• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

কয়েকটা কল্পকথা

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৪/০৫/২০১৫ - ৩:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক.

রাজ্জাক তালুকদার। বাড়ি বৃহত্তর নোয়াখালী। জার্মানীতে পা ফেলেন ১৯৯১ সালের জুনে। শ্রীলঙ্কা থেকে জলপথে মিশর-তুরস্ক-ইটালি-পোল‌্যাণ্ড পেরিয়ে কোন না কোন ভাবে একসময় জার্মানী। যথারীতি পাসপোর্ট খুইয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন। আশ্রয় কেন্দ্রে কিছুদিন কাটিয়ে বিভিন্ন রেস্তোরার রান্নাঘরে। হাতে কিছুমিছু ডয়েশ মার্ক। আমলাতন্ত্রের কল্যাণে পাওয়া সময়ের সুযোগে কাগজের বউ জোটে। নানা ঘটনা নানা অঘটন শেষে কাগজের বউয়ের হাত থেকে খালাস পেয়ে ২০০১ সালের কোন একদিন স্থায়ী বসবাসের অনুমতি মেলে। তারপর এক দশক ধরে কখনো সহ-রাধুনি কখনো সার্ভিস কখনো সামাজিক সাহায‌্যভূক কখনো ব্যর্থ ব্যবসায়ী। ২০০৮ এর মন্দার পরে জার্মান সরকার ঘাড়ে ধরে কোন এক কারখানায় পাঠায় বৈধ শ্রম বিক্রি করতে। ততদিনে বুদ্ধিশুদ্ধি কিছু বেড়েছে। টুকটাক যন্ত্রগণকের ব্যবহার শিখে গেছেন। জুটে গেছে মাথামোটা স্বদেশী বালিকা।

আরিব্বাস! জার্মানীতে থাকে। বাংলাইংরেজি ভুলভাল বললেও গড়গড় করে জার্মান বলে। তার উপর কোন না কোন তালুকদার বাড়ির ছেলে। রীতিমতো আফ্রিদী! আমেনা বেগম ভাবে একেই তো খুঁজছিলাম এতোকাল! কথায় কথায় ফেসবুক-প্রেম জমে ওঠে। রাজ্জাক কিরা কাটে জার্মানীতে নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার। মাথামোটা বালিকা ভর্তি হয় গোয়থেতে জার্মান ভাষা শিখতে। ২০১০ এর শেষে রাজ্জাক সশরিরে হাজির হয় স্বদেশে। অনেক কায়দা করে রাজ্জাকের বয়সটয়স ঢেকে শেষমেষ বিবাহ। পত্রপাঠ জার্মানী। তারপর বেশকয়েকটা রঙ্গিলা মাস। পাসপোর্ট পেতে জরুরি ভাষা পরীক্ষার মাস কয়েক আগে অন্ত;সত্ত্বা। রাজ্জাকের যুক্তি বয়স থাকতে থাকতে বাচ্চাকাচ্চা না নিলে বংশের মুখ অন্ধকার। প্রথম সন্তানের বয়স বছর পেরোতে আমেনা বেগম আবার ভাষা শিক্ষার স্কুলে যেতে চায়। রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী উদ্বাস্তু বাংলাদেশি সমাজে ঢিঢি পড়ে যায়। হাউমাউ করে ওঠে নোয়াখালীর তালুদার বাড়িও। ভাষা শিক্ষা স্কুলের ফর্ম তোলার পর দিন জানা যায় আমেনা আবারও মা হতে চলেছে। সে জোর করেই স্কুলে যেতে চায়। শুরু হয় নির্যাতন। আমেনা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পুলিশে খবর দেয়। রাজ্জাকের কান্নাএবং কিরাকাটাকাটিতে শেষ পর্যন্ত বিষয়টা মিয়া বিবির ভুলবুঝাবুঝি বলে পুলিশকে বুঝ দেওয়া হয়। পুলিশ সেটা পুরোপুরি না বুঝে রাজ্জাককে পরোক্ষ নজরদারিতে রাখে।

আমেনা অবস্থাপন্ন পরিবারের মেয়ে। বাবামা শুরু থেকে বিয়ের বিরোধিতা করলেও সন্তানের টানে চলে আসেন জার্মানী। মেয়েকে পরামর্শ দেন যেভাবেই হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। গোপনে হাতে বেশ কিছু টাকাও দিয়ে যান। রাজ্জাক একসময় দয়া পরবশ হয়ে বাড়িতে জার্মান শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্মান মাধ্যমের এক বাংলাদেশী ছাত্রীকে নিয়োগ দেন। আমেনার প্রতি কড়া নির্দেশ থাকে গৃহ শিক্ষিকাকে কোন অবস্থাতেই ঘন্টায় ৫-৬ ইউরোর বেশি না দিতে। আমেনা ততদিনে জেনে গেছে স্কুলে গিয়ে ভাষা শিখলে ঘন্টায় কত করে দিতে হতো। সেই বাংলাদেশী ছাত্রীর সাথে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আমেনা পরবর্তী সেমিস্টার শুরুর আগের ভাষাগত যোগ্যতার পরীক্ষার জন্য প্রায় তৈরি হয়ে ওঠে।

আবার ঢিঢি পড়ে জার্মানীর স্বদেশী সমাজ এবং নোয়াখালীর তালুকদার বাড়িতে। তালুকদার বাড়ির বড় মেয়ে বার্মিংহাম থেকে ফোনে সরাসরি বলেন, "তুই মেট্টিক হাশ কইচ্চসনি? ভৌ'রে ভার্সিটি হড়াইলে খাইল না হরশু ডইচ্চা ভ্যাডা লই ভাগি যাইবো!" আবার নির্যাতন শুরু হয়। আমেনা আবারও গর্ভবতী। মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। বাংলাদেশী ছাত্রী দীর্ঘশ্বাস ফেলে সরে আসতে বাধ্য হয়।

এরপরের গল্পে আর নতুন কিছু নাই। ছিমছাম মাথামোটা সুন্দরী আমেনা এখন দৈর্ঘ্যেপ্রস্থে সমান। বড় ছেলেটা কোন রকম হাঁটে। ছোটটা হামাগুড়ি দেয়। মেয়েটা প্যারাম্বুলেটরে। বিশ্ববিদ্যালয় এখন হারিয়ে যাওয়া অতিরিক্ত চিনি দেওয়া স্বপ্ন।

দুই.

শাহেদ মেধাবী ছাত্র। গণিত-ইংরেজিতে তুখোড়। মাঝেমধ্যে গোপনে এটাসেটা মুখে দিলেও বেসিক্যালি ধর্মভিরু। দেশে বছর খানেক তড়িত প্রকৌশলীর চাকরি করে জার্মানীতে আসে উচ্চশিক্ষা নিতে। সেখানেও কৃতি। পরিবার আর স্বদেশের মুখ উজ্জল করে বাগিয়ে ফেলে জার্মানীতে সক্রিয় কোন বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকুরি। পরিবারকে সাফ জানিয়ে দেয় বিয়ে সে স্বাদেশের কোন ধার্মিক এবং শিক্ষিত মেয়েকেই করবে। পশ্চিমের আধা-নেংটা মেয়েদের জন্য তার দিলে সাফ নফরৎ। পরিবারের মুখ উজ্জলতর হয়। কোন এক বড়দিনের ছুটিতে দেশে গিয়ে ছেলে কলমা পড়ে ফেলে। আশফিয়া মোটামুটি পর্দানশীন এবং তড়িত প্রকৌশলী। জার্মানীতে মাস্টার্স করে চাকরি করার স্বপ্ন দেখে।

ভিসা নিয়ে কোন সমস্যা হয় নাই। দেশ ছাড়ার ৪৮ ঘন্টা আগে আবিস্কৃত হয় আশফিয়া অন্ত:সত্তা। কুটুমান্তরে মিষ্টি বিতড়ন শুরু হয়। বন্ধুরা শাহেদের পিঠ চাপড়ে দেয়। এটা টিটোয়েন্টির যূগ ইত্যাদি। রফা হয় পুত্রসন্তান কিণ্ডারগার্টেনে যেতে শুরু করলেই আশফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। ছেলের বয়স সাড়ে তিন হলে শাহেদ ছেলেকে কিণ্ডারগার্টেনে দিতে গড়িমসি করতে থাকে। স্বদেশী প্রকৌশলী সমাজের গরম আলোচ্য ইউরোপীয় সমাজের অপসংস্কৃতি কীভাবে প্রাচ্যের ধর্মভিরু সমাজকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে ইত্যাদি। আশফিয়া ধার্মিক হলেও দেশে থাকতে টুকটাক ছাত্র ইউনিয়ন করতো। শাহেদকে আপাতত তর্কে পরাজিত করে ছেলেকে কিণ্ডারগার্টেনে পাঠায়। এবার উচ্চশিক্ষার পথ মোটামুটি পরিস্কার। সারাজীবন প্রথম হওয়া শাহেদ তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে। আশফিয়াকে বলে, "তুমি মাস্টার্স করলে আমার পিএইচডি করতে হইবো। এই বয়সে আর পড়ালেখা ভাল্লাগে না।" আশফিয়া বোঝে না। সে তর্ক করে। করতেই থাকে। শাহেদের প্রথম হওয়া বিদ্যাবুদ্ধি আশফিয়ার বেদাতি তর্কের সাথে পেরে ওঠে না। বন্ধুরা বিয়ের রাতে মেকুর হত্যা না করাকেই সমস্যার মূল বলে চিহ্নিত করে। শেষমেষ দেশ থেকে শাহেদের বড় বোন বা রাঙা ফুপু বা ছোট খালা অব্যর্থ বুদ্ধি দেয়। আরেকটা বাচ্চা ধরাইয়া দে, বিপ্লব শ্যাষ ....হিহি।

তাই হয়। আশফিয়াও একসময় সব মেনে নেয়। মাথায় হিজাব ওঠে। সন্তানের জন্য জার্মান ভাষায় আম্পারাসেপারা খোঁজে। ইউটিউবে পিয়েরে ফ্যোগেলের বয়ান শোনে। স্বামীসন্তানের জন্য এটাসেটা রাঁধে। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন আদারসুনতেলমসলায় উবে গিয়ে এক্সোস্টারে সূক্ষ অধ:ক্ষেপ ফেলে। পাকা গৃহিনীর মতো একদিন ক্লিনার দিয়ে সেটাও তুলে ফেলে আশফিয়া।

তিন.

তাবাস্সুম মুনিরার উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা কোন দিনই ছিল না। কোন রকমে বি.এ. পাশ করেছে। শুধু চেয়েছে যাকে বিয়ে করবে সে যেন বিদ্যাবুদ্ধিতে ড্যাশিং হয়। দেখতে ভালো লেখাপড়ায় ঠন্ ঠন্ মেয়েদের বিয়ের বাজার বরাবরই রমরমা। বি.এ. পরীক্ষার ফলাফলের কয়েকমাসের মধ্যে বিয়ে হয় জার্মানীবাসী যন্ত্রগণক গবেষক পাত্রের সাথে। আর্যদের দেশে গবেষকের গৃহবধু হয়ে তাবাস্সুম আটখানা।

বছর না ঘুরতেই ঘরে ফুটফুটে কন্যাসন্তান। গবেষক স্বামী পোস্ট ডক্টোরাল শেষ করে অস্থায়ী শিক্ষক হয়ে যান। ঘরে যাকে বলে সুখশান্তি রাখার জায়গা নাই পরিস্থিতি। এর মধ্যে একদিন কথায় কথায় স্বদেশী প্রতিবেশি তনিমা ভাবির সাথে কথা কাটাকাটি হয়। তাবাস্সুমের সুখে প্রবল ঈর্ষাকাতর তনিমা ভাবি বোমা ফাটান। "তোর পরানের পরফেসর কেমনে এই দ্যাশের কাগজ করছে আমরা জানিনা মনে করছ? ছাত্র থাকতে উঠতে বইতে ধলা মাগি ছানতো। পরে চাকরি পাইবো নাকি দিশা না পাইয়া ক্লডিয়ারে কোট-মেরেজ করছে। তিন বচ্ছর ছিল ঐ বেডির সাথে। তারপর কাগজ কইরা তালাক দিয়া দ্যাশে গিয়া তোরে নিকা করছে। এই হইলো তগো চরিত্র!" তাবাস্সুম হতেই পারে না ধরণের তর্ক করার চেষ্টা করে চুপ মেরে যায়। তর্কটর্ক সে পারে না। কয়েকদিন একটানা চুপ থেকে একদিন রাতে গবেষক সাহেবের কাছে জানতে চান ক্লডিয়া ঐতিহাসিক চরিত্র নাকি তনিমা ভাবির কল্পনা। গবেষক সাহেব ছাত্র পড়ানো পাকা লোক। তিনি পরিস্থিতিটা বুঝিয়ে বলেন। ঐ সময়টা জার্মানীতে চাকরির বাজারে খুব মন্দা যাচ্ছিল। ভিসা নিয়ে খুব অনিশ্চয়তা ছিল। তখন অনেক দিনের বন্ধু ক্লডিয়া উদ্ধার করে। তবে ঐ পর্যন্তই। যা হয়েছে শুধুই কাগজের জন্য। এখন তিনি সাফসুতরো পত্নিনিষ্ঠ ভদ্রলোক। তাবাস্সুম বিষয়টা ক্রমশ বুঝতে পারে। পরে একদিন তনিমা ভাবিকে মুখের উপর বলে দিয়ে আসে, "যা করছে কাগজের জন্য করছে। তোমার ভাইয়ের মতো সত্যি পিরিততো আর করে নাই !" তনিমা ভাবিও একসময় পরাজয় মেনে নেন। ঠিকই তো। কাগজের জন্য লোকে তো কত কিছুই করে। তার স্বামীও করেছে। তাই বলে সত্যি পিরিত! ভাইয়ের সাথে আর যোগোযোগ রাখে না তনিমা ভাবি।

এদিকে ক্যালেণ্ডার উল্টাতে উল্টাতে মেয়ে বড় হতে থাকে। একসময় হাইস্কুলের শেস প্রান্তে এসে পড়ে। আর কিছুদিন পরেই বিশ্ববিদ্যালয়। মেয়ে পর্দাটর্দা করে না। বাপের ক্যারিয়ারে সমস্যা হবে। মেয়েকে নিয়ে তাবাস্সুমের কোন দুশ্চিন্তা নাই। পরিস্কার বলা আছে সাদা ছেলেদের সাথে মিশতে পারবা কিন্তু পিরিত করার কথা ভাবতেও পারবা না। মনে কোন সময় ঐ ভাবনা আসলে ঘরে এসে গোসল করবা। মেয়েটাও লক্ষী। মায়ের কথা মেনে চলে। অন্তত মায়ের তাই মনে হয়।

কিন্তু পশ্চিমের হাওয়াবাতাস। মায়ের অতি সতর্ক নজরের আড়ালে সে যে অষ্টম শ্রেণী থেকেই স্টেফানকে ভালোবাসে এই কথা একদিন তনিমা ভাবির সত্যবাদী মেয়ে যয়নব মারফত ফাঁস হয়ে যায়। স্টেফান সুদর্শন। লেখা পড়ায় ভালো । মেয়ে ভেবেছিল যেদিন জানজানি হবে মা খুশিই হবে। হলেন না। তাবাস্সুম প্রতি পনের মিনিটে একবার মুর্ছা যেতে থাকেন। গবেষক সাহেব মেয়েকে শাসাতে গিয়েও পারেন না। তিনি এতোদিনে অনেকটাই জার্মান। তাবাস্সুম কি যেন একটা বিষ খায়। হাসপাতালে নিয়ে পেট পরিস্কার করতে হয়। তারপর বাড়ি এসে একদম চুপ। গবেষক সাহেব মেয়েকে বলেন স্টেফানকে বাড়িতে এনে মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। তাবাস্সুম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে। স্টেফানকে রান্না করে খাওয়ায়। মেয়ে ধরে নেয় মা মেনে নিয়েছে সবকিছু।

আবিট্যুর অর্থাৎ ত্রয়োদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার কয়েকদিন আগে মেয়ে ভরদুপুরে স্টেফানকে বাড়ি নিয়ে আসে। ঘরের দরজা লক করতে ভুলে যায়। কী আর হবে? মা তো মেনেই নিয়েছে।

সাড়ে তিনটার দিকে তনিমা ভাবি গবেষক সাহেবের অফিসে ফোন করেন। তাবাস্সুমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ নিয়ে গেছে। মেয়ের বিছানায় স্টেফানের আর মেঝেতে মেয়ের গলাকাটা লাশ এখনো পড়ে আছে। বাড়ি ক্রিমিনাল পুলিশের হেফাজতে।

নটে গাছটি মুড়লো?


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

এসব গল্পের নটের গাছ মুড়েনা আসলে, বরং ভূগোলকের অন্য কোথাও অন্য কোনোখানে শুরু হয় নতুনভাবে।
২নং গল্পের মত আমার পরিবারের খুব কাছের মানুষের সাথেই ঘটেছে।
একজন ফাইট করে পিএইচডিতে যেতে পারলেও অন্যজন পারেনি। সে এখন উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন জলে ভাসিয়ে ধর্মকর্মে মন দিয়েছে। শুনতে পাই তার স্বামী খোদার আরো ঘনিষ্ঠ হবার জন্য সৌদিতে চিল্লায় যাচ্ছেন খুব শীঘ্রই!

এক লহমা এর ছবি

সেই ত! এইভাবেই কি মুড়োতে থাকবে? :(

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। প্রবাসী পাত্র পেলে লাফিয়ে মেয়ের বিয়ে দেয় বা মেয়ে লাফাতে লাফাতে রাজী হয়ে যায় - এটা বাংলাদেশের খুব কমন চিত্র। এর কারণ খুব স্পষ্ট। প্রথমত, স্বচ্ছলতার হাতছানি। দ্বিতীয়ত, পাত্র প্রবাসী হলে বিবাহ পরবর্তীকালে অব্যাহত যৌতুক চাইবার সম্ভাবনা কম। তৃতীয়ত, মেয়ে ভাবে বিদেশে উন্নত-মুক্ত জীবন পাওয়া যাবে। এইসব স্বপ্নকল্পনায় ডুবে পাত্রের ইতিহাস-ভুগোল কিছুই আর তলিয়ে দেখা হয় না। আরো দেখা হয় না বিদেশে ঐ পাত্র কেমন জীবন যাপন করে এবং সে মেয়েকে কেমন জীবন দিতে যাচ্ছে। ফলাফল এই গল্পের মতো। এর বস্তা বস্তা উদাহরণ আমাদের সবার কাছে আছে। ইদানীং কালে তালুকদারজাদাদের অনেককে চাট্টিবাট্টি গোল করে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে। তখন তৈরি হয় আরেক নারকীয় গল্প।

২। এই গল্পটার অন্য একটা ভার্সান বলি। ছেলে মেয়ে স্কুল জীবন থেকে প্রেম করে। দেশে গ্রাজুয়েশন করার পর পরই বিয়ে করে। তারপর দুজনে একত্রে উচ্চ শিক্ষার্থে আমেরিকা যায়। তাদের দেশে থাকতে তাদের দুজনের কেউই বিশেষ ধার্মিক ছিল না। রমজানে রোজা রাখতো, ছেলে জুম্মা-তারাবী-ঈদের নামাজ পড়তো। আমেরিকাতে এক যুগ কাটানোর পর ছেলে পুরোদস্তুর মাওলানা হয়ে গেলো। মেয়ে বাধ্য হলো হিজাবী হতে। কাহিনী এখানে শেষ নয়। ছেলে আমেরিকা ছেড়ে এক আরব দেশে চাকুরি নিলো। আমেরিকায় মাস্টার্স করা মেয়ে অন্তঃপুরে ঢুকলো। তিন বছরের কন্যার গায়ে হিজাব উঠলো। বাচ্চাদুটোকে নাকি আরবী কায়দার মাদ্রাসায় দেয়া হয়েছে। বেদাতি শিক্ষা দেবার নাকি দরকার নেই।

৩। এই রকম কয়েকটা গল্পের বিলাতি ভার্সান পেপারে পড়েছিলাম।

একটা কথা। একজন শিক্ষিত নারী কি নিজে চেষ্টা করলে গর্ভবতী হওয়া ঠেকাতে পারেন না? আর জার্মানীর মতো দেশে থেকেও একজন শিক্ষিত নারী ডমেস্টিক ভায়োলেন্স, নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ করা, মানসিকভাবে নিগৃহীত হওয়া মেনে নেন কী করে! এমন সংসারে তাঁরা থাকেন কেন? সন্তানের মুখ চেয়ে? যে সংসারে প্রতি নিয়ত এই অন্যায়গুলো চলে সে সংসারে সন্তানরা কী শিক্ষা নিয়ে বড় হচ্ছে সেটা কি তাঁরা ভেবে দেখেন না! বাংলাদেশে না হয় সিঙ্গেল মাদারের পক্ষে টেকাটা কঠিন কিন্তু জার্মানীতে তো এটা সমস্যা হবার কথা না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার শেষ প্রশ্নের জবাব একটাই। এরা বাস করে জার্মানীর ভিতরে একটা শহর, সেই শহরের ভিতরে একটা স্বদেশী সমাজ, সেই স্বদেশী সমাজের মধ‌্যে একটা বাসার ভিতরে, বিদেশের বুকে এক টুকরো বাংলাদেশে। সুতরাং ডইচ্চা সমাজের আছর এরা ভালোভাবেই এড়াতে পারে। যারা দেশে থাকতে তুলনামূলক উদার ছিলেন প্রবাসে এসে বাংলাদেশী কমিউনিটি নামের এই ঘেঁটোর কল্যাণে ছাগু হতে বাধ‌্য হন। সমাজচ‌্যুত হবার ভয় সারাক্ষণ তাড়া করতে থাকে। সমাজচ্যুত হলে যাবার জায়গা নাই। ডইচ্চাদের সাথে তারা সামাজিকভাবে মেশে না। সুতরাং কম্প্রোমাইজপদে নম:

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যারা বিদেশে গিয়ে বিদেশিদের সাথে মেশার হ্যাডম রাখে না তারা বিদেশে থাকতে যায় ক্যান! যারা মনে করে তাদের বানানো ঘেটোতে তাদের জাত-ধর্ম-কালচার বাঁচবে তারা আবাল ছাড়া আর কিছু না। ঘেটোর বাইরের দুনিয়াতে তাদেরকে সহযোগিতা করতে, বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে সারা দুনিয়াটা আছে। সেটার দেখার চোখ আর বোঝার মগজ তাদের নেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

যাদেরকে আবাল বলছেন তাঁদের অনেকেরই দুইটা করে পোস্ট ডক্টোরাল। সুপারি গাছের উপরে ৯০°তে আরো একটা মই ফিট কইরা তার ডগায় বইসা আছে। তারা সবকিছু সবাত্তে বেশি বুঝে।

আয়নামতি এর ছবি

যে দু'জনের কথা বলেছি, তাদের কারো পরিবারই পোলার অবস্হান বিদেশে শুনে লাফিয়ে ওঠার মতো না। সুমনভাই যেরকমটা বললেন সেরকমই অবস্হা দুই পরিবারেরই শিক্ষা দীক্ষা ইত্যাদিতে।
বিয়ের পর কেম্নে জানি কিছু মানুষের শিক্ষা প্রগতিশীলতা সব চটিবাটি গুটিয়ে নির্বাসনে চলে যায়।
সে আম্রিকায় হোক কী বাংলাদেশে!

এক লহমা এর ছবি

হ ! :(

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

জার্মানীর যে ছবি সুমন দেখিয়েছেন, মার্কিন মুলুকের ছবির সাথে তার তেমন কোন তফাৎ দেখি না।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তারেক অণু এর ছবি

১০০ ভাগ সহমত পাণ্ডব দা

তারেক অণু এর ছবি

লেখা চলুক, আরও জানা-অজানা কাহিনী প্রকাশ পাক, হয়ত উপকার হবে ভবিষ্যতে কারো-

স্পর্শ এর ছবি

এইটা খুব ভালো বলেছেন। প্রবাসী বাঙালিরা পাশ্চাতে এসেও, নিজেদের একটা খুপড়ি গড়ে নেয়। সেই খুপড়ির জানালা-দরজা সব বন্ধ। ফলে এদের মাঝে দেশে অবস্থানকারীদের থেকেও বেশী গোড়ামীর প্রাকটিস চলে প্রতিনিয়ত...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

এক লহমা এর ছবি

(Y)

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তারেক অণু এর ছবি

একই অবস্থা দেশে দেশে-

অতিথি লেখক এর ছবি

:(

দেবদ্যুতি

রানা মেহের এর ছবি

প্রথম গল্পটার কাছাকাছি আমার বোনের ক্ষেত্রেই ঘটেছিল।।
প্রবাসী পাত্র পেয়ে বাবা মা তড়িঘড়ি বিয়ে দিয়েছিলেন। ফলাফল খুব শুভ হয়নি।
আমার বোন ওই লোককে ছেড়ে আসতে পেরেছেন এটাই রক্ষা।

ইউকেতেও বাঙ্গালিদের একই অবস্থা। নিজেদের ঘেরাটোপে বাস করে,আর সারাদিন গালি দিয়ে বলে সাদারা খারাপ। অদ্ভুত!

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

মাসুদ সজীব এর ছবি

আমার নিজের খালাতো বোন, বেশ সুন্দরী ছিলেন। পড়ালেখা শেষ করে ব্যাংকে ভালোই চাকরি করতেন। তারপর একদিন পিএইচডি হোল্ডার কানাডিয়ান আদমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে উড়াল দিলেন কানাডা। বছর দুই না ঘুরতেই শুনতে পেলাম মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনও চরমে পৌছে গিয়েছিলো আপু যখন বাচ্চা না নিয়ে পড়ালেখা শুরু করতে চেয়েছিলো। তারপর একদিন চলে এলেন কানাডা থেকে।

আমার খালা আর খালু সব সময় বেশি বুঝতেন, তাদের কাছে বিদেশী পাত্রের চেয়ে ভালো পাত্র আর হয় না। দুটো মেয়েকে বিদেশী পাত্রের কাছে বিয়ে দিয়ে দুটোর জীবনকেই বিষিয়ে তুলেছেন, একজন এখনো সংসার করার অভিনয় করে যাচ্ছেন আর আরেকজন ছেড়ে দিয়েছেন পার্থক্য কিংবা অর্জন বলতে এটাই।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

তাবাস্সুমের ঘটনাটা কি সত‌্যি? গল্প হলে কোন ক‌থা নাই, কিন্তু সত্যি হলে দুইখান কথা জানতে চাইতাম আরকি!

--------------------------------------------------------------------------------

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঠিক এই গল্পটা অক্ষরে অক্ষরে এখনো জার্মানীতে ঘটে নাই। ইউরোপে এদিক ওদিক হইছে কিছু। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে না। তবে হইতে খুব বেশি আর বাকি নাই। মুসলিম পুরুষ প্রকৌশলীদের ঘেঁটোর যা নমুনা দেখতেছি শিগগিরই অনেক তাবাস্সুমের গল্প দেখতে পাবো জশনেজুলুছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।