বই কেনা, বইয়ের দোকান

নৈষাদ এর ছবি
লিখেছেন নৈষাদ (তারিখ: মঙ্গল, ০১/১২/২০০৯ - ৭:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শৈশবের ট্রেনের চালক হওয়া কিংবা এ-টিমের বেলিন্দা সুলজের বিপরীতে অভিনয় করা জাতীয় জীবনের লক্ষ্য বয়স বাড়ার সাথে পারিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু কৈশোরের লালিত একটা ইচ্ছা আজও রয়ে গেছে, মাঝে মাঝে অনুভব করি যেন তীব্রতর হচ্ছে। আর সেটা হল মনের মত একটা বইয়ের দোকান দেয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অ্যাকাডেমিক বইয়ের জন্য অবশ্যই পীঠস্থান ছিল নীলক্ষেত। বই কেনার আনন্দ অথবা ছাত্র জীবনের জন্য আরও প্রযোজ্য শব্দ, বই বিষয়ক সমস্যার সমাধান নীলক্ষেতে প্রায় সবসময়ই পেয়ে এসেছি বলতে হয়। (এই লেখায় আমি বই-বিক্রেতা শব্দটা খুবই শ্রদ্ধার সাথে ব্যবহার করছি, এবং মালিক কিংবা কর্মচারী যেই আমার চাহিদা মেটানোর জন্য আমার সাথে কথা বলছে তাঁকেই বুঝাতে চাইছি)। পিছনে ফিরে তাকালে মনে হয় আমার ছাত্র জীবনে নীলক্ষেতের বই-বিক্রেতারা বেশ আন্তরিকই ছিল। বিক্রেতারা এমন কী দোকানে বই না থাকলেও সমাধানের সম্ভাব্য পথ বলে দিতে কখনই কার্পণ্য করত না। নীলক্ষেতের বই-বিক্রেতারা কখনও কখনও আমাকে চমৎকৃতও করেছে। সচরাচর বই কিনতাম এমন একটা দোকানে একবার একটা বইয়ের নাম বলে বুঝাতে চেষ্টা করায় বিক্রেতা বলেছিল, ‘আরে ইমরান স্যার ক্যাপিটাল বাজেটিং এর ক্লাসে যেটা রেফার করছে সেটাতো? (মাত্র আগের দিনই ক্লাশে বলেছিল)। আগের বছর তো ওটা রেফার করেছিল, অবশ্য এটাতে এই বিষয়ের উপর বেশ কয়েকটা চ্যাপ্টার আছে। যাক, কাল সন্ধ্যায় আসেন, পেয়ে যাবেন’। আরেকটা মজার ঘটনা, ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং নামক কুৎসিত এক বিষয়ের বই কেনার পর পাশে দাঁড়ানো বন্ধুর কাছে আক্ষেপ করেছিলাম, ‘সাবজেক্টটা জ্বালাবে’। বিক্রেতা সমাধানের হাত বাড়িয়েছিল, ‘চোথাও আছে, দরকারে নিতে পারেন’। মানে। ‘মানে হল অনুশীলনীর অংকগুলোর সমাধানের একটা চোথা আছে, হাতে লিখা অবশ্য’। বানিজ্যই নিশ্চিতভাবে উদ্যেশ্য, কিন্তু ক্রেতা হিসাবে প্রাসঙ্গিক দ্রব্য তো অফার করছে।

বইয়ের জন্য এখনও নিউমার্কেট আমার প্রত্যাশিত জায়গা। যদিও নিউমার্কেটের কিছু দোকনী কিছু বইয়ের নাম বললে অথবা এ ধরনের বই কোন তাকে দেখব এ জাতীয় কথায় শূন্য দৃষ্টিতে তাকায়। সোজাসোজি নেই বলে অথবা এখানে দেখতে পারেন ধরনের দায়সারা উত্তর দিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকে। আবার এখনও কিছু বইয়ের পুরানো বই-বিক্রেতা আছেন যাঁরা বই বিক্রীকে একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তাঁদের সাথে কথা বলাও একটা ভাল বই পড়ার মতনই। অজস্র উদাহরন আছে।

মাস দুয়েক আগে বিদেশে প্রকাশিত একটা অ্যাকাডেমিক বইয়ের খোঁজ করায় এক বিক্রেতা প্রকাশকের নাম জানতে চাইল। বলায় সে ব্যাখ্যা করল, সাধারনত ভারতে কোন কোন প্রকাশনীর বই ছাপানো হয়, বাংলাদেশে বেশির ভাগ বই কোন কোন প্রকাশনী থেকে বই আসে। সমাধানের সম্ভাব্য পথও দেখালো, ‘নীল ক্ষেতে পুরানো বই হিসাবে পেতে পারেন, কিন্তু কারেন্ট এডিশন হয়ত পাবেন না’। অন্যান্য প্রকাশনীর কিছু সম্ভাব্য বইয়ের নামও বলল। এবং সেগুলি খুবই প্রাসঙ্গিক। তিনি কিন্তু বই কিনতে পুশ করছেন না, কিন্তু সম্ভাব্য অপসন গুলি ক্রেতা হিসাবে আমার সামনে নিয়ে আসছেন। বিক্রেতার বিক্রীর সম্ভাবনাও বাড়ছে, আবার ক্রেতা হিসাবে আমিও খুশি। পরের বার বই খোঁজতে হলে আমি নিশ্চয়ই সেই দোকানে যাব।

আজিজ সুপার মার্কেটে নতুন দোকান গুলিতে (হ্যাঁরে ভাই, বইয়ের দোকানের কথাই বলছি, অন্যগুলি না) আগের মত আর আনন্দ পাইনা। আজিজ সুপার মার্কেটের একটা সুন্দর স্মৃতি আছে। এই দশকের গোড়ার দিকে কোন এক সময় লরেন্স লিফসুলজের বাংলাদেশ, দি আনফিনিশড রেভুলিউশন বইটা পড়ার খুব ইচ্ছে হল (পত্রিকাতে তখন খুব লেখালেখি হচ্ছে তখন)। নিউমার্কেট বা আজিজে কোথাও খোঁজে পাচ্ছিনা। আজিজ সুপার মার্কেটে আমার পছন্দের এক বিক্রেতা শেষে আমাকে বুঝালো কেন বইটা আর পাওয়া যায় না। শেষে একটা বিজনেস কার্ড দিয়ে নিউমার্কেটে এক বই-বিক্রেতার কাছে পাঠালো। সেই ভদ্রলোক, যাঁর বাসায় বইটার একটাই কপি আছে, বলল দু’দিন পরে আসলে আমাকে একটা কপি করে দিতে পারবেন। তারপর (আসলে আমি ১৯৭১-৭৫ সময়ের কিছু ঘটনা জানতে চাইছিলাম) আমাকে সম্ভাব্য কোন কোন বইতে পাওয়া যেতে পারে বললেন।

কপির কথাই যখন আসল তখন পাইরেটেড বইয়ের কথাও উল্লেখ করতে হয়। ড্যান ব্রাউনের দ্য লস্ট সিম্বোল যখন প্রকাশিত হল, বাংলাদেশে অনেকগুলো ট্র্যাফিক সিগন্যালে পাইরেটেড কপি পাওয়া যাচ্ছিল (তখন দাম ছিল ২৩০ -২৫০ টাকা, এখন ১০০ টাকা)। কিন্তু অরিজিন্যাল কপি আমি কোথাও খোঁজে পাইনি। এই সব বেস্ট-সেলার বইয়ের পাইরেটেড কপি যখন প্রথম প্রথম ট্র্যাফিক-সিগন্যাল-সেল শুরু হয়, তখন এক বই-প্রেমী ব্যবসায়ী ১৫০ টাকা দিয়ে ক্লিন্টন সাহেবে মাই লাইফের একটা পাইরেটেড কপি কিনল (আমি অবশ্য বইটা পড়ারও চেষ্টা করিনি)। আমি বললাম, ‘আপনিও’! উনার উত্তর ছিল খুব সোজা। ক্লিন্টন সাহেবের রয়েলটির আর দরকার নাই। এই বইটা দিয়ে যদি আমাদের কিছু লোকের কর্মসংস্থান হয় আপনার অসুবিধা কী? দ্বিতীয়ত আমাদের লোকজন এখন বইটা পড়তে পারছে, নইলে তো পারত না। কিন্তু পাইরেটেড কপির ট্রেন্ডটা ভাল না, খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রকাশকরা নিশ্চয়ই ইচ্ছে করলে বাংলাদেশের জন্য লো-প্রাইস এডিশন প্রকাশ করতে পারে।

দেশের বাইরের অভিজ্ঞতাও কিছুটা বলা উচিত মনে হয় (ভারত, যুক্তরাজ্য এবং সিঙ্গাপুরের অভিজাত বইয়ের দোকানেই সীমাবদ্ধ।)। খুবই প্রফেশন্যাল, যদিও স্বীকার করতেই হয় নিউমার্কেটের সেইসব প্যাশোনেট বই-বিক্রেতাদের মত কখনই না। একটা গুরুত্বপূর্ণ অভজারভেশনের কথা উল্লেখ করি। আমার অভিজ্ঞতা বলে যুক্তরাজ্যের বই বিক্রেতারা অন্যান্য পণ্য বিক্রেতাদের তুলনায় ভিন্ন। যুক্তরাজ্যের একটা অভিজাত বইয়ের দোকানে একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি। একটি দোকানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত একটি বই খোঁজছিলাম। বিক্রেতা কম্পিউটারে স্টক চেক করে বলল নেই, সাপ্লায়ারের সাথে যোগাযোগ করে বলল দু’দিন পর দেয়া যাবে। আমি পরের দিন দেশে ফিরে আসব। বিক্রেতা তখন আরও তিনটি বইয়ের দোকানে ফোনে কথা বলে একটা দোকানের নাম এবং অবস্থান বলল, যেখানে একটা কপি পাওয়া যাবে। আমি সভাবতই চমৎকৃত হয়েছিলাম, বিশেষ করে ঘটনাটা যখন যুক্তরাজ্যের মত জায়গায়। আরেকটা ঘটনা। ছাত্রাবস্থায় বই-পাগল এক বন্ধুর সাথে গেছলাম দার্জিলিং, অফ-সিজনে। ম্যলে একটা বইয়ের দোকান আছে, অক্সফোর্ড। এক বৃষ্টির দুপুরে আমরা দুজন বই দেখছি, আর কেউ নেই। অশীতিপর এক বিক্রেতা দম্পতি। আমরা তাঁদের সাথে অতীত নিয়ে কথা বলছি, মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছি অতীতের সব কাহিনী। এক পর্য্যায়ে আমার বন্ধুর পছন্দের বিষয়ে জানতে পেরে বলল তোমাকে একটা বই দেখাই। আমি বিশ্বাস করি তোমার ভাল লাগবে। বইটি ছিল মানিনি চ্যাটার্জীর ডু এন্ড ডাই (তখনও বাংলাদেশে বইটি আসে নাই)। বইটা পেয়ে বন্ধুবর যে পরিমান খুশি হয়েছিল, আমি নিশ্চিত সেটা তার দার্জিলিংয়ে যাওয়ার খুশিকেও ছাড়িয়ে গেছে।

ঢাকার আপমার্কেট ক্রেতাদের টার্গেট করে যে সব বইয়ের দোকান আছে তার অভিজ্ঞতাও কিছুটা বলতে হয়। ধানমন্ডিতে যখন এটসেট্রা চালু হয়, ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। এক্ট্রা হিসাবে ছিল চমৎকার কফি...। আমার বাসা থেকে হেটে যেতে পাচঁ মিনিটও লাগে না। অবশ্য পরে একসময় উপলব্ধি করেছিলাম, বন্ধ হওয়াটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। অবশ্য এটসেট্রার অন্যান্য আপমার্কেট দোকান থেকে কালেকশন ভাল ছিল।

ঈদের পরের এই সপ্তাহটায় রাস্থাঘাট খালি। গুলশানের একটা বিখ্যাত বইয়ের দোকানে গেলাম আজ। চমৎকার দোকান, বিক্রেতা সাহায্যের কিছু চেষ্টাও করল, কিন্তু বেচারা বই সম্বন্ধে কিছুই জানে না। আমি কী চাচ্ছি, বুঝাতেই পারলাম না। দ্বিতীয়ত আমি বাংলাদেশের যে বিষয়টা নিয়ে বই খোঁজছিলাম তার উপর যদিও অনেক বই আছে, একটাও দেখলাম না দোকানে।

ফিরে আসি আমার বইয়ের দোকান প্রসঙ্গে। পড়াশুনা শেষ হবার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের সাথে কিছুদিনের জন্য একটা কাজে জড়িত ছিলাম (যিনি ছাত্র জীবনে আমার শিক্ষক ছিলেন)। একসময় কথা হচ্ছিল সম্ভাব্য একটা ফ্যাক্টরী তৈরী করা নিয়ে। অলস সেই কথোপকথনের মুহূর্তে আমার বইয়ের দোকানের ইচ্ছার কথা বলায় আনুভব করলাম উনারও অনেকদিনের শখ। যদি উনার খুবই বড় স্কেলে, এবং নতুন কিছু আইডিয়া সহ। নো প্রবলেম। আমরা সম্ভাব্য জয়েন্ট-ভেঞ্চারের কথা চিন্তা করলাম। পরদিনই ক্লাশে তিনি কয়েকটা গ্রুপকে প্রজেক্ট ওয়ার্ক দিলেন ‘বইয়ের দোকানের প্রজেক্ট প্ল্যান’। নিউমার্কেট এবং আজিজে গিয়ে ডিটেইল কাজ করতে হবে - ইনিশিয়্যাল ইনভেস্টমেন্ট, রিটার্ন, আগামী দশ বছরের ক্যাশফ্লো, সাপ্লায়ার্স ইনফোর্মেশান, সম্ভাব্য বই ক্রেতাদের কনসেন্ট্রেশন...। প্ল্যানটা ফিজিবল ছিলনা।

এখন ভাবি বইয়ের দোকানের জন্য হয়ত দরকার একটা প্যাশন, বইয়ের প্রতি আকর্ষণ আর জ্ঞান, ক্রেতার প্রতি সামান্য হলেও মনযোগ দিবার এবং সাহায্য করবার প্রবণতা। এইত।

আমার ইচ্ছেটা অবশ্য মরে যায়নি।

(দেশে যে সব দোকানে ভাল অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেগুলির নাম দেয়ার ইচ্ছে ছিল। পরে ইচ্ছাকৃত ভাবে বাদ দিলাম।)


মন্তব্য

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

চমৎকার লাগলো। তবে দোকানগুলোর নাম দিলে আমাদের পাঠকদের কিন্তু বেশ সুবিধা হতো। ভাল জিনিসের একটু বিজ্ঞাপন হলে নিশ্চয়ই ক্ষতি নেই।

নৈষাদ এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে পাঠক।

নিউমার্কেট এখনও বই কেনার জন্য চমৎকার স্থান। মাঝে মাঝে যান, ভাল দোকান গুলি এমনিতেই পেয়ে যাবেন। কিছু কিছু বিক্রেতাদের সাথে কথা বললেও জানতে পারবেন কী হচ্ছে বইয়ের বাজারে।

হিমু এর ছবি

খুব ভালো লাগলো পোস্টটা।

বইয়ের দোকান শুধু বই কেনা-বেচার জায়গাই হওয়া উচিত না। আমি বইয়ের দোকান দিলে তাতে ছোটো একটা স্ন্যাকস অ্যান্ড বেভারেজ কর্ণার থাকতো, তাতে ঝালমুড়ি, চা, বিক্রি হতো বড় ঠোঙা আর ভাঁড়ে, দোকানের মাঝে থাকতো বসার বেঞ্চ আর টেবিল, সেখানে ক্রেতারা জোর আড্ডা বসাতো বই নিয়ে, নতুন বই কিনতে এসে কোনো ক্রেতা সেই আড্ডার খণ্ডাংশ শুনে তেড়ে এসে প্রতিবাদ করতে যোগ দিতেন সেই আলোচনায়, সেই দোকান থেকেই প্রকাশিত হতো একটা ছোট্ট রিভিউ-ম্যাগাজিন, বড় লেখকদের মৃত্যুবার্ষিকীতে বড় ব্যানার টানানো হতো বাইরে, সেদিন তাঁদের ঘিরে বিশেষ বিক্রি আর আড্ডা চলতো। নেপথ্যে বাজবে গান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খোলা হবে বিয়ারের ব্যারেল, মাসে একদিন হবে সরাসরি সঙ্গীতের আয়োজন, শিল্পীরা সেদিন গাইবেন।

বই কি শুধু কেনার জিনিস? শুধু বিক্রির জিনিস? বই তো জীবনের মতো, যাপন করার একটা কিছু ...



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি বইয়ের দোকান দিলে তাতে ছোটো একটা স্ন্যাকস অ্যান্ড বেভারেজ কর্ণার থাকতো, তাতে ঝালমুড়ি, চা, বিক্রি হতো বড় ঠোঙা আর ভাঁড়ে, দোকানের মাঝে থাকতো বসার বেঞ্চ আর টেবিল, সেখানে ক্রেতারা জোর আড্ডা বসাতো বই নিয়ে, নতুন বই কিনতে এসে কোনো ক্রেতা সেই আড্ডার খণ্ডাংশ শুনে তেড়ে এসে প্রতিবাদ করতে যোগ দিতেন সেই আলোচনায়, সেই দোকান থেকেই প্রকাশিত হতো একটা ছোট্ট রিভিউ-ম্যাগাজিন, বড় লেখকদের মৃত্যুবার্ষিকীতে বড় ব্যানার টানানো হতো বাইরে, সেদিন তাঁদের ঘিরে বিশেষ বিক্রি আর আড্ডা চলতো।

এই রকম একটা দোকানের ইচ্ছা যে কতদিনের !!!!
_________________________________________

সেরিওজা

নৈষাদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
আমাদের স্বপ্নের দোকানের প্ল্যানিংএ স্ন্যাকস কর্ণার, আড্ডার স্থান (লেখকের কথাও চিন্তা করা হয়েছিল), রিভিউ ম্যাগাজিন ইত্যাদি ছিল। তবে আপনি তো আরও স্বপ্নের সীমানা আরও বাড়িয়ে দিলেন…।
আবারও ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

লেখকদের যতো কম ঢুকতে দিবেন তত ভালো দেঁতো হাসি । খুব গিয়ানজাম্যাটিক ক্যারেক্টার এরা ... আর কবিদের দেখলেই গুল্লি। বইয়ের দোকানে শুধু পাঠকদের রাজাউজিরনিধন জায়েজ।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

নৈষাদ এর ছবি

তথাস্তু। ... না মানে কবিদের একটা বিশেষ ভাগ্য ভাল হয় এই আরকি (এক চোখ বন্ধ করা ইমোটিকন – কীভাবে দিতে হয় জানিনা)। সেই ভাগ্যের ছিটে ফোঁটা যদি…।

হিমু এর ছবি

ঐটা একটা আরবান লিজেন্ড। পাত্তা দিয়েন্না দেঁতো হাসি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই ধরণের অভিজ্ঞতা কম্বেশী ঢাকার সব পাঠকেরই আছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে ঢাকার নীলক্ষেত যে পড়াশোনার বইয়ের পেছনে কী দুর্দান্ত উপকারটা করেছে- সেটা প্রায় সব ছাত্রই জানেন।
... এখনো যখন কোন বইয়ের দোকানদারের সাথে বই নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা হয়- একটা অদ্ভূত আনন্দ হয় সে কথোপকথনে...

_________________________________________

সেরিওজা

নৈষাদ এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
সুহান, আপনি তো এখনও পড়াশুনার কাছাকাছি রয়েছেন (অ্যাকাডেমিক অর্থে)। আমরা যারা দূরে চলে গেছি, বার বার পেছনে ফিরে তাকাই এবং সেই দিনগুলিকে মিস করি।

নজমুল আলবাব এর ছবি

পোষ্টটা অসম্ভব ভালো লাগলো।

আমার নানান কিসিমের স্বপ্ন আছে। বাঙলাদেশে একটার পর একটা উদ্যোগ নিয়ে ভাবার অসম্ভব ক্ষমতা যাদের আছে আমি তাদের সাথে কম্পিটিশন করতে পারবো। এই বয়েসে কমপক্ষে বড় বড় ৫ টা উদ্যোগ আমি নিয়েছি! সবগুলাই অবশ্য লস করেছি। (টাকার হিসাবে এর একটাই কোটির উপরে লস দিয়েছে।) তবু আমি স্বপ্ন দেখা কিঙবা কিছু একটা করার চিন্তা বাদ দিতে পারি না বা দেই না।

এই রকম একটা স্বপ্ন হলো বই এর দোকান করার স্বপ্ন। হিমু যা যা বল্লো তা আমার পরিকল্পনার সিকি অংশ মাত্র।

২০০৬ এর শেষ দিকে আমি একটা ঝাপটা দিয়েছিলাম। ছোট করে একটা বই এর দোকান করার প্ল্যান ছিলো। ইয়াহইয়া ফজল নামের আমার এক ছোটভাইরে দিছিলাম দায়িত্ব। সে কাজও শুরু করলো। এর কিছুদিনের মাঝেই ক্ষমতায় আসে অস্বাভাবিক সরকার। এরপর নিজের পিঠ নিয়াই দৌড়াদৌড়ি...

তবে হাল ছাড়িনি। একদিন নিশ্চয় হবে...

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

নৈষাদ এর ছবি

ধন্যবাদ নজমুল আলবাব ভাই।

উদ্যোগ নেয়ার ক্ষমতায় হয়ত পারব না, কিন্তু নতুন নতুন প্ল্যানিং এর ব্যাপারে আমি ভাল কম্পিটিশন দিতে পারব। যদিও প্ল্যানগুলি আর বাস্তবে রূপ পায়না। আমার পড়াশুনার লাইনের জন্য আমি আবার এক কাঠি সরেস। ফাইনান্সিয়্যাল প্লানিংও হয়ে যায়। (এই যেমন ইদানিং টমাটো প্রিজার্ভেরশনের একটা প্রজেক্টের ব্যাপারে অনেক আলোচনা/সমালোচনা শেষ করে জানতে পারলাম এই টেকনোলজীই নাকি নেই, মানে টমেটো প্রিজার্ভ করা নাকি সম্ভবই না...)।

আপনার অনেক গুণের কথা শুনেছি (সূত্রঃ নজরুল ইসলাম, হিমু)। কিন্তু তত্ত্ববধায়ক সরকারের কৃপাদৃষ্টি যাঁদের দিকে পড়েছে, তাঁরা তো ভীষণ এলিট শ্রেণীর মানুষ…??

নজমুল আলবাব এর ছবি

আপনার অনেক গুণের কথা শুনেছি (সূত্রঃ নজরুল ইসলাম, হিমু)। কিন্তু তত্ত্ববধায়ক সরকারের কৃপাদৃষ্টি যাঁদের দিকে পড়েছে, তাঁরা তো ভীষণ এলিট শ্রেণীর মানুষ…??

দেঁতো হাসি

আমি একটা ভ্যামতালা বদমাশরে দাদা।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

দময়ন্তী এর ছবি

খুব পছন্দের বিষয়৷ ভাল লাগল খুব৷

এইবছর যখন চারদিকে হু হা করে লোকের চাকরী যাচ্ছিল, আমি তখন গুছিয়ে প্ল্যান করলাম যে চাকরী গেলেই একটা বইয়ের দোকান খুলব৷ বাংলা ইংরাজী সবরকম বইই রাখব৷ তারপর চাকরীটা কেন জানি গেল না৷ আমারও আর দোকান খোলা হল না৷

একেকটা শহরের বইয়ের দোকানে এক একরকম বৈশিষ্ট্য থাকে৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

নৈষাদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। চাকুরী না থাকার প্রিকন্ডিশন ছাড়াই যেন স্বপ্ন সফল হয় এই প্রত্যাশা রইল।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমার একটা কমপ্লেক্স দেওয়ার ইচ্ছা বহুদিনের। এখনো সপ্তাহে একবার সেই প্ল্যানটা নিয়ে কারো না কারো সঙ্গে আলাপ করি। আমি নিশ্চিত এই কাজটা আমি জীবনে কোনো না সময়ে করতেই পারবো।
কমপ্লেক্সটায় বিকিকিনি হবে বই, সুর আর চলচ্চিত্র... আর সেটাকে ঘিরে আরো কতো কতো যে উপস্বপ্ন... বলতে গেলে আমারো আস্ত একটা পোস্ট লেখতে হবে... তাই বাদ্দিলাম... কিন্তু বেঁচে থাকলে সেটা করেই দেখাবো, নিশ্চিত...

পোস্টটা সেই স্বপ্নটাকে ভীষণ একটা তাড়া দিলো... ধন্যবাদ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নৈষাদ এর ছবি

চমৎকার। সচলায়তনের স্বপ্নদর্শীদের কথা মাথায় থাকল...।

অনেক ধন্যবাদ নজরুল ভাই।

হাসিব এর ছবি

বাংলাদেশের প্রকাশকরা নিশ্চয়ই ইচ্ছে করলে বাংলাদেশের জন্য লো-প্রাইস এডিশন প্রকাশ করতে পারে।

কমদামি ভার্সন বের করতে নিশ্চয়ই কপিরাইটের জন্য টাকা পরিশোধ করতে হবে তাদের । এটা করে কি খরচে পোষাবে তাদের ?

নৈষাদ এর ছবি

ধন্যবাদ। এটা একটা ডিলেমা। কমদামি ভার্সন বের করতে অবশ্যই কপিরাইটের জন্য টাকা দিতে হবে, এবং তার জন্য বইয়ের দাম বেশ বেড়ে যাবে। (যেমন ড্যান ব্রাউনের যে বইটা বাংলাদেশে রি-প্রিন্ট করা হয়েছে, সেটা ভারতীয় এডিশন, এবং ভারতে এর দাম ৭৫০ রূপী)।

নীলক্ষেতে একাডেমিক বইয়ের ব্যাপারটা হয়ত ঠিক আছে, এবং এটা নিয়ে কেউ মাথাও ঘামাচ্ছে না। (এমনকী আইবিএতে টিচাররা ছাত্রদের বাইরের বই গুলি কপি করে নিতে বলে।)। যেহেতু বাজার খুব ছোট, একাডেমিক বই কমদামি ভার্সন করে ব্যবসা সম্ভব না। (ভারতে সম্ভব হয়েছে যেহেতু বাজার অনেক বড়)।

কিন্তু একাডেমিক নয় এমন অন্যান্য বেস্ট-সেলার গুলিও সবই এখন বাংলাদেশে পাইরেটেড কপি হয় (অরুন্ধতী রায় এবং আন্যান্য)। ওরিজিন্যাল কপি খুব কমই পাওয়া যায়। এই বৈশ্বিক যুগে দেশের ইন্টালেকচুয়্যাল বেইজটা বৈশ্বিক দৃষ্টিতে পুরাপুরি গ্রহনযোগ্য নয় এমন একটা ব্যাপারের উপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, ব্যাপারটাও কিছুটা পীড়া দেয়। এই আরকি। সমাধান কী জানি না।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বইয়ের দোকান করবো- এই চিন্তা মাথায় আসলে আজিজের পরথমার কথা ভাবলেই সব চিন্তা ভেচ্‌কাইয়া যায়।

নৈষাদ এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ... তবে আপনার হিন্টস আমার মাথার উপর দিয়ে চলে গেল, ধরতে পারি নাই।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

স্বপ্নটা কুড়ি হোক, ফুটুক ফুল...

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

নৈষাদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে টুটুল ভাই। একদিন আপনাকেও আমার স্বপ্নের কথা বলেছিলাম...।

গৌতম এর ছবি

দারুণ লেখা। নীলক্ষেতের কথা মনে করিয়ে দিলেন। নীলক্ষেত না থাকলে এই ঢাবির শিক্ষার্থীদের যে কী হতো! আমি তো এখনও মাঝে মাঝে ফ্রেন্ডসে যাই, ঢু মারি। কেনাকাটা না করলেও গল্পগুজব করে আসি।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

নৈষাদ এর ছবি

ধন্যবাদ। এটা একটা পারষ্পারিক নির্ভরতার চমৎকার উদাহরণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল বইয়ের চাহিদা নীলক্ষেতের ব্যবসাকে দাড় করিয়ে রেখেছে। আবার নীলক্ষেতের অতি অল্প খরচে বই দেয়ার ব্যাপারটা শিক্ষার্থীদের জন্য আশীর্বাদের মত...।

তবে নীলক্ষেত কিন্তু এখন এবং লেভেলের ছাত্র ছাত্রীদের স্পেশাল নীড খুব ভাল ভাবে ক্যাটার করছে।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আহা, কী স্বপ্ন মাখানো লেখা। ভালো লাগলো।

বানিজ্য হিসেবে বইয়ের দোকান খুব একটা লাভজনক নয়। আর তাই স্বপ্নালু মানুষ ছাড়া বইয়ের দোকান করতে কেউ এগিয়ে আসে না। এটসেটরার অভিজ্ঞতা তেমনই বলে। এই চমৎকার দোকানটা বন্ধ হয়ে গেল।

তবে কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই আছে। যেমন সিলেটের বইপত্র, দোকানটা এখন আছে কি না জানি না, একটা সময় ছিল। একটা মোড়া টেনে বইয়ের তাকের সামনে বসে পড়ে দুইতিনঘন্টা আরাম করে পড়া যেতো। কতো বইযে কিনেছি ওখান থেকে।

ম্যালের অক্সফোর্ডের কথা মনে করিয়ে দিলে ভালো করলেন। পেঙ্গুইনের ইন্ডিয়ান এডিশনের দাম যে এতো কম সেটা ওখানে ঢুকেই প্রথম আবিস্কার করেছিলাম অনেকগুলো বছর আগে।

আমাদের ছোট দেশে পেঙ্গুইন আসে না, রাস্তার মোড়ের পাইরেটেড কপি ছাড়া আমাদের বিকল্পটা তাই ভাবার জরুরী দরকার হয়ে পড়েছে।

নৈষাদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আরিফ জেবতিক ভাই।
আমার ছোটবেলার বিখ্যাত সব বইয়ের দোকান গূলো শেষ বার যখন গেছি, বেশ ম্লান মনে হয়েছে… (সিলেট, চিটাগাং)।
পেঙ্গুইনের বই কিন্তু ঢাকায় বেশ ভালই পাওয়া যেত। পাইরেটেডের দাপটে তেমন একটা আসে না আর।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সুমন, আমার বা আমার মত আরো অনেকের একান্ত অভিজ্ঞতার কথা সুন্দর করে বলে দিলেন। মন্তব্যে হিমু আমার স্বপ্নের কথাও বলে দিলেন। বিশেষতঃ বইয়ের দোকান থেকে কবি-লেখকদের উচ্ছেদের কথাটা। দু'জনকেই ধন্যবাদ।

এই বয়সে এসে এইটুকু বুঝে গেছি জীবনে আর কী কী হওয়া সম্ভব। তাতে জেনেছি বইয়ের দোকান দেয়া আর কখনো হবেনা। তবু আপনাদের মত স্বপ্নচারী কেউ বোকার মত অমন একটা বইয়ের দোকান দিয়ে দেবেন - এই আশাটা রাখতে চাই।

উপরতলার বইয়ের দোকানগুলোতে পারতপক্ষে যাইনা। আমি মূলতঃ ফুটপাথ থেকে বই কেনা মানুষ। লিখতে পারলে একদিন ফুটপাথের বইয়ের দোকান নিয়ে লিখব।

ইদানিং একটা ভয় হয়। ফুটপাথ আর পুরনো বইয়ের দোকান থেকে কেনা আমার বইগুলো আবার ফুটপাথে বা পুরনো বইয়ের দোকানে চলে যাবে নাতো?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পান্ডব'দা অনেকদিন হয়তো ওদিকে যাওয়া হয়না আপনার। নীলক্ষেতের ফুটপাতের সেই শান শওকত আর নেই। সেই পুরোনো বইগুলোও নেই... মন খারাপ
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নৈষাদ এর ছবি

পান্ডব দা, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

কবি/লেখকদের ব্যাপারটা আপনাদের মত ভেটার্যা নদের কাছ থেকে জানার পর তো আমার আর কিছু বলার থাকে না। দুর্ভাগ্য, কবিদের সাথে মেশার সুযোগ হয়নি তেমন একটা। তবে আমার এক সফল ব্যবসায়ী কাম সফল-কিনা-জানিনা কবি বন্ধু আছে (যদিও অনেক সিনিয়্যার)। তবে উনার একটা বিশেষ দিকের ভাগ্য দেখে আমারও কবিতা লিখতে ইচ্ছে হয় (এক চোখ বন্ধ করা ইমোটিকন)।

ফুটপাতের বইয়ের দোকানের লেখাটার অপেক্ষায় থাকলাম। আপনার মন্তব্যের শেষের দিকের ভয়ের কারন্ টা ঠিক ধরতে পারলাম না।

হিমু এর ছবি

ওরকম একটা বইয়ের "দোকান" দেয়া সম্ভব, যদি জিনিসটা এক্সক্লুসিভ একটা বুক ক্লাবের মতো করে তৈরি করা যায়। অর্থাৎ ক্রেতাদের একটা অংশকে স্টেইকহোল্ডার হতে হবে এই আসর টিকিয়ে রাখার জন্যে। তাতে করে বিজনেস মডেলটা একটু কেতরে-ছেতরে যাবে, কিন্তু আমাদের অনেকেরই স্বপ্নে দেখা দৃশ্যগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

যা করতে হবে, স্বপ্নভূকদের এক জায়গায় করতে হবে। তাঁদের স্বপ্ন যতদিন সজীব থাকবে, বইয়ের আসরটাও টিকে থাকবে। একশো জন এমন মানুষ পাওয়া যাবে না, যারা মাসে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিতে পারবেন ঐ পরিবেশটুকুর জন্যে? এরচেয়ে অনেক বেশি টাকা আমরা উড়িয়েপুড়িয়ে নষ্ট করি। ঢাকার কোথাও হাজারখানেক স্কোয়্যার ফিট নিয়ে এমন একটা বইয়ের "দোকান" শুরু করাই যায়। এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রবাস থেকেও এগিয়ে আসতে পারেন অনেকে। ব্রেক-ইভেন পয়েন্টে পৌঁছুতে হয়তো সময় লাগবে, কিন্তু একদিন ঠিকই পৌঁছুবে।

ভাবুন দৃশ্যটা। ওয়াশিংটন থেকে, মিউনিখ থেকে, বার্সেলোনা থেকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে, জয়দেবপুর থেকে পাঠকরা আসছেন এই আড্ডায় একবার শামিল হতে। বই দেখতে, কিনতে, একবার হাতে নিতে, বই নিয়ে কথা বলতে। বইটাই লক্ষ্য, উপলক্ষ্য। আমন্ত্রিত লেখকরা পড়তে আসছেন, আমন্ত্রিত শ্রোতারা শুনতে আসছেন, সাধারণ ক্রেতারা আসছেন তার টানে।

করা যায় কিন্তু! একজন দন কিহোতে দরকার শুধু, সব কয়টা উইন্ডমিল মেরেকেটে শুইয়ে ফেলা যাবে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

"দোকান" হলে বিনা পারিশ্রমিকে "দোকানের কর্মচারি" হব। প্রয়োজনে ডোনেশন, কিংবা ঘুষ দিয়ে হলেও...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নৈষাদ এর ছবি

সকালেই দেখেছি আপনার মন্তব্যটা। মাথায় ছিল সারাদিন। চমৎকার মনে হচ্ছে। কনসেপ্টটা নিয়ে চিন্তা করছি…।

একটা প্রফেশন্যাল বডি করার স্বপ্নকে সফল করার জন্য কাজ করেছিলাম একসময়। দাঁড়িয়ে গেছে শেষে…।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

প্রেজেন্ট প্লিজ স্যার! কর্মচারী দরকার হইলে জায়গায় দাঁড়ায়ে আওয়াজ দিয়েন! দেঁতো হাসি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নৈষাদ এর ছবি

লিস্টে নামটা থাকল।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌লেখাটা খুব ভালো লেগেছে। এই লেখাটা যেন আমিই লিখতে চেয়েছিলাম।

বইয়ের দোকান নিয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা, বিচিত্র স্বপ্ন। চট্টগ্রামের বইয়ের দোকানের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে লিখবো কদিন পর। আজ আপনারটা পড়ে গেলাম এবং মুগ্ধ হলাম।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নৈষাদ এর ছবি

ধন্যবাদ। চিটাগাংএ নিউমার্কেটের উল্টোদিকের কারেন্ট বুক সেন্টার নিয়ে আমার শৈশবের অনেক স্মৃতি আছে। অনেকদিন সেদিকে যাওয়া হয়না, জানিনা এখনও আছে কিনা। একসময় খুবই অভিজাত দোকান ছিল সেটা।
এই দশকের গোড়ার দিকে বছর দুই ছিলাম চিটাগাং, তখন অবশ্য মিমি সুপার মার্কেটের লাইসিয়ামেই যাওয়া হত…।

ফকির লালন এর ছবি

আরে আমারো ইচ্ছে ছিলো একটা বই আর কফির তীর্থস্থান বানাবো। আরো অনেকেরও ইচ্ছে একই জেনে ভালো লাগলো। আশা করি লগ্নির সেই টাকা একদিন হবে। নতুবা সবাই একসাথে ....

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

-গতকাল থেকে সচলে লেখাটা পড়বো পড়বো করতেছি! এখন পল্লাম! খুব ভালো লেগেছে।
-আমি এ্যাকাডেমিক বই যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো আসল কপি কেনার চেষ্টা করি। নীলক্ষেত কপি কেন জানি পড়তে ভাল্লাগে না!
-এরকম লেখা আরও চাই!!

---------------------
আমার ফ্লিকার

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আহ! স্বপ্ন! তবে আমার স্বপ্নটা লাইব্রেরির, দোকানের না! কাউকে স্বত্ত্ব [বানান মনে হয় ভুল! ইয়ে, মানে... ] ত্যাগ করে বই দিয়ে দিব ভাবতে কেমন যান লাগে!

ইটিসির আমি একজন লয়াল পাংখা ছিলাম! বুয়েটে আড্ডা দেয়া বন্ধ করার পর, জাবি থেকে ক্লাস শেষ করে সরাসরি হানা দিতাম ইটিসিতে! ঘন্টাখানেক বই পড়ে আর মাঝেসাঝে কিনে [অত পাত্তি কই! মন খারাপ ] বারি ফেরার সময় অসম্ভব আনন্দ হতো! আর বেলজিয়ান ডিলাইট! আহা!

আরেকটা পছন্দের দোকান ছিলো বুকওয়ার্ম! ভাবতে গিয়ে দেখছি, ভালো স্মৃতিগুলোর অনেকগুলোই দেখা যাচ্ছে বই নিয়ে! অতটা সময় আর হাতে থাকেনা, আর ইটিসিও এখন নেই, তাই নতুন বইগুলোর গন্ধটাও ভালো করে শোঁকা হয়না অনেকদিন! একটা বই কেনার জন্য হাজার দুয়েক টাকা জমাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি ইটিসি বন্ধ হয়ে গেল, দুঃখটা এখনও ভুলতে পারিনি!

সাগর পাব্লিকেশনের দোকানে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ওরা ইন্টার্ণ করতে দিবে কিনা ওখানে! খাইছে ইশ! যদি দিত!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

হিমু এর ছবি

আরেকটা চিন্তা আমার মাথায় কুটকুট করছিলো।

কেন জানি না, আমার কেবলই মনে হয়, আমাদের সামগ্রিক জীবনে বই পড়ার অভ্যাসটা কমে গেছে। বইয়ের বিকল্প অনেক কিছু চলে এসেছে বলেই হয়তো।

আরেকটি ধারণা কাজ করে আমার মধ্যে, আমরা হুজুগে খুব দ্রুত সাড়া দিই। বই পড়ার ব্যাপারটাকে একটা নতুন হুজুগ হিসেবে চালু না করার কোনো বিকল্প দেখছি না।

যেমন, আমি এ পর্যন্ত কোনো নাটকে বা টেলিফিল্মে সুন্দরী নায়িকাকে বই পড়তে দেখিনি। সে কাঁথামুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে, বারান্দায় বুকটান করে দাঁড়িয়ে থাকে, রান্না করে, কাপড় শুকাতে দেয়, ফোনে কথা বলে, নাচে, গায় ... কিন্তু বই পড়ে না। বোধহয় এটাই বাস্তবচিত্র, যে সুন্দরী মেয়েদের বইটই না পড়লেও জীবনটা হাসি-গানে কেটে যায় দেঁতো হাসি ... কিন্তু হোয়াট অ্যাবাউট ক্রিয়েইটিং দিস হাইপ? একটা পড়ুয়া সুন্দরী নায়িকা দেখতে চাই সচলের নাটকনির্মাতাদের হাতে, যার প্রেমার্থীরা লাইব্রেরি থেকে লাইব্রেরি চষে ফেরে তার মুখনিঃসৃত বইয়ের নাম চিরকুটে টুকে।

এর পর যেটা মনে হয়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র অবশ্যই একটি বিরাট গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য পালন করে চলছে দীর্ঘদিন ধরে, কিন্তু এর বাইরেও বই পড়া ব্যাপারটাকে আরো কামড় বসাতে পারে, এমন প্রায়সাংগঠনিক কার্যক্রম করা যায়। একটি ভাসমান কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে (ধরি তার নাম "পাঠচক্র"), যার কাজ হবে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুলে এই বই পড়ার ছোটো ছোটো চক্রের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। বই নিয়ে আড্ডার আয়োজন করা যেতে পারে (নীরস ভ্যাজর ভ্যাজর নয়, সরস আড্ডা), বইবিনিময় কর্মসূচী চলতে পারে, বই নিয়ে রিভিউ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে, যার পুরস্কার থাকবে মোটা অঙ্কের টাকার বই। এর সাথে ক্রমে যুক্ত করা যেতে পারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও। এর ব্লগ কাভারেজ দিতে সচলায়তন আর প্রকাশায়তন তো আছেই।

কল্পনা করি, নটরডেমে আয়োজিত হয়েছে একটি বইবিকাল। আমন্ত্রিত হয়েছে ভিকারুন্নেসা নুন আর হলিক্রসের কয়েকটি পাঠচক্র। অহো, কী সুমধুর দৃশ্য! পাঠচক্রের একজন সঞ্চালক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কোনো সুরসিক গ্রন্থকীটকে, এবং মুড়িমাখা আর চা সহযোগে চলছে বই নিয়ে আড্ডা। এক একজন করে বলছে বই পাঠ নিয়ে তাদের ভাবনার কথা, যার কিছু বলার নেই সে চুপ করে বসে মুড়ি চাবাচ্ছে আর চা খাচ্ছে।

কিংবা বুয়েটের দোতলার সেমিনার রুম, কিংবা পিচ্চিক্যাফেতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠচক্র (কিমাশ্চর্যম, সেখানেও নুন আর ক্রস চক্র আমন্ত্রিত, লুলজনিত বিশেষ ছাড় আর কী চোখ টিপি ), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একটি তন্বী ছাত্রী রাগী গলায় তুলাধুনা করছে মার্কেজের অফ লাভ অ্যান্ড আদার ডেইমনসকে, প্রতিবাদ করে উঠছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির একটি উলোঝুলো চেহারার ছাত্র। সেখানেও মুড়িমাখা, সেখানেও চা, সেখানেও বই, বই, বই।

কত কিছু করা সম্ভব! অল্প কয়েকজনকে শুধু অ্যাটলাসের মতো ঠেক দিয়ে রাখতে হবে কল্পনার আকাশটাকে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

একবার এক নাটকে কবিতা পড়ুয়া এক নায়কের চরিত্র লেখছিলাম। জীবনানন্দ থেকে বিণয় সবই যে পড়ে। সেই স্ক্রিপ্ট বানাইতে নিলো এক পরিচালক। শুটিংয়ের দিন সকালে ফোন করছে, নায়কের হাতে তো কিছু কবিতার বই দেওয়া দরকার, বিশেষ করে যেসব কবির কবিতা আমি লিখছি স্ক্রিপ্টে, তো সেজন্যে কিছু ভালো ভালো কবিতার বই যেন তারে ধার দেই, রাতেই ফেরত দিবে।
আমি বেছে বেছে প্রিয় দশখানা কবিতার বই তার সহকারীর হাতে তুলে দিলাম। বছর তিনেক আগের কথা, আজ পর্যন্ত ফেরত পাই নাই। মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আর আপনে ভাবছেন সেই চেষ্টা হয় নাই? হুমায়ূন আহমেদ সাহেব উনার বিস্তর নাটকে এমন একটা চরিত্র রাখছেন, যে প্রচুর পড়ে। আর প্রচুর পড়ার কারণে তিনি বোকা কিসিমের হয়ে যান, এবং অন্য চরিত্রেরা তাকে নিয়ে হাস্যরস করে...

তিনি তার নাটকে পাঠক মাত্রই হাস্যকর মানুষ বানাইছেন... কে হায় বই পড়ে হাস্যরস জাগাতে ভালুবাসে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

আপনি উল্টাটা দেখাবেন। নায়িকা নিজে বই পড়ে, এবং পড়ুয়া পুরুষ ভালু পায়। কোনো ছেলের হাতে রফিক আজাদের কবিতার বই দেখলে সে রীতিমতো উশতেজিত হয়ে পড়ে। যা মনে চায় দেখান। সমস্যা কই?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হিমু এর ছবি

বই কাউকে দিতে হয় না। বন্ধুদের কখনোই দিতে হয় না। আপনি এইসব ফান্ডামেন্টালস ভুলে গেলে তো চলবে না। বই শুধু আমাকে দিবেন, আজ হোক কাল হোক দশ বছর পরে হোক ফিরিয়ে আপনাকে দেবোই।

আপনি তো এখন নিজেই নিজের নাট্যকার। আপনার এখন ভয় কী? নায়িকা পড়ে মাহমুদুল হকের প্রতিদিন একটি রুমাল, ইলিয়াসের খোয়াবনামা, রশীদ করিমের আমার যত গ্লানি, আর তার পিছে ঝোঝুল্যমান ছেলেগুলি আজিজে হানা দেয় এইসব বইয়ের খোঁজে। আর নায়িকার চরিত্র প্রভা করলে কোন বই ধরাইয়া বহায়া রাখতে হবে আপনি তো জানেনই চোখ টিপি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

কল্পনা করি, নটরডেমে আয়োজিত হয়েছে একটি বইবিকাল। আমন্ত্রিত হয়েছে ভিকারুন্নেসা নুন আর হলিক্রসের কয়েকটি পাঠচক্র। অহো, কী সুমধুর দৃশ্য! পাঠচক্রের একজন সঞ্চালক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কোনো সুরসিক গ্রন্থকীটকে, এবং মুড়িমাখা আর চা সহযোগে চলছে বই নিয়ে আড্ডা। এক একজন করে বলছে বই পাঠ নিয়ে তাদের ভাবনার কথা, যার কিছু বলার নেই সে চুপ করে বসে মুড়ি চাবাচ্ছে আর চা খাচ্ছে।

কিংবা বুয়েটের দোতলার সেমিনার রুম, কিংবা পিচ্চিক্যাফেতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠচক্র (কিমাশ্চর্যম, সেখানেও নুন আর ক্রস চক্র আমন্ত্রিত, লুলজনিত বিশেষ ছাড় আর কী চোখ টিপি ), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একটি তন্বী ছাত্রী রাগী গলায় তুলাধুনা করছে মার্কেজের অফ লাভ অ্যান্ড আদার ডেইমনসকে, প্রতিবাদ করে উঠছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির একটি উলোঝুলো চেহারার ছাত্র। সেখানেও মুড়িমাখা, সেখানেও চা, সেখানেও বই, বই, বই।

হোহোহোহোহো... হাঁটুজলের পানিদস্যুর মনে এই ছিলো ... কোলন্ডি।

_________________________________________

সেরিওজা

হিমু এর ছবি
নৈষাদ এর ছবি

আসলে আপনি এই যে মনে করছেন সামগ্রিকভাবে বই পড়ার স্বভাব কমে গেছে, এটা আসলেই বাস্তব, রুঢ় বাস্তব। হয়ত অন্যান্য বিকল্প উপকরণের জন্যই। শিশুরাও এভাবে বড় হচ্ছে, ঠাকুরমার ঝুলি বইয়ের বদলে ঠাকুরমার ঝুলির ডিভিডি পাচ্ছে। কার্টুনের বিশাল নেটওয়ার্ক পাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে পরিবারের একটা ভূমিকাতো থাকেই।

বিজনেস গ্র্যাজুয়েটদের যে বিশাল বাহিনী দেশে তৈরী হয়, কখনও কখনও তাদের গ্রুপের সাথে গ্রুপ-ইন্টারেসশানের সুযোগ হয়েছে। অবাক হয়েছি, মনে হয়েছে একটা প্রশ্ন তাদের সামনে চলে আসে… বই-পড়ে কী লাভ? (অবশ্যই ম্যাটেরিয়্যাল সেন্সেই বলা হচ্ছে)। (আমি ব্যাখ্যা করি …… পড়ার আনন্দ এবং নিজের বুদ্ধিবৃত্তির ইমম্যাটেরিয়্যাল ব্যাপারগুলি ছাড়াও এযুগে করপোরেটে উপরে উঠতে হলে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে…।)

এই বিজয়ের মাসে অফ টপিক আরেকটা ব্যাপার, নতুন প্রজন্মের জন্য আরেকটা এক্সকিউজ তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। কখন কখন বলা হয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে ব্যার্থ হয়েছে। এ ব্যাপারটায় আমি কঠিন উত্তর দেই। একটা প্রজন্ম নিজেরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা দিয়ে গেছে, আর এই নতুন প্রজন্ম, তথ্য যাদের আঙ্গুলের মাথায়, তারা এই মহান ব্যাপারে জানার জন্য নিজেরা কী করছে?

তবে আপনার এই হুজুগে প্রজন্মের জন্য প্রবণতা সৃষ্টিকরার ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। বই পড়ার এই প্রবণতা সৃষ্টিকরাটা হয়ত কিছুটা সহজ নজরুল ভাইয়ের মত লোকের জন্য।
হুমায়ূন আহমেদের বড় একটা সাফল্য হল একটা পাঠক-শ্রেণী তৈরী করা। একবার অভ্যাস তৈরী হলে তারা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে শুরু করতে বাধ্য।

আরও কিছু নকশার ব্যাপারে লিখার ইচ্ছা ছিল, লিখব কখনও।
আপানার স্বপ্নগুলো হয়ত কখনও বাস্তবায়িত হবে, এই আশায় রইলাম।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আহা, কি চমৎকার একটা স্বপ্ন হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রাহিন হায়দার এর ছবি

ভালো লাগলো লেখাটা। স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা

ভ্রম এর ছবি

অসম্ভব ভালো লাগলো আপনার লেখাটা...

অতিথি লেখক এর ছবি

পাইরেটেড বই আছে বলেই আমরা ছাত্ররা চলতে পারতেছি...বই নিয়ে হিমু ভাই এর মত এরকম একটা দোকানের স্বপ্ন আমারো আছে।

স্পার্টাকাস

অপ্পা এর ছবি

আমিও একটা বইয়ের দোকান দেব। স্বপ্নটা বহুদিনের। অবশ্যই নিজ জেলাতে। ভাল লাগলো লেখাটা পড়ে। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।