বানের জলে ভেসে যায় সবকিছুই। অজ্ঞাতও থেকে যায় সবকিছু মানে কতকিছু। তাতাথৈথৈ এর তালিখালিও ধরতে পারি নিখুঁত। শুধু ভেসে যেবার আগে কূলে কূলে আঁচড়ের দাগগুলি সবসময় রেখে যেতে পারি না। যারা পারে তাঁদের যেতে হয় হয় আগে। বাকিরা স্রোতের টানে পানাশ্যাওলার সাথে।
যেতে হবেই বুঝে নিয়েছি বহু আগে। শুধু কীবোর্ড গুলি চলছে না। না চললে দাগ আর থাকবে না। ভেসে গিয়েছিলাম কোনকালে নিজেকেও ভুলতে হবে। একঝাঁক জংলী ঘাড়ত্যাড়া একদা হুড়মুড় করে ভেসে গিয়েছিলতে ইতিহাস থেমে যাবে।
লাশের পর লাশ পড়ছে। আগেও পড়তো এখনো পড়ছে। এখনকার মতো আগে কখনো আঙ্গুলগুলি থমকে যায় নাই। জীবনকে ভালোবেসে এতোটা জীবনবিমুখী হতে আগে কখনো দেখা যায় নাই। এর ফলাফল জানতেবুঝতে সব চুল পেকে গেছে। আঙ্গুলগুলি এখন আগে থেকেই লাশকাটা ঘরের হিমে জমে থাকার অভ্যাস করে নিচ্ছে।
অথচ হালটা এখনো অক্ষত। টেনে নিতে পারলে নৌকা হয়তো এগুতে পারতো অন্তত আরো কিছুটা। এগুলে এগোবো? নাকি এগিয়ে নেবো?
ডুবে যাওয়ার দৃশ্য উপাদেয় হলেও কোন পাড়েই কি দাঁড়াবার স্থানটুকু আছে?
মন্তব্য
অস্থির অস্থির লাগার যথেষ্ট এবং যৌক্তিক কারণ আছে। তবু প্রকাশের সময় অস্থিরতাকে চেপে রাখতে হয়। এটা শুধু পারফর্ম করার গোল্ডেন রুলের মতো ব্যাপার নয়, কারণ অপর পক্ষ চায় এরা অস্থির হোক, বিভ্রান্ত হোক, অসতর্ক হোক, মতদ্বৈততায় টুকরো টুকরো হোক। তাই প্রকাশের কালে অস্থিরতা পরিত্যাজ্য।
আঁচড় কেটে যেতে হবে — তা সে প্রকাশিত হোক আর নাই হোক। নয়তো ভবিষ্যতের কেউ এই সময়ের দিনলিপি কোথা থেকে পাঠ করবে? কী করে সে তার সময়কে বিশ্লেষণ করবে এবং শত্রু-মিত্র চিহ্নিত করবে? অন্ধকার তো বার বার ধেয়ে আসে, গ্রাস করে নেয় আলোর দিন। এবং সব সময়ই কিছু মানুষ থাকে যারা প্রকৃতিগতভাবে আত্মধ্বংসী, প্রগতিবিরোধী, মিসোগাইনিস্ট, মিসঅ্যানথ্রপ।
ইতিহাসে কিন্তু অন্ধকার যুগ আছে, মাৎস্যন্যায় আছে, আইয়্যামে জাহেলিয়াত আছে। সেই সময়টাতে আঙুল বুঝি লাশকাটা ঘরের হিমেই জমে থাকে। খুব অল্প কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। আর ব্যতিক্রম কবেই বা নিয়ম হয়েছে। ইতিহাসে অন্ধকার যুগগুলোর দৈর্ঘ্য শতাব্দী দিয়ে মাপা হয়।
কোন এক অন্ধকার যুগে ঘাড়ত্যাড়া কিছু শিল্পী যা কিছু আঁকতে চেয়েছিলেন তা এঁকে তার ওপর চুণের প্রলেপ দিয়ে তারও ওপর সুশীল ছবি এঁকে রেখেছিলেন। অমন এককালে ঘাড়ত্যাড়া কিছু কবি কানু বিনা কোন গীত না গেয়ে তার রূপকে প্রেম প্রকাশ করে গেছেন। বিটুইন দ্য লাইন কত কথা বলে গেছেন।
হাল ঠিক থাকলে নৌকাটা কিন্তু এগিয়ে নেয়া যায়। কৌশল আর প্রকাশভঙ্গী একটু পাল্টাতে হবে হয়তো। তবু তাতে সংঘটা পুনরুজ্জীবিত। শুধু ধর্ম্মের শরণ নিয়ে তো পার পাওয়া যাবে না, সাথে সংঘের শরণও নিতে হবে।
অপর পাড় ভাঙার দৃশ্য সাময়িক আনন্দ বা স্বস্তি দিতে পারে। তবে সেই সাথে সেটা এই পাড় ভাঙার সতর্ক সংকেতও বটে।
হুনানের এক কৃষকপুত্র বলেছিলেন, ‘শত্রু যখন আগায়, আমরা তখন পিছাই। শত্রু যখন আক্রমণ করে, আমরা তাদের হয়রান করি। শত্রু যখন ক্লান্ত হয়, আমরা তাদের আক্রমণ করি’।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
একটা দীর্ঘশ্বাসের মত শোনালো। অনুভবে পাশে কয়েকজন আছেন এই একমাত্র ভরসা।
সোহেল ইমাম
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
আমাদের প্রস্তুতি আছে পিছানোর? শত্রুদের ক্লান্ত করার? ধৈর্যও তো লাগবে, নাকি?
নতুন মন্তব্য করুন