জগদম্বা ! রাখিস মা রসেবশে !

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ০৫/১১/২০১০ - ৯:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রবাসীদের বিশেষ করে পশ্চিমের প্রবাসী বাঙ্গালীরা, নিদেনপক্ষে তাঁদের একাংশ ভয়াবহ সাংস্কৃতিক সঙ্কটে পড়েছেন বা পড়তে যাচ্ছেন। উত্তর ভারতের সাংস্কৃতিক আধিপত্যের কাছে ধীরগতির বিষক্রিয়ায় আত্মসমর্পন করে ফেলছেন তাঁরা। এই ব্যাপারে আমার মতে মিডিয়াকে একতরফা দায়ী করা যাবে না। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের জায়গাটা মনে হয় সব থেকে জরুরি। ভারতীয় বা পাকিস্তানীদের সাথে ভাববিনিময়ের ক্ষেত্রে হিন্দি বা উর্দুকে লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা বানিয়ে ফেলছে কিছু বাঙ্গালী এবং এদের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ভারতীয় বাঙ্গালীদের এক্ষেত্রে হয়তো অতটা দায়ী করা যায় না। কিন্তু বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের জন্য ব্যাপারটা একভাবে সাংস্কৃতিক আত্মহত্যার পর্যায়ে পড়ে।

 

কয়েক বছর আগে আমরা মানে কাসেলের বাংলাদেশী ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নতুন কোন ছাত্র এলেই প্রথম দফা তাঁকে সতর্ক করে দেওয়া হবে যে কোন অবস্থাতেই যেন ভারতীয় বা পাকিস্তানীদের সাথে ইংরেজী বা জার্মান ছাড়া অন্যকোন ভাষায় যেন কথা না বলা হয়। শুধুমাত্র পশ্চিবঙ্গের বাঙ্গালীদের সাথে গায়ে পড়ে হলেও বাংলা বলা যেতে পারে। কিন্তু দিল্লী-মুম্বাই-পিণ্ডি-লাহোরের লোকজনের সাথে কোন অবস্থাতেই ম্লেচ্ছভাষার বাইরে যাওয়া চলবে না। কিন্তু ছাত্ররা আর কয় জন? বিপুল অধিকাংশ বাংলাদেশী শ্রমিক, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্তদের কাছে আমরা পৌঁছতে পারিনি।

 

আজ আমার পরিচিত এক সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙ্গালী "দিওয়ালী" উদযাপন করছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম বাঙ্গালীর কালী পূজার আবেদন তো দীওয়ালী বা দীপাবলির থেকে অনেক বেশী। তাহলে কালী পূজা কথাটা উল্লেখ করে দাওয়াত দিলে সমস্যা কোথায়? বলে দিওয়ালীর একটা বৈশ্বিক পরিচয় আছে। কালীপূজা তো শুধু বাঙ্গালীর! তো শুধু বাঙ্গালীর হলে সমস্যা কী? তুমি তো বাঙ্গালী! বলে কালীপূজা ধলাদের বুঝিয়ে বলার অনেক ঝামেলা ইত্যাদি। আমি চুপ করে যাই। আসল কথা হচ্ছে মিডিয়া মারফত লোকে দিওয়ালীটা চেনে। কালীপূজা বলতে গেলেই মিডিয়ার উপর খোদগারী করতে হবে।

 

মনটা খানিক খারাপ হলো। গতকাল দুপুরে ঠিক করেছিলাম প্রদীপ জ্বলবার পরে চলে যাবো ট্রটস্কির উপর একটা সেমিনারে। পরে সন্ধ্যার কী ভেবে ভেড়ার গোস্ত কিনে এনে ম্যারিনেট করে ফেললাম। অচ্ছুৎ বলাইরা চলে যাবার পর থেকে কাসেলে তো সমাবেশটমাবেশের তেমন আর উছিলা পাওয়া যায় না। সেই ভেড়া দিয়ে কাচ্চি ঘন্টাখানেক আগে ওভেনে ঢুকিয়ে এলাম। খেতে কেমন হবে জানিনা। কালী পূজার টিপিক্যাল লুচি আর পাঁঠার মাংস ত আর ম্লেচ্ছদের দেশে হবে না। তাই ভেড়ার কাচ্চি বিরিয়ানীই সই। মা কালী নিশ্চয়ই ক্ষমা করবেন। পাঁঠা হোক ভেড়া হোক আসল কথা হচ্ছে নিহত আমীষ ব্যা করে কিনা।

 

আস্তা আস্তে প্রদীপ জ্বলছে এক এক করে। আমি মিস করছি মুণ্ডুমালীনীর রক্তজ্বিভটাকে।

 

জগদম্বা ! রাখিস মা রসেবশে !


মন্তব্য

তাসনীম এর ছবি

কালীপূজার শুভেচ্ছা...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনার পরিচিত ব্যক্তির কথা জানি না, তবে অনেকে দিওয়ালির শুভেচ্ছা এই কারণে জানায় যে এতে ধর্মের গন্ধটা কম। তবে কালীপুজো আর দিওয়ালি, দুটোরই শুভেচ্ছা জানাতে অসুবিধা কোথায়? দিওয়ালির জন্য কালীপুজোটা বাদ দেয়ার দরকার তো দেখি না।

আপনাকে দু বাবদই শুভেচ্ছা জানালাম, যদিও আসল জিনিস যেটা সেটার বন্দোবস্ত তো করেই ফেলেছেন। আহা, কাচ্চি বিরিয়ানি!

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গুরু, প্রচন্ডভাবে একমত, ব্লেন্ড ইন করার প্রবণতা কেন যে এত বেশি জানিনা, পরিচয় দেবার সময় ও অনেককে দেখি ইন্ডিয়ান বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করতে, আর ভারতী্য লোক দেখলে হিন্দি বলালর অপচেষ্টা, এসব দেখলে গা জ্বলে, মাথাটা হঠাৎ করেই গরম হয়ে উঠে। সেই সাথে বাংলা ভুলে যাওয়া নিয়ে গর্বেরও শেষ নেই

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নৈষাদ এর ছবি

ইন্টারেস্টিং হল এই‘বৈশ্বিক ব্র্যান্ডিং’ এর ব্যাপারটা বাংলাদেশেও ঘটছে। এবং দেশে মিডিয়ার ভূমিকাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ, তার সাথে আমাদের বৈশ্বিক নাগরিক হওয়ার আকুতি এবং কেয়ারলেসনেস।

আমাকে আজ বাংলাদেশে হিন্দুধর্মের দুজন ছেলেমেয়ে তাদের বাবা-মার সামনে বলেছে – হ্যাপি দিওয়ালী। আজ যে দিওয়ালী আপনি জানেন? আমার অবশ্য ব্যাপারটা খারাপ লাগে নাই - সব কিছুই তো করপোরেটাইজেশন/গ্লোবালাইজড হওয়া উচিত । (তবে দেশে নিশ্চয়ই আমরা 'সঙ্কটে' স্টেজে যাব না।)

দুর্দান্ত এর ছবি

আমার জানার ভুল থাকতে পারে, কিন্তু হিন্দু মতভেদে বাঙালীদের সবাই কি একই ধারায় এই দিনটি উদযাপন করেন? মানে রায়েদের আখড়ায় যে রাতে কালিপুজার বলি হত, হাইস্কুলের ঢালের মনোজ স্যাঁকরার বাড়ীতে সেই সন্ধ্যায়ই কি লক্ষীপুজার আলপনা আর প্রদীপজ্বালানো দেখিনি? শবে বরাতের বেঁচে যাওয়া তারাবাতি, মরিচাবাতি আর পটকাগুলোও তো এইদিনেই খালাস করা হত।

নিজেরটা, পরেরটা দুটো নিলে দোষ দেখিনা। তবে মানুষকে নিজেরটা ফেলে দিয়ে পরেরটা নিয়ে দৌড়াতে দেখি, তখন আর মেজাজ ঠিক থাকেনা।

যাউগ্গা, উন্শ আইনা লেকার লাম কাচ্চি!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমার কাছে খাওয়াটাই আসল। কেউ কালী পুজোর দাওয়াত দিয়ে খাওয়াক আর মুসলমানির দাওয়াত দিয়ে খাওয়াক। দিন শেষে তৃপ্তি নিয়ে একটা ঢেকুর দিতে পাল্লেই ইয়া হাবিবি।

আপ্নে এতো কিছু চিন্তা করেন ক্যা। দাওয়াত দিছে, কনুই চুবায়া খাইবেন। তারপর একটা ভেটকি বাদ ঢেকুর দিয়া আয়া পড়বেন।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

নৈষাদ এর ছবি

রাইট। ফিলোসফিটা ভাল লাগল।

অদ্রোহ এর ছবি

আমাদের হলে কালীপুজো উপলক্ষে বেশ একটা উতসবের আমেজ, বাজি-পটকার বিকট শব্দ-ছেলেপেলের উচ্চকিত কোরাস-বারান্দা, ছাদে জ্বলন্ত মোমবাতি, সব মিলে বেশ একটা পরিবেশ।

কালীপুজো-দিওয়ালি দুটোরই শুভেচ্ছা নিন!

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রবাসে থাকিনি তাই প্রবাসের কথা বলতে পারবোনা, তবে দেশের কথা বলতে পারবো। সেসব কিছু বলি।

১। জার্মানপ্রবাসী এক পাকি বাংলাদেশে এলো। সে জার্মানীতে থাকে চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আমাদের অফিসে আসলো একটা কাজে। দেখলাম আমাদের অফিসের কেউ কেউ এবং আমাদের ক্রেতাদের কেউ কেউ তার সাথে কষ্টকৃত ভুল উর্দুতে কথা বলার চেষ্টা করছে। পাকিটা কিন্তু সব প্রশ্নের উত্তর ইংরেজীতেই দিচ্ছিলো। তারপরও ঐ লোকদের ভুল উর্দুতে কথা বলার চেষ্টা বন্ধ হয়নি।

২। আজকাল চাকুরীপ্রার্থীদের প্রায় সবার সিভিতে লেখা থাকে সে হিন্দী ও উর্দু পারে। এমন চাকুরীপ্রার্থীদের যাদের আমার মুখোমুখি হতে হয় তাদের কাউকে কাউকে আমি কয়েকটা প্রশ্ন করি (ক) আপনি কি বলায় ও শোনায় হিন্দী ও উর্দুর মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন? (খ) আমি বাংলা বা ইংরেজীতে একটা বাক্য বলবো সেটা কি আপনি প্রথমে হিন্দীতে ও পরে উর্দুতে অনুবাদ করতে পারবেন? (গ) আমি একটা হিন্দী বা উর্দু লেখা দেখালে সেটা কি পড়তে পারবেন? বলাইবাহুল্য আমার এই পরীক্ষায় আজ পর্যন্ত কেউ পাশ করতে পারেনি। তবু তারা সিভিতে অমন লেখে কেন? কারণ, আজকাল বাংলাদেশে অনেক অফিসেই কর্তা ব্যক্তি ভারতীয় বা পাকিস্তানী। ঠেলেঠুলে হিন্দী/উর্দু বলতে পারলে সেসব কর্তারা তাকে পছন্দ করবে ধারণাটা এমন।

৩। মধ্যপ্রাচ্যে যে বিপুল পরিমাণ নিরক্ষর বা স্বল্পশিক্ষিত বাংলাদেশী কাজ করেন তাঁদের সবাই সেখানে যাবার পর ঠেলেঠুলে কাজ চালাবার মতো হিন্দী/উর্দু বলা শিখেছেন। কারণ ঐ, তাঁদের কর্তারা ঐসব দেশ থেকে আগত। তাই বছর দশেক মধ্যপ্রাচ্য থাকলেও তাঁরা কাজ চালানোর মতো আরবী বা ইংরেজী বলতে পারেন না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আপনার অনুবাদ করতে দেবার ফর্মূলা দারুণ লাগল চলুক

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তারাপ কোয়াস এর ছবি

আমার ধারণা এই 'সাংস্কৃতিক আত্মহত্যার' ব্যাপারটা আমাদের মাঝেই প্রকট। ভারতীয় বা পাকি দেখলেই নিজের চরম ভাঙ্গা হিন্দি প্রদর্শনের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠি। অথচ মজার ব্যাপর হচ্ছে সে দেশের এক বিশাল জনসমষ্টিই(দক্ষিণ ভারত) তাদের দেশের জাতীয় ভাষায় কথা বলতে অনাগ্রহী, অনেকে হিন্দি জানেই না!

যাই হোক কাচ্চি বিরিয়ানির সাথে একটা কড়া ব্লুজ শুনেন, হজমীর বিকল্প হিসাবে হাসি


love the life you live. live the life you love.

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পাভারত্তি আমার কাছে অসাধারণ লাগে।

---
পাভারত্তিকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- আপনার সবচেয়ে প্রিয় মিউজিক কী? পাভারত্তি কইছিলেন- সাইলেন্স।

---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

যুধিষ্ঠির এর ছবি

প্রবাসীদের বিশেষ করে পশ্চিমের প্রবাসী বাঙ্গালীরা, নিদেনপক্ষে তাঁদের একাংশ ভয়াবহ সাংস্কৃতিক সঙ্কটে পড়েছেন বা পড়তে যাচ্ছেন - এই কথাটার সাথে সাধারণভাবে একমত হলেও আপনার দিওয়ালি উদযাপনে আপত্তির সাথে একমত হতে পারছি না। বাঙ্গালী আগে কালিপূজা করেছে বলে এখন দিওয়ালি পালন করতে পারবে না কেন? সফল মার্কেটিং-এর কারণে হোক, বা বিশ্বের আরথ-সামাজিক পট পরিবর্তনের কারণেই হোক, দিওয়ালির আবেদন তো এখন বাঙ্গালীর কাছেও বেশি হতেই পারে। আমার তো মনে হয় হৃদয়ের পরিসর আরও বাড়িয়ে বড়দিন/ক্রিসমাস, ঈস্টার, দুর্গাপূজা, লক্ষ্মীপূজা, দুই ঈদ, হজ্জ্ব, হানুকা - সবকিছুই উদযাপন করা উচিৎ। দ্য মোর, দ্য মেরিয়ার!

লেখাটা খুব তাৎক্ষণিক একটা প্রতিক্রিয়া থেকে এসেছে মনে হলো।

হাসিব এর ছবি

আপনার দিওয়ালি উদযাপনে আপত্তির সাথে একমত হতে পারছি না। বাঙ্গালী আগে কালিপূজা করেছে বলে এখন দিওয়ালি পালন করতে পারবে না কেন?

যুধিষ্ঠির, আমার পোস্টটা পড়ে মনে হয়নি এটা নরম্যাটিভ দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা। অর্থাৎ এখানে আপত্তির বদলে শব্দ/রিচুয়াল কীভাবে কোন প্রভাবে বদলায় সেটার একটা ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে হয়েছে।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

হিন্দী সিরিয়ালাক্রান্ত হওয়ার আগে বাংলাদেশী হিন্দুদের উৎসব তালিকায় কি দিওয়ালী ছিলো কিংবা থাকলে ও কি সেটা কালীপুজার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হরফ এর ছবি

শুভ দীপাবলী ও কালীপূজো। আমাদের ঘোর বাঙালবাড়ীতে আজও দীপাবলীর রাতে লক্ষীপূজো হয় নাম দীপান্বিতা পূজো। আর মেজদাদার (দাদুর ভাই) বাড়ী হয় কালীপুজো, স্বয়ং কালীঘাটের মা কালী আজ লক্ষীরূপে পূজিতা হন মন্দিরে আর আমাহেন ঘোর অধার্মিকরা টিলাইট মোমবাতি জ্বালিয়ে কষা মাংস খেয়েই পরিতৃপ্ত হই হাসি তবে "দিওয়ালি" কথাটা এক্কেবারে পচ্চিমা। এটা ঠিক। যাই হোক জয় মা ত্তারা, রাখিস মা রসেবসে।

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

ব্রুনো [অতিথি] এর ছবি

এতক্ষনে একজন লাইনে এলেন। সবাই দিওয়ালি দিওয়ালি করেন ক্যান? বলেন দীপাবলি কিংবা দীপান্বিতা পুজা। সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি বাড়িতে মোম্বাতি আর মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে দীপাবলি করে আসতে। আমার বাবা-মা ও তাদের বাল্যকাল থেকে এটা করে আসছে। সুতরাং এটাকে মিডিয়ার মাধ্যমে আমদানী করা বললে বোধহয় বাড়াবাড়ি করা হলো।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দুনিয়াটা সুপারমার্কেট হয়া গেসে পুরা ... লেখা সুপার হইসে


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

গৌতম এর ছবি

ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে (বলা ভালো, আমাদের এলাকায়- সেটা সুনামগঞ্জের একাংশ থেকে শুরু হয়ে ময়মনসিংহ পর্যন্ত) কালিপূজার দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালিয়ে নাচাগানা করে কালিপূজা উদযাপন করতাম। একটু বড় হয়ে (মানে ক্লাশ টু-থ্রিতে উঠে) শুনলাম সেটাকে দিওয়ালি বলে। কালিপূজা আর দিওয়ালিতে তেমন কোনো পার্থক্য আমাদের কাছে ছিল না, এখনো নেই। পার্থক্যটা এখন হয়েছে- আগে বাড়িতে আমরা ছোটরা দিওয়ালির আনুষ্ঠানিকতা পালন করতাম, বড়রা কালিপূজার মূল ক্রিয়াদি নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। এখন বাড়িতে ছোটরা নেই; বড়দের সংখ্যাও কমে এসেছে- তারা শুধু ঘটের পূজা সেরে রাখেন; আর আফসোস করতে থাকেন সেই দিনগুলোর জন্য। আমরা সেই ছোটরাও এখন বড় হওয়ার আফসোস করতে থাকি।

আজকে সন্ধ্যায় আমার বাসার বারান্দায় আর সামনের পাশের বাসার জ্বালানো দিওয়ালির মোমবাতির সেই উজ্জ্বলালোকের একটা ছবি এই সুযোগে অ্যাডালাম।

আজকে সন্ধ্যার দিওয়ালির ছবি
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

প্রমিথিয়ুস [অতিথি] এর ছবি

সুনামগঞ্জ অঞ্চলে একে দিওয়ালী বলেনা।বলে দীবানিতা।এই দীবানিতা দীপান্বিতার অপভ্রংশ ছাড়া আর কিছুই নয়।তবে তাদের দীবানিতাকে যে হিন্দীভাষীরা দিওয়ালী বলে সুনামগঞ্জিদের তা অজানা নয়।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

এটা পড়তে পড়তে মনে পরলো 'ভালা লাগা বলে কিছু নাই। এটা মিডিয়ার সৃষ্টি।' অনেক কিছুই ঢুকে যাচ্ছে, কর্পরেটেও বিশ্রিভাবে হিন্দি বলে যায় আরেকটু ইন্ক্রিমেন্টের লোভে... কি আর করা।


পাঁঠা হোক ভেড়া হোক আসল কথা হচ্ছে নিহত আমীষ ব্যা করে কিনা।
হো হো হো
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমাদের কোন কিছুকেই আমরা কোথাও গছাতে পারিনা। নিজেদের ঘাড়ে অন্যেরটা ঠিকই গছিয়ে নেই।

ফরিদ এর ছবি

এমন কিছু না, ধামাকা অফার!

অতিথি লেখক এর ছবি

ইংল্যান্ডে এই ব্যাপারটা আশংকাজনক পর্যায়ে চলে গেছে...আমার ইউনি তে এক বাংলাদেশী মেযে আমাদের সাথে ইংলিশ বলে আর ইন্ডিয়ানদের সাথে হিন্দি বলে....দেখে মনে হয় বাঙালি হযে জন্ম নিযে কি ভুল ই না হযেছে....আচ্ছা কেও কি বলতে পারেন কবে বাঙালি নিজের সংস্কৃতি নিযে গর্ব করতে পারবে....???সেই দিনের অপেক্ষায় আছি........!!!!

tofayel71@gmail.com

স্পর্শ এর ছবি

"এই ব্যাপারে আমার মতে মিডিয়াকে একতরফা দায়ী করা যাবে না।"

কিন্তু এটাতো মিডিয়ারই ব্যাপার। যেমন আমি হিন্দি লিখতে পড়তে না পারলেও। শুনতে পারি। শুনে বুঝতেও পারি। বলার চেষ্টা করিনি অবশ্য। কিন্তু শিখলাম কীভাবে? দুনিয়ার আরো হাজারটা ভাষার মধ্যে কেন হিন্দি? তামিলভাষা তো বুঝি না। বা ফার্সি, বা ফরাসি। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই দেখা যাবে ব্যাপারটা স্রেফ মিডিয়া যুদ্ধে জয় পরাজয় এর ব্যাপার।

যতদিন 'দিল চাহ তা হ্যা' বা 'রঙ দে বাসান্তি' বা 'তারে জামিন পার' এর মত হিন্দি সিনেমা ভারত বানাবে ততদিন মানুষ হিন্দি শিখতেই থাকবে। কেউ কেউ বলার চেষ্টাও করবে।
সংস্কৃতির যুদ্ধে জাতীয়তাবাদ একটি ভ্রান্ত ধারমা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ধুসর গোধূলি এর ছবি
স্পর্শ এর ছবি

বানাতে থাকলে ঠিকই শিখবে।
শুনেছিলাম 'বেঁদের মেয়ে জোছনা' সিনেমাটা অনেক দেশেই চলেছে। এমনকি ভারতেও ওরা বানিয়েছিলো পরে।
আর মাটির ময়নার কথাই ধরুন ওটা কিন্তু বিদেশ ঘুরে এসে তারপর আমাদের ড্রয়িং রুমে ঢুকেছে। তার মানে বিদেশের মিডিয়া কোনো না কোনোভাবে আমাদের মিডিয়ার চেয়ে বেশি 'সৃষ্টিশীলতাবান্ধব'।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

আমার এই মন্তব্যটা অন-টপিক হবে না অফ-টপিক হয়ে যাবে বুঝতে পারছি না। তবে বিরাট হবে - আলাদা একটা পোস্টের সাইজে। তবু, যা হয় হোক ভেবে এইখানেই লিখে ফেললাম - কারন চিন্তাগুলি এই লেখার প্রতিক্রিয়াতেই আসছে।

উত্তর ভারতের সাংস্কৃতিক আধিপত্যের কাছে ধীরগতির বিষক্রিয়ায় আত্মসমর্পন করে ফেলছেন তাঁরা ..... ভারতীয় বাঙ্গালীদের এক্ষেত্রে হয়তো অতটা দায়ী করা যায় না।

ভারতীয় বাঙালীরা কি করবেন না করবেন সেটা অবশ্যই সম্পুর্ণ রূপে তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার এবং এক্তিয়ারভুক্ত। এবং সে ব্যাপারে অন্য কারো কোন প্রশ্নই চলতে পারে না।

তবে তারপরও এ-ব্যাপারে আমার এট্টুস খানি মজার অভিজ্ঞতা এবং অব্জার্ভেশন আছে যেটা এখানে শেয়ার করতে চাই। ২০০৫-এ দিল্লী গিয়েছিলাম মায়ের চিকিৎসার জন্য। যদ্দুর মনে পড়ে দু'মাস মত ছিলাম। এই সময় দিল্লীতে অল্প খানিকটা ঘোরাঘুরির সুবাদে দুয়েকটা ব্যাপার আমার বেশ চোখে লেগেছে (যারা ভারতীয়, বা বাংলাদেশী কিন্তু অনেকবার দিল্লী গিয়েছেন তাদের কাছে এটা হয়ত মার কাছে মামার বাড়ির গল্প মনে হতে পারে)।

দিল্লীতে আমার যখনই রাস্তা-ঘাটে-হাটে-বাজারে-দোকানে-অফিসে-টুরিস্ট-সাইটে (একমাত্র হাসপাতাল ছাড়া যেখানে ওরা আমার পরিচয় জানত) সাধারন কারো সাথে আলাপ বা কথা হয়েছে প্রথমবারের মতো, এবং আমি হিন্দী না জানায় ইংরেজীতে কথা বলতে গিয়েছি - তখন ওরা প্রথমে খুব বিরক্ত ও তারপরে আমার হিন্দী না-জানা ও 'বাঙালী' পরিচয় জানার পরে ভীষন রকম অবাক হয়েছে। এসময় প্রায় ব্যতিক্রমহীন ভাবেই আমাকে শুনতে হয়েছে, "কিন্তু, আপনি তো একদম আমাদের মতো !!!" এই কথাটা যারা বলছে তারা বাঙালী না হলেও, সবাই যে অরিজিনালি উত্তর ভারতের বা নেটিভ হিন্দীভাষী তা বোধহয় নয়। বিভিন্ন প্রদেশের লোকের কাছেই মনে হয় এটা শুনেছি। বাঙ্গালী পরিচয় জানার পর দেখতাম প্রাথমিক ভাবে উষ্ণ ব্যবহারকারী মানুষটা কেমন যেন মিইয়ে বা শীতল হয়ে যেতেন। এরপরেই অবশ্য বিরক্ত প্রশ্ন আসতো যে আমি বাঙালী হলে জাতীয় ভাষা হিন্দী জানি না কেন (অর্থাৎ বাঙালী বলতে ধরে নিয়েছেন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বাঙালী)। তখন আবার আমার "বাংলাদেশীত্ব" ব্যাখ্যা করতে হত। 'বিদেশী' বোঝার পর (!) অবশ্য আগের মিইয়ে যাওয়াটা খানিকটা কমলেও অবাক ভাবটা খুব একটা কমতো না সাথে সাথে।

এই ব্যাপারটা, অর্থাৎ বাঙালী পরিচয় দিলেই "কিন্তু, আপনি তো একদম আমাদের মতো !!!" এই রিয়্যাকশনটা আমাকে প্রথম প্রথম বেশ অবাক করতো - বিশেষ করে যখন বুঝতাম যে তারা আমাকে পশ্চিম বঙ্গের বাঙালী মনে করেই এটা বলছে - যদিও নিজেরা যে সবাই খাস দিল্লীওয়ালা বা উত্তর ভারতীয়, তা কিন্তু নয় - এবং আমার সাথে আসলে এদের অনেকেরই চেহারায় আদপেই কোন মিল নেই!। আমার মনে প্রশ্ন জাগত, তাহলে পশ্চিম বঙ্গের 'বাঙালী'রা কি ওনাদের কাছে 'আমরা' নন, বা ওদের 'আমাদের' বা 'আমরা'র সংজ্ঞার মধ্যে পড়েন না ? আর অন্য ব্যাপারটাও, অর্থাৎ - এই বাঙালী পরিচয়ের পর কিছুটা শীতল হয়ে যাওয়াটাও অবাক করেছে। এসবের মাজেজা বুঝতে আমার বেশ সময় লেগেছে, তবে সবটা বা ঠিকঠাক যে বুঝেছি তা গ্যারান্টি দিতে পারবো না।

আমার ভিসা যদ্দুর মনে হয় ১৫ দিনের ছিল (নাকি ১ মাস?)। গিয়েছিলাম বাই রোড বেনাপোল দিয়ে কোলকাতা হয়ে - কোলকাতা থেকে ট্রেনে দিল্লী। আম্মার ডাক্তার পরামর্শ দিলেন পোস্ট সার্জারি অব্জার্ভেশনের জন্য আরো কিছুদিন থাকতে হবে। সুতরাং ভিসার মেয়াদ বাড়াতে হবে। তাছাড়া আমার পোর্ট অফ এগজিট-ও (এন্ট্রি ও এগজিট একই পথে হতে হয়) বদলিয়ে দিল্লী এয়ারপোর্ট থেকে বাই এয়ার করার জন্য আবেদন করতে হবে, কেননা আম্মা আমার আগেই প্লেনে এসেছেন সরাসরি দিল্লী আর আমাকে ওনার এই হুইলচেয়ারবন্দী অসুস্থ অবস্থায় ওনার সাথেই ফিরতে হবে। এসব কাজের জন্য গেলাম ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের'জয়সলমীর হাঊসে'র ভিসা সংক্রান্ত অংশে। এইখানে কোন এক রহস্যজনক কারনে মনে হলো যেন বেশ একটা ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পেলাম - আমার আগে ওয়েটিং-রূমের কিউতে অপেক্ষমান থাকা আরো ৫০/৬০ (?) জনকে ডিঙিয়ে আমাকে একজন 'বাঙালী' অফিসারের রূমে পিয়ন দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হলো দ্রুত কাজ সেরে দেয়ার জন্য। এইখানে পরিচয় হলো একজন অত্যন্ত বয়স্ক সিনিয়র বাঙালী অফিসারের সাথে যিনি প্রায় সারাজীবনই (২৫ বছর?) ভারতীয় সেন্ট্রাল সার্ভিসে আছেন (এরকমই কিছু একটা বলেছিলেন মনে হয়)। বাংলাটা ঠিক মত বলতে পারেন না - সুদীর্ঘকাল প্রবাসীদের যেমন হয়। তবে ইনি বাংলাদেশেও গেছেন বেশ কয়েকবার সরকারী ভিজিটে। এনার সাথে বেশ খানিকটা খাতির জমে গিয়েছিল এবং এক পর্যায়ে উনি আমাকে 'আপনি' থেকে 'তুমি' বলার পর্যায়ে চলে এসেছিলেন।

তো, এমনকি এই ভদ্রলোক পর্যন্ত যখন সেই একই কথা, অর্থাৎ : আরে, তুমি তো একদম আমাদের মতো (দেখতে) !!!" বিস্ময়সূচক এবং আনন্দিত কন্ঠে বলে ফেললেন, তখন সত্যি প্রথমে প্রচন্ড বিরক্ত বোধ করাটা আর ঠেকাতে পারিনি। কারন এতদিনে বুঝতে পারছি উনি (এবং আগের অন্যান্য সবাই) মূলত 'আমাদের মত' বলতে আসলে স্পেসিফিকালি উত্তর বা পশ্চিম ভারতের মানুষকে বোঝাচ্ছেন যাদের গাত্রবর্ণ 'ফর্সা - এবং যারা 'বাঙালী' নয় বা 'কাল্লু' বা 'কালিয়া' নয়। আর মেলানিনের মশকরায় আমার গাত্রবর্ণটাও বেশ খানিকটা ফর্সাই। তখন মনে হল বলি, "আপনাদের মত' বলতে যদি বাঙালীর মতন বুঝান - তাহলে তো আমি যে 'সেরকমই' সেটা আপনি খুব ভালো করেই জানেন এবং এও বুঝতে পারছেন যে আমি আপনার চেয়ে ঐ বাংলাটা অনেক ভালোই পারি; আর যদি উত্তর বা পশ্চিম ভারতের কারো মতন বুঝিয়ে থাকেন - তাহলে আমি অন্য কারো মত হই বা না হই - মোস্ট ডেফিনিটলি 'আপনার' মত নই! থ্যাঙ্ক ইউ ভেরি মাচ !! ভদ্রলোক কথাটা যখন বলছেন, তখন আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি এই মহান বাণীটা কার শ্রীমুখ থেকে নিসৃত হচ্ছে। দেখলাম আমার সামনে এক বিপুলদেহী ঘটোৎকচের মত ঘোর কৃষ্ণবর্ণ সাক্ষাৎ এক হিপোপটেমাসের মুখ থেকে এই ওহীটা নাযেল হচ্ছে। এই রকম জায়গা থেকে জলদগম্ভীর কন্ঠে 'আমাদের মত' কথাটা বের হতে শুনে প্রথমে আমি একটু হকচকিয়ে আর শিউরে উঠলেও, সাথে সাথেই মনে হয় বুঝতে পারলাম এই 'আমি'টা আসলে কে। এই 'আমি'টা আসলে উত্তর বা পশ্চিম ভারতের 'ফর্সা' গাত্রবর্নের মানুষ যাদের সাথে উনি (এবং কিছু ক্ষেত্রে অন্যরাও) নিজেদেরকে আইডেন্টিফাই করে ফেলেছেন - নিজেদের অজান্তেই নিজেদের 'আমিত্ব' বা বাঙালীত্বকে 'অপরায়ন' করে নিয়ে। আর মনে হয় এই 'আমিত্বের' বা আত্নপরিচয়ের একটা অন্যতম অবচেতন (প্রায় মেটাফিজিকাল?) উপাদান হচ্ছে 'ফর্সাত্ব', আর 'অপরের' (এক্ষেত্রে বাঙ্গালীর) পরিচয়ের উপাদান হচ্ছে তার 'কাল্লু'ত্ব - এবং মনে হয় কিছুটা 'হেয়ত্ব'ও বটে। 'আমরা' ফর্সা, 'কাল্লু'রা 'আমরা' নই, 'আমি' এই 'আমরা'র অংশ, এবং বাঙ্গালীরা 'কাল্লু', আর কি আশ্চর্য ব্যাপার এই ব্যাটা কাল্লুর দেশের লোক এই মহান 'আমরা'-র মতন দেখতে খানিকটা - এই কি তাহলে পুরো সমীকরনটা? দীর্ঘকাল কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করে মনে হয় এত সিনিয়র এবং প্রবীন ঘাগু লোকটিও "উত্তর ভারতের সাংস্কৃতিক আধিপত্যের ধীরগতির বিষক্রিয়ায় আত্মসমর্পন" করার মাধ্যমে কেন্দ্রের এই হেজিমনিস্টিক 'আত্ন' পরিচয়ের, 'আমরা' এবং 'আমাদের'-এর (এবং 'অপরের') এই ডেফিনিশনটা ইন্টার্র্নালাইজ করে আত্নবিলোপ করে ফেলেছেন এমনই ভাবে যে, যে আমার সাথে উনি যে জায়গায় নিজের সাদৃশ্য খুঁজছেন ঠিক সেইখানেই যে বৈসাদৃশ্যটা সবচেয়ে বেশী আকাশ-পাতালভাবে জলজ্যান্ত দৃশ্যমান ও প্রকট সেটা চর্মচক্ষে দেখার পরও বোধের জগতে আসছে না তার। মেলানিনিস্টিক টুইস্টে এমন কিম্ভুতুড়ে আর দমফাটানো হাসির পরিস্থিতে আমি আর পড়িনি !

তবে হাসি পেলেও, পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে শেষমেশ একটা দুঃখজনক উত্তর ভারতীয় সাংস্কৃতিক/রাজনৈতিক, আদর্শিক ও মনোজাগতিক আধিপত্যবাদের নমুনা বলে মনে হয়েছে। আমাকে যারা ঐ ডায়ালগটা শুনিয়েছে, তাদের অনেকে হয়তো 'ফর্সা' এবং ঐ দিকের লোকই ছিলেন (তাতে করে সেটা ভালো হয়ে যাচ্ছে না, তাছাড়া প্রাথমিক ভাবে সেটা যখন স্বদেশের লোক জ্ঞান করেই বলা হচ্ছে), কিন্তু সবাই তো তা ছিলেন না। তাদের কাছে আমার গাত্রবর্ণ কি করে আমাকে তাদের মত বানায় বা এর প্রাসঙ্গিকতা কি - এই কথাটা নিজের মাথায় হাতুড়ি মেরেও উপরের এই ব্যাখ্যাটা ছাড়া আর কিছু বের করতে পারলাম না (আশা করি এজন্যে একটা নোবেল-টোবেল পাওয়া যাবে)।

গাত্রবর্নের এই সাংস্কৃতিক ও মনোজাগতিক গুরুত্ব ও আধিপত্য আমি ঐখানে আরও অনেকবার বিভিন্ন সময় দেখেছি - আর টিভিতে হিন্দী চ্যানেলগুলিতে এগুলি হরহামেশাই সবাই দেখতে পায় যেখানে নির্লজ্জ ভাবে গৌরবর্ণের আর গৌরবর্ণ মানুষের প্রশংসা ও শ্রেষ্ঠত্ব আর অ-গৌরত্বের ও অগৌর মানুষের অগৌরব প্রকাশ করা হয় নানা ভাবে। সরাসরি বা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে। তবে সেটা আরো দুঃখজনক হয়ে যায় যখন সেটা একই দেশের মানুষের মধ্যে 'আমরা' আর 'ওরা'-র পর্যায়ে নেমে আসে এবং মর্যাদাগত পার্থক্য নির্দেশ করে বলে প্রতিভাত হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"আমরা" "তোমরা"র ব্যাপারটা গায়ের রঙ, নাকের খাড়াত্ব, শারিরীক উচ্চতা, শারিরীক গঠন, মাথার আকার এইসব গৌন ব্যাপারগুলোর বাইরে আরো কিছু মুখ্য ব্যাপারের ওপর নির্ভর করে। সেজন্য চেন্নাইতে একজনকে হিন্দীতে প্রশ্ন করলে তামিল বা ইংরেজীতে উত্তর শোনা যায় আর কোলকাতায় বাংলায় প্রশ্ন করলে হিন্দীতে উত্তর শোনা যায়। যদি বলেন এই তথ্য কোথায় পেলেন? তাহলে উত্তর হচ্ছে নিজের চোখে দেখেছি, নিজের কানে শুনেছি; এবং তা দু/এক জায়গায় নয়, দু/এক বার নয়, দু/এক দিন নয়। কোলকাতায় কিউতে দাঁড়িয়ে ভুল হিন্দীতে দুই বাঙালীকে গালাগালি ও ঝগড়া করতে দেখেছি। প্রকাশ্যস্থানে নিজের ভাষায় গালি দিতে পারার বা ঝগড়া করার ব্যাপারেও কি সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়ে গেছে?

ভাষার কথা বাদ দিন, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোতে বহুযুগ ধরে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল থাকলেও নিজেদের দাবী আদায়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব আঞ্চলিক দল নেই। বলতে পারেন তার দরকারটা কী? উত্তরটা তামিলনাড়ু বা কর্নাটকের অর্থনৈতিক অবস্থা আর পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনা করলেই পাবেন। আরো বলতে পারেন আঞ্চলিক দল হলেই কি উন্নয়ন নিশ্চিত হবে? তার উত্তরটা হচ্ছে ভারতের মতো বহুজাতিক ও বিশাল জনসংখ্যার দেশে কেন্দ্রে বার্গেনিং করার জন্য আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের বিকল্প নেই। জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে গোটা দেশ জুড়ে এত বেশি ইস্যু সামাল দিতে হয় যে তাদের পক্ষে বিশেষ কোন রাজ্যের জন্য বার্গেনিং করা সম্ভব না। রাজনৈতিক ভাবে অগ্রসর পশ্চিমবঙ্গের নিজেদের আঞ্চলিক দল না থাকার (বাংলা কংগ্রেস টিকে থাকতে পারেনি, তৃনমূল কংগ্রেস নিজেদের আঞ্চলিক দল বলেনা) পেছনের কারণের একটা বড় কারণ হচ্ছে “আমরা” “তোমরা” সংকট।

বাংলার মতো পাঞ্জাবও ভাগ হয়েছিল। ভারতের পাঞ্জাবেও (পাঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডে বিস্তৃত) পাকিস্তান থেকে আগত বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস করেন; কিন্তু পাঞ্জাব কি “আমরা” “তোমরা” সংকটে ভোগে?

১৯১২ সালে দেশের রাজধানী কোলকাতা থেকে দিল্লীতে সরিয়ে নেবার সময় কোলকাতা জুড়ে কি বিক্ষোভ-মিছিল হয়েছিল? না, অমন কিছু পড়তে পাইনি কখনো। এত নিরবে, নির্দ্বিধায় বাংলার মানুষ এটা মেনে নিল? প্রতিবাদ না করার পেছনেও কি এই সংকট কাজ করেছিল?

বিমল মিত্রের “কড়ি দিয়ে কিনলাম”-এ একটা চরিত্র ছিল (নাম ভুলে গেছি) যে নিজে বাঙালী হয়ে সাহেবদের কাছে নিজেকে দক্ষিণ ভারতীয় বলে পরিচয় দিত। বোঝা যাচ্ছে “আমরা” “তোমরা”র সংকট বেশ পুরনো, এবং গভীর।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

আমি তো আসলে সেটাই বলছি। এটা আসলে গায়ের রঙের ব্যাপার না - এটা মানসিকতার ব্যাপার। গায়ের রঙটা উপলক্ষ মাত্র।

আমার মনে হয় এই “আমরা--তোমরা”র সংকটের ৩ টি মাত্রা বা রূপ আছে - উচ্চমন্যতা (কোন-কোন ক্ষেত্রে তা সুচিন্তিত আধিপত্যবাদের রূপ নেয় ), হীনমন্যতা, আর স্বাধীনচিত্ততা বা আত্নমর্যাদা।

আমার ১ম মন্তব্যে যে বাঙালী ভদ্রলোকের উদাহরন দিয়েছি বা আপনি যে বাঙালীদের উদাহরন দিলেন - তাদের ঐ আচরনগুলি তাদের হীনমন্যতাবোধের, তাদের দুর্বলতার, এবং সেই সাথে সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদের সাব্লাইমিনাল মেসেজের ধীরগতির বিষক্রিয়ার কাছে আত্মসমর্পনের ফলাফল ও নমুনা।

আবার, "আপনি একদম আমাদের মতো দেখতে" বা "আপনাকে বাঙালী (বা মুসল্মান, হিন্দু্‌, ইন্ডিয়ান, চাইনিজ বা অন্য কিছু) বলে মনেই হয় না" - এই কথাগুলি যখন প্রশংসা-সূচক কন্ঠে বলা হয় তখন সেটা আসলে প্রশংসা নয় বরং নিন্দাসূচক 'উচ্চমন্যতা'র প্রকাশ - এবং অনেকক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন রেইসিজম, এথনোসেন্ট্রিসিজম ইত্যাদির উদাহরন। আমাকে যখন ঐ বাঙালী ভদ্রলোক "আপনি আমাদের মত..." বলছিলেন তখন সেটা ছিল তার হীনমন্যতার প্রকাশ, আর ঐ একই কথা যখন কোন ধলা চামড়ার লোক বলে তখন সেটা হয় তার উচ্চমন্যতা। যেমন, হাওড়া স্টেশন থেকে দিল্লীর ট্রেন কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে এটা জানার জন্য তথ্য কেন্দ্রের কাউন্টারে বসা অবাঙালী মহিলাকে যখন ইংরেজীতে প্রশ্ন করলাম (বাংলাতেও একবার ট্রাই করেছি) তখন ঐ মহিলা আমাকে 'বাঙালী' মনে করে হিন্দীতে বলার জন্য রীতিমত ধমকাতে থাকে, অথচ একটু পরেই দেখি এক ইউরোপীয়র সাথে ঠিকই ভাঙা ভাঙা ইংরেজীতে কথা বলছে। এটা কি ? ঐ মহিলা কি দক্ষিন ভারতের কোন রাজ্যের ট্রেন স্টেশনে ঐখানকার কোন লোককে 'হিন্দী' বলার জন্য এভাবে ধমকাতে বা পীড়াপীড়ি করতে পারতো ? কদাপি না। এটাও একধরনের আধিপত্যবাদ ও উচ্চমন্যতাজাত আচরন যা হয়তো ঐখানকার বাঙালীদের হীনমন্যতাবোধ ও দুর্বলতার কারনে আরো সুযোগ পায়।

আর, আপনি দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোর আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের যে উদাহরন দিলেন বা "চেন্নাইতে একজনকে হিন্দীতে প্রশ্ন করলে তামিল বা ইংরেজীতে উত্তর শোনা যায়"-এর যে উদাহরন দিলেন সেটা হলো চারিত্রিক দৃঢ়তা আর প্রখর আত্নমর্যাদাবোধের বহিপ্রকাশ - যার অভাব বাঙালীদের মধ্যে প্রবল ভাবেই রয়েছে। দিল্লীতে এমনকি জানা সত্বেও ইংরেজীও না বলার প্রবনতা কোন কোন সময় অনুভব করেছি (এটা অবশ্য আমার অনুমানমাত্র) এই আত্নমর্যাদাবোধের কারনে।

এগুলিই হচ্ছে ঐ 'আমরা-তোমরার' বিভিন্ন মাত্রা বা চেহারা। একটা বহুজাতিক বা বহু-সাংস্কৃতিক দেশে অবশ্য এই 'আমরা-তোমরার' মধ্যে মিথস্ক্রিয়া আর ওভারল্যাপ হতে পারে - এবং হতেও হবে। কিন্তু মিথস্ক্রিয়াটা যদি হয় একতরফা আর ওভারল্যাপের মানে যদি হয় আত্নমর্যাদাহীন আত্নবিলোপ - তখনই সেটা দুঃখজনক আর দুর্ভাগ্যজনক হয়ে যায়।

ও হ্যাঁ, আমাদের এখানেও যে এরকম হীনমন্যতার ছড়াছড়ি আছে তাতো আলোচিত হয়েইছে এখানে। আমাদের এখানে এর অন্যতম প্রকৃষ্ট এবং চরম বিবমিষাকর উদাহরন হলো সাংবাদিকদের দেশের একান্ত অভ্যন্তরীন সমস্ত বিষয়ে পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রদূতদের মতামত জানতে চেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ার অশ্লীল প্রতিযোগিতা। আমাদের কোন নেতা বাথরুমে গিয়ে একবারের জায়গায় দুইবার কোৎ পেড়ে ফেলেছেন - হায় হায় কি হবে, দেবদূতের সার্টিফিকেট না পেলে তো আমাদের দেশ-সংবিধান সব অশুদ্ধ হয়ে যাবে - যাও গিয়ে এব্যাপারে ইইঊর হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের মতামতের জন্য তার উপর ঝাপিয়ে পড়! এখানকার মিডিয়ার এই হীনমন্যতা, আদিখ্যেতা আর দেউলিয়াত্ব দেখলে রাগে নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছা করে।

কিছুদিন আগে একটা দেশি চ্যানেলে দেখলাম চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মার্কিন স্ত্রী ক্যাথারিন মাসুদের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেয়া হচ্ছে একটা অনুষ্ঠানে। এটা ছিল বাংলা চ্যানেলে বাংলাদেশীদের জন্য একটা বাংলা অনুষ্ঠান আর ক্যাথারিনও পুরো সাক্ষাৎকার/আলোচনাটাই একদম সহজ, সাবলীল, ফ্লুয়েন্ট বাংলায় করেছেন। আসলেই চমৎকার বাংলা বলেন উনি। আমিতো বলবো অনেক বাঙালীর চেয়েও। অথচ কি আশ্চর্য, বানগালী উপস্থাপক মশাই দেখি একটু পরপর একদম খামাক্কা ওভারস্মার্টনেস দেখানোর জন্য ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে ইঞ্জিরি বলার চেষ্টা করছেন - আবার তাও ইশটাইল মারতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলছেন বা কঁকাচ্ছেন। কেনরে বাবা, কে দেখবে তোর এই ইঞ্জিরি-বিদ্যা - যারা দেখবে তারা তো সবাই তোর মত ভেতো বাঙালীই, নাকি? তাইলে এত ফুটুং-ফাটুং এর অপচেষ্টা কেন, বিশেষ করে যার সাক্ষাৎকার নিচ্ছিস সেতো দেখছি নির্বিকার চিত্তে গড়গড়িয়ে তোর চেয়েও ভালো বাংলা বলে যাচ্ছে এবং তোর বাংলা তার না বোঝার কোন লক্ষনই দেখছি না। বরং তোর সব ইঞ্জিরি-অপপ্রয়াসের জবাব সে অত্যন্ত ধৈর্য-সহকারে একদম বিশুদ্ধ বাংলাতেই দিচ্ছে। আসলে, যেসব বিদেশী দিব্যি বাংলা বুঝে ও বলতে পারে এমনকি তাদের সাথেও ইংরেজি ফুটানোর মধ্যে একটা প্রচ্ছন্ন মেসেজ আছে, আর সেটা হল - 'দেখ, আমি কি সুন্দর ইঞ্জিরি কইতে ফারি, এক্কেবারে তোমাগো লাহান। আমি অই ইঞ্জিরি না-জানা (বা কম-জানা), মুখ্যু-সুখ্যু, গরীব-গুব্বো ছোটজাতের বাঙ্গালীগো লাহান না - আমি তোমাগো লাহান অতি উচ্চ জাতের লোক! আমি তো তোমাগোরই গো ! (কইলে এককথায় তোমার পশ্চাৎদেশও চাইটা দিমু, তবু 'অগো' মতন হমু না !)

এর চেয়ে অশ্লীল, কুৎসিত হীনমন্যতা আর কি হতে পারে ?!!

দ্রোহী এর ছবি

জয় মা তারা! ব্যোম কালী! [সাড়ে চুয়াত্তর অ্যাকসেন্টে]


কাকস্য পরিবেদনা

হিমু এর ছবি

কালীপূজার ধার ধারি না, তবে সামনে কিছুদিন কালিপূজা করবো। আর আজকে বদ্দার বাড়িতে সেইরাম ভেড়ার গোস্তের কাচ্চি খায়াসলাম। এখন আবার খাইতে মন চাইতেছে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হ, আমিও আজকে দিওয়ালী খাইছি।
তবে আমি মা কালির পক্ষে। মা আমার এক্কেরে খাঁটি বাঙ্গালী।
তোর নামে কালি, মুখে কালি, অন্তরে তোর নাই কালিমা!
এবার তোরে চিনেছি মা।।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

কৌস্তুভ এর ছবি

তাই তো বলি, আপনারা কালাকোম্পানীর লোকজন কালীরে ভাল না পেয়ে যাবেন কৈ? চোখ টিপি

কৌস্তুভ এর ছবি

ব্যোম কালী! [সাড়ে চুয়াত্তর অ্যাকসেন্টই বেস্ট]

দিওয়ালি উত্তর-পশ্চিম ভারতীয় উৎসব, এই অর্থে, যে দীপাবলীকে ওদের ভাষায় তাই বলে। আমরা ছোটবেলায় কালীপুজো দীপাবলী দুটোই বলতাম। সেকুলার হয়ে আলো নিয়ে খেলতে চাইলে মূলানুগ আর মাতৃভাষাসম্মত দীপাবলী বললেই হয়। এইটাই বোধহয় উপরে হরফও বলছেন।

এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হয় বৈকি। আমাদের এক জর্জিয়ান বান্ধবী (জর্জিয়া স্টেট না, পূর্ব ইউরোপের রাষ্ট্র জর্জিয়া) ফেসবুকে স্টেটাস দিয়েছে, 'গ্রিটিংস অফ দিওয়ালি টু অল মাই ইন্ডিয়ান ফ্রেন্ডস'। তাকে কি আর কালীপুজো বোঝাতে যাব? খাইছে

রানা মেহের এর ছবি

অন্য দেশের লোককে বোঝানো কঠিন, মানি।
কিন্তু বাঙালিরা দীপাবলির মতো একটা চমতকার শব্দকে দিওয়ালি দিয়ে প্রতিস্হাপন করলে খুব বিরক্ত লাগে।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বাংলা ভাষাভাষী ম্যালা লোক দীপাবলি কইবো না, কইবো দিওয়ালি। এই কাজকারবার দেখলে চরম পেইন লাগে।

-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

নাশতারান এর ছবি

বাঙালি এখন গায়ে হলুদকে হালদি, দুলাভাইকে জিজু, পরোটাকে পারাঠা, জিলাপিকে জেলেবি বলে। এমন উদাহরণ খুঁজলে আরো পাবেন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

হাসিব এর ছবি

দুলহা দুলহান বাদ পড়ছে লিস্টিতে।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

নাশতারান এর ছবি

লিস্ট ভালোই লম্বা। শুধু শব্দ না, পুরা বাক্য হিন্দিতে বলার চলও আছে। বাংলার ফাঁকে ফাঁকে হিন্দি কোটেশান।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।