অথচ ব্লগিংটাই করতে চেয়েছিলাম।
ফেইসবুক দৈনিক প্রচুর সময় খায়। কিছুটা অতীত পরিক্রমায় বুঝলাম ব্লগে আমার সুদীর্ঘ বন্ধাত্বের বিষয়টা ফেইসবুকের সাথে অনেকখানি জড়িত। ফুটসফাটুস দুএকলাইন লিখে ফেললাম, পছন্দমতো লিঙ্ক দিয়ে দিলাম, তারপর বাকি কথা মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যে। বেশ একটা নেশার মতো। ব্লগের চাইতে অনেক দ্রুত পিনিকে পৌঁছে দেয়। আগে দিনের যখনই হোক যেখানেই হোক ইন্টারনেটওয়ালা কম্পু পেলেই একবার ব্লগে একবার ফেইসবুকে ঢু মারতাম। সেখানে নিকট অতীতে দেখা গেছে প্রতি দশ বারের মধ্যে চারবারের বেশি ব্লগে ঢোকা হচ্ছে না, অথচ ফেইসবুকে দশবারই। সপ্তাহ খানেক আগে দিলাম ফেইসবুক বন্ধ করে। কতদিনের জন্য জানি না। নেশাটা এমনভাবে ধরে বসেছে, কখন ক্ষণিকের উত্তেজনায় ফুড়ুৎ করে লগইন করে বসি ঠিক নাই। তাই নিজের কাছে কোনরকম প্রতিশ্রুতি ছাড়াই স্রেফ বন্ধ করে রাখলাম।
কারণ নেটে বাংলা লেখা এবং লিখতেই থাকার জন্য বছর সাতেকের কিছু আগে থেকে আমরা যারা ব্লগে সমবেত হয়েছিলাম, নেটে সক্রিয় থাকতে ব্লগিংটাই তাদের জন্য ফরজে আইন। না লিখতে না লিখতে একসময় লেখার অভ্যাসটাই হারিয়ে যায়। তাতে ক্ষতি লেখকের নিজের ছাড়া কারো না। কারণ লেখকের সংখ্যা হু হু বেড়ে চলছে এবং সেটা বাড়তেই থাকবে। যারা লিখতে থাকবে তাঁদের কথাগুলি বলা হতে থাকবে। যারা লিখবে না তাঁদের কথাগুলি বলা হবে না। বিষয়টা ঠিক এরকমই সহজ।
তাই ফিরলাম। জোর করেই ফিরলাম। কিন্তু কী লিখবো? ব্লগ হন্তারক আইন আঙ্গুলে গিট্টু মারার সবরকম ব্যবস্থা করে রেখেছে। এই আইনের ধারাউপধারাগুলি রীতিমতো ১৮৭৬ সালের নাট্যনিয়ন্ত্রণ আইনের সমতুল্য। কোন কথায় কখন কার কোন অনুভুতি আহত হবে তার কোন নিয়ম নাই। সব থেকে বিপজ্জনক হচ্ছে কোন লেখাটা অনুভুতিতে আঘাত হানার মতো বা উস্কানিমূলক তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নির্ধারণ করবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ব্যবস্থা পাকাপাকি। বাংলা ব্লগাবর্ত বেড়ে উঠবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে গণহত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী আর সেই সূত্রে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের সর্বাাত্মক বিরোধিতায় সেক্যুলার চেতনার মতাদর্শিক লড়াইটাই প্রভাবকের কাজ করেছে। সেখানে বিরোধি মতানুসারিদের প্রতিক্রিয়াশীল অনুভুতিকে আহত করা এবং তাঁকে পরিবর্তনের পথ দেখানোই সারকথা। যারা সকলের জন্য ভালো কথা বলতে চেয়েছেন তাঁরা অন্তত বাংলা ব্লগাবর্তে সুবিধা করে উঠতে পারেন নাই। সকলের জন্য ভালো কথা বলতে গেলে একই সাথে মা কালী আর রক্তবীজ অসুরের পক্ষে বা একই সাথে মজলুম আর জালিমের পক্ষে কথা বলতে হয়। ঐভাবে পেশাদার সুশীলগিরি হয়। ব্লগিং হয় না।
তাহলে ব্লগিং করবো কীভাবে? ব্লগ হন্তারক আইনকে শ্রদ্ধা করে এই প্রশ্নের সমাধান অসম্ভব। লিখে যেতে হবে যেভাবে লিখছিলাম সেভাবেই। বাংলাব্লগের টিনের তলোয়ার যাদেরকে পীড়া দিচ্ছে তারা পীড়িত হতে থাকুক। ইতিহাসকে শেষ বিচারে মজলুমের পক্ষে ধরে নেওয়ার ঘাড়ত্যাড়ামি ছাড়া ব্লগিং হবে না। কারণ আমরা ব্লগিংটাই করতে চেয়েছি।
মন্তব্য
'লিখে যেতে হবে যেভাবে লিখছিলাম
সেভাবেই। বাংলাব্লগের টিনের তলোয়ার
যাদেরকে পীড়া দিচ্ছে তারা পীড়িত হতে থাকুক।
ইতিহাসকে শেষ বিচারে মজলুমের
পক্ষে ধরে নেওয়ার
ঘাড়ত্যাড়ামি ছাড়া ব্লগিং হবে না। কারণ
আমরা ব্লগিংটাই করতে চেয়েছি।'
সেই
কথা সত্য !
ফেইসবুক থিকা আমিও আপাতত বিদায় নিছি। কারণ শেষ বিচারে আমি ব্লগারই, লাইক গোনা ফেইসবুকার না। সামনে কঠিন সময় আসতেছে। সময়টারে লেখায় তুলে রাখতে হবে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মিলিটারি+ঞলিবারেল নিয়া ডিটেলস আলোচনা হওয়া খুব দরকার এখন। বিশেষ কইরা এখন থিকা শুরু কইরা আগামী তিন চার মাস।
অজ্ঞাতবাস
অল্প লোকে ৫৭ ধারা ভাঙলে সরকারের সুবিধা ব্যাপক। ধরো আর ভরো, দরকারে জাদুর বাক্সে দুই একবার দেখাও, বাকি পুরা দুনিয়া তেজ গিলে ঠাণ্ডা মেরে যাবে।
তলোয়ারবাজি তাই জারি থাকা জরুরী।
কাজের কাজ করছেন একটা। প্রায় একই রকম উপলব্ধি থেকে গত ছয়মাস যাবত ফেসবুক বন্ধ করে রেখেছি। এখন রাতে ঘুম ভালো হয়। নিয়মিত গল্পের বই পড়তে পারি। রীতিমত মাথার অবস্থা ছ্যাড়াব্যাড়া হতে বসেছিলো। লেখালিখি তো ভুলতেই বসেছি প্রায়। এখন রিহ্যাবিলিটেশন চলছে। গত তিনচার বছর ফেসবুকিং করে দেশ জাতির কোনো উপকার করতে পারসি বলে মনে পড়ে না। সস্তাপিনিক ম্যালা পাইসি। কিন্তু ব্লগের সাথে তুলনা হয় না।
তবে আজকাল একটা সমস্যা হয়। অনেক জরুরি ইভেন্টের রেজিস্ট্রেশনের জন্যও ফেসবুক পাতা খুলে বসে। সেইগুলাতে যোগ দিতে পারি না।
আপনার ব্লগিং বহুপ্রসু হোক।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
নতুন করে আবার স্বাগতম।
লিখতেই থাকুন, পালাবেন কোথায়?
আগ্রহীরা টিনের তলোয়ারে আহত হতে থাকুক।
শব্দ পথিক
নভেম্বর ৭, ২০১৩
ওয়েলকাম ব্যাক।
আপনার এই সিদ্ধান্তে "লাইক" দেয়ার জন্য অনেকদিন পর লগিন করলাম
প্রতিদিন ভাবি ফেসবুক বন্ধ করে দেবো। কিন্তু প্রতিদিনই জানি, পারবো না। এটাকে সঙ্গে নিয়েই ব্লগিংটা জারি রাখতে হবে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমিও ঠিক এটাই লিখতে যাচ্ছিলাম।
লন সবাই একযোগে ব্ল্যাকআউটে যাই, তিনদিনের জন্য, ফেসবুক থেকে। এই তিন দিনের মধ্যে যা কিছু বলার, বলি সচলে। স্ট্যাটাসগুলা মেরে দেই কলরবে, হালকাপাতলা গড়নের নোট আকারের লেখাগুলো সচলেই পোস্ট মেরে দেই, আর হুদাই হাদুমপাদুম করার মঞ্চাইলে চরম উদাস নাইলে তাড়েকাণুর পোস্ট তো আছেই। আলোচনা টানতে টানতে, চিপাইতে চিপাইতে ডানদিকের মার্জিন ছাড়ায়ে নিয়ে যাই আগের সেই সময়গুলোর মতো!
সচলের মডুরা অনেকদিন খাটাখাটনি করে না। লন এই চান্সে তাগো ভুড়ির মেদ কিঞ্চিৎ কমাই। সচলের ইতিহাসে এক ধুগো আর দুই দ্রোহী মেম্বরই মন্তব্যের কোটা শেষ করে ফেলার পালোয়ানগিরি দেখাইতে পারছে। আপনিও এই সুযোগে বিরল এই পালোয়ানগিরি প্রকাশের সুযোগ গ্রহণ করুন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
নামানোর কথা ভাইবো না। নামাইয়া ফালাও। পোস্ট/মন্তব্য/কলরব সবকিছু।
অজ্ঞাতবাস
facebook
লাইনে আসুন বদ্দা- লিখে যান
facebook
একমত - আসুন চেষ্টা করি।
____________________________
আপনাদেরকে ব্লগে ফিরে পেলে আমরা যারা নতুন ব্লগার, তাদের অনেক সুবিধা হবে। আসেন ভাই , বুকে আসেন।
____________________________
এই বুদ্ধিটা খারাপ না । একসংগে ব্ল্যাকআউট ।
ফেসবুকে ২ লাইনের চুটকি লিখে সেলিব্রেটি হওয়া যায় । লেখক হওয়া যায়না । যায়না পাঠকের মনের গভীরে পৌছানো ।
ঘচাং ফু
জয় মা বলে ভাসা তরী ......
ব্লগিং জারি থাকুক ।
তলোয়ার তোলো সেনানী, যুদ্ধ এখন আরো বিস্তৃত, অদ্ভুত সে আঁধার আরো ঘন আজ, যে শেয়াল আর শকুনেরা মানুষের হৃদয় খেয়ে বেঁচে থাকে তারা আজ সর্বত্র, তাদের মুখোশে মুখোশে চারদিক ছয়লাপ। তোমার টিনের তলোয়ার খসাক মুখোশ সে সব।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আপনার ঝাঁঝালো কলম মিস করতাম। ফের চালু হলে ভাল লাগবে।
দেশের ব্লগারদের এমনিতেই মাথার উপর বেসরকারী নানা ধারা নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়, এখন সরকারী সাতান্ন ধারাও যোগ হল।
একবিংশ শতাব্দীতে বাঙালির শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার হলো ধর্মানুভূতিতে আঘাত এবং ৫৭ ধারা।
ফিরে আসায় স্বাগতম, আশা করি আবারো আগের মতো লেখবেন এবং সচল হয়ে উঠবে সবার অংশগ্রহনে প্রাণবন্ত।
মাসুদ সজীব
ঠিকই বলেছেন। যখন ব্লগিংটা সরবে চালু ছিলো, তখন এর বাইরে নিজস্ব গবেষণামূলক লেখালেখিগুলাও সবেগে চলছিলো। কিন্তু বিগত বেশ ক'টি মাস ধরে ব্লগিং সরিয়ে রেখে ফেসবুকে একটু বেশিই আসক্ত হয়ে পড়ার পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে নিজস্ব লেখালেখিগুলোও প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে ! ইদানিং ফেবুর আসক্তি অনেকটাই কমিয়ে এনেছি, কিন্তু লেখালেখির সেই নিজস্ব গতিটা এখনো ফিরে আসেনি। হতে পারে ব্লগিংটাই বড় দাওয়াই-এর কাজ করবে।
সাতান্ন ধারার চোখ-রাঙানি সত্ত্বেও শেষতক নিজস্ব রাস্তায় ফিরে আসতেই হবে ! পথিক হয়েছি যখন, পথই ভরসা !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ফেসবুক একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। এই ব্যাপারটা কারো জন্য ২৪ ঘন্টার অক্সিজেন, কারো জন্য তিনবেলা খাবার, কারো জন্য নেশার ধোঁয়া অথবা পাণীয়, কারো কারো জন্য প্রচার প্রপাগাণ্ডার বেসাতি, আর কারো জন্য কোন কোন বিকেলের ঝালমুড়ি। আমার কাছে ফেসবুকটা কোন কোন বিকেলের ঝালমুড়ি হয়েই থাকলো। টানেও না, বাঁধনেও জড়ায়না। তবে আমার মতো টিভি আর পত্রিকাবিমুখ লোকদের নিউজ আপডেটের জন্য ফেসবুক ভালো নিউজফিড হতে পারে। এই একটা জায়গায় আমি ফেসবুকের উপকারিতা স্বীকার করি। তবে সেই আপডেটগুলো আসে সহব্লগার বন্ধুদের কাছ থেকে। সুতরাং ঘুরে ফিরে ব্লগই
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বাংলার মানুষ ব্লগকে এত ভয় পায় কেন! এইটা এক্টা গবেষণার বিষয়। ফেইসবুকে দেখলাম একটা একটা নাস্তীক বিরোধী গ্রুপ খুলছে। তাদের ভাবনাটা বুঝতে পেইজে লাইক দিয়ে যা দেখলাম; তাতে নাস্তীকদের জান-মালের হেফাজতের জন্য জেয়ফতে নাস্তীক নামে নতুন গ্রুপ দরকার। সেইটা করলেও যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে তাদের ক্ষণভঙ্গুর বিশ্বাসী অনুভূতি বজায় রেখে কথা বলা অসম্ভব। সেই আকাডা বাঁশ তাদের বগলেই শোভা পাক। আমি ব্লক না করে বরং ব্লগর ব্লগরই করি। এবং এত দিন যেভাবে করছিলাম, সে ভাবেই।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
লেখা চলুক।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
ফেইসবুকটাও থাক। ওইটাও কাজে লাগে কিন্তু। গণজাগরণের ফেব্রুয়ারিতে জিনিসটা বেশ কাজ দিছিলো। এছাড়া প্রতিপক্ষ কিন্তু ফেইসবুক ছেড়ে যাচ্ছে না। কাজেই সেখানেও সঠিক কথাগুলি বলে যাওয়া জরুরি।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
শাহবাগের পর থেকে অনেকে মনে হয় ঝরে গেছেন। এখন ফ্রেশ ব্লাড দরকার বা ওল্ড ব্লাড আবার ফ্রেশ হয়ে ফিরে আসা দরকার।
****************************************
নতুন মন্তব্য করুন