[শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষক হিসাবে ৪ বছরে (২০০৯-২০১৩) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনেক ধরনের কাজ করেছি। এই সময়ে হওয়া বিভিন্ন তিক্ত, মজার এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্যেই আমার এই লেখা। আমার বিশ্বাস পাঠকেরা ভর্তি পরীক্ষার ভেতরের অনেক বিষয়ে নতুন কিছু ধারণা পাবেন এই লেখাটা থেকে। বিশেষ করে যারা ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনেক কথাবার্তা বলছেন, কিন্তু আসলে এতে কী কী ঘটে তেমন জানেন না, তাদের জন্য এই লেখাটা খুব জরুরী। জাফর ইকবাল স্যারের সাথে এখানকার প্রায় সব ঘটনার সরাসরি সংস্লিষ্টতা আছে; এজন্য উনাকে এই লেখাটা পড়িয়ে অনলাইনে পাবলিশ করার অনুমতিও আমি নিয়েছি।]
শুরু
গল্পের শুরু ২০০৯ এর শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে, যখন আমরা ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ ও সুন্দর করার জন্য সফটওয়্যার বানানোর প্রজেক্ট হাতে নিলাম। এই মহাযজ্ঞের শুরুটা খুব মজার। মুনির হাসান স্যার বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিলেন, মোবাইল ফোন ব্যাবহার করে ছাত্রছাত্রীদের জীবন একটু সহজ করা যায় কিনা? অন্য অনেককে কনভিন্স করার ব্যর্থ চেষ্টা করে, শেষ পর্যন্ত উনি জাফর ইকবাল স্যারের সাথে একটা আড্ডায় ব্যপারটা আলোচনা করেন। জাফর স্যার বিষয়টা নিয়ে আসলেন ডিপার্টমেন্টে; মোবাইল ফোন পদ্ধতি করা যাবে কি না, গেলে কিভাবে তা নিয়ে শুরু হলো চিন্তা ভাবনা। আমরা শিক্ষক হিসাবে এসেছি মাত্র ২-৩ মাস হয়েছে; সফটওয়্যার কোম্পানীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে বোঝার চেষ্টা করছিলাম ডিপার্টমেন্টের লোকজন নিয়ে এটা বাস্তবায়ন সম্ভব কিনা। এর মাঝে জাফর স্যার একদিন আমাদের সাহসী ভিসি সালেহ উদ্দীন (মুক্তিযোদ্ধা, সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছেন) স্যারকে জানিয়েছেন যে আমরা এমন একটা বিষয় নিয়ে ভাবছি। ভিসি স্যার কথা শুনে কি বুঝেছেন কে জানে; ওই সপ্তাহের এক সেমিনারে ঘোষণা দিয়ে দিলেন, "আমরা এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম চালাবো।" জাফর স্যার ডিপার্টমেন্টে এসে বললেন, "আর চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ নাই। ভিসি স্যার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন, এটা এখন করতেই হবে।" ভিসি স্যারের উপর মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল; মুখ ফুটে বলতে পারিনি, মনে মনে তখন বলেছি, "সফটওয়্যার ডেভেলাপমেন্টের উনি কী বোঝেন? কার সাথে কথা বলে এই ঘোষণা দিয়েছেন? করবেন ভালো কথা, কিন্তু কারা সফটওয়্যার বানাবে, কয়দিন লাগবে এইসব একটু আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিবেন না?" (পরে বুঝেছিলাম; মুক্তিযোদ্ধা মানুষতো, "সাফল্য আসবেই" বিশ্বাস নিয়ে ঝাপিয়ে পরাটাই স্বাভাবিক।)
যাই হোক, অনেক রিস্ক মাথায় নিয়ে ওই কাজ ডিপার্টমেন্টে শুরু হলো। এর মাঝে আরেকদিন জাফর স্যার এসে জানালেন, কারা নাকি ভিসি স্যারকে বলেছে, "জাফর ইকবালরে বিশ্বাস কইরা, খাল কাইটা যে কুমির আনতেছেন, জানেন? ভর্তি পরীক্ষা নিয়া বাজি ধরছেন। নিজেও ডুববেন, ভার্সিটিরেও ডুবাবেন। শেষ পর্যন্ত আপনার গলায় ফাসি নিতে হবে বলে দিলাম।" এই কথা শুনে ভিসি স্যার কোন পাত্তা দেননি, কিন্তু আমরা সিরিয়াস ভয় পেয়েছি। জাফর স্যার আমাদেরকে বললেন, "ভয় পাওয়ার কিছু নাই। ভাল কাজ করবা, আর কিছু কথা শুনবা না, কিছু বাধা পাবা না, তা কি হয়? যে কোন উদ্দ্যোগ নিলেই কিছু লোক আসবে বাধা দিতে। কাজ করতে চাইলে এর মাঝেই করতে হবে।"
এরপরের ঘটনা কি হয়েছে এটাতো মোটামুটি সবাই জানে। ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের জন্য দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দৌড়াদৌড়ি করে অফিস টাইম ধরার, আর কোচিং সেন্টারে ঘুরার দিন শেষ হয়ে গেল। ঘরে বসে ঈদের দিনে কিংবা রাত ২টার সময়ও ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে ছাত্রছাত্রীরা (১ম বারেই ঈদের দিন ১৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছিল)। মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই সিট প্ল্যান এবং রেজাল্ট জানতে পারছে। পাশাপাশি ভর্তির মৌসুমে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াত কমছে। তাই অতিরিক্ত যানজট, অতিরিক্ত কার্বন নি:সরণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এমন আলোচনাও হয়েছে। ওইখানেই বিরতি দেয়া যেত, কিন্তু আমরা দেই নি। এর পরেও আরো অনেক কিছু করেছি আমরা। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম ট্রান্সপারেন্সি। এই ট্রান্সপারেন্সি নিশ্চিত করার জন্য ভাইবা বোর্ডে ভর্তির কি ঘটছে, তা বাইরে লাইভ দেখানোটা খুব মজার ছিল। ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের উত্তেজনা নিয়ে দেখাতো আছেই, বর্তমান ছাত্রছাত্রীরাও এখন দল বেধে এই প্রজেক্টর ডিসপ্লে দেখে, খেলার স্কোরের মত। নিজেদের ডিপার্টমেন্টের সিট ফিল-আপ হয়ে গেলে তারা আনন্দে লাফ-ঝাপ দেয়, ছোটখাট মিছিলও করে মাঝেমাঝে।
অর্জন
পত্রপত্রিকায়, মানুষের মুখে মুখে এই কাজের গুরুত্ব এবং অর্জন নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। দেশে-বিদেশে পুরস্কার পাওয়া থেকে শুরু করে সাফল্যের বিভিন্ন হিসাব মেলানো হয়েছে। তবে আমি মূল সাফল্য বিচার করি ভর্তি প্রক্রিয়ার সময়ের কিছু ঘটনা দিয়ে। এই প্রক্রিয়ার সাথে থাকার কারণে প্রথম জানতে হয়েছে যে, প্রায় ১০% ছাত্রছাত্রীর SSC/HSC তে নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম এই তিনটার কোন জায়গায় একটু পরিবর্তন থাকে। কার ইনফরমেশন কোনটা, কেউ একজন আসলেই সঠিক ইনফরমেশন দিল কিনা, এসব যাচাইয়ে এই ১০% ছাত্রছাত্রীর ডাটার কারণে বিভিন্ন সমস্যা হয়। শুধু এই সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধান করতেই বহু শ্রম এবং সময় গিয়েছে। বোর্ডের ডাটা থেকে ঠিকমত পেলে ভাল, না হলে ছাত্রছাত্রীদেরকে পাঠাও মেসেজ; মেসেজ রিপ্লাই না দিলে, কর কল; কল না ধরলে, কর লিষ্ট। লিষ্ট ধরে পাকড়াও কর পরীক্ষার হলে। পরীক্ষা শেষে আলাপ করে ঠিক কর ইনফরমেশন, আর বোনাস হিসাবে দাও ঝাড়ি (এই সহজ কাজটা নিজে না করে কেন কোচিং সেন্টারে গেলো সেটা নিয়েই বেশীরভাগ ঝাড়ি থাকে)। শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটা ছাত্রছাত্রীর সঠিক তথ্য বের করে প্রসেস করতে পারাটা আমার কাছে বিরাট একটা সাফল্য।
যাই হোক, সবচেয়ে মজার এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটা ঘটে ২০১০ এর পরীক্ষায়। ভর্তি পরীক্ষার একটা কমন সমস্যা হচ্ছে ডুপ্লিকেট রোল। ব্যাপারটা একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। ধরি, করিমের রোল ৫৩৪১ এবং রহিমের ৫৩৪০। করিম টেনশানের মাঝে গোল্লা ভরাট করতে গিয়ে ১ এর জায়গায় ০ ভরাট করে ফেলল। খুব নিরীহ একটা ভুল। কিন্তু সফটওয়্যার পাবে ২টা ৫৩৪০, হবে সফটওয়্যারের মাথা নষ্ট। এবং সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে বেচারা রহিমের অবস্থাটা; সে এসবের কিছুই জানে না - করিম কি ভুল করল, সফটওয়্যার কি করল, এসবের সাথে তার কি সম্পর্ক - কিন্তু তার জীবন হুমকির মুখে!!! যাই হোক, এটা সব গোল্লা ভরাট পদ্ধতিরই সমস্যা। এই ব্যাপারে অন্যরা কি করে আমরা জানি না। তবে আমরা যা করি তা হচ্ছে, সফটওয়্যার থেকে এইসব কনফ্লিক্টিং সব OMR এর আইডি দিয়ে একটা লিস্ট জেনারেট করা। তারপর, OMR এর স্থূপ থেকে ওইসব চিহ্নিত OMR আলাদা করে, যাচাই করে বের করা কোন OMR আসলে কার। এটা অত্যন্ত পেইনফুল একটা কাজ, অনেক মানুষের অনেক কাজ করতে হয় এই একটা ব্যাপার ম্যানেজ করার জন্য। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের এই উপকারটার জন্য পেইনটা নেয়া হয়। এই কাজটা আমার কাছে অন্যতম বড় সাফল্য। তবে ২০১০ এ ঘটা মজার ঘটনার টুইস্টটা আসলে অন্য জায়গার। সঠিক OMR এর সঠিক ব্যাক্তিকে বের করার জন্য OMR দেখে নিলেই হয়, কার ভুলের ধরণ কি সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। তবে আমার আবার এইসবে খুব আগ্রহ, সুযোগ পেলেই দেখতে ইচ্ছে করে কি হলো, কেন হলো। এই কেন হলো ঘাটতে গিয়ে পেলাম যে সবই হচ্ছে ০ এর জায়গায় ১, ১ না হয়ে ০, ৯ না হয়ে ৮ এমন ধরণের; শুধু একটা ছাড়া, ওইটা আকাশ-পাতাল পার্থক্য। দেখে সন্দেহ হলো, তাই আরো ঘাটতে লাগলাম ঘটনা কি বোঝার জন্য। প্রথম মজার ব্যাপার পেলাম, এই ঘটনার রহিম-করিমের বাড়ী একই এলাকায়। দ্বিতীয় ব্যাপার, করিম ২০০৯ এ পরীক্ষা দিয়েছিল, চান্স পায় নাই। তিন, রহিমের চেয়ে করিমের রেজাল্ট অনেক খারাপ। দুয়ে-দুয়ে চার মেলাতে বেশী সময় লাগল না। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে করিম পাজী, সে সিস্টেম জানে, সে ২বার দিয়েও চান্স পাবে না তাও জানে, কিন্তু একই এলাকার রহিম প্রথম বারেই পেয়ে গেলে তার মান-ইজ্জত নিয়ে টানটানি। তাই সে রহিমকে ডোবানোর চেষ্টা হিসাবেই এটা করেছে (পরীক্ষার সময় পরিদর্শকদের ফাকি দিয়ে রহিমের রোল ফিল-আপ করার সে আরো অনেক টেকনিক এপ্লাই করেছিল)। যাই হোক, মোবাইল নম্বরসহ ডিটেইলস জানালাম সিনিয়র স্যারদেরকে। একজন স্যার এমন ক্ষেপা ক্ষেপেছেন, সাথে সাথে দিয়েছেন ফোন:
স্যার: "এই ছেলে, তুমি পরীক্ষায় অন্যজনের রোল নম্বর লিখছ কেন?"
করিম (ছদ্মনাম): "না, আমি অন্যজনের রোল নম্বর লিখি নাই।"
স্যার: "লিখ নাই মানে? আমি দেখছি তুমি লিখেছ। তোমার রোল এত, লিখেছ এত। তোমার বাড়ী ঐ জায়গায়, যারটা লিখছ তার বাড়ীও ঐখানে। আগেরবার তুমি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাও নাই।... ..."
করিম (ভয় পেয়ে): "স্যার, ভুলে লিখে ফেলছি।"
স্যার: "ভুলে লিখ নাই, ইচ্ছা করে লিখেছ। আমার কাছে প্রমাণ আছে, তুমি অন্য ছাত্রের জীবন নষ্ট করার চেষ্টা করেছ। তোমার সব তথ্য আমি এক্ষন RAB এর কাছে দিব।"
করিম (আরো ভয় পেয়ে): "স্যার মাফ করে দেন।"
"কোন মাফ নাই" বলে স্যার ফোন রেখে দেন। কিন্তু প্রথমবার হওয়ায়, এবং ছেলেটা অনেক ভয় পেয়ে যাওয়ার কারণে স্যার তাকে আর জটিলতায় ফেলতে চাননি।
ডিজিটাল ভর্তি পদ্ধতির সুবিধার কথা আসলেই আমার প্রথমে এই গল্পটা মনে পড়ে যায়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
এই প্রজেক্টের সাফল্যের কারণে পরে আরো অনেক অভিজ্ঞতা হয়। অন্য বেশ কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়কে একই পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম করতে সাহায্য করা, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় এই পদ্ধতি ব্যাবহার হতে দেখা, আমাদের বের করা উপায় বিক্রি করে টেলিটক কেন একা লাভ নিচ্ছে এবং শাবিকে কেন কিছু দিচ্ছে না এগুলো নিয়ে জাফর স্যারের সাথে আমাদের গাইগুই করা। এই সব কিছুর মাঝে অন্যতম অভিজ্ঞতা হচ্ছে ২০১১ তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালের ভর্তি পরীক্ষার কাজ করা। এইটার শুরুর অংশটাও অনেকটা ২০০৯ এর মতই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যখন আমাদের কাছে আসে তখন আমাদের জনবল যথেষ্ট শক্ত। কিন্তু উনারা এসেছেন অনেক কম সময় নিয়ে এবং চাচ্ছেন আমাদের ইতিমধ্যে করা মোবাইলের সিস্টেম উনাদেরকে না দিয়ে, নতুন একটা ওয়েব ভিত্তিক সিস্টেম যেন করে দেই। তার উপর উনাদের ভর্তি প্রক্রিয়া বেশ জটিল। সময়মতো বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা, তা নিয়ে আমরা আবার চিন্তিত। তখন স্যার বললেন, "একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প চাইছে, তোমরা না করে দিবা?" আমরা না করতে পারিনি। ছাত্রছাত্রী সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে ৫ম, এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমরা নিয়ে নিলাম। এবারো শুরুতে ভয় দেখানো আছে, তবে অন্য এংগেল থেকে। অনেকেই বলতে থাকল, "ওদের কাজ করছ, ঐ কলেজের ক্যাডারদের চেন? বন্দুক ধরবে মাথায়, ওদের লোক ভর্তি করিয়ে দেয়ার জন্য।" এবার কিন্তু ঘটনা কিছুটা সত্যি হলো। বন্দুক না ধরলেও, ফোন করে অনেক থ্রেট দিয়েছে, "আমি অমুক কলেজের তমুক নেতা ... ... আমার ছোট ভাই একটা আসে নাই লিষ্টে ... ... না পাইলে খবর আছে ... ..."। এইসব শুনে আমাদের রিয়েকশান হতো, "বেচারা, এবারের ভর্তি-বাণিজ্যটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মনে হয় খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।" জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজটা করতে গিয়ে অারো অভিজ্ঞতা হয়েছে দলীয় পত্রিকার ভুমিকা নিয়ে। ওদের জটিল ভর্তি পদ্ধতি ম্যানেজ করতে গিয়ে আমাদের মাঝে মাঝে ওয়েবসাইটে কিছু সমস্যা হতো, কিন্তু ওইসব সমস্যা ছিল সাময়িক, সবই দ্রুত সমাধান করা হয়েছে। ঐসবে ছাত্রছাত্রীদেরও কোন পারমানেন্ট সমস্যা হয়নি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরও হয়নি, যত সমস্যা হয়েছে কিছু পত্রিকার। তাদেরকে মনে হয় কেউ নিয়োগ দিয়ে রেখেছিল উৎ পেতে থাকার জন্য। পান থেকে চুন খসলেই, একটা ছোট্ট ঘটনার সাথে, দশটা গল্প জুড়ে দেয়ার পাশাপাশি জাফর স্যারের মুন্ডুপাত করার জন্য।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করার কয়েকটা মাস ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরপুর। এই ভর্তি পরীক্ষার কাজটা করতে গিয়ে আমাদের টেকনিক্যাল/নন-টেকনিক্যাল বহু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করতে হয়, তার মাঝে একটা টেকনিক্যাল বিষয়ের উদাহরণ দেই। প্রতি বছর যেকোনো পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হবার সাথে সাথেই ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যায়। কারণ এতো বেশি সংখ্যক মানুষ ফলাফল দেখার জন্য ওয়েবসাইটে যায় যে ওয়েবসাইট সে লোড আর সামলাতে পারে না। আমরা এটি সমাধান করি ক্লাউড কম্পিউটিং ও আরো কিছু প্রযুক্তি প্রয়োগ করে (সিএসই বিভাগের মূল দলের সাথে এই বিভাগ থেকে পাশ করা সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট তামিম শাহরিয়ার সুবিন ভলান্টিয়ার হিসাবে এই ব্যাপারে টেকনিক্যাল সহায়তা দেন)। এধরণের কাজ আমাদের জন্য ছিল প্রথম, তাই বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলাম এর সাফল্য নিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়েবসাইটের লোড আমরা বেশ ভালোভাবেই সামলাই। প্রথম দুই দিনে এক মিলিয়ন হিট সামলাতে গিয়ে এক সেকেন্ডের জন্যেও আমাদের ওয়েবসাইট ডাউন হয় নাই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সাফল্যের ব্যাপারটা মিডিয়াতে আসে নি, কারণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত পজিটিভ সংবাদ ছাপাতে হয়তো তারা অভ্যস্ত নয়।
সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য
এইসব ঘটনা মনে পড়লে এখন শুধু ভালো লাগাটাই কাজ করে। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে ৪ বছরে আমরা যা করতে চেয়েছি মোটামুটি করতে পেরেছি, শুধু একটা জিনিস ছাড়া, "গুচ্ছ পদ্ধতি"। আমার এখনো মনে আছে; জাফর ইকবাল স্যার সব ইউনিভার্সিটির ভিসির সামনে ২০১০ এ প্রস্তাবটা নিয়ে যাওয়ার আগে আমরা ভেবেছি উনারা বলবেন, "সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে একসাথে পরীক্ষা, সেটাতো খুব ভাল প্রস্তাব, কিন্তু এত বড় আয়োজন কি ম্যানেজ করা সম্ভব?" এই সরল বিশ্বাস নিয়ে আমরা বোকার মতো দিন-রাত ভেবে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান বের করেছি। স্যারের কাছে লিষ্ট হিসাবে সব লিখে দিয়েছি। কিন্তু বিস্ময়ের সাথে আবিস্কার করলাম যে, ঐ মিটিং এ আসা লোকজন কিভাবে কি ম্যানেজ করা হবে আর এতে ছাত্রছাত্রীদের কি সুবিধা হবে সেটা নিয়ে চিন্তিত না। উনাদের সকল চিন্তা, "এতে জাত চলে যাবে কিনা" আর "ইনকাম কমে যাবে কিনা", শুধু এই দুইটা নিয়ে। ইনকাম একই রেখে কিভাবে ছাত্রছাত্রীদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়া যায়, তার সমাধানও ছিল, কিন্তু সেটা তারা শুনতেও চাননি। স্যারের কাছে দেয়া আমাদের সমস্যা সমাধানের লিষ্টটা, লিষ্ট হিসাবেই রয়ে গিয়েছিল, কোন কাজে লাগেনি।
আমরা সবসময় জানি যে মোবাইলে রেজিষ্ট্রেশান পদ্ধতি চালু করে আমরা ছাত্রছাত্রীদের একটা সমস্যা সমাধান করে দিলেও, মূল সমস্যা আসলে রয়ে গেছে। আমরা নিজের চোখে দেখেছি, রাতের পর রাত জার্নি করে দিনের পর দিন পরীক্ষা দিয়ে, খেয়ে না খেয়ে ওদের কি অবস্থা হয়। অনেক ছাত্রছাত্রী ইচ্ছা থাকার পরেও টাকার অভাবে অন্য অনেক জায়গায় পরীক্ষা দিতে পারে না। আমি নিজে ভর্তি পরীক্ষার দেয়ার সময়ও এই ভোগান্তি ভুগেছি (আমার এইচএসসি পরীক্ষা খুব বেশী ভাল হয়নি; কোন সাজেশান/গাইডলাইন ছাড়া মেইন বই পড়া গ্রামের ছাত্রদের সাধারণত যেমন হয়, সেইরকম; কিছু টাকার বিনিময়ে আমি বুয়েট থেকে শুধু একটা ফর্ম পেয়েছিলাম, কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণেরও সুযোগ পাইনি। কোন ধরণের কোচিং না করে, গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে ২ সপ্তাহ পরে, বুয়েটের দেয়ালে দেখলাম যে আমি পরীক্ষা দিতে পারব না; এইচএসসির কিছু একটাতে ২/১ নম্বর কম পেয়েছি; আমার এই অপরাধটা কতো বড় তা বুঝতে পারার মতো জ্ঞান-বুদ্ধি তখন হয়নি। তবে এটা বুঝতে পেরেছিলাম, কোন পরীক্ষা না দিয়েই কিছু টাকা চলে গেল, আর বাকী টাকা দিয়ে ঢাকার বাইরে শুধু এক জায়গায় যাওয়ার খরচ হবে। হোম ডিস্ট্রিকের সবচেয়ে কাছে বলে সেই একটা জায়গা হলো সিলেট)। আমার ক্ষমতা থাকলে সব ভিসিকে ছাত্রদের সাথে সব জায়গায় পাঠিয়ে বলতাম, "একটু দেখে আসেন, ভর্তি পরীক্ষার জন্য চক্কর কাটতে ওদের কেমন লাগে?" কিন্তু এটাতো পারিনি। ভেবেছি, ভাগ্যিস আমাদের ভিসি এমন না; শাবিপ্রবি থেকে যা যা করা সম্ভব, সব করা হয়েছে। যখন আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম তখন যবিপ্রবি এই প্রস্তাবে রাজী হওয়ায় নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম। গুচ্ছ পদ্ধতি হয়ে এক মেরিট লিষ্ট না হোক, সমন্বিত পরীক্ষাতো অন্তত হচ্ছে। ভাবলাম ২টা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এক হচ্ছে, আগামী বছর অন্তত সবগুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এক হয়ে পরীক্ষা হতে পারে। পরে আস্তে আস্তে অন্যরাও আসবে; নিজেদের বোধেই হোক, আর ছাত্রছাত্রীদের দাবীর মুখেই হোক। কিন্তু কে জানতো এত সহজ সরল ভালো উদ্দ্যোগ নিয়েও কারো এলার্জি থাকতে পারে!
আগের ৪ বছরে আমরা ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনেক ধরণের লোক ফেইস করেছি - কেডার, দুর্নীতিবাজ, ইর্ষাপরায়ণ, স্বার্থপর - কিন্তু এবারের মতো ধুরন্ধর এবং মাতাল লোকজন ফেইস করি নাই। কিছু ধুরন্ধর লোক পলিটিক্স করে মিথ্যা প্রলাপ বকে যাচ্ছে, আর কিছু লোক মাতালের মতো সেই প্রলাপ মেনে মাঠে নেমে যাচ্ছে আন্দোলন করতে। ভর্তি নির্দেশিকা পড়ে, এটা দেখারও প্রয়োজন বোধ করছে না যে আসলেই এটাতে আন্দোলন করার মতো কোন ইস্যু আছে কিনা? এবারের শাবিপ্রবি এবং যবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন আলাদা, মেরিট লিষ্ট আলাদা; শুধু ৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী, যারা দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদের বাস ভাড়া বাবদ কিছু টাকা, আর যাতায়াত বাবদ কিছু সময় বাচা ছাড়া আর কোন বিশেষ পরিবর্তন হচ্ছে না। এই সুবিধাটা বন্ধ করে দেয়ার জন্য হাতে গোনা কয়েকটা নেতা উঠেপড়ে লেগেছে। আর পাশাপাশি "সচেতন সিলেটবাসী" নাম ব্যবহার করে অহেতুক সিলেটবাসীর নামে দুর্নাম করে যাচ্ছে। প্রথম থেকে তাদের কথা-বার্তা আমার কাছে আদর্শ মাতলামী ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছিল না, তাদের দুর্বল যুক্তি নিয়ে অনেক হাসাহাসিও করেছি। কিন্তু এখনতো দেশের সবার মতো আমিও দেখলাম যে ভর্তি পরীক্ষা এদের কোন ইস্যু না। ৬০-৭০ হাজার ছাত্রছাত্রীকে জিম্মি করে, এটা কিছু নেতার ভোটের রাজনীতি। এক রাজনীতি দিয়ে তারা জাফর ইকবাল স্যারকে অপদস্থ করে হিরো হতে চাচ্ছে, আর পাশাপাশি তারা সিলেট নিয়ে তাদের মিথ্যা দরদ প্রমাণ করতে চাচ্ছে।
আমি জীবনের ৯টা বছর শাবিপ্রবি এবং সিলেটকে দিয়েছি। সিলেটবাসীর ব্যাপারে এতটুকু আস্থা আছে যে, তারা শুধু একবার চোখ খুলে তাকালেই সত্যটা দেখে ফেলতে পারবেন। তারা দেখতে পাবেন, গত কয়েক দশকে এই নেতারা সবাই মিলে সিলেটের জন্য কি করেছে, আর দেশব্যাপি-দুনিয়াব্যাপি সিলেটের নাম উজ্জল করার জন্য শাবিপ্রবি কতটুকু করেছে (আমি নিজে শাবিপ্রবির সাথে সিলেটের নাম নিয়ে পোল্যান্ডে, রাশিয়ায় গিয়েছি; শাবিপ্রবি ও সিলেটের নাম বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছি)। একটু খেয়াল করলেই দেখতে পারবেন যে ওই নেতা নামের লোকগুলো শুধু মিথ্যার জোর নিয়ে প্রিয় সিলেটকে কিছুদিন পর পর অস্থির করা, আর সিলেটের ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখায় ডিষ্টার্ব করা ছাড়া তেমন কিছু করেন না। আমি জানি সিলেটের অনেক মানুষ সরল মনে অনেক কথা বিশ্বাস করে ফেলেন, কিন্তু মিথ্যা ধরতে পারলে কখনো ক্ষমা করেন না; এদেরকেও ক্ষমা করবেন না। আমি এখনো বিশ্বাস করি শাবিপ্রবির ক্ষতি করা, সিলেটের ক্ষতি করা মানুষগুলোকে সত্যিকারের সিলেটবাসীরা ছুড়ে ফেলবেন।
এই সমন্বিত পরীক্ষার আয়োজনটাতে ক্ষতি হলে শুধু সিলেটের হোটেল মালিক আর রিক্সাওয়ালাদের হতে পারে; যশোর থেকে আরো কিছু ছাত্রছাত্রী আসলে তাদের হয়তো আরেকটু বেশী লাভ হতো। রিক্সাওয়ালারা আন্দোলন করলে ঠিক ছিল, কিন্তু আন্দোলন করছে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কমিশনার, উকিল এমন কিছু লোক। তাছাড়া, এবারের পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন দেখলে দেখা যায় যে, শাবিপ্রবির মাত্র ১৩% পরিক্ষার্থী যশোরে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে, আর যবিপ্রবির ২৮% পরিক্ষার্থী সিলেটে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। তাই এখন সুবিধা আসলে নিচ্ছে সিলেটের ছাত্রছাত্রীরা; যে আপত্তি সিলেটের কিছু নেতা করছে, সেটা আসলে করতে পারতো যশোরের নেতারা। কিন্তু আসল ব্যাপারতো আর ভর্তি পরীক্ষা না; ওদের কোন সত্যিকারের ইস্যুও লাগে না, কিছু একটা নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করতে পারলেই ওরা স্বার্থক মনে করে; এইসব করার জন্য হয়ত টাকা পয়সাও পায়। স্যারের কথাটাই আবার মনে পড়ছে, "ভাল কাজ করবা, আর কিছু কথা শুনবা না, কিছু বাধা পাবা না, তা কি হয়?" ডিজিটাল পদ্ধতি নিয়ে যখন আমরা প্রথমবার একা একা কাজ শুরু করেছিলাম, তখনও অনেক ঘ্যানঘ্যান হয়েছিল - এখন সবাই এইটা ফলো করে, বলতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে। এই সমন্বিত পদ্ধতি নিয়েও আশা করা যায় এমনটাই হবে। কয়েক বছর পর এই নেতারাই শাবিপ্রবির অডিটরিয়ামে গিয়ে গলা ফাটিয়ে বক্তব্য দিবে; বলবে, "শাবিপ্রবি যে উদ্দ্যোগ যবিপ্রবিকে সাথে নিয়ে নিয়েছিল, সেটা ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে মাইলফলক। এই উদ্দ্যোগেই পরবর্তীতে ছাত্রছাত্রীদের দাবীর মুখে সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে সমন্বিত পদ্ধতি চালু করে। এই উদ্দ্যোগই হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর সারাদেশ ঘুরে ঘুরে, খেয়ে না খেয়ে পরীক্ষা দেয়ার সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান করে।"
স্যারের বাসায় হওয়া প্রথম দিনের আড্ডার পরে [Photo Credit: Rasel, BBA 2002 Session, SUST]
প্রধানমন্ত্রী মোবাইল পদ্ধতির প্রথম রেজিষ্ট্রেশটি করে উদ্ভোধন করছেন [Photo Credit: PID]
১ম mBillionth সাউথ এশিয়া এওয়ার্ডে শাবিপ্রবির হয়ে আমরা পুরস্কার গ্রহন করছি [Photo Credit: mBillionth award south asia]
সুমন_সাস্ট
মন্তব্য
খুব ভালো লাগলো আপনার এই লেখাটি পড়ে।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা মনে পড়ে গেলো - শিক্ষা বোর্ড কম্পিউটর সেন্টারে চাকরী করার সময়ে এই কাজ করার অভিজ্ঞতা আমারও হয়েছে। ওখানে এটার নাম ছিল সলভ। শুধু সলভ করার জন্য প্রতিটি বোর্ডের কম্পিউটর সেন্টারে ৫/৬ জন "অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার" থাকে! এর পরের আরেকটা ধাপ থাকে যেটা সলভ এও ঠিক না হওয়া সমস্যাগুলোর সমাধান করে (আপনার উদাহরণটার কাছাকাছি এবং দূরের ইস্যু সঙ্ক্রান্ত সমস্যা থাকে)। আর সবাই এস এস সি বা এইচ এস সি পরীক্ষার্থী বলে এদের "গোল্লা পূরণে" সমস্যাও বেশী থাকে।
এক্কেবারে খাঁটি কথা। বিশেষ করে ইনকাম কমে যাওয়ার চিন্তাতেই বেশীরভাগ লোকজন সমন্বিত পরীক্ষার বিরোধিতা করে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তো ইউনিট অনুযায়ী পরীক্ষা নেয়া হঠাৎ বাতিল করে ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কারণ ঐ একটাই - ইনকাম বাড়ানো। পরে জনগণের রোষের মুখে পড়ে সিদ্ধান্ত বাতিল করে।
মোদ্দা কথা ওটাই :
দুনিয়াটা কার দাস?
দুনিয়া টাকার দাস।
লেখা চমৎকার হয়েছে।
____________________________
লেখকের নাম ছবির মাঝখানে না দিয়ে লেখার একেবারে শেষে দিলে ভালো হয়। আর ক্যাটাগরীর সংখ্যা অনেক বেশী হয়ে গেছে। এতগুলো না দিলেও বোধহয় চলতো।
____________________________
সিলেটে শুধু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ঠিক কী ধরনের অর্থনৈতিক সক্রিয়তা দেখা যায়? এ বিষয়ে কি কেউ সবিস্তারে আলোকপাত করতে পারেন?
পরীক্ষা নেবার সময় শাবিপ্রবি নিশ্চয়ই শহর জুড়ে স্কুল কলেজের ক্লাসরুম ব্যবহার করে। সেজন্য হয়তো তাদের টাকা দিতে হয়। এই ভাড়াটা কমে যাবার কথা যদি শাবিপ্রবির পরীক্ষা যশোরে বসেই দেয়া যায়।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
৪০ থেকে ৫০ হাজার ছাত্র শাবিপ্রবিতে ভর্তি পরীক্ষা দেন। এদের কত শতাংশ সিলেটের বাইরে থেকে আসেন (ধরে নিলাম x%)? তাদের সবাই নিশ্চয়ই হোটেলে থাকার সুযোগ পান না। সেক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের জন্য তারা কোথায় থাকেন?
তারা সবাই একা আসে না, তাদের অভিভাবকরাও আসেন, বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে। যদি যদি আসা যাওয়া এবং থাকা বাবদ জনপ্রতি ২ হাজার টাকাও খরচ হয়, তাহলেও তো দেখতে পাচ্ছি ১০ কোটি টাকার x% খরচ হচ্ছে শুধু ভর্তিচ্ছু বহিরাগতদের কারণে।
লেখক বলছেন, ১৩% পরীক্ষার্থী যশোরে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন। অর্থাৎ পরিবহন, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও লজিং ব্যবসা খাতে এক কোটি তিরিশ লক্ষ টাকা (অভিভাবকদের আসা যাওয়া থাকা খাওয়া এই হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়) এক ধাক্কায় লস হচ্ছে। সম্ভবত এটাও এই আন্দোলনের পেছনে একটা মৃদু ইনসেনটিভ।
মূল কাহিনী এটাই!
ভারতে খুব সফলভাবেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে আই,আইটির ভর্তি পরীক্ষা হয়।
বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা বহুদিন ধরেই গুচ্ছভিত্তিক যদিও প্রশ্নের ধরন খুব বেশি মুখস্থনির্ভর- একটা পর্যায়ের পর। অ্যাপ্টিচিউড টেস্ট ব্যতীত অসম্পূর্ণ একটি পরীক্ষা হলেও গুচ্ছ পদ্ধতির কারণে কিন্তু হয়রানি অনেক কমে যায়।
আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বাইরে কোন জীবন রাখে নি শিক্ষা-বেনিয়ারা। স্কুলের ছাত্র দম ফেলবার অবকাশ পায় না। কলেজ পেরিয়ে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা পরীক্ষা, আলাদা কোচিং, আলাদা টাকা। এই ফাটকাবাজি থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে যুদ্ধে নামতে হবে, মননযুদ্ধ!
লেখককে অশেষ ধন্যবাদ!
ড জাফর ইকবালের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে, সিলেটের একজন ছাত্র সিলেটে থেকে পরীক্ষা দেবে, যশোর ও শাবিতে । আর যশোরের একজন ছাত্র তার আশপাশের সব বিশ্ববিদ্যালয় যেমন, খুলনা, রাজশাহী তে দিতে পারবে সেখানে সহজেই গিয়ে , আর খুলনা , রাজশাহী এর সবাই সহজেই সিলেটে না এসে, যশোরে গিয়েই শাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে ।
আর, ভুদাই সিলেটি, খুলনা,রাজশাহীতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হলে যেতে হবে সুদূর সেই অঞ্চলে।
সাস্টের রানিং ছাত্ররা ড জাফর ইকবালের পক্ষে দাঁড়াতে পারে ,কিন্তু সচেতন সিলেটবাসী তাদের ভর্তি ইচ্ছুক সন্তানদের স্বার্থ দেখবে এটাই স্বাভাবিক ।
গুচ্ছ পদ্ধতি খুব ভাল হবে , যদি এতে ব্যালেন্স হয় এবং কমপক্ষে ৫টি বা তার চেয়ে বেশি বিশ্ববিদ্যাল্যকে যুক্ত করা হয় । এমনকি আমি, সমগ্র বাংলাদেশের সব ভার্সিটির একত্রে পরীক্ষার পক্ষে , কিন্তু শাবি ও যোবি এর আন-ব্যালেন্স এই গুচ্ছ পরীক্ষার চরম বিরোধী।
যা বুঝলাম, সিলেটের ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা যে মাত্রায় দূর হচ্ছে, যশোরের ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা তার চেয়ে বেশি মাত্রায় দূর হচ্ছে, এখানেই আপনার আপত্তি।
যদি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিল হয়, তাহলে কি সিলেটের ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা তিল পরিমাণেও বাড়ে? ঐ পরীক্ষা বাতিল হলে কি তারা খুলনা রাজশাহী যাওয়ার হাঙ্গামা থেকে মুক্তি পায়?
আপনারা আন্দোলন যদি করতে চান, তো কেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে করছেন না? আর এই প্রক্রিয়া তো শুরু করতে হবে কোথাও থেকে। যদি শাবিপ্রবি আর যবিপ্রবি শুরু করে, তাহলে ভবিষ্যতে খুলনা আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও হয়তো যোগ দেবে। মায়ের পেট থেকে পড়েই তো আপনি দৌড়াতে শেখেন নাই, হামাগুড়ি দিয়েছেন, টলমল করে হেঁটেছেন, তারপরে এখন দৌড়াচ্ছেন। এরকম একটা ব্যবস্থা বাংলাদেশে দাঁড় করানো তো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
"এবারের পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন দেখলে দেখা যায় যে, শাবিপ্রবির মাত্র ১৩% পরিক্ষার্থী যশোরে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে, আর যবিপ্রবির ২৮% পরিক্ষার্থী সিলেটে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে।" - এই কথাটি কি আপনি দেখেছেন?
সুমন_সাস্ট
একটু কৌতুহল বোধ করছি, সংখ্যার একটা সূক্ষ মারপ্যাচও মনে হয় দেখা যাচ্ছে, লিখার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশে শাবির ১৩% মানে কতজন, আর যবির ২৮% মানে কতজন, বলবেন কি? যতটুকু জানি, শাবির পরিক্ষার্থী প্রায় ৪৯,০০০ আর নবীন যবির পরীক্ষার্থী প্রায় ১১০০ আফসোস
আমার কথায় কোন মারপ্যাচ নাই, সচেতন সিলেটিদের কথার মারপ্যাচের সমস্যা ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি আমি। যবিপ্রবির ১১০০০ এর ২৮% সিলেট থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে; আর শাবিপ্রবির ৪৯০০০ এর ১৩% যশোর থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। যবিপ্রবির বড় অংশ সিলেট থেকে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থী; ওদের ভর্তিতে সিলেটের পরীক্ষার্থীর প্রভাব যতটা থাকবে শাবিপ্রবির ভর্তিতে যশোরের ছাত্রছাত্রীদের প্রভাব সেই অনুপাতে অনেক কম। The only number that matter here is the percentage. Man, I was the architect of the admission system design, I know what I am talking about; I hoped you at least would understand this from my writing.
সুমন_সাস্ট
মুস্তাফিজ, নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ প্রবাদ টা শুনেছিলেন নিশ্চয়ই? আমার ক্ষতি হয় হোক কিন্তু আর এক জনের সুবিধা হতে দেয়া যাবে না।
ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্রদের সুবিধা দেখা মানে হল, গুচ্ছ পরীক্ষা হলে সিলেটি ছাত্র দের সুবিধা হয়, তবে যশোরের ছাত্রদের সুবিধা বেশী হয়, তাই এই প্রক্রিয়া মানি না, তাই না।
জাফর স্যার কি না করেছিলেন কমপক্ষে ৫ টি বা তার চেয়ে বেশী বিশ্ববিদ্যালয় কে যুক্ত করতে। নাকি উনি সেই চেষ্টাই করেছিলেন? আপনারা সচেতন সিলেটবাসি বাকি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর উপর না খেপে জাফর স্যারের উপর খেপলেন কেন? ঝেড়ে কাশেন একটু।
প্রশ্নটা করাই ভুল হইসে বস। যে দেশের মানুষ বিরোধীদলের মানুষ পোড়ানোর দায় সরকারের কাঁধে চাপায় তার জন্য এইটা কি খুব কঠিন নাকি?
সিলেটের একজন ছাত্র সিলেটে থেকে পরীক্ষা দেবে, যশোর ও শাবিতে । আর যশোরের একজন ছাত্র তার
যে ছেলেটা শাবি তে পরীক্ষা দিতে চায় সে যেখানকার-ই হোক গুচ্ছ পদ্ধতি না হলে সিলেটে এসেই পরীক্ষা দিবে। আপনারা "সচেতন সিলেটবাসী"(!) রা বরং অন্য কোন এলাকার পরীক্ষার্থীরা যেন সিলেটে শাবি তে পরীক্ষা না দিতে পারে সেই আন্দোলন করেন!!! আরো ভাল স্বার্থ(!) রক্ষা হবে!!!
স্বার্থ রক্ষার এইসব উদ্ভট যুক্তি কই পান??
আপনে কি সিলেটে চান্স পাইছিলেন? কিসের বেদনা থেকে আপনেরা এগুলি করেন আমরা বুঝি।
..................................................................
#Banshibir.
ভাই আপনার যুক্তি মানলে সিলটিদের স্বার্থপর ছাড়া আর কিছু বলা চলে না।
অসাধারণ একটা কাজের অসাধারণ একটা ডকুমেন্টেশন...
০২
এই কাজটা যদি কোনো বিদেশী কোম্পানি কোটি কোটি টাকা নিয়ে করত তবে অনেকেই এরে তেলাইত
কিন্তু বিনি মাগনায় দেশের লোকজন করেছে; সেখানেই ঝামেলা
আমারে না জানিয়ে কী যে কী নিয়ে গেলো.... এই চিন্তার প্রথম কাজটাই হলো আগে আটকাও পরে দেখি কোন জায়গায় ভাগ বসানো যায়....
০৩
একদিন ভর্তির ফমর তোলার জন্য সিলেট থেকে ঢাকা আসা
তারপরদিন ফরম তোলা। ভুলভালসহ ফিলাপ করা
আরেকদিন লাইনে দাঁড়িয়ে জমা দেয়া/ব্যাংকে টাকা দেয়া
তারপর দিন যাওয়া;
তারপর ভর্তিপরীক্ষার জন্য আরেকদিন আসা
পরদিন পরীক্ষা দেয়া
পরদিন যাওয়া
ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেবার জন্য ১৯৯১ সালে এই পর্যন্ত হিসাব করতে গিয়ে বাজেট দাঁড়িয়েছিল দুই কিস্তিতে প্রায় বিশ হাজার টাকা;
যার কোনো সংস্থান ছিল না ৭ সন্তানের পরিবার চালানো আমার বাপের...
যার ফলাফলে আমাকে আমাকে সিলেট এমসি কলেজেই ভর্তি হতে হয়েছে....
০৪
যারা আন্দোলন করেছে তাদের বেশিরভাগকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি
তাদের বেশিরভাগই কলেজ পার হবার চিন্তা করেনি জীবনেও। ভার্সিটির সংবাদ তারা শুধু টেন্ডার দখলের কারণে নিতো
অথবা বাকি একদল আছে; যাদেরকে কোনোদিনও বাজেট করে খরচ করতে হয়নি....
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
এই ব্যাপারে নতুন গুজব চালু হয়েছে যে গুচ্ছ পরীক্ষা বাতিল হলে নাকি সফটওয়্যার এর রয়ালিটি বাবদ জাফর স্যারের "বিপুল" অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। আমি শাবিপ্রবির কেউ নই, তাই জিজ্ঞেস করার মত কাউকে পাচ্ছিনা। কমন সেন্স বলে এটা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তৈরী অথবা রয়ালিটি পেলেও সেটা পাবে শাবিপ্রবির সিএসই ডিপার্টমেন্ট। কেউ কি কনফার্ম করবেন ব্যাপারটা?
জাফর ইকবাল নিলেই বা সমস্যা কী?
আমরা কম্পুতে যত সফটওয়ার ব্যবহার করি তার জন্য তো কেউ না কেউ টাকা নেয়; এবং তার প্রায় সবটাই নেয় ভিনদেশের মানুষ
তালে দেশের একজন যদি টাকা পায়ও তাতে সমস্যাট কোথায়?
০২
দেশী জিনিস খালি মাগনা হতে হবে এইটা তো কোনো কথা না
সফটওয়্যার বানানো এবং মেইন্টেন্যান্স বাবদ সিআরটিসির সফটওয়্যার হাউজ মাঝেমধ্যে কাজ অনুপাতে নগন্য পরিমাণ কিছু টাকা পায়। ডেভেলাপমেন্ট টিমের প্রধান হিসাবে উনার প্রাপ্য কিছু টাকা থাকে, সহজেই নিতে পারেন। কিন্তু উনি বলেন তোমরা আসল টেকনিক্যাল কাজগুলো করেছ, আমি কেন নিব; এসব কথাবার্তা বলে ওগুলো বিভিন্ন খাতে দান করে দেন। উদাহরণস্বরুপ সাস্টের প্রোগ্রামিং টিমের দেশে-বিদেশে কন্টেষ্ট করার জন্য খরচের একটা বড় অংশ এসেছে স্যারের প্রাপ্য কিন্তু না নেয়া ঐসব টাকা থেকে; আমি নিজে কোচ হিসাবে অনেক সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য তুলেছি।
তবে এসব ভিন্ন ব্যপার, ভর্তি পরীক্ষা বা অন্যান্য ব্যাপার নিয়ে অনেকে যখন সাষ্টের ডেভেলাপমেন্ট সেকশানকে দিয়ে তাদের কাজ করিয়ে নিয়েছে তখন। সমন্বিত পরীক্ষার সাথে এগুলার কোন সম্পর্ক নাই। এখানে পরীক্ষা এক হবে, কিন্তু প্রসেসিং ইন্ডিপেন্ডেন্ট। যার যার কাজ সে নিজ দায়িত্বে করবে।
যাই হোক, এগুলো আপনাদেরকে বললাম, ওদেরকে বলে লাভ নাই। ওদের এসব বোঝার ক্ষমতা হয়নি। বুঝলেও ওদের মুখ দিয়ে যা বের হওয়ার হবেই।
সুমন_সাস্ট
আপনাদের পুরো টিম কে স্যালুট।
লিখে জানানোর জন্য ধন্যবাদ
ছাত্রদের জন্য় আপনাদের শ্রম অসাধারণ । আমার জানামতে আপনাদের ক্লাস নিতে হয় ৩৪ ঘন্টা প্রতি সপ্তাহে । আর ডি ইউ তে অনেক বিভাগেই ২/৩ ঘন্টা। তারপরও আপনারা ও এম আর পূরণে ভুল ঠিক করেন কষ্ট করে । আর ওরা ১৭ হাজার ছাত্রের পরিখ্হা বাতিল করে দেয় confusing form ডিসাইন করা সত্বেও।
তবে একটা বিষয়, জাবির পরীক্ষায় cloud এ host করলে scalability পাওয়া যাবার ব্যাপারটা তো ক্লাউড এর ইনহেরেন্ট শক্তি। এখানে যারা হোস্ট করছে তাদের ক্রেডিট কোথায়? যতোদূর মনে পরে প্রিয়.কম এ জাফর স্যার ও এ ব্যাপার টা highlight করেছিলেন এবং অবাক হয়েছিলাম।
ক্লাউড সার্ভিস রিলেটেড আপনার প্রশ্নের উত্তর মনে হয় এই লিন্কটাতে ভালভাবে দেয়া আছে। একটু কষ্ট করে দেখে নেবেন প্লিজ।
http://subeen.com/content/my-lightning-talk-cloud-camp-december-2012
সুমন_সাস্ট
অসাধারণ , আপনাদের পুরো টিমকে নতশিরে শ্রদ্ধা জানাই। ছাগলে মুখ না দিলে SUST আরো অনেক অনেক দূর যাবে।
ঠিকাছে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমার মন্তব্যের আগের ১০ জনের মধ্যেই একজন মুস্তাফিজ পেয়ে গেলেন সুতরাং বুঝতেই পারছেন পথ কতটা বন্ধুর।
খুবই ধন্যবাদ এত সহজ সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য ।আপনাদের সবার প্রতি শুভ কামনা রইল ।
আমরা আছি ।
শাকিল অরিত
অসাধারন একটি কর্মোদ্যোগের সবিস্তার বর্ণনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। একটি বিষয় দয়া করে ক্লিয়ার করবেন? যবি এবং শাবি এর জন্য ভর্তি পরীক্ষা কি একই দিনে একই সময়ে হয়? অর্থাৎ সিলেটে থেকে একজন ছাত্রের কি যবি এবং শাবি দুই জায়গার জন্যই পরীক্ষা দেয়া সম্ভব?
উপরে জনৈক মুস্তাফিজের মন্তব্য থেকে বোঝা গেল এই পদ্ধতি গ্রহনের মাধ্যমে সিলেটের লোকদের ভোদাই বানিয়ে দেয়া হচ্ছে, তার কাছে অনুরোধ, কি আর করবেন, দয়া করে একটা গান লিখুন-
ভোদাই কে বানাইল রে
মুস্তাফিজ মিয়ারে ভোদাই
কে বানাইল রে!!!!!!!!!!!!
এবার যবিপ্রবির ১১৪৩৮ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে ৩২০৩ জন সিলেটে বসে পরীক্ষা দিবে। এদের মধ্যে বেশীরভাগ আবার একই পরীক্ষা দিয়ে শাবিপ্রবির জন্যও বিবেচিত হবে। যদি কোন কারণে সমন্বিত নেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে এই ৩ হাজার জনের সিলেটের পরীক্ষা দিয়ে পরে ছুটতে হবে যশোরে। আর যারা যশোর থেকে শাবিতে দিতে চাচ্ছে তাদের ছুটতে হবে সিলেটে। ছাত্রছাত্রীদের এই পরিস্থিতির মুখে ফেলার জন্যই চিহ্নিত কিছু লোক সচেতন সিলেটবাসী নাম দিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আশা করছি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি।
সুমন_সাস্ট
আপনাদের পুরা টিম কে
স্যার , আমিও জানি আপনিও জানেন যে ওইসব তথাকথিত সচেতন সিলেটবাসীদের এলার্জি হলো "জাফর ইকবাল স্যার" কে নিয়ে , তা না হলে কি আর ক্যাম্পাসের কোন শিক্ষক তাদের সাথে সংহতি জানাতে যায় , আশা করবো ভিসি স্যার ওই লোককে শো কজ করে সাসপেন্ড করবেন।
আর সিলেটবাসীদের অনুরোধ করবো একবার এই পোষ্ট টা পড়ার জন্য , আপনাদের চোখে যে ঠুলি পড়ে আছে যে তা আপনাদের আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে সাহায্য করবে এই পোষ্ট ।
পোষ্টের জন্য আপনাকে
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ সুমন ভাই।
আপনাদের ডিপার্টমেন্টে যতবারই গেছি, এই স্পিরিটটা অনুভব করেছি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সুবোধ অবোধের মন্তব্য ধার করে বলি, আপনাদের পুরো টিমকে
আমি শাবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। আমার এখনো মনে পড়ে , ভিসি স্যার আমাদের সেমিনারে একবার বলেছিলেন, সেসময় যদি সেই ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি কাজ না করত তাহলে আমাকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে হত ! সমালোচনার কি বিরাট ঝুকি নিয়েই না এই বিশাল কর্মযজ্ঞ হয়েছিল, তার মূল্যায়ন ততটা হয় নি। এমনকি এখনো কত খোড়া যুক্তি নিয়ে তথাকথিত শিক্ষিতরা এই সমন্বিত পরীক্ষার বিরুদ্ধে ঢাল তলোয়ার নিয়ে দাড়াচ্ছে । একজন সিলেটি হিসেবে আমি জানি তাদের মূল সমস্যা জাফর স্যার ,আর কিচ্ছু না । আর সিলেটে নেতাদের নির্মম মেরুদন্ডহীনতা দেখে শুধুই করুনা হয় ।
মাসুদ সজীব
লাখ কথার এক কথা
সাহসী আর নতুন দিনের সূচনায় জড়িত সবাইকে শ্রদ্ধা আর শুভেচ্ছা। আপনার ব্যাখামূলক লেখার জন্যে ধন্যবাদ।
মাসুদ সজীব
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার উপকার না হোক, আরেকজনের উপকার যদি হয় সেটাতে সমস্যা কি?
সিলেটে বসে যদি কেউ যশোরের পরীক্ষা নাও দেয়, কিন্তু যশোর বসে যদি অন্তত ১০০০ ছাত্র সিলেটের পরীক্ষা দিয়ে ফেলতে পারে, এতে তো মানুষেরই উপকার হচ্ছে।
আমার ধারণা সিলেটের সাধারণ মানুষকে হয়ত এমনটা বলে ভুল বোঝানো হচ্ছে বা প্ররোচনা দেয়া হচ্ছে:
"দেখ, যদি সিলেটে এসে পরীক্ষা দিতে হয় তাহলে এখন যারা যশোরে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে হয়ত তাদের সবাই এতদূর আসত না। কিন্তু, এখন ওরা যশোরে বসে পরীক্ষা দিতে পারবে সহজেই, আগ্রহীর সংখ্যাও বেড়ে যাবে। যশোর, খুলনা, বরিশাল অঞলের অনেক বেশি পরীক্ষার্থির সাথে এখন সিলেট বিভাগের ছাত্রদের পরীক্ষা দিতে হবে। "
আমার বিশ্বাস, সিলেটের ছাত্ররা, তাদের অভিভাবকরা ভীতু নন, তারা তাদের যোগ্যতার পরীক্ষা দিতে মোটেও কুন্ঠিত হবেন না।
লেখককে ধন্যবাদ সময় নিয়ে লিখে আমাদের সবকিছু জানানোর জন্য।
শুভেচ্ছা
সূত্র:বাংলানিউজ
ভাষাসৈনিক জিনিসটাই দেখি অনেক গোলমালের গোড়ায় থাকে।
সম্পূরক প্রশ্ন:
কিছু কিছু ভাষাসৈনিক সাহেবানরা '৭১ এ কেন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেন নাই?
শুভেচ্ছা
বাঙালি দের নিয়ে একটা কৌতুক চালু আছে। সাতটা দোজখ এর একটাতে নাকি কোনো পাহারাদার থাকবে না, কারণ ওই দোজখ এ পাহারার দরকার নাই, বাঙালি ভর্তি ওই দোজখে একজন দেয়াল টপকে বাইরে আসতে চাইলে আরেকজন তাকে ধরে নামিয়ে দিবে। তাই সেই দোজখ এ কোনো পাহারাদার লাগবে না। কথা হলো তথাকথিত 'সচেতন সিলেটবাসীদের' জন্য মনে হয় এখন আলাদা করে একটা দোজখ করতে হবে যেখানে কোনো দেয়ালেরই দরকার নাই। তারা নিজেরাই দেয়াল হয়ে ভিতরের কোনো লোককে বাইরে যেতে দিবে না এত কথা বলার কারণ , কেউ যদি একটা ভাল কাজ করতে চায় তাকে বাধা দেয়ার জন্য সিলেটে মনে হয় লোকের অভাব হবে না।
দারুন একটি লেখার জন্য লেখক কে অজস্র ধন্যবাদ।
শিশির অশ্রু
আপনাকে আমি আরো দু'টি পোস্ট লেখার অনুরোধ করবো। একটি হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকদের "ইনকাম" বিষয়ে আলোকপাত করে, আরেকটি আপনাদের ঐ লিস্টটি বিষয়ে। দুটি ব্যাপারই দিনের আলোর সামনে এনে কথা বলা জরুরি। যদি পেশাগত কোনো বাধা না থাকে, তাহলে এ নিয়ে লিখুন প্লিজ।
খুব গুরুত্বপূর্ণ ২ টা ব্যাপার বলেছেন। লিখে ফেলতে পারলে ভালো হতো কিন্তু ৩ টা সমস্যা:
১। আমি সহজে কিছু একটা লিখে ফেলতে পারি না ( যদিও আমার গুরু বিখ্যাত রাইটার; আমার বাবাও রাইটার ছিলেন (অখ্যাত) )। এই একটা লেখা লিখার জন্য আমাকে বহুদিন চিন্তাভাবনা করতে হয়েছে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কাজকর্মের বারোটা বাজিয়ে এটা গুছাতে হয়েছে; তাও অন্য অনেকের হেল্প নিয়ে লেখার অনেক দিক ঠিকঠাক করতে হয়েছে। এই লেখাটার মাঝে তাও একটা গল্প গল্প ভাব এম্নিতেই আছে। ওইগুলাতো অবজারভেশন আর এনালাইসিস এর সামারি, পাঠযোগ্য করে লিখা অনেক কঠিন।
২। গুচ্ছ পদ্ধতির কাজটা ৩ বছর আগে প্ল্যান করেছিলাম। সব ভার্সিটি নিয়ে গুচ্ছ গুচ্ছ ৫-৬ টা পরীক্ষা হবে, কি মজা হবে - এমন একটা জোশ নিয়ে তখন অনেক কিছুই ভেবেছিলাম। কিন্তু ব্যাপারটা শুরুতেই মাঠে মারা যাওয়ায় এটা নিয়ে পরে আর আলাদাভাবে মাথা না ঘামানোতে বেশীরভাগ পয়েন্টই মনে নাই এখন। তবে পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৪০০+ কলেজের ভর্তি ম্যানেজ করতে গিয়ে যেসব টেকনিক্যাল, নন-টেকনিক্যাল ইস্যু সলভ করতে হয়েছিল, এর সাথে আর কিছু ব্যাপার যোগ করলেই মনে হয় হয়ে যায়। চেষ্টা করলে বাকি ব্যাপারগুলোরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট চিন্তা করে বের করা যেতে পারে।
৩। আমিতো সাষ্টের ব্যাপারগুলো স্পেসিফিক জানি, কিন্তু যাদেরকে নিয়ে মূল সমস্যা তাদের ব্যপারগুলো রুপকথা হিসাবে কিছু শুনেছি। সাষ্টে গত ২ বছরে ৪০-৫০ হাজার পরিক্ষার্থী হচ্ছে, তার আগে এখানে ছাত্র-ছাত্রী আরো অনেক কম থাকতো। তাই এখানকার ইনকামের হিসাবে জটিলতা কম, বেশ সহজে মিলিয়ে ফেলা যাবে। কিন্তু যাদের লক্ষ হিসাবে পরিক্ষার্থী অনেক বছর ধরে, তাদের স্পেসিফিক ডাটা ছাড়াতো এই চিত্র ফুটে উঠবে না।
এরকম বিচ্ছিন্ন ডাটা নিয়ে আমার মত আনাড়ী লেখক চেষ্টা করলে মনে হয় খুব একটা ভালো কিছু হবে না। আপনাদের মতো রাইটাররা লিখতে চাইলে আমি হয়ত সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারি।
সুমন_সাস্ট
সময় নিয়েই লিখুন।
ইনকামের বিষয়টা জটিল এবং সেনসিটিভ; পক্ষে-বিপক্ষে অনেক ইস্যু আছে। যথেষ্ট ডিটেইলস ডাটা না নিয়ে লিখার চেষ্টা করার মনে হয় কোন মানে নাই। ভবিষ্যতে কখনো ডাটা কালেক্ট করার সুযোগ পেলে নাহয় দেখা যাবে।
তবে, গুচ্ছ পদ্ধতির অংশটা নিয়ে লিখার চেষ্টা করবো।
--
মাগো তুমি রেখো জেনে, এই আমরাই দেব এনে,
আঁধারের বাধা ভেঙে রাঙা ভোর, রোদ্দুর মাখা দিন।
http://www.youtube.com/watch?v=8OB_uPY4i4M
স্বাগতম, সুমন ভাই অভিনন্দন
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ধন্যবাদ
--
মাগো তুমি রেখো জেনে, এই আমরাই দেব এনে,
আঁধারের বাধা ভেঙে রাঙা ভোর, রোদ্দুর মাখা দিন।
http://www.youtube.com/watch?v=8OB_uPY4i4M
লেখাটা আমার অসাধারণ লাগল---
লেখক কে শাবিপ্রবির প্রথম ব্যাচের একজন ছাত্র হিসেবে সাধুবাদ জানাই--
আমরা অল্প কয়জন ছাত্রছাত্রী মিলে যে যাত্রা শুরু করেছিলাম, আজকের শাবিপ্রবি-র মহাযজ্ঞভূমি, তার অর্জন আমাদের বুক গর্বে ভরে দেয়! অনেক অনেক শুভ কামনা---
জাফর স্যারের মত আমারো বিশ্বাস---ভাল কাজ করতে গেলে বাঁধা আসবেই---সেই বাঁধার পাহাড় ডিঙ্গিয়েই আমাদের ভোরের সূর্য আনতে হবে। আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে শাবিপ্রবি-র এই নতুন চৌকষ কর্মীবাহিনীর উপর।
আমি নিজে একজন সিলেটী। সিলেটে বেড়ে উঠেছি বলে এই অঞ্চলের Quirkiness এর সাথে কিছু হলেও আমি পরিচিত। আমি নিশ্চিত সাধারণ সিলেটবাসীরা যখন আসল ব্যাপারটা অনুধাবন করতে পারবেন তখন গোটা ব্যাপারটা যে কতটা হাস্যকর আর দুঃখজনক ছিল সেইটা অনুধাবন করতে পারবেন।
আশা করি এই 'অচেতন' "সচেতন সিলেট-বাসী"-র প্রোপাগান্ডা থেকে সাধারনরা বেরিয়ে আসতে পারবেন।
লেখক কে আবারো শুভেচ্ছা!!
১ম ব্যাচ নিয়ে আমার একধরণের ফ্যন্টাসি আছে; মনে হয় সবকিছু নিয়েই প্রথম ব্যাচের অনুভুতিগুলো অন্যরকম বিশেষ, যেটা আমরা কখনোই ফিল করতে পারব না। সাষ্টের যে কোন কিছু নিয়ে আপনাদের অনুভুতি প্রকাশ দেখলে আমার সবসময় খুব ভাল লাগে। এবারেরটা যেহেতু আমার লেখার কারণে, ভাল লাগাটা আরো অনেক বেশী; ধন্যবাদ আপনাকে।
আর একটা ব্যাপার আমি বিশ্বাস করি। কিছু মানুষ সবসময় বিরোধিতা করবে। কিন্তু এত গোঁড়ামীর মধ্যেও সিলেটের সাধারণ মানুষের একটা বিরাট অংশ উদারভাবে প্রশ্রয় না দিলে শাবিপ্রবি এতদুর আসতে পারতো না।
--
মাগো তুমি রেখো জেনে, এই আমরাই দেব এনে,
আঁধারের বাধা ভেঙে রাঙা ভোর, রোদ্দুর মাখা দিন।
http://www.youtube.com/watch?v=8OB_uPY4i4M
সুমন ভাই, লেখাটার জন্য স্যালুট।
- সহমত।
ক্যাটাগরির সংখ্যা বেশি হলে অসুবিধা কী অনুগ্রহ করে জানাবেন কি? অামার তো ধারণা এটি বরং পাঠকসংখ্যা বাড়াবে, কারণ বেশিসংখ্যক দিক (route) থেকে নিবন্ধটির খোঁজ মিলবে।
ফর দ্য রেকর্ড, বেদানন্ত সাহেবের ফেইসবুক নোট,
জাফর দম্পতির খোলা চিঠি ও জনৈকের প্রত্যুত্তর
30 November 2013 at 18:22
ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্বনামধন্য প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব।তাঁর স্ত্রী প্রভাবশালী পারিবারিক পশ্চাদভুমির সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারের গৌরবে ভাস্বর।তাঁদের কোন উক্তি বা চিঠি প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করা আমার মত জনৈক পর্যায়ের মফস্বলি মেঠো রাজনৈতিক কর্মীর জন্য ধৃষ্টতা বটে। তব্ওু রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কিছু না বললে আত্ম-আরোপিত সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হবে। এই ভয়ে কিছুটা দুঃসাহস করতে চেষ্টা করছি। আশা করি জাফর দম্পতি বেয়াদবি ক্ষমা করবেন।
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, আগ্রহ ও প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। অনেকগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার ফলে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগ্রহী ছাত্র ছাত্রীদের নানা জায়গায় ছুটাছুটি করতে হয় এবং এতে আর্থিক চাপ ছাড়াও নানা দুর্ভোগের সৃষ্টি হয় । এ বিষয়টি বিবেচনা করা এবং এর সমাধানের উদ্যোগ গ্রহন সময়ের দাবি । মেডিকেল কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ সমুহের সমন্বিত পদ্ধতির পরীক্ষা চালু হয়েছে এবং এতে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হয়েছে। কোন মহল থেকেই এর কোন নেতিবাচক সমালোচনা চোখে পড়েনি। সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যলয় কিংবা ন্যূনপক্ষে সকল বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যলয় সমুহের ভর্তি পরীক্ষা সমন্বিত পদ্ধতিতে হওয়া উচিত বলেই সাধারণভাবে মনে করা হয়। এতে মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ পরীক্ষা পদ্বতি চালু করে একে সমন্বিত পদ্ধতি হিসেবে একটি প্রতারণামুলক প্রচারণা চালিয়ে কোন রকম সমঝোতা স্মারক কিংবা চুক্তি ছাড়াই অনেকটা খামখেয়ালি ভাবে তা চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি ইত্যাদি সমপর্যায়ের না হওয়ায় এ পদ্ধতিতে সমগ্র পূর্বাঞ্চল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সংকোচিত হবে । এ অবস্থায় বিষয়টিকে সুবিবেচনা প্রসূত কিংবা বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত বলে অনেকেই মনে করেন না।
সিলেটের আর্থসামাজিক ইতিহাসের বৈশিষ্টত এ অঞ্চলের স্বাধীন কৃষক সমাজের প্রাধান্য, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত অতি বৃহৎ জমিদারী ও প্রজা ভিত্তিক সামন্ত সমাজের অনুপস্থিতি, রাজনৈতিকভাবে বারংবার আসামের সাথে সংযুক্তি এবং সাম্প্রতিক কালে প্রবাসীদের প্রেরিত বিপুল পরিমান রেমিটেন্সের অনুপার্জিত অর্থের চরিত্র সিলেটে একটি বিশেষ ধরনের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল সৃষ্টি করেছে । তাতে সামন্তবাদী স্থবিরতা ও বিচ্ছিন্নতাবোধের এক ধরনের প্রবনতা কাজ করে । স্বাধীনতা উত্তর সিলেটে রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতৃত্বের ক্রমাগত দুর্বলতা এবং অবসরজীবী আমলা ব্যবসায়ী ও অনভিজ্ঞ নেতৃত্বের প্রাধান্যের ফলে এই সমাজ বাস্তবতা অনুধাবন করে তা পরিবর্তনের লক্ষ্যাভিসারী সাংস্কৃতিক, সামাজিক ,রাজনৈতিক উদ্যোগের সীমাবদ্ধতা একটি দৃশ্যমান সত্য।
এ অবস্থায় প্রতিক্রিয়াশীল, মতলববাজ, ধান্ধাবাজ অপশক্তি সমূহ এখানে প্রায়শই নানা রকমের উদ্ভট পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চায়।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিচক্ষণ সিদ্ধান্ত মহল বিশেষকে তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে উৎসাহিত করে। এরা মাসাধিককাল যাবত নানা তৎপরতার মাধ্যমে মানুষের পশ্চাদপদ চিন্তায় সুড়সুড়ি প্রদান করে জ্ঞান চর্চার মুক্ত অঙ্গন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমকে বিঘিœত করার চেষ্টায় রত হয়। একই সাথে রাজনৈতিক অঙ্গনে আঞ্চলিকতা ও পশ্চাদপদতার পালে হাওয়া দিতে প্রয়াসী হয়।
এ অবস্থায় নিজেদের সামজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সিলেটের বাম-প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ তথা সকল শ্রেণি পেশার শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সামগ্রীক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি বাদ দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব ফোরামে এ পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। শিশুতোষ লেখক ও চৌকস কলামিস্ট ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী জেনারেল জিয়ার সামরিক শাসকের উপদেষ্টা ড. হক এর কন্যা ইয়াসমিন হক এর সাথে সিলেটের বাম-প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী বা নাগরিক সমাজের উত্থাপিত দাবির কোন সর্ম্পক ছিলনা বা নেই। এই দম্পতির দীর্ঘ কাল যাবত শাবিপ্রবি-তে অবস্থান করছেন এবং বহুবার তাঁদের সৃষ্ট নানা ইস্যু কে কেন্দ্র করে মৌলবাদী উগ্র সাম্প্রদায়িক পশ্চাদপদ চিন্তার নানা অপশক্তি সংগঠিত হয়ে নানা উপদ্রব সৃষ্টি করেছে এবং তাতে সিলেটে মুক্ত চিন্তা চর্চা ও বিকাশ তথা প্রগতিশীল কর্মকান্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাম-প্রগতিশীল নেতা-কর্মী এবং নাগরিক সমাজ এ সমস্ত প্রতিক্রিয়াশীল কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছেন। আর প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক মহলের সকল কার্যক্রমের উপকারভোগী হয়েছেন এই দম্পতি। প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী ও তাদের প্রতি সহানুভুতিশীল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক সমাজ রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা থেকেই সকল কার্যক্রম করে থাকেন। ভবিষ্যতেও প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে এ লড়াই অব্যাহত থাকবে।
যাই হোক, এক পর্যায়ে শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ যশোর-সিলেটের যৌথ ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন মর্মে খবর প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ড. জাফর দম্পতি পদত্যাগ করেন। কোন প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিজের মন মত না হলে কেউ পদত্যাগ করলে বিষয়টি তার ব্যক্তিগত এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। বিস্ময়ের ব্যাপার হল বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। তারা একটি খোলা চিঠি লিখলেন এবং নিজেরা ও তাঁদের দলীয় কোঠারির শিক্ষকদের মাধ্যমে ছাত্রদের কাছে তা বিলি করলেন। যে কোন শিক্ষকের মনোবেদনা ছাত্রদের আবেগ তাড়িত করে এবং তারা তাদের মত করে প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে- এটা কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। শিশুতোষ লেখক হিসেবে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটি বাড়তি সুবিধা আছে। কিন্তু কোন বিবেকবান শিক্ষক ব্যক্তিগত স্বার্থে কোমলমতি ছাত্রদের এভাবে ব্যবহার করা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য কিংবা শোভন বিবেচিত হতে পারে না।
সিনেমার জগতে প্রচারে আলোতে থাকার জন্য নায়ক নায়িকারা অনেক সময় নিজেরাই কেচ্ছা-কাহিনী সৃষ্টি করে সিনে ম্যাগাজিন বা এ ধরনের পত্র-পত্রিকায় কভার স্টোরি হন বলে অনেকে বলেন। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর একাধিক শিশুতোষ কাহিনী সিনেমা হয়েছে এবং তা আমাদের আনন্দ দিয়েছে। সিনেমা জগতের সংস্কৃতি তাঁকে এভাবে প্রভাবিত করেছে- এ খবরটি আমাদের জানা ছিলনা। নাটুকেপনা প্রচার প্রপাগান্ডার জন্য উৎকৃষ্ট পদ্ধতি কিন্তু তা কোন দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল বয়ে আনে না।
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতি তাঁদের খোলা চিঠিতে জেমসবন্ড এর কায়দায় একটি মৌলিক আবিস্কার করেছেন। সেটি হচ্ছে সিলেটের বাম-প্রগতিশীল ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকরা ভর্তি বিরোধী আন্দোলন শুরু করে তা অন্য একটি মহলের হাতে তুলে দিয়েছেন। বিষয়টি অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। নিছক আবেগের আতিশয্যে এধরনের একটি মিথ্যাচার সংঘটিত হয়েছে এটা যারা মনে করেন শিশুতোষ লেখকের প্রতি তাদের আবেগের বিষয়টি হয়তো উপলব্ধি করা যায় তবে তাদের সাথে একমত হতে খুব বেশি লোক রাজি হবেন বলে মনে হয় না। উসকানিমূলক, পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত এই খোলা চিঠি এক শ্রেণির তরুন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রভাবিত করে। তারা ফেইসবুক ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানারকম আবেগ তাড়িত এবং প্রগলভ মন্তব্য করেন। শিক্ষকের প্রতি আবেগ কিংবা শিশুতোষ লেখকের প্রতি বালসুলভ ভালবাসা কোন দোষণীয় বিষয় নয় এবং তার কিছুটা অনিয়ন্ত্রিত প্রকাশও অস্বাভাবিক নয়। মুশকিলটা হচ্ছে ড. জাফর ইকবাল দম্পতি বিরাজনীতিকিকরণের ভাবাদর্শগত অবস্থান থেকে যে খেলাটি খেলেছেন তা খেলার নিয়মনীতি মেনে খেলতে পারেননি। ইবষড়ি ঃযব নবষঃ আঘাত কোন নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ করতে পারে- এটা বিশ্বাস করা কঠিন।
ড. জাফর ইকবাল দম্পতির সুচতুর এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত অসত্য ভাষণ সম্বলিত খোলা চিঠির প্রভাবে সিলেটের সকল রাজনৈতিক কর্মী ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকদের বিরুদ্ধে কতগুলি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আর এর উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের চরিত্র হনন ও হেয় প্রতিপন্ন করে বিরাজনীতিকীকরণের যে রাজনৈতিক এসাইনম্যান্ট নিয়ে তারা কাজকর্ম করে তাতে হাওয়া দেয়া।
দেশবাসীর প্রতি সবিনয় একটি কথা বলা আবশ্যক যে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে নাগরিকদের দুটো পক্ষ সুস্পষ্টভাবে বিদ্যমান। একটি হচ্ছে বিএনপি জামাত সমর্থিত প্রতিক্রিয়ার ধারা। তারা তাদের নিজস্ব এজেন্ডা অনুযায়ী বিশ্বাবিদ্যালয়ের কার্যক্রম, তার স্বায়ত্বশাসন ও স্বকীয়তা তে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী। তাদের সাথে প্রগতিশীল বাম-ঘরানার রাজনৈতিক কর্মী কিংবা মুক্ত বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কোন সর্ম্পক আবিস্কার ড. জাফর দম্পতির মৌলিক প্রতিভার স্বাক্ষর হয়তোবা বহন করে। কিন্তু আমার মনে হয় পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র কিন্তু কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে এ ধরনের প্রতিভার স্বাক্ষর নিজ কর্ম ক্ষেত্রে রাখতে পারলে জাতি উপকৃত হবে। দুটি পরস্পর বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে যোগ সাজশের যে মৌলিক আবিস্কার তাঁরা করেছেন রাজনীতির কোন নবিস ছাত্রের কাছেও তা গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে বলে মনে হয়না। বিরাজনীতিকীরণের মাধ্যমে আমাদের দেশে কারজাই মার্কা সরকার এবং ক্লীব, দুর্বল, আত্মস্বার্থপরায়ন একটি এলিট শ্রেণি গড়ে তোলার যে আকাক্সক্ষা ড. জাফর দম্পতি এবং তাদের শুভার্থীরা পোষন করেন তা ঘটানো বাংলাদেশে সহজ হবে না। জামাতিরা সাঈদির ছবি চাঁদে দেখা যাওয়ার গুজব ছড়িয়ে সাময়িক নারকীয় তান্ডব সৃষ্টি করতে পারলেও কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করতে পারেন নি। অনুকুল পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণে উদ্গ্রীব ও অতি উৎসাহী ড. জাফর দম্পতি এই অভিজ্ঞতাটি বিবেচনায় নিলে ভাল করতেন।
প্রচার হয়েছে বামপন্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয়ে সিলেটিদের জন্য ৫০% আসন সংরক্ষণের দাবি করেছেন। উদ্দেশ্য কত নি¤œ স্তরের হলে এবং তা সফল করার জন্য কতটা বেপরোয়া হলে এধনের নির্জলা মিথ্যাচার করা যায় তা ভাবতেও লজ্জা হয়।
পরিশেষে ড. জাফর দম্পতি কে বিনীত ভাবে অনুরোধ করতে চাই দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত বাংলাদেশে গুপ্ত ঘাতকের কলংকিত ভুমিকায় অবতীর্ণ না হয়ে নিজ জনপ্রিয়তা ও প্রজ্ঞা তরুণ সমাজকে আলোর পথের সন্ধান দেয়ার কাজে সত্যনিষ্ঠ ভাবে নিয়োজিত করে নিজ ব্যক্তিত্ব ও অগণিত ভক্তের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার প্রতি সুবিচার করুন।
লেখক :
বেদানন্দ ভট্টাচার্য
সভাপতি, সিপিবি, সিলেট জেলা।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মধু মধু
উনি জাফর ইকবাল স্যারের মনে কথা জানলেন ক্যাম্নে?
যতসব ভুদাই!
ইনি রাজনীতি মানে জানেন না কিন্তু রাজনীতি করেন ও বিরাজনীতিকরণজাতীয় মার্গিয় প্রলাপও পাড়েন। বদানন্দ অদ্ভুদ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এই বেদানন্দ নাকি সিলেট জামাতের আমীর জুবায়ের মাহবুবের আইনজীবী?
হ , ভাই , এইখানে আবার পলিটিক্সে সব শিয়ালের এক কেবলা ।
ওরে ওরে ওরে! তাইলে ত হিসাব পুরাই বরাবর!
এদের এই কাজগুলির ফলে যে ভয়ানক বিপদ ঘনিয়ে আসে সেই ব্যাপারটা না থাকলে বলতাম বিনোদন-ই বিনোদন।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
১।শুরুটা ভালোই করেছেন, কিন্তু কিছুক্ষন পর নিজের লেজটাকে বের করে আনলেন। যখনি সিলেটের কথা আসলো তখনি নিজের প্রতিক্রিয়াশীলতা বেরিয়ে পড়ল।
২। শিশুদের কে নিয়ে লেখাকে যে ব্যাক্তি শিশুতোষ বলে উপহাস করে তার জ্ঞান ছাগলের জ্ঞান সমান
৩। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কাকে কি করে ক্ষতি করবে সেটার কোন ব্যাখায় না গিয়ে মনগড়া একটা দীর্ঘ রচনা লিখে ফেললো, জ্ঞানের দৌড় মোল্লার মত হলে দৌড়ে মসজিদ পর্যন্ত যাওয়া যায় এর বেশি নয়।
৪। ভাইজান নাকি প্রগতিশীল আর মুক্তমনা =))। উনার লেখার ভাষা আর অসারতায় দারুন বিনুদুন পাইলাম।
মাসুদ সজীব
এক্কেবারে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
-রু
'শিশুতোষ লেখক ও চৌকস কলামিস্ট ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী জেনারেল জিয়ার সামরিক শাসকের উপদেষ্টা ড. হক এর কন্যা ইয়াসমিন হক এর সাথে সিলেটের বাম-প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী বা নাগরিক সমাজের উত্থাপিত দাবির কোন সর্ম্পক ছিলনা বা নেই।'
মজার একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম। কোনো ব্যক্তি সে যেই হোক না কেউ কে অপদস্থ করতে চাইলে বাপ মা ধরে টান দিবেই। এই লোক ও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শিশির অশ্রু
খুবই সময়োচিত দুর্দান্ত একটি লেখা ! লেখাটা সবারই বিবেক দিয়ে পড়া উচিৎ, অন্তত যারা নিজেদেরকে 'সচেতন' দাবি করেন।
মন্তব্য অংশে কারো কারো ত্যানা-প্যাঁচানো মন্তব্যে মন্তব্যকারীর তীব্র হীনম্মণ্যতাই প্রকট করেছে ! এ প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে নিয়ে সেই সত্য কিংবা কৌতুকটা মনে পড়ছে-
বিদ্যাসাগর একবার কোথায় যেন হেঁটে যাচ্ছিলেন। অনতিদূর থেকে কে যেন তাঁকে অযথাই গালি দিয়ে বসলো। বিদ্যাসাগর খেয়াল করেন নি হয়তো, তাই তাঁর সঙ্গিটি যখন বিদ্যাসাগরকে বললো যে, ওই লোকটি আপনাকে গালমন্দ করছে, বিদ্যাসাগর এক পলক লোকটিকে দেখেই বিস্ময়ে বলে উঠলেন- 'কই, আমি তো ওই লোকটিকে কখনো কোনো উপকার করেছি বলে মনে পড়ছে না ! তাহলে আমাকে গালমন্দ করছে কেন !' হা হা হা !
একটি মাত্র বাক্যে বিদ্যাসাগর যেভাবে কতিপয় হীনম্মণ্য বাঙালির চরিত্রটা খোলাশা করে দিয়েছিলেন, তারই পুনঃমঞ্চায়ন হচ্ছে হয়তো জাফল ইকবার স্যারের ক্ষেত্রে !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কেন সিপিবি বাসদ মার্কা দলগুলোর আজ এই হাল, তা বেদানন্দের এই সাফাই থেকেই পরিস্কার বোঝা যায়। আমার কিছু পর্যবেক্ষন-
১। কারো বিরুদ্ধে জনগনের মনোভাব বিরুপ করে তোলার জন্য তার বাপ-মা কে টেনে আনা এ দেশের এক শ্রেনীর নিচু মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের বস্তাপঁচা কৌশল, অযাচিতভাবে ডঃ ইয়াসমিনের পিতার প্রসঙ্গ টেনে এনে বেদানন্দ সেই কাজটিই করেছেন।
২। সমঝোতা স্মারক, চুক্তি, এইসব ধুনফুন কথা বলে তিনি এই প্রচেষ্টাকে আইনানুগভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন করার অপচেষ্টা করেছেন, যেন একটা সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি সম্পাদিত থাকলে তারা এর বিরোধীতা করতেন না।
৩। লেখায় একটু ভাবগাম্ভীর্য আনার জন্য আবার অযাচিতভাবে সিলেটের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সামন্ততান্ত্রিক অভিঘাত, প্রতিক্রিয়াশীল চক্র, বাল ছাল উচ্চমার্গীয় তত্বের অবতারনা করেছেন, উদ্ভূত সমস্যার সাথে যে সবের কোন সম্পর্ক নেই।
৪। যেহেতু সিলেটের প্রতিক্রিয়াশীল মহল(জামাত/শিবির) এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করে উদ্ভট পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মৎস শিকার করারা চেষ্টা করতে পারে, তাই এই উদ্যোগ, তা ভাল হোক বা মন্দ, আগে ভাগে তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করে জামাত শিবিরকে এক মহা সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে মেহনতি জনতার শ্রেনী সংগ্রামকে এক ধাপ এগিয়ে নেয়ার মহান ব্রত পালন করা হয়েছে।
৫। সাঈদীর চন্দ্রভিযান এবং জাফর ইকবালের খোলা চিঠিকে একই মাত্রার নাটুকেপনা হিসেব উপস্থাপনের চেষ্টা।
৬। জাফর ইকবাল এ দেশকে বিরাজনীতি করনের জন্য সরকারের যোগসাজসে এই ধরনের কাজ করে চলেছেন, এর মাধ্যমে তিনি এ দেশে একটি কারজাই মার্কা সরকার প্রতিষ্ঠিত করাই তাঁর উদ্দেশ্যে, বেদানন্দেরা তাই লীগ, বিম্পী, জামাত সবাইকে সাথে নিয়ে কোন এক কারজাই সরকারের আগমন ঠেকাতে সচেষ্ট রয়েছেন।
পুরোপুরি একমত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
পরে বুঝেছিলাম; মুক্তিযোদ্ধা মানুষতো, "সাফল্য আসবেই" বিশ্বাস নিয়ে ঝাপিয়ে পরাটাই স্বাভাবিক। - বুকের মধ্যে মুচড়ে ওঠে! এমন মানুষরা যাঁদের সহায় তাঁরা এই দুরন্ত কাজগুলি করবেন না ত কারা করবে - ঐ সব হাবিজাবির দল!
চমৎকার লেখা, খুব সময়মত আর খুব যত্ন নিয়ে সাবলীলভাবে লেখা। অন্তরের অভিনন্দন আপনাদের।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এই অসাধারন সিস্টেমের ভেতরের অনেক কথা জানতে পারলাম। ধন্যবাদ স্যার
পথের দাবি
আমার এইমাত্র একটা ঘটনা মনে পড়ল। তখন প্রথমবারের মত এই পদ্ধতি শুরু হয়েছে। লোকজন তখনও আবেদন করছে। তো এটার দায়িত্বে থাকা আবু আউয়াল শোয়েব কি কারণে আমার ঢাকার বাসায় বেড়াতে এসেছে। ভর্তিপ্রক্রিয়ার জন্য চালু করা কল সেন্টারের একটি মোবাইল ফোন শোয়েবের কাছে। সেখানে একজন ফোন দিয়ে প্রস্তাব দিল শোয়েবকে সে যেন ভর্তিচ্ছুদের ডেটাবেস ওর কাছে বিক্রি করে। সে ডিভি লটারী না কি একটার জন্য সেই ডেটাবেস ব্যবহার করবে। তারপর অবশ্য ওই লোক যেই ঝাড়ি খেয়েছে তাতে তার ফোন বিল উঠে যাওয়ার কথা।
আরেকটি ঘটনা হল এরকম। কল সেন্টারের শেষ নম্বরটি ছিল জাফর স্যারের কাছে। তো এক মেয়ে স্যারকে বিকালে ফোন দিয়ে বলল সে আবেদন করেছে কিন্তু কোন কনফার্মেশন এস.এম.এস. পায় নি। স্যার তাকে সান্তনা দিলেন হয়তো সার্ভারে বেশি চাপ পরছে। একটু ধৈর্য ধরতে বললেন। রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন। তো রাতের বেলা সে আবার ফোন করে জানাল সে এস.এম.এস. পেয়েছে। স্যার বলল, ভেরি গুড! তখন মেয়েটি খেঁকিয়ে উঠে বলল "কিসের ভেরি গুড! পাঁচ জন এক সাথে এস.এম.এস. পাঠালাম যাতে এক সাথে সিট পরে। এখন দেখছি একেকজন এক এক কেন্দ্রে!"
শেষ শোনা ঘটনা হল স্যার ঈদের দিন রাত বারটায় কল পেলেন। ওপাশ থেকে বলল কলসেন্টার আসলেই কাজ করছে কিনা সে টেস্ট করে দেখছে!
নতুন মন্তব্য করুন