নাই-বা বুঝুক বেবাক্ লোক।
আপনাকে আজ আপন হতে
ভাসিয়ে দিলাম খেয়াল স্রোতে।
ছুট্লে কথা থামায় কে?
আজকে ঠেকায় আমায় কে?
আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ্ তবলা বাজে---
রাম-খটাখট্ ঘ্যাচাং ঘ্যাঁচ্
কথায় কাটে কথার প্যাঁচ্।
আলোয় ঢাকা অন্ধকার,
ঘণ্টা বাজে গন্ধে তার।
গোপন প্রাণে স্বপন দূত,
মঞ্চে নাচেন পঞ্চ ভূত!
হ্যাংলা হাতি চ্যাং-দোলা,
শূন্যে তাদের ঠ্যাং তোলা।
মক্ষিরানী পক্ষিরাজ---
দস্যি ছেলে লক্ষ্মী আজ।
আদিম কালের চাঁদিম হিম,
তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম।
ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর,
গানের পালা সাঙ্গ মোর।
মন্তব্য
দারুন লেগেছে, থ্যাংকস এ লট। (সুকুমার রায়ের ছড়াটার কথা বলছি না, ওটা তো কিংবদন্তী; আপনার ১০ লাইনের পোস্টটাই দারুন লাগলো)
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...
আহা, সুকুমার! পুরোটা আবার পড়তে হবে আজই।
সবাই কেবল শৈশবটাকে মিস করাচ্ছেন কেনো ?? ...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
আহা! আজকে আমার মনের মাঝে/ ধাঁই ধপাধপ তবলা বাজে। সেই অনাদিকাল থেকে এযে কতকাল আমার আমার মাথায় ঘুরবে কে জানে...
----------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আমার সারাজীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছিলেন আমার খালাতো বোন নার্গিস'বু, প্রাথমিক বৃত্তি পেয়েছিলাম বলে। সেটি সুকুমার সমগ্র। কেউ সেটি পড়েনি শুনলে তার জন্য বড্ড দুঃখ পেতাম তারপর থেকে। এখনো পাই। সেরকম দুঃখবোধ থেকে নিস্কৃতি পেতে একবার একজনকে বইটি পড়তে দিয়েছিলাম। ফেরত পাইনি। এরপর বহুদিন গন্ধ শুঁকে শুঁকে নীলক্ষেতের বইয়ের গাদা থেকে আরেকটি খুঁজে বের করি। ৫০ টাকায় সেটি কিনে যখন দোকানদারকে বললাম, ভাই এইটা আপনি ২০০ টাকা চাইলেও আমি দিতাম! তখন বেচারার চেহারা দেখবার মতো হয়েছিল!
সেই বইটা কিভাবে হারালাম সেই রহস্য উদ্ধার করতে পারিনি। অনেকদিন পর শাহবাগের প্রথমা'তে একইরকম রিপ্রিন্ট পেলাম মাত্র ৯৯ টাকায়।
যারা পড়েননি অথবা সেই লালমলাটের সবুজ বিড়ালের ছবিওয়ালা বই খুঁজে পাচ্ছেন না, তারা দয়া করে শাহবাগের প্রথমা'তে যান।
হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, নীলক্ষেত প্রিন্টের বইগুলো কিনবেন না। ছড়া-ছবিতে কোন মিল নেই সেখানে। বানানের এবং প্রিন্টেরও তাতে জগাখিচুড়ি অবস্থা। সুকুমারের ছড়ার সঙ্গে ছবি না দেখলে... (কি হবে জানিনা। কি হবে তা আমার পক্ষে বোঝানো সম্ভব নয়।)
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ফরসত্যি। সুকুমার রায়ের এই অদ্ভুত সৃষ্টিগুলোর কথা এ যুগের ক'জন বাঙালীবা জানে। আমি হয়তো পঞ্চাশ জনকে জিজ্ঞ্যেস করে শুধুমাত্র হাতে গোনা দু'একজনের সম্মতি পাই। সুকুমার রায়ের 'আবোল তাবোল' না পড়ে থাকাটা আমার কাছে রীতিমত অকল্পনীয়। জীবনের অতি চেনা দৃশ্যমালা পশ্চাদভূমিতে রেখে, হেয়ালির ছন্দে লিখেছেন তিনি। সেই ছোটবেলার মতই এখনো চোখ গোল করে পড়ি, আর নিজেকে খুঁজে পাই বোম্বাগড়ের রাজা-উজিরদের মাঝখানে, চলে যাই পাগলা জগাই বাড়ির চৌকাঠে দাঁড়িয়ে ছায়াবাজী দেখতে, আবার সেই তিন আহ্লাদীর প্রাণপণ হেসে চলা দেখে নিজের অজান্তেই ফিকফিক করে হেসে উঠি, আদ্যানাথের মেসো আর খগেনকে চিনতে গিয়ে চোখ উঠে যায় কপালে, আমড়াতলা থেকে শুরু করে আবার আমড়াতলায়ই ফিরে আসি...
"ছুটলে কথা থামায় কে?
আজকে ঠেকায় আমায় কে?"
সব কথা বলতে গেলে রাত দিন হয়ে যাবে ... তাই এটুকুই ...
গোপন প্রাণের স্বপ্নলোকে, আলোয় ঢাকা অন্ধকারে মগ্ন হয়ে, ঘণ্টার সুরে একলা বসে সেই পঞ্চ ভূতগনের নৃত্যের আসর দেখি ...
সত্যি। সুকুমার রায়ের এই অদ্ভুত সৃষ্টি গুলোর কথা এ যুগের ক'জন বাঙালীবা জানে। আমি হয়তো পঞ্চাশ জনকে জিজ্ঞ্যেস করে শুধুমাত্র হাতে গোনা দু'একজনের সম্মতি পাই। সুকুমার রায়ের 'আবোল তাবোল' না পড়ে থাকাটা আমার কাছে রীতিমত অকল্পনীয়। জীবনের অতি চেনা দৃশ্যমালা পশ্চাদভূমিতে রেখে, হেয়ালির ছন্দে লিখেছেন তিনি। সেই ছোটবেলার মতই এখনো চোখ গোল করে পড়ি, আর নিজেকে খুঁজে পাই বোম্বাগড়ের রাজা-উজিরদের মাঝখানে, চলে যাই পাগলা জগাইয়ের বাড়ির চৌকাঠে দাঁড়িয়ে ছায়াবাজী দেখতে, আবার সেই তিন আহ্লাদীর প্রাণপণ হেসে চলা দেখে নিজের অজান্তেই ফিকফিক করে হেসে উঠি, আবার আদ্যানাথের মেসো আর খগেনকে চিনতে গিয়ে চোখ উঠে যায় কপালে, আমড়াতলা থেকে শুরু করে আবার আমড়াতলায়ই ফিরে আসি...
"ছুটলে কথা থামায় কে?
আজকে ঠেকায় আমায় কে?"
সব কথা বলতে গেলে রাত দিন হয়ে যাবে ... তাই এটুকুই ...
গোপন প্রাণের স্বপ্নলোকে, আলোয় ঢাকা অন্ধকারে মগ্ন হয়ে, ঘণ্টার সুরে একলা বসে সেই পঞ্চ ভূতগণের নৃত্যের আসর দেখি ...
'আবার পড়ো এক' কম্পলিট, থ্যান্কু বদ্দা
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
নতুন মন্তব্য করুন