এই পর্বে সরাসরি চলে যাই মডেল পিএসসির (২০০৮) কিছু বিতর্কিত অংশে, যার কাঠামোতেই কনোকোফিলিপসের সাথে চুক্তি হয়েছে। এই পিএসসির সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ সম্ভবত অনুচ্ছেদ ১৫। এই অনুচ্ছেদের কিছু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ইতিমধ্যে করা হয়েছে, তবে সরকারের তরফ থেকে খুব ভাল কোন ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত দেখিনি। আমি আমার মত ব্যাখ্যা করলাম।
আবিষ্কৃত গ্যাসের কী হবে
১। পুরোটাই পেট্রোবাংলা কিনে নিবে
পিএসসির ধারা ১৫/৬(a) বলছে আইওসি (‘কন্ট্রাক্টর’) তার অংশের কস্ট রিকোভারি গ্যাস এবং প্রফিট গ্যাস পেট্রোবাংলাকে কেনার জন্য প্রস্তাব (shall offer) করতে হবে। অন্যদিকে পেট্রোবাংলাকে এই গ্যাস কেনার জন্য সম্মত হতে হবে।(undertake that it or its Affiliates will purchase the gas)
এর মূল্য নির্ধারনের ব্যাপারটা ধারা ১৫/৭ তে পরিস্কার ভাবে বলা আছে, সেটা পরে আলোচনা করছি। মোটাদাগে বললে, প্রতি ইউনিট গ্যাসের মূল্য সিঙ্গাপুর ভিত্তিক একটা ভ্যারিয়্যবলের সাথে উঠানামা করে, তবে সর্বোচ্চ সীমা এবং সর্বনিম্ন সীমা পিএসসিতে নির্ধারন করা আছে। কন্ট্রাক্টরের গ্যাস বিক্রী এবং পেট্রোবাংলার গ্যাস কেনার বিস্তারিত শর্তাবলী আরেকটা আলাদা চুক্তি দিয়ে প্রণালীবদ্ধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যেটাকে বলে GPSA (গ্যাস পারচেজ এন্ড সেল এগ্রিমেন্ট)। বাংলাদেশের সব পিএসসির অধিনেই কন্ট্রাক্টররা এই মুহূর্তে সরকারের কাছে গ্যাস বিক্রী করছে।
২। কন্ট্রাক্টর তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রী করবে
ধারা ১৫/৬(c)তে বলা হয়েছে পেট্রোবাংলা প্রথমে গ্যাস কেনার প্রস্তাবে সম্মত না হলে কন্ট্রাক্টরের ‘নিজের অংশের গ্যাস’ তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রীর সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার আছে। ধারা ১৫/৮ বলছে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রীত গ্যাসের মূল্যও এই পিএসসির ১৫/৭ ধারা দ্বারা নির্ধারিত হবে। এই পিএসসিতে দুইটা গুরুত্বপূর্ন সংযোজন করা হয়েছে। প্রথম হল ‘নিজের অংশের’ এবং দ্বিতীয় হল নির্ধারিত মূল্য। তারমানে দাঁড়াচ্ছে তৃতীয় পক্ষের কাছে ইচ্ছামত দামে বিক্রী করা যাবে না, সরকারের কাছে যে দামে বিক্রী করার কথা সেই দামেই বিক্রী করতে হবে।
ব্লগ/পত্রিকা/ম্যাগজিনের বিভিন্ন বিশ্লেষণে আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি পেট্রোবাংলা গতবছর সান্তোসকে (ব্লক ১৬ তে কেয়ার্ন-এনার্জির উত্তরসূরী) তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রীর অনুমতি দিয়েছে (যদিও জানামতে এধরনের কোন বিক্রী এখনও পর্যন্ত হয়নি)। তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রীর এই অপশন কিন্তু আগের পিএসসি গুলোতে এমনিতেই ছিল। এবং কেয়ার্ন এনার্জি এর জন্য ২০০৭ সালে পেট্রোবাংলার কাছে আবেদন করেছিল, যার অনুমোদন পেট্রোবাংলা দিয়েছে তিন বছর পর। আমি এর বিস্তারিত শর্তাবলি জানিনা।
আমার ব্যাক্তিগত বিশ্লেষণে মনে হয় বর্তমান পিএসসির শর্ত অনুযায়ী কন্ট্রাকটর তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রীর ইচ্ছা প্রকাশ করার কথা না। কারণ, গ্যাসের দাম নির্ধারিত, কিন্তু তৃতীয় পক্ষের কাছে পৌছে দিতে হলে তাকে পেট্রোবাংলার পাইপলাইন ব্যবহার করতে হবে, যার জন্য পাইপলাইন ট্যারিফ কিংবা হুইলিং চার্জ দিতে হবে। তারপর পেমেন্টের কিছু ইস্যুও আছে।
ভারতে আইওসি/দেশী প্রাইভেট সেক্টার কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রী করতে পারে। এই তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রীর বিভিন্ন ম্যডালিটি নিয়ে আমার আরও কিছু চিন্তাভাবনা আছে, কিন্তু এগুলি এই লেখার আলোচ্য বিষয় না। এই পিএসসিতে আপাত মনে হচ্ছে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রী কন্ট্রাক্টরের কাছে লোভনীয় কোন অপশন নয়।
৩। তরলীকৃত গ্যাস বিদেশে রপ্তানি
এই পিএসসির ১৫/৫ ধারায় বলা আছে, ধারা ১৫/৬ (উপরে বর্ণনা করা দুটি অপশন) এবং ১৫/৫ এর কিছু উপধারার বিবেচনার পর (subject to), কন্ট্রাক্টরের আবিষ্কৃত গ্যাস তরলীকৃত করে রপ্তানি করার অধিকার আছে। আরও বলা আছে পেট্রোবাংলা তার প্রফিটগ্যাস অংশ প্রয়োজনীয় পরিবহনের ব্যবস্থা করে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে। কিন্তু এই অংশ কোনভাবেই মোট মার্কেটেবল গ্যাসের ২০% বেশি হতে পারবে না (এগারোতম বছরে ৩০% হবে)।
মূল্যের ব্যাপারে যা বলা আছে তার সারমর্ম হল কন্ট্রাক্টর পেট্রোবাংলাকে তার প্রফিট গ্যাস অংশের মূল্য ইউএস ডলারে পরিশোধ করবে। এই মূল্য কীভাবে নির্ধারিত হবে তা বলা আছে ধারা ১৭/৮ এ, যেটার আরও ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। আরও বলা আছে, যেখানে প্রযোজ্য, কন্ট্রাক্টারকে প্রয়োজনীয় পাইপ-লাইন ট্যারিফ দিতে হবে।
এই ধারার কিছু অস্পষ্টতাতো নিশ্চয়ই আছে। পরে এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
জাতীয় গ্রিডে সংযোগের জন্য পাইপলাইন
অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সফল হবে এমন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর প্রথম এবং দ্বিতীয় অপশনের ক্ষেত্রে (পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রী এবং তৃতীয় পক্ষের কাছে কন্ট্রাক্টরের নিজের অংশের বিক্রী) জাতীয় গ্রিড পর্যন্ত পাইপলাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে গ্যাস আনতে হবে। অনুচ্ছেদ ১৬ তে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা আছে।
গ্যাস আবিষ্কারের পর জাতীয় গ্রিড সংযোগ দেয়ার আগে তিনটা ভৌত অবকাঠামোর তৈরীর ব্যাপার আছে – প্ল্যাটফর্ম, পাইপলাইন এবং প্রসেসিং প্ল্যান্ট। এগুলি ‘ডেভেলাপমেন্ট প্ল্যানের অংশ’। কন্ট্রাক্টর পেট্রোবাংলা দ্বারা অনুমোদিত প্ল্যান অনুযায়ী এগুলি তৈরী করবে এবং কস্ট রিকোভারী অংশ থেকে এই খরচ উঠে আসবে। এই রিকোভারি সহ অন্য সকল কস্ট-রিকোভারি এই ৫৫% ব্যাকেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
যেহেতু এই পাইপলাইনের খরচ কস্ট রিকোভারবল আইটেম, এর মালিকানা (Title) অন্য সব ভৌত অবকাঠামো এবং সম্পদের মত পেট্রোবাংলার। ধারা ১৬/৫ তে বলা আছে তৃতীয় পক্ষ এটা ব্যবহার করতে পারবে, তবে এর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত গ্যাসের জন্য পাইপলাইন ট্যারিফ হিসাবে গ্যাসের মূল্যের ১% পেট্রোবাংলাকে দিতে হবে।
এই পিএসসি তে এই স্পেসিফিক ১% পাইপলাইন ট্যারিফের ব্যাপারটা মনে হল নতুন সংযোজন মনে হয়েছে (আগে ট্যারিফের কথাটা ছিল কিছুটা অস্পষ্ট)। তবে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লেগেছে এই কথাটা... the Contractor will be exempted from paying tariff during the cost recovery of the said pipeline.
তারমানে দাঁড়াচ্ছে পাইপলাইনের কস্ট রিকোভারি শেষ হয়ে গেলে সেই গ্যাসক্ষেত্রের বাকী গ্যাস জাতীয় গ্রীডে দেয়ার সময় কন্ট্রাক্টরকে ১% হারে ট্যারিফ দিতে হবে? নতুন মনে হল। এই অনুচ্ছেদে কোন সমস্যা দেখি না।
এখানে, কিছুটা প্রাসঙ্গিক হওয়ায় আমাদের একটা সাফল্যের কথা বলতে হয়। ১৯৯৯/২০০০ সালে পেট্রোবাংলা অ্যাঙ্গলো-ডাচ আইওসি শেলের সাথে ব্লক ১৬ তে হুইলিং চার্জের ব্যাপারে একটা বিরোধে জড়িয়ে পরে। বিরোধ নিস্পত্তির জন্য দুই পক্ষকেই আমেরিকা ভিত্তিক ICSID (International Centre for Settlement and Investment Dispute) তে যেতে হয়। পেট্রোবাংলা সেই সেটলমেন্টে হেরে যায়, টাকার পরিমান ছিল প্রায় ৪ কোটি টাকা। নিশ্চিতভাবে পেট্রোবাংলা এর থেকে শিক্ষা পেয়েছিল। পরবর্তীতে একই ব্যাপারে শেভ্রনের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পরে। কিন্তু এবার বাংলাদেশ জেতে। শেভ্রনকে দিতে হয় ৫০ কোটি ডলার (সূত্রঃ The financial Express, May 19 2010) । ডঃ কামাল হোসেন এই কেসে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। পিএসসিতে পাইপলাইন ট্যারিফের স্পেসিফিকেশন এই শিক্ষার প্রতিফলন নিশ্চিত করে।
গ্যাসের মুল্যায়ন
পিএসসির অধিনে যে গ্যাস উত্তোলন করা হয় তার মুল্যায়ন কীভাবে করা হয় তা ধারা ১৫/৭ তে বর্ণনা করা আছে। তবে বলে রাখা উচিত, গ্যাসে কেনার আগে পিএসসির আলোকে পেট্রোবাংলার সাথে কন্ট্রাক্টরের একটা জিপিএসএকে (গ্যাস পারচেজিং এন্ড সেলিং এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে বিস্তারিত শর্তাবলী অন্তর্ভুক্ত থাকে।
মোটাদাগে মূল্যায়নের ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা যায়। গ্যাসের দাম সাধারনত সিঙ্গাপুর ভিত্তিক High Sulfur Fuel Oil (“HSFO”) মুল্যের সাথে লিংক করা থাকে – যার ফলে HSFO মুল্যের উঠানামার সাথে সাথে গ্যাসের মুল্যেরও পারিবর্তন হয়। তবে গ্যাসের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মুল্য ‘ক্যাপ’ করা থাকে। তার মানে যদিও HSFO মুল্যের উঠানামার সাথে গ্যাসের মুল্যেরও পারিবর্তন হয় কিন্তু তা ‘ক্যাপড’ সর্বোচ্চ মুল্যের উপরে উঠে না অথবা সর্বনিম্ন মুল্যের নীচে নামে না। এই পিএসসিতে সর্বোচ্চ ক্যাপ ১৯৯৩/৯৪ তে করা অফশোর গ্যাসের সর্বোচ্চ ক্যাপের তুলনায় কিছুটা বাড়নো হয়েছে। সঙ্গত করণেই এই বৃদ্ধির পরিমান বলা হল না।
তবে এই পিএসসিতে কন্ট্রাক্টরকে তার অর্জিত লাভের উপর করপোরেট ট্যাক্স দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
গ্যাসের বন্টন
এখন আসি বন্টনের ব্যাপারটাতে। আইওসিরা প্রাথমিক অবস্থায় বেশ বড় ধরনের বিনিয়োগ করে। সফল গ্যাস আবিষ্কার এবং উত্তোলনের ক্ষেত্রে এই বিনিয়োগের এবং উত্তোলন খরচের সরকার দ্বারা অনুমোদিত অংশ আইওসিরা গ্যাস বিক্রীর টাকা থেকে ‘কস্ট-রিকভারীর’ আওতায় সরকারের কাছ থেকে পেতে পারে। একটা উদাহরন দেয়া যাক। ধরে নিলাম কোন এক মাসে ১০০ ইউনিট গ্যাস উঠানো হয়েছে এবং ঐ মাসে প্রতি ইউনিটের দাম ১ টাকা। তাহলে সেই মাসে গ্যাসের মোট দাম দাঁড়ালো ১০০ টাকা। এই পিএসসি অনুযায়ী কস্টরিকোভারির সর্বোচ্চ সীমা ৫৫%। প্রাথমিক অবস্থায় যেহেতু অনুসন্ধান, এবং ডেভেলাপমেন্টের খরচ রিকোভার করা হবে, সুতরাং প্রথমদিকে পুরো ৫৫% ই কস্টরিকোভারেবল গ্যাস হিসাবে যাবে বলে ধারনা করা হয়। এই টাকার, ধরি সর্বোচ্চ ৫৫% কস্ট-রিকভার করা হল। বাকী রইল ৪৫ টাকা - যাকে বলা হয় প্রফিট গ্যাস। এই প্রফিট গ্যাসের একটা অংশ পায় সরকার এবং একটা অংশ পায় আইওসি। এই বন্টনও আবার প্রতিদিন কত উৎপাদন করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে (পিএসসির টেবিল ১৪/৬তে পাঁচটা স্ল্যাব দেয়া আছে)। যত বেশি গ্যাস উৎপাদন করা হবে পেট্রোবাংলার অংশ তত বাড়বে। আগের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ৫৫% থেকে ৮৭% পর্যন্ত পেট্রোবাংলার অংশ হতে পারে। ধরলাম প্রফিট গ্যাসের ৬০% পাবে পেট্রোবাংলা এবং ৪০% পাবে আইওসি। তাহলে প্রথম দিকে এই ১০০ ইউনিট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে দিবার জন্য আইওসির পাবে ৭৩ টাকা। যখন প্রাথমিক বিনিয়োগের টাকা রিকভার হয়ে যাবে, তখন শুধু উত্তোলন পরিচালনার ব্যয় রিকভার করা হবে এবং স্বাভাবিক ভাবেই প্রফিট গ্যাসের পরিমান বেড়ে যাবে এবং আইওসিএর প্রতিইউনিটের জন্য প্রাপ্য টাকা কমে যাবে।
দেখা যাচ্ছে বড় আবিষ্কারে পেট্রোবাংলার লাভ বাড়বে (আইওসিরও বাড়বে, কিন্তু অপেক্ষাকৃতভাবে পেট্রোবাংলার লাভ বেশি)
৮০ ভাগ বনাম ২০ ভাগ মালিকানা
আমার মনে হয়েছে কেউ কেউ হয়ত কস্ট-রিকোভারি এবং গ্যাস বন্টনের শতাংশের সাথে তরলীকৃত গ্যাস রপ্তানি অংশের একটা উপধারার সাথে মিলিয়ে ফেলছে। পেট্রোবাংলা পুরোটা গ্যাস কেনার ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলার ফ্রি গ্যাসের পরিমান অনেকগুলি ভ্যারিয়েবলের উপর নির্ভরশীল। এর পরিমান, ধরুন পুরো উত্তোলিত গ্যাসের ২৫% থেকে আস্থে আস্থে বেড়ে ৭৫% ও হতে পারে (ব্যাপ্তি আরও বড় হতে পারে)।
এই পিএসসির ১৫/৫ ধারায় বলছে শর্তসাপেক্ষে কন্ট্রাক্টরের গ্যাসকে তরলীকৃত করে রপ্তানির অধিকার আছে। উপধারা ১৫/৫/৪ বলছে সেই ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা তার প্রফিটগ্যাস অংশ প্রয়োজনীয় পরিবহনের ব্যবস্থা করে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে। কিন্তু অংশ কোনভাবেই মোট মার্কেটেবল গ্যাসের ২০% বেশি হতে পারবে না (হয়ত তখন পেট্রোবাংলার প্রফিট গ্যাসের অংশ ৩৫-৪০%)। ৮০-২০ মালিকানার ব্যাপারটা তরলীকৃত গ্যাস রপ্তানির এই অপশন থেকে এসেছে।
ন্যূনতম অনুসন্ধান কার্যক্রমের আইনগত বাধ্যবাধকতা (মিনিম্যাম ওয়ার্ক অবলিগ্যাশন, অনুচ্ছেদ ৬), অঙ্গীকার (গ্যারান্টি, অনুচ্ছেদ ৭)এবং ত্যাগ করা (রেলিঙ্কুইস্মেন্ট, অনুচ্ছেদ ৫)
মোটা দাগে ন্যূনতম অনুসন্ধান কার্যক্রমের আইনগত বাধ্যবাধকতা ব্যাপারটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় যে পিএসসি স্বাক্ষর করার পর কন্ট্রাক্টরকে অনুচ্ছেদ ৬ তে বর্ণিত ন্যূনতম অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে হবে। এই অনুসন্ধান কার্যক্রমের প্ল্যান এবং বাজেট পেট্রোবাংলা অনুমোদন করবে। প্রাথমিকভাবে এটার খরচ কন্ট্রাক্টরকে বহন করতে হবে।
যদি কন্ট্রাক্টর অনুচ্ছেদ ৬ অনুযায়ী অনুসন্ধান না করে, তবে অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা বাজেয়াপ্ত করা হবে। অনুসন্ধানে অর্থনৈতিকভাবে সফল গ্যাস রিজার্ভের সন্ধান না পেলে অনুচ্ছেদ ৫ অনুযায়ী ধীরে ধীরে ঐ নির্দিষ্ট ব্লকের অপারেটরশিপ ত্যাগ করা যাবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কেয়ার্ন এনার্জি ব্লক ৫ (সুন্দরবন এলাকা) তে ন্যূনতম অনুসন্ধান কার্যক্রমের শেষে ত্যাগ করেছে এবং একই ভাবে ব্লক ১০ ও অনুসন্ধান কার্যক্রমের শেষে ত্যাগ করেছে।
সবশেষে কন্ট্রাক্টর যদি অর্থনৈতিক ভাবে সফল গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করে, তবে ন্যূনতম অনুসন্ধান কার্যক্রম সহ অন্যন্যা খরচের অনুমোদিত অংশ কস্ট-রিকোভারির মাধ্যমে আদায় করে নিতে পারবে। যদি কোন ব্লকে অর্থনৈতিক ভাবে সফল গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার না হয়, তবে সেই খরচ কন্ট্রাক্টরকেই বহন করতে হয়।
তরলীকৃত গ্যাস বিদেশে রপ্তানি
আমি প্রায় দুবছর আগে একটা ব্লগে গ্যাস রপ্তানির ব্যাপারে আমার নিজস্ব ধারণার কথা বলেছিলাম (রপ্তানির চিন্তা করারও সুযোগ নেই)। আমার শেষ পড়া উড ম্যাকেঞ্জির তৈরী করা ২০০৬ রিপোর্ট বলা হয়েছিল ৬.৯ টিসিএফ প্রুভড রিজার্ভের কথা। আরও বলা হয়েছিল আপার কেসের ক্ষেত্রে ২০১১ সাল থেকে গ্যাস সংকট শুরু হবে দেশে। যথারীতি http://www.hcu.org.bd এর রিপোর্টে ক্লিক করলে কিছুই আসে না। প্রুভড রিজার্ভ ঐ ৬-৭ র মধ্যেই আছে। সুতরাং আমাদের আসলে খুব তাড়াতাড়িই গ্যাস আবিষ্কার করা উচিত, রপ্তানি তো বহুদূর। উলটো এই মুহূর্তে আমাদের দেশে তরলীকৃত গ্যাস আমদানির সম্ভাব্যতা যাচাই হচ্ছে। আমাদের মত ঘনবসতি পূর্ণ দেশে ট্রেডিশন্যাল উপায়ে (ওপেন পিট অথবা হোয়াটেভার) কয়লা তোলারও কোন অপশন দেখিনা।
প্রায় ছয় বছর আগে এক আইওসির বিশেষজ্ঞের সাথে আবিষ্কৃত গ্যাস তরলীকৃত করে রপ্তানি করার (এই পিএসসির ১৫/৫ ধারায় যে অপশনের কথা বলা আছে) অপশনের ব্যাপারটা আলাপ করেছিলাম। ধারণা পেয়েছিলাম আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থানে ১০-১৫ টিসিএফের বেশি কোন রিজার্ভ পেলে হয়ত একটা মডেল রান করে দেখা যেতে পারে ভায়াবল কীনা, যেটা তার ভাষায় ‘ভেরি আনলাইকলি’।(ম, তামিম সাহেবের মতে ২০ টিসিএফ)।
একটা সময় পাইপলাইনে গ্যাস রপ্তানির বিতর্কের পর আমার কাছে মনে হয়েছিল এই তরলীকৃতকরণের শর্তটা রপ্তানির বিপক্ষে একটা খুব বড় রক্ষাকবজ। এখন মনে হয় আসলেই আমাদের প্রত্যাশিত বড় একটা আবিষ্কার হলে কী হবে? ২০+ টিএফসি? বলতে দ্বিধা নেই ধারা ১৫/৫/১ আমার কাছে দুর্ভেদ্যই মনে হয়েছে (যদিও ৬/৭ বছর থেকে এই ধারার সাথে পরিচিত)। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ধারা ১৫/৫/১ এ কন্ট্রাক্টর এবং পেট্রোবাংলার মধ্যে একটা ‘স্পেশাল এলএনজি এক্সপোর্ট অ্যাগ্রিমেন্টের’ কথা বলা আছে, যেটার সম্ভাব্য বিষয়বস্তু নিশ্চিতভাবেই পেট্রোবাংলার চিন্তাভাবনায় আছে।
ধারা ১৫/৫/৫ এ বলা আছে কন্ট্রাক্টর কোন চুক্তি করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত মুল্য, মুল্য-নির্ধারনের ফর্মুলা এবং যে কোন চুক্তি পেট্রোবাংলা দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। এটুকু বুঝা যায় যে কস্ট রিকোভারি, প্রফিট গ্যাস বন্টন এগুলি পিএসসির সাধারন অনুচ্ছেদ অনুযায়ীই হবে।
এই ব্যাপারে আরও বিস্তারিত লেখার অবকাশ নেই, কারণ আমার কাছে আর বিশেষ কোন তথ্য নেই।
এই পিএসসির আরও কয়েকটা অনুচ্ছেদ আছে আলোচনার করার মত। তবে আজকের মত এখানেই শেষ। পরবর্তীতে বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আইওসির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার ব্যাপার আমার ধারণা বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে। সেখানে প্রাসঙ্গিকভাবেই অনুচ্ছেদ ১০, ২০ এবং ২৫ এর কথা আসবে। গ্যাস ভুর্তকির ব্যাপারটাও আসবে আশারাখি।
মন্তব্য
15.5.4 Where Petrobangla has installed necessary facilities to transport and use gas to
meet domestic requirements,
পাইপ্লাইন কি এর মাঝে পরে না? আমার কাছে তো মনে হলো আম্রা প্রফিট গআস এর ২০% এর বেশী (যদি আমাদের শেয়ার ৩০% অফ টোটাল গাস ও হয়) আন্তে পারবো না। একটু খোলাশা করে বলবেন?
রিকভারি র আগ & পর আমাদের ভাগ কত্তুক থাকবে তাও জানি না। বেশ কিছু বেপার ঘোলা হয়ে আছে।
এখানে দুটা সিনারিও আছে।
১। পেট্রোবাংলা পুরো গ্যাস কিনবে। সেক্ষেত্রে পাইপলাইন তৈরী হবে এক বা একাধিক 'ম্যাজারিং পয়েন্ট' পর্যন্ত। সেটা আসলে সরকারের জাতীয় গ্যাস গ্রিডের কোন একটা অংশে কট্রাক্টর পাইপলাইন সংযোগ দিবে, সেখানে সরকারের কোন পাইপলাইন তৈরির ব্যাপার নেই।
২। আপনি যে ধারার কথা বললেন সেটা এলএনজি করে রপ্তানির ক্ষেত্রে। আমি বলেছি এলএনজির ব্যাপারে আমার তেমন জানা নেই। তবে এখানে পাইপলাইনের কথা আসবে না সম্ভবত। এলএনজি ট্রাস্পোর্টেশন হয় অন্য মোডে, পাইপলাইনের মাধ্যমে না। এখানে আরও ব্যাপার আছে - এলএনজি প্ল্যান্ট কোথায় হবে? সমুদ্রে ফ্লোটিং, নাকি পাইপদিয়ে অনশোরে এনে? এগুলির উপর পেট্রোবাংলার নেসেসারি ফাসিলিটির ব্যাপারটা নির্ভর করছে।
(নিচের মন্তব্য দেখুন) সবচেয়ে বাজে সিনারিওতে, পিএসসি এবং প্রথম আলোর রিপোর্টের ভিত্তিতে বলতে পারি এলএনজি হলে পেট্রোবাংলার ন্যূনতম ফ্রি গ্যাসের পরিমান হবে ৩৬ ভাগ, যার ২০ ভাগ অভ্যন্তরিণ কাজে ব্যবহার করবে।
15.5.4 Where Petrobangla has installed necessary facilities to transport and use gas to
meet domestic requirements,
পাইপ্লাইন কি এর মাঝে পরে না? আমার কাছে তো মনে হলো আম্রা প্রফিট গআস এর ২০% এর বেশী (যদি আমাদের শেয়ার ৩০% অফ টোটাল গাস ও হয়) আন্তে পারবো না। একটু খোলাশা করে বলবেন?
রিকভারি র আগ & পর আমাদের ভাগ কত্তুক থাকবে তাও জানি না। বেশ কিছু বেপার ঘোলা হয়ে আছে।
আর্টিকেল ১৬ আবার একটু বুঝাবেন কি? মেজারিং পয়েন্ট পর্যন্ত পাইপলাইন এনে দেবে কনোকো, যেটার খরচ কস্ট রিকভারীর মধ্যেই পড়বে। বাকি দূরত্বের পাইপলাইন টেনে আনতে হবে পেট্রোবাংলারই। সেই ক্ষেত্রে মোট খরচটা কোথায় দাঁড়াবে? আর মেজারিং পয়েন্ট আসলে কোথায় কোথায় থাকবে এইটাও তো কোথাও ক্লিয়ারলি বলা নাই।
প্রফিট গ্যাসের কত অংশ বাংলাদেশ পাচ্ছে এইটা কি কোথাও বলা আছে?
মেজারিং পয়েন্ট জাতীয় গ্রিড লাইনের কোন একটা অংশে হয়, এখানে সরকারের কোন পাইপলাইন তৈরীর প্রশ্নই আসে না। এখানে সরকার আপারহেন্ডে.. (...... ম্যাজারিং পয়েন্ট যদি সম্মত হয় চিটাগাং শহর... এবং শর্টকাট সীতাকুন্ড পর্যন্ত পাইপলাইন তৈরী করে ন্যাশানাল গ্রিডে সংযোগ দেয়, ...সীতাকুন্ড থেকে চিটাগাং পর্যন্ত সরকারী গ্রিড লাইন ব্যবহারের জন্য ট্যারিফ দিতে হবে...।)
অনেক দেশপ্রেমিককে এই ইস্যুতে কথা বলতে দেখি না।
ফ্যাক্ট, মিসইন্টারপ্রিটেশন, রেটোরিক, ট্যাগিং এর ভয়, ব্যাপারটা পুরোটা না জানা... আবার সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যার বদলে রেটোরিক, আজেবাজে কথা... সবকিছু মিলিয়ে ব্যাপারটা বেশ ঘোলাটে। তাই অনেকেই এই ব্যাপারে কথা বলতে স্বস্তি পায়না।
অনেক ধন্যবাদ তথ্যবহুল লেখার জন্য। একটা ব্যপার একটু ক্লিয়ার হতে চাচ্ছি। ১ এবং ২ নং অপশন যদি কাজ না করে, তাহলেই শুধু তরলীকৃত করে গ্যাস রপ্তানির প্রশ্ন আসবে এবং এক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা সর্বোচ্চ ২০% গ্যাস ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে। এটা হয়তো করা হয়েছে কন্ট্রাক্টর এর এলএনজি প্লান্ট স্থাপন যাতে লাভজনক থাকে সেজন্য (যদি আমি ঠিক বুঝে থাকি)। কিন্তু তারমানে আমরা যদি গ্যাস রপ্তানি করতে না চাই তাহলে আমাদের ১ এবং ২ নং অপশন ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য গ্যাসের পরিমান আর আমাদের আভ্যন্তরীন চাহিদা সামঞ্জস্যপূর্ন কিনা সেটা নিয়ে কোন স্টাডি কি হয়েছে? মানে যদি আমাদের চাহিদার তুলনায় বেশি গ্যাস পাওয়া যায় তাহলে তো আমরা রপ্তানী করতে বাধ্য হব আর পরবর্তিতে বর্ধিত চাহিদার সময় হয়তো গ্যাস পাওয়া যাবে না। আশা করি একটু বুঝিয়ে বলবেন। আমি চুক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে নই, কিন্তু চাই অপটিমাল পলিসি টা নেয়া হোক। আবার ধন্যবাদ চমৎকার লেখার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। এখন মনে হচ্ছে আমার লেখাটাতে কিছু তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। আমি কয়েকটা সিনারিও বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করি। প্রথম আলোর ২৪ জুন ২০১১ সংখ্যায় পেট্রোবাংলার ন্যূনতম প্রফিট গ্যাসের চিত্র দিয়েছে, যেটা নিচে দিলাম। তারমানে দাড়াচ্ছে কন্ট্রাক্টরকে বিডিঙে কোয়ালিফাই করতে ন্যূনতম এই অংশ দিতে হবে, তবে কে আরও বেশি দিতে সম্মত সেটা বিডিং এর একটা শর্ত ছিল।
দৈনিক উৎপাদন - পেট্রোবাংলার প্রফিট গ্যাসের অংশ
সারে ৭ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত ৫৫%
সারে ৭ থেকে ১৫ কোটি ঘনফুট ৬০%
১৫ থেকে ২৫ কোটি ঘনফুট ৬৫%
২৫ থেকে ৪০ কোটি ঘনফুট ৭০%
৪০ থেকে ৬০ কোটি ঘনফুট ৭৫%
৬০ কোটি ঘনফুটের বেশি ৮০%
১। ওয়ার্স্ট কেস সিনারিওটা দেখি। কন্ট্রাক্টর এলএনজি করে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিল, ধরলাম সরকার এই ন্যূনতম বন্টনের রাজি হয়েছে কনোকোর সাথে। আরও ধরলাম এলএনজি প্ল্যান্টের দাম (ইনভেস্টমেন্ট বিলিয়ন ডলারে) বেশি বলে ৫৫% ই কস্ট রিকোভারিতে চলে যাবে। সেই গ্যাস ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই দৈনিক উৎপাদন ৬০ কোটি ঘনফুটের বেশি হবে। তাহলে পেট্রোবাংলার ফ্রি গ্যাসের পরিমান হবে ন্যূনতম ৩৬ ভাগ। ধরলাম ২০ ভাগ অভ্যন্তরিণ ব্যবহারের জন্য নিল এবং ১৬ ভাগের দাম পেয়ে গেল। দিনের শেষে পেট্রোবাংলার লাভ কী হল? এখন পর্যন্ত - সেই ন্যূনতম ৩৬ ভাগ ফ্রি গ্যাস, কিছু বোনাস টোনাস, ডেভেলাপমেন্ট, এবং একটা এলএনজি প্ল্যান্টের মালিকানা। তবে এলএনজির ক্ষেত্রে নিশ্চিত ভাবেই ‘স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস’ আছে যেটা আমি জানি না।
২। আসি আপনার প্রশ্নে। দেশে গ্যাসের ‘চাহিদার’ ধরুন ১৫/২০ বছরের প্রক্ষেপন পেট্রোবাংলার কাছে আছে। কিন্তু গভীর সাগরে গ্যাস আছে কীনা আসলে সেটার ‘নিশ্চিত’ কোন স্টাডি থাকার কথা না। ন্যূনতম সাইজমিক সার্ভে না হলে কোন এস্টিমেটের মানে নাই। সুতরাং বলতে হয় চাহিদার প্রক্ষেপণ আছে, গভীর সাগরে গ্যাস পাওয়ার পরিমানের কোন রিয়েলেস্টক এস্টিমেট নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের প্রুভেন রিজার্ভও কম।
আমি একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে আমার চিন্তাভাবনা তো লিখতে পারি। গ্যাসের রিজার্ভ পুরোপুরি নিশ্চিত হতে তিনটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় – সাইজমিক সার্ভে, এক্সপ্লোরেশন এবং অ্যাপ্রাইজাল ড্রিলিং। তবে সাইজমিক সার্ভেতে ভাল একটা ইনডিক্যাশন পাওয়া যায়। গভীর সমুদ্রে সাইজমিক সার্ভে এবং গ্যাস উত্তোলনের মধ্য ৪/৫ বছরের ব্যবধান থাকবে। সরকার নিশ্চিতভাবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে (ধরুন ডিস্কোভারির সম্ভাবনা দেখলে গ্যাস-ভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্টের কথা চিন্তা করা ইত্যাদি ইত্যাদি...)।
মন দিয়ে পড়ছি। আপনাকে ধন্যবাদ
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনাকেও ধন্যবাদ।
পিএসসি-২০০৮ এর একটা লিঙ্ক যোগ করে দিন। লিঙ্ক না থাকলে কপিটা ইস্নিপসে আপলোড করে লিঙ্ক দিয়ে দিন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভাল ধারণা। পিএসসির লিঙ্ক যোগ করা হল।
পড়তেছি।
ধন্যবাদ।
দৈনিক উৎপাদন পেট্রোবাংলার প্রফিট গ্যাসের অংশ
সারে ৭ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত ৫৫%
সারে ৭ থেকে ১৫ কোটি ঘনফুট ৬৯%
১৫ থেকে ২৫ কোটি ঘনফুট ৬৫%
২৫ থেকে ৪০ কোটি ঘনফুট ৭০%
৪০ থেকে ৬০ কোটি ঘনফুট ৭৫%
৬০ কোটি ঘনফুটের বেশি ৮০%
আপনার তথ্যের সোর্স কি জানতে পারি?
আমি তো দেখলাম ২০% বেশি কখনোই পাবেনা প্রেট্রোবাংলা।
সূত্রঃ প্রথম আলোর ২৪ জুন ২০১১ সংখ্যা। এটা হল প্রফিট গ্যাসের পেট্রোবাংলার ন্যূনতম অংশ। কন্ট্রাক্টরকে বিডিঙে কোয়ালিফাই করতে ন্যূনতম এই অংশ দিতে হবে, তবে কে আরও বেশি দিতে সম্মত সেটা বিডিং এর একটা শর্ত। তারমানে দাড়াচ্ছে এটা ন্যূনতম ভাগ, আরও বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে, কম না।
সারে ৭ থেকে ১৫ কোটি ঘনফুট আসলে ৬০%, মন্তব্যে ঠিক করলাম।
আমার ৯ নং মন্তব্য দেখুন, ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা আছে।
মডেল পিএসসি ২০০৮ এবং আগের পিএসসি নিয়ে যতটুকু জেনেছি বাংলাদেশ এবং আইওসির মধ্যে শেয়ার ভাগাভাগিটা এরকম হচ্ছে-
ধরা যাক মোট প্রাপ্ত গ্যাস- ১০০ (কষ্ট রিকভারী= ৫৫, প্রফিট=৪৫)
প্রফিটের ৬০% বাংলাদেশ=২৭
প্রফিটের ৪০% আইওসি= ১৮
বাংলাদেশের মোট প্রাপ্তি ২৭
আইওসির মোট প্রাপ্তি ৭৩
---------------------------------
আইওসি ৭৩ভাগ গ্যাস বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করার কথা। যদি বাংলাদেশ না কিনে, তাহলে তারা বিদেশে রপ্তানী করতে পারবে। মোটামুটি এইতো?
এখন প্রশ্ন-
১. সবচেয়ে বিতর্কিত হলো কষ্ট রিকভারি। এই কষ্ট রিকভারিতে কি কি খাত অন্তর্ভুক্ত?
২. কষ্ট রিকভারির এই অনুপাত শুরু থেকেই চলে এসেছে, এরশাদের আমল থেকেই, এখানে মূল্য নির্ধারণে বাংলাদেশ কখনো কি হস্তক্ষেপ করতে পেরেছে?
৩. শোনা কথা, আইওসির কর্তারা কষ্ট রিকভারির টাকায় বউ বাচ্চা নিয়ে তাহিতি দ্বীপে বেড়াতে গেলেও বাংলাদেশ সরকারের কিছু করার নেই। এটা কি ঠিক?
৪. একটা আইওসি গ্যাস উত্তোলনের পর কতো বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বাংলাদেশের গ্যাস কেনার জন্য? ওটা নিয়ে পিএসসিতে কি আছে সেটা কি প্রকাশ করা হবে?
৫. পিএসসি গুলো জন সমক্ষে প্রকাশ না করে গোপন রাখা হয় কার স্বার্থে? জাতীয় না আইওসির?
......................................................................................................
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে গ্যাসে রেশনিং শুরু করেছে। এলএনজি আমদানীর চিন্তা করছে। প্রতি বছর গ্যাস বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। মজুদ বাড়েনি এক ফোটা (দশ বছর আগে শুনতাম ২০ টিসিএফ পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যেতে পারে, এখন ৬-৭ এর বেশী শোনা যায় না) তবু শোনা যায় পিএসসিতে গ্যাস রপ্তানির অনুচ্ছেদ রাখা হয়েছে? এটা কার স্বার্থে?
আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো এরকম চুক্তিগুলি করার সময় আমাদের মেরুদণ্ড যথেষ্ট সোজা থাকে না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য। উত্তর দিতে চেষ্টা করি।
ধরা যাক মোট প্রাপ্ত গ্যাস- ১০০ (কষ্ট রিকভারী= ৫৫, প্রফিট=৪৫) - ঠিক আছে
প্রফিটের ৬০% বাংলাদেশ=২৭ (ন্যূনতম, যদি সারে ৭ থেকে ১৫ কোটি ঘনফুট দৈনিক উৎপাদন হয়)
দৈনিক উৎপাদন উপর ভিত্তি করে প্রফিট গ্যাসের বাংলাদেশের অংশ পরিবর্তিত হয়। আমার আগের মন্তব্য দেখুন।
---------------------------------
আইওসি ৭৩ ভাগ গ্যাস বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করার কথা। যদি বাংলাদেশ না কিনে, তাহলে তারা বিদেশে রপ্তানী করতে পারবে। মোটামুটি এইতো? হ্যা মোটামুটি তাই। বিদেশে রপ্তানি এলএনজি করে করতে হবে, পাইপলাইনের মাধ্যমে না। এবং আইওসির একটা মধ্যবর্তী অপশন আছে অভ্যন্তরিণ তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রী।
এখন প্রশ্ন-
১. সবচেয়ে বিতর্কিত হলো কষ্ট রিকভারি। এই কষ্ট রিকভারিতে কি কি খাত অন্তর্ভুক্ত?
কঠিন প্রশ্নঃ অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক গ্যাস আবিষ্কারের পর, মোটাদাগে অনুসন্ধানের খরচ থেকে ডেভেলাপমেন্ট পর্যন্ত পেট্রোবাংলা দ্বারা অনুমোদিত খরচ। এবং উৎপাদনের সময় পেট্রোবাংলা দ্বারা অনুমোদিত উৎপাদন খরচ। বাদ যাবে কন্ট্রাক্টরের করপোরেট রিলেটেড খরচ, অনুচ্ছেদ ২৫ ইত্যাদি।
২. কষ্ট রিকভারির এই অনুপাত শুরু থেকেই চলে এসেছে, এরশাদের আমল থেকেই, এখানে মূল্য নির্ধারণে বাংলাদেশ কখনো কি হস্তক্ষেপ করতে পেরেছে?
কস্ট রিকোভারি এধরনের পিএসসির অংশ, ব্যাপারটা % এর। ইন্ডিভিজুয়্যাল আইওসির সাথে দরকাষাকষির ভিত্তিতে ঠিক করা হয়। আমি পরিবর্তন দেখেছি।
৩. শোনা কথা, আইওসির কর্তারা কষ্ট রিকভারির টাকায় বউ বাচ্চা নিয়ে তাহিতি দ্বীপে বেড়াতে গেলেও বাংলাদেশ সরকারের কিছু করার নেই। এটা কি ঠিক?
ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন!! বউ বাচ্চা নিয়ে তাহিতিতে বেড়াতে গেলেই সরকারের কিছু করার নেই ব্যাপারটা সেরকম না। তবে শোনা কথার বেসিস থাকার সম্ভাবনা আছে, ব্যাখ্যা করি। যখন বাজেট অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়, তখন যদি বাংলাদেশের অপারেশনে সরাসরি জড়িত কোন হাই-মেইন্টেনেন্স কর্মকর্তার কম্পেনসেসন প্যাকেজের মধ্যে সস্ত্রীক বিদেশে বেড়াতে যাবার খরচের অনুমোদনের আবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, এবং পেট্রোবাংলা অনুমোদন করে, তবে সেই খরচ কস্ট রিকোভারির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। আমাদের দেশে কাজ করছে এমন কিছু কোম্পানির দেশি কর্মকর্তার প্যাকেজে সস্ত্রীক বিদেশ সফর অন্তর্ভুক্ত আছে।
৪. একটা আইওসি গ্যাস উত্তোলনের পর কতো বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বাংলাদেশের গ্যাস কেনার জন্য? ওটা নিয়ে পিএসসিতে কি আছে সেটা কি প্রকাশ করা হবে?
আছে। তবে অ্যাপ্রাইজাল ড্রিলিং (কী পরিমান গ্যাস আছে বোঝার জন্য) এর পর ডেভেলাপমেন্ট প্ল্যান পেট্রোবাংলা অনুমোদন করার আগেই ব্যাপারটা, আমার ধারণা, ঠিক হয়ে যায়। কারণ, ডেভেলাপমেন্ট প্ল্যান মানে গ্যাস প্রসেস করার পর পাইপলাইন দিয়ে গ্রীডে সাপ্লাই দেয়া। (অথবা এলএনজি প্ল্যান্ট করা!!) এটা ঠিক না করে ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান কিভাবে করবে?
৫. পিএসসি গুলো জন সমক্ষে প্রকাশ না করে গোপন রাখা হয় কার স্বার্থে? জাতীয় না আইওসির?
আমি বলব দুজনের স্বার্থ জড়িত। পেট্রোবাংলা এটা প্রকাশ করলে অন্য কোন কোম্পানির সাথে নেগোসিয়্যাশনে অসুবিধা হয়। দেখুন এর পর আরও চুক্তি আছে, যেমন জিপিএসএ। যে কোন চুক্তিরই কনফিডেনশিয়্যাল ক্লজ থাকে, সেটা দুপক্ষই রক্ষা করে। তবে রেগুলেটরি বডি এটা যেকোন সময়ই দেখতে পারে। (বাংলাদেশ ব্যাংক দেখতে চাইলে আইওসি দেখাতে বাধ্য)
......................................................................................................
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে গ্যাসে রেশনিং শুরু করেছে। এলএনজি আমদানীর চিন্তা করছে। প্রতি বছর গ্যাস বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। মজুদ বাড়েনি এক ফোটা (দশ বছর আগে শুনতাম ২০ টিসিএফ পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যেতে পারে, এখন ৬-৭ এর বেশী শোনা যায় না) তবু শোনা যায় পিএসসিতে গ্যাস রপ্তানির অনুচ্ছেদ রাখা হয়েছে? এটা কার স্বার্থে?
আইওসির স্বার্থে। আইওসির সাথে চুক্তি করতে হলে গ্যাস বিক্রীর নিশ্চয়তা দিতে হবে। তবে প্রথম কেনার অধিকার এবং এলএনজি করে রপ্তানির শর্ত সুরক্ষা হিসাবে রাখা হয়েছে।
আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো এরকম চুক্তিগুলি করার সময় আমাদের মেরুদণ্ড যথেষ্ট সোজা থাকে না।
এটা নিয়ে আমার পরবর্তী পর্বে আলোচনার ইচ্ছা রাখি...।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ঘিলু ঘামিয়ে তবু পড়লাম!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বহুকিছু এখনও মাথায় ঠিকমত মাথায় ঢুকেনি, তবে যে বিষয়টা খুব বোঝা যাচ্ছে - কতগুলো বেজন্মা আবারও এই দেশটাকে বেচে দেয়ার পায়তারা করছে কিংবা কে জানে করেই ফেলেছে কিন। খুজলে দেখা যাবে এদের কারো কারো চৌদ্দপুরুষের ঘি, মাখন, ছানা খাওয়ার সব শুভকাজ সম্পন্ন। নৈষাদ ভাই, ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা, তানিম এহসান
আপনাকেও শুভেচ্ছা, তামিম এহসান।
চৌদ্দপুরুষের ঘি, মাখন, ছানা খাওয়ার সব শুভকাজের আপনার দৃষ্টিকোণের প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
তবে এতটুকু নিশ্চিত করি, গভীর সমুদ্রে দুটা ব্লকের জন্য পিএসসি স্বাক্ষর করে দেশ বিক্রী করা সম্ভব না। এই চুক্তিতে আমাদের ম্যাক্সিমাম এক্সপোজার সেই ব্লকে উৎপাদিত গ্যাসের ৮০ ভাগ এলএনজি হয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়ে যাওয়া।
মন্তব্য দুই বার হয়ে যাওয়ায় বাদ দেয়া হল।
মডেল পিএসসি ২০০৮ এবং আগের পিএসসি নিয়ে যতটুকু জেনেছি বাংলাদেশ এবং আইওসির মধ্যে শেয়ার ভাগাভাগিটা এরকম হচ্ছে-
ধরা যাক মোট প্রাপ্ত গ্যাস- ১০০ (কষ্ট রিকভারী= ৫৫, প্রফিট=৪৫)
প্রফিটের ৬০% বাংলাদেশ=২৭
প্রফিটের ৪০% আইওসি= ১৮
বাংলাদেশের মোট প্রাপ্তি ২৭
আইওসির মোট প্রাপ্তি ৭৩
নৈষাদ ভাই, আমি যে একটু অন্যরকম জানলাম যে!
চুক্তির ১৫.৫.৪ ধারাটি কি একটু পোষ্টে উল্লেখ করবেন।আচ্ছা আমিই উল্লেখ করছি।
15.5.4 Where PetroBangla has installed necessary facilities to transport and use gas to meet domestic requirements, Petrobangla shall be entitled at its option to retain in kind any Natural Gas produced up to Petrobangla's share of Profit Natural Gas, but in no event more than twenty percent(20%) of the total Marketable Natural Gas. The actual monthly amounts to be retained by Petrobangla shall be notified to Contractor prior to the conclusion of relevant LNG export contract(s) and such Monthly amounts shall be fixed for the duration of such contracts.At the request of Petrobangla, the limit of twenty percent(20%) stipulated herein will be increased to thirty percent(30%), at the beginning of the eleventh year following the start of deliveries for the purpose of LNG export.
আমি আমার স্বল্প ইংরেজি জ্ঞানে যতটুকু বুঝি তাতে পেট্রোবাংলা প্রথম ১০ বছরে কোন অবস্থাতেই ২০%'এর বেশি গ্যাস পাবেনা।তাইলে আপনার ২৭% 'এর হিসাব-কিতাব ভুল।
এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে "জানা" কথার জনগণকে জানানোর চেয়ে সেটা আগেভাগে নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল না!
আর ২৭% যদি বা হয় কিংবা ৫০% ,সেটাও মানবো কেন! যাক সে বিষয়ে কথা পরে বলি।
আহসান হাবিব সাহেব, আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
কোন কমিউনিক্যাশনের আমরা কি রিসিভ করব, তা একটা ফিল্টারিং প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। সেই ভাবেই আমি যখন একটা কিছু পড়ি, তখনে সেটা কে লিখেছে সেটার ভিত্তিতে অজান্তেই কিছুটা প্রভাবিত হই...। যাক...।
আপনি আপনার মন্তব্য শেষ করেছেন দুটা শক্ত বাক্য দিয়ে।
প্রথমটাঃ
এটুকু আপনাকে নিশ্চিত করি, সচলদের ‘জেনারেলি এক্সেপ্টেড স্ট্যান্ডার্ড’ অনুযায়ী আমি যা লিখছি, সেটুকু আমি ‘জানি’। ইন্টারনেট থেকে না বুঝে অনুবাদও করছি না, কিংবা পুরো ব্যাপারটা না বুঝে সিলেক্টিভ মন্তব্যও করছি না।
আমার মূল লেখাতে ৮০/২০ এবং কস্ট-রিকোভারি, প্রফিট গ্যাস ভাগাভাগি দুটা ভিন্ন জিনিস সেটা ব্যাখ্যা করেছি। আবারও আমার মন্তব্য রিপিট করি। দুটা সিনারিও।
যদি প্রথম অপশন অনুযায়ী পেট্রোবাংলা পুরো গ্যাস কিনে নেয়, সে ক্ষেত্রে ৮০/২০ প্রশ্ন আসবে না। কন্ট্রাক্টর কস্ট-রিকোভারি এবং প্রফিট গ্যাসের তার অংশের মূল্য, পিএসসিতে বর্ণনা করা ফরম্যুলা অনুসারে পাবে। পুরো গ্যাস ন্যাশানাল গ্রিড লাইনে চলে আসবে। কস্ট-রিকোভারির অংশ যত দিন যাবে কমে আসবে এবং পেট্রোবাংলার অংশ বাড়তে থাকবে।
আপনি যে ধারা দিয়েছেন, সেটা এলএনজি হলে কী হবে সে ব্যাপারটা।
এলএনজির ওয়ার্স্ট কেস সিনারিওটা দেখি। কন্ট্রাক্টর এলএনজি করে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিল, ধরলাম সরকার ন্যূনতম বন্টনের রাজি হয়েছে কনোকোর সাথে। আরও ধরলাম এলএনজি প্ল্যান্টের দাম (ইনভেস্টমেন্ট বিলিয়ন ডলারে) বেশি বলে ৫৫% ই কস্ট রিকোভারিতে চলে যাবে। সেই গ্যাস ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই দৈনিক উৎপাদন ৬০ কোটি ঘনফুটের বেশি হবে। পিএসসির বর্তমান শর্ত অনুসারে... পেট্রোবাংলার ফ্রি গ্যাসের পরিমান হবে ন্যূনতম ৩৬ ভাগ। শর্ত অনুসারে সর্বোচ্চ ২০ ভাগ অভ্যন্তরিণ ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে। তারমানে ২০ ভাগ, ট্রাস্নপোর্টেসন ফ্যাসিলিটি স্থাপন সাপেক্ষে দেশে ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে এবং ১৬ ভাগের দাম ডলারে পেয়ে যাবে।
আর দ্বিতীয়টাঃ
– আমি আমার ব্যাখ্যা দিয়েছি, আপনার মানতে হবে সেটার কোনই মানে নেই। প্লিজ।
গ্যাস কি আপনার? গ্যাস যাদের, তারা তাদেরটা বেচলে আপনার সমস্যা কী?
গ্যাস আমার না, পাবলিকের। পাব্লিক হিসাবে সমস্যা আছে।
উদ্ধৃতি,
যদি প্রথম অপশন অনুযায়ী পেট্রোবাংলা পুরো গ্যাস কিনে নেয়, সে ক্ষেত্রে ৮০/২০ প্রশ্ন আসবে না।
অবশিষ্ট ৮০ ভাগ গ্যাস তো আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যেই কিনতে হবে।সুতরাং এই গ্যাস কনোকো-ফিলিপস থেকে কেনা আর কাতার/মায়ানমার থেকে কেনার মধ্যে পার্থক্য কতটুকু!
এটুকু আপনাকে নিশ্চিত করি, সচলদের ‘জেনারেলি এক্সেপ্টেড স্ট্যান্ডার্ড’ অনুযায়ী আমি যা লিখছি, সেটুকু আমি ‘জানি’। ইন্টারনেট থেকে না বুঝে অনুবাদও করছি না, কিংবা পুরো ব্যাপারটা না বুঝে সিলেক্টিভ মন্তব্যও করছি না।
পুরো ব্যাপারটা যেহেতু বুঝিনাই( আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা), সুতরাং আরো কিছু সিলেকটিভ প্রশ্ন করি সাথে কিছু
সিলেকটিভ তথ্য দিয়ে যাই।কষ্ট-রিকাভারী নিয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা......।
১.মাগুরছড়ায় অক্সিডেন্টাল ১৯৯৫ সালে সিসমিক সার্ভে এবং তিনটি কুপ খননের জন্য প্রথমে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ ডলারের হিসেব দিলেও ১৯৯৭ সাল নাগাদ ৪ বার সংশোধনের মাধ্যমে তা ৪ কোটি ৯১ লক্ষ ৪০ হাজার ডলারে পরিণত হয়। এবং এই খরচের হিসাব কুপ খননের খরচের হিসাব ছাড়াই। কুপ খননের হিসাব সহ অংকটি কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছিলো সেটি অবশ্য আমাদের জানা নেই কারণ এই কস্ট রিকভারির হিসাবটি প্রকাশিত নয়।
২.অগভীর সমুদ্রের সাঙ্গু গ্যাস ক্ষেত্রে কেয়ার্নের কস্ট রিকভারির হিসাবটা দেখা যাক। বিডিং এর সময় কেয়ার্ন প্রকল্প ব্যায় দেখিয়েছিলো ১০.৮১ মিলিয়ন ডলার কিন্তু একের পর এক সংশোধনী বাজেট আসতে থাকে, তৃতীয় সংশোধনী বাজেটে ব্যায় ১৮ গুণ বেড়ে গিয়ে দাড়ায় ১৮৮ মিলিয়ন ডলার, চতুর্থ সংশোধনী বাজেটে ২৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং সব শেষে ৬৬০ মিলিয়ন ডলার। ফলে এই গ্যাস ক্ষেত্রটি থেকে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মাত্র ২০% গ্যাস পায়। পেটোবাংলার এপ্রিল মাসের এমআইএস রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, এ বছরের এপ্রিলে মোট ১৩.৮৩৪ এমএমসিএম গ্যাসের মধ্যে কেয়ার্নের ভাগে পড়ে ১১.০৭৫ এমএমসিএম গ্যাস অর্থাত বাংলাদেশের ভাগে মাত্র ২.৭৫৯ এমএমসিএম যা মোট গ্যাসের মাত্র ১৯.৯৪%।
আপনি কষ্ট-রিকভারি যে প্রাপ্তগ্যাসের ৫৫ ভাগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, সে ব্যাপারে আমি মোটেই নিশ্চিত নই।আপনি কতটা নিশ্চিত?
উদ্ধৃতি,
পিএসসির বর্তমান শর্ত অনুসারে... পেট্রোবাংলার ফ্রি গ্যাসের পরিমান হবে ন্যূনতম ৩৬ ভাগ। শর্ত অনুসারে সর্বোচ্চ ২০ ভাগ অভ্যন্তরিণ ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে। তারমানে ২০ ভাগ, ট্রাস্নপোর্টেসন ফ্যাসিলিটি স্থাপন সাপেক্ষে দেশে ব্যবহারের জন্য নিতে পারবে এবং ১৬ ভাগের দাম ডলারে পেয়ে যাবে।
আপনি শর্তের ধারা উল্লেখ করলে ভালো হইতো।যাহোক, আপনার কথা মেনেই আলোচনায় আসি, পেট্রোবাংলা ৩৬ভাগ পেল।২০ভাগ আভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য রেখে বাকী ১৬ ভাগ রপ্তাণী করতে বাধ্য সে।সেক্ষেত্রে ক্রেতা ধরেই নিচ্ছি কনোকো-ফিলিপস।আবার পেট্রোবাংলা যদি, ২০ ভাগের বেশি আভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ব্যবহার জন্য ব্যবহার করতে চায়, তাইলে কনোকো-ফিলিপসের কাছ থেকে কিনতে হবে।
ব্যাপারটা অদ্ভুদ আপনি আপনার ১৬ ভাগ গ্যাস কনোকো-ফিলিপসের কাছে রপ্তাণী করতে বাধ্য।আবার সেই ১৬ ভাগ তাদের কাছ থেকে কিনতে হবে যদি ব্যবহার করতে চান!
তাইলে ৮০-২০ হিসাবের ভুলটা কোথায় বলবেন!
আহসান হাবিব সাহেব, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ডিফেন্সিভ হওয়ার দরকার নেই, আমি আইওসিকে ডিফেন্ড করছি না, চুক্তির ইন্টারপ্রট করছি মাত্র।
১।
ভুল ব্যাখ্যা। প্রথম অপশন অনুযায়ী যদি পেট্রোবাংলা সম্পুর্ন গ্যাস কিনে তবে পেট্রোবাংলার ফ্রি গ্যাস ছাড়াবাকি পুরো গ্যাসেরই এক দাম হবে। তার মূল্যও পিএসসিতে নির্ধারন করা আছে। (ভ্যারিয়্যাবল, কিন্তু সর্বোচ্চ সীমা উপধারা ১৫/৭(!!))।
২। কস্ট-রিকোভারির হিসাবটা জানলাম ধন্যবাদ। তথ্য অনুযায়ী বোঝা গেল আইওসিরা ইচ্ছামত প্রকল্প ব্যয় রিভাইজ করে। (বিডিং এর সময় যেটা দেয়া হয় সেটা মিনিম্যাম ওয়র্ক অবলিগ্যাসন, সেই বিশ্লেষণে গেলাম না।)
এটা নিশ্চিত অনিশ্চিতের ব্যাপার না। একটাই চুক্তির শর্ত, এটার বেশি কস্ট-রিকোভারি করা সম্ভব না। যদি আবিষ্কারের পর হিসাব করে দেখা হয় এই ভাগের মধ্যে কস্ট-রিকোভারি সম্ভব না, তবে এটা ফাইনান্সিয়্যালি ভায়াবল প্রজেক্ট না। স্টপ। রেলিংকুইশ করুক আর যাই করুক (কেয়ার্নের কথা যখন বললেন, এটাও যোগ করা যায় ব্লক ১০ প্রসপেক্ট থাকা সত্ত্বেও রেলিংকুইশ করা হয়েছে)
কোন ভুল নেই। এলএনজি হলে সর্বোচ্চ ২০% ফ্রি গ্যাস অভ্যন্তরিণ ব্যবহারের জন্য আনতে পারবে। বাকী ১৬% ফ্রি গ্যাসের এর টাকা পেয়ে যাবে। ২০% এর বেশি গ্যাস অভ্যন্তরিণ ব্যবহারের জন্য আনা সম্ভব না। স্টপ।
পুরোটাই যদি আনার ক্ষমতা থাকে তবে তো এলএনজি এবং রপ্তানির প্রশ্ন আসে না। প্রথম অপশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট মূল্যে পুরোটাই আনা যায়। একবার এলএনজি করে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে ঐ ২০% ফ্রি, বাকি পেট্রোবাংলা অংশের টাকা। আরও চাইলে সম্ভবত রপ্তানি মূল্যে কিনতে হবে।
ধন্যবাদ।
ভুল ব্যাখ্যা। প্রথম অপশন অনুযায়ী যদি পেট্রোবাংলা সম্পুর্ন গ্যাস কিনে তবে পেট্রোবাংলার ফ্রি গ্যাস ছাড়াবাকি পুরো গ্যাসেরই এক দাম হবে। [i]তার মূল্যও পিএসসিতে নির্ধারন করা আছে। (ভ্যারিয়্যাবল, কিন্তু সর্বোচ্চ সীমা উপধারা ১৫/৭(!!))।[/i]
একবার এলএনজি করে রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে ঐ ২০% ফ্রি, বাকি পেট্রোবাংলা অংশের টাকা। আরও চাইলে সম্ভবত রপ্তানি মূল্যে কিনতে হবে।
বোল্ডকরা অংশটুকুঃ একবার বলছেন পেট্রোবাংলার আমদানী মূল্য পি,এস,সি নির্ধারিত।আরেকবার বলছেন সম্ভবত রপ্তানী মূল্যে কিনতে হবে।কোনটা সঠিক!
যেখানে আপনি নিজেই সম্ভবত শব্দট ব্যবহার করেছেন, সেখানে এক বাক্যে আমার ব্যাখাটা ভুল বলে দিলেন!
চুক্তিতে পি,এস,সি নির্ধারিত মূল্য আর আন্তর্জাতিক বাজারের বাজারের মূল্যের হেরফের কতটুকু!বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার আই,ও,সি থেকে যে মূল্যে গ্যাস কেনে তার সাথে আন্তর্জাতিক বাজার দরের পার্থক্য কতটুকু!
আর দ্বিতীয় কথা কনোকো-ফিলিপস যে পরিমান গ্যাস উত্তোলন করবে, সেই পরিমান গ্যাসের চাহিদা বাংলাদেশে আছে কিনা!যদি চাহিদা না থাকে সেটা কনোকো-ফিলিপস নিশ্চিতভাবেই রপ্তানী করবে।
বাংলাদেশের আজ থেকে আগামী ২০ বছরের জ্বালানী পরিস্থিতিতে গ্যাস রপ্তানীর মতো বিলাসিতা(মুর্খামি) আমরা দেখাতে পারি কিনা!
২০০১ সালে নির্বাচিত হয়ে সাইফুর রহমান গ্যাস রফতানী করতে চেয়েছিলো।তখন যুক্তি ছিলো বাংলাদেশ গ্যাসের উপর ভাসছে।ম.তামিম সেটাকে সমর্থন করে কলম ধরেছিল।
আহসান হাবিব সাহেব, আপনি কি লেখাটা পড়েছেন? আমি আরেকবার ধৈর্য্য নিয়ে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করি (এই বিষয়ে এটাই আমার শেষ ব্যাখ্যা।)
গ্যাস পেলে কী হবে এ ব্যাপারে তিনটা সিনারিও আছে।
১। পেট্রোবাংলা সম্পুর্নটা কিনবে। সেখানে ৮০/২০ ব্যাপার নেই। কস্ট-রিকোভারি এবং প্রফিট গ্যাসের ভাগাভাগি। সেখানে প্রতি ইউনিট গ্যাসের মূল্যের ব্যাপার স্পেসিফিক্যালি বলা আছে (উপরে দেখুন)। কন্ট্রাক্টর কস্টরিকোভারি অংশ এবং প্রফিট গ্যাসে তার অংশের জন্য পিএসসিতে নির্ধারিত মূল্যে পেমেন্ট পাবে। ১০০% গ্যাস ন্যাশানাল গ্রিড লাইনে যুক্ত হবে। এখানে টার্মস এন্ড কন্ডিশনের কোনই এম্বিগুউটি নেই। পেট্রোবাংলা এই মডেলে অনেকগুলি আইওসির সাথে অনেকদিন থেকে কাজ করে আসছে। স্টপ।
২। একনম্বর অপশন কাজ না করলে কন্ট্রাক্টর অভ্যন্তরিণ বাজারে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রী করতে পারবে। বন্টন ব্যবস্থা উপরের মতই। এটারও মূল্য পিএসসিতে স্পেসিফিক বলা আছে। স্টপ।
৩। উপরের দুইটা কাজ না করলে এলএনজি করে রপ্তানির প্রশ্ন। তখন ৮০/২০ এর প্রশ্ন। কস্ট রিকোভারি এবং প্রফিট গ্যাসের ভাগাভাগি আগের মতই ফর্মুলা অনুসারে। তবে সর্বোচ্চ ২০ ভাগ, ট্রাস্পোর্টেশন এরেঞ্জমেন্ট সাপেক্ষে অভ্যন্তরিণ ব্যবহারের জন্য রাখতে পারবে। এটার বিক্রয় মূল্য পিএসসিতে যেভাবে বলা হয়েছে সেটা আমি ঠিক বুঝিনি। এলএনজির ক্ষেত্রে একটা নতুন কন্ট্রাক্ট হবে পেট্রোবাংলার সাথে। সম্ভবত বলেছি, ২০ ভাগ সর্বোচ্চ দেশে রাখার পর আরও যদি নিতে চায় তবে তার মূল্য কী হবে সেটা পরের চুক্তিতে ঠিক হবে। আমি ধরে নিলাম সেটা মার্কেট প্রাইস।
প্লিজ, তিনটা সিনারিও আলাদাভাবে দেখার চেষ্টা করুন।
আমি আইওসি/পেট্রোবাংলার সাথে যুক্ত নই। যাই হোক, সম্ভবত অফসোর গ্যাসের সর্বোচ্চ মূল্য ১ থাইসেন্ড সিএফটিতে ২/৯২ ডলার থেকে ২/৯৫ মধ্যে। পার্থক্য জানিনা কত।
আমার উত্তর হল ... জানিনা। (আমি যদি সরকারে নীতিনির্ধারনীতে থাকতাম, তাহলে শক্তভাবে বলতাম হবে না। এপ্রাইজাল ড্রিলিং (যাতে গ্যাসের পরিমান বুঝা যায়) থেকে ডেভেলাপমেন্টে ২/৩ বছর লাগতে পারে। আনলাইকি কেসে খুব বড় ডিস্কোভারি হলেও এর মধ্যে চিটাগাং এ গ্যাস বেইস পাওয়ার প্ল্যান্ট বসানো সম্ভব)
আমার মতে না।
দু বছর আগে আমিও এর বিপক্ষে লিখেছিলাম।
নতুন মন্তব্য করুন