সচলায়তন চালু হবার দিনগুলোতে কতো যে ছাতামাথা প্ল্যান করেছিলাম তার ইয়াত্তা নেই। আজকে যখন কিশোরের গোঁফ গজাতে শুরু করেছে তখন দম ফেলার ফুরসৎ পেলে কেবল ভোঁস ভোঁস করে ঘুমাই। এক রকমের স্থবিরতাও দেখা দিচ্ছে মাথার মধ্যে। প্রায়ই দু-তিন লাইন টাইপ করে মুছে ফেলি। সচলায়তনে এখন যে মানের লেখালেখি হচ্ছে তাতে "এনি ড্যাম থিং" লিখতে আর ভরসা হয় না। দীর্ঘদিন সচলায়তনের স্বপ্ন দেখাদের একজন বলে সাইটের বর্তমান হাল দেখে গর্বিত বোধ করলেও নিজের লেখালেখির এই "লুরমা" পরিস্থিতি নিয়ে ইদানিং সত্যিই উদ্বিগ্ন বোধ করি।
সেদিন এমএসএনে কথা হচ্ছিল হিমুর সাথে এই নিয়ে। বল্লাম পুরনো লেখার কপিপেস্ট চালাতে মনে খচ্খচ করে। সামহোয়ার থেকে কপিপেস্ট করে প্রথম কি্যুদিন চালিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সামহোয়ারের মাল সেখানেই থাকুক। সচলে তাই আসবে যে সচলের জন্য লেখা। যেমন ধরা যাক গতকাল বিকেলে ভাবছিলাম "ঈশ্বরাসিদ্ধে:"গুলো মেরামত করে নিয়ে এসে এখানেই মেরামত করবো। পরে মনে হলো না থাক। ওগুলো পট করে বসে ফট করে লেখা অপরিণত লেখা । কবিতার ক্ষেত্রে যতটা স্বাধীনতা থাকে সেটা নিবন্ধে না থাকাই ভালো। সচলে দর্শন বিষয়ে লিখতে গেলে বহুৎ চিন্তা করে লিখতে হবে। কারণ সচলায়তনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরিণত পাঠক সমবেত হন, যাদের ভিড়ে নিজেকে এক-আঙ্গুইলা(লিলিপুট)মনে হয়। আবজাব দিলে সাথে সাথে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। তার চাইতে চামেচিকনে মন্তব্য ঝাড়াই ভালো। কিন্তু তাতে মন ভরছে না। কারণ গত দেড় বছরে ব্লগিং এর কল্যাণে কমপক্ষে প্রতি সপ্তাহে কিছু না কিছু লেখার একটা অভ্যাস গড়ে উঠেছে। হিমুকে বলছিলাম আমার গল্প লেখার বহু ব্যর্থ চেষ্টার কথা। কেন জানি গদ্য লিখতে গেলেই আঙ্গুল পল্টি খায়। সেই জন্য খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম একটা কোন জবরদস্ত প্লট। হিমুকে বল্লামও গুটিকয়। সবই এক চিমটি সাইজের ছোট ছোট প্লট। হিমু স্বভাবসিদ্ধ কায়দায় বললো প্লট কি ইয়ে নাকি যে বড় ছোট হওয়া দিয়ে কিছু এসে যায় ইত্যাদি। মনে হলো কথা তো সত্য। কিছু না পেলে ঐ প্লটটাকেই সোজা মাথা থেকে কপিপেস্ট মেরে দিলেই তো হয়। তাতে একটা মস্ত সুবিধা হচ্ছে শুরুতেই প্লট বলে ঢ্যারা কেটে দেওয়ায় সমালোচক "অসার্থক গল্পের বা প্রবন্ধের" অভিযোগ তুলতে পারবেন না :D।
সেই প্লটগুলির কিছু নমুনা দেখা যাক।
প্লট ১ > কোন এক নি:সঙ্গ দুপুরে বুড়োদের সেই পাবে বসে আছি। পাশে অনেক্ষণ ধরে ঝিমুতে থাকা বুড়ো হঠাৎ চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো তোমার বাড়ি কি তিউনিশিয়া?(কুচকুচে কালো বলে হামেশাই আফ্রিকান বা শ্রীলঙ্কান সন্দেহের মুখে পড়তে হয়। তাতে নিজেকে দ্রাবিড় ভেবে একটু গর্বও হয় মাঝে মধ্যে )আমি বল্লাম না বাংলাদেশ। তিনি বললেন, ও। তারপর খুব কাছে এসে ফিসফিস করে বললেন, আমার এক বান্ধবী ছিল তিউনিশিয়ার। সাড়ে সাত বছর ছিলাম একসাথে। এই বলে আবার মন দিলেন বীয়ারে। মিনিট চার পাঁচ গেলে জিজ্ঞাসা করলাম, তারপর? তিনি বললেন তারপর আর কি? গ্যাছেগা!আমি বললাম,ও ।
প্লট ২ >
একদিন এক বুড়ো খুব হম্বিতম্বি করে টেবিল ভর্তি করে খাবার অর্ডার দিলেন। পরে সিকি পরিমান খেয়ে আর পারেন না। হঠাৎ হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলেন।
আজ এই পর্যন্তই। সামনে আরো প্লট দিমু। যতদিন লেখার সেক্স না পাই ;)।
মন্তব্য
গ্লাসে ঐটা কি ? আচ্ছা বদ্দা, ইউরোপে কি কোথাও absinthe পাওয়া যায় ?
______ ____________________
suspended animation...
কৈতারিনা। খোজ নিতে হৈবো।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
গ্লাসে রুহ আফজা
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
মাশাল্লাহ.....
______ ____________________
suspended animation...
আপনারা তো পুরানা ব্লগার। সচলায়তন আমার মত নতুনদের নিয়েছে, এবার বোঝেন তাহলে আমাদের কী অবস্থা। "এনি ড্যাম থিং" তো দেয়াই যাবেনা, আবার ভালো কিছুও তো কী-বোর্ড থেকে বেরোবে না। তাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যতটা মান রাখা যায়। লিখতে লিখতেই হবে.. এই বিশ্বাসে মিলাবে বস্তু। হা হা ....
প্লটগুলো কি প্লটই থাকবে নাকি ঘরবাড়ি তৈরি হবে?
হাহাহাহাহাহাহা আসলে ভাবছিলাম প্লটকেই একটা ক্যাটেগরি বলে চালিয়ে দেওয়া যায় কিনা...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
ঠিক তাই। এই কারণে নতুন লেখা খুব সতর্কের সঙ্গে লেখার চেষ্টা করছি। তবে পছন্দের কিছু পুরনো লেখাও দিচ্ছি। আর পড়ছি তার চেয়েও বেশী।
আপনার প্রথম প্লটটি তো খুব সুন্দর। এটি নিয়ে শুরু করে দিন না!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
প্লট তুমি বাড়ি হও
বদ্দা লাইনে আসি আসি করিচ্চে!
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
আমি এই ভয়ে লিখি না। লিখতে ভয় লাগে।
তয় তিউনিশিয়ান মাইয়ার এক্স বিএফ বুড়ার গল্পটা নামায় ফেলেন। তর সয় না।
আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
এটা মোটেও ভালো কথা নয়। হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে। অতি সতর্কতার কারণে এভাবে সব গুটিয়ে বসে থাকলেও মুশকিল। একটু বেসামাল না হলে কি আদম আর ইভের লতার বাঁধন খুলে পড়তো? সৃষ্টিতত্ত্বের পেছনেও একটু বেসামালিতা আছে। কাজেই হাত খুলে লিখে যান সবাই। গালি যদি খেতেই হয় তো এমনিতেও খাবেন ওমনিতেও খাবেন। সবই তেনার ইচ্ছা।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ঠিককথা। সবাই ঘ্যাঁজম্যাঁজ কইরা লিখ্যা যান।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ইয়ের সাবধানতা। সাবধানতার ৫৪ গুষ্টিরে আমি "চ" মারি।
______ ____________________
suspended animation...
প্লট বেড়ে ঘর হোক, ঘর থেকে বেড়ে বাড়ি
আমরাও খুঁজে নেবো সেই আগেকার রসের হাড়ি
আর যদি তেতো ঠেকে , ছুড়ে মারে কেউ আন্ডা
কত আর পেরোবে , আহা , বড় জোর বারান্দা !
ঃ)
বদ্দা , বঞ্চিত রাখা ঠিক না ।
সবাইরে ধন্যবাদ। প্লটে নানারকম বাড়ি উঠি উঠি করে, পরে কলিং বেল ঝাড়ি খেয়ে সেঁধে যায় বারোয়ারি ঘটে...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
সময় গেলে সাধন হবেনা
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বেশি বেশি পলট থাইকলে কিন্তু দুদকে মামলা করবো। তাই নামাইয়া ফেলনই ভালা।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
আমিও মন্তব্য দিয়ে চলছি। তবে আজ কাল একটা কিছু আবজাব হলেও লিখেই ফেলবো।
--------------------
জল ভরো সুন্দরী কইন্যা, জলে দিছ ঢেউ।
হাসি মুখে কওনা কথা সঙ্গে নাই মোর কেউ।
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
দেরি হলে প্লট হাতছাড়া (মানে বেদখল) হয়ে গেলে?
জলদি নামান।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
টুকরা গুলো জোড়া দিয়ে দাও।
হায় হায়! আমি তো অতশত ভাবিনাই ,,, একটার পর একটা এ্যানি ড্যাম থিং মেরেই যাচ্ছি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
তো আমি কি মারতাছি?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
নতুন মন্তব্য করুন