বইমেলা ঘন্ট

সুরঞ্জনা এর ছবি
লিখেছেন সুরঞ্জনা (তারিখ: রবি, ১৯/০২/২০১২ - ১২:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঝে মাঝে কিছু দিন আসে, যেদিন সবকিছু ভালোলাগে, এমনকি কড়া রোদে পুড়তে পুড়তে বাসে করে বইমেলা যেতেও ভালো লাগে, রোদে পড়লে মাথা ধরে, সেই মাথাব্যথাও ভালো লাগে।

আজকে এমনই একটা ভালোলাগা দিন এসে পড়লো আমার হাতে। কি করি কি করি ভাবতে ভাবতে বাসে উঠে হাজির হয়ে গেলাম বইমেলায়।

বইমেলার গল্পের আগেই বলে নেই, আপনি যদি ভালো মেজাজে থাকেন, তাহলে কখনো সাথে ক্যামেরা নিয়ে বেরোতে ভুলবেন না। কারণ যেদিন আপনার মন ভালো থাকবে, কিন্তু সাথে ক্যামেরা থাকবেনা, সেদিন দেখবেন আপনার চতুর্দিকে আশ্চর্য দারুণ সব দৃশ্য ঘটেই চলবে ঘটেই চলবে ঘটেই চলবে।

যেমন, বাস থেকে নেমেই যখন আপনি রাস্তা ক্রস করে (ভদ্রলোকের মত অবশ্যই ওভারব্রিজ দিয়ে) জাদুঘরের সামনে থেকে রিকশায় উঠবেন, তখনই রিকশায় বসে উপরে তাকালে দেখবেন ঝকঝকে নীল আকাশের ব্যাকগ্রাউন্ডে মাথার উপর গাছের পাতাগুলো সত্যি-সত্যি ঝিলমিল করছে। আগে আমি ভাবতাম গাছের পাতারা শুধু রবীন্দ্রনাথের জন্যই ঝিলমিল করে, কিন্তু আমার এ ধারণা ভীষণ রকমের ভুল বলে বারংবার প্রমাণিত হয়েছে।

স্বর্গলোক থেকে চোখ সরিয়ে যখন মর্ত্যলোকে নজর দেবেন, তখনই দেখবেন রিকশায় হুড তুলে দিয়ে এক মা ও তার ক্ষুদে ছা ফিরছেন, খুব সম্ভব বইমেলা থেকেই, তারা তাড়িয়ে তাড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছেন, খেতে খেতে যেই একজনের আরেকজনের দিকে চোখ পড়লো, অমনি দুইজন হাসতে হাসতে অস্থির।
আইসক্রিম খেলে কেন এত হাসি পায়?
কে জানে।

যাকগে, রিকশা থেকে নামতে হয়, কারণ বাংলা একাডেমীর রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে রাখা, বাকিটুকু যেতে হবে হেটে।

প্রথমেই চোখ পড়লো ইয়া সাইজের লাল সাদা গোলাপি হলুদ ফুলে, এক নয়, একঝাক। একটা লোক কাঁধে করে নিয়ে ঘুরছে এক বিরাট লোহার ডাণ্ডায় গুজে। আমি বাদে এক পিচ্চিরো সেসবে নজর পড়েছে, কারণ সে তার পাশে দাঁড়ানো ভদ্রলোকের জামা ধরে টানাটানি শুরু করেছে ফুলের ঝাঁকের দিকে পয়েন্ট করে।
হঠাত আবিষ্কার করলাম, আশেপাশে পিচ্চির ছড়াছড়ি। বীর-দর্পে তারা বাবা-মা-বড়বোন-মাম-চাচা-ভাই দের লিড দিতে দিতে বইমেলার দিকে চলেছে। শুক্র-শনিবার সকাল বেলা খুব সম্ভব বইমেলায় পিচ্চি-স্পেশাল চলে, সেইজন্যেই এই সাত-সকালে তাদের এত দিকদারি।

সাবধানে পিচ্চি এবং তাদের বাপ-মা এড়িয়ে ফুটপাথ ঘেঁষে চলছি, বাংলা একাডেমীর কাছাকাছি আসতে আসতে দেখি ফুটপাথের ভাবসাব পাল্টাচ্ছে। এতক্ষণ ফুটপাথে ফেরিওয়ালারা আচার, চুড়ি আর ডোরেমন নামক বিভীষিকা ফেরি করছিলো, এখন দেখি ফুটপাথ জুড়ে রীতিমত চিত্রকলার বাজার বসেছে। এদিক সেদিক চেয়ার ছড়ানো, চেয়ারের সামনে চিত্রশিল্পীরা পেন্সিল বাগিয়ে রেডি, আপনি সামনে বসলেই আপনাকে এঁকে ইয়ে করে ফেলবে (তাদের আঁকার নমুনাও বেশ ঈর্ষা-জাগানিয়া রকমের ভালো)। শিল্পীদের পাশে তিন-চার লহর করে দড়ি টাঙানো, সেখানে নানা-রকম চিত্রকর্ম ঝুলছে, যেটাই কেনেন তিনশো টাকা।
মনে মনে হিসাব করতে করতে আসছি, যে বাবা-মা-ছোটভাই-পাশের বাড়ির পিচকি ইত্যাদি লোকজনকে দিয়ে ছবি আঁকিয়ে এরকম দড়ি টাঙিয়ে আমি কতদিনে বড়লোক হয়ে যেতে পারি, এমন সময় হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন র‍্যাব দেখতে পেয়ে বুঝতে পারলাম, বইমেলা পৌঁছে গেছি।

এইবারের বইমেলার তোরণটা লাল-নীল-সাদা, গতবারের বইমেলার টা কেমন ছিলো মনে পড়ছে না, কিন্তু এবারেরটার চেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছিলো বলে আবছা আবছা বোধ হচ্ছে। ঢুকে নজরুল মঞ্চের দিকে যাচ্ছি, শুনি পাশে ওই সামিয়ানা টাঙানো জায়গায় এক ভদ্রমহিলা স্টেজে উঠে ছোটদের উপস্থিত বক্তৃতার কঠোর সমালোচনা করছেন। মনে মনে বড় হয়ে গিয়েছি বলে আরও একবার প্রাকৃতিক নিয়মকে ধন্যবাদ দিলাম। নাহলে নিশ্চয়ই বাবা-মায়ের সাথে আজকের দিনে বইমেলায় আসতে হোতো, আর তারা উপস্থিত বক্তৃতা হচ্ছে শুনেই আনন্দে ডগমগ করতে করতে আমাকে স্টেজে তুলে দিতো, আর আমি নিশ্চয়ই স্টেজে উঠে তিন মিনিটে তিন শব্দও বলতে পারতাম না, আর তারপর নিশ্চয়ই এই বক্তব্যটা ভদ্রমহিলা আমাকে উদ্দেশ্য করে দিতেন...যা: বাবা, বেচে গেলাম।

এরপর একা একা প্রায় পুরোটা বইমেলায় চক্কর কাটলাম, কয়েকটা বইও কিনে ফেললাম। দেখলাম অনেক ভালো ভালো বই এর সাথে প্রচুর আজগুবি বই। কিছুক্ষণ কতগুলা পিচ্চিকে ফলো করে বোঝর চেষ্টা করলাম ওদের মতি-গতি আজকাল কেমন। তারা সবাই দেখি ডোরেমন নামক বিভীষিকাটাকে প্রাণপণে প্যাকেটে ভরছে, এক ব্যাগ বিভীষিকা কিনলে একটা বিভীষিকা স্টিকার ফ্রি!

ভয় খেয়ে তড়িঘড়ি সরে পড়লাম।

বই-এর বোঝা বাড়তে বাড়তে টাকা বাড়ন্ত। ‘সময়’ এর সামনে ভিড় খুব বেশি না এবার, মুহম্মদ জাফর ইকবালের রূপ-রপালি কিনলাম। বিশ্ব-সাহিত্য কেন্দ্রের স্টলের সামনে ভিড় বেশি, সবাই এটা সেটা কিনছে। এক ভদ্রলোক একাই বিশ-ত্রিশটা বিভিন্ন-দেশী রূপকথা প্যাকেট করাচ্ছেন। আমি বই দেখছি, পাশ থেকে একটা সুন্দর মেয়ে এসে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের পালামৌটা হাতে নিয়ে কতক্ষণ নেড়েচেড়ে রেখে দিলো। মেয়েটার সঙ্গী ছেলেটা জিজ্ঞাসা করলো, ‘নেবে?’, মেয়েটা উদাস গলায় ‘নাহ’ বলে অন্যদিকে চলে গেল। ইচ্ছা হোলো মেয়েটাকে গিয়ে বলি বইটা কিনতে, নাহয় আমিই কিনে উপহার দেই...আর বলা হোলো না।

দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা আর আড্ডা হোলো অনেক পরিচিত-বন্ধুদের সাথে, এদের মাঝে সচলরাই সংখ্যায় বেশি। লিটল ম্যাগ চত্বরে বিকালবেলায় দেখা হোলো প্রিয় মানুষ নজরুল ভাইয়ের সাথে, আরও দেখা পেলাম জুয়েইরিযাহ মউ এর। আজকে মেলায় প্রথম এসেছে আলেক্সান্দর বেলায়েভের “প্রফেসর ডয়েলের মস্তক”, অনুবাদক অদিতি কবীর, আমাদের প্রিয় বই-পড়ুয়া খেয়াদি। কেনা হোলো, জোরপূর্বক অটোগ্রাফ আদায় হোলো।

অসামান্য রসবোধ, আর যুতসই ছন্দ-বোধ সমৃদ্ধ কামরাঙা ছড়া’র সংকলন কেনা হয়েছে আগেই, লেখক আমার প্রিয়তম মানুষদের মাঝে অন্যতম, সংসারে এক সন্ন্যাসী।

আজকের দিনের বিশেষ অর্জন অভিজিৎ রায়ের সাথে পরিচয়। রায়হান আবীর এবং ওনার ডবল অটোগ্রাফ সম্বলিত বই এখন আমার শেলফের শোভা বর্ধন করছে।

দিনের শেষে তুহিন দাদা আমার ‘রূপ-রূপালি’র কপিটা ছিনতাই করে বাড়ি চলে গেল, তাই নির্জন স্বাক্ষরের কাছ থেকেই জোরপূর্বক আরেক কপি ছিনিয়ে নিতে হোলো। বহুদিন পর নূপুর আপু, শাহেনশা সিমন, সবজান্তা, পলাশ রঞ্জন সান্যাল, কবি তারেক রহিম, অদ্রোহ ইত্যাদি পুরনো পাপীদের দেখা পেয়ে ভালো দিনটায় মন আরও বেশ খানিকটা ভালো হয়ে গেলো।

রাত প্রায় আটটা বাজতে চললে, শ্রান্ত-ক্লান্ত, কিন্তু বেজায় খুশী মনে, এক বস্তা বই টানতে টানতে আরও হাজার হাজার লোকের সাথে আমিও ফিরতি পথ ধরলাম।

বাড়ি ফিরে মনে হলো, এত ভালো দিনটায়, একটা পোস্ট দিয়ে লোকের মনের আগুনে বাটি বাটি ঘি না ঢাললে কিছুতেই ষোলকলা পূর্ণ হয় না, তাই হাই তুলতে তুলতে ‘বইমেলায় একটি আনন্দময় দিন’ রচনাটা লিখেই ফেললাম।

এই এখন পোস্ট করে দিলাম, শান্তি। আজকের অধিবেশনের এখানেই সমাপ্তি।

সবাইকে বসন্তের দিনে বইমেলার শুভেচ্ছা। হাসি


মন্তব্য

পরিবর্তনশীল এর ছবি

লেখাটা পড়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।

কারণ?

আমার এক্ষুণি বইমেলায় যেতে ইচ্ছে করতেসে। দেঁতো হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

চইলা আসেন না ক্যান? কে আপনারে আটকায়া রাখছে শুনি?

সুরঞ্জনা এর ছবি

"ঐ" - প্রতি পরিবর্তনশীল। দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

রায়হান আবীর এর ছবি

এমনও বসন্ত দিন পার করে মাংস কিনে বাড়ি ফিরেছিলি তো?

সুরঞ্জনা এর ছবি

এইটার মানে কি? ভেঙে বল মন খারাপ

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

যাবাব্বা, হয়ে গেলো ?? সেই যে আমার সাথে ছবিটবি তুলেছিলে রতনবাবুর পোড়ামুখে ছাই দিয়ে- এরপর থেকেই দেখি আমার থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছো গড়াগড়ি দিয়া হাসি

এরপর কখন আসবেন ?? এই মেলায় এখনো অনেকের সাথে দেখাই হলো না। ধুরু।

রায়হান আবীর এর ছবি

প্রিয় কালা সুহান, আজকে কই আছিলা? কামরুল ভাই আইছিলো।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

অপ্রিয় কালায়হানাবীর, সোমবারে আসবো খন।

--আর এটাই তো দুনিয়ার নিয়ম। সমস্ত ভালো মানুষ একইদিনে বইমেলায় যায় না। হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

ঠিক। এই কারণেই আমি মাঝে মাঝে মেলায় না গিয়া অন্যরে যাওয়ার সুযোগ কইরা দেই দেঁতো হাসি

সুরঞ্জনা এর ছবি

মেলায় গেলেই 'অমুক ও তার বন্ধুরা' জাতীয় বই এর টাইটেল দেখলেই আমার মাথায় 'সুহান ও তার বন্ধুরা' জাতীয় টাইটেল আসে, ডঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল কে চিঠি লিখে আবদার করবো ভাবছি এই গল্পটা বানিয়ে ফেলতে চিন্তিত

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সবজান্তা এর ছবি

বই-এর বোঝা বাড়তে বাড়তে টাকা বাড়ন্ত।

অথচ সারা লেখাতে চারটার বেশি বইয়ের নাম দেখলাম না! বাকি বইগুলার নাম কী ?

সুরঞ্জনা এর ছবি

এই তো আসল কথায় আসলেন, বই এর নাম দেই নি কারণ সব বই সবার পড়া, আমি বাদে। অশিক্ষার কলঙ্ক থেকে বাঁচবো বলে ভেবেছিলুম, তা আর হতে দিলেন না মন খারাপ

বই তালিকা-

* বাংলাদেশের পাখি - শরীফ খান
*ধূপছায়া - সৈয়দ মুজতবা আলী
*চতুরঙ্গ - ঐ
*ভবঘুরে ও অন্যান্য - ঐ
*কামরাঙা ছড়া - মাসুদ মাহমুদ
*হাসান আজিজুল হকের শ্রেষ্ঠ গল্প (বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রকাশিত)
*শিবরাম চক্রবর্তীর শ্রেষ্ঠ গল্প (ঐ)
*স্মৃতির অতলে - অমিয়নাথ সান্যাল
*আগুনপাখি - হাসান আজিজুল হক
*তারাস বুলবা - নিকোলাই গোগল
*শীতে উপেক্ষিত -রঞ্জন (এটা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র স্টলের বিক্রেতা ভাইয়ের রেকমেন্ডেশনে কেনা, পড়ে দেখতে হবে)
*শূন্য - (বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী হুমায়ূন আহমেদের)
*ক্রীতদাসের হাসি - শওকত ওসমান (এটা উপহার)
*রূপ-রূপালি - মুহম্মদ জাফর ইকবাল (এটা ছিনতাই)

এই হলো লিস্ট, প্রথম চারটা বই তুহিন দাদার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া, তাই উপহার বলে মর্যাদাহানী করতে চাই না। দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

নূপুরের ছন্দ এর ছবি

আজেকর একখানা বই সুর এর কােছ পাওয়া। হাসি

সুরঞ্জনা এর ছবি

হু, বদলে আমিও একটা পাবো, রিমাইন্ডার দিলাম চাল্লু

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

স্বপ্নাহত এর ছবি

মেলায় যাওনের আর টাইম পাইলিনা।

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

সুরঞ্জনা এর ছবি

তুমি আর কথা বলতে এসো না, জ্বর বাঁধানোর আর সময় পাওনা, জানো না আমি চাকর সম্প্রদায়ভুক্ত?
ম্যাঁও

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাহ্, কী আনন্দরকম একটা লেখা
দারুণ দারুণ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুরঞ্জনা এর ছবি

আমার প্রিয় নজুভাই! লইজ্জা লাগে

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

একদিন আমিও।

একদিন আমিও বইমেলায় যাবো
হলদে, হালকা সবুজ আর কাঁচের মতো নীল শাড়ি পরে বালিকারা
চারদিকে ঝিলমিল খিলখিল পিলপিল করতে থাকবে
আর
ঝাঁকে ঝাঁকে তরুনী ভক্ত পাঠিকা আমার বই কিনে কাঁখে করে ফিরবে বাড়ি
নিতান্ত অনিচ্ছাতেও মাঝমেলায় অবেলায় আমি ধরা পড়ে যাবো এবং
অটোগ্রাফ দিতে দিতে সে কী হেস্তনেস্ত...

একদিন আমিও বইমেলায় যাবো। মন খারাপ

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সুরঞ্জনা এর ছবি

মডুগিরী একটু বাদ্দিলেই তো আপনার বই বিক্রী হয়, কে না জানে, মডুদের বই কেউ কেনেনা, শেষে পড়ে মরবে নাকি! দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

বন্দনা এর ছবি

মেলায় আজকে সচলের বেশ কয়েকজঙ্কে দেখলাম, নজরুল ভাই, রনদা, রায়হান, অভিজিতদা, সিমন ভাই, ভীষণ ভালো লেগেছে। সুরঞ্জনা আপাঙ্কে ও দেখেছি, কিন্তু পরিচয়ের সু্যোগ হয়নি এইযা।

সুরঞ্জনা এর ছবি

হু, দূর হতে আপনাকে দেখেছি, এইবারে আর আলাপ হয় নি, কোন এক সচলাড্ডায় সাঁ করে চলে আসবো, তখন দেখা হবেক হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

রায়হান রশিদ এর ছবি
সুরঞ্জনা এর ছবি

হু, গতকাল একটা দারুণ দিন ছিলো, দেশে আসার জন্য ফেব্রুয়ারী সর্বশ্রেষ্ঠ মাস হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

চমৎকার লেখা।

...........................
Every Picture Tells a Story

সুরঞ্জনা এর ছবি

মিস করি মুস্তাফিজ ভাই মন খারাপ

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

প্রিয়ম এর ছবি

আমিও গিয়েছিলাম আজ ! দেঁতো হাসি

সুরঞ্জনা এর ছবি

বাহ, সবাই আজকে গিয়েছে, স্বপ্নাহত ইডিয়ট টা বাদে হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

তারেক অণু এর ছবি

(গুড়)

সুরঞ্জনা এর ছবি

হাঃ হাঃ, কি তারেকাণু ভাই?
কেমন বইমেলা ঘুরে আসলাম, আপনি পারলেন পারলেন?? মুহাহাহাহাহাহাহাহা! দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

তারেক অণু এর ছবি

আর পারলাম কিভাবে !
লেখার শুরুটা দারুণ ছন্দময়, আপনার লেখা বেশী পড়া হয় নি, এইটা পড়তে পড়তে মনে হল, বাহ বেশ মিষ্টি ভঙ্গি, অনেক কিছু মনে করিয়ে দিয়ে তরতর বেগে ছুটে চলে, এখন আপনার আগের পোস্টগুলোও পড়ে ফেলব।

সুরঞ্জনা এর ছবি

খাইসে! আপনি আমার লেখা পড়েন নি! অ্যাঁ

যাক বাবা, খুব বাচা বেচে গেসেন! দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সুরঞ্জনা এর ছবি

ক্যামেরা নিয়ে বেরোই নাই মন খারাপ

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

নৈষাদ এর ছবি

চমৎকার লাগল লেখাটা।

সুরঞ্জনা এর ছবি

নৈষাদদা! আদাব! হাসি
আমাদের আড্ডা দিবসের জন্য একদম ঘড়ি হাতে বসে আছি দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতিথিঃ অতীত এর ছবি

নাহয় আমিই কিনে উপহার দেই…আর বলা হলো না

ইয়ে, মানে...

সুরঞ্জনাপু, এরপরে কবে যাবেন একটু কষ্ট করে কানে কানে এই অভাগারে বলে দেন। আমিও আপনার সাথে যাবো। বই নেড়ে চেড়ে দেখবো, না কেনার ভান ধরবো। আর আপনার বলা লাগবে না। আপনাকে দেখে আমিই নিজ দায়িত্বে আপনার কাছে থেকে চেয়ে নিবো। ওঁয়া ওঁয়া

অতীত

সুরঞ্জনা এর ছবি

আরে! জানেন না বুঝি গৌড়ি সেনের পরের জন কে? বইমেলায় গেলেই আলিফ-লায়লা সিরিজের দৈত্যের মতো দেখতে কারোকে যদি দ্যাখেন বিভিন্ন স্টলের সামনে হাসি-হাসি মুখ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, দৌড়ে গিয়ে তার ঠ্যাং ধরে ঝুলে পড়বেন, শাহেনশা সিমন কারুকে নিরাশ করেন্না দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

শাব্দিক এর ছবি

ভাল লাগল।
বই মেলা কাল যাওয়া হল না, তাই লেখা পড়ে একটু মন খারাপ হল।

সুরঞ্জনা এর ছবি

আরো বাকি দশ দিন, দশ দিন দশ দিন হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সাত্যকি. এর ছবি

লিখার প্রথম অংশটুকু অসাধারণ। মা আর ছেলের আইসক্রিম খাওয়ার দৃশ্য তো একেবারে জ্যান্ত করে তুললেন সুরদি !
অভিজিৎ রায় কবে এসেছেন দেশে? অটোগ্রাফ না নিয়ে ছাড়ছি না এইবার।

সুরঞ্জনা এর ছবি

আমি আর জ্যান্ত কই করলাম, চোখের সামনে ঘটতে দেখলাম, দেখে নিজেই ফ্যাক-ফ্যাক করে হাসলাম কতক্ষণ রিকশায়। হাসি

অভিজিৎ দা এসেছেন কবে জানিনা, তবে এসেছেন শুনে আর রিস্ক নেইনি, কাজ-কর্ম সব বাদ্দিয়ে বইমেলায় গিয়ে সই-টই নিয়ে এসেছি। দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

তানিম এহসান এর ছবি

একদম টলটলে একটা ছন্দে পুরো লেখাটা পড়ে গেলাম। খুব ভালো লাগলো।

সুরঞ্জনা এর ছবি

আরে বাহ, সবাই দেখি পড়ে খুশি হয়ে গেল, মন ভালো হওয়া দেখছি বেশ ছোঁয়াচে! হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

উজানগাঁ এর ছবি

খুব সুন্দর একটা লেখা। কীরকম আলো-ঝলমলে গদ্য !

সুরঞ্জনা এর ছবি

আপনার ব্যানারটা যে কি সুন্দর হয়েছে আজকে! কি বলবো! হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

আপনি যদি ভালো মেজাজে থাকেন, তাহলে কখনো সাথে ক্যামেরা নিয়ে বেরোতে ভুলবেন না।

-ক্যামেরার যা ওজন হইছে সাথে নিয়া বাইর হইতেই ইচ্ছা করেনা ইয়ে, মানে...

আজকের দিনের বিশেষ অর্জন অভিজিৎ রায়ের সাথে পরিচয়। রায়হান আবীর এবং ওনার ডবল অটোগ্রাফ সম্বলিত বই এখন আমার শেলফের শোভা বর্ধন করছে।

-আমারে হয়রানাবীর এখনও অটোগ্রাফ দেয় নাই রেগে টং

-লেখা দারুণ লাগলো! পাঁচ তারা হাসি

---------------------
আমার ফ্লিকার

সুরঞ্জনা এর ছবি

হয়রানাবীররে ধরে পেটাও, আর তুমার মতো কামান নিয়ে আমি চলি না ভাই, ভিরুর এক ক্যামেরা সেই বছরখানেক আগে ছিনতাই করে রেখে দিয়েছি, ওইটা দিয়ে দিব্যি চলে যাচ্ছে দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

মর্ম এর ছবি

কী সুন্দর একটা লেখা!

সেই রিকশা থেকে শুরু করে, মেলায় ঘুরে বেড়ানো- সবতা যেন দেখ গেল একদম।

ছোটদের কোন পত্রিকা থাকলে ওখানে এ লেখাটা পাঠানো উচিত। পিচ্চিগুলো পড়বে আর বাবা/মা/চাচা/মামা/ফুপু/খালা/বড় ভাই/বড় বোন-কে টেনে হিঁচড়ে এনে হাজির করবে- তেমন না হলে কীসের বইমেলা!!

এমনতা যখন হবে, তখন মোটেও ওরা বিভীষিকা কিনবে না, এক গন্ডা স্টিকার দিলেও ওসব ছুঁইয়েও দেখবে না, ঠিক ঠিক উন্মাদ স্টলে গিয়ে স্টিকার নেয়ার জন্য ঘ্যানঘ্যান করবে।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

সুরঞ্জনা এর ছবি

ওহ! বলিনি তো! উন্মাদ স্টল থেকে প্রাণভরে স্টিকার কিনেছি যে! একদম রাশি-রাশি, ভারা-ভারা! দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

আশফাক আহমেদ এর ছবি

তারা সবাই দেখি ডোরেমন নামক বিভীষিকাটাকে প্রাণপণে প্যাকেটে ভরছে, এক ব্যাগ বিভীষিকা কিনলে একটা বিভীষিকা স্টিকার ফ্রি!

বাচ্চারা সবাই এর ফ্যান। কী করবো বলেন, আপু। আমি নিজেও আমার এক পিচ্চি বোনের জন্য এটা কিনে এনেছি

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সুরঞ্জনা এর ছবি

ইয়া খোদা, এই জিনিসটাকে দেখলে আমার মনে ত্রাসের সঞ্চার হয় ইয়ে, মানে...

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

তাপস শর্মা এর ছবি

দাঁত বের করে একটা হাসি দিতে ইচ্ছে করছে। বইমেলাকে নিয়ে বেশ কয়েকটা লেখাই পড়েছি এই ক'দিনে। সব গুলিই বেশ প্রাণবন্ত। সচলের দরুন এই নামগুলিও এখন পরিচিত। ভালো লাগে। এই লেখাটা পড়ে একটা অদ্ভুত ভালো লাগার রেশ লেগে থাকলো। ঝলমলে সাবলীল গদ্য।

বসন্তাভিনন্দন।

সুরঞ্জনা এর ছবি

বসন্তাভিনন্দন! হাসি

দাঁতের কথা আর বোলেন না, যতগুলা দাঁতবের করা হাসির ইমোটিকন এক পাপিষ্ঠ দিয়ে যাচ্ছে, দেখে কেমন যেন দাঁতের মাজনের পোস্ট বলে মনে হচ্ছে ইয়ে, মানে...

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

নিটোল এর ছবি

আমি গেলাম বইমেলায়। আপনের সাথে দেখা হইল। মনে আছে??

_________________
[খোমাখাতা]

সুরঞ্জনা এর ছবি

খুউব মনে আছে! হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

দিহান এর ছবি

মন ভালো হয়ে গেলো, কি সুন্দর একটা লেখা...

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

সুরঞ্জনা এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুব সুস্বাদু হয়েছে। হাসি

সুরঞ্জনা এর ছবি

বটে? মেলায় না এসে ঘরে বসে মজা লোটো? বাজে লোক রেগে টং

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

শী এর ছবি

আপনি সবসময়ই এত মিষ্টি করে লেখেন!মন ছুঁয়ে যায় সত্যি।ভাল থাকুন।:)

সুরঞ্জনা এর ছবি

হা হা হা! ইভা আপার গানের মতো মন ছুঁয়ে যায়? চোখ টিপি
তাহলে নাহয় অর্থাভাব ঘোচার একটা সম্ভাবনা ছিলো দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

কবে থেকে বইমেলাটা জানি শুরু হয়েছে , ঠিক মনে করতে পারছিনা। স্বাস্থ্যগত কারনে এবার এখনও যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আপনার লেখাটাতেই তাই দুধের স্বাদ মিটলো।

সুরঞ্জনা এর ছবি

আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

মাঝে মাঝে কিছু দিন আসে, যেদিন সবকিছু ভালোলাগে, এমনকি কড়া রোদে পুড়তে পুড়তে বাসে করে বইমেলা যেতেও ভালো লাগে, রোদে পড়লে মাথা ধরে, সেই মাথাব্যথাও ভালো লাগে।

শুরুতেই মজে গেলাম!

রু (অতিথি) এর ছবি

হায়রে, আরেকটা বইমেলা আসলো, কিন্তু আমার আর যাওয়া হোল না! মনের দুঃখে চোখ মুছি।

লেখা অতি মাত্রায় সুন্দর।

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ লিখেচিস। কিন্তু কতদিন বইমেলা যাওয়া হয় না... মন খারাপ

(বইমেলা থেকে অবশ্য কমই বই কিনতাম, নেহাত দুষ্প্রাপ্য বই না হলে। কেবল নামধাম টুকে নিয়ে চলে আসতাম। কারণ বইমেলায় ছাড় দেয় ১০% আর বইপাড়ায় (কলেজ স্ট্রিটে) ২০% দেঁতো হাসি )

মরুদ্যান এর ছবি

আহা! হাসি

কোয়াসিমোডো এর ছবি

যাওয়ার পথে প্লাসটিকের সাপ গুলো দেখেননি? আমি তো ওগুলো দেখে প্রথমে লাফ দিয়ে উঠছিলাম। এমন ভাবে নড়াচড়া করে!
সুন্দরভাবে পুরো বইমেলা চোখের সামনে তুলে নিয়ে এলেন। চলুক

মিলু এর ছবি

প্রচণ্ড ভালোলাগা নিয়ে পড়লাম আবার। ভোরবেলা অফিস যাওয়ার পথে বাসে বসে পড়েছিলাম। তখন মোবাইল থেকে মন্তব্য করতে পারিনি। ভোরেই মনটা চনমনে করে দিয়েছিল এই ছোট্ট সুন্দর লেখাটা, সারাটা দিন তাই কেটেছেও দারুণ! আবার তাই ফিরে এলাম কিছু বলতে। না বললে শান্তি পেতাম না একদম। হাসি

আপনার অসাধারণ মিষ্টি কন্ঠের চরম ভক্ত আমি - কতটা সেটা বলে বোঝাতে পারব না একটুও। এইবেলা জানিয়ে গেলাম, লেখারও ভক্ত হয়ে গেলাম। চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।