ঊনিশ শতকে ঢাকার থিয়েটার

সুরঞ্জনা এর ছবি
লিখেছেন সুরঞ্জনা (তারিখ: রবি, ০২/০৩/২০১৪ - ১:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বইমেলায় বাংলা একাডেমীর উঠোনের অংশে এবার ভিড় কম ছিলো, বেশিরভাগই সরকারী প্রতিষ্ঠানের স্টল। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর স্টলে এসে বই দেখতে গিয়ে চোখে পড়লো ছেঁড়াখোঁড়া বেগুনী রঙা একটা বই, 'ঊনিশ শতকে ঢাকার থিয়েটার'
ছেঁড়াখোঁড়া হলেও, প্রচ্ছদের চেহারা পছন্দ হওয়ায় আর শাড়ির রঙের সাথে মিলে যাওয়ায়, পঞ্চাশ টাকা দিয়ে সেই ছেঁড়া বই এর মালিকানা প্রাপ্ত হলাম। হাসি

মুনতাসীর মামুনের লেখার সাথে প্রথম পরিচয় ক্লাস সিক্স-সেভেনে থাকতে, ছোটচাচার আলমারি থেকে বহু অনুনয়-বিনয়ের পর ধার পাওয়া গিয়েছিল, 'ঢাকা স্মৃতি-বিস্মৃতির নগরী (প্রথম খন্ড)'। গল্পের বই নয়, ঢাকার নানান রাস্তা, পাড়া-মহল্লা, পুরনো বাড়ির আদি নাম, নামমকরণের ইতিহাস, আরো হাবিজাবি হিস্ট্রি আছে বই এর ভেতর। বই পড়ে ঢাকা শহরের ওপর অধিকার বোধ জন্মেছিল খুব।

'উনিশ শতকে ঢাকার থিয়েটার' - এর পরিচিতি তে তৎকালীন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক সৈয়দ জিল্লুর রহমান সাহেব মুনতাসীর মামুনকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন 'তরুণ গবেষক' হিসেবে। এখনকার সাদা গোঁফ সম্বলিত চেহারার সাথে ৭৯ সনের 'তরুণ' বিশেষণ তুলনা করে মজা লাগলো। হাসি

ঢাকা সম্পর্কে তরুণ গবেষক মুনতাসীর মামুন ইতিমধ্যে একনিষ্ঠ সাধনার দ্বারা বহু বিচিত্র সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। তাঁর দৃষ্টিপথে শতবর্ষের ঢাকার ক্ষদ্র, নগণ্য ঘটনার যে মনোমুগ্ধকর চিত্র সম্মিলিন তা আমাদের পাঠের নিমিত্তেও সুখকর।

যে সময়ে বইটা লেখা, সে সময়ে ঢাকায় থিয়েটার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল অনেক। সেটারও ইঙ্গিত আছে লেখকের ভূমিকায়ঃ

স্বাধীনতার পর ঢাকায় নতুন উদ্যমে আবার থিয়েটার চর্চা শুরু হয়েছে। এবং বর্তমানে, বলা যেতে পারে, বিনোদন মাধ্যম হিসেবে থিয়েটার আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই থিয়েটার চর্চার পরিপ্রেক্ষিতেই মনে প্রশ্ন জেগেছে, উনিশ শতকে কলকাতায় যখন থিয়েটার নিয়ে হৈচৈ চলেছে তখন ঢাকা কি একেবারে নিশ্চুপ ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার জন্যে উনিশ শতকের ঢাকার থিয়েটার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করি।

১৯৭৯ খুব দূরের সময় নয়। কিন্তু তখনের সাথেই এখনকার সময়ের বিস্তর পার্থক্য। স্বাধীনতার পর ঢাকায় থিয়েটার আসলেই নতুন জীবন পেয়েছিল, চমৎকার সব নাটক লেখা হয়েছিল, সেসব মঞ্চে অভিনীত হতো।
আর এখন এত রকম এন্টারটেইনমেন্টের মাঝে খুব অল্প লোকই টিকেট কেটে মঞ্চ-নাটক দেখতে যাবার আগ্রহ বোধ করে।

বই এর শুরুর কয়েক পাতা পড়ে বুঝলাম উনিশ শতকের ঢাকা থাকার জন্য মোটেও সুবিধার জায়গা ছিল না। ঘন জঙ্গল, ময়লা আবর্জনা, সুপেয় পানির অভাব, সব মিলে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা। কিন্তু একটা কথা জেনে সেই উনিশ শতকের ঢাকাকেই ভালো লেগে গেলঃ

কর্নেল ডেভিডসন নামে এক ইংরেজ ইঞ্জিনিয়ার ১৮৪০ এর দিকে এসেছিলেন ঢাকায়। তাঁর রোজনামচায় তিনি আশ্চর্য হয়ে লিখেছেন, দিনে রাত্রে যে কোন সময় ঢাকায় বেহালার শব্দ শোনা যায়। আর বেহালাগুলিও খুব সুন্দর। কিন্তু দামে এতো সস্তা! মাত্র দুটাকায় একটি বেহালা পাওয়া যায়। তারপর তিনি উপসংহারে পৌঁছেছেন এ ভাবেঃ বাঙালীরা আসলেও 'মিউজিকাল পিপল'।

এমন বেহালা বাদন এখন কই পাই। গাড়ির হর্ন কে যদি মিউজিক ধরা হয়, তাহলে এখনো আমরা মিউজিকাল পিপলই বটে।

ঊনিশ শতকে ঢাকার থিয়েটার সম্পর্কে খোঁজ করতে গিয়ে লেখক দেখলেন এ সম্পর্কিত প্রায় কোন তথ্যই কোথাও লিপিবদ্ধ নেই। সে সময়ের পত্রপত্রিকাও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু পরে খুঁজতে খুঁজতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে তখন প্রকাশিত 'ঢাকা প্রকাশ' এর ১৮৬৩-১৯০০ সন পর্যন্ত অনেকগুলো সংখ্যা সহ একটা ফাইল উনি খুঁজে পান। সেই পত্রিকা থেকে পাওয়া সংবাদের উপর ভিত্তি করেই এ বই লেখা।

একটা মাত্র পত্রিকা আর এখান ওখান থেকে পাওয়া টুকরো-টাকরা খবরের উপর ভিত্তি করে তখনকার থিয়েটারের অবস্থার একটা নিখুঁত চিত্র যে পাওয়া যাবে না সেটা লেখক নিজেও জানেন এবং এই সীমাবদ্ধতার কথা বইয়ের ভূমিকাতেই তিনি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এছাড়া আর কোন তথ্য যেহেতু নেই, তাই নাই মামার চেয়ে কানা মামা পেয়েই খুশী থাকতে হচ্ছে।

একবসাতেই পড়া শেষ হোল।
যা বুঝলাম, সে সময়ে থিয়েটারের শুরু হয়েছিল মধ্যবিত্তের বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে। উচ্চ আর নিম্নবিত্ত মানুষের বিনোদনের রকম ছিল একটু ভিন্ন ঃ

ঊনিশ শতকের ঢাকার মানুষদের প্রধান বিনোদন ছিল ঘোড়দৌড় এবং বারবনিতা গৃহ

এ সময় সুস্থ্য একরকম বিনোদনের উৎস হিসেবে থিয়েটারের প্রতি মধ্যবিত্তদের মাঝে আগ্রহ জন্মে। শুরুর দিকে বেশিরভাগ নাটক মঞ্চস্থ করেছিল সৌখীন নাট্যদলগুলো । পেশাদার অভিনেতা, নাট্যদলের আবির্ভাব ঘটে আরো বহু পরে।

আরো একটা তথ্য জেনে মজা লেগেছে। শুরুতে থিয়েটারে নারী অভিনেত্রী ছিলই না, পুরুষেরাই নারী ভূমিকায় অভিনয় করতেন। পরে আস্তে ধীরে নারীরা থিয়েটারে অভিনয়ে আসেন ঠিকই, কিন্তু তৎকালীন সময়ে গৃহবধূরা তো আর থিয়েটারে অভিনয় করতে সুযোগ পেতেন না, অভিনেত্রী হিসেবে তাই আনতে হোতো বারাঙ্গনাদের। এটা আবার অনেকেরই পছন্দ হোতো না। তখনকার ব্রাহ্ম সমাজ, মান রক্ষা করতে ছাত্রদের নিয়ে তাই থিয়েটার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। আন্দোলন গড়ে তুলতেই পারেন, ভালো কথা। কিন্তু আন্দোলনের সপক্ষে যুক্তির নমুনা পড়ে হাসতে হাসতে বিষম খেলামঃ

তাহাদের (ব্রাহ্মদের) মতে দুইতিনঘন্টা সমানে মেয়ে সংযুক্ত অভিনয় দেখিলে মানুষের মন উত্তেজিত হয়, সুতরাং সেরূপ অভিনয় একেবারে না দেখাই উচিত।

পড়ে বুঝলাম, ধর্ম-বর্ণ-কাল নির্বিশেষে, একমাত্র তেঁতুল-তত্বই যুগে যুগে অক্ষয় হয়ে টিকে থাকবে। হাসি

তেঁতুল তত্বের মত, আরো একটা জিনিসও দেখলাম কালোত্তীর্ণ।

বই এর দ্বিতীয়াংশে, ঢাকা-প্রকাশের কিছু খবর হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে। সেখানে দেখি সম্পাদক সমীপে চিঠি লেখা হয়েছে। কয়েকটা চিঠির মূল-বক্তব্য এই, ঢাকা প্রকাশের মত এমন জ্ঞানী-গুণীদের পত্রিকা, এত কিছু নিয়ে লেখে, অথচ এই যে থিয়েটারে মহিলা অভিনেত্রী দিয়ে অভিনয় করিয়ে সমাজের ধ্বংশ ডেকে আনা হচ্ছে, কই, সেটা নিয়ে তো তেমন কোন লেখা এলো না?!

পড়েই দিব্যদৃষ্টিতে অনলাইন নিউজপেপারের মন্তব্য সেকশন দেখতে পেলাম।
আমরা হয়তো এখন ফেইসবুকে বা পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে উঠেছি, কিন্তু মন-মানসিকতা ঢাকা-প্রকাশের সম্পাদক বরাবর চিঠির কলাম থেকে খুব একটা সরতে পারে নি। দেঁতো হাসি

আজকের মত, বই নিয়ে গল্প এখানেই সমাপিত।

হাসি

***


মন্তব্য

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

যুগ বদলায়, মানুষ বদলায় কিন্তু কিছু অংশের মানসিকতা বদলায় না!!

লেখা পড়ে সেই সময়/প্রথম আলোয় পড়া কলকাতার থিয়েটার উন্মেষ কালের কথা মনে পড়ে গেলো - একই রকম মনে হচ্ছে।

____________________________

সুরঞ্জনা এর ছবি

না, অত হাউকাউ হয় নি আমাদের এদিকে থিয়েটার নিয়ে। হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে বইটা পড়তে ইচ্ছা করছে! কিন্তু এই বই এখন কই পাই! মন খারাপ

সুরঞ্জনা এর ছবি

শিল্পকলা একাডেমীতে পাওয়া যেতে পারে, নিশ্চয়ই আরো পোঁকায় কাঁটা কপি আছে ওদের মজুদে। চিন্তিত

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

তারেক অণু এর ছবি

ভালো লাগল, মাঝে মাঝে নানা রঙের শাড়ি পরে এসে সেই সব কালারের বই কিনবেন মিস সুর!

সুরঞ্জনা এর ছবি

বে-নি-আ-স-হ-ক-লা নামে প্রকাশনী খুলে রঙিন বই ছেপে কেনার সুব্যবস্থা করে দিন! হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখার স্টাইল ভাল লাগল। পড়ে আরাম পেলাম। চলুক
সম্ভবত কোন এক সাপ্তাহিক পত্রিকার ঈদ সংখ্যায় আলোচিত বইয়ের কিছু অংশ ছাপা হয়েছিল, লাইনগুলো চেনা চেনা লাগছে।

………জিপসি

সুরঞ্জনা এর ছবি

হয়তো এ বই ই ছিল। প্রথম এডিশনের কপি কিনতে পেরে খুশি খুশি লাগছে। হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চলুক

মুনতাসীর মামুনের ঢাকা বিষয়ক বই গুলো আর ভ্রমণ কাহিনীগুলো দারুণ লাগে।
তাঁর ছোট গল্প পড়েছি কিছু, আশির দশকে লেখা। কিছুটা ম্লান লেগেছে।

সুরঞ্জনা এর ছবি

'ঢাকা স্মৃতি-বিস্মৃতির নগরী' আমার খুব প্রিয় বই। সেখানে রূপলাল হাউজের নাম পড়ে খুব দেখার শখ হয়েছিল, অনেকদিন পর একদিন তন্ময়দা এবং তার বন্ধুদের বদান্যতায় সে বইইয়ের সাথে মিলিয়ে নিতে পেরেছিলাম আর্মেনিয়ান চার্চ, রূপলাল হাউজ, তারা মসজিদ, হোসেনী দালান, ছোট কাটরা আর বড় কাটরা। যেদিন আমরা পুরনো ঢাকা পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখেছি। বইটা আসলেই চমৎকার ছিল।
এ দুটো বই বাদে ওনার আর লেখা পড়া হয় নি। ছোটগল্প আছে জানতাম না, পেলে পড়ে দেখবো।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

আয়নামতি এর ছবি

ঊনিশ শতকে ঢাকার থিয়েটারের এই হাল হলে যাত্রাপালার কেমন অবস্হা ছিল জানতে ইচ্ছে করছে।
কলকাতার পুরোনো যুগের থিয়েটার নিয়ে কিছু পড়েছিলাম সুনীলসহ আরো কারো কারো বইতে।
বারাঙ্গনাদের নিয়ে তথাকথিত সুশীলেরা নাক সিঁটকালেও এক্ষেত্রে তাঁদের অবদান খাটো করে দেখবার অবকাশ নেই।
আপনার লেখাটা হুট করেই ফুরিয়ে গেল যেন! সুরঞ্জনা আপনি 'দ্য ওয়ার্ল্ড বিফোর হার' ডকুটা দেখেছেন? দেখে না থাকলে সময় সুযোগ করে দেখে ফেলুন এবং সেটা নিয়ে একটি লেখা দিন প্লিজ! খুব ভালো থাকুন।

সুরঞ্জনা এর ছবি

রাত জাগতে পারি না বেশিক্ষণ, বই শেষ করে ভালো লাগায় রিভিউ লিখছিলাম, কিন্তু এরপর ঘুম পেয়ে গেল বলে থেমে পোস্ট করে দিলাম। হাসি

না, এই ডকুমেন্টারি দেখা হয় নি। মুভি জাতীয় কিছু দেখতে আমার অনেক সময় লেগে যায়, একবসায় তো পারি না, থেমে থেমে তিনঘণ্টার জিনিস ছ' ঘণ্টা লাগিয়ে দেখি সপ্তাহ ভরে। দেখার ইচ্ছা রইলো, সুযোগ পেলেই দেখবো। আপনিই লিখে ফেলুন না! ভালো লাগা তো ভাগ করলে বাড়ে। হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

আয়নামতি এর ছবি

ক লিখতে কীবোর্ড ভাঙি দশা আমার এত সিরকাস বিষয়ে কিভাবে লেখিরে!

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

দারুন করে লিখেছেন আপু, এক্ষুনি বইটা পড়তে ইচ্ছে করছে।
কিন্তু উপায় নাই তো। মন খারাপ
সচলের যে যা বইয়ের নাম বলেছেন সব লিস্টি করে রেখেছি- একবার শুধু দেশে আসি ...... চোখ টিপি

তেঁতুল তত্ত্ব আর মেয়েদের নিয়ে জাত গেল...... জাত গেল মনোভাব আগেও ছিল, এখনও আছে আর ভবিষ্যৎ যে খুব সুবিধার কিছু হবে আশে পাশের শিক্ষিত সব মানুষের কথাবার্তা আর মন মানসিকতা দেখে মনে তো হয়না। মন খারাপ

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সুরঞ্জনা এর ছবি

হুম। মজা লাগলো। মেয়েদের ফালতু হিসেবে ক্যাটেগরাইজ করার ক্ষেত্রে সবাই দেখি একদলে। হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

কৌস্তুভ এর ছবি

হে তেঁতুল, রিভিউ উত্তম হইয়াছে।

কিন্তু সে সময় তো বড়লোক ছাড়া অন্যদের ঘরে আমাটির ভেঁপু থাকার কথা না। যাদের ভারতীয় ঘরানার সঙ্গীতে আগ্রহ ছিল তাদের তো তানপুরা-সেতার ইত্যাদি বাজানোর কথা। গরীবেরা বাঁশি খোল এসব বাজাতে পারে।

সুরঞ্জনা এর ছবি

আমাটির ভেঁপু আমাটির তৈরি না হলে কি অত দাম হবে? হয়তো আমাটির বদলে কোন আম-আদমীর বানানো ছিল সেগুলো। হাসি
তানপুরা সেতারের কদর ছিল বলেই তো লিখেছেঃ

হৃদয়নাথ মজুমদার নামে ঢাকার এক আইনজীবী তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন, লখনৌ শহর বিখ্যাত কণ্ঠ সঙ্গীতের জন্যে, আর ঢাকা তবলা এবং সেতারের জন্যে। ঢাকার সেতার তার নিজস্ব ঘরানার সৃষ্টি করেছে। আসলেও তবলা বাদন ঢাকায় খুব জনপ্রিয় ছিল। ওয়াজেদ আলী শা'র তবলিয়ার ছেলে আতা হোসেন, খয়রাতি জমাদার, মিথান খান, সুপান খান - এরা ছিলেন ঢাকার বিখ্যাত তবলিয়া।
গানের জন্যেও ঢাকায় কদর ছিল। 'হোলির সময় ঢাকায় গান নিয়ে প্রতিযোগিতা চলত, একবছর লক্ষ্মীবাজারে রাজাবাবু ময়দানে ও অন্যবছর উর্দুবাজারে লালাবাবুদের বাড়িতে পালা করে হোলির গান হত। সুর তাল লয় নিয়ে সে গানের আবার বিচারও হত।

এরপরে একটা মজার তথ্যঃ

ইন্দুবালা ঢাকায় গান গাইতে আসার আগে কালীঘাটের মন্দিরে প্রার্থনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, 'মা ঢাকা যাচ্ছি। ঢাকা তালের দেশ, মান রাখিস মা।'

দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মুনতাসির মামুনের লেখা গুলি বেশ অন্যরকম।
আপনার সুপঠিত আলোচনা বেশ ভালো হয়েছে।
------------লুৎফুর রহমান পাশা

সুরঞ্জনা এর ছবি

মন্তব্য পড়েও বেশ লাগলো। দেঁতো হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

মাওলা ব্রাদার্সে ঢাকা সমগ্র পাওয়া যায়। ওখানে কী এটা থাকবে?

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সুরঞ্জনা এর ছবি

উম, ঢাকা সমগ্র তো আমার কাছে নেই, তাই বলতে পারছি না, দুঃখিত। মন খারাপ

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন করে লিখেছেন আপু, এক্ষুনি বইটা পড়তে ইচ্ছে করছে। দেখি একদিন গিয়ে পোকায় কাটা কোন কপি পাওয়া যায় কিনা ! পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

তাহসিন রেজা

সুরঞ্জনা এর ছবি

গুডলাক হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

মিলু এর ছবি

ভালো লাগল! বইটা পড়তে ইচ্ছা করছে! হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।